নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৩৫ এএম, ১৭ মে, ২০১৮
রোজা এলেই ডায়বেটিস রোগীদের স্বাস্থ্য সমস্যা, খাদ্যাভাস নিয়ে বেশ দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়তে হয় যে বোজা রাখা যাবে কি যাবেনা। ডায়াবেটিস রোগে অনেক ধরণের জটিলতা হতে পারে। একজন রোজাদারকে সূর্য্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অনেকক্ষণ না খেতে থাকতে হয়, তাই তাদের জটিলতার সম্ভাবনা আরো বেশি। তবে এর সমাধানও আছে অনেক।
রোজার সময় ডায়াবেটিস রোগীদের জটিলতা-
১. রোজায় রক্তের সুগার অতিরিক্ত কমতে পারে যাকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলে। বিশেষত যারা সালফোনাইলইউরিয়া জাতীয় ওষুধ খান, ইনসুলিন নেন, সেহেরীতে অনিয়ম করনে অথবা রোজা রেখে অতিরিক্ত পরিশ্রম করেন তাদের এই ঝুঁকিটা বেশি। এতে বুক ধড়ফড় করা, অতিরিক্ত ঘাম দেওয়া, মাথা ঘোরা, শরীর কাঁপা, চোখে ঝাপসা দেখা শুরু হয়। সুগারের পরিমাণ ৩ বা এর নিচে হলে রোজা ভেঙ্গে ফেলতে হবে।
২. আবার সুগার অতিরিক্ত বেড়েও যেতে পারে, যাকে হাইপারগ্লাইসেমিয়া বলে। এর লক্ষণ হলো জিহ্বা শুকিয়ে যাওয়া, মাথা ঘোরা, পানিশূন্যতা, দুর্বলতা, ঝিমুনি, বমি ইত্যাদি। এক্ষেত্রে রক্তের সুগার পরীক্ষা করাতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইনসুলিন নিতে হবে।
৩. ডায়বেটিস রোগীদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হয়। কিন্তু রোজা থেকে পানি না খেতে পারলে পানিশূন্যতার সমস্যা জটিল হতে পারে।
৪. ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস হতে পারে। এতে টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের গ্লুকোজ মারাত্মকভাবে বেড়ে যেতে পারে।
৫. এছাড়া অনেকে এই মাসে রোজা রেখে বাকি সময় অতিরিক্ত খাওয়া দাওয়া করেন। এর বাইরে ব্যায়াম বা হাঁটাচলা, পরিশ্রম করেন না তেমন। ফলে রক্তের চর্বি এবং শরীরের ওজন বেড়ে যায়। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল হয়ে যায়।
কী করণীয়
শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে রাতের বেলা বেশি পানি পান করতে হবে। তারপরও যদি রোজা রাখা অবস্থায় পানি শূন্যতার পরিমাণ বেশি হয় যেমন জিহ্বা অতিরিক্ত শুষ্ক হওয়া, বেশি বেশি মাথা ঘোরানো, প্রস্রাবের পরিমাণ অতিরিক্ত কম ইত্যাদির কোন লক্ষণ দেখা যায় তবে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
যারা বেশি কায়িক পরিশ্রম করেন বা বাইরে অতিরিক্ত গরমের মধ্যে কাজ করেন, তাদের বেলায় এই ঝুঁকি বেশি থাকে। অতিরিক্ত গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে এই পানিশূন্যতা আরো প্রকট হতে পারে।
অনেকে রোজার সময় অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করেন, অনেকে আবার খুবই অল্প আহার করেন। মনে রাখতে হবে ডায়াবেটিক রোগীর জন্য দুটিই ক্ষতিকর। ভারসাম্য রেখে খাবার খেতে হবে।
সেহরির খাবার সেহরির শেষ সময়ের অল্প কিছুক্ষণ আগে খাওয়া। মানে খাওয়া হলেই শুয়ে পড়তে নেই। আর ইফতারের সময় অধিক পরিমাণে মিষ্টি ও চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহণ করা ঠিক নয়।
ডায়াবেটিস রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে যাতে পানিশূন্যতায় না ভুগতে হয়। একটা খেজুর, ফলমূল, শাকসবজি, ডাল ও টক দই তালিকাভুক্ত করতে পারেন। ডাবের পানি পান করতে পারেন। পানীয় পান করলে চিনিমুক্ত পানীয় বেছে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে কৃত্রিম সুইটনার ব্যবহার করতে হবে। ভাজা পোড়া খাবার যেমন- পেঁয়াজু, বেগুনি, পুরি, পরোটা কাবাব অল্প পরিমাণে খেতে পারেন।
খাদ্যের ক্যালরি ঠিক রেখে খাওয়ার পরিমাণ এবং ধরন ঠিক করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণ খাওয়া প্রয়োজন। রোজার আগের ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবারের অভ্যাসটা এই মাসে কমাতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের কাছে যেতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে ওষুধের সঙ্গে খাবারের যেন সামঞ্জস্য থাকে। ইফতারের সময় অতিরিক্ত খাওয়া এবং শেষ রাতে অল্প খাওয়া যাবেনা।
রোজায় দিনে বেলা না খাওয়া ইফতার এবং সেহেরিতে সময়মত পরিমিত আহারের অভ্যাস যেকোনো ডায়বেটিস রোগীকে সংযম ও শৃঙ্খলার শিক্ষা দেয়। এটিই তো ডায়বেটিসের চিকিত্সার মূল উপাদান। আর এই সময় হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়ামের খুব একটা সুযোগ হয়না বলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই যতটুক পারুন একটু শারীরিক পরিশ্রম করে নিন, শরীরকে ফিট রাখুন। কেমন হতে পারে সারাদিনের খাবার-
ইফতার
জাম্বুরা, তরমুজ, পাকা পেঁপে, আনারসের জুস, সবজির নরম পাতলা খিচুড়ি, দুটি পেঁয়াজু ও বেগুনি, আধা কাপ হালিম, অল্প ছোলাভাজা, দইবড়া ১টি, মৌসুমি ফল (আম, কাঁঠাল, ও কলা ব্যতিত), চিড়া খেতে পারেন।
রাতের খাবার
ছোট রুটি ২-৩টি, মিক্সড সবজি পৌনে ১ বাটি, ২ টুকরা মাছ/মাংস ছোট, এবং ঘুমানোর আগে অল্প ফল খেতে পারেন।
সেহরির খাবার
ভাত ২ কাপ (২৪০ গ্রাম)
মাছ বা মাংস ১-২ টুকরা
ডাল ১ কাপ মাঝারি ঘন বা দুধ ১ কাপ (সর ছাড়া)
সবজি ইচ্ছামতো
রোজায় ইনসুলিন
যারা ইনসুলিন গ্রহণ করেন তারা রোজায় দীর্ঘ মেয়াদী ইনসুলিন ব্যবহার করতে পারেন, এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত কম। এই ইনসুলিন ইফতারের সময় নিতে হবে এবং প্রয়োজনে শেষ রাতে অল্প মাত্রায় নিতে হবে। ইনসুলিন গ্রহণকারী রোগীদের অবশ্যই রমজানের শুরুতেই ইনসুলিনের ধরণ ও মাত্রা ঠিক করে নিতে হবে।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ
মন্তব্য করুন
রোদের চোখ রাঙানি কমছেই না। এমন তপ্ত আবহাওয়ায় বাইরে বেশিক্ষণ থাকলে
ত্বকে ট্যান পড়ে। পুরো চেহারা, হাত-পা, ঘাড়-গলায় ঘাম, ধুলোবালি জমে। অতি বেগুনি রশ্মি
ও দূষণে ত্বক কালচে হয়ে যায়। তাই গরমে ত্বকের দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে। নয়তো কালচে
দাগ ত্বকে স্থায়ী হয়ে যাবে। কাজশেষে বাইরে থেকে ফেরার পরেও ত্বকের যত্নে মনোযোগী হতে
হবে। নয়তো অল্পতেই বুড়িয়ে যাবে ত্বক। উজ্জ্বলতাও হারাবে।
একজন কসমেটোলজিস্ট জানান,
গরমে বাইরে থেকে ফিরেই ত্বকে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিতে হবে। ভালো করে ত্বক ধুতে হবে।
তারপর ফেশওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে। আলতোভাবে টোনার ব্যবহার করতে হবে। টোনার ত্বকের পিএইচ
ব্যালেন্স ঠিক করতে সহায়তা করে। এর ব্যবহারে ত্বক সতেজ হয়।
এই গরমের জন্য টোনার হিসেবে শসা মিশ্রিত পানি ও গোলাপজল ব্যবহার
করা যেতে পারে। ফলের নির্যাসে তৈরি টোনার ত্বককে আরও কালো করে
দিতে পারে। পুরো চেহারা, হাত-পা, ঘাড়-গলায় ঘাম, ধুলোবালি জমে। অতি
বেগুনি রশ্মি ও দূষণে ত্বক কালচে হয়ে যায়। তাই গরমে ত্বকের দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে।
নয়তো কালচে দাগ ত্বকে স্থায়ী হয়ে যাবে। কাজশেষে বাইরে থেকে ফেরার পরেও ত্বকের যত্নে
মনোযোগী হতে হবে।
১.এক চামচ মধু, এক চামচ টক দই, এক চামচ কমলার রস ও এক চামচ মুলতানি
মাটি ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি হাত, পা, মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগান। যদি পুরো শরীরে
এই মিশ্রণ ব্যবহার করতে চান তাহলে এর সঙ্গে কফি মেশাতে পারেন। কফি ত্বকের ট্যান দূর
করতে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে।
২.বেসনের সঙ্গে এক চামচ
হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে নিন। এর সঙ্গে দুধ মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে নিন। এই প্যাকটি মুখ, ঘাড়,
গলায় ব্যবহার করতে পারেন। হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে কাজ করে, এবং বেসন ট্যান দূর
করতে ভূমিকা রাখে।
৩.ত্বকের কালচে দাগ, রোদে পোড়া দাগ দূর করতে আলুর রস ব্যবহার করতে
পারেন। এতে আছে অর্গানিক ব্লিচিং এজেন্ট, যা দাগ দূর করতে সহায়তা করে। নিয়মিত আলুর
রস ব্যবহার করলে ত্বক ধীরে ধীরে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত হবে।
৪.ঘরোয়া উপায়ে ট্যান
দূর করার কার্যকরী উপাদান পেঁপে ও মধুর প্যাক। পেঁপেতে আছে ব্লিচিং, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি,
অ্যান্টি-এইজিং, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। মধুতে আছে ত্বককে সুস্থ ও সুন্দর করার
বিভিন্ন উপাদান। ত্বকের অস্বস্তি, জ্বালা, শুষ্কতা দূর করতে পাকা পেঁপের সঙ্গে মধু
মিশিয়ে ব্যবহার করুন।
৫.দুই টেবিল চামচ চালের
গুঁড়ার সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এটি রোদে পোড়া দাগের
ওপর লাগিয়ে আধা ঘণ্টা রেখে দিন। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দুধে থাকা ল্যাকটিক
অ্যাসিড মরা চামড়া দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। চালের গুঁড়া ত্বকের অসম
রং দূর করতে কাজ করে।
মন্তব্য করুন
গ্রীষ্মের দাপট চলছে সব জায়গাতে। রৌদ্র ঝলসানো গ্রীষ্মের দাপট ত্বক
পুড়িয়ে দিতে পারে। শিশুর কোমল ত্বক যাতে রোদে পুড়ে না যায় সে বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরী।
প্রখর রোদে মাত্র ১৫ মিনিট থাকলে ‘রোদে পোড়া’ অবস্থা তৈরি হয়। যদিও
ত্বক লাল হয়ে যাওয়া কিংবা অস্বস্তিভাব কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বোঝা যায় না। বারবার ‘রোদে
পোড়া’ অবস্থা
থেকে ত্বকের ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
যেসব পরিবারে ত্বকের ক্যান্সারের ইতিহাস আছে, যেসব শিশুর ত্বকে
মোল (বড় আকারের তিল) আছে, যে শিশুর চামড়া ধবধবে সাদা, কিংবা সাদা চুল বেশি তাদের রোদে
থাকা ঝুঁকিপূর্ণ।
মৃদু উপসর্গ
* ত্বক লাল ও উত্তপ্ত
* ব্যথা
* চুলকানি
তীব্র উপসর্গ
* ত্বকে লালচে ভাব ও ফোসকা
* ব্যথা, সুচ ফোটানোর মতো অনুভূতি
* ফোলা ভাব
* জ্বর, শীত শীত ভাব
* মাথা ব্যথা
* চোখে আঁধার দেখা
করণীয়
* তাড়াতাড়ি শিশুকে রোদ থেকে সরিয়ে ছায়ায় নিতে হবে
* গোসল করিয়ে দিতে হবে
* পরবর্তী দু-তিন দিনের জন্য বেশি বেশি পানীয় পান
করাতে হবে
* ব্যথা লাঘবে প্যারাসিটামল খাওয়াতে হবে
* ময়েশ্চারাইজারযুক্ত ক্রিম বা জেল ব্যবহার করতে হবে
* বাইরে বের হওয়ার আগে রোদে পোড়া অংশ ঢেকে বের হতে হবে
চিকিৎসকের কাছে কখন নেবেন
* রোদে পুড়ে ফোসকা পড়লে। শরীরে বেশি ব্যথা হলে
* শিশুর মুখে ফোলাভাব দেখা দিলে
* শরীরের বড় অংশ রোদের তাপে পুড়ে গেলে
* সানবার্নের পর শিশুর জ্বর বা শীত শীত ভাব দেখা দিলে
* মাথা ব্যথা, মতিভ্রম বা অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা দেখা দিলে
* শুষ্ক চোখ ও জিহ্বা এবং খুব তৃষ্ণার্ত ভাব দেখলে।
এগুলো পানিস্বল্পতার লক্ষণ
প্রতিরোধ
* গরমকালে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শিশুকে
একটানা বেশিক্ষণ রোদের মধ্যে থাকতে দেওয়া যাবে না
* বাইরে বের হওয়ার সময় শিশুকে রোদচশমা, হ্যাট ও আরামদায়ক পোশাক পরাতে
হবে। সুতি কাপড়ের ঢোলা ফুলহাতা পোশাক পরানো ভালো
* ত্বকে সানস্ক্রিন মেখে দিতে হবে। প্রয়োজনে ছাতা ব্যবহার করতে বলতে হবে
মন্তব্য করুন
এ বছর বাংলা নতুন বছরের প্রথম মাস অর্থাৎ বৈশাখ শুরুর আগেই হয়েছে দাবদাহ। ইতোমধ্যে দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। সারা দেশের উপর দিয়ে বয়ে তীব্র হিট ওয়েভ বা তাপদাহ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও তাপমাত্র বেড়েই চলেছে। তীব্র এই তাপদাহের প্রভাব পড়েছে জন জীবনেও। এতে অস্বস্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকেও চলমান এমন তাপপ্রবাহ নিয়ে কোন সুখবরই নেই। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্র আরও বাড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে।
এমন গরমে দীর্ঘ সময় রোদে থাকলে হিটস্ট্রোক হয়ে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে লোকজন। শিশু ও বয়স্কদের জন্য এই ঝুঁকি আরও বেশি।
ঢাকার আইসিডিডিআর’বি-এর তথ্য মতে, বাইরে তাপমাত্রা যাই হোক না কেন আমাদের শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাপমাত্রা প্রায় স্থির রাখতে সক্ষম। কিন্তু অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কাজ করা বন্ধ করে দিলে তখন তাকে হিট স্ট্রোক বলা হয়। এর ফলে ঘাম বন্ধ হয়ে গিয়ে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে শুরু করে।
হিটস্ট্রোকের লক্ষণ
শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে যাওয়া, গরমে অচেতন হয়ে যাওয়া, মাথা ঘোরা, তীব্র মাথা ব্যথা, ঘাম কমে যাওয়া, ত্বক গরম ও শুষ্ক হয়ে যাওয়া, শারীরিক দুর্বলতা ও পেশিতে টান অনুভব করা, বমি হওয়া, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, শ্বাস কষ্ট, মানসিক বিভ্রম, খিঁচুনি মত লক্ষন গুলো দেখা দিতে পারে।
কারো হিটস্ট্রোক হলে বা অচেতন হয়ে গেলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে যে কাজগুলো করনে-
১. হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে নিয়ে যেতে হবে। রোগীর শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় কাপড় খুলে ফেলতে হবে।
২. রোগীর শরীরে বাতাস করতে হবে। কাপড় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে গা মুছে ফেলতে হবে।
৩. শরীরের তাপমাত্রা কমাতে বগল, ঘাড়, পিঠ ও কুচকিতে আইসপ্যাক ব্যবহার করতে হবে।
মন্তব্য করুন
দেশের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। অনেকেই গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। দেশের উষ্ণতম মাস এপ্রিল। এর প্রমাণ আমরা পাচ্ছি প্রকৃতিতে। রাজধানীসহ সারা দেশে মৃদু থেকে মাঝারি, কোথাও কোথাও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গ্রীষ্মের তাপদাহে যাদের ঘরে এয়ার কন্ডিশনার নেই তাদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। এসি কেবল ব্যয়বহুল নয়, অনেকেই আছেন যারা এসিতে অল্প সময় থাকলেই ঠাণ্ডা লেগে যায়। তাই প্রচণ্ড গরমে একটু শান্তির জন্য হলেও খুঁজতে হয় বিকল্প ব্যবস্থা। মার্কিন সংবাদ মাধ্যম বিসনেস ইনদাইডের এক প্রতিবেদনে এই গরমে কীভাবে নিজের ঘর এসি ছাড়াই ঠান্ডা রাখা যায়, সেই উপায় বলে দেয়া হয়েছে। তীব্র গরমে এসি ছাড়া ঘর ঠাণ্ডা রাখার উপায়গুলো জেনে নেয়া যাক--
সূর্যের তাপ: ঘর গরম হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে সূর্যালোক। এজন্য গরমে জানালা খোলা রাখলেও পর্দা টেনে রাখতে হবে, যাতে করে ঘরে আলো-বাতাস চলাচল করলেও সূর্যের তাপ কম আসে। প্লাস্টিকের ব্যাকিংসহ মাঝারি রংয়ের ‘ড্রেইপ’ বা পাতলা পর্দা ৩৩ শতাংশ তাপ কমায় এবং ঘরে প্রায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত তাপ কমাতে সহায়তা করে।
দেয়ালে হালকা রঙের ব্যবহা: রঙ যত গাঢ় হয়, তত আলো শোষিত হয় এবং যত হালকা হয়, তত আলো বেশি প্রতিফলিত হয়। ঘরে যত বেশি আলো শোষিত হয়, তত তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই ঘরের ভেতর যতটা সম্ভব হালকা রঙ ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। এতে করে দিনের বেলা ঘর তাপ ধরে রাখবে না। ফলে আলো চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘর ঠান্ডা হতে শুরু করবে।
গরম বাতাস বের করে দেয়া: ‘এক্সস্ট ফ্যান’ ঘরের গরম বাতাস বের করে দেয়। বাথরুম বা রান্না ঘরে এটা ব্যবহারে গরম ভাব কমায়। রাতে জানালা খোলা রাখার পাশাপাশি এক্সস্ট ফ্যান চালিয়ে রাখলে ঘর ঠাণ্ডা রাখতে সহায়তা করে।
আর্দ্র বাতাস: ঘর ঠাণ্ডা রাখতে ফ্যানের পেছনে ভেজা কাপড়, ঠাণ্ডা বস্তু, এক বাটি বরফ বা ঠাণ্ডা পানির বোতল রাখলে ঠাণ্ডা বাতাস ছড়ায়, ফলে ঘর ঠান্ডা থাকে। এক্ষেত্রে টেবিল ফ্যান ব্যবহার করতে হবে।
ঘরে গাছ রাখুন: ঘরের ভেতর ছোট্ট একটি গাছ, যেমন ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমনি তাপমাত্রা কমাতেও সাহায্য করে। গাছ ঘরের ভেতর জমা হওয়া কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নেয়, ফলে ঘরের তাপমাত্রা তুলনামূলক কম থাকে। মানিপ্ল্যান্ট, অ্যালোভেরা, অ্যারিকা পাম-জাতীয় গাছ ঘরের সৌন্দর্যবর্ধন ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, উভয় কাজেই বেশ উপকারী।
চুলা বন্ধ রাখা: চুলা গরম ঘরকে আরও উষ্ণ করে তোলে। তাই কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত চুলা বন্ধ করে দেয়া ভালো। এতে ঘর বাড়তি গরম হবে না।
অপ্রয়োজনীয় যন্ত্র বন্ধ রাখা: ডিসওয়াশার, ওয়াশিং মেশিং, ড্রায়ার এমনকি মোবাইল চার্জার ইত্যাদি ছোটখাট যন্ত্রও ঘরের তাপ মাত্রা বাড়ায়। তাই এসব যন্ত্র ব্যবহার হয়ে গেলে তা বন্ধ করে রাখা উচিত।
তাপমাত্রা কমে গেলে জানালা খোলা: দিনের বেলায় জানালার পর্দার টেনে রাখুন। এসময় বাতাস সবচেয়ে বেশি গরম থাকে। কিন্তু যখন বাইরের তাপমাত্রা ভেতরের বাতাসের চেয়ে কম থাকে, তখন জানালার পর্দা সরিয়ে দিলে ঘরে ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হয় এবং ঠাণ্ডা হয়ে আসে।
তীব্র গরম ঘর ঠাণ্ডা রাখার উপায়
মন্তব্য করুন
ঈদে সুন্দর ও কোমল ত্বক পেতে কয়েক দিন আগে থেকে যত্ন নিতে হবে।
ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়ে গেছে। উৎসবকে বরণ করে নিতে সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে। উৎসবের দিন নিজেকে একটু সুন্দর দেখতে কে না চায়। ঈদের আগে বাড়তি কাজের চাপ থাকে।
আর সেই ক্লান্তির ছাপ পড়ে চেহারায়। এক দিন ত্বকের যত্ন নিলে তার সুফল সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যায় না। তাই ঈদের বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই নিয়মিত নিতে হবে ত্বকের যত্ন। তাহলে চোখের নিচে কালো দাগ, ত্বকে কালো ছোপ, মালিন্য কিছুটা হলেও কমে আসবে।
আপনার ত্বকের ধরন কেমন সেটির ওপর নির্ভর করে আপনার পরিচর্যার ধরনটি কেমন হবে।
তৈলাক্ত ত্বকের পরিচর্যা
তৈলাক্ত ত্বকের পরিচর্যায় একটু বাড়তি নজর দিতে হয়। শসা তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেশ ভালো কাজ করে। মুখের বাড়তি তেলতেলে ভাব কমাতে শসার রস বেশ কার্যকর।
শসার রস দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে বেসন ও টক দই বেশ কার্যকর। এক চা চামচ বেসন, সামান্য টক দই ও সামান্য হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। মুখে লাগিয়ে আধাঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন। শুষ্ক ত্বকের পরিচর্যায় একটু বাড়তি নজর দিতে হয়।
কারণ এ ধরনের ত্বক সহজেই খসখসে হয়ে যায়, ফেটে যায়। শুষ্ক ত্বকে মূলত তেলগ্রন্থি কম থাকে। শুষ্ক ত্বকের জন্য সব সময় খুব ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হয়। শুষ্ক ত্বকে মধু, অ্যালোভেরা দারুণ কাজ করে। অ্যালোভেরা আর মধু একসঙ্গে মিশিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক উজ্জ্বল ও নরম হয়।
স্বাভাবিক ত্বক
যাঁদের স্বাভাবিক ত্বক, তাঁরা বেশ ভাগ্যবান বলতে হবে। কারণ খুব বেশি বাড়তি যত্নের দরকার পড়ে না এই ত্বক সুন্দর রাখতে। এই ত্বক এমনিতেই মসৃণ ও সুন্দর থাকে। তাই ভালো মানের কোনো ফেসওয়াশ দিয়ে প্রতিদিন মুখ পরিষ্কার করুন। নিয়মমাফিক ত্বক ম্যাসাজ করতে পারেন। এতে ত্বকের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। স্বাভাবিক ত্বকে ঘরোয়া যেকোনো প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। মসুর ডাল আর হলুদ বেটে মুখে লাগিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন। পেঁপে, মধু, আলু যেকোনো কিছুর প্যাক বানিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বক সুস্থ ও সুন্দর থাকবে।
ত্বকের যত্নে সাধারণ কিছু টিপস
যেহেতু এখন গরমকাল, তাই বাইরে বের হলে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ভালো মানের সানস্ক্রিন অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। বাইরে বের হলে অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করবেন। অতিরিক্ত ঘেমে গেলে টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলুন। বাইরে থেকে আসার পর সবার আগে মুখ পরিষ্কার করুন। ভালো ময়েশ্চারাইজার লাগান। সামনে যেহেতু ঈদ, তাই আগেভাগেই পেডিকিউর, মেনিকিউর করে রাখুন। শরীরের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ব্লিচ করতে পারেন। ত্বকের মরা কোষ দূর করতে নিয়মিত স্ক্রাব করুন। সর্বোপরি ত্বকের সৌন্দর্য ও সুস্থতার জন্য অনেক পানি খেতে হবে। আর হেলদি একটা ডায়েট প্ল্যান থাকতে হবে। ঈদের আগে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে দুটি প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
হলুদের প্যাক
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য হলুদ বেশ পরিচিত একটি নাম। এর ব্যবহার সেই প্রাচীনকাল থেকেই। হলুদ রোদে পোড়া দাগ দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এক চা চামচ হলুদের গুঁড়া, দুই চা চামচ লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
টমেটো প্যাক
টমেটোতে লাইকোপিন নামে এক ধরনের উপাদান রয়েছে, যা ত্বকের পিগমেনশন কমিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এটি ত্বকের ডেড সেল, রোদে পোড়া দাগ দূর করতে সাহায্য করে থাকে। টমেটো ও লেবুর রস একসঙ্গে ব্লেন্ড করে মুখে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে।
মন্তব্য করুন
রোদের চোখ রাঙানি কমছেই না। এমন তপ্ত আবহাওয়ায় বাইরে বেশিক্ষণ থাকলে ত্বকে ট্যান পড়ে। পুরো চেহারা, হাত-পা, ঘাড়-গলায় ঘাম, ধুলোবালি জমে। অতি বেগুনি রশ্মি ও দূষণে ত্বক কালচে হয়ে যায়। তাই গরমে ত্বকের দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে। নয়তো কালচে দাগ ত্বকে স্থায়ী হয়ে যাবে। কাজশেষে বাইরে থেকে ফেরার পরেও ত্বকের যত্নে মনোযোগী হতে হবে। নয়তো অল্পতেই বুড়িয়ে যাবে ত্বক। উজ্জ্বলতাও হারাবে।
গ্রীষ্মের দাপট চলছে সব জায়গাতে। রৌদ্র ঝলসানো গ্রীষ্মের দাপট ত্বক পুড়িয়ে দিতে পারে। শিশুর কোমল ত্বক যাতে রোদে পুড়ে না যায় সে বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরী। প্রখর রোদে মাত্র ১৫ মিনিট থাকলে ‘রোদে পোড়া’ অবস্থা তৈরি হয়। যদিও ত্বক লাল হয়ে যাওয়া কিংবা অস্বস্তিভাব কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বোঝা যায় না। বারবার ‘রোদে পোড়া’ অবস্থা থেকে ত্বকের ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এ বছর বাংলা নতুন বছরের প্রথম মাস অর্থাৎ বৈশাখ শুরুর আগেই হয়েছে দাবদাহ। ইতোমধ্যে দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। সারা দেশের উপর দিয়ে বয়ে তীব্র হিট ওয়েভ বা তাপদাহ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও তাপমাত্র বেড়েই চলেছে। তীব্র এই তাপদাহের প্রভাব পড়েছে জন জীবনেও। এতে অস্বস্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
দেশের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। অনেকেই গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। দেশের উষ্ণতম মাস এপ্রিল। এর প্রমাণ আমরা পাচ্ছি প্রকৃতিতে। রাজধানীসহ সারা দেশে মৃদু থেকে মাঝারি, কোথাও কোথাও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গ্রীষ্মের তাপদাহে যাদের ঘরে এয়ার কন্ডিশনার নেই তাদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। এসি কেবল ব্যয়বহুল নয়, অনেকেই আছেন যারা এসিতে অল্প সময় থাকলেই ঠাণ্ডা লেগে যায়। তাই প্রচণ্ড গরমে একটু শান্তির জন্য হলেও খুঁজতে হয় বিকল্প ব্যবস্থা। মার্কিন সংবাদ মাধ্যম বিসনেস ইনদাইডের এক প্রতিবেদনে এই গরমে কীভাবে নিজের ঘর এসি ছাড়াই ঠান্ডা রাখা যায়, সেই উপায় বলে দেয়া হয়েছে। তীব্র গরমে এসি ছাড়া ঘর ঠাণ্ডা রাখার উপায়গুলো জেনে নেয়া যাক--