নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭
দেশের প্রাচীনতম ও সবোর্চ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালের জুনে। এরপর দুই যুগেরও বেশি সময় ডাকসু নির্বাচন বন্ধ রয়েছে নানা জটিলতায়। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল বাকি সব সংগঠনের নির্বাচন নিয়মিতই হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের নির্বাচন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচন হয়। সিনেট, সিন্ডিকেট এবং একাডেমিক কাউন্সিলের নির্বাচনও হচ্ছে। এতে কোনো ধরণের সমস্যা হচ্ছে না।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সরেজমিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে উৎসবমূখর পরিবেশে। ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে প্রশাসনিক ভবনসহ পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। অথচ যে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়, তাদের নির্বাচনই অপেক্ষার প্রহর গুনছে।
দীর্ঘদিন ধরে ডাকসু নির্বান হচ্ছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আশার বাণী শুনিয়েছিলেন। তিনি বলছিলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন ইজ মাস্ট। এটা না হলে ভবিষ্যতে নেতৃত্বে শূন্যতা সৃষ্টি হবে।’
রাষ্ট্রপতির এমন বক্তব্যের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্র ডাকসু নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। সবাই ভেবেছিলেন এবার হয়তো নির্বাচন হবেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেসময়ের ভিসি অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকও গণমাধ্যমকে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান। কিন্তু সেই পদক্ষেপ আর নেওয়া হয়নি। পরে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নতুন ভিসি আখতারুজ্জামান ।
সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে ২৫ নভেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাসভবন সংলগ্ন স্মৃতি চিরন্তনে অনশন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ আশরাফ। দীর্ঘ দুই সপ্তাহ পর উপাচার্যের আশ্বাসে তিনি অনশন ভাঙেন।
এ ঘটনার প্রায় এক মাস হতে চলল। এখনো পর্যন্ত নির্বাচন হওয়ার কোনো প্রস্তুতি দেখা যায়নি।
ঘুমন্ত ডাকসু ভবনে তারুণ্যের হাহাকার
দুই তলাবিশিষ্ট ডাকসু ভবনের নিচ তলার এক পাশে ডাকসু সংগ্রহশালা, অন্যদিকে ডাকসু ক্যাফেটেরিয়া। দ্বিতীয় তলাটি ডাকসু কার্যলয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে থাকা ৮টি কক্ষের মধ্যে ভিপি-জিএসের কক্ষদুটিতে তালা ঝুলছে দীর্ঘদিন ধরে। বাকি ৬টির মধ্যে পরিচালকের কক্ষ একটি, তরুণ দাস নামে একজন ভাস্কর উপাচার্যের অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করছেন আরেক কক্ষ। অন্য একটি কক্ষে বিভিন্ন সংগঠন সভা-সেমিনার কাজে ব্যবহার হচ্ছে। আর এক সময় সরগরম থাকা ডাকসুর সম্পাদকদের জন্য নির্ধারিত কক্ষ এখন নিরিবিলি পত্রিকা পড়ান জায়গা। বাকি কক্ষ দুটি তালা দেওয়া। কখনো কখনো কক্ষগুলো কোনো সংগঠনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে খুলে দেয়া হয়। উইপোকা ধরেছে প্রতাপশালী ভিপির কক্ষের হার্ডবোর্ডে। এক সময়ের উত্তাল, তারুণ্যে ভরা ডাকসু এভাবেই হাহাকার করে সময় পার করছে ২৭ বছর ধরে।
উপাচার্যের আশ্বাসের পর নির্বাচনের জন্য কোনো ধরনের নির্দেশনা পাননি বলে জানিয়েছেন ডাকসু কার্যালয়ের সিনিয়র অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফিসার আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা আসেনি।
ডাকসু নিয়ে শিক্ষার্থীরা যা বলছে
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ঢাবির এক সাবেক ছাত্র বলেন, ’৫২-এর পর থেকে স্বাধীনতা পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিদ্যমান ছিল। তখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণতন্ত্রের চর্চা ছিল। এর ফলে ডাকসুসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সময় মতো নির্বাচন হত। আর এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলে একচেটিয়াভাবে। বড় সংগঠনগুলো তাদের নিজের স্বার্থের কারণে নির্বাচন দিতে চাইছে না।
তিনি আরও বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতির ঘোষণার পরও যেহেতু নির্বাচন হয়নি, সেক্ষেত্রে আগামী এক বছরে নির্বাচন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম খান বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, দীর্ঘ সময় ডাকসু নির্বাচন না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণতান্ত্রিক পরিবেশ এখন উঠে গেছে। এখন সবাই নেতামুখী। নেতারা কর্মী কিংবা শিক্ষার্থীমুখী নন। এই ২৭ বছরে যখন যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে তারা কেউই নিজেদের ছাত্র সংগঠনের প্রভাব হারানোর ভয়ে নির্বাচন দেয়ার সাহস দেখায়নি। ফলে এখান থেকে যে ছাত্র নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে তারা একচেটিয়া মানসিকতার অধিকারী হয়ে বের হচ্ছে। তারা যখন জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করবে, তখনও তাদের মধ্যে এই অভ্যাসটি থেকে যাবে। ফলে দেশের রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে স্বৈরাচারী মনোভাব বেড়ে উঠেছে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মীর আরশেদুল ইসলাম বলেন, ক্যাম্পাসে বিরাজনীতিকরণ চলছে। এ কারণে অনেক শিক্ষার্থী ডাকসু নির্বাচনের কথা ভুলেই গেছেন।
ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষার্থী শামান্তা শারমিন বলেন, অপমানের জীবন ভাঙেন। একজন শ্রমিকও তার অধিকারের জন্য কথা বলে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়েও তারা নিজের অধিকার নিয়ে কথা বলতে ভয় পাচ্ছে। মানুষ রাজনীতি করে সম্মানের জীবনের জন্য। আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার কোনো অধিকার নেই। সব কিছুই চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। হলে ঘুমানোর জায়গা নেই। অথচ দাবি করা হচ্ছে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড! রিডিং রুমে বসার জায়গা নেই, পালা করে পড়তে হয়। যা যথেষ্ট অপমানজনক। নতজানু রাজনীতি ছাড়ুন। ডাকসুর পক্ষে কথা বলুন।
ডাকসু নির্বাচন না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণ শিক্ষক ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গণতন্ত্র অনুপস্থিত। এরই অংশ হিসেবে ডাকসু নির্বাচন হয়নি। সবাই চাওয়ার পরও ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে না। কারণ, ডাকসু নির্বাচন হলে সরকারি ছাত্র সংগঠনের একচেটিয়া ভূমিকাটা আর থাকে না। নির্বাচন হলে সবার অধিকার থাকবে। এতে উপাচার্য কিছুটা অসুবিধায় পড়বেন। কিন্তু ডাকসু নির্বাচন না করার ফলে সিনেট অসম্পূর্ণ থেকে যাচ্ছে।
উপাচার্য যা বললেন
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে। এই নির্বাচন দেওয়ার জন্য কিছু অনুষঙ্গ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে ডাকসু নির্বাচনের জন্য আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করবো’। তবে কবে নাগাদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে?- এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান তিনি।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ/টিবি
মন্তব্য করুন
চলতি
বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার
ফল রোববার (১২ মে) প্রকাশিত
হয়েছে। এতে উত্তীর্ণ হয়েছেন
১৬ লাখ ৭২ হাজার
১৫৩ শিক্ষার্থী। তাদের সামনে এখন ভালো কলেজের
ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন। এদিকে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ফলের ভিত্তিতে অনলাইনে
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়া হবে। সেই ভর্তি
কার্যক্রম শুরু হতে পারে
২৬ মে।
ভর্তি তারিখ, ফিসহ আনুষ্ঠানিক নানা বিষয় চূড়ান্ত করতে আজ সোমবার (১৩ মে) বৈঠকে বসছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্টরা। এবারও ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা হবে না। কেবল অনলাইনে আবেদন নেওয়া হবে এবং নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এবার বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আসছে না। তবে ফল প্রকাশের প্রক্রিয়ায় কিছু পরিবর্তন আসতে পারে।
এবার হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে মিশনারি পরিচালিত নটরডেম, হলিক্রস ও সেন্ট জোসেফ কলেজ লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করবে।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা অনলাইনে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে (www.xiclassadmission.gov.bd) একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করতে পারবে। অনলাইন ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ম্যানুয়ালি ভর্তির আবেদন নেওয়া হবে না। একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবে তার মধ্য থেকে তার মেধা, কোটা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি কলেজে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।
তবে যেসব শিক্ষার্থী বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হিসেবে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, তারা বোর্ডে ম্যানুয়ালি ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। প্রবাসীদের সন্তান ও বিকেএসপি থেকে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বোর্ডে ম্যানুয়ালি আবেদন করতে পারবে। এক্ষেত্রে বোর্ড প্রমাণপত্র যাচাই-বাছাই করে শিক্ষার্থীকে ভর্তির ব্যবস্থা নেবে।
অনলাইনে আবেদন
অনলাইনে
আবেদনের জন্য নির্ধারিত ওয়েবসাইটে
একাদশ শ্রেণির ভর্তির আবেদন করা যাবে। অনলাইন
ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ম্যানুয়ালি
ভর্তির আবেদন নেওয়া হবে না। আবেদন
ফি দিয়ে সর্বনিম্ন পাঁচটি
এবং সর্বোচ্চ দশটি কলেজে পছন্দ
দিতে হবে। একজন শিক্ষার্থী
যতগুলো কলেজে আবেদন করবে এর মধ্য
থেকে তার মেধা, কোটা
ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি কলেজে তার
অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।
নির্বাচিত শিক্ষার্থীকে ৩৩৫ টাকা দিয়ে প্রাথমিকভাবে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। আগে প্রাথমিক নিশ্চায়ন ফি ছিল মোট ৩২৮ টাকা। রেজিস্ট্রেশন ফি ৭ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা থেকে ১৪২ টাকা করায় মোট ফি বেড়েছে।
যারা ম্যানুয়ালি আবেদন করবে
পুরো ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনে হলেও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট বোর্ডে ম্যানুয়ালি ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। প্রবাসীদের সন্তান অথবা বিকেএসপি থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী অথবা খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিভাগীয় অথবা জাতীয় পর্যায়ে অসামান্য অবদানের জন্য পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বোর্ডে ম্যানুয়ালি আবেদন করতে পারবে। এক্ষেত্রে বোর্ড উপযুক্ত প্রমাণপত্র যাচাই-বাছাই করে শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যবস্থা করে দেবে।
গ্রুপ
নির্বাচন যেভাবে
বিজ্ঞান গ্রুপ থেকে এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারবেন। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপ থেকে উত্তীর্ণরা এ দুই গ্রুপের যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারবেন। দাখিল উত্তীর্ণ বিজ্ঞান গ্রুপের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের যেকোনো একটি ও সাধারণ গ্রুপ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারবেন। ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা হবে না, শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে।
ভর্তিতে
৭ শতাংশ কোটা বহাল থাকছে
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট শূন্য আসনের ৯৩ শতাংশ মেধা কোটা হিসেবে বিবেচিত হবে। এসব শূন্য আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বাকি ৭ শতাংশের মধ্যে ৫ শতাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য এবং ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীন দপ্তর/সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারী সন্তানদের জন্য রাখা হয়েছে। এসব আসনে শিক্ষার্থী না থাকলে তা মেধা কোটায় বিবেচিত হবে। কোটার ক্ষেত্রে আবেদনকারী সংখ্যা বেশি হলে মেধার ভিত্তিতে তালিকা করতে হবে।
মন্তব্য করুন
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে গতকাল।
এবারের পরিক্ষার ফলাফলে গড় পাসের হার ৮৩.০৪ শতাংশ। প্রকাশিত ফলাফলে কারও কাঙ্ক্ষিত
ফল না এলে সে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন বা খাতা চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন। এ কার্যক্রম সোমবার
(১৩ মে) থেকে শুরু হয়ে চলবে ১৯ মে পর্যন্ত।
রোববার (১২ মে) ফল প্রকাশের পর আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা
শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকার বলেন, সোমবার (১৩ মে) থেকে পুনর্নিরীক্ষণ
আবেদন শুরু হবে, চলবে ১৯ মে পর্যন্ত।
তিনি জানান, ফলাফলে কেউ সংক্ষুব্ধ বা অসন্তুষ্ট হলে তিনি চাইলে
পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবেন। অনলাইনে মাধ্যমে ঘরে বসেই তিনি এ আবেদন করতে পারবেন।
পরে বোর্ড তার খাতা যাচাই-বাছাই করে দেখে আবেদন নিষ্পত্তি করবেন।
যেভাবে আবেদন করতে হবে
শুধুমাত্র টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল ফোন থেকে পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করা যাবে। আবেদন
করতে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে RSC <Space> বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর
<Space> রোল নম্বর <Space> বিষয় কোড লিখে Send করতে হবে 16222 নম্বরে।
ফিরতি এসএমএস-এ আবেদন বাবদ কত টাকা কেটে নেওয়া হবে তা জানিয়ে একটি
পিন দেওয়া হবে। এতে সম্মত থাকলে মেসেজ অপশনে গিয়ে RSC <Space> Yes
<Space> PIN <Space> Contact Number (যেকোনো অপারেটর) লিখে Send করতে হবে
16222 নম্বরে।
ফল পুনর্নিরীক্ষণে ক্ষেত্রে একই এসএমএস-এর মাধ্যমে একাধিক বিষয়ের
জন্য আবেদন করা যাবে। সে ক্ষেত্রে কমা (,) দিয়ে বিষয় কোড আলাদা লিখতে হবে। যেমন: ঢাকা
বোর্ডের একজন শিক্ষার্থী বাংলা ও ইংরেজি দুটি বিষয়ের জন্য টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইলের
মেসেজ অপশনে গিয়ে লিখবে RSC <Space> Dha <Space> Roll Number
<Space) 101, 102, 107, 108। ফল পুনর্নিরীক্ষণে প্রতিটি পত্রের জন্য ১২৫ টাকা করে
কেটে নেওয়া হবে।
পুনর্নিরীক্ষণে খাতার চারটি বিষয় দেখা হয়
শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, পুনর্নিরীক্ষণ করলে একজন শিক্ষার্থীর খাতা পুনরায়
মূল্যায়ন করা হয় না। পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন হওয়া উত্তরপত্রের চারটি দিক দেখা হয়। এগুলো
হলো, উত্তরপত্রের সব প্রশ্নের সঠিকভাবে নম্বর দেওয়া হয়েছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা
ঠিক রয়েছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে উঠানো হয়েছে কি না এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী
ওএমআর শিটের বৃত্ত ভরাট করা হয়েছে কি না। এসব পরীক্ষা করেই পুনর্নিরীক্ষার ফল দেওয়া
হয়। এই চারটি জায়গা কোনো ভুল হলে তা সংশোধন করে নতুন করে ফল প্রকাশ করা হয়।
মন্তব্য করুন
চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় সারাদেশের মধ্যে পাসের হারের শীর্ষে রয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোর। যশোর বোর্ডে পাসের হার ৯২ দশমিক ২৩ শতাংশ। এ বোর্ডে এ বছর মোট উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভালো ফলাফলে সংখ্যায় এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা।
রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রেসক্লাবে যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বিশ্বাস শাহীন আহম্মদ।
তিনি জানান, ২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ডে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯২৬ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫৭৭ জন। উত্তীর্ণ হওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে সবথেকে ভলো ফলাফল করেছে মেয়েরা। এ বছর পাস করা ছাত্রদের সংখ্যা ছিল ৭১ হাজার ৭৯১ জন এবং ছাত্রীর সংখ্যা ৭৬ হাজার ৭৮৬ জন।
তিনি আরও জানান, এবছর যশোর বোর্ডে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ৭৬১ জন। এর আগে গত বছর ২০২৩ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২০ হাজার ৬১৭ জন। জিপিএ-৫ এর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি। এছাড়া গত বছর পাসের হার ছিল ৮৬ দশমিক ১৭ শতাংশ।
এদিকে যশোর শিক্ষা বোর্ডের দেওয়া তথ্য মতে, খুলনা বিভাগের ১০টি জেলার মধ্যে প্রথম হয়েছে সাতক্ষীরা। সাতক্ষীরা জেলায় পাসের হার ৯৬ দশমিক ১২ শতাংশ। এবং সবচেয়ে কম পাসের হার মেহেরপুর ৮৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ। যশোর জেলায় পাসের হার ৯৪ দশমিক ২২ শতাংশ, খুলনা জেলায় পাসের হার ৯৪ দশমিক ৬০, বাগেরহাট জেলায় পাসের হার ৯১ দশমিক ২৭, কুষ্টিয়া জেলায় পাসের হার ৯১ দশমিক ৩৫, চুয়াডাঙ্গা জেলায় পাসের হার ৯০ দশমিক ৮২, ঝিনাইদহ জেলায় পাশের হার ৮৯ দশমিক ৫৯, মাগুরা জেলায় পাসের হার ৯১ দশমিক ০৯ শতাংশ।
যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক হাসান পারভেজ বলেন,'আমরা শিক্ষকেরা সবসময় অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগ রেখেছি। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত করেছি। সব মিলিয়ে আমাদের শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকদের অবদানের কারণে আজ আমরা সেরা, এবং যশোর বোর্ড সারাদেশে সেরা।'
মন্তব্য করুন
এসএসসি পরীক্ষায় এ বছর জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজ জেলার শীর্ষস্থান অর্জন করেছে। এই কলেজ থেকে ৫৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে সবাই গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
এবার জয়পুরহাট আরবি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মোট ২৩৬ জন
পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাসের হার শতভাগ এবং জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৮২ জন। এছাড়া জয়পুরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৪০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৭৯ জন। আর পাসের হার শতভাগ বলে উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠান দুটির কর্তৃপক্ষ।
জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, এ সাফল্য বিগত কয়েক বছর ধরে অর্জিত ধারাবাহিক সাফল্যের অংশ। ক্যাডেট কলেজ পরিচালনা পরিষদের সঠিক দিকনির্দেশনা এবং কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু হেনা মো. মিজানুর রহমান সুযোগ্য তত্ত্বাবধানে জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজ এ ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
পরীক্ষার্থীরা তাদের এ সাফল্যের পেছনে কলেজ কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক এবং বিশেষভাবে তাদের অভিভাবকদের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু হেনা মোঃ মিজানুর রহমান আশা প্রকাশ করেন জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজের এ সাফল্যের ধারা ভবিষ্যতেও অক্ষুন্ন থাকবে।
এসএসসি ফলালফল জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজ
মন্তব্য করুন
সারাদেশের ন্যায় রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডেও ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এবার এ শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৮৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। এবার পাসের হারের সাথে বেড়েছে জিপিএ-৫। যা গত বছর ছিল ৮৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
আরও পড়ুন: এসএসসিতে গড় পাসের হার ৮৩.০৪ শতাংশ, শীর্ষে যশোর
এ বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৮ হাজার ৭৪ শিক্ষার্থী। যা গত বছর ছিল ২৬ হাজার ৮৭৭ জন। বরাবরের মতো এবারও পাস ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তোর দিক থেকে ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে মেয়েরা। এবার মেয়েদের পাসের হার ৯১.৯০ শতাংশ। আর ছেলেরা পাস করেছে ৮৬.৭৮ শতাংশ। এছাড়াও জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫ হাজার ৪৯৫ ছাত্রী। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২ হাজার ৫৭৯ জন ছাত্র।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২ হাজার
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে এবার পরীক্ষায় অংশ নেয় ২ লাখ ৮৫৩ জন শিক্ষার্থী। পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন ১ লাখ ৯৮ হাজার ৯২৯ জন। এর মধ্যে পাস করেছেন এক লাখ ৭৭ হাজার ৫৫৮ জন। অর্থাৎ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি ২১ হাজার ৩৭১ জন।
মন্তব্য করুন