ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সাদ্দাম হোসেন: সমৃদ্ধি ও ধ্বংসের নায়ক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২:৩০ পিএম, ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮


Thumbnail

সাহিত্যানুরাগী হিসেবে সুনাম ছিল তাঁর। বেশ কিছু উপন্যাস আর কবিতাও লিখেছিলেন তিনি। তবে সব কিছু ছাপিয়ে যে পরিচয়টি বড় হয়ে উঠেছিল তা হলো, উদ্ভট ও নিষ্ঠুর এক স্বৈরশাসক। যিনি নিজ দেশেই রাসায়নিক গ্যাস ও বোমা বর্ষণ করে নির্দ্বিধায় লাখো সাধারণ মানুষ হত্যা করেছিলেন। বলা হচ্ছে, সাদ্দাম হোসেনের কথা। ইরাকের সমৃদ্ধির নায়ক বলা হয় তাঁকে, একই সঙ্গে ধ্বংসেরও।

নিজের ছেলেদের প্রতি অস্বাভাবিক স্নেহশীল ছিলেন সাদ্দাম হোসেন। ছোট ছেলে উদয় হোসেন এক বিয়ের অনুষ্ঠানে আনন্দ উদযাপন করতে গিয়ে গুলিবর্ষণ করেছিলেন। ওই ঘটনায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছিল। এই অপরাধের জন্য সাদ্দাম তাঁর পুত্রকে হাস্যকর এক শাস্তি দিয়েছিলেন। উদয়ের রোলস রয়েস, ফেরারিসহ দামি কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।

১৯৭৯ সালের ১৬ জুলাই ইরাকের পঞ্চম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসেন সাদ্দাম হোসেন। পুরো নাম ছিলো সাদ্দাম হোসেন আব্দুল মজিদ আল তিকরিতি। তাঁর শাসনামলে দেশটি অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধশালী হয়ে ওঠে। সাধারণ মানুষের জীবনমানের উন্নতি ঘটে। তাঁর এক বড় সংস্কার ছিলো ইরাকের তেল সম্পদের জাতীয়করণ। যার ফলে দেশটির বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হয়েছিল এবং ব্যাপক সমৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়েছিল।

দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সাদ্দাম বিরোধীদের ওপরও দমন পীড়ন শুরু করেন। ক্ষমতাগ্রহণের পরপরই তিনি নতুন একটি বাহিনী গঠন করেছিলেন। এর কাজ ছিলো সরকারের জন্য হুমকিস্বরুপ বিভিন্ন ক্ষুদ্র গোষ্ঠী ও বাহিনীকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। তাঁর নির্দেশেই ১৯৭৪ সালে দেশটির দাওয়া পার্টির নেতাদের হত্যা করা হয়। এরপর ’৮০ সালে হাজার খানেক কুর্দি হত্যা এবং ’৮৮ তে রাসায়নিক হামলা চালিয়ে আনুমানিক পঞ্চাশ হাজার থেকে এক লাখ মানুষ হত্যা করেন তিনি। ১৯৯০ সালে এই স্বৈরশাসকের নির্দেশে একটি নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা হয়। যার ফলে ‘মার্শ আরব’ নামক আদিবাসীগোষ্ঠীর বসতভিটা পানির নিচে তলিয়ে যায়।

১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত সাদ্দামের নেতৃত্বে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালিত হয়। প্রায় নয় বছর দীর্ঘস্থায়ী এ যুদ্ধে ইরাকের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। যুদ্ধের মূল কারণ হিসেবে সাদ্দামের উচ্চাভিলাষ ও আগ্রাসী মনোভাবকেই দায়ী করা হয়। বলা হয়ে থাকে, তাঁর স্বপ্ন ছিল পারস্য উপসাগরের ওপর নিজের একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। ১৯৯০ সালে কুয়েতে হামলা চালায় ইরাকি বাহিনী। মাত্র ১৩ ঘণ্টার মধ্যে দেশটির ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয় তারা। সাদ্দাম দাবি করে বসেন, ঐতিহাসিকভাবেই এটি ইরাকের অংশ ছিল। কিন্তু ’৯১ এ মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোটের কাছে হার মেনে যুদ্ধ-বিরতিতে সম্মত হন তিনি।

ইরান এবং কুয়েত দু’টি দেশের ওপরেই অন্যায়ভাবে যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিলেন সাদ্দাম হোসেন। বলা হয়ে থাকে, ইতিহাস কাউকেই ক্ষমা করে না। সীমান্ত বিরোধ, ইরাকের অভ্যন্তরে শিয়া জঙ্গিদের মদদ দেওয়া ও ইরাকি পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারিক আজিজের হত্যাচেষ্টাসহ আরও কিছু অবান্তর অভিযোগ দেখিয়ে দেশ দু’টিতে আক্রমণ চালিয়েছিলেন তিনি। ঠিক একইভাবে ইরাক আক্রমণের সময়ও  তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ সাদ্দাম প্রশাসনের বিরুদ্ধে গণবিধ্বংসী অস্ত্র নির্মাণের মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিলেন। 

২০০৩ সালের ২০ মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইরাকে আগ্রাসন শুরু হলে আত্মগোপনে চলে যান লৌহমানব খ্যাত সাদ্দাম। সেপ্টেম্বরে জন্মস্থান তিকরিতের একটি খামারবাড়ি সংলগ্ন ভূগর্ভস্থ গর্ত থেকে তাকে আটক করা হয়। 

বলা হয়ে থাকে, নিরাপত্তার জন্য সাদ্দাম তাঁর মতো চেহারার বেশ কয়েকজনকে তৈরি করেছিলেন। মার্কিন বাহিনী তাঁকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিয়েছিল। এই বিশেষজ্ঞের প্রথম কাজ ছিল আটক ব্যক্তিই প্রকৃত সাদ্দাম কি না তা নিশ্চিত করা। জন নিক্সন নামের ওই বিশেষজ্ঞ ১৯৯৮ সালে সিআইএতে যোগদানের পর থেকেই সাদ্দামকে নিয়ে অধ্যয়ন শুরু করেছিলেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর নিক্সন জানিয়েছিলেন, আমার দেখা মানুষদের মধ্যে সাদ্দামই সবচেয়ে সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তি। তাঁকে করা প্রতিটি প্রশ্নের জবাবে তিনি আমাকে পাল্টা প্রশ্ন করতেন।

বন্দী অবস্থায় জীবনের শেষ সময়ে সাদ্দাম মার্কিন গায়িকা মেরি জে ব্লাইজার গান শুনতেন নিয়মিত। নিজের এক্সারসাইজ বাইকে চড়তেও পছন্দ করতেন তিনি। মার্কিন রক্ষীরা জানান, জীবনের শেষ দিনগুলোতে সাদ্দাম তাঁদের সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করতেন। তাঁর ব্যবহার দেখে বোঝাই যেত না যে সাদ্দাম হোসেন কোনো এক সময়ে একজন নিষ্ঠুর শাসক ছিলেন।

কিউবান `কোহিবা` সিগার খাওয়ার খুব নেশা ছিল সাদ্দামের। বন্দি অবস্থায়ও তিনি ওই নেশা ছাড়তে পারেননি। অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে ভেজা ওয়াইপে জড়িয়ে একটা বাক্সে সেগুলো রাখতেন তিনি। কিউবার নেতা ফিদেল কাস্ত্রো তাকে সিগার খাওয়া শিখিয়েছিলেন বলে জানিয়েছিলেন সাদ্দাম।

বার্ডেনওয়ার্পার নামের একজন রক্ষী জানান, সাদ্দাম হোসেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আশা করতেন যে তাঁর ফাঁসি হবে না। নতুন করে কোনো নারীর সঙ্গে প্রেম করার ইচ্ছা পোষণ করতেন সাদ্দাম। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে আবারও বিয়ে করার ইচ্ছা ছিল তাঁর।

বন্দিশালাতেও নাস্তার ব্যাপারে খুঁতখুঁতে স্বভাব ছিল সাদ্দামের। ডিমের অমলেট টুকরো হয়ে গেলে, সেটা আর খেতেন না তিনি।

২০০৬ সালের ডিসেম্বরে ঈদের দিনে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় সাদ্দামের। কিন্তু ইরাকের বহু মানুষ এখনো বিশ্বাস করে এই লৌহমানব এখনো বেঁচে আছেন। তাদের দাবি, সাদ্দাম মারা যায়নি। যাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে সে সাদ্দামের মতো দেখতে অন্য কেউ।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ

 



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মার্ক জাকারবার্গকে টপকে তৃতীয় শীর্ষ ধনীর আসনে ইলন মাস্ক

প্রকাশ: ০৬:৩৩ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মার্ক জাকারবার্গ টপকে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনীর অবস্থানে উঠে এসেছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। ফলে বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় ধনীর জায়গা দখল করতে চলেছেন তিনি। 

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেটার শেয়ার বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে ১১ শতাংশ কমেছে। প্রতিষ্ঠানটি দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে নিজেদের বিক্রয় প্রত্যাশার চেয়ে কমতে পারে এমন পূর্বাভাসের পর এ পতন হয়েছে।

ব্লুমবার্গের বিলিয়নিয়ার সূচক অনুসারে, মেটার শেয়ার পতনের ফলে মার্ক জাকারবার্গের সম্পত্তি কমে এখন ১৫৭ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে। অন্যদিকে ইলন মাস্কের সম্পদ ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার বেড়ে ১৮৪ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

চলতি মাসের শুরুতে এ দুই বিলিয়নিয়ার নিজেদের অবস্থান থেকে ছিটকে যান। গত তিন মাসে টেসলার গাড়ি সরবরাহ কমে যাওয়ায় ২০২০ সালের পর প্রথমবারের মতো জাকারবার্গ মাস্ককে ছাড়িয়ে যান।

এর আগে ফোর্বস প্রকাশিত ২০২৪ সালের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় দেখা গেছে, বিশ্বের শীর্ষ ধনীর স্থান দখল করে নিয়েছেন ফ্রান্সের বিলাসবহুল পোশাক ও দ্রব্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান লুই ভুতোঁ মালিক বার্নার্ড আর্নল্ট ও তার পরিবার। তার সর্বমোট সম্পদমূল্য ২৩৩ বিলিয়ন ডলার।

এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ ১৯৫ বিলিয়ন ডলার।

এ ছাড়া তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছেন অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজস। গত বছরের তুলনায় এবার তার সম্পদমূল্য বেড়েছে প্রায় ৮৫ বিলিয়ন ডলার। তার মোট সম্পদমূল্য ১৯৪ বিলিয়ন ডলার।

১৭৭ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ নিয়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। গতবার সম্পদমূল্য ছিল ৬৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।


মার্ক জাকারবার্গ   ইলন মাস্ক  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্র ও চীন অংশীদার হওয়া উচিত, শত্রু নয়: শি জিনপিং

প্রকাশ: ০৬:১৮ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শত্রুতা নয় বরং অংশীদার হওয়া উচিত। 

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বেইজিং সফরের দ্বিতীয় দিনে শি ও ব্লিঙ্কেনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই তিনি এমন মন্তব্য করেন। খবর বিবিসি 

বৈঠকে মার্কিন কর্মকর্তারা চীনের সঙ্গে রাশিয়া, তাইওয়ান ও বাণিজ্য নিয়ে নানা পার্থক্যের বিষয়টি তুলে ধরেন। 

চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিসিটিভি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বেইজিংয়ের গ্রেট হলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে শি বলেন, গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর দুই দেশ সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি অর্জন করেছে। প্রচেষ্টা আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। 

চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, বেইজিংয়ের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র আরও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেখাবে। যখন এই মৌলিক সমস্যার সমাধান হবে, তখন সম্পর্ক আরও টেকসই, উন্নত ও অগ্রগামী হবে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে বিভিন্নভাবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বেইজিং। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং হি বলেন, তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সীমা লঙ্ঘন করা উচিত হবে না।

ব্লিঙ্কেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তিনি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার বৈঠক করেছেন। তাদের আলোচনা নিবিড় ও গঠনমূলক ছিল।

যুক্তরাষ্ট্র   চীন   শি জিনপিং   অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যে কারণে ভোট দিতে পারলেন না আসামের বিপুলসংখ্যক বাঙালি মুসলমান

প্রকাশ: ০৬:১৩ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের ১৮ তম লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ হয়েছে আজ শুক্রবার। এই পর্বে মোট ৮৮টি রাজ্যের ১ লাখ ৬৭ হাজার ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলে। শেষ হয় সন্ধ্যা ৬ টায়। দ্বিতীয় দফায় আজ ভোট হয় উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্যের বরাক উপত্যকায়।

জানা যায়, গোটা বরাক উপত্যকায় মুসলমান জনসংখ্যা ৫১ শতাংশ। এর মধ্যে করিমগঞ্জে ৬০, হাইলাকান্দিতে ৫৬ এবং কাছাড়ে ৩৭ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান ২০১১ সালের আদমশুমারির হিসাব থেকে পাওয়া। বরাক উপত্যকায় বর্তমানে মুসলমান জনসংখ্যা আরও অনেকটাই বেশি বলে ধারণা করা হয়। এই ভোট ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) পাওয়ার বিশেষ সম্ভাবনা নেই। আর সেই কারণেই আজ শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় তারা যাতে ভোট দিতে না পারেন, সে জন্য ভারতীয় রেল একাধিক ট্রেন বাতিল করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

আসামের নাগরিক সমাজের একাংশ এবং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিরোধী দল মুসলমান প্রধান অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ) অভিযোগ করেছে, ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় ভোট দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মূলত মুসলমান পরিযায়ী শ্রমিক বরাক উপত্যকায় নিজেদের বাড়িতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ একাধিক ট্রেন বাতিল করে তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করছে, যাতে তাঁরা ভোট দিতে না পারেন।

আসাম রাজ্যে ১৪ আসনের মধ্যে আজ শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় পাঁচ আসনে ভোট হচ্ছে। এই পাঁচ আসনের মধ্যে বরাকের তিনটি আসন ২০১৯ সালে করিমগঞ্জ, শিলচর এবং স্বশাসিত পরিষদ বিজেপি পেয়েছিল। এই তিন আসন পাওয়ার সম্ভাবনা এবার প্রায় নেই বলেই কিছুদিন আগে আসামে বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতা মন্তব্য করেছেন।

যেসব ট্রেন বাতিল করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে—আগরতলা–গুয়াহাটি স্পেশাল, গুয়াহাটি–শিলচর এক্সপ্রেস, শিয়ালদা–আগরতলা–কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস, ফিরোজপুর–আগরতলা এবং কুরলা/মুম্বাই আগরতলা এক্সপ্রেস। শিলচর এবং আগরতলা যাওয়ার আরও সাতটি ট্রেন ‘টার্মিনেট’ বা স্থায়ীভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণ ভারত থেকে শিলচর ও আগরতলায় যাওয়ার আরও দুটি ট্রেন এবং গুয়াহাটি শিলচর এক্সপ্রেসের সময় পরিবর্তন করা হয়েছে।

ট্রেন বাতিলের এ ঘটনায় অন্যতম প্রধান বিরোধী দল এআইইউডিএফ নিন্দা জানিয়েছে। দলটির এক মুখপাত্র বলেছেন, তাদের বিরাট সংখ্যক ভোটার আসতে পারছেন না। এই বিরাট সংখ্যক ভোট আটকে আসামে গণতন্ত্রকে গলা টিপে মারছে বিজেপি।

তবে আটকে থাকা ভোটারদের তাদের জেলায় এনে ভোট দেওয়ানোর ব্যবস্থা কিন্তু বিরোধী দল কংগ্রেস বা এআইইউডিএফ এখনো চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক রকিবুজ জামান।

অবশ্য ভারতীয় রেলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ট্রেন বাতিল ও স্থগিতের নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে এক বিবৃতিতে বলেছেন, উত্তর সীমান্ত রেলওয়ের অধীনে লামডিং ডিভিশনে (মধ্য–পূর্ব আসাম) জাতিঙ্গা লামপুর ও নতুন হারঙ্গাজাও স্টেশনের মধ্যে একটি ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হওয়ায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। রেলের কর্মী ও যন্ত্রপাতি নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবিলম্বে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

লোকসভা নির্বাচন   আসাম   বাঙালি মুসলমান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গাজায় গণকবর: প্রায় ৪০০ মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ: ০৪:০৭ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স নামক একটি হাসপাতালের কাছে গণকবর থেকে অন্তত ৩৯২ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আপাতত সেখানে তল্লাশি কার্যক্রম শেষ করেছে গাজা কর্তৃপক্ষ। মূলত তিনটি গণকবর থেকে এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  

ফিলিস্তিনের সিভিল ডিফেন্সের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করা মরদেহের মধ্যে ১৬৫টি চিহ্নিত করা হয়েছে। 

চলতি মাসের শুরুর দিকে খান ইউনিস থেকে সেনা প্রত্যাহার করে ইসরায়েল। এরপরই সেখানে গণকবরের সন্ধান মেলে। এদিকে হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহ'র দিকে অগ্রসর হচ্ছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।

তবে এই অভিযানের ফলে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে মিশরসহ বিভিন্ন দেশ। একই সতর্কতা উচ্চারণ করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাও। তবে সেদিকে কোনো কর্ণপাত করছেন না ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।


গাজা   গণকবর   মরদেহ   উদ্ধার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নির্বাচনে নিয়ে ভারতীয়দের উদাসীনতা

প্রকাশ: ০৩:০৭ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচন শুরু হয়েছে। মোট সাত ধাপে ৪১ দিনব্যাপী ভোট নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে প্রথম ধাপের ভোট সম্পন্ন হয়েছে এবং দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণ চলছে।  

এই পর্বে মোট ৮৮টি রাজ্যের ১ লাখ ৬৭ হাজার ভোট কেন্দ্রে লড়াই হবে। যেখানে মোট ১৫ কোটি ৮৮ লাখ ভোটার নিজেদের অধিকার প্রয়োগ করবেন। 

১৯ এপ্রিল থেকে ভারতে শুরু হয়েছে ১৮তম লোকসভা নির্বাচন। প্রথম পর্বের নির্বাচনে ২১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০২ আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে। ঠিক একই আসনে ২০১৯ সালের নির্বাচনে এবারের তুলনায় চার শতাংশ বেশি ভোট পড়েছিল। ভারতের নির্বাচন কমিশন (ইসিআই) এই তথ্য জানিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে এবং বলেছে, ভোটার তালিকা আরও স্বচ্ছ করা দরকার। আর ভোটারদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো দরকার। 

প্রথম ধাপের নির্বাচনী এলাকাগুলোতে মোট ভোটার ছিল ১৬ কোটি। ভোট পড়েছে ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ যদিও ২০১৯ সালে এই কেন্দ্রগুলোতে ভোট পড়েছিল ৭০ শতাংশ। ইসিআই বলছে, তামিলনাড়ু ও উত্তরাখণ্ডসহ ১৯টি কেন্দ্রে আগের নির্বাচনের তুলনায় এবার কম ভোট পড়েছে। 
 
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, তামিলনাড়ুতে ৩ শতাংশ কম ভোট পড়েছে, আর উত্তরাখণ্ডে ভোট কম পড়েছে ৫ দশমিক ১৬ শতাংশ। ভোটের হার কমেছে রাজস্থানেও। সেখানে ভোটের হার কমেছে ৬ শতাংশ। ভোটার উপস্থিতি আশঙ্কাজনকভাবে কম ছিল উত্তর প্রদেশ ও বিহারের কেন্দ্রগুলোতেও।  

সব মিলিয়ে বলা যায়, সামগ্রিকভাবে ভোটার উপস্থিতি কমে গেছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মত রাজনৈতিক দলগুলোরও তেমন কোন মাথাব্যাথা নেই। 

ভোটার উপস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মাথাব্যাথা না থাকলেও ভারতের নির্বাচন কমিশন এটাকে 'উল্লেখযোগ্য পতন' বলে অভিহিত করেছে। একই সঙ্গে উদ্বেগ ও আশঙ্কাও প্রকাশ করেছে। 
 
শুধু উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা জানানোই শেষ কথা নয়। এর পেছনে কারণ উদঘাটন করার চেষ্টা করছেন এবং তা সমাধানের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপও গ্রহণ করেছেন।

বিশ্লেকেরা বলছেন, ভোটার উপস্থিতি কমে যাওয়ার একটা বড় কারণ হতে পারে মাত্রাতিরিক্ত গরম ও তাপপ্রবাহ। বেশ কয়েকটি এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়ে গিয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট দেওয়া ছিল সত্যিই কষ্টকর। অনেকেই এই কষ্ঠ মানতে চাননি। তাই ভোট দিতেও যাননি। অনেক ভোটার অভিযোগ করে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে বলেছেন, 'ভোটকেন্ত্রে পান করার মতো পানির ব্যবস্থাও ছিল না। তীব্র গরমে গলা শুকিয়ে নাজেহাল হয়ে পড়েছিলেন অনেক ভোটার।' 

বেঙ্গালুরুতে দ্বিতীয় ধাপে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর এখানে ভোটারদের উপস্থিতি বরাবরই কম থাকে। তাই দ্বিতীয় দফার ভোটে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়াতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। 

ডেক অব ব্রিয়ুস নামের একটি জনপ্রিয় মদের দোকান ঘোষণা দিয়েছে, ভোট দিয়ে এসে যে প্রথম ৫০ জন কাস্টমার তাদের দোকানে আসবেন তাদের বিনামূল্যে মদ দেওয়া হবে।

এছাড়া ভোটারদের ডিসকাউন্ট মূল্যে খাবার, ভিন্ন ভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরাঁ ভিন্ন সেবা, কিছু জায়গায় বিনামূল্যে কফি, আবার কোথাও দেওয়া হবে দোসা । 

শুধুমাত্র যে খাবারের দোকান ভোটারদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখছে তাই নয়। ট্যাক্সি কোম্পানি এমনকি একটি  অ্যামিউজমেন্ট পার্কও ভোটারদের জন্য বিশেষ অফার ঘোষণা করেছে।

তবে এসব করে কি আসলেও ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো সম্ভব? রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি ভোটারদের উদাসীনতা কিভাবে সাম্লাবে নির্বাচন কমিশন! রাজনৈতিক দলগুলো হয়তো মানতে চাইবে না, কিন্তু সাধারণ মানুষদের সঙ্গে কথা বললেই বোঝা যায়, প্রচলিত দল কিংবা নেতাদের প্রতি তাদের মোটেও আস্থা নেই। যার প্রতি আস্থা নেই, তাকে জিতিয়ে আনার জন্য এত কষ্ট করে রোদে পুড়ে ভোট দিতে যাবে কোন আহাম্মক? 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত-বিশ্লেষণগুলো পড়লেও এর সত্যতা মেলে। বেশির ভাগ বিশ্লেকের মতে, রাজনৈতিক দলগুলো এবার প্রচারের ক্ষেত্রে বহু ধরনের বিভাজন সৃষ্টি করেছে। বিরোধীদের গালিগালাজ করে শুধু বিদ্বেষ ছড়িয়েছে। এসব ভালো চোখে দেখেনি সাধারণ ভোটার। তাছাড়া অনেক নেতার দল বদল করা স্বভাবকেও ভালোভাবে গ্রহণ করেনি ভোটারেরা।

লোকসভা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন