লিট ইনসাইড

পিতা, আমরা মুক্ত আকাশ দেখছি (পর্ব-১১)


Thumbnail পিতা, আমরা মুক্ত আকাশ দেখছি (পর্ব-১২)।

চলছে শোকাবহ আগস্ট মাস। এ মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। আগস্ট ষড়যন্ত্রের আদ্যোপান্ত নিয়ে অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর সারা জাগানো বই ‘পিতা, আমরা মুক্ত আকাশ দেখছি’ এর ধারাবাহিক পর্বের একাদশ পর্ব পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল-

জাতীয় রক্ষীবাহিনীর সদর দপ্তর। একটি কক্ষে বাহিনীর দু জন সদস্য, যারা একসাথেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিল। দুজনেই খুব উত্তেজিত এ কারণে যে, তারা দুষ্কর্মে লিপ্ত একাত্তরের এক ঘাতককে ধরে এনেছিল ঠিকই, কিন্তু উপরের নির্দেশে তাকে ছেড়ে দিতে হয়েছে। একজন রাজনীতিবিদের সুপারিশেই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। পার পেয়ে যাওয়া দুষ্কৃতকারী ইদানীং চীনের বন্ধু বলে পরিচিত একটি সংগঠনের বড় মাপের নেতাও হয়ে উঠেছে। অথচ রক্ষীবাহিনীর দুই সদস্য জানে, মুক্তিযুদ্ধের সময় চীন কিভাবে স্বাধীনতাকামী জনগণের বিরুদ্ধে কাজ করেছে এবং এখন বাংলাদেশবিরোধী অবস্থানে অটল রয়েছে। দুষ্কৃতকারীটিকে ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারে তাদের কিছুই করার ছিল না বলেই তাদের মনে এই আক্ষেপ বেশি করে দেখা দিয়েছে। যারা দেশ চালাচ্ছে তাদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের প্রভাব তা হলে রয়েছে। তা না হলে ধরে আনা দুষ্কৃতকারী ছাড়া পেল কিভাবে?

দুই সহযোদ্ধা নিজেদের মধ্যে আলাপ করতে গিয়ে একমত হল যে, স্বাধীনতাবিরোধিদের অরাজকতা বন্ধ করতে না পারলে বাংলাদেশের উন্নতি হবে না, বরং স্বাধীনতাই বিপন্ন হওয়ার আশংকা আছে। এই উপলব্ধির কথাই পরে তাদের এক সিনিয়র অফিসারকে জানানোর সময় তারা বলতে ভুলল না, যাকে ধরে আনা হয়েছিল সে এবং তার সহকর্মীরা দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে।

রক্ষীবাহিনীর ঐ দুজন সদস্য নিয়মিত পত্রিকা পড়ে। কয়েকটি পত্রিকার কিছু লেখা এবং বিভিন্ন জনের মধ্যে আলাপ করে তারা জানতে পেরেছে যে, সাধারণ জনগণের মধ্যে এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, রক্ষীবাহিনী দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের উপর ভীষণ রকমের অত্যাচার চালাচ্ছে। নিরপরাধ জনসাধারণকে ধরে এনে রক্ষীবাহিনী ক্যাম্পে এমন দৈহিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে যে, অনেকেই প্রাণ হারাচ্ছে। দুই সহকর্মীর বুঝতে অসুবিধা হল না যে, জনগণের মধ্যে রক্ষীবাহিনী সম্পর্কে যে বদনাম ছড়ানো হচ্ছে সেটি কোন মহল বিশেষ এবং খুব সুসংগঠিতভাবেই ছড়াচ্ছে। নইলে রক্ষীবাহিনী সম্পর্কে জনগণের মাঝে এত বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল না।

রক্ষীবাহিনীর দুই সদস্যের ধারণা কিন্তু মোটেই ভ্রান্ত ছিল না। সে সময় সাধারণ মানুষের মাঝে নানা অপপ্রচার চালনো হচ্ছিল। সাধারণ মানুষের মাঝে এই ধারণা সৃষ্টি করা হল যে, রক্ষীবাহিনী হল ভারতীয়দের হাতে গড়া বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত বাহিনী। এই বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত নির্দেশেই চলে। ষড়যন্ত্রকারীরা দেশব্যাপী এই অপপ্রচার চালাতে থাকে, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই রক্ষীবাহিনী সারা দেশের নিরীহ জনগণের উপর এমন অত্যাচার চালাচ্ছে, যা ৭১-এর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতাকেও ছাড়িয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, লোকজনকে এ কথাও বোঝানো হল যে, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে সেনাবাহিনী বলে কিছু থাকবে না— থাকবে শুধু রক্ষীবাহিনী, যাদের কাজই হবে ভারতের স্বার্থে ও বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দেশবাসীর উপর অত্যাচার চালিয়ে যাওয়া। এই ব্যাপক অপপ্রচারে অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ল। দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র তিন বছরের মাথায় স্বাধীনতার মহানায়ককে কেউ কেউ শুধু অত্যাচারী শাসক হিসেবে মূল্যায়ন করেই ক্ষান্ত হল না, বরং তারা অত্যাচারীকে করে দাঁড়াবার কথাও ভাবতে থাকে।

হাকিবুর রহমান গং ষড়যন্ত্রকারীদের ব্যাপক অপপ্রচার চালানোর উদ্দেশ্য ছিল। একটাই, সেটি হল জনগণকে এমনভাবে বিভ্রান্ত করে রাখা হবে যে, যখন বঙ্গবন্ধুকে ষড়যন্ত্রের নীলনকশা অনুযায়ী হত্যা করা হবে, তখন যাতে তারা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে না পড়ে। পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রচেষ্টায় দেশের সুষ্ঠু অবস্থানকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে আপসহীন একটি পত্রিকার সম্পাদক মন্তব্য করেন, তখন দেশে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে এমন পরিবেশ সৃষ্টি করা হল যার তুলনা শেক্সপিয়ারের নাটকের ট্রাজেডির সঙ্গেই তুলনীয়। বঙ্গবন্ধুকে শেষ করে দেয়ার জন্যে ষড়যন্ত্রকারীরা তার আশেপাশেই অবস্থান করতে থাকে এবং খুব সচেতন ও সুসংগঠিতভাবে তাদের এক-একজন যার যার নির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করে যায়। এভাবেই স্বাধীনতার মহানায়ককে হত্যা করার আয়োজন সম্পূর্ণ করা হয়। যড়যন্ত্রকারীদের কৃতিত্ব হল বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরিবেশ সৃষ্টির জন্যে তারা নীলনকশা মাফিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে এমন সব ঘটনা ঘটিয়ে চলল, যা লোকজনের কাছে বিচ্ছিন্ন বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেই মনে হতে থাকে। এর পেছনে যে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে, সেটা কেউ আঁচ করতে পারল না। এমনকি বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করার দায়িত্ব যাদের উপর ছিল, তারা পর্যন্ত কিছুই বুঝে উঠতে পারল না।

সে সময় দেশে যে এত ঘটনা-দুর্ঘটনা ঘটানো হচ্ছিল, মূলতই তার একটিই লক্ষ্য ছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার জন্যে হাবিবুর রহমান গং-এর প্রত্যেকেই তাদের নির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করেছে। শেগুপিয়ারের নাটকে যেমন নায়ককে হত্যা করার জন্যে অনেকগুলো চরিত্রের আবির্ভাব হয়, হাবিবুর রহমান সরো হচ্ছে সেই ধরনের চরিত্র। তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার জন্যে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিল।


জাতির পিতা   বঙ্গবন্ধু   মেখ মুজিবুর রহমান   মুক্ত আকাশ  


মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

কবিতা

প্রকাশ: ০২:০৩ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

বিশ্বের সেরা এবং আকর্ষণীয় পাচ মসজিদ

প্রকাশ: ১১:০২ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্বের এমন পাঁচটি মসজিদ সম্পর্কে জেনে নিন:


১. মসজিদুল হারাম, মক্কা, সৌদি আরব:

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষ দেখতে যায়, এমন মসজিদের তালিকায় সবার প্রথমে আছে পবিত্র নগরী মক্কার মসজিদুল হারাম। প্রতিবছর প্রায় ৮০ লাখ মানুষ এই মসজিদে যান। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় মসজিদ। একসঙ্গে ১৫ লাখ মানুষ এখানে প্রবেশ করে ঘুরে দেখতে পারেন। মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র তিন স্থানের একটি এই মসজিদুল হারাম। মুসলমানদের কিবলা পবিত্র কাবাশরিফ এখানেই অবস্থিত।

তবে যে কেউ চাইলেই মসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে পারেন না। অমুসলিমদের জন্য মক্কা নগরীতে প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ।


২. শেখ জায়েদ মসজিদ, আবুধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত:

২০০৭ সালে স্থাপিত এই মসজিদ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মসজিদগুলোর একটি। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ঝাড়বাতি ও সবচেয়ে বড় গালিচাও আছে এই মসজিদে।

আরব আমিরাতে বসবাসকারীদের বেশির ভাগই প্রবাসী, যাঁরা মূলত শ্রমজীবী হিসেবে বিভিন্ন দেশ থেকে সেখানে যান। এই বৈচিত্র্যময়তাই মসজিদটির নকশার মূল ভিত্তি। ব্রিটিশ, ইতালীয় ও আমিরাতি স্থপতিরা মিসর, মরক্কো, তুরস্ক, পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের মসজিদের নকশা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে শেখ জায়েদ মসজিদের নকশা এঁকেছেন।

প্রতিবছর মসজিদটি দেখতে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। শুধু ২০১৭ সালেই এসেছেন প্রায় ৫৮ লাখ দর্শনার্থী। নামাজের সময় ছাড়া অন্য সময় অমুসলিম দর্শনার্থীরাও মসজিদ ঘুরে দেখতে পারেন। তবে শুক্রবার অমুসলিম দর্শনার্থীদের এই মসজিদে প্রবেশ নিষেধ।


৩. আয়া সোফিয়া, ইস্তাম্বুল, তুরস্ক:

ইউরোপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় শহরগুলোর একটি তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুল। আর ইস্তাম্বুল বা গোটা ইউরোপের অন্যতম সুন্দর মসজিদ আয়া সোফিয়া। ৩৬০ খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দে স্থাপিত এ স্থাপনা শুরুতে মসজিদ ছিল না। ১৪৬৩ সালে সুলতান মেহমেদ এটিকে মসজিদ হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

১৯৩৪ সালে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে তৎকালীন তুরস্ক সরকার। কিন্তু ২০২০ সালে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এটিকে আবার নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিদের কাছে উন্মুক্ত করে দেন। ১৯৮৫ সালে আয়া সোফিয়াকে বিশ্ব ঐতিহ্যর স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো।


৪. আল–আকসা মসজিদ, পূর্ব জেরুজালেম, ইসরায়েল:

মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর শুরুর দিককার অন্যতম নিদর্শন জেরুজালেমের আল–আকসা মসজিদ।

বলা হয়ে থাকে, খোলাফায়ে রাশিদিনের অন্যতম খলিফা হজরত উমর (রা.)–র শাসনামলে ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হয় মসজিদটির নির্মাণকাজ। তবে বর্তমানে আল-আকসা বলতে পুরো চত্বরটাকেই বোঝানো হয়। ‘হারাম আল শরিফ’ নামে পরিচিত এই চত্বরের চার দেয়ালের মধ্যে আছে কিবলি মসজিদ, কুব্বাতুস সাখরা (ডোম অব দ্য রক) ও বুরাক মসজিদ। মূল আল–আকসা বা কিবলি মসজিদ হলো ধূসর সীসার পাতে আচ্ছাদিত গম্বুজওয়ালা একটি স্থাপনা। তবে পর্যটকের কাছে আল–আকসা নামে বেশি প্রসিদ্ধ সোনালি গম্বুজের স্থাপনা কুব্বাতুস সাখরা।

জেরুজালেমের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় উঠে আসে ১৯৮১ সালে। এখানে প্রায় চার লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন । তবে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। কোনো মুসল্লিকে তারা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢুকতে দিচ্ছে না। পবিত্র স্থানটির দায়িত্বে থাকা ইসলামিক ওয়াক্‌ফ বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।


৫. দ্বিতীয় হাসান মসজিদ, কাসাব্লাঙ্কা, মরক্কো:

আলজেরিয়ার জামা এল জাযের মসজিদের মিনার সবচেয়ে উঁচু, ৮৭০ ফুট। তারপরেই কাসাব্লাঙ্কার দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মিনার, উচ্চতা ৬৮৯ ফুট। মরক্কোর বাদশাহ দ্বিতীয় হাসানের তত্ত্বাবধানে নির্মিত মসজিদটির নকশাকার ফরাসি স্থপতি মিশেল পিনসু।

আটলান্টিক মহাসাগরের একটি শৈলান্তরীপের মাথায় মসজিদটির অবস্থান। মেঝের একটা অংশ স্বচ্ছ কাচের বলে আটলান্টিকের নীল পানি দেখতে পান নামাজে যাওয়া মুসল্লিরা। দেয়ালে মার্বেলের চোখধাঁধানো কারুকাজ। ছাদ অপসারণযোগ্য বলে নামাজ পড়তে যাওয়া মুসল্লিরা রাতের আকাশও দেখতে পান।

দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মিনার থেকে একটি লেজাররশ্মি মুসলমানদের কিবলা কাবাঘরের দিকে তাক করা। অনন্য স্থাপত্যশৈলীর জন্য জগৎ–খ্যাত এই মসজিদে একসঙ্গে ১ লাখ ৫ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায় করার সুবিধা আছে।


মসজিদ   সেরা  


মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

মুখের ঠিকানা

প্রকাশ: ১২:১৬ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

স্পর্শে তুমি

প্রকাশ: ০৪:৪৫ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন