ইনসাইড টক

‘আমরা ধর্মপরায়ণ হতে চাই, ধর্মান্ধ নয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১৯ অক্টোবর, ২০২১


Thumbnail

বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, এটা অবশ্যই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই করা হচ্ছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ হচ্ছে যে, বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতিতে যারা ঈর্ষান্বিত, যারা এই সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না বলে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য বার বার বলে আসছে, তাদেরই কোনো পরিকল্পিত ঘটনা বলেই মনে হয়। না হলে, ঘটনা যেটা ঘটেছে, কুমিল্লার মন্দিরের ওখানে আমাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন শরীফ কোনো দেবীর কাছে রাখা, কোনো পাগলও এটা করার কথা না। 

সম্প্রতি কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা, মন্দিরে হামলা ঘটনা নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন মাহবুবউল আলম হানিফ। 

তিনি বলেন, এ দেশে সাধারণত দেখা যায়, যারা সংখ্যালঘু, বা সনাতন ধর্মের যে মানুষ আছে, তারা এমনিতেই ভীত সন্ত্রস্ত থাকে। বেশ কয়েকটি ঘটনা যেটি আমাদের এই স্বাধীন রাষ্ট্রে ইতিপূর্বে বার বার এ ধরণের সহিংসতা ঘটেছে। সেই কারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সবসময়ই শঙ্কার মধ্যে থাকে, আতঙ্কের মধ্যে থাকে। তারা কোরআন শরীফ তাদের দেবীর পায়ের কাছে বা নিচে রেখে কেন এই বিপদ ডেকে আনবে? এটাতো আসলে বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাহলে যারা এই কাজটি করেছে তারা পরিকল্পিত ভাবেই দেশটাকে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার জন্যই করেছে। 

সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় প্রশাসনের ব্যর্থতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিছুটা দুর্বলতা পরিলক্ষিত তো হচ্ছেই। বিশেষ করে রংপুরে একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে যখন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, এবং এটা নাকি মাইকিং করে ওখানে জনসমাগম করা হয়। যখন মাইকিং করে জনসমাগম করা হয়, সেই সময় ওখানে শুধুমাত্র যে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে, তার বাড়িটাকেই নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের উচিত ছিল ওখানে এই জনসমাগমটা যাতে মুভ করতে না পারে সেজন্য আগে থেকেই ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া। সমাবেশে বাধা দেওয়া। কারণ একটা সমাবেশ হলে বা এই ধরণের একটা প্রতিবাদী মানুষের জমায়েত হলেই সেখানে দেখা যায় ওর ভেতর থেকে দুই একজন উশৃঙ্খল আচরণ করে। পরে দেখা যায়, সবাই ওই উশৃঙ্খলার মধ্যে গা ভাসায়। একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেই সংঘাত থেকে প্রশাসনের উচিত ছিল এই ধরণের সমাবেশ করতে না দেওয়া, এই উত্তেজনামূহুর্ত সৃষ্টি করতে না দেওয়া। সেটা করে নাই। এটা আমি মনে করি যে, প্রশাসনের কিছুটা দুর্বলতা বলাই যেতে পারে। 

মাঠপ্রশাসনে বিএনপি-জামাতপন্থীদের সক্রিয়তা প্রশ্নে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই মূহুর্তে এটা আসলে বলা মুশকিল। এই কারণে যে, যে সমস্ত এলাকাগুলোতে এই ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেই ঘটনাগুলোর পরিপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত ছাড়া এই ধরণের কথা বলা মুশকিল। তবে এটা সত্য যে, আমাদের প্রশাসনের মধ্যে সব দলের আদর্শের অনুসারী কর্মকর্তারা আছে। তো আমাদের দুর্ভাগ্য এটা যে, সরকারে যখন একটা প্রশাসনের কর্মকর্তা, তারা যখন দায়িত্ব নেয়, সরকারি কর্মে যখন যোগদান করে, তখন তাদের নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে সকলের ঊর্ধ্বে, দল মতের ঊর্ধ্বে দেশের জন্য কাজ করা।  সেটা আমাদের এখানে খুব বেশি একটা পরিলক্ষিত হয় না। আমরা দেখি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যে বিভিন্ন সরকারের সময় দলের প্রতি আনুগত্য যাদের আছে, তাদের আমরা বেশি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতে দেখি। আর যারা দলের আনুগত্যের বাইরে বা যে দলকে সমর্থন করে না, সেই দল ক্ষমতায় থাকলে, সেই দল বা সরকারের কর্মকাণ্ডে ক্ষতি করা বা দুর্বল করে দেওয়া বা ধীর গতি করে দেওয়ার একটা মানসিকতা পরিলক্ষিত হয়। সেই ক্ষেত্রে আমাদের এখানে প্রশাসনের মধ্যে যে অন্য দলের আদর্শের অনুসারী যারা আছে, বিএনপি, জামাত বা অন্য দলগুলোর যারা আছেন, তাদের মধ্যে সবসময় তো একটা চিন্তা ধারা থাকেই যে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতা থেকে চলে গেলে তারা স্বস্তি বোধ করে। তারা আদর্শিকভাবে তারা তৃপ্তি বোধ করে। তো সেটার জন্য তাদের কিছু কর্মকাণ্ড এর সঙ্গে জড়িত থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান মোকাবেলার জন্য রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের পরিকল্পনা কি প্রশ্নে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ এই মূহুর্তে আসলে যেটা করছি যে, মাঠ পর্যায়ে আমাদের দলের নেতা-কর্মীদেরকে সাধারণ মানুষকে নিয়ে মাঠে থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সাম্প্রদায়িক ঘটনার প্রতিবাদ করা এবং এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার করার জন্য প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করা। পাশাপাশি আমাদের মাঠে যাতে এই ধরণের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়েই এই সমস্ত অপশক্তিদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আমরা চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে যেটা মনে করি যে, এটাই সমস্যা সমাধানের মূল পথ নয়। আমাদের আরো গভীরে যেতে হবে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়েই এই দেশে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পরে যে, আমাদের সংবিধান পরিবর্তন এবং ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো, বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধী রাজনৈতিক দলকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়ে সাম্প্রদায়িকতার যে বীজ বপন করেছিল, সেই বীজ কিন্তু আস্তে আস্তে বীজ থেকে গাছ হয়ে সেটা এরশাদের সময়ে লালন-পালন এবং পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার আমলে সেই পৃষ্ঠপোষকতার কারণে এই সাম্প্রদায়িকতার শেকড় অনেক গভীরে চলে গেছে। এটাকে আমরা ওঠাতে পারি নাই। 

তিনি এ অঞ্চলের সংস্কৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, আমাদের এই দেশের হাজার বছরের একটা সংস্কৃতি ছিল। যেটা আমাদের সামাজিক বন্ধনের একটা মূল ভিত্তি ছিল। সে সংস্কৃতি ছিল আমাদের জারি-সারি গান, পল্লীগীতি, ভাটিয়ালি, পুথিঁগান, যাত্রা, নাটক। এই যে সমাজের মধ্যে সংস্কৃতিক মাধ্যমে একটি বন্ধনে আবদ্ধ রাখতো। কিন্তু সেটা আমাদের দেশে অনেক আগে থেকেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে প্রায়। উল্টা আমাদের দেশে এই মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে একেবারে মানুষদেরকে ধর্মপরায়ণ থেকে ধর্মান্ধের দিকে নিয়ে গেছে। আমরা প্রত্যেকেই ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা ধর্মপরায়ণ হতে চাই, কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। ধর্মান্ধ কোনো জাতির জন্য কখনো ভালো নয়। আমরা দেখেছি ৭১ সালেও ধর্মের দোহাই দিয়ে কিন্তু ধর্মান্ধগোষ্ঠীকে নিয়ে আমাদের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে তাদেরকে অবস্থান নেওয়া এবং গণহত্যা এবং নারী ও শিশু নির্যাতন করতেও কুণ্ঠাবোধ করে নাই। এমনকি এই ধর্মান্ধগোষ্ঠী আমাদের মা-বোন, তাদেরকে পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনীর হাতে তুলে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেনি। তো ধর্মান্ধতা সব সময়ই ক্ষতিকারক। আমাদের আজকের যে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা, এই শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে একটা শ্রেণী একেবারেই ধর্মান্ধ হয়ে বেড়ে ওঠছে। সেটা আমাদের সমাজ, দেশের জন্য একটা বড় ক্ষতির কারণ ও হুমকির কারণ। 

মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়ন প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, আমি মনে করি যে, আমাদের এখন এর গোঁড়ায় হাত দেওয়া উচিত। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। এটাকে আধুনিক এবং যুগোপযোগী করার প্রয়োজন, যাতে এখান থেকে এই শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে একেবারে ধর্মান্ধ টাইপ মানুষের সৃষ্টি না হয়। আমরা চাই, ধর্মপরায়ণ মানুষ সৃষ্টি হোক। তাদেরকে আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত রেখে সমাজে কাজ করার মতো কর্মসংস্থানের পরিবেশ সৃষ্টি করার মাধ্যমে তাদেরকে ধর্মান্ধ লাইন থেকে সরিয়ে আনতে পারি। সমাজে এই পরিবর্তনটা যতক্ষণ না আনা যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কিন্তু বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা ধর্মকে ব্যবহার করে এই ধরণের সন্ত্রাসী বা সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ড করতে সাহস পাবে এবং সুযোগ থাকবেই বলেও মনে করেন তিনি।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে কেউই রাজনীতিতে ভালো করতে পারেননি’

প্রকাশ: ০৪:০৫ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, যারা দলের নির্দেশনা মানতে পারেননি, তারা তো না পারার দলে। দল থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না। এটা ছিল দলের বৃহত্তর স্বার্থে। সেজন্য সেটা পালন করা সবাই নৈতিক দায়িত্ব ছিল। কিন্তু যখন কেউ কেউ সেই নির্দেশ মান্য করেননি সেটার দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে। দলের প্রতি তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে আমার বড় প্রশ্ন রয়েছে।

কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনেরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না—এমন নির্দেশনা থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি কোন কোন এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনেরা। এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। পাঠকদের জন্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ। 

তিনি বলেন, দল করলে আপনাকে দলের সিদ্ধান্ত, গঠনতন্ত্র, শৃঙ্খলা ইত্যাদি বিষয়গুলো মানতেই হবে। সেটা না করলে আপনি রাজনীতিতে কখনও ভালো করতে পারবেন না। এটা শুধু রাজনীতিতে নয়, যে কোন সেক্টরে এটা প্রযোজ্য। আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন নির্দেশ দিলেন তখন সেটা অমান্য করার প্রশ্নই আসে না। এরপরও যারা দলের সিদ্ধান্তকে মানলেন না তাদের আদর্শ নিয়ে তো বড় প্রশ্ন আছে। কারণ নির্দেশ অমান্য করা দলের নীতি আদর্শের সাথে যায় না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তাদের মধ্যে কতটুকু আছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন। তবে এখনও সময় ফুরিয়ে যায়নি। যারা এখনও মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তাদের উচিত হবে অনতিবিলম্বে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয়া।

নির্দেশনা অমান্য করা ক্ষেত্রে দলের কৌশলের ভুল আছে কিনা বিশেষ করে এর আগে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার বহিষ্কার করে আবার দলে ফিরিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে—এমন প্রশ্নের জবাবে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এটা থেকে যদি কেউ অনুপ্রাণিত হয় তাহলে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত ভালো হবে না এটা নিশ্চিত। আমি বলব তারা ভুল রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণ করেছে। এরা অচিরেই রাজনীতিতে হারিয়ে যাবে। দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে বা গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে কেউই এখন পর্যন্ত রাজনীতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারেনি। বরং যিনি দলের প্রতি অবিচল থেকেছেন, দলের সিদ্ধান্তকে মান্য করেছেন, দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি তারা ধাপের ধাপে রাজনীতিতে উন্নতি করেছেন দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরেছেন, জনগণের নেতাতে পরিণত হয়েছেন, রাজনীতিতে অমরত্ব লাভ করেছেন। কিন্তু যারা এর ব্যতিক্রম করেছেন তারা সেই স্বাদ পাননি।

তিনি আরও বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ হয়তো সাময়িক ভাবে লাভবান হতে পারেন কিন্তু একটা সময়ের পর রাজনীতিতে থেকে জীবনের জন্য হারিয়েছে যাবেন। রাজনীতিতে তারা অপাঙ্ক্তেয় হয়ে পড়বেন। জনগণের কাছে তাদের মযার্দার আসন হারাবেন, জনগণ দ্বারা প্রত্যাখান হবেন। কেউ যদি সে পথে পা বাড়ান সেটার দায়-দায়িত্ব তার নিজের।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত ত্যাগী কর্মীদের অনুপ্রাণিত করেছে’

প্রকাশ: ০৫:০৩ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে একটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনীতির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর উত্থান হয়েছে এবং তিনি যে দল ও ত্যাগী নেতাদের ভালোবাসেন, তাদের প্রতি যে তার মমত্ববোধ সেটি প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে নতুন আলোর সঞ্চার দেখছেন এবং তারা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাজনীতি রাজনীতিবিদদের কাছেই থাকবে।

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নির্দেশের যৌক্তিকতা এবং দলের অবস্থান সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে আলাপচারিতায় জাহাঙ্গীর কবির নানক এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের অনেকে আছেন যারা উত্তরাধিকারে সূত্রে রাজনীতিতে এসেছেন এবং তারা স্ব স্ব অবস্থানে ভালো অবদান রাখছেন তাহলে এখন কেন আওয়ামী লীগ এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলো—এমন প্রশ্নের উত্তরে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, রাজনীতির বিষয়টি ধন-সম্পদের মত বিষয় নয়। কোন এমপি বা মন্ত্রীর সন্তান উপজেলা নির্বাচন করছে সেটা নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। যিনি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন বা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন তিনি নির্বাচন করতেই পারেন। নির্বাচন করা তার অধিকার। কিন্তু বাস্তবতা হলো কোন কোন এমপি বা মন্ত্রীর সন্তান কিংবা স্বজনেরা সরাসরি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থাকলেও তাদের সন্তান, শ্যালক, ভাগ্নে বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের নির্বাচনে দাঁড় করানো হয়েছে। অথচ তিনি হয়তো কোনদিনই একবারের জন্যেও জয় বাংলা স্লোগান দেননি কিংবা দলের প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেননি। এরকম যাদের অবস্থান তাদের বিরুদ্ধে দলের নেতাকর্মীদের ক্ষোভ। উত্তরাধিকার সূত্রে রাজনীতি করা বা আসা সেটা মূখ্য নিষয় নয়। কারও পরিবারতন্ত্রের কারণে যেন দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা বঞ্চিত না হন সেটার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা। 

কোন কোন উপজেলায় এমপিরা একক প্রার্থী ঘোষণা করেছেন সেটি দলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, এটি অবশ্যই সাংঘর্ষিক। কারণ উপজেলা নির্বাচনে দল থেকে কাউকে মনোনয়ন না দেওয়া সিদ্ধান্ত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি যে সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা দিয়েছেন সেটি অমান্য করার কোন প্রশ্নই আসে না। কারও অধিকারও নেই এই নির্দেশ অমান্য করার। এমনকি এ ধরনের মনোবৃত্তি দেখানোরও কোন সুযোগ নেই। আমি মনে করি যিনি নেত্রীর সিদ্ধান্তকে অনুসরণ করবে না তিনি এই দলের জন্য কোন ভাবেই মঙ্গলজনক হতে পারে না।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘কেউ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে দ্রুত ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

গত কয়েক দিন ধরে সারা দেশের ওপর বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। আবহাওয়া নিয়ে সহসাই কোনো সুসংবাদ নেই। এরকম তাপদাহ আগামীতে আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ রকম এক অস্বস্তির মধ্যে কীভাবে নারী পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশু কিশোর সুস্থ্ থাকতে পারে সে ব্যাপারে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, রোদে যারা কাজ করেন, তাদের একটানা দীর্ঘক্ষণ রোদে কাজ করা যাবে না। এতে মাথাব্যথা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, যা থেকে হিটস্ট্রোক হয়। হিটস্ট্রোক হলে যে কেউ মারাও যেতে পারেন। হিট স্ট্রোকের মূল ঝুঁকি মূলত যারা অনেকক্ষণ রোদে কাজ করে তাদের। মানব দেহে স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। প্রচণ্ড গরমে মানুষের শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে প্রবল। এ অবস্থায় শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে হিট স্ট্রোক হয়। শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে ১০৫-এর উপর উঠলে ঘাম হয় না, মাথা ব্যথা, অস্থিরতা, বুক ধড়ফড়, ক্লান্তি, অবসাদ হয়। এক সময় অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা হয়, অজ্ঞানও হয়ে যায় অনেকে। এটি বিপজ্জনক। এটি খুবই সিরিয়াস, সাথে সাথে চিকিৎসা না দিলে রোগী মারাও যেতে পারে। 

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এই অধ্যাপক বলেন, দেশে বর্তমানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। এ তাপমাত্রা শিশু থেকে বয়স্ক সবার জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ। এখন সুস্থ থাকতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। অপ্রোয়জনে একদম বাইরে ঘোরাঘুরি করা যাবে না। যারা কাজের জন্য বাইরে থাকেন, তাদের ছাতা ব্যবহার বা মাথায় কাপড় দিতে হবে। কাজের ফাঁকে এক-দুই ঘণ্টা পর পর ১০-১৫ মিনিটের জন্য ছায়াযুক্ত স্থানে বসবেন। একটানা রোদের মধ্যে থাকা যাবে না। লবণ মিশ্রিত পানি খেলে ভালো হয়, স্যালাইন খেতে পারেন। ডিহাইড্রেশন যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। 

আরেকটা জরুরী বিষয় হলো, ঢিলেঢালা কাপড় পরতে হবে। জিন্স না পরাই ভালো। 

বয়স্ক এবং যারা ডায়বেটিস, কিডনিসহ বিভিন্ন ক্রনিক রোগে ভোগেন, তাদের জন্য ঝুঁকিটা বেশি। তারা অপ্রয়োজনে বাইরে যাবেন না। 

শিশুদের বিষয়ে ডা. আবদুল্লাহ বলেন, গরমে বাচ্চাদের জন্যও ঝুঁকি বেশি। এখন স্কুল বন্ধ তাই বাচ্চাদের বাইরে বের না করাই ভালো। বাচ্চাদের বেশি বেশি পানি খাওয়াতে হবে। তারা যেন রোদের মধ্যে অনেক বেশি দৌড়ঝাঁপ না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, হিট স্ট্রোকের পাশাপাশি গরমে ডায়রিয়া, টাইফয়েড, জন্ডিস বাড়ছে। অ্যাজমা, হাঁপানি যাদের আছে, গরমের কারণে তাদের শ্বাসকষ্ট ওঠানামা করছে। তাদেরও সতর্ক থাকতে হবে।

পানিশূন্যতা গরমে সবচেয়ে বড় সমস্যা উল্লেখ্য করে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এই অধ্যাপক বলেন, এই গরমে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। ওরাল স্যালাইন খাওয়া ভালো। এছাড়া পানিতে লবন মিশিয়েও খাওয়া যাবে। তবে রাস্তায় বিক্রি হওয়া লেবু পানি, আখের জুস খাওয়া যাবে না। অস্বাস্থ্যকর, বাসি কোনো খাবারও পরিহার করতে হবে। শিশু ও বয়স্কদের যতটা সম্ভব ঘরে রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শিশু, নারী ও বয়স্কদের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস রোগীদের সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এসব রোগীর হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা প্রশাসনের এখতিয়ারে নেই’

প্রকাশ: ০৪:১১ পিএম, ০১ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেছেন, বুয়েটে শুধু ছাত্রলীগ ছাত্ররাজনীতি চায় না। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোও তো ছাত্ররাজনীতি চায়। তাহলে কেন শুধু এখন সামনে ছাত্রলীগের নাম সামনে আসছে। বুয়েটে যারা ছাত্ররাজনীতি চাচ্ছে তাদের প্রথম পরিচয় তারা বুয়েটের ছাত্র। আর বুয়েট কর্তৃপক্ষ যেটা করেছে যে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করেছে, এটা বুয়েট প্রশাসন করতে পারে না। তাদের এখতিয়ার নেই। দেশের প্রচলিত মৌলিক আইন যেখানে আমাকে অধিকার দিয়েছে বুয়েট সেটা নিষিদ্ধ করতে পারে না। আইনে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন এবং নিয়মের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। সেখানে বুয়েট তো বাংলাদেশের বাইরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের নিয়মেই তো বুয়েট চলার কথা। কিন্তু সেখানে বুয়েট প্রশাসন কীভাবে আমার মৌলিক অধিকার রহিত করে? আমার ক্যাম্পাসে আমি মুক্ত চিন্তায় ঘুরবো, আমি কথা বলবো, আমি স্লোগান দিবো, আমি বক্তৃতা দিবো, আমি পড়াশুনা করবো। এটা থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ কীভাবে আমাকে বঞ্চিত করতে পারে।

বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ এবং ছাত্ররাজনীতি আবার ফিরিয়ে আনার প্রসঙ্গে নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় ইসহাক আলী খান পান্না এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য ইসহাক আলী খান পান্না এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

ইসহাক আলী খান পান্না বলেন, যারা প্রগতির কথা বলেন না, মৌলবাদ বা জঙ্গিবাদের কথা চিন্তা করে তারাই তো আজ ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করতে চায়। আপনি দেখেন, একটি জলালয়ে যদি পানির কোন ঢেউ না হয়, সেটা যদি কোন কারণে ব্যবহার না হয় তাহলে সেখানে মশা মাছি আর্বজনা জন্মায়। সেখানে থেকে এক সময় দুর্গন্ধ ছাড়ায়। ঠিক তেমনি ভাবে বুয়েটে যদি আপনি মুক্ত চিন্তার চর্চা না করতে দেন তাহলে এর অন্তরালে মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটবে, ধর্মান্ধের উত্থান ঘটবে। যারা স্বাধীনতাকে এখনও মেনে নেননি আপনি তাদেরকে শক্তিশালী করবেন। অথচ প্রগতির কথা যারা বলে সেটা  ছাত্রলীগ হোক কিংবা ছাত্র ইউনিয়ন হোক এমনকি ছাত্রদলও যদি হয় তাহলে তারা সেখানে কথা বলতে পারবে না কেন।

তিনি বলেন, আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা পড়াশুনা করেছি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা ছাত্ররাজনীতি করেছি, এই ক্যাম্পাসে আমরা আমাদের অধিকারের কথা বলেছি, স্বাধীনতার কথা বলেছি, গণতন্ত্রের কথা বলেছি, স্বৈর শাসকের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। সেখানে শিবির কোন দিন স্লোগান মিছিল কিছু পরিচালনা করতে পারেনি, করেনি। তারা বুয়েট এবং ঢাকা মেডিকেলে তাদের কার্যক্রম করেছে। একই ভাবে সেই বুয়েটে এখনও তাদের কর্মকাণ্ড চলে। আর ছাত্রলীগ সহ অন্যান্য সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ড চলবে না সেটা তো হতে পারে না। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো আপনার শুধু ছাত্রলীগ টার্গেট কেন? ছাত্রলীগের ব্যানারে যারা ছাত্ররাজনীতি করে তারাও তো বুয়েটের ছাত্রছাত্রী। তাহলে বুয়েটের শিক্ষার্থীদেরও তো কথা বলার অধিকার রয়েছে, তারও হলে থাকার অধিকার রয়েছে। তাহলে কেন আপনি তাকে এসব থেকে বঞ্চিত করছেন। বাংলাদেশের সকল অনৈতিক, অগণতান্ত্রিক, স্বৈরচারী মনোভাবের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ সব সময় কথা বলেছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং তার নির্দেশে বাংলাদেশে স্বৈর শাসনের পতন, মৌলবাদের পতন এবং সকল আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রলীগ। সেই ছাত্রলীগ বুয়েটে মৌলবাদের যে চর্চা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে কথা বলেছে। সুতরাং এবং অবশ্যই সেটা সঠিক করেছে। অনতিবিলম্বে বুয়েটের সকল ছাত্রছাত্রীদের সবার মুক্ত বিচরণের সুযোগ করে দেয়া দরকার। তারা যেন প্রগতির কথা বলতে পারে, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে পারে, গণতন্ত্রের কথা বলতে পারে সেই পরিবেশ তাদের দিতে হবে। এখন বুয়েটকে নিয়ে যে খেলা চলছে প্রকারন্তে বাংলাদেশে এরা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির পালন করছে। এটা হতে পারে না। আপনি বুয়েট কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করেন আমাদের স্বাধীনতা দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি, পহেলা বৈশাখ, বুদ্ধিজীবী দিবস তারা এগুলো পালন করে কিনা। এগুলো অবশ্যই তাদের করতে হবে। বুয়েট স্বাধীনতা বাংলা ভূখন্ডে বাইরে কোন প্রতিষ্ঠান না। অতএব ছাত্রলীগ যে দাবি তুলেছে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনতে হবে এটা যুক্তি যুক্ত।

সাবেক ছাত্রলীগ এই নেতা বলেন, বুয়েটে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলোর আমরা অবশ্যই নিন্দা জানাই। এর সঙ্গে যারা জড়িত আইনের মাধ্যমে তাদের বিচার হবে, একাডেমিক কাউন্সিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে বুয়েটকে অন্ধকারে রেখে মৌলবাদী শক্তিকে পৃষ্টপোষকতা করার কোন সুযোগ নাই বুয়েট কর্তৃপক্ষের। অনতিবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বুয়েটকে সকলের জন্য উন্মূক্ত এবং সুন্দর একটি পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ব্যানারে যারা অপকর্ম করেছে তাদের দায় সংগঠন নিবে না উল্লেখ্য করে ইসহাক আলী খান পান্না বলেন, কোন ব্যক্তি, কোন ছাত্র যদি কোন ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত হয়ে থাকে এটা তার ব্যক্তিগত অপরাধ। কারণ ছাত্রলীগ কোন ধরনের অপরাধকেই সমর্থন করে না। যারা ইতোমধ্যে কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়েয়ে সংগঠন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। সুতরাং এগুলোকে অজুহাত দেখিয়ে রাজনীতি বন্ধ করা যাবে না। 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘বঙ্গবন্ধু যেখানে বলেছেন ৪ শতাংশ দিতে, আমরা তার অর্ধেকও পারিনি’

প্রকাশ: ০৪:১৬ পিএম, ২৭ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিআইডিএস যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটাই হচ্ছে প্রকৃত চিত্র। বিআইডিএসের গবেষণার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। কারণ তারা কতগুলো গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে যেগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। সুতরাং বিআইডিএস যেটা বলছে সেটার সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলো থেকে পাস করার তিন বছর পরও ২৮ দশমিক ২৪ শতাংশ শিক্ষার্থী বেকার থাকছেন। গত রোববার বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএসের) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতা করেন অধ্যাপক আবদুল মান্নান। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, ভালো শিক্ষার জন্য সব কলেজগুলোতে ভালো এবং দক্ষ শিক্ষক দরকার। পাশাপাশি ভালো পরিবেশ সহ সুযোগ সুবিধা দরকার। কিন্তু আমাদের মেট্রোপলিটন শহরের বাইরে বেশির ভাগ কলেজগুলোর অবস্থা ভালো নয়। ভালো শিক্ষক পাওয়া যায় না। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো শিক্ষকতায় কেউ আসতে চায় না। এ সমস্ত কলেজগুলোর লাইব্রেরির অবস্থা করুণ। অনেক কলেজে লাইব্রেরিই হয়তো নেই।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন যে সমস্ত কলেজগুলোতে বিজ্ঞান আছে সেগুলোর সব কলেজগুলো ল্যাবরেটরি সুবিধা নেই। একটা ভালো ল্যাবরেটরি জন্য প্রচুর বিনিয়োগ দরকার। সেটা আমাদের যথেষ্ট নাই। শিক্ষার উন্নয়ন মানে শুধু অবকাঠোমাগত উন্নয়ন নয়। শিক্ষা মান মানে অনেক কিছু। বিশেষ করে লাইব্রেরি, ল্যাবরেটরি এবং সবচেয়ে বড় কথা হলো ভালো শিক্ষক দরকার। কিন্তু বাংলাদেশের যে হারে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে সে হারে আমাদের শিক্ষকের সংখ্যা বাড়েনি। পাহাড়ি দুর্গম এলাকা থেকে শুরু করে চরাঞ্চল সব এলাকাতে এখন কলেজ হয়েছে কিন্তু প্রতিটি কলেজে আমরা দক্ষ শিক্ষক নিশ্চিত করতে পারিনি। প্রয়োজনীয় ল্যাব, লাইব্রেরি নেই। অনেক কলেজ আছে যেগুলো আগপাছ কোন কিছু বিবেচনা না করেই মাস্টার্স চালু করেছে। কিন্তু এগুলো করতে হলে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ব্যাপার। আমরা শুধু সংখ্যার দিকে নজর দিয়েছি। গুণগত মানকে উপেক্ষা করেছি। যার ফলে আজকে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে আমাদের অগ্রাধিকারগুলো কি কি জানতে চাইলে প্রখ্যাত এই শিক্ষাবিদ বলেন, গুণগত মান বাড়ানোর জন্য কোন শর্টকাট পদ্ধতি অনুসরণ করলে হবে না। গুণগত মান বাড়াবে হলে শিক্ষকদের গুণগত মান বাড়াতে হবে আগে। শিক্ষকদের সুযোগ সুবিধা বাড়তে হবে, পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। আমাদের দেশের মেধাবীরা সবাই সরকারি চাকরি দিকে ঝুঁকছে। সবাই আমলা হতে চায়। কিন্তু আমাদের আমলারও দরকার আছে শিক্ষকও দরকার আছে। আবার ভালো সাংবাদিক বা ভালো গবেষকও দরকার আছে। এজন্য শিক্ষা খাতে আমাদের বরাদ্দ বাড়াতে হবে। বঙ্গবন্ধু সত্তরের নির্বাচনের বক্তৃতায় বলেছিলেন শিক্ষা খাতে জিডিপির ৪ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে। আমরা সেখানে এখনও ২ শতাংশ দিতে পারিনি।



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন