লিভিং ইনসাইড

তবে কি বড় হয়ে গিয়েছি!

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২২


Thumbnail তবে কি বড় হয়ে গিয়েছি!

ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই উল্লাস। ঈদ মানেই চাঁদ রাতে দল বল নিয়ে স্লোগানে বের হয়ে যাওয়া '১, ২, ৩/রাত পোহালেই ঈদের দিন' এরকম আরো কত স্লোগানে পাড়ার ছেলে মেয়েরা ঈদকে আগমণ জানায়। তবে এখনো কি সেই আমেজে ভরপুর আছে এখনকার ঈদ নাকি আমি বড় হয়ে গেছি!

ঈদ মুসলিম ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব। এক বছর প্রতিক্ষার পর পর আসে 'ঈদ'। আর ঘরে ঘরে ছেয়ে যায় আনন্দ উৎসবে। তবে শৈশবের ফেলে আসা ঈদের রঙিন দিনগুলো যেনো আজ বিষাদের রং আর ব্যস্ততায় হারিয়ে শুধুই স্মৃতি। হারিয়ে গিয়েছে আমার ঈদের আনন্দ, শৈশবের দুরন্তপনা। সবই এখন মৃত অতীত। 

ছোটবেলা থেকেই বুঝতাম সব থেকে আনন্দের দিন মানে বছর ঘুরে আসা ঈদ। বছর ঘুরে দুইতা ঈদ থাকে এক রোজার ঈদ মানে 'ঈদুল ফিতর' আরেকটা ঈদ হলো কুরবানীর ঈদ। রোজার ঈদ শেষে ২-৩ মাসের মাঝামাঝি সময়ে উটযাপন করা হয় কুরবানীর ঈদ। তবে কুরাবনীর ঈদ থেকে রোজার ঈদই অপেক্ষাকৃত বেশি আনন্দের। কারণ সেখানে আমাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষা, চাঁদ দেখা না দেখার ওপর অনিশ্চয়তা, দুশ্চিন্তা ও আনন্দ মিশে থাকত।

ইফতারের অন্যদিন গুলিতে মূলত অপেক্ষায় থাকতাম মুখরোচক ভাজা-পোড়া খাবারগুলোর প্রতি। তবে ত্রিশ বা ঊনত্রিশ ইফাতারের দিন আর সেই ভাজা-পোড়ায় মন বসতো না। অপেক্ষায় থাকতাম কখন ইফতার শেষ হবে আর টিভির সামনে বসবো। হারিয়ে যাওয়া সেই সময়টাতে এখনকার মত এত সোশ্যাল মিডিয়ার নিয়ে পড়ে থাকতো না কেউই। পাড়ার ছেলেদের সাথে মাঠে ঘাঠে চলে যেতো আমার ছোট ভাই রিফাত। যেখানে গাছপালার ফাঁকে পশ্চিম আকাশের কার্নিশ দেখা যায়। সবাই মিলে একদৃষ্টিতে পশ্চিমে চেয়ে থাকতো। চিকন কাঁচির মতো হলুদাভ একটা চাঁদের অপেক্ষায়! কে কার আগে দেখতে পায়। তাদের সে কী মজার প্রতিযোগিতা ছিলো!

অন্যদিকে বাড়ির সবার ছোট তন্ময়। সেই সময়টাতে ছিলো খুবই ছোট, তাই তাঁকে নিয়েই আমি বসতাম টিভির সামনে সাথে থাকতো চাচতো বোনেরাও। মাঝে মাঝে ভাই এসে জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে বলতো কিরে আপু, খবরে কিছু বলছে চাঁদ উঠছে কিনা ! সে কি আগ্রহ আর উত্তেজনা ছিলো আমাদের চাঁদ রাতের দিন।  

চাঁদ দেখা মাত্রই উৎসবের আমেজে মেতে উঠতো সবাই। বাইরে শোনা যেতো ছোট বাচ্চাদের '১,২,৩/ রাত পোহালে ঈদের দিন' এ স্লোগানের মধ্য দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছে ঈদকে। এইদিকে বাবা বাজার নিয়ে চলে আসতো, আর রান্না ঘর থেকে ঠক ঠক শীলনড়ার শব্দ ভেসে আসতো। তাঁর মানে ছিলো ঈদের দিন রান্নার জন্য আম্মু মসলা বাটা শুরু করে দিয়েছে। ঠক ঠক শীলনড়ার শব্দের পাশপাশি ভেসে আসতো আদা, রসুন পেয়াজের কাঁচা মসলার ঘ্রাণ। এই ঘ্রাণ যেনো আরো সতেজ করে তুলতো ঈদ আনন্দকে। 

ঈদ আনন্দের আরেকটা বড় অংশ ছিলো পিঠাপুলি। এটা বলা যায় রোজা শুরু থেকে বানানো শুরু হয়। এরপর রোদে শুকিয়ে ঈদের জন্য প্রস্তুত করে রাখেতেন। আর যখনই চাঁদ দেখা যায় , সাথে সাথেই এলাকা জুড়ে ধুম চলতো পিঠাপুলি ভাজার, আর সেই ভাজা পিঠা খেজুড়ের ঘুরের তৈরি করে রাখা শিরায় চুবানো হত। পিঠা ভাজা আর শিরা বানানোর ঘ্রাণ তখনকার ঈদ আনন্দকে নিয়ে যেতো অন্যমাত্রায়!

আর অন্যদিকে ধুম চলতো মেহেদী পড়া নিয়ে। ঈদের আগের দিন মেহেদী দেওয়ার প্রচলন অনেক আগে থেকেই। ছোট বেলা থেকেই আমি মোটামুটি ভালো মেহেদী ডিজাইন পারতাম। তাই চাঁদ উঠার সাথে সাথেই এলাকার পরিচিত বাচ্চারা চলে আসতো আমার কাছে মেহেদী দিয়ে দেওয়ার জন্য। আর নানা নকশায় অঙ্কিত হতো ছোট্টমনিদের হাত। 

পিঠাপুলি, মসলা বাটা, মেহেদী দেওয়া এসব আনন্দ আরো দ্বিগুন করে দিতো  বিটিভিতে চলা কবি নজরুলের বিখ্যাত গানটি ' রমজানের ঐ রোজার শেষে, এলো খুশির ঈদ'। ফুল সাউন্ডে সেই গান বাজতো আর আম্মু রান্না করতো। আমি বসে বসে বাচ্চাদের হাতে মেহেদী দিতাম। মাঝে মাঝে আম্মু এসে আবার ভেজে রাখা একটা দুইটা পিঠাও দিয়ে যেতো। মেহেদী দেওয়ার পাশাপাশি পিঠায় এক কামড় দিতাম আর মনোযোগ দিয়ে সেই গানটাও শুনতাম এবং গানটা শুনে কেমন একটা ধাক্কায় শিউরে উঠতাম। গানের প্রতিটা লাইন ও সুরের ধাঁচ বুকের ভেতরে ধাক্কা মারত। কী পবিত্র মনে হতো সেই গানের কথা ও সুর। গান শেষে বিভিন্ন ঈদ অনুষ্ঠান হতো টিভিতে সেগুলাও উপভোগ করতাম আর মেহেদীর হাত একের পর এক বদল হয়েই যেতো কোনদিক দিয়ে টেরও পেতাম না। আর বাইরের ঈদের আমেজ তো ছিলো অন্যরকম। ভেসে আসতো নানা ধরনের গান। তখনকার সময়ে সবই ছিলো ঈদ সংশ্লিষ্ট গান। এছাড়াও সেই সময়ে হুমায়ুন আহমেদের নাটক ও হানিফ সংকেতের ইত্যাদি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ছিল সব আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।

এর মধ্যে স্টিলের আলমারি থেকে নতুন জামার প্যাকেট আর বাটা স্যান্ডেলের খাকি রঙের বাক্সটা বের করে পুনরায় একবার দেখে নিতাম। সব ঠিক ঠাক আছে তো? ঈদ না আসা পর্যন্ত প্রতিদিনই নতুন জামার গন্ধ ও ভাঁজগুলো দেখে নেওয়া ছিল রুটিন ওয়ার্ক। নতুন বাটা স্যান্ডেলের গন্ধটা তখন অমৃতের মতো লাগত৷ কোথাও কোনো ময়লা বা ধুলা লেগে থাকলে গায়ের জামা দিয়ে মুছে ফেলতাম৷ জামা না পরেই নিজের সামনে মেলে ধরে আয়নার সামনে ঘুরে ঘুরে দাঁড়াতাম। নিজেকে কাল কেমন দেখাবে চোখের আন্দাজ করে ফেলতাম।

আব্বু, দুই ভাই তন্ময় আর রিফাতের ঈদের পাঞ্জাবি বের করে রাখতাম। পাশাপাশি আমারটাও বের করে রাখতাম। তবে সেটা একদমই শেষ রাতে যখন বাসায় একদমই মানুষ থাকতো না। কারণ, তখন এটা বিশ্বাস করতাম ঈদের জামা কেউ দেখে ফেললেই পুরান হয়ে যাবে আর ঈদ মানেই নতুন জামা পড়তে হবে। এইসব চিন্তা ভাবনা মাথায় রেখে কখনোই ঈদের আগে কাউকে জামা দেখাতাম না। বাড়ির সকলের ঈদের জামা বের করে টেবিলের উপরে রাখতাম পর পর। তখন বিষয়টাতে একটা আনন্দ খুঁজে পেতাম। রেখেই নিজের হাতে মেহেদী দিয়ে শুয়ে পরতাম। আম্মু বলা যায় সারারাতই রান্না ঘরে কাজ করতো। আর হারি পাতিলের টুং টাং শব্দ এসে কানে লাগতো। তবে তখন এই শব্দ আর কানে লাগতো না, এই টুংটাং শব্দ যেনো সে কানে কানে বলতো এইতো আর কিছুক্ষন! রাত পোহালেই ঈদ। আনন্দ আর ঘুম আসতো। শেষ রাতে যদিও একটু চোখ লেগে আসতো, তবে ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই আম্মু এসে সব ভাই বোনকে ডেকে তুলতো। আব্বু দুই ভাইকে নিয়ে এলাকার মসজিদে নামাজ পড়তে যেতো তাই তাদের গোসলের সিরিয়াল ছিলো বরাবরই আগে। তারপরেও চাইতাম যে যত আগে ঘুম থেকে উঠে গোসল সেরে নতুন জামা পড়তে পারে। 

আম্মু সবসমই রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকতেন আর আমি গোসল সেরে নতুন জামা পড়ে ঘর গুছাতাম। ঈদ উপলক্ষে নিজেদের জামা-কাপরের পাশাপাশি আম্মু ঘরের জন্য নতুন বিছানার চাদর কিনতেন, বালিশের কভার, পর্দা ইত্যাদি। ঈদ না আসা আগ পর্যন্ত এই জিনিস গুলা একদমই বের করতাম না। অপেক্ষায় থাকতাম ঈদের জন্য। আর ঈদ আসলেই আমি সেগুলাই ইদের দিন সকালে বের করে গুছাতাম।  ভেজা কাপড় দিয়ে সব ফার্নিচার পরিষ্কার করতাম৷ ভেঙে যাওয়া ও রং ঝলসে যাওয়া ফার্নিচারগুলো কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে রাখতাম৷ যাতে কোনো মেহমান দেখতে না পায় যে আমাদের ভাঙাচোরা ফার্নিচার আছে৷ মধ্যবিত্ত সমাজের মধ্যে এই ঠুনকো মানসম্মান বাঁচানোর প্রতিযোগিতা। ঘরে যখন আকর্ষণীয় কিছুই থাকে না তখন ভাঙাচোরা জিনিসগুলোই এদিক সেদিক করে সাজিয়ে রেখে নিছক সম্ভ্রান্ত হওয়ার চেষ্টা।

বাবা-ছোট দুই ভাই রেডি হয়ে যেতো নামাজের জন্য। এইদিকে ওরা রেডি হতে হতে মা রান্না ঘরে চলে যেতেন সেমাই ভাজার জন্য ৷ লম্বা ঝাটার কাঠির মতো মোটা মোটা সেমাইগুলো মা ভেঙে ছোট করে ডালডা ও ঘি দিয়ে ভাজতেন। লাচ্ছা সেমাইগুলো ভাজা লাগত না। তেল চুপচুপে লাচ্ছা সেমাইয়ের প্যাকেটটা থেকে সুন্দর একটা গন্ধ আসত ৷ আগে পরে যাইহোক, ঈদের দিন বাবাসহ ছোত ভাইদের নামাজের জন্য একটা তাড়াহুরো থাকতোই। রি তাড়াহুড়োর মধ্যে দিয়ে আম্মু গরম গরম রান্না করা সেমাই এনে দিতো আর দুই-এক চামচ মুখে দিয়েই ওরা বের হয়ে যেতো। এরপর বাসায় আমি আর মা একা। মা রান্না বান্না করে আর আমি নতুন জামা পড়ে বসে বসে টিভিতে বিভিন্ন  ঈদ অনুষ্ঠানগুলো দেখতাম। মাঝে মাঝে চাচাদের বাসা থেকে এরা ওরা আসতো তখন ওদের পিঠা বা সেমাই বের করে দিতাম। হ্যা আর নামাজ শেষ হওয়ার অপেক্ষায় থাকতাম। 

বাবা নামাজ শেষে করে এসেই নাশতাটা সেরে প্রতি ঈদে আমাকে নিয়ে বের হতো। ঈদের দিন সকালে নাশতাটা করি সেটা হচ্ছে জীবনে যা খেয়েছি তার মধ্যে সবচেয়ে সেরা খাবার৷ সেটা ছিল মায়ের হাতের ভুনা খিচুড়ি ও গরুর মাংস ভুনা। আমি খুব অবাক হই, মা অন্য দিনেও ভুনা খিচুড়ি করতেন, কিন্তু সেটা মুখরোচক হলেও ঈদের দিনের মতো এমন অমৃত হতো না৷ আজও সেই ভুনা খিচুড়ি ও গরুর মাংসের স্বাদ ভুলতে পারিনি ৷ সাধারণত যেকোনো খাবার যতই মুখরোচক হয়, পেট ভরার সঙ্গে সঙ্গে মুখে স্বাদের আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে। কিন্তু মায়ের হাতের খিচুড়ি ও গরুর মাংস ছিল সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম৷ আমার ৫ টা ফুপি ছিলো। এক এক করে সবার বাসায় আমাকে সাথে নিয়ে যেতো। এটা যেনো প্রতি ঈদে একটা নিয়ম হয়ে গিয়েছিলো। তারপর আমাকে নিয়ে সারাদিন ঘুরে বাসায় ফিরতো বাবা। অন্যান্য সময় থেকে ঈদের দিন বাবা আমাকে প্রচুর সময় দিতো। আর আমিও ঈদে অন্য কারো সাথে ঘুরার থেকে বাবার সাথেই ঘুরতে সব থেকে বেশি ভালোবাসতাম। এই জিনিসটাই এখন সব থেকে বেশি মিস করি। এখন আমার সময় নেই, বাবা বয়স বেড়েছে, আমিও বড় হয়ে গিয়েছি, ব্যস্ত হয়ে পড়েছি পড়াশোনা আর কর্মজীবন নিয়ে। এই ব্যস্ততায় ডুবে যাচ্ছে শৈশব, হারিয়ে যাচ্ছে আনন্দ। অতীত হচ্ছে স্মৃতিতে পরিণত।


শৈশব   ঈদ  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নে মোবাইল অ্যাপস

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

মানুষের মন যেমন আনন্দিত হয়, তেমনি মন খারাপও  হয়। কিন্তু মন খারাপ বা বিষণ্নতাভাব যদি দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে তখন মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে নজর দিতে হবে। এবার হাতের স্মার্টফোনে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কিছু অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে মন থাকবে চাঙা ও সুস্থ।

জাতিসংঘের ২০২২ সালের একটি প্রতিবেদনে হয়, বিশ্বজুড়ে প্রায় ১শ কোটি মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া ২০২৩ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশের অর্ধেক মানুষ কোনো না কোনো মানসিক রোগে ভুগছে। এজন্য মানসিক স্বাস্থ্য সংকটকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া যেমন জরুরি, তেমনি হাতের স্মার্টফোনের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে খুব সহজেই মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নও নেয়া সম্ভব।

গুগল প্লে কিংবা অ্যাপ স্টোরে মানসিক স্বাস্থ্যের নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক কিছু অ্যাপ রয়েছে। যেমন: সিজোফ্রেনিয়া, উদ্বেগ, বিষণ্নতা প্রভৃতি। এসব মেন্টাল হেলথ অ্যাপের মাধ্যমে মানসিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা ও তা দূর করার বিভিন্ন পদ্ধতি অনুশীলন করা যায়।

মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবচাইতে জনপ্রিয় অ্যাপ হলো ‘ডেলিও’ নামের অ্যাপটি। এই অ্যাপ ব্যবহারকারীর কাছ থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন বিষয়ের ওপর অনেক তথ্য গ্রহণ করে থাকে। সেখান থেকে কারো প্রতিদিনের মন-মানসিকতার অবস্থা, ‘মুড সুইং’, মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের কারণ খুঁজে বের করাসহ বিভিন্ন রকম তথ্য-উপাত্ত তৈরি করে। এসব বিষয়ের ওপর বিবেচনা করে, পরবর্তীতে এই অ্যাপগুলোর পরামর্শে নির্দিষ্ট জীবনযাপনের পদ্ধতি অনুসরণ করলে মানসিকভাবে অনেকটাই সুস্থ থাকা যায়।

অন্যদিকে, হেডস্পেস অ্যাপ মূলত বেশি ব্যবহার করা হয় তাৎক্ষণিক মানসিক সংকট দূর করার জন্য। যদি কেউ তার চিন্তা-ভাবনা কিংবা আচরণের অস্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন দেখতে পান, তাহলে এই অ্যাপটি তার অসাধারণ সঙ্গী হিসেবে সহায়তা করবে। অনেক বেশি বিষাদ, দুশ্চিন্তা কিংবা সম্পর্কের টানা-পোড়েনের মধ্যে থাকলেও অনেকে এই অ্যাপ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

তবে পেশাদার মনোবিদের বিকল্প হিসেবে এই অ্যাপগুলোকে ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রাথমিক পর্যায়ের মানসিক সমস্যায় এই অ্যাপগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে কারও অবস্থা যদি মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, তাহলে অ্যাপের ওপর নির্ভর না করে, অবশ্যই নিবন্ধিত মনোচিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।


মানসিক   স্বাস্থ্য   অ্যাপস  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

অতিরিক্ত চিন্তা বন্ধের কৌশল

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

মানুষের মন ভালো থাকলে যেমন বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতা আসে, ঠিক তেমনই মন খারাপের প্রভাব পড়ে নিত্যকাজের ওপর। মন খারাপ থেকে সৃষ্টি হয় উদ্বেগ যা পৌঁছাতে পারে ডিপ্রেশনেও।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা আমাদের মানসিক চাপ তৈরি করে। অল্পকিছু চিন্তা দিয়ে তা শুরু হয়, এক পর্যায়ে চলে যায় বহুদূর। তবে এসব অতিরিক্ত চিন্তা দূর করে মনকে শান্ত করার কিছু প্রাচীন জাপানি কৌশল রয়েছে। সেগুলো মানলে পাবেন অতিরিক্ত চিন্তা থেকে মুক্তি।

শিরিন-ইয়োকু
মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে প্রাকৃতিক জগতের শান্ত পরিবেশে নিজেকে নিয়ে যান। ‘শিরিন-ইয়োকু’ বা ‘ফরেস্ট বাথিং’ হল আমাদের ডিজিটাল জটিল অংক থেকে বেরিয়ে প্রকৃতির সতেজ শ্বাস গ্রহণ। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সবুজের মধ্যে সময় কাটালে স্ট্রেস হরমোন কমে যায়। ফলে মন শান্ত হয় এবং শান্ত চিন্তার পরিবেশ তৈরি করে। তাই অতিরিক্ত চিন্তা আসলে পার্কে হাঁটাহাঁটি করুন বা তাজা বাতাসে শ্বাস নিন। দেখবেন ঝরঝরে পাতাগুলো আপনার মনে প্রশান্তি এনে দেবে।

শোগানাই
‘শোগানাই’ ধারণাটি বাংলায় অনুবাদ করলে দাঁড়ায় ‘এটি সাহায্য করবে না’। যার সহজ অর্থ আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে যা রয়েছে, তার একটি সচেতন গ্রহণযোগ্যতা। যখন আমরা মেনে নিতে পারি, অতিরিক্ত চিন্তা অতীতের ঘটনাগুলোকে পরিবর্তন করবে না বা ভবিষ্যতের ফলাফলগুলোকেও নিয়ন্ত্রণ করবে না, তখন মানসিক দৃঢ়তা শিথিল হয়ে যায়। ‘যদি এমন হতো’ বাদ দিয়ে আমরা যখন ভাববো যা হয়ে গেছে তা আর ফিরবে না, তখন অতিরিক্ত চিন্তাও আর আসবে না।

গামন
‘গামন’ হল, ‘সহনশীলতা’ বা ‘অধ্যবসায়’। এটি অতিরিক্ত চিন্তাভাবনাকে দূর করে দেয়। সহনশীলতা মানুষকে পরিস্থিতির আলোকে মানিয়ে নিয়ে সহায়তা করে। তাই নিজের মধ্যে সহনশীলতা কম থাকলে তা বাড়িয়ে ফেলুন খুব দ্রুত। তখন অল্পতেই অতিরিক্ত চিন্তা থেকে পাবেন মুক্তি। আর চিন্তামুক্ত হয়ে কাজে মন দিলে সফলতা আসবে অতি দ্রুত।


অতিরিক্ত চিন্তা   কৌশল  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

অতিরিক্ত ঘুমে স্বাস্থ্যের উপরে পড়তে পারে নেতিবাচক প্রভাব

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

সাধারণত ঘুমের ক্ষেত্রে অনেকেরই আলাদা চাহিদা থাকে, তবে দীর্ঘ সময় ধরে ঘুমানো মাঝে মাঝে শরীরের ভেতরের সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করতে পারে। নিয়মিত চেয়ে অনেক বেশি ঘুমানোর সময় দেখে অতিরিক্ত ঘুমানোকে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি রাতে ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আপনি কীভাবে বুঝবেন যে আপনি যথেষ্ট বেশি ঘুমাচ্ছেন?

২০১৪ সমীক্ষা অনুসারে, ঘুম অসংখ্য শারীরিক এবং মনস্তাত্ত্বিক ক্রিয়াকলাপে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মানসম্পন্ন ঘুমকে সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য বলে মনে করা হয়। অতিরিক্ত ঘুমকে সাধারণত প্রতি রাতে নয় ঘণ্টার বেশি ঘুমানো হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। তবে ব্যক্তিভেদে ঘুমের চাহিদা পরিবর্তিত হতে পারে, তাই আপনার সাধারণ ঘুমের ধরণ এবং ঘুম থেকে ওঠার পরে আপনি কেমন অনুভব করেন তা বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ।

ঘুমের ধরন ব্যক্তিভেদে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয় এবং বয়স, জেনেটিক্স, জীবনধারা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের মতো কারণ দ্বারা প্রভাবিত হয়। যদিও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ঘুমের প্রস্তাবিত পরিমাণ সাধারণত প্রতি রাতে ৭-৯ ঘণ্টা, তবে কারও কারও ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই কম বা বেশি প্রয়োজন হতে পারে।

স্লিপ ফাউন্ডেশনের মতে, প্রতি রাতে প্রয়োজনীয় ঘুমের পরিমাণ বিভিন্ন কারণের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হয়, যেমন দিনের অভ্যাস, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং ঘুমের ধরন। যদিও প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে অনেকেরই ছয় ঘণ্টা ঘুমালেই পর্যাপ্ত হতে পারে তবে অন্যরা, যেমন ক্রীড়াবিদদের অতিরিক্ত সময় ঘুমানো প্রয়োজন হতে পারে। মাঝে মাঝে, কঠোর কার্যকলাপ বা ভ্রমণের মতো পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘুমের প্রয়োজন হতে পারে।

অত্যধিক ঘুম বা হাইপারসোমনিয়া হলো মানুষের জন্য স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ঘুমানো। অতিরিক্ত ঘুমের ফলে কিছু লক্ষণ শরীরে ফুটে ওঠে। তার মধ্যে রয়েছে ক্রমাগত ক্লান্তি, মাথাব্যথা এবং সকালে ঘুম থেকে উঠতে অসুবিধা। হাইপারসোমনিয়া, নারকোলেপসি বা স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো অবস্থার কারণে ঘুমের সময় বর্ধিত হতে পারে। অতিরিক্ত ঘুমের ফলে মাঝে মাঝে বিষণ্ণতা এবং মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আবার মাঝে মাঝে দীর্ঘ সময় ঘুমানো উদ্বেগের কারণ নাও হতে পারে, তবে ক্রমাগত অতিরিক্ত ঘুম শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যার মধ্যে স্থূলতা, ডায়াবেটিস, বিষণ্ণতা এবং দুর্বল স্মৃতিশক্তি ও ইমিউন ফাংশনের ঝুঁকি রয়েছে।

এমনকি ঘুমের সময়কে প্রভাবিত করতে পারে বয়স, জীবনযাত্রার অভ্যাস, ভেতরগত স্বাস্থ্যের অবস্থা, ওষুধ, স্ট্রেস লেভেল এবং শব্দ ও আলোর এক্সপোজারের মতো পরিবেশগত কারণে। ঘুমের গুণমান উন্নত করতে নিয়মিত ঘুম থেকে ওঠার সময়সূচী সেট করুন, ঘুমানোর সময় আরামদায়ক রুটিন তৈরি করুন এবং ঘুমের পরিবেশ তৈরি করুন। বিছানায় যাওয়ার আগে আপনার ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার এড়ানোর চেষ্টা করুন।


অতিরিক্ত ঘুম   স্বাস্থ   স্লিপ ফাউন্ডেশন  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

বৃষ্টির দিনে ঘরের যত্ন

প্রকাশ: ০৮:০৫ এএম, ০৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

রিমঝিম বৃষ্টি কমবেশি সবার ভালো লাগলেও কাজ বাড়িয়ে দেয় গৃহিণীর। কেননা বৃষ্টির সঙ্গে বন্ধুত্ব করে ঘরের পরিবেশ হয়ে ওঠে স্যাঁতসেঁতে। তাই বৃষ্টির দিনে ঘরের জন্য প্রয়োজন হয় বাড়তি যতে্নর। কয়েকদিন একটানা তাপদাহের পর শুরু হয়েছে বৃষ্টি। তবে বৃষ্টিতে আনন্দের পাশাপাশি ভোগান্তিও কম নয়। অতি আর্দ্রতায় ঘরের ইন্টেরিয়র-এক্সটেরিয়রের ক্ষতি, মশা, ঘরে মোল্ড পড়া, পোকামাকড়সহ বিভিন্ন সমস্যা লেগেই থাকে। তাই এ সময়ে ঘরের জন্য দরকার বাড়টি যত্ন। বর্ষায় অন্দরের পরিবেশ ঠিক রাখার টিপস চলুন জেনে নেয়া যাক……………….

 

১. বর্ষা শুরুর আগে অথবা একেবারে দরজা, জানালা বা গ্রিল তৈরির শুরুতেই টিনের দরজা বা জানালায় কোটিং রং ব্যবহার করা উচিত।

২. কোনো কারণে দেয়ালে ফাটল ধরলে দেয়াল ড্যাম হয়ে যেতে পারে। তাই এগুলো পরীক্ষা করে ফাটল ঠিক করতে হবে। ভালো হয় দেয়ালে ওয়েদার প্রুফ পেইন্ট ব্যবহার করলে।

৩. বর্ষায় অনেক সময় কাঠের আলমারিতে ফাঙ্গাস পড়ে। আবার দেখা যায় আলমারি পেছনের বোর্ড ফুলে গিয়ে কাঠ বেঁকে যায়। তাই বৃষ্টির দিনে আসবাবপত্র দেয়াল থেকে একটু দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। ঘর মোছা, কাপড় ধোয়া সব ক্ষেত্রে জীবাণুনাশক ব্যবহার করা ভালো।

৪. বারান্দায় রাখা ফুলের টবগুলো সঠিক জায়গায় রাখতে হবে। অনেক সময় বারান্দায় বৃষ্টির ছাটে পানি জমে কাদার সৃষ্টি হয়। তাই ভালো ড্রেনেজ ব্যবস্থা রাখতে হবে। টবে পানি জমে মশা এবং পোকার আক্রমণ হতে পারে। আবার প্রচণ্ড বাতাসে বারান্দায় ঝুলে থাকা বা ছাদের রেলিংয়ে রাখা টবগুলো ভেঙে কিংবা ওপর থেকে পড়ে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই টবগুলোকে এমনভাবে রাখতে হবে, যাতে আলো-বাতাস নিশ্চিত করার পাশাপাশি দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।

৫.বর্ষায় কার্পেট ব্যবহার না করাই ভালো বরং এগুলো প্লাস্টিকে মুড়িয়ে তুলে রাখুন শুষ্ক কোনো জায়গায়।

৬. প্রতিদিন মুছে পরিষ্কার রাখতে হবে লেদারের সোফা। একইভাবে মাঝে মাঝে পরিষ্কার করতে হবে লেদারের অন্যসব আসবাবও।


বৃষ্টি   ঘর   যত্ন  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

বিবাহবিচ্ছেদে উৎসব করে যে দেশের নারীরা

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ০৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিচ্ছেদ মানেই অসহনীয় এক পৃথিবী, বিচ্ছেদ মানেই ‘জীবনের শেষ’ এ রকম মনে করে না মৌরিতানিয়ার নারীরা। বিচ্ছেদের পর ওই নারীর সৌজন্যে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তার পরিবার। স্বামীর ‘যন্ত্রণা’ পেরিয়ে মেয়েরা নিজের ঘরে আরেকবার ফিরে আসার সুযোগ পাওয়ায় দেশটিতে বিচ্ছেদ উদ্যাপন করা হয়।

পরিবারের সব সদস্যরাই বিষয়টি স্বাভাবিক চোখেই দেখেন। তারা মনে করেন, ভালোর জন্যই মেয়ে আবার পরিবারে ফিরে এসেছে। এই ফিরে আসাকে তারা ‘কলঙ্কমুক্ত’ জীবনের সুযোগ হিসেবেও দেখেন। তাই একটি ব্যর্থ সম্পর্কের ইতি ঘটায় আনন্দে। সব আয়োজন শেষ হলে বিচ্ছেদী নারী অবিবাহিতদের কাতারে চলে যান।

আরও পড়ুন: নারীর প্রতি এক পৃথিবী সম্মান থাকুক প্রতিটি পুরুষের

মরুভূমির তরুণী মেহেদি শিল্পী একাগ্রচিত্তে আলপনা আঁকছেন তার আজকের খদ্দের ইসেলেখে জেইলানির হাতে। তিনি খুবই সতর্ক, কোনোভাবেই যেন ভেজা মেহেদিতে দাগ না পড়ে! ঠিক যেমনটি ছিলেন বিয়ের আগের দিন। এবার কিন্তু তার বিয়ে হচ্ছে না। হচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদ!

বিবাহ বিচ্ছেদ উপলক্ষে পরদিন হবে উৎসব। জেইলানির মা এই আনন্দে নিমন্ত্রণ করেছেন শহরবাসীকে। উল্লসিত কণ্ঠে বলছেন, তার মেয়ে এবং মেয়ের প্রাক্তন দুজনেই ভালোভাবে বেঁচে আছে।

মায়ের কথা শুনে হাসলেন জেইলানি। তিনি তখন সামাজিক প্ল্যাটফর্ম স্ন্যাপচ্যাটে মেহেদির ছবি পোস্ট করতে ব্যস্ত। মেহেদির ছবি পোস্ট করা বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণার আধুনিক সংস্করণ হয়ে উঠেছে। যদিও মৌরিতানিয়ায় এটি বহু পুরোনো সংস্কৃতি।

বিচ্ছেদের উৎসবে আগে ছিল নাচ, গান আর ভোজ। এখন সেলফি প্রজন্মে এসে যুক্ত হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। আলপনা আঁকা কেক। মেয়েরা এখানে সোশ্যাল মিডিয়ায় গর্ব ভরে আনন্দের সঙ্গে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেয়।

আরও পড়ুন: বিচ্ছেদের কত দিন পরে নতুন সম্পর্কে জড়াবেন!

অনেক দেশের সংস্কৃতিতে বিবাহবিচ্ছেদকে লজ্জাজনক হিসেবে দেখা হয়। তবে পশ্চিম আফ্রিকার সুন্দর দেশ মৌরিতানিয়ায় এটি কেবল স্বাভাবিকই নয়, নারীদের কাছে আনন্দের উপলক্ষ! কারণ, শিগগিরই তার আবার বিয়ে হবে। বহু শতাব্দী ধরেই সেখানে নারীরা আরেক নারীর বিবাহ বিচ্ছেদে উৎসব করে।

মৌরিতানিয়ার ২০১৮ সালের এক সরকারি রিপোর্টে দেখা যায়, এক তৃতীয়াংশ বিয়ে ডিভোর্সের পরিণতি পেয়েছে। এর মধ্যে ৭৪ শতাংশ নারী আবার বিয়ে করেছেন। আর ২৫ শতাংশ বিয়ে করেনি।

মৌরিতানিয়া প্রায় শতভাগ মুসলিম দেশ। এখানে ঘন ঘন বিবাহবিচ্ছেদ হয়। অনেকে ৫ থেকে ১০ বার বিয়ে করে। কেউ কেউ ২০ বারেরও বেশি!

অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, দেশটিতে বিবাহবিচ্ছেদের হার বিশ্বে সর্বোচ্চ। তবে মৌরিতানিয়ায় এ প্রসঙ্গে খুব বেশি নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই। এর আংশিক কারণ হচ্ছে, এখানে বিবাহবিচ্ছেদ প্রায়শই মৌখিক হয়, নথিভুক্ত নয়।

দেশটিতে বিবাহবিচ্ছেদ এতটা সাধারণ কেন—সে প্রসঙ্গে দেশটির সমাজবিজ্ঞানী নেজওয়া এল কেত্তাব বলেন, মৌরিতানীয় সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ মৌর সম্প্রদায় তাদের বাবার পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে শক্তিশালী মাতৃতান্ত্রিক প্রবণতা পেয়েছে। দেশটির যাযাবর সম্প্রদায় নারীদের মর্যাদার কথা ছড়িয়ে দিয়েছে বহুদিকে। অন্যান্য মুসলিম দেশের তুলনায় মৌরিতানিয়ার নারীরা বেশ স্বাধীন।

তিনি আরো বলেন, দেশটিতে বিয়েকে পেশা হিসেবেও নেয়া যায়।

আরও পড়ুন: যুগের পরিবর্তনে আধুনিক সম্পর্কের দৃষ্টি ভঙ্গিতেই কি বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদ?

এখানে বিশেষ পরিস্থিতিতে নারীরাও বিবাহ বিচ্ছেদের পদক্ষেপ নিতে পারেন। অনেক নারী আছেন যারা কখনোই বিবাহবিচ্ছেদের কথা ভাবেন না। এরপরও বিচ্ছেদ যদি ঘটেই যায়, তাহলে নারীদের সমাজে সমস্যায় পড়তে হয় না। কারণে এখানে এমন নারীদের কেউ নিন্দা করে না, বরং সমর্থন জানায়। সমাজই পরিস্থিতিকে সহজ করে তোলে।

আরও পড়ুন: দাম্পত্যে বয়সের ব্যবধান কতটা ঝুঁকির?

উল্লেখ্য, মৌরিতানিয়া হলো যাযাবর, উট আর আকাশ ভরা তারা ও উজ্জ্বল চাঁদের দেশ। কখনো কখনো ১০ লাখ কবির দেশও বলায় একে। হয়তো এ কারণেই এখানে বিবাহবিচ্ছেদও কাব্যিক!


বিবাহবিচ্ছেদে   উৎসব   নারী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন