লিভিং ইনসাইড

প্রথম চাকরির প্রস্তুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০৬ এএম, ১১ জুলাই, ২০১৯


Thumbnail

পরিশ্রমী জাতি হিসেবে চীনের জনগণের বেশ সুনাম রয়েছে। আজ থেকে প্রায় ২ হাজার ৬০০ বছর আগে লেখা চীনা কিছু ঐতিহাসিক লিপিতে বিখ্যাত একটি উক্তি পাওয়া যায়, যা চীনারা মনেপ্রাণে বিশ্বাস এবং অনুসরণ করে। তা হলো, ‘হাজার মাইলের লম্বা পথ অতিক্রমের শুরু হয় মাত্র এক পা এগিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে’ (A journey of thousands miles begins with a single step). সেই প্রাচীনকালে চীনের দার্শনিক এবং লেখক লাওজী’র (Laozi) লেখায় এই প্রবাদটি পাওয়া যায়, যা অনুসরণ করে চীনারা সাফল্যের শিখরে উঠতে পেরেছে বলে সবাই বিশ্বাস করে।

এই প্রবাদের সূত্র ধরেই বলা যায়, বিশাল শিল্পগোষ্ঠী বা কর্পোরেট হাউজের শীর্ষ কর্মকর্তার কর্মজীবনের শুরুতে তিনিও একটি অফিসে একজন নতুন কর্মী বা কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই। তাই যারা নতুন কর্মী বা এক্সিকিউটিভ হিসেবে কোনো কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করবে, প্রথমেই তাদের অভিনন্দন জানিয়ে বলবো তুমি দৌড়ের ট্র্যাকে উঠে গেছ। দৌড় শুরুর বাঁশিও বেজে গেছে। সামনে, পিছনে, ডানে, বামে সবাই ছুটছে শেষপ্রান্তের লালফিতার দিকে। সুতরাং বসে থাকার বা পিছিয়ে পড়ার আর কোনো সুযোগ নেই। সামনে যখন এগুতেই হবে, এসো জেনে নিই কীভাবে এগুলে হোঁচট খাওয়ার সম্ভাবনা নেই; বরং রয়েছে অগ্রযাত্রা আর সাফল্যের সোনালি সম্ভাবনা।

মানসিক প্রস্তুতি

এতদিন ছিলে শিক্ষার্থী। স্যার বা ম্যাডাম বলে যাদের জানতে, তারা স্নেহের চোখে দেখতো তোমাকে। একটু দেরি, একটু ক্যাজুয়াল পোশাক, একটু অগোছালোভাব- এসবকে বড় কিছু মনে করতেন না কেউই। এখন কর্মজীবী হিসেবে প্রেক্ষাপট ভিন্ন। তোমার কাছে প্রত্যাশাটাও ভিন্ন। বিষয়টা নিয়ে ভেবেছ কি? এই ভাবনাটাই হোক তোমার মানসিক প্রস্তুতির শুরু। এরপর এতদিন অফিসের সময়ে কি করতে যা আর করা যাবে না, তা নিয়ে ভাবতে পারো। অফিসের সময়টায় যারা ফোন করতো, আড্ডা দিতো, হ্যাংআউট প্লান করতো- তাদের অফিসের সময়টা জানিয়ে রাখতে পারো। মনে রেখো, এ এক নতুন যুদ্ধ। আর তুমিই যুদ্ধে সেনাপতি।

জামা-কাপড় তৈরি তো?

কর্পোরেট অফিসে লিখিত বা প্রচলিত একটি ড্রেসকোড থাকে, যা মোটামুটি সবাই অনুসরণ করে। ইন্টারভিউ দেওয়ার সময়ে যে ফরমাল ড্রেস পরতে হয়েছিল সেরকম পোশাকই যে পরতে হবে, তা নাও হতে পারে। সুতরাং মানবসম্পদ বিভাগ বা অফিসের পরিচিত কারো কাছ থেকে ড্রেস কোডটা জেনে নিতে হবে। আবার অফিসিয়াল ওয়েবপেইজ বা ফেইসবুক পেইজে থাকা ছবিগুলো লক্ষ্য করলেও ড্রেসকোডের ওপর একটা ধারণা পাওয়া যাবে। সেই ধারণার ওপর ভিত্তি করে প্রথম সপ্তাহের ড্রেস তৈরি করা চাই।

আরও জানতে হবে

নতুন প্রতিষ্ঠান বা অফিস সম্পর্কে আরও জানতে হেবে। ইন্টারভিউ দেওয়ার আগে যা জেনেছ, তা কিন্তু যথেষ্ট নয়। ওয়েবপেইজ, ফেইসবুক, টুইটারসহ যত সোশ্যাল মিডিয়া  আছে, সবকিছু দেখতে থাকো। অফিসে যারা কাজ করছে তাদের প্রোফাইল খুঁজে খুঁজে জানতে থাকো সবার সম্পর্কে। বিশেষ করে যারা শীর্ষস্থানীয়, তাদের প্রোফাইল দেখতে লিংকড ইন এবং অন্যান্য সব তথ্যভাণ্ডার খুঁজতে থাকো। এতে নিজেকে প্রস্তুত করতে এবং যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে সুবিধা হবে। আর প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস, কাজের ধরন, সাফল্য, চলমান প্রকল্প, আসন্ন প্রকল্প বা প্রোডাক্ট- এসব বিষয়ে যতই জানবে, ততই তুমি সেরা হয়ে উঠবে।

যাওয়াটা যেন জুতসই হয়

নিজের বাসস্থান থেকে নতুন কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য জুতসই একটা পরিকল্পনা করতে হবে। সবচেয়ে বেশি খেয়াল রাখতে হবে সময়ের দিকে। প্রথম দিনগুলোতে কোনোভাবেই দেরি করা চলবে না। বৃষ্টি, যানজট, গাড়ি না পাওয়া, লিফটে লম্বা লাইন- এসব অজুহাত কেউ আশা করে না। প্রয়োজনে যোগ দেওয়ার আগে প্রতিদিন যেভাবে যেতে চাও তা সরেজমিনে দুএকবার অভ্যাস বা প্র্যাকটিস করো। বিকল্প ব্যবস্থাও ভেবে রেখো। উবার, পাঠাও, সহজ বা অন্য কোনো মাধ্যম ব্যবহার করতে চাইলে প্র্যাকটিসের সময় ঘড়ির দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এরপর অফিসেই হয়তো একটা দল বা আশেপাশের সহকর্মীর সঙ্গে একসঙ্গে যাওয়া যাবে। বাহনের কথা মাথায় রেখে পোশাক নির্বাচনটাও জরুরি।

কাগজপত্র গুছিয়ে রাখো

নতুন অফিসে যোগ দেওয়া মাত্র যেসব কাগজ জমা দিতে হবে তার একটা তালিকা করে নাও এবং একে একে সব কাগজ গুছিয়ে নাও। আগে জমা দিলেও এক কপি বায়োডাটা, ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি, সত্যায়িত শিক্ষাগত যোগ্যতার কপি, প্রশংসাপত্র বা অভিজ্ঞতার সনদ, ব্যাংক হিসাব নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টের কপি প্রায় সব অফিসেই চেয়ে থাকে। তাই এগুলো রেডি করে রাখা ভালো।

প্রথম থেকেই কথা বলতে হবে সাবধানে

নতুন হিসেবে তোমাকে পরিচিত হতে হবে সবার সঙ্গে। পেশাদার কোম্পানির মানবসম্পদ বিভাগ নতুন কেউ আসার আগেই একটা ওরিয়েন্টশন প্রোগ্রাম তৈরি করে রাখে। তবে প্রোগ্রাম তৈরি থাকুক বা না থাকুক, তোমাকে নিজ মুখে নিজের পরিচয় তুলে ধরতে হবে। কর্তাব্যক্তি থেকে টি-বয় পর্যন্ত সবাই তোমার সম্পর্কে জানতে চাইবে। বায়োডাটা তো সবার কাছে যাবে না, তাই মুখের কথাতে নিজেকে তুলে ধরতে হবে। সুতরাং কোন পর্যায়ের সহকর্মীকে কীভাবে কি বলবে তা আগেই ভাবতে হবে। বিব্রতকর বা ব্যক্তিগত প্রশ্নও করতে পারে কেউ। সুতরাং স্মার্টলি সবকিছুর উত্তর দিতে হবে। এজন্য সাবধানতা এবং পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে কথা বলাই বাঞ্ছনীয়। নিজেকে বড় কিছু হিসেবে জাহির করা, কোনোকিছু বানিয়ে বলা, নিজের অসহায়ত্ব তুলে ধরা- কিছুই প্রত্যাশিত নয় নতুনদের কাছ থেকে। বিয়ে করেননি কেন, বাচ্চা নিচ্ছেন না কেন- এমন অবান্তর প্রশ্নও সামনে আসতে পারে। তুমি কি তৈরি? লিফটেই হয়ত দেখা হয়ে যাবে সিইওর সঙ্গে জিজ্ঞেস করবে কোন ফ্লোরে যাবেন, কার কাছে যাবেন? উত্তর রেডিতো?

প্রযুক্তি বিষয়ে জেনে নিন

প্রযুক্তির এই যুগে প্রায় সব অফিসেরই কিছু পলিসি থাকে যা জানা প্রয়োজন। যেমন কিছু অফিসে ব্যক্তিগত ল্যাপটপ নেওয়া নিষেধ। এছাড়া ট্যাব, ক্যামেরা, স্মার্টওয়াচ, এমনকি পেনড্রাইভের মতো এক্সটারনাল বা মেমোরি ডিভাইসও নিষিদ্ধ হতে পারে। অফিস চলাকালে কোনো সোশ্যাল মিডিয়া বা সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা থাকতে পারে। এসব না জানলে শুরুতে বিপত্তি ঘটতে পারে। আবার অনেক অফিসে নিজস্ব ডিভাইস ব্যবহার প্রত্যাশিত যা Bring your own device বা BYOD Policy নামে পরিচিত। সুতরাং অফিসে ঢোকার আগে জানার চেষ্টা করলে দোষ নেই- বরং লাভের সম্ভাবনাই বেশি।

ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কেও জানতে হবে

হাতে সময় থাকলে নিজ অফিসের বাইরে একই ধরনের আরও প্রতিষ্ঠান বা সার্বিকভাবে এই ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কেও জানতে হবে। ধরা যাক, তুমি কোনো বেসরকারি বিমান সংস্থায় যোগ দিচ্ছ। সুতরাং শুধু নিজের বিমান সংস্থাই নয়, দেশ-বিদেশের অন্যান্য বিমানসংস্থা বিষয়েও জেনে নিতে পারো। এই পূর্বপ্রস্তুতি পরবর্তীতে কাজে লাগবে।

নিজেকেও সময় দিতে হবে

একটা চাকরির জন্য হয়ত অনেক টেনশন গেছে। চেহারাও খারাপ হয়ে গেছে ছুটতে ছুটতে। এবার একটু স্থির হতে হবে। নিজেকে নিয়ে ভাবতে হবে। প্রয়োজনে সেলুন বা পার্লার থেকে ঘুরে আসো অফিস শুরুর আগেই। বাবা-মা বা নিকটাত্মীয়র সঙ্গে দেখা করে আসো। বন্ধু বা প্রিয় কারো সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দেওয়ারও প্রয়োজন আছে জীবনে। কি স্বপ্ন ছিল, কি হতে পারতাম, কি হারালাম- এসব নিয়ে এখন ভাবার দরকার নেই। বরং নতুন অফিসে প্রথম থেকেই কীভাবে মানিয়ে নিবে তা নিয়ে ভাবো।

নামায ও খাবার পরিকল্পনা

অফিস শুরুর আগেই নামাযের সময় এবং নামাযের নির্দিষ্ট এলাকা সম্পর্কে জেনে নেওয়া ভালো। নিজ অফিস বা নিজ বিল্ডিংয়ে অযু ও নামাযের ব্যবস্থা থাকলেতো ভালো। না থাকলে আশেপাশে কোথায় নামায পড়বে তা দেখে রাখা উচিৎ। একই কথা খাবারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। নতুন বলে লজ্জায় না খেয়ে থাকা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সময়মতো খেয়ে নতুন উদ্যমে কাজ করাটাই সমীচীন। তাই নাস্তা বা দুপুরের লাঞ্চের জায়গাটা আগেই নির্বাচন করে রেখো। এতে সময় বাঁচবে। অফিসে খাবার সরবরাহ বা বাসা থেকে নেওয়া খাবার সংরক্ষণ এবং খাওয়ার ব্যবস্থা জানা থাকা ভালো। ধূমপানের বদঅভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করার এটাই উত্তম সুযোগ। আজকাল অধিকাংশ অফিসে ধূমপান নিষিদ্ধ। কোনো সিনিয়র ধূমপান করলে নতুন যোগ দেওয়া কেউ ধূমপান করবে- এটা মানবে না কেউই। তাই ধূমপানের আলাদা জায়গা না খুঁজে ছেড়েই দাও ধূমপান। অনেকে তো আবার ধূমপানের পর মুখে আর হাতে যে গন্ধ হয় সেটাও সহ্য করতে পারে না। তোমার বস যদি এমনই কেউ হয়!

ব্রিটিশ সব্যসাচী লেখক ও চিত্রশিল্পী উইলিয়াম হাজলিট (William Hazlitt) উনিশ শতকের শুরুতে লিখেছিলেন যে, ‘প্রথম সাক্ষাতে যা দেখা যায়, তা-ই সবচেয়ে বেশি সত্য হয়ে থাকে (First impressions are often the truest)। আবার ইংরেজিতে প্রবাদ আছে, ‘প্রথম অনুভূতিই শেষ অনুভূতি’ (First impression is the last impression)। সেনাবাহিনীতে প্রচলিত কথা ‘হলো একটি ভালো শুরু মানেই অর্ধেক যুদ্ধ’ (A good start is half of the battle)।

হে নতুন, তোমার শুরুটা শুভ হোক।

 

লেখক: কলামিস্ট ও গবেষক। সেনাবাহিনী ও কর্পোরেট জগতে চাকরি করেছেন দীর্ঘদিন। বিদেশে স্কুল পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন এক দশক।

 

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ

 



মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

আসছে কোরবানির ঈদ, ফ্রিজ যত্নে যা করবেন

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

ঈদুল আযহার বাকি দুই মাসেরও কম। এই কম সমেয়র কিছু প্রস্তুতি এখন থেকে নেওয়াই উচিত। তাহলে কোরবানি প্রস্তুতিতে অনেকটাই এগিয়ে থাকবে কাজ। যেহেতু কোরবানি ঈদে মাংস ফ্রিজে সংরক্ষণের ব্যাপার থাকে তাই ফ্রিজ আগেভাগে পরিষ্কার করে রাখা প্রয়োজন। ফ্রিজ পরিষ্কারের ক্ষেত্রে যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

১। পরিষ্কারের সময় সবার আগে ফ্রিজের মেইন সুইচ বন্ধ করে নিতে হবে। এরপর ফ্রিজের ভেতরে থাকা মাছ-মাংস বা অন্যান্য সবকিছু বের করে রাখুন। এবারে পানিতে একটু ডিটারজেন্ট মিশিয়ে মিশ্রণটিতে নরম কাপড় ভিজিয়ে সেই কাপড় দিয়ে ফ্রিজের ভেতরের অংশ ভালো করে মুছে নিন।

২। একটি পাত্রে বেকিং সোডা ও লেবুর রসের মিশ্রণ দিয়ে ফ্রিজ পরিষ্কার করতে পারেন। এতে করে খাবারের দুর্গন্ধ দুর হবে।

৩। শিরিষ কাগজ বা এজাতীয় শক্ত কিছু দিয়ে কখনোই ফ্রিজ পরিষ্কার করবেন না। কারণ এগুলো দিয়ে পরিষ্কার করতে গেলে ফ্রিজের প্লাস্টিক কোটিং নষ্ট হয়ে যাবে।

৪। বাজারে বেশ কিছু অ্যামোনিয়া ফ্রি লিকুইড ক্লিনজার পাওয়া যায়। সেগুলোর সাহায্যে ফ্রিজের বাইরের অংশ পরিষ্কার করুন। এতে বাইরের প্লাস্টিকের আবরণ সুরক্ষিত থাকবে।

৫। ভিনেগার মিশ্রিত পানিতে নরম কাপড় কিংবা ব্রাশ ভিজিয়ে সেটি দিয়ে ফ্রিজের দরজার রাবার পরিষ্কার করুন।এতে এর আঠালো ভাব দূর হবে।


কোরবানির ঈদ   ফ্রিজ  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

গরমে কীভাবে নেবেন ত্বকের যত্ন?

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

রোদের চোখ রাঙানি কমছেই না। এমন তপ্ত আবহাওয়ায় বাইরে বেশিক্ষণ থাকলে ত্বকে ট্যান পড়ে। পুরো চেহারা, হাত-পা, ঘাড়-গলায় ঘাম, ধুলোবালি জমে। অতি বেগুনি রশ্মি ও দূষণে ত্বক কালচে হয়ে যায়। তাই গরমে ত্বকের দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে। নয়তো কালচে দাগ ত্বকে স্থায়ী হয়ে যাবে। কাজশেষে বাইরে থেকে ফেরার পরেও ত্বকের যত্নে মনোযোগী হতে হবে। নয়তো অল্পতেই বুড়িয়ে যাবে ত্বক। উজ্জ্বলতাও হারাবে।

একজন কসমেটোলজিস্ট জানান, গরমে বাইরে থেকে ফিরেই ত্বকে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিতে হবে। ভালো করে ত্বক ধুতে হবে। তারপর ফেশওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে। আলতোভাবে টোনার ব্যবহার করতে হবে। টোনার ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক করতে সহায়তা করে। এর ব্যবহারে ত্বক সতেজ হয়।

এই গরমের জন্য টোনার হিসেবে শসা মিশ্রিত পানি ও গোলাপজল ব্যবহার করা যেতে পারে। ফলের নির্যাসে তৈরি টোনার ত্বককে আরও কালো করে দিতে পারে। পুরো চেহারা, হাত-পা, ঘাড়-গলায় ঘাম, ধুলোবালি জমে। অতি বেগুনি রশ্মি ও দূষণে ত্বক কালচে হয়ে যায়। তাই গরমে ত্বকের দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে। নয়তো কালচে দাগ ত্বকে স্থায়ী হয়ে যাবে। কাজশেষে বাইরে থেকে ফেরার পরেও ত্বকের যত্নে মনোযোগী হতে হবে।


সহজে ঘরে বসেই তৈরি করুন ট্যান দূর করার প্যাক:

১.এক চামচ মধু, এক চামচ টক দই, এক চামচ কমলার রস ও এক চামচ মুলতানি মাটি ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি হাত, পা, মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগান। যদি পুরো শরীরে এই মিশ্রণ ব্যবহার করতে চান তাহলে এর সঙ্গে কফি মেশাতে পারেন। কফি ত্বকের ট্যান দূর করতে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে।

২.বেসনের সঙ্গে এক চামচ হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে নিন। এর সঙ্গে দুধ মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে নিন। এই প্যাকটি মুখ, ঘাড়, গলায় ব্যবহার করতে পারেন। হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে কাজ করে, এবং বেসন ট্যান দূর করতে ভূমিকা রাখে।

৩.ত্বকের কালচে দাগ, রোদে পোড়া দাগ দূর করতে আলুর রস ব্যবহার করতে পারেন। এতে আছে অর্গানিক ব্লিচিং এজেন্ট, যা দাগ দূর করতে সহায়তা করে। নিয়মিত আলুর রস ব্যবহার করলে ত্বক ধীরে ধীরে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত হবে।

৪.ঘরোয়া উপায়ে ট্যান দূর করার কার্যকরী উপাদান পেঁপে ও মধুর প্যাক। পেঁপেতে আছে ব্লিচিং, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি-এইজিং, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। মধুতে আছে ত্বককে সুস্থ ও সুন্দর করার বিভিন্ন উপাদান। ত্বকের অস্বস্তি, জ্বালা, শুষ্কতা দূর করতে পাকা পেঁপের সঙ্গে মধু মিশিয়ে ব্যবহার করুন।

৫.দুই টেবিল চামচ চালের গুঁড়ার সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এটি রোদে পোড়া দাগের ওপর লাগিয়ে আধা ঘণ্টা রেখে দিন। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দুধে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড মরা চামড়া দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। চালের গুঁড়া ত্বকের অসম রং দূর করতে কাজ করে।


তীব্র তাপপ্রবাহ   গরম   ত্বক  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

কোমল ত্বক যত্নে শিশুকে রোদ থেকে দুরে রাখুন

প্রকাশ: ০৮:০৮ এএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

গ্রীষ্মের দাপট চলছে সব জায়গাতে। রৌদ্র ঝলসানো গ্রীষ্মের দাপট ত্বক পুড়িয়ে দিতে পারে। শিশুর কোমল ত্বক যাতে রোদে পুড়ে না যায় সে বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরী। প্রখর রোদে মাত্র ১৫ মিনিট থাকলে ‘রোদে পোড়া’ অবস্থা তৈরি হয়। যদিও ত্বক লাল হয়ে যাওয়া কিংবা অস্বস্তিভাব কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বোঝা যায় না। বারবার ‘রোদে পোড়া’ অবস্থা থেকে ত্বকের ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

যেসব পরিবারে ত্বকের ক্যান্সারের ইতিহাস আছে, যেসব শিশুর ত্বকে মোল (বড় আকারের তিল) আছে, যে শিশুর চামড়া ধবধবে সাদা, কিংবা সাদা চুল বেশি তাদের রোদে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ।

মৃদু উপসর্গ

* ত্বক লাল ও উত্তপ্ত

* ব্যথা

* চুলকানি

তীব্র উপসর্গ

* ত্বকে লালচে ভাব ও ফোসকা

* ব্যথা, সুচ ফোটানোর মতো অনুভূতি

* ফোলা ভাব

* জ্বর, শীত শীত ভাব

* মাথা ব্যথা

* চোখে আঁধার দেখা

করণীয়

* তাড়াতাড়ি শিশুকে রোদ থেকে সরিয়ে ছায়ায় নিতে হবে

* গোসল করিয়ে দিতে হবে

* পরবর্তী দু-তিন দিনের জন্য বেশি বেশি পানীয় পান করাতে হবে

* ব্যথা লাঘবে প্যারাসিটামল খাওয়াতে হবে

* ময়েশ্চারাইজারযুক্ত ক্রিম বা জেল ব্যবহার করতে হবে

* বাইরে বের হওয়ার আগে রোদে পোড়া অংশ ঢেকে বের হতে হবে

চিকিৎসকের কাছে কখন নেবেন

* রোদে পুড়ে ফোসকা পড়লে। শরীরে বেশি ব্যথা হলে

* শিশুর মুখে ফোলাভাব দেখা দিলে

* শরীরের বড় অংশ রোদের তাপে পুড়ে গেলে

* সানবার্নের পর শিশুর জ্বর বা শীত শীত ভাব দেখা দিলে

* মাথা ব্যথা, মতিভ্রম বা অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা দেখা দিলে

* শুষ্ক চোখ ও জিহ্বা এবং খুব তৃষ্ণার্ত ভাব দেখলে।

এগুলো পানিস্বল্পতার লক্ষণ

প্রতিরোধ

* গরমকালে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শিশুকে একটানা বেশিক্ষণ রোদের মধ্যে থাকতে দেওয়া যাবে না

* বাইরে বের হওয়ার সময় শিশুকে রোদচশমা, হ্যাট ও আরামদায়ক পোশাক পরাতে হবে। সুতি কাপড়ের ঢোলা ফুলহাতা পোশাক পরানো ভালো

* ত্বকে সানস্ক্রিন মেখে দিতে হবে। প্রয়োজনে ছাতা ব্যবহার করতে বলতে হবে


তাপ প্রবাহ   শিশু যত্ন  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

হিট স্ট্রোকের কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

এ বছর বাংলা নতুন বছরের প্রথম মাস অর্থাৎ বৈশাখ শুরুর আগেই হয়েছে দাবদাহ। ইতোমধ্যে দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। সারা দেশের উপর দিয়ে বয়ে তীব্র হিট ওয়েভ বা তাপদাহ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও তাপমাত্র বেড়েই চলেছে। তীব্র এই তাপদাহের প্রভাব পড়েছে জন জীবনেও। এতে অস্বস্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকেও চলমান এমন তাপপ্রবাহ নিয়ে কোন সুখবরই নেই। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্র আরও বাড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে।  

এমন গরমে দীর্ঘ সময় রোদে থাকলে হিটস্ট্রোক হয়ে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে লোকজন। শিশু ও বয়স্কদের জন্য এই ঝুঁকি আরও বেশি।

ঢাকার আইসিডিডিআর’বি-এর তথ্য মতে, বাইরে তাপমাত্রা যাই হোক না কেন আমাদের শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাপমাত্রা প্রায় স্থির রাখতে সক্ষম। কিন্তু অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কাজ করা বন্ধ করে দিলে তখন তাকে হিট স্ট্রোক বলা হয়। এর ফলে ঘাম বন্ধ হয়ে গিয়ে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে শুরু করে।

হিটস্ট্রোকের লক্ষণ

শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে যাওয়া, গরমে অচেতন হয়ে যাওয়া, মাথা ঘোরা, তীব্র মাথা ব্যথা, ঘাম কমে যাওয়া, ত্বক গরম ও শুষ্ক হয়ে যাওয়া, শারীরিক দুর্বলতা ও পেশিতে টান অনুভব করা, বমি হওয়া, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, শ্বাস কষ্ট, মানসিক বিভ্রম, খিঁচুনি মত লক্ষন গুলো দেখা দিতে পারে।

কারো হিটস্ট্রোক হলে বা অচেতন হয়ে গেলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে যে কাজগুলো করনে-

১. হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে নিয়ে যেতে হবে। রোগীর শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় কাপড় খুলে ফেলতে হবে।
২. রোগীর শরীরে বাতাস করতে হবে। কাপড় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে গা মুছে ফেলতে হবে।
৩. শরীরের তাপমাত্রা কমাতে বগল, ঘাড়, পিঠ ও কুচকিতে আইসপ্যাক ব্যবহার করতে হবে।


হিট স্ট্রোক   লক্ষণ   চিকিৎসা  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

তীব্র গরমে ঘর ঠাণ্ডা রাখার উপায়!

প্রকাশ: ০৮:২২ এএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দেশের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। অনেকেই গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। দেশের উষ্ণতম মাস এপ্রিল। এর প্রমাণ আমরা পাচ্ছি প্রকৃতিতে। রাজধানীসহ সারা দেশে মৃদু থেকে মাঝারি, কোথাও কোথাও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গ্রীষ্মের তাপদাহে যাদের ঘরে এয়ার কন্ডিশনার নেই তাদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। এসি কেবল ব্যয়বহুল নয়, অনেকেই আছেন যারা এসিতে অল্প সময় থাকলেই ঠাণ্ডা লেগে যায়। তাই প্রচণ্ড গরমে একটু শান্তির জন্য হলেও খুঁজতে হয় বিকল্প ব্যবস্থা। মার্কিন সংবাদ মাধ্যম বিসনেস ইনদাইডের এক প্রতিবেদনে এই গরমে কীভাবে নিজের ঘর এসি ছাড়াই ঠান্ডা রাখা যায়, সেই উপায় বলে দেয়া হয়েছে। তীব্র গরমে এসি ছাড়া ঘর ঠাণ্ডা রাখার উপায়গুলো জেনে নেয়া যাক--

সূর্যের তাপ: ঘর গরম হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে সূর্যালোক। এজন্য গরমে জানালা খোলা রাখলেও পর্দা টেনে রাখতে হবে, যাতে করে ঘরে আলো-বাতাস চলাচল করলেও সূর্যের তাপ কম আসে। প্লাস্টিকের ব্যাকিংসহ মাঝারি রংয়ের ‘ড্রেইপ’ বা পাতলা পর্দা ৩৩ শতাংশ তাপ কমায় এবং ঘরে প্রায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত তাপ কমাতে সহায়তা করে।

দেয়ালে হালকা রঙের ব্যবহা: রঙ যত গাঢ় হয়, তত আলো শোষিত হয় এবং যত হালকা হয়, তত আলো বেশি প্রতিফলিত হয়। ঘরে যত বেশি আলো শোষিত হয়, তত তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই ঘরের ভেতর যতটা সম্ভব হালকা রঙ ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। এতে করে দিনের বেলা ঘর তাপ ধরে রাখবে না। ফলে আলো চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘর ঠান্ডা হতে শুরু করবে।

গরম বাতাস বের করে দেয়া: ‘এক্সস্ট ফ্যান’ ঘরের গরম বাতাস বের করে দেয়। বাথরুম বা রান্না ঘরে এটা ব্যবহারে গরম ভাব কমায়। রাতে জানালা খোলা রাখার পাশাপাশি এক্সস্ট ফ্যান চালিয়ে রাখলে ঘর ঠাণ্ডা রাখতে সহায়তা করে।

আর্দ্র বাতাস:  ঘর ঠাণ্ডা রাখতে ফ্যানের পেছনে ভেজা কাপড়, ঠাণ্ডা বস্তু, এক বাটি বরফ বা ঠাণ্ডা পানির বোতল রাখলে ঠাণ্ডা বাতাস ছড়ায়, ফলে ঘর ঠান্ডা থাকে। এক্ষেত্রে টেবিল ফ্যান ব্যবহার করতে হবে।

ঘরে গাছ রাখুন: ঘরের ভেতর ছোট্ট একটি গাছ, যেমন ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমনি তাপমাত্রা কমাতেও সাহায্য করে। গাছ ঘরের ভেতর জমা হওয়া কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নেয়, ফলে ঘরের তাপমাত্রা তুলনামূলক কম থাকে। মানিপ্ল্যান্ট, অ্যালোভেরা, অ্যারিকা পাম-জাতীয় গাছ ঘরের সৌন্দর্যবর্ধন ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, উভয় কাজেই বেশ উপকারী।

চুলা বন্ধ রাখা: চুলা গরম ঘরকে আরও উষ্ণ করে তোলে। তাই কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত চুলা বন্ধ করে দেয়া ভালো। এতে ঘর বাড়তি গরম হবে না।

অপ্রয়োজনীয় যন্ত্র বন্ধ রাখা: ডিসওয়াশার, ওয়াশিং মেশিং, ড্রায়ার এমনকি মোবাইল চার্জার ইত্যাদি ছোটখাট যন্ত্রও ঘরের তাপ মাত্রা বাড়ায়। তাই এসব যন্ত্র ব্যবহার হয়ে গেলে তা বন্ধ করে রাখা উচিত।

তাপমাত্রা কমে গেলে জানালা খোলা: দিনের বেলায় জানালার পর্দার টেনে রাখুন। এসময় বাতাস সবচেয়ে বেশি গরম থাকে। কিন্তু যখন বাইরের তাপমাত্রা ভেতরের বাতাসের চেয়ে কম থাকে, তখন জানালার পর্দা সরিয়ে দিলে ঘরে ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হয়  এবং ঠাণ্ডা হয়ে আসে।

 


তীব্র গরম   ঘর ঠাণ্ডা   রাখার উপায়  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন