ইনসাইড থট

নব্য পাকিস্তান প্রেম এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৮ নভেম্বর, ২০২১


Thumbnail

পাকিস্তান ক্রিকেট দল মিরপুরে ওদের জাতীয় পতাকা উড়িয়ে অনুশীলন করেছে। মিরপুর! এমন ঘটনায় যতখানি গর্জে ওঠা দরকার ছিল,তা না উঠে ঐ বধ্যভূমিতে শায়িত শহীদদের উপযুক্ত প্রতিদানই দিচ্ছি আমরা। এভাবে প্রকাশ্যে মধ্যাঙ্গুলি দেখানোর পরেও আমাদের তেমন কিচ্ছু বলার নেই এই "দ্বীনি ভাই"-দের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, এই মাত্র সেদিন, মানে ৯ নভেম্বর, ২০২১ -এ, "পাক-বাংলা ফ্রেন্ডশিপ কনফারেন্স" নামে একটি অল-পার্টি অনুষ্ঠান হয়েছে পাকিস্তানের লাহোরে। এতে করাচীতে বাসরত বাংলাভাষীদের কারও-কারও অংশগ্রহণ ছিল, সাথে বাংলাদেশ থেকেও কিছু মানুষ গিয়েছিল। আরও ছিল ওদের রাজনীতিবিদ,মূল ধারার সাংবাদিক, ইউটিউবার, শিক্ষার্থীর মত নানা মহলের কিছু ব্যক্তিবর্গ। প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশ থেকে যারা গিয়েছিল তারা কারা? এদের জন্ম-পরিচয় কি? এদের আনুগত্য যদি বাংলাদেশের প্রতি না থাকে, তাহলে নাগরিক সুবিধা পাওয়ার অধিকার এদের আদৌ আছে কিনা? এসব প্রশ্ন আসছে কারণ ইকবাল আর রবীন্দ্রনাথের তুলনামূলক আলোচনার মত প্রহসনের আড়ালে ভয়ংকর আগ্রাসী এক উদ্যোগের ঘোষণা এসেছে ওখান থেকে। ওরা এটুক বুঝেছে যে বাঙ্গালির কাছাকাছি যেতে হলে বাংলাকেই মাধ্যম করতে হবে, তাই এবার থেকে পাকিস্তানী ওয়েব সিরিজ-গান-নাটক-সিনেমাকে বাংলা করে বাংলাদেশে প্রচার করবার জোর তদবির নাকি শুরু হবে। বাংলাদেশে পাকিস্তানী টিভি চ্যানেল তো এমনিতেই চলছে, সেই দেখে-দেখে বাঙালি পুনরায় বিয়ে বাদ দিয়ে "নিকাহ" করা শিখেছে, ওড়না`র বদলে "দোপাট্টা" নেওয়াটাও। উর্দু কবি-লেখকদের বইয়ের বাংলা তর্জমা এরই মধ্যে দেশের মাদ্রাসাগুলোতে নিয়মিতভাবে হচ্ছে এবং সেখান থেকে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটাও ঠিকঠাক হচ্ছে। অনুষ্ঠানে এমন মত এসেছে যে পাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ঐচ্ছিক হিসাবে বাংলা পড়ানো হোক, এ থেকে অনুমেয় যে কোন একটা সময় তারা চাইবে তাদের বাংলাদেশের বন্ধুরা বলুক যে আমরা উর্দুকে ঐচ্ছিক হিসাবে চাই! অবশ্য, আলাদা করে চাওয়ার আছেটা কি? অবিশ্বাস্য আর অগ্রহণযোগ্য হলেও এটাই সত্য যে এখনও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত জায়গা থেকে আমরা উর্দু শিক্ষার সুযোগ তুলে দেইনি! যা হোক, এসব ছাড়াও তারা "হইচই" এর মত প্ল্যাটফর্ম খুলে শিল্পীদের মধ্যে যোগাযোগ তৈরি করতে চায়, তবে সবার উপরে যা চায় তা হল এভাবে কাছাকাছি আসতে-আসতে একদিন বাংলাদেশ আবার পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হোক। ওরা বলছে এখনকার মত তরুণরা যদি সেদিন থাকতো তাহলে বাংলাদেশ কিছুতেই আলাদা হত না, তাই এবার দুই দেশের মধ্যে এক রকমের যৌথ সাংস্কৃতিক আন্দোলন জাগাতে তারা স্থিরপ্রতিজ্ঞ। এখানে উল্লেখ্য যে কনফারেন্সের উদ্যোক্তা ব্যক্তিটি কিছুদিন আগে আমাদের পতাকার লাল গোলকের ঠিক মাঝখানে একটি জ্বলজ্বলে চাঁদ-তারা বসানোর মত ধৃষ্টতাও দেখিয়েছে, তবু তেমন কোন প্রতিবাদী স্বর কোন দিক থেকে শুনতে পাইনি।

পাকিস্তানে আগামী ১৯ নভেম্বর "খেল খেল মে" নামক একটি সিনেমা মুক্তি পেতে চলেছে যেখানে তাদের ভাষ্যমতে তারা নতুন চিন্তা-ভাবনা নিয়ে সামনে এগোনোর বার্তা দিয়েছে। কৌতূহলী হয়ে ট্রেইলার এবং গান দেখলাম। দেখি, বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে কাব্য করে বলা হয়েছে, "চল, দুজন মিলে ক্ষমা চাই"। প্রশ্ন হল, এই দু`জন মিলে ক্ষমা চাওয়ার কথাটা আসছে কেন? মূলত এই চাওয়ার পেছনে উপলক্ষ হয়েছে দেশে আটকে পড়া বিহারীরা। ইদানীং যতবার আমরা বলি ওরা সেদিন গণহত্যা করেছিল,ততবার ওরা বলে,  তোমাদের মুক্তিবাহিনীও তাঁদের মিত্রবাহিনীকে সাথে করে বিহারীদের উপর গণহত্যা চালিয়েছিল। আজ সম্পর্ক উন্নয়নের দোহাই দিয়ে পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারটা যখন আরও একবার আলোচনায় উঠতে শুরু করেছে, তখন এ রকম প্রজেক্টের উদ্দেশ্য একটাই- আত্মপলব্ধির পথে না হেঁটে, বরং তরুণদের মধ্যে বিভ্রম ছড়ানো, যাতে করে নিজেদের মধ্যেই বিরোধ আর অবিশ্বাসের শিকার হয়ে আমাদের দাবীটি দুর্বল হয়ে পড়ে আর তাতে করে কালো বাঙ্গালিদের কাছে ক্ষমা চেয়ে একা পাঞ্জাবি মাথা নত না হয়, বরং নত হলে দু`জনেরই হোক! বিভ্রান্তি জাগাতে তারা অনেকটা সফল যে হয়েছে তা ভিডিওগুলোর নিচে বাংলাদেশীদের মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট। ঝাঁকে-ঝাঁকে মতামত আসছে যে তারা নাকি "সত্য" কিম্বা "সম্পূর্ণ" ইতিহাস কোনদিন জানতে পারেনি, এতদিন কেবল একপেশে কথাই শুনে এসেছে, তাই এই চলচ্চিত্রটির জন্য এখন খুব আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায়! এমন অমেরুদণ্ডী প্রজন্মও দেখতে হবে সেটা কখনও ভাবিনি, তবে ভাবনার বাইরেই তো বেশীটা হচ্ছে, তাই অবাক হচ্ছি সে কথা বলতে পারি না। কেবল এটুক ভাবতে বাধ্য হই যে, এতকাল শুনে এসেছি আমরা দেখতে যেমন-তেমন হইও যদি, মেধা ও মননে আমাদের জুড়ি মেলা ভার। তো এই কোটি-কোটি প্রজ্ঞাবানদের মাঝ থেকে কারও কি একবার বোধ হচ্ছে না যে সময়টা এখন-ই কেন? কেন পাকিস্তান আবারও ওদের ঘেরাটোপে আমাদের টেনে নিতে এত তীব্রভাবে আগ্রহী? ১৫ বছর আগেও যাদের আমাদের দিকে ফিরে তাকানোর রুচি হত না, কেন আজ তারাই তোঁতাপাখির মত ঐ দেশ গড়ার আন্দোলনে বাঙ্গালি মুসলমানের অবদানের কথা কপচাচ্ছে? আজ জিডিপি থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে, আর ওদের পায়ের তলায় সামান্য মাটিটুকুও নেই। এ অচলাবস্থা কাটাতে শর্ট-কাট খুঁজবে আর খুঁজতে গিয়ে চুপসানো স্বপ্নের গোঁড়ায় আবারও পানি ঢালতে শুরু করবে, ওদের জন্য এটাই হয়ত স্বাভাবিক। ফলে সোশ্যাল মিডিয়া হোক বা মূল, সবখানে ওরা খোলামেলা আলাপ করছে একটা ফেডারেশানের সম্ভাবনার, দুই দেশের কারেন্সি এক করবার, এমনকি আমাদের রিজার্ভ থেকে ওদের সমস্যা দূর করবার। এসব বাস্তবায়ন করতে হলে দু`দেশের মানুষের অবশিষ্ট মানসিক দূরত্ব ঘোচানোর দরকারটাও ওরা বুঝেছে, আর তাই সর্বশক্তি দিয়ে বাঙ্গালিয়ানা ভুলিয়ে দিয়ে,কেবল ধর্মীয় অনুভূতিতে সুড়সুড়ি দিয়ে নির্লজ্জ অর্থনৈতিক সুবিধা তুলে নিতে ওদের এই জোর উদ্যোগ চলছে। আর খোলা চোখে সবটা দেখেও এই যে আমাদের মুখ ফিরিয়ে থাকা, এর ফলাফলটাও এরই মধ্যে সামনে আসতে শুরু করেছে।

ইউটিউবে অন্তত ৮-১০ টি পাকিস্তানি "রিএকশান" চ্যানেল আছে যেগুলো কিনা লাগাতার ভারত এবং হিন্দু বিদ্বেষ ছড়ানোর কাজ করছে। এর মধ্যে কম পক্ষে একটির পেছনে আইএসআই এর সরাসরি হাত থাকার সম্ভাবনা প্রবল। এসব চ্যানেলের কোন-কোনটিতে লক্ষাধিক বাংলাদেশী সাবস্ক্রাইবার আছে যা হাল্কাভাবে নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। কারণ, বাংলাদেশের যে কোন ঘটনা, তা সে বায়তুল মোকাররামে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনার প্রতি হুংকাররত মোল্লাদের কিম্বা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নানা ভিডিওচিত্র হোক, কিম্বা সাম্প্রতিক পাক-ইন্ডিয়া ম্যাচের পর "পাকিস্তান জিন্দাবাদ" বলে নাচানাচির দৃশ্য হোক, সবই মুহূর্তের মধ্যে এসব চ্যানেলে থেকে আরও বেশী করে ছড়িয়ে পড়ে। যেমন ভাবে ছড়ায় বাংলাদেশী মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের গাওয়া উর্দু গজল, মামুনুল হক ও আজহারিদের বিষাক্ত ওয়াজের মত আরও অনেক কিছু। শুধু এই নয়, ও তরফ থেকে কখনও ধুয়ো তোলা হয় যে ভারত, বাংলাদেশকে দু`টুকরো করতে চায়, আবার কখনও বলে বাংলাদেশ-ই "সেভেন সিস্টার স্টেটস"-গুলো ভেঙ্গে নিতে ভারতে সন্ত্রাসী ঢোকাচ্ছে! আরেকটি প্রচারণাও পাখা মেলেছে, তা হল পাক-বাংলাদেশ "দোস্তি" কেবল উভয়ের অর্থনীতির জন্যই নয়, ইসলামের হাত মজবুত করতেও জরুরী। বিস্তর হিন্দু বিদ্বেষী কথার পাশাপাশি বলা হচ্ছে যে পাকিস্তানের আসল মালিক হল বাংলাদেশের মুসলিমরাই। এছাড়াও বস্তাপচা কিছু রূপকথাও উঠে আসছে যেমন, নিরানব্বই হাজার পাকিস্তান সেনা সেদিন হারেনি, কিম্বা বঙ্গবন্ধু আসলে স্বাধীনতা চাননি, চেয়েছিলেন স্বনির্ভরতা, ইত্যাদি। এগুলো নিয়ে ভাবনার খুব কিছু ছিল না যদি না একটা বড় সংখ্যক মানুষকে দেখতাম সহমত হতে। বাংলাদেশকে সাথে করে পাকিস্তানীরা প্রকাশ্যেই একদিকে কাশ্মীরের সমস্যা সমাধানের স্বপ্ন দেখছে, আবার গাজা-এ-হিন্দেও বাতাস দিচ্ছে। কথা হল, এই লাখো সাবস্ক্রাইবাদের একটা ভাল অংশ আমাদের মফস্বল এলাকাগুলোর নানা কোণায় ছড়িয়ে আছে। এমন লাগাতার মগজ ধোলাইয়ের পর এদের মধ্যে যে কেউ সেদিন প্রতিমা ভাংতে বা মন্দির লুট করতে যায়নি, তার কোন নিশ্চয়তা দিতে পারবে কি কেউ? সর্বস্বান্ত পাকিস্তান বলছে বাংলাদেশ যদি শ্রীলঙ্কার মত অমুসলিম দেশকে অর্থনৈতিক সহায়তা দিতে পারে, তবে ইসলামী রাষ্ট্র পাকিস্তানকে কেন নয়? বরং, এক সময়ের শাসককে সাহায্য করতে পেরে নিজেই নিজের পিঠ চাপড়ানোর সুযোগ কোনভাবে হাত ছাড়া করা উচিৎ হবে না। প্রশ্ন হল, আমরা কি তাইই করতে চলেছি?

একটা সময় ছিল যখন ওরা কেবল আমাদের জমিটুকুই চাইতো, মানুষগুলোকে না। আজ ওরা জমি আর মানুষ দুটোই চায়। মানুষ না পেলে ওদের অশুভ লড়াইয়ে ওদের সাথে মিলে লড়বে কারা? আমাদের পিঠে দাঁড়িয়ে ওদের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে সতেজ করবার যে স্বপ্ন, তা শুধু তখনই সম্ভব যদি দ্বীনি কর্তব্য ভেবে ওদের জন্য আমরা নীরবে পিঠ পেতে দেই। কাজেই, মানুষগুলোকে আজ বড় দরকার, তারও বেশী দরকার ওদের সকল আগ্রাসনের মুখে আমাদের নীরবতা। আর তার ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছে বিগত ২০ বছরে ব্যাঙের ছাতার মত জেগে ওঠা অগুন্তি টিভি চ্যানেল আর পত্র-পত্রিকা। ঘরে-ঘরে ঢোকার সুযোগে প্রতিদিন চ্যানেলগুলোতে গোঁড়ামোর আসর বসে। একটা সময় ছিল যখন দেশ এতখানি শুদ্ধবাদীতার পথে হাঁটছিল না, তবু মানুষগুলো ধার্মিক হবার পাশাপাশি মানবিকও ছিল। আজ আশেপাশে তাকালে কি দেখি? আরে ভাই, ধর্ম তো মানুষের জন্য, যে মানবিক-ই নয়, সে ধার্মিক হয় কিভাবে? যত বেশী  বজ্রগেঁরোতে সবাইকে একই ছাঁচে ঢালার চেষ্টা চলছে, ততই যেন সমাজে অস্থিরতা, অবিশ্বাস, অসহনশীলতা বেড়ে চলেছে। অন্যান্য যে দেশগুলো এই পথে হেঁটেছে, তারাও কি কোন সুস্থ সমাজ উপহার দিতে পেরেছে? পত্রিকাগুলোর দিকে তাকালে রোজ দেখি "নূরানি আমল লাভের ৫টি সহজ উপায়"। অথচ আজ অবধি দেখলাম না কেউ লিখেছে যে পাকিস্তানে জামায়াত-ই-ইসলামের আমির তার ফেসবুক থেকে লাইভ করে বলেছে বাংলাদেশে আজও দ্বি-জাতি মতবাদ বেঁচে আছে। পাকিস্তানের প্রধান একটি টিভি চ্যানেলে বসে যখন ওরা আমাদের ইকোনোমি নিয়ে কিছু বলে, তখন আমরা বগল বাজিয়ে ফোসকা তুলে ফেলি। অথচ ওরা যখন বলে "আজকের বাংলাদেশ, আগামীর পাকিস্তান"-তখন সেই ঔদ্ধত্যের কথা কোন শিরোনামে আসে না! ইউটিউবের বাইরেও বিভিন্ন গেমিং প্ল্যাটফর্মে এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে ওরা সমমনা বাংলাদেশীদের সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে চলেছে। বাংলাদেশ, ইউকে, মালয়েশিয়া থেকে স্কাইপ করে এদের কারও-কারও কে বাংলা শিখতে, ভিডিওর ডেস্ক্রিপশান লিখতে সাহায্য করা হয়। এত কিছুর পরেও কারও টনক নড়ছে কি?

ইমরান খানের জন্য বাংলাদেশ ভ্রমণ করা খুব জরুরী। ওরা জানে "শুভেচ্ছা, স্বাগতম" বলে আপ্লুত হবার লোকের অভাব এদেশে হবে না। এতে ভারতকে শক্ত বার্তা দেওয়াই হবে না, নিজের দেশে বিরোধীদেরকেও বলা হবে যে কাশ্মীরের বেলা কিছু না পারলেও, পাকিস্তান-বাংলাদেশ, এই দু-দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে সে যা করতে পেরেছে,তা আর কেউ পারেনি। আফগানিস্তের ইস্যু একটি সিকিউরিটি ইস্যু, পৃথিবী শুধু ঐ এক প্রিজমের মধ্য দিয়েই পাকিস্তানকে দেখে। পশ্চিমাদেশগুলো যেটুকু সহ্য করে, তা স্রেফ এ কারণেই করে। জিও-পলিটিক্সে ওদের পারমানবিক শক্তি একটা ডিটারেন্স হয়ে ক্ষেত্র বিশেষে কাজ করলেও, জিও-ইকোনোমিতে প্রবল কোন বারগেইনিং ক্ষমতা এ কারণে পাকিস্তান ভোগ করে না। ইমরান আহমেদ খান নিয়াজী যে এই অঞ্চলে বা এর বাইরেও, জিও-ইকোনোমিক্যালি সে রকমভাবে পাকিস্তানের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে পারেনি, সে কথা ওদের আর্মি বুঝে গেছে। তাই এ মুহূর্তের গরম খবর হল ইমরানের যাওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গেছে, তবে তার পরিবর্তে কে আসবে এবং কি ভাবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। এর মধ্যে ইভিএম বিল পাশ করানোর মত দু-চারটে স্টান্টবাজী করে দেখালেও শেষতক এই যথেষ্ট নাও হতে পারে। এই টানাপোড়েনের মাঝে ইমরান চায়না আর টার্কিকে দিয়ে চাপ প্রয়োগ করিয়ে হলেও যদি বাংলাদেশে আসতে পারে, তবে তেহরিক-এ-ইনসাফের জন্য জাতীয় নির্বাচনের আগ দিয়ে এটা অনেক বড় শো-ডাউন হবে। সবই হল, কথা রয়ে যায়, আমরা কি পাচ্ছি? ভারতের প্রতি ক্ষোভ মানেই কি পাকিস্তানের বাহু বন্ধনে গিয়ে ধরা দেওয়া? ভারত আমাদের অনেক বড় বাস্তবতা, আজ থেকে ১০ বা ২০ বছর পর যে উচ্চতা ওরা ছোঁবে, তাতে ভারতের সাথে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে চলাতেই আমাদের লাভ। অন্যদিকে, পাকিস্তানের সাথে এ প্রেমে আমরা কি পাবো? আমাদের কতটুকু পণ্য ওরা নিচ্ছে বা নিতে আগ্রহী? ওরা চাইছে যে কোন মূল্যে বাংলাদেশে ওদের জন্য অবারিত সুযোগ তৈরি হোক, এতটুকুই। কিন্তু ওদের সাথে এই ঘেঁষাঘেঁষিতে আন্তর্জাতিক মহলে আমাদের সার্বিক অবস্থানটাই বা কোথায় গিয়ে ঠেকবে?

শেষ করতে চাই ঈশপের গল্প দিয়ে। যতটুকু মনে পড়ে, একটি গাছে কোন একটি রসালো ফল ঠোঁটে করে এক পাখি বসে ছিল। নিচ থেকে যাচ্ছিলো এক ক্ষুধার্ত শেয়াল। ফলের দিকে চোখ যেতেই ধূর্ত শেয়াল ফন্দি খুঁজতে লাগে যে কোন ভাবে ওটা হাপিস করার। বুদ্ধিও খেলে যায়! পাখিটিকে উদ্দেশ্য করে শেয়াল নানান প্রশংসা করতে লাগে। বেশ খানিকক্ষণ পর পাখিটি যখন ভীষণ খুশি হয়ে পালটা কিছু বলতে মুখ খুলেছে, ওমনি টুপ করে ফল মাটিতে! শেয়াল কি আর বসে থাকার বান্দা? ফলটি পলকে মুখে তুলে তখন সে ভোঁ করে গভীর বনে গেলো পালিয়ে। এখানেই গল্প শেষ। এরপর পাখি সে ফল আর খুঁজে পেল কি-না, কিম্বা শেয়ালের থেকে আরও কোন ধূর্ত প্রাণী ফলটি জিতে গিয়েছিল কি-না, তা গল্পে বলা নেই। সেটা বিষয়ও না। গল্পটা মিথ্যা স্তবে তুষ্ট হয়ে রসালো ফলটি হারিয়ে ফেলার। আরও ভেঙ্গে বলি, এই সামান্যকাল আগে আমাদের পূর্বপুরুষেরা মর্যাদার লড়াই লড়েছিলেন। তাঁদের পেটে অন্ন, গায়ে ঠিক মত বস্ত্র ছিল না। চাকরী হোক কিম্বা খেলাধুলা, মিলিটারি হোক বা ব্যবসা -কোথাও সমান সুযোগ ছিল না,এমন কি নিজ ভাষাতে পড়াশোনার সম্ভাবনাটুকও যেতে বসেছিল। তবু, হারাবার মত অনেক কিছু সেদিনও ছিল। এরপর এক জাদুকরের সম্মোহনী ডাকে সাড়া দিয়ে সব হারাবার ভয় বুকে পুষেও অজানার উদ্দেশ্যে পা বাড়িয়ে ছিলেন ওঁরা । সেদিন পেছনে কেউ ভাতের থালা ফেলে গিয়েছিল, কেউ প্রসূতি স্ত্রী কিম্বা প্রিয় স্বামী, বৃদ্ধ মাতা-পিতা, কোলের শিশু, ছোট্ট ভাই-বোন, স্বজন, আরও কি না? নিশ্চয়ই জানতেন ফেলে যাওয়া জায়গায় কেউ দ্বিতীয়বার ফিরতে পারে না। ফিরে এসে কাকে-কাকে আর পাওয়া হবে না, সেই ভয় কি দোলা দেয়নি? মনে কি হয়নি যে নিজেও ফিরতে না পারি? তবু, যেতে-যেতে ভেবেছিলেন ওঁদের এই যাওয়াটাকে ফেলে আসা মানুষগুলো নিশ্চয়ই সার্থক করে তুলবে। নিশ্চিত মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে কি শুধু আরেকবার নতুন ভোর দেখতে ইচ্ছা করেনি? যখন পাষণ্ড হানাদার বাহিনী সিলিং থেকে ঝুলে থাকা তরুণীর স্তন কেটে নিচ্ছিলো, তখন সেই তীব্র যন্ত্রণায় তাঁর কি শুধু আরেকটাবার মায়ের স্পর্শ পেতে ইচ্ছা হয়নি? প্লায়ারস দিয়ে টেনে-হিঁচড়ে ওরা যখন কোন যুবকের নখ উপড়ে ফেলছিল, তখন কি তাঁর হঠাত ফেলে আসা ছোট্ট শিশুর তুলতুলে আদরে কিম্বা ভাই-বোনের খুনসুটির কাছে ফিরতে মন চায়নি? হয়েছে সবই, তবু তাঁরা দিকভ্রষ্ট হননি। ভেবেছিলেন, না হয় আমাদের বিনিময়ে হলেও ওরা বাঁচুক মাথা তুলে, স্বাধীন দেশের, মুক্ত মানুষ হয়ে। আজ আমাদের অনেক আছে। দু`পকেটে চারটে করে আই ফোন, ব্যাংকে অগাধ অবৈধ টাকা, ঘরে স্ত্রী বা স্বামী আর বাইরে মনের মানুষ- সব। যা নেই তা হল মর্যাদাবোধ। রসালো এই ফল আমরা স্বেচ্ছায় আজ মাটিতে ফেলতে রাজী।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছোট বেলা থেকেই প্রস্তুতি প্রয়োজন


Thumbnail

১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার।  জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?

১৯৯৫ সালে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেই, ১৭তম বিসিএস। জীবনে একবারই এই পরীক্ষা দেই। উত্তীর্ণ হই। সাড়ে আট বছর চাকুরী করেছি, ছেড়েও দিয়েছি । সে অন্য প্রসঙ্গ। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন ছিল, ল্যাপটপ কি ? অপশন ছিল- ছোট কুকুর, পর্বতারোহন সামগ্রী, বাদ্যযন্ত্র ও ছোট কম্পিউটার। উত্তর কি দিয়েছিলাম তা মনে নেই। তবে এটুকু মনে আছে যে, আমি উত্তরের জায়গায় ছোট কম্পিউটারে টিক দেইনি। জীবনে যে জিনিসের নামই শুনিনি তাতে টিক দেই কেমনে ? সেকালের কোন গাইড বইতে এ ধরণের কোন প্রশ্ন বা তার উত্তর নেই বলে শুনেছি। পরীক্ষার্থীদের প্রায় ৯৯ ভাগ সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। গাইড পড়ে এ ধরণের প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। তবে যারা আধুনিক প্রযুক্তি বা অনাগত প্রযুক্তি সম্পর্কে ধ্যান ধারণা রাখে তারা সঠিক উত্তর দিয়েছিল।

ঘটনাটি মাথায় এলো সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও দেখে। সেখানে দেখলাম হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রী হুড়োহুড়ি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ঢুকছে। শুনলাম তারা আসন্ন বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিবে। ভিডিওটি আবার দেখার জন্য গুগলে অনুসন্ধান করলাম- 'ঢাবি লাইব্রেরিতে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের ভিড়'। সেখানে দেখি শত শত খবর। প্রতি বছর নাকি এমনটি হয়। লাইব্রেরিতে ঢুকতে হুড়োহুড়ি। পরীক্ষার আগে নাকি সেখানে এমন যুদ্ধ চলে। বিসিএস কি দু এক মাস বা দু এক বছরের প্রস্তুতির ব্যাপার ? একবার পরীক্ষা দিয়ে আমার কাছে তা মনে হয়নি। আমার মতে, এর জন্য সমগ্র শিক্ষা জীবন ধরে প্রস্তুতি প্রয়োজন। এটি আমার একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত। আমার সাথে অনেকেই একমত নাও হতে পারেন।

ছোট কাল থেকে নিয়মিত অধ্যাবসায়ের পাশাপাশি নিয়মিত সংবাদপত্র পড়া প্রয়োজন। জগৎ সংসার, দেশ বিদেশ, বিজ্ঞান, সাহিত্য, রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস, ভূগোল, খেলাধুলা বিষয়ে খোঁজ খবর রাখা দরকার। কোন একটি দেশি বা বিশ্ব ইভেন্ট চলছে। সেটি চলাকালে দৈনন্দিন খোঁজ খবর রাখার পাশাপাশি ওই ইভেন্টের অতীত জেনে নিলেন। কবে থেকে ইভেন্টটি চলছে, কোথায় সেটি শুরু হয়েছিল, সেটি জেনে নিলেন। নিয়মিত সংবাদপত্র পড়লে বা টিভি সংবাদ দেখলে সেগুলি আপনা আপনি জেনে যাবেন।

তবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য একটু প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। আমি নিয়েছি এক সপ্তাহের। তাও ইন্টার্নি চলাকালে ডিউটির ফাঁকে ফাঁকে। আপনি এর জন্য সর্বোচ্চ এক মাস বরাদ্ধ রাখতে পারেন। বাংলা সাহিত্য ও ইতিহাস অংশে কিছু সাল মনের মধ্যে গেঁথে নেয়ার জন্য গাইড বইটি একটু চোখ বুলাতে পারেন। যে সব বিষয়ে দুর্বলতা রয়েছে সেগুলো একটু দেখতে পারেন। অংকের ফর্মুলা গুলো একটু ঝালাই করে নিতে পারেন। সমসাময়িক বিশ্ব বিষয়ে অনেকের দুর্বলতা থাকে। সংবাদপত্রের এ অংশটুকু প্রায়ই এড়িয়ে যাওয়া হয়। এ অধ্যায়টিও দেখে নিতে পারেন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আগে যদি এর চেয়েও বেশি সময় প্রয়োজন হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার দুর্বলতা অনেক। বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছোট বেলা থেকে আপনার প্রস্তুতি নেই। সেক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাবে। লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

মতিউর রহমানই প্রথম আলো বিক্রির প্রধান বাঁধা?


Thumbnail

দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

শুধু কর্ণফুলী গ্রুপই নয়, প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করতে স্কয়ার গ্রুপের সাথেও বেশ অগ্রসর হয়েছিলেন মতিউর রহমান। এর মধ্যে বসুন্ধারাসহ আরও কয়েকটি গ্রুপ এতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু আমার জানা মতে সর্বশেষ এস আলম গ্রুপ এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য বেশ অগ্রসর হয়েছে এবং তারাই এখন সবচেয়ে অগ্রগামী। কিন্তু এস আলম গ্রুপ কেনার জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। কারণ উনি দেখছেন যে, একমাত্র কর্ণফুলী ছাড়া অন্য যে কোন গ্রুপে গেলে তার সম্পাদক পদের নিশ্চয়তা নেই।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, যারাই ‘প্রথম আলো’ প্রতিষ্ঠানটি ক্রয় করুক না কেন, তারা মতিউর রহমানকে প্রথম দিকে রাখলেও পরবর্তীতে তারা পরিবর্তন করবে। যদি প্রথম আলোতে কেউ সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন, আমার ধারণা আনিসুল হক আসতে পারেন। কারণ আনিসুল হক সবার কাছে যেমন সম্মানিত তেমনি জ্ঞানী ব্যক্তিত্বের অধিকারী।

‘প্রথম আলো’ প্রতিষ্ঠানটি যদি এস আলম গ্রুপ কিনে নেয় তাহলে প্রধান বাঁধা হবে মতিউর রহমান। কিন্তু তার বাঁধা টিকবে না। কারণ কোন প্রতিষ্ঠানের যদি ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্ব দেখা দেয় তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানটি কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ‘প্রথম আলো’ নিজেদের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের ফলে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে চরম দ্বন্দ্ব বিরাজ করছে। সাধারণত যার যার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে তারা দেখবে। সরাসরি না হলেও প্রথম আলোর মতিউর রহমান এই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে গেছেন। যদিও মতিউর রহমান বিভিন্নিভাবে বিষয়টি প্রকাশ করে বুঝাতে চেষ্টা করছেন যে, এতে উনার কোন আগ্রহ নেই। 

তবে এর আগে থেকেই কিছু গণমাধ্যমে এসেছিল যে, মতিউর রহমন ও ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনাম এই দ্বন্দ্বে জড়িত রয়েছেন। যদিও বিষয়টি তাদের মধ্যকার বিষয়। কিন্তু এখন প্রথম আলো বিক্রিতে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন মতিউর রহমান। অচিরেই এই বাঁধা অতিক্রম করে ‘প্রথম আলো’ বিক্রি হবে এবং প্রতিষ্ঠানটি কিনবে এস আলম। কারণ এস আলম একজন বিচক্ষণ ব্যবসায়ী। তিনি ব্যবসাতেই যুক্ত হচ্ছেন ব্যর্থ হচ্ছেন না। বরং সফল হচ্ছেন।

‘প্রথম আলোর’ কেনার জন্য দেশে যেসব কর্পোরেট হাউজগুলো আছে তাদের অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে। তবে এক একজনের আগ্রহ একেক কারণে। কেউ চান প্রথম আলোর জনপ্রিয়তা ও অভিজ্ঞ জনবলের কারণে, আবার কিছু কর্পোরেট হাউজের ইচ্ছে হলো ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্ব একেবারে কমিয়ে আনা। এসব বিভিন্ন কারণে আগ্রহ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

তবে আমার বিশ্বাস প্রথম আলো বিক্রিতে যে প্রধান বাঁধা মতিউর রহমান। তার বাঁধা টিকবে না। অবশেষে প্রতিষ্ঠানটি একটা কর্পোরেট হাউজের হাতেই যাবে। আমার ধারণা মতে, এস আলম গ্রুপই প্রথম আলোকে কিনতে সক্ষম হবে। আমরা হয়ত কয়েক মাসের মধ্যেই দেখব যে, প্রথম আলোর নতুন মালিক হিসেবে আরেকটি কর্পোরেট হাউজ এসে দাঁড়িয়েছে। প্রথম আলোতে বর্তমানে যারা অভিজ্ঞ সাংবাদিক আছেন যারা শিক্ষিত তাদেরকে ইতোমধ্যে অনেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান অভিজ্ঞ লোকদের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। 

আমার ধারণা, এ পর্যায়ে প্রথম আলো বিক্রি কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। এমনকি মতিউর রহমানের চেষ্টাও সফল হবে না। তবে আমার সবসময়ের আকাঙ্খা, সংবাদপত্রের সাথে যারা জড়িত তাদের চাকরি যেন অবশ্যই নিশ্চয়তা থাকে। কারণ এরা দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, নিজেদেরকে একটা পর্যায়ে এনেছেন আর এদের চাকরি অবশ্যই থাকতে হবে এবং তাদের যে মেধা, সেই মেধা থেকে জাতি যেন বঞ্চিত না হয়।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

এক বছরের রাষ্ট্রপতির যত অর্জন


Thumbnail

আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।

দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।

আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।

গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে, তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও একই ভাবে থেকেছেন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।


রাষ্ট্রপতি   মো. সাহাবুদ্দিন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনা ছাড়া কেউই অপরিহার্য নয়


Thumbnail

প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।

আওয়ামী লীগ যদি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সেটি ভিন্ন কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি টিকে থাকতে চায় তাহলে দলকে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। এটা এখন সময়ের দাবি। যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তারা ইনিয়ে বিনিয়ে এখন নানান অজুহাত তৈরি করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের উচিত হবে এ সমস্ত অজুহাত না শোনা। কারণ যিনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত পরিপন্থি কাজ করেছেন এটা সুস্পষ্ট। সুতরাং এখানে দল উচিত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দল করলে তাকে দলীয় শৃঙ্খলা মানতেই হবে। অনথায় দল থেকে বাদ দিতে হবে। যারা দলীয় সিদ্ধান্তের পরিপন্থী কাজ করেন তারা কখনই দলের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এদের মত আট-দশ দলে না থাকলে আওয়ামী লীগের কিছু যায়-আসে না। একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক ছাড়া আর কেউই আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। শেখ হাসিনাই কেবল মাত্র আওয়ামী লীগ এবং দেশের স্বার্থে অপরিহার্য। সুতরাং, এখন আমরা দেখতে চাই শৃঙ্খলা পরিপন্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

যারা আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশনা অমান্য করেছেন তিনি দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। দরকার হলে দল থেকে তাদেরকে বাদ দিতে হবে কিংবা বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। শুধু বহিষ্কারই নয়, তাদের প্রাথমিক সদস্য পদও বাতিল করতে হবে। এতে করে কারও যদি এমপিত্ব চলে যায় তো যাবে। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হবে দলের স্বার্থে। তাদের আসনে যে কাউকে নির্বাচন করে জিতে আসতে পারবেন। কোন মন্ত্রী এমপি আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন উপজেলা গুলো প্রার্থী দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দল কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার জন্য গোটা দেশের মানুষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে আছে।

অতীতে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন এমনটি আশা আওয়ামী লীগের প্রতিটি তৃণমূল নেতাকর্মীর। এখন আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় আমরা সেটার অপেক্ষা আছি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার সমালোচনা করলেও কেউই তার বিকল্প খুঁজে পান না


Thumbnail

দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। 

দার্শনিক শেখ হাসিনা এখন আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। এতদিন তিনি ছিলেন আগে রাষ্ট্রনায়ক পরে এবং দার্শনিক। এখন তিনি আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। কারণ তিনি একের পর এক দর্শনকে যেভাবে স্থায়ী রূপ দিয়ে যাচ্ছেন তাতে এদেশের সকলের মনোবলও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভাতেও তিনি দর্শনের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তিনি পুরনোদের সাথে নতুনদের যুক্ত করে নেতৃত্বের একটি চমৎকার ভারসাম্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। যা আমরা এই ১০০ দিনে বুঝতে পেরেছি এই নতুন মন্ত্রিসভার কাজকর্মে। সেদিক থেকে আমি অনুধাবন করতে পারি যে, এই ১০০ দিনে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত শতভাগ সফল।

গোটা বিশ্ব এখন যুদ্ধের মধ্যে পড়েছে। করোনার পর থেকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে টলটলয়মান করে দিয়েছে। এখন আবার নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে। বলা যায় বিশ্বে একটা মিনি বিশ্ব যুদ্ধ চলছে। গাজায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরকম পরিস্থিতিতে দার্শনিক শেখ হাসিনার সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। তবে আশার কথা যে, এখন পর্যন্ত তিনি সঠিক পথে আছেন এবং সফল ভাবে পুরো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। বিশ্বের অস্থির পরিস্থির কথা অনুধাবন করে তিনি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন। যেমন-বিশ্ব বাজারে নতুন নতুন বাজারের সন্ধান। আমাদের যেন খাদ্য ঘাটতি পড়তে না হয় সেজন্য তিনি আগাম আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতেও তিনি জোরালো ভাবে আহ্বান করেছেন। 

একজন জেনারেলকে কীভাবে বিচার করা হয়? তিনি কয়টি ব্যাটল জয় করলেন সেটা দিয়ে কিন্তু নয়। তাকে বিচার করা হয় যখন তিনি একটা ব্যাটলে হেরে যান এবং তার সৈন্যরা যখন পুরো ভেঙে পড়েন ঠিক সে সময় তিনি কীভাবে তার সৈন্যদের উজ্জীবিত করতে পারলেন সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়। দার্শনিক শেখ হাসিনাও সে রকম একজন জেনারেল, যে জেনারেল কঠিন সময়ে সাধারণ জনগণকে সবচেয়ে কম কষ্টে রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও যেন তিনি সফল ভাবে নিয়ে যাবেন সেটা বলাই বাহুল্য। অনেকে তার সমালোচনা করছেন ঠিক কিন্তু কেউ তার বিকল্পের কথা বলতে পারছেন না। তিনি দলকে যেমন ধরে রেখেছেন বা নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঠিক তেমনিভাবে সরকারকেও সঠিক পথে পরিচালনা করছেন। সুতরাং শেখ হাসিনার বিকল্প যে শেখ হাসিনাই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। নতুন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মত সামনের দিনগুলোতে সাফল্য ধরে রাখবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন