দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঘোড়া ছুটছেই। বিশেষত নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের মাত্রাতিরিক্ত দামে নাভিশ্বাস উঠেছে সীমিত আয়ের মানুষের। অনেকে প্রয়োজনের তুলনায় কম পণ্য কিনে ঘরে ফিরছেন। কেউ কেউ দামের নাগাল না পেয়ে ফিরছেন খালি হাতেই। তবে গত কয়েক সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি অস্থিরতা দেখা দিয়েছে মাছের বাজারে। দাম এতোটাই বেড়েছে যে, সস্তা দরের তেলাপিয়া-পাঙাশের কেজিও ২০০ টাকা ছাড়িয়েছে। যা এখন দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালের বাইরে।
শুক্রবার (১৬ জুন) সকালে রাজধানীর মিরপুর বাজারে মাছ কিনতে এসে সোহাগ বিশ্বাস বলেন, ‘চাষের পুটি মাছ ৮০০ টাকা কেজি। আড়াইশো গ্রাম চাইছি, দেবে না। ২০০ টাকা নিয়ে মাছ কিনতে এসে কোনো মাছ পাইনি। খালি হাতে ফিরে যাচ্ছি। আগে আধা কেজি কাচকি মাছ ২০০ টাকায় হয়ে যেত। না হয় এ টাকায় এক কেজি সাইজের তেলাপিয়া বা পাঙাশ কিনতাম। এখন সেটাও হচ্ছে না। এতো দাম হলে তো আমাদের পক্ষে মাছ কিনে খাওয়া কঠিন।’
বাজারে মুরগি, গরু ও খাসিসহ সব ধরনের মাংসের দাম মাসখানেক ধরেই চড়া। দেড় মাস আগেও ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৪০-১৫০ টাকা, যা এখন ২২০ টাকার বেশি। আর গত রমজানের পর থেকে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০০ টাকা। বর্তমানে যা বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকা দরে। খাসির মাংসের দাম ১২৫০ টাকায় উঠেছে।
মাংসের অতিরিক্ত দামের কারণে সীমিত আয়ের মানুষেরা তেলাপিয়া বা পাঙাশের মতো সস্তা দামের মাছের দিকে ঝুঁকছিলেন। ঠিক তখন থেকেই মাছের দামও বাড়তে শুরু করে। এরই মধ্যে তেলাপিয়া ও পাঙাসের দামও কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর ভালো চাহিদার মাছের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
রাজধানীর মহাখালী, মোহাম্মদপুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের দাম এখন প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও যা ছিল ২২০ থেকে ২৩০ টাকার মধ্যে। অন্য মাছের মধ্যে মাঝারি ও বড় আকারের চাষের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছের দাম প্রতি কেজি ৩৪০ থেকে ৪০০ টাকা। এসব মাছের দামও সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর উন্মুক্ত জলাশয়ের (নদ-নদীর) মাছ কিনতে ক্রেতাকে কেজিপ্রতি গুনতে হচ্ছে আরও ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি।
বাজারে পাবদা, টেংরা, কই, বোয়াল, চিতল, আইড় ও ইলিশ মাছের যে দাম, তা নিম্নবিত্ত তো বটেই, মধ্যবিত্তেরও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামও কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ পর্যন্ত টাকা বেড়েছে।
মোহাম্মদপুর বাজারের মাছ বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, ‘পাইকারি বাজারে মাছের টান। খুব চড়া দাম। আমরা মাছ পাচ্ছি না। পেলেও অনেক বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে।’
তিনি বলেন, সামনে কোরবানির ঈদ হওয়ায় ও মাংসের বাড়তি দামের কারণে সাধারণ মানুষ মাছের দিকে বেশি ঝুঁকছেন। কিন্তু চাহিদার তুলনায় জোগান একেবারে কম। এ কারণে দামও বাড়তি। ইলিশের সরবরাহ বাড়লে স্বাভাবিকভাবে অন্য মাছের দাম কমে যাবে। এছাড়া কোরবানির ঈদের পর মাছের চাহিদা কমবে। তখন দামও কমে আসবে।
চড়া দামের বাজারে মাছ-মাংস বাদ দিয়ে যারা সবজির দিকে ঝুঁকছেন, তাদের জন্যও কোনো সুখবর নেই। টানা অস্থিতিশীল সবজির দাম গত সপ্তাহে কিছুটা কমলেও তা আবার বেড়েছে। ৫০ টাকার মধ্যে শুধু গ্রীষ্মকালীন পটল-ঢেঁড়স মিলছে। অন্য সব বারোমাসি সবজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে চাল, ডাল, সয়াবিন, আটা-ময়দা ও চিনিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল হয়ে আছে। আমদানি অনুমতির পরেও দেশি পেঁয়াজের দাম নাগালের মধ্যে আসেনি। বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। তবে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ এখন ৫০ থেকে ৬০ টাকায় মিলছে।
গত রোববার বাজারে ভোজ্যতেল লিটারপ্রতি ১০ টাকা কমিয়ে দাম নির্ধারণ করা হলেও নতুন দামে তেল পাচ্ছেন না ভোক্তারা। ফলে আগের দামে অর্থাৎ প্রতি লিটার ১৯৯ টাকায় কিনতে হচ্ছে। চিনির দাম আগের মত কেজিপ্রতি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি।
মন্তব্য করুন
পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার হ্যালো পিওর গোল্ড
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পবিত্র মাহে রমজানের আগে আবারও বাড়লো চিনির দাম। কেজিতে ২০ টাকা বাড়িয়ে প্রতিকেজি সরকারি মিলের চিনির সর্বোচ্চ খুচরা দাম ১৬০ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি)।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে চিনি ও খাদ্য শিল্প মন্ত্রণালয় জানায়, চিনির এ দাম অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় চিনির বাজার মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিএসএফআইসি কর্তৃক উৎপাদিত চিনির বিক্রয়মূল্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারে রোজা উপলক্ষ্যে চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
এখন থেকে করপোরেশনের ৫০ কেজি বস্তাজাত চিনির মিলগেট বিক্রয়মূল্য ১৫০ টাকা (এক কেজি) ও ডিলার পর্যায়ে বিক্রয়মূল্য ১৫৭ টাকা (এক কেজি) নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া করপোরেশনের ১ কেজি প্যাকেটজাত চিনির মিলগেট বা করপোরেট সুপারশপ বিক্রয়মূল্য ১৫৫ টাকা ও বিভিন্ন সুপারশপ, চিনি শিল্প ভবনের বেজমেন্টে ও বাজারে সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয়মূল্য ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজারে সরকারি চিনির নামে মোড়কজাত করে চড়া দামে বিক্রি করছে কিছু প্রতিষ্ঠান। সবশেষ কেজিপ্রতি ১৪০ টাকা চিনির মূল্য নির্ধারণ করে সংস্থাটি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের জন্য ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ কিনছে ভারত। এই খবরে দেশের বাজারে ব্যাপক দরপতন শুরু হয়েছে। সরবরাহ বাড়তে থাকায় খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে অন্তত ৩০ টাকা কমেছে। অথচ রোজা শুরুর আগেও পেঁয়াজের দাম বাড়ছিল। বাজার নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার তখন ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার বিশেষ উদ্যোগও নিয়েছিল।