বাংলা একাডেমির কোনায় চাদর বিছিয়ে একদিন যে বইমেলা শুরু হয়েছিলো তা আজ বাংলা একাডেমির চৌকাঠ ছাড়িয়ে ব্যাপ্ত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। আজকের এই বিশাল বইমেলাও পাখির চোখে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জুড়ে বিছিয়ে থাকা সারি সারি বইয়ের স্টল আর প্যাভিলিয়নের এক রঙিন চাদরই বটে।
অমর একুশে গ্রন্থমেলার আজ ১৭তম দিন। দিন বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে মানুষের ভীড়। রাজধানী তো বটেই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসতে শুরু করেছে বইমেলায়। পর পর দুইবছর করোনা মহামারীর কারণে ধুকতে থাকা ভাঙা মেলা যেন ২০২৩ সালে এসে প্রাণ ফিরে পেয়েছে। তবে, মেলায় ভীড় থাকলেও বিক্রি কম এমনই জানিয়েছেন প্রকাশকরা।
আরও বুক কর্ণারের প্রকাশক জান্নাতুন নিসা বলেন, ‘মেলা হিসেবে মেলা জমে উঠেছে। মানুষ আসছে তবে বিক্রি সেরকম হচ্ছে না। বৈশ্বিক সংকটের কারণে কাগজ থেকে শুরু করে প্রকাশনা খাতের সাথে যুক্ত সবকিছুর প্রচুর পরিমাণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। ফলে বইয়ের দাম সব প্রকাশনাই ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। অন্যদিকে পাঠকের আর্থিক অবস্থাও খারাপ হয়েছে। তারপরও যে টাকাটা বই কেনায় খরচ করা যেতো সেই টাকাটা খাবার দোকানে গিয়ে খরচ হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়টি বোধ যথাযথ কর্তৃপক্ষের একটু দেখা উচিৎ।‘
দর্শনার্থীর তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা কম হলেও সামনে বিক্রি বাড়বে এমন প্রত্যাশা জানিয়ে পাঞ্জেরি প্রকাশনীর সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ইফতেখার আহমেদ আজিজ বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ‘দর্শনার্থীর তুলনায় ক্রেতা একটু কম। তবে আশা করছি সামনে বিক্রি বাড়বে। প্রথম দিকে সাধারণত সবাই ঘুরে ঘুরে বই দেখে পছন্দ করে যান। তারপর শেষের দিকে একসাথে সব বই কেনেন। দিন যত যাবে বিক্রি তত বাড়বে এমনই প্রত্যাশা করছি।’
গতদিন পর্যন্ত বইমেলায় নতুন বই এসেছে ৯৩টি। এর মধ্যে গল্পের বই ১২, উপন্যাস ১০, প্রবন্ধ ২, কবিতা ৪৬, শিশুসাহিত্য ২, জীবনী ১, রচনাবলি ১, মুক্তিযুদ্ধ ১, নাটক ২, ইতিহাস ১, চি:/স্বাস্থ্য ১, বঙ্গবন্ধু ১, ধর্মীয় ৪, অনুবাদ ৩ সায়েন্স ফিকশন ১, অন্যান্য ৫টিসহ মোট ৯৩টি বই যোগ হয়েছে।
মন্তব্য করুন
একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, ভাষাবিদ, গবেষক ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক মারা গেছেন। তিনি দীর্ঘদিন হৃদরোগ ও কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন।
বুধবার (২৪ জুলাই) দিবাগত রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তার মরদেহ রাজধানীর ভাটারার বাসায় আনা হবে। এরপর জানাজা শেষে নেয়া হবে চট্টগ্রামে। সেখানেই তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
ড. মাহবুবুল হক প্রবন্ধে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়া গবেষণায় অবদান রাখায় ২০১৯ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
ড. মাহবুবুল হক ১৯৪৮ সালের ৩ নভেম্বর ফরিদপুরের মধুখালিতে জন্মগ্রহণ করেন। এরপর বেড়ে ওঠেন চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান), ১৯৭০ সালে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং ১৯৯৭ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
এরপর চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া কলেজ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে যোগদান করেন।
তার উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে: বাংলা বানানের নিয়ম, রবীন্দ্র সাহিত্য রবীন্দ্র ভাবনা, ইতিহাস ও সাহিত্য, সংস্কৃতি ও লোক সংস্কৃতি এবং বাংলার লোক সাহিত্য: সমাজ ও সংস্কৃতি প্রভৃতি।
মন্তব্য করুন
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ছোটকাগজ সম্পাদনায় বিশেষ অবদান রাখায় চলনবিল সাহিত্য পুরস্কার পেলেন শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক ছোটকাগজ ‘হৃদয়ে চলনথ এর সম্পাদক কবি হাদিউল হৃদয়। হাদিউল হৃদয় তাড়াশ প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক কালবেলা পত্রিকার তাড়াশ উপজেলা প্রতিনিধি।
শুক্রবার (১২ জুলাই') সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরীর হল রুমে আনুষ্ঠানিকভাবে কবি কণ্ঠে কবিতা সংগঠন থেকে প্রধান অতিথি তাড়াশ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. মনিরুজ্জামান মনি এ পুরস্কার স্মারক ও সনদপত্র তুলে দেন।
সাবিনা ইয়াসমিন বিনুর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন মল্লিকী। আলোচনা সভায় সংগঠনের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক রাজুর সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, তাড়াশ পৌরসভার কাউন্সিলর রোখসানা খাতুন রুপা, পাবলিক লাইব্রেরীর সাধারণ সম্পাদক মোজ্জামেল হক মাসুদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হোসনেয়ারা নাসরিন দোলন, যুগ্ম সম্পাদক লুৎফর রহমান, উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সোহাগ, প্রভাষক আব্দুল কাদের, প্রভাষক আব্দুল মতিন প্রমূখ।
উল্লেখ্য, হাদিউল হৃদয় বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিল চলনবিলের প্রাণকেন্দ্র তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়নের পল্লীর নিভূত অজোপাড়া পাড়িল গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মধ্যবিত্ত্ব মুসলিম পরিবারে জন্ম। তিনি একজন সাংবাদিক ও সাহিত্য কর্মী। মূলতঃ কবিতা দিয়ে শুরু করলেও প্রবন্ধ, মুক্তগদ্য ও ছড়া লিখেন। তার লেখা লিটলম্যাগ ও দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে আসছে। তার সম্পাদনা হৃদয়ে চলন ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১২টি সংখ্যা প্রকাশ হয়েছে। সম্পাদনার স্বীকৃতিস্বরূপ এর আগেও বিভিন্ন সংগঠন থেকে পেয়েছেন সম্মাননা ও পুরস্কার।'
মন্তব্য করুন