লিট ইনসাইড

আগস্ট ট্রাজেডি: গোয়েন্দা ব্যর্থতা

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ১৪ অগাস্ট, ২০২৩


Thumbnail

জাতির পিতাকে স্বপরিবারে নির্মম হত্যাকাণ্ডে গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিলো নজিরবিহীন। সেনা অভ্যুত্থান সম্পর্কে আগাম কোন তথ্যই দিতে পারেনি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। গোয়েন্দা ব্যর্থতার স্বরূপ উন্মোচন করেছেন মনজুরুল আহসান বুলবুল ‘পনেরো আগস্টের নেপথ্য কুশীলব’ গ্রন্থে। পাঠকের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে এর কিছু অংশ প্রকাশ করা হলো]

আগস্ট হত্যাকাণ্ডে সামরিক ও বেসামরিক ব্যর্থতা ছিল সীমাহীন। সেনাবাহিনীর সদস্যরা মূল পরিকল্পনায় ছিল বলে সেনা গোয়েন্দাদের কথাই বেশি আসে কিন্তু তখন তো বেসামরিক প্রশাসনও চলছিল। বেসামরিক গোয়েন্দারাই কি যথাযথভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পেরেছিল?

সে সময় সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিএফআইয়ের কী ভূমিকা ছিল— প্রথমে এ প্রশ্ন জাগে। সংস্থাটির তৎকালীন প্রধান ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুর রউফ জানান: বাকশাল গঠনের পর বঙ্গবন্ধু তার জীবনে শেষ জনসভা করার সময়ই সে সময়কার কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের কাছ থেকে ট্যাংক রেজিমেন্টের তৎপরতা সম্পর্কে জানতে পারেন। তিনি সে বিষয়ে বঙ্গবন্ধুকে অবহিতও করেছিলেন। উল্লেখ্য, রউফ ১৯৭৫ সনের জুন মাসে প্রশিক্ষণ নিতে বিদেশে যান, দেশে ফেরেন আগস্টের ১৩ তারিখে। এর মধ্যেই ডিএফআইয়ের শীর্ষপদে রদবদল হয়। এ সময় সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা বাহিনীর নানা কাজে সমন্বয়হীনতার চিত্রটি খুবই স্পষ্ট। ডিএফআইয়ের বিদায়ি প্রধান নতুন প্রধানকে দায়িত্ব দিতে দেরি করছিলেন, এমন অভিযোগও পাওয়া যায়। এর মধ্যে কোনো ষড়যন্ত্র ছিল কি না তাও দেখার বিষয়।

১৯৭৫ সনে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রউফ ছিলেন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিএফআই (বর্তমান ডিজিএফআই) প্রধান। কর্নেল জামিল আহমেদ (মরণোত্তর পদোন্নতি পাওয়া ব্রিগেডিয়ার জেনারেল) ডিএফআইয়ের নতুন প্রধান হলেও তিনি [রউফ] যথাসময়ে দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি। ফলে আগস্ট হত্যাকাণ্ডের ওই সময়ে ডিএফআইয়ের কোনো তৎপরতাই দৃশ্যমান ছিলো না।

পরবর্তীকালে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে রউফের সখ্য দৃশ্যমান হয় স্পষ্টভাবে। ডিএফআই যখন ডিজিএফআই হয়, পরিচালক পদে নিয়োগ পান কে এম আমিনুল ইসলাম। এর পরপরই অভিযোগ এনে তাকে সেখান থেকে সরানো হলে আব্দুর রউক আবার পরিচালকের দায়িত্ব পান জিয়ার বিশ্বস্ত সৈনিক হিসেবে।

জে. সফিউল্লাহ জানান, সেই সময় সেনাবাহিনীর কোনো সুসংগঠিত ইন্টেলিজেন্স উইং ছিল না। আর্মি দিয়ে গঠিত ডিএফআই (দ্য ডিরেক্টরেট অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স)—এর সরাসরি তিন বাহিনীর প্রধানদের কাছে রিপোর্ট করার নিয়ম ছিল। কিন্তু ১৯৭৪ সালে হঠাৎ করে এই নিয়ম পরিবর্তন করে ডিএফআইকে সরাসরি রাষ্ট্রপতির সচিবালয়ে রিপোর্ট করতে বলা হয়। এতে সেনাপ্রধানের সঙ্গে ডিএফআইয়ের তথ্য আদান—প্রদানের ব্যাপারে একটি শূন্যতার সৃষ্টি হয়।

যে বিষয়টি নিয়ে খুব আলোচনা হয়নি তা হচ্ছে, পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা বা বেসামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর ভূমিকা কী ছিল। তবে পুলিশ বাহিনীর তৎপরতার কিছু জানা যায় ব্রিগেডিয়ার রউফের বয়ানে। রউফ জানাচ্ছেন: ১৪ই আগস্ট দিনের কোনো একভাগে সে সময়কার আইজিপি নুরুল ইসলাম তাকে ফোন করে বলেন, তাকে (আইজিপিকে) জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মাইন পুঁতে রাখা হয়েছে বা হবে। কাল রাষ্ট্রপতি ক্যাম্পাসে গেলে একটা বিশেষ পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হবে। মাইন অনুসন্ধান বা অপসারণ কাজে তিনি সেনাবাহিনীর সহায়তা চান, কারণ তখন পুলিশের এই প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ছিল না। আইজিপি কোন সূত্র থেকে এটা জানতে পেরেছিলেন, তা জানা যায়নি। গণবাহিনীর ডোমা ফাটানোর আগে এই ফোন করা হয়েছিল কি না, তাও জানা যায়নি। যা—ই হোক, আইজিপির এই ফোন পেয়ে রউফ জানান, তিনি আর ডিএফআই প্রধানের দায়িত্বে নেই। তবে আইজিপির অনুরোধে তিনি বিষয়টি সেনাপ্রধান সফিউল্লাহকে জানিয়েছিলেন।

আইজিপি এ সময় জানান: পুলিশের একটি দল ১৪ই আগস্ট রাত ১২টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সব গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে একটি বৈঠক করবে। সেখানে ১১টা টিম হবে, সেই টিমে ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়ন, পুলিশ, স্পেশাল ব্রাঞ্চ ছাড়াও তিনটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি থাকবেন। এই টিম পরদিন ১৫ই আগস্ট রাষ্ট্রপতির বিশ্ববিদ্যালয়ের সফর নিরাপদ করতে নিশ্ছিদ্র ব্যবস্থা নেবে। নানা সূত্রে জানা যায়, এই বৈঠকটি হয়েছিল।

বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে, যখন এই বৈঠকটি চলছিল সম্ভবত তার কাছাকাছি সময়ে ঘাতকদল সেনানিবাসের বালুরঘাটে ব্রিফিং শেষে ধানমন্ডির উদ্দেশে ট্যাংক নিয়ে রওনা হয়েছে। একদিকে পরদিন রাষ্ট্রপতির বিশ্ববিদ্যালয় সফর নিশ্ছিদ্র নিরাপদ করতে গোয়েন্দা বৈঠক চলছে; অন্যদিকে রাষ্ট্রপতিকে হত্যার জন্য ঘাতক দল মাঠে নেমে পড়েছে। কিন্তু এই বৈঠকে উপস্থিত দায়িত্বশীলরা কিছুই জানে না!



আগস্ট মাস   বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান  


মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

কবিতা

প্রকাশ: ০২:০৩ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

বিশ্বের সেরা এবং আকর্ষণীয় পাচ মসজিদ

প্রকাশ: ১১:০২ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্বের এমন পাঁচটি মসজিদ সম্পর্কে জেনে নিন:


১. মসজিদুল হারাম, মক্কা, সৌদি আরব:

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষ দেখতে যায়, এমন মসজিদের তালিকায় সবার প্রথমে আছে পবিত্র নগরী মক্কার মসজিদুল হারাম। প্রতিবছর প্রায় ৮০ লাখ মানুষ এই মসজিদে যান। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় মসজিদ। একসঙ্গে ১৫ লাখ মানুষ এখানে প্রবেশ করে ঘুরে দেখতে পারেন। মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র তিন স্থানের একটি এই মসজিদুল হারাম। মুসলমানদের কিবলা পবিত্র কাবাশরিফ এখানেই অবস্থিত।

তবে যে কেউ চাইলেই মসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে পারেন না। অমুসলিমদের জন্য মক্কা নগরীতে প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ।


২. শেখ জায়েদ মসজিদ, আবুধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত:

২০০৭ সালে স্থাপিত এই মসজিদ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মসজিদগুলোর একটি। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ঝাড়বাতি ও সবচেয়ে বড় গালিচাও আছে এই মসজিদে।

আরব আমিরাতে বসবাসকারীদের বেশির ভাগই প্রবাসী, যাঁরা মূলত শ্রমজীবী হিসেবে বিভিন্ন দেশ থেকে সেখানে যান। এই বৈচিত্র্যময়তাই মসজিদটির নকশার মূল ভিত্তি। ব্রিটিশ, ইতালীয় ও আমিরাতি স্থপতিরা মিসর, মরক্কো, তুরস্ক, পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের মসজিদের নকশা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে শেখ জায়েদ মসজিদের নকশা এঁকেছেন।

প্রতিবছর মসজিদটি দেখতে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। শুধু ২০১৭ সালেই এসেছেন প্রায় ৫৮ লাখ দর্শনার্থী। নামাজের সময় ছাড়া অন্য সময় অমুসলিম দর্শনার্থীরাও মসজিদ ঘুরে দেখতে পারেন। তবে শুক্রবার অমুসলিম দর্শনার্থীদের এই মসজিদে প্রবেশ নিষেধ।


৩. আয়া সোফিয়া, ইস্তাম্বুল, তুরস্ক:

ইউরোপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় শহরগুলোর একটি তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুল। আর ইস্তাম্বুল বা গোটা ইউরোপের অন্যতম সুন্দর মসজিদ আয়া সোফিয়া। ৩৬০ খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দে স্থাপিত এ স্থাপনা শুরুতে মসজিদ ছিল না। ১৪৬৩ সালে সুলতান মেহমেদ এটিকে মসজিদ হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

১৯৩৪ সালে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে তৎকালীন তুরস্ক সরকার। কিন্তু ২০২০ সালে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এটিকে আবার নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিদের কাছে উন্মুক্ত করে দেন। ১৯৮৫ সালে আয়া সোফিয়াকে বিশ্ব ঐতিহ্যর স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো।


৪. আল–আকসা মসজিদ, পূর্ব জেরুজালেম, ইসরায়েল:

মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর শুরুর দিককার অন্যতম নিদর্শন জেরুজালেমের আল–আকসা মসজিদ।

বলা হয়ে থাকে, খোলাফায়ে রাশিদিনের অন্যতম খলিফা হজরত উমর (রা.)–র শাসনামলে ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হয় মসজিদটির নির্মাণকাজ। তবে বর্তমানে আল-আকসা বলতে পুরো চত্বরটাকেই বোঝানো হয়। ‘হারাম আল শরিফ’ নামে পরিচিত এই চত্বরের চার দেয়ালের মধ্যে আছে কিবলি মসজিদ, কুব্বাতুস সাখরা (ডোম অব দ্য রক) ও বুরাক মসজিদ। মূল আল–আকসা বা কিবলি মসজিদ হলো ধূসর সীসার পাতে আচ্ছাদিত গম্বুজওয়ালা একটি স্থাপনা। তবে পর্যটকের কাছে আল–আকসা নামে বেশি প্রসিদ্ধ সোনালি গম্বুজের স্থাপনা কুব্বাতুস সাখরা।

জেরুজালেমের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় উঠে আসে ১৯৮১ সালে। এখানে প্রায় চার লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন । তবে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। কোনো মুসল্লিকে তারা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢুকতে দিচ্ছে না। পবিত্র স্থানটির দায়িত্বে থাকা ইসলামিক ওয়াক্‌ফ বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।


৫. দ্বিতীয় হাসান মসজিদ, কাসাব্লাঙ্কা, মরক্কো:

আলজেরিয়ার জামা এল জাযের মসজিদের মিনার সবচেয়ে উঁচু, ৮৭০ ফুট। তারপরেই কাসাব্লাঙ্কার দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মিনার, উচ্চতা ৬৮৯ ফুট। মরক্কোর বাদশাহ দ্বিতীয় হাসানের তত্ত্বাবধানে নির্মিত মসজিদটির নকশাকার ফরাসি স্থপতি মিশেল পিনসু।

আটলান্টিক মহাসাগরের একটি শৈলান্তরীপের মাথায় মসজিদটির অবস্থান। মেঝের একটা অংশ স্বচ্ছ কাচের বলে আটলান্টিকের নীল পানি দেখতে পান নামাজে যাওয়া মুসল্লিরা। দেয়ালে মার্বেলের চোখধাঁধানো কারুকাজ। ছাদ অপসারণযোগ্য বলে নামাজ পড়তে যাওয়া মুসল্লিরা রাতের আকাশও দেখতে পান।

দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মিনার থেকে একটি লেজাররশ্মি মুসলমানদের কিবলা কাবাঘরের দিকে তাক করা। অনন্য স্থাপত্যশৈলীর জন্য জগৎ–খ্যাত এই মসজিদে একসঙ্গে ১ লাখ ৫ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায় করার সুবিধা আছে।


মসজিদ   সেরা  


মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

মুখের ঠিকানা

প্রকাশ: ১২:১৬ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

স্পর্শে তুমি

প্রকাশ: ০৪:৪৫ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন