প্রেস ইনসাইড

মাহফুজ আনামের কলাম: মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাম্প্রতিক বক্তব্যগুলোর পর্যালোচনা

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৪ জুন, ২০২২


Thumbnail মাহফুজ আনামের কলাম: মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাম্প্রতিক বক্তব্যগুলোর পর্যালোচনা

মাহফুজ আনাম। ডেইলি স্টারের সম্পাদক এবং বাংলাদেশের সুশীল সমাজের অন্যতম প্রতিনিধি হিসেবেও তিনি অত্যাধিক পরিচিত। রাজনীতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর চেয়ে সুশীল সরকারের পক্ষে তিনি সবসময় সোচ্চার। সবসময় তিনি মার্কিনপন্থী সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু গত শুক্রবার (০৩ জুন) ডেইলি স্টারে তার নিজের নামে লেখা সম্পাদকীয়তে তিনি বাংলাদেশের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী অবস্থানের সমালোচনা করেছে। 'রিডিং ইনটু দ্যা রিসেন্ট স্পিসেস অব দ্যা ইউএস অ্যাম্বেসেডর' এই শিরোনামে মাহফুজ আনামের লেখাটি ডেইলি স্টারে প্রকাশিত হয়েছে। আর এই লেখাটি নিয়ে এখন সারাদেশে আলোচনা চলছে। পাঠকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে মাহফুজ আনামের 'রিডিং ইনটু দ্যা রিসেন্ট স্পিসেস অব দ্যা ইউএস অ্যাম্বেসেডর' শিরোনামের লেখাটির বাংলা অনুবাদ হুবহু তুলে ধরা হলো।

একটা সময় ছিল যখন মার্কিন সরকার ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হেন কোনো পন্থা নেই যা অবলম্বন করেনি। বছরের পর বছর ধরে, সেই সরকারের বিরুদ্ধে জঘন্য প্রচারণা চালানো হয়েছিল, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, আন্তর্জাতিক আর্থিক সংযোগগুলি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল, যে দেশগুলি ভেনেজুয়েলার তেল কিনবে তাদেরকে কিছু কঠিন পরিণতির কথা মনে করিয়ে দিয়ে অন্যদের সাথে ভেনেজুয়েলাকে বিচ্ছিন্ন করার একটি প্রচারণা শুরু হয়েছিল। এর পরপরই সবচেয়ে বিতর্কিত কূটনৈতিক পদক্ষেপটি নিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ভেনেজুয়েলার বৈধ সরকার হিসাবে স্বল্প পরিচিত এবং অনভিজ্ঞ বিরোধী নেতা হুয়ান গুয়াইদোর গঠিত একটি বিকল্প সরকারকে মাদুরোর বিপরীতে স্বীকৃতি দিয়েছিল আমেরিকা। ২০২২ সালের ১৭ মে ‘অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস’ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মাদুরো সরকারের সাথে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার জন্য পূর্বের নিষেধাজ্ঞাগুলি শিথিল করবে এবং শেভরনকে ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল ও গ্যাস কোম্পানির (Petróleos de Venezuela, South America) সাথে লেনদেনের অনুমতি দেবে। স্পষ্টতই ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের উপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে সৃষ্ট জ্বালানি সংকট মোকাবেলা করার জন্য আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মার্কিন সরকারের নিজস্ব স্বার্থে কী নীতি অনুসরণ করা উচিত সে সম্পর্কে মন্তব্য করা আমাদের কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। মার্কিনরা নিজেরাই নিজেদের নীতি নির্ধারক এবং তা বাস্তবায়ন করার জন্য যথাযথ সার্বভৌম কর্তৃপক্ষ এবং কর্তৃত্ব তাদের রয়েছে। তাহলে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো যখন নিজেদের ব্যাপারে একই পন্থা অবলম্বন করে, তখন কেন মার্কিনীরা সেটা মেনে নিতে পারে না এবং অন্য দেশের রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করে?

বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস মঙ্গলবার ‘ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের’ (ডিসিএবি) সাথে কথা বলতে গিয়ে বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়গুলিকে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা এটা নিয়ে কোনো অজুহাত দেই না।" তিনি যা বোঝাতে চেয়েছেন তা হলো এই নীতিতে যুক্তরাষ্ট্র কোনো অজুহাত গ্রহণ করবে না। এইক্ষেত্রে মার্কিনীদের দীর্ঘদিনের মিত্র সৌদি আরব এবং ন্যাটো সদস্য তুরস্কের মানবাধিকার এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সম্পর্কে কী বলা যায়?

যখনই কেউ জাতীয় বা আন্তর্জাতিকভাবে সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে ইতিবাচক কথা বলে, আমরা সাংবাদিকরা উল্লাস করি। তাই বাংলাদেশে মুক্ত গণমাধ্যমের প্রতি মার্কিন সমর্থন আমাদের কানে আনন্দধারার মত প্রবাহিত হয়। যাইহোক, আমরা এও ভুলে যেতে পারি না যে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৫ সালে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী থাকাকালীন আমেরিকান টিভি শো ‘সিক্সটি মিনিটে’ স্কট পেলির সাথে একটি সাক্ষাত্কারে মন্তব্য করেছিলেন, "আমার পরিচিত সবচেয়ে খারাপ লোকদের মধ্যে বেশিরভাগই সাংবাদিক।" রাষ্ট্রপতি হিসাবে ক্ষমতা গ্রহণের পর ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সংবাদ মাধ্যমকে "আমেরিকান জনগণের শত্রু" বলে অভিহিত করে টুইট করেছিলেন ট্রাম্প।

তিনি আমেরিকার ক্ষমতায় থাকাকালীন শুধুমাত্র ফক্স নিউজ বাদে মার্কিন প্রতিটি স্বাধীন মিডিয়াকে নিপীড়ন করেছিলেন। ট্রাম্পের শাসনামলে অন্য সমস্ত বিখ্যাত এবং প্রভাবশালী মার্কিন মিডিয়া আউটলেটগুলোর তুলনায় ফক্স নিউজ সবচেয়ে ঘৃণ্য, বর্ণবাদমূলক, বিভক্তিকর এবং ভুল তথ্য প্রচার করত। সুতরাং, আমরা মনে করি এটি জিজ্ঞাসা করা ন্যায্য হবে যে, যদি মার্কিন রাষ্ট্রদূত হাস বর্তমান প্রসিডেন্ট বাইডেনের না হয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিনিধিত্ব করতেন তাহলেও কি তিনি একই বক্তব্য দিতেন? আগামী নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন এখনই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সুতরাং, যদি ট্রাম্প আবার ক্ষমতায় আসেন (আল্লাহ্ মাফ করুন) তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি স্বাধীন সংবাদপত্রের ক্ষেত্রে একই নীতি অনুসরণ করবে? আমরা কি বিশ্বাস করব যে বাংলাদেশে মুক্ত গণমাধ্যমকে সমর্থন করা বাইডেন প্রশাসনের নীতি হোয়াইট হাউসে ক্ষমতা রদবদলের সাথে সাথে পরিবর্তন হতে পারে? আমরা কি আমাদের অভ্যন্তরীণ নীতিগুলি আবার সেইসব দিনের মার্কিন প্রশাসনের সাথে মানানসই করার আশা করি?

যেকোন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে আমরা অবশ্যই সেটি চাইবো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও এই বিষয়ে একমত জেনে আমরা আনন্দিত। কিন্তু একটি নির্বাচন কতটা অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে এবং কিসের ভিত্তিতে তা বিচার করবে?

মার্কিন মিডিয়া অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সম্পূর্ণ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পরেও রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ বিশ্বাস করে তাদেরকে জোচ্চুরি করে নির্বাচনে হারানো হয়েছে। এমনকি গত মার্কিন নির্বাচনের সত্যতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে আদালতের বেশ কয়েকবার রায় ঘোষণার পরেও রিপাবলিকানদের একটি বড় অংশ এখনও বিশ্বাস করে যে, গত নির্বাচনে তাদের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পই নির্বাচিত হয়েছিলেন কিন্তু তাকে ভোট কারচুপি করে হারানো হয়েছে। সুতরাং, ধরা যাক, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরে যদি পরাজিত দল দাবি করে যে তাদের কাছ থেকে নির্বাচন চুরি হয়েছে সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রদূত হাস কিভাবে এই প্রচারণা ব্যাখ্যা করবেন?

আমি খুব মনোযোগ সহকারে গত ৩১ মার্চ, ২৪ এপ্রিল; ১০, ২৪ মে এবং ৩১ তারিখে দেওয়া রাষ্ট্রদূত হাসের সাম্প্রতিক বক্তৃতাগুলি পড়েছি এবং নতুন করে চিন্তা করার মতো অনেক কিছু পেয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-কৌশলগত চিন্তাভাবনাগুলো বাংলাদেশের জন্য কেমন হতে পারে তার একটা প্রমাণ পাওয়া যায় গত ৩১ মার্চ ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)এ অনুষ্ঠিত "মুভিং ফরওয়ার্ড ইন দ্য ইন্দো-প্যাসিফিক" শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে পিটার হাসের বক্তৃতায়। রাষ্ট্রদূত হাস "স্বাধীন এবং উন্মুক্ত, সংযুক্ত, সমৃদ্ধ, সুরক্ষিত এবং স্থিতিস্থাপক" এই পাঁচটি উপাদানকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন নীতির মূল উপাদান হিসাবে উচ্চারণ করেছেন; এই মূল উপাদানগুলির সাথে আমাদের কোনো দ্বিমত এবং সমস্যা নেই। কিন্তু হাসের এই বিশদ বিবরণের মধ্যেই আসল গল্পটি নিহিত রয়েছে। যখন মার্কিন রাষ্ট্রদূত বললেন, "ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জনগণও গণতন্ত্র চায় এবং তাদের মানবাধিকারকে সুরক্ষিত করতে ও সম্মান জানাতে চায়" এবং যখন তিনি আরও বলেন, "আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করব... এখানে হুমকি প্রতিনিয়তই বেড়ে চলেছে। আমাদের নিরাপত্তা পদ্ধতিও অবশ্যই এই হুমকির বিপরীতেই বিকশিত হবে," তিনি আসলে কোন দেশের কথা বলছেন তা আমাদের বুঝতে মোটেই সমস্যা হবে না। যাই হোক না কেন, গরীবের ঘরের সেই হাতিটি যে চীন, তা বুঝতে খুব সহজ সরল মানুষেরও সমস্যা হবার কথা না।

১৯৭১ সালে চীনের সাথে সমঝোতার পর থেকে, মার্কিন-চীন সম্পর্ক বিশ্বব্যাপী স্থিতিশীলতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হয়ে ওঠে এবং বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের দারিদ্র্যের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পেতে ও বৈশ্বিক সমৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখে। চীনের মুক্ত বাজার অর্থনীতি অনুসরণ এবং তাদের দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্য বিদেশী বিনিয়োগের অনুমোদনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেবেছিল যে, হয়তো পরবর্তীকালে সময়ের সাথে সাথে চীন তার কেন্দ্রীভূত অর্থনৈতিক কাঠামোকে শিথিল করবে এবং তারাও পশ্চিমা পুঁজিবাদী বিশ্বের একটি অংশ হয়ে উঠবে। কিন্তু আদোতে তা বাস্তবায়িত হয় নি বরং চীনের অর্থনৈতিকভাবে আরও শক্তিশালী, প্রযুক্তিগতভাবে আরও দক্ষ ও সমৃদ্ধ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), বায়োটেকনোলজি ইত্যাদিতে অভূতপূর্ব অগ্রগতির ফলে ভীত হয়ে- প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সময় থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে চীনের সাথে প্রতিযোগিতা শুরু করে এবং এখন তারা বিশ্বব্যাপী চীনের আঞ্চলিক অবস্থান ও গ্রহনযোগ্যতা নষ্ট করতে তৎপরতা শুরু করেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত ও চীনের মধ্যে দীর্ঘদিনের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের চীন বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গিকে প্ররোচিত করে একত্রিত করার জন্য একটি শক্ত ভিত্তি প্রদান করে। রাশিয়ার ইউক্রেনে আক্রমণ আমেরিকার চীন-রাশিয়া বিরোধী কার্যক্রমকে আরও তরান্বিত করেছে।

এই দ্রুত পরিবর্তনশীল এবং বিপজ্জনকভাবে চলিত  বিশ্বে বাংলাদেশকে অবশ্যই দক্ষতার সাথে নিজেদের চালনা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া এবং একই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ খাতে চীনা বিনিয়োগের অনুমতি দিয়ে অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজ করেছেন। এই নীতি আমাদের ব্যাপকভাবে উপকৃত করেছে। ভারতের নিজস্ব সমস্যা সত্ত্বেও তারা বহিরাগত শক্তিকে চীনের সাথে তাদের সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে দেয়নি। চীন-ভারতের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২০২১ সালে ৪৩.৩ শতাংশ বেড়ে ১২৫.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

যাইহোক, এটি প্রতীয়মান যে, আমেরিকার ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া এবং বাংলাদেশে আমাদের জন্য গভীর প্রভাব ফেলছে। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের সম্পর্কের উন্নতির সমস্ত সম্ভাবনাকে স্বাগত জানাই এবং আমরা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য সমস্ত সম্ভাবনার দুয়ার অন্বেষণ ও উন্মোচন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যাইহোক, এশিয়া এবং এশিয়ার বাইরের অন্যান্য দেশের সাথে আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রটি কেমন এবং সেখানে কি কি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে সে সম্পর্কে বাংলাদেশের খুব সচেতন হওয়া উচিত। এই সূত্রে আমাদের প্রধানমন্ত্রী যেমনটি বলেছেন, "এশীয় দেশগুলির অভিন্ন উন্নয়ন কাঠামো এবং প্রতিবন্ধকতা রয়েছে এবং সেগুলো সম্মিলিতভাবে মোকাবেলা করা উচিত," - হ্যাঁ বিভক্তভাবে নয়, বরং সম্মিলিত প্রচেষ্টাই এশিয়ার জন্য সমৃদ্ধি নিয়ে আসবে।

অনুবাদ করেছেন - অরুণাভ বিলে

মাহফুজ আনাম  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

ভুয়া খবর প্রকাশের তালিকায় প্রথম আলো!

প্রকাশ: ০৩:৩১ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে ২০২৩ সালে ছড়ানো ভুয়া খবর পরিসংখ্যানের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বুম বাংলাদেশ। প্রতিবেদনে প্রকাশিত খবরের মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক ৪৪টি ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর চিহ্নিত হয়েছে এবং গণমাধ্যমগুলো তাদের ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে রেটিংয়ের মুখে পড়েছে। আগের তিন বছরের তুলনায় এই সংখ্যা অনেক বেশি।

বুম বাংলাদেশের পরিসংখ্যানে সর্বোচ্চসংখ্যক ভুয়া খবর প্রচার করেছে সময় টিভি, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে আরটিভি ও বাংলানিউজ। তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো তালিকায় স্থান পেয়েছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং আস্থাভাজন দৈনিক গণমাধ্যম প্রথম আলো।

বুম বাংলাদেশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভুয়া খবর প্রচারে টানা চতুর্থবারের মতো শীর্ষে রয়েছে বেসরকারি টেলিভিশন ‘সময় টিভি’। ২০২৩ সালে গণমাধ্যমটি এককভাবে সর্বোচ্চ ৯টি ভুয়া খবর প্রচার করেছে। এ ছাড়া ৭টি ভুয়া খবর প্রচার করে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আরেক বেসরকারি টেলিভিশন আরটিভি এবং ৬টি ভুয়া খবর প্রকাশ করে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলানিউজ২৪।

এ ছাড়া ৫টি করে ভুয়া খবর প্রচার করেছে ঢাকা পোস্ট, আজকের পত্রিকা, সমকাল, আমাদের সময় ও দৈনিক ইত্তেফাক। ৪টি করে ভুয়া খবর প্রচার করেছে চ্যানেল ২৪, কালের কণ্ঠ, যুগান্তর, বাংলা ট্রিবিউন ও প্রথম আলো। ৩টি করে ভুয়া খবর প্রচার করেছে ডিবিসি নিউজ, বিডিনিউজ২৪, জাগোনিউজ২৪, জুম বাংলা, ডেইলি বাংলাদেশ, যমুনা টিভি, রাইজিং বিডি, একাত্তর টিভি ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন। ২টি করে ভুয়া খবর প্রচার করেছে চ্যানেল আই, নাগরিক টিভি, ইনকিলাব, নয়া দিগন্ত, মানবকণ্ঠ, কালবেলা, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, নিউজ ২৪, মানবজমিন, বাংলা ভিশন, সংবাদ প্রকাশ, সারাবাংলা ডট নেট ও বাংলাদেশ জার্নাল। ১টি করে ভুয়া খবর প্রচার করেছে বৈশাখী টিভি, দৈনিক আমাদের সময়, সাম্প্রতিক দেশকাল, ঢাকা মেইল, দেশ টিভি, নিউ ন্যাশন, দেশ রুপান্তর, বাংলাদেশ টুডে, ভোরের কাগজ, সময়ের আলো, নিউজবাংলা, দৈনিক বাংলা, যায়যায়দিন, দৈনিক সংগ্রাম, ভোরের ডাক, প্রতিদিনের বাংলাদেশ, এনটিভি, নয়া শতাব্দী, বায়ান্ন টিভি ও বিবিএস বাংলা।

বুম বাংলাদেশের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায় ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। এই ৪৪টি ঘটনার মধ্যে কোনো ঘটনায় একটি গণমাধ্যমে ভুয়া খবরটি প্রচার হয়েছে, আবার কোনো কোনো ঘটনায় একটি ভুয়া খবর একাধিক গণমাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছে। এমনও দেখা গেছে, তথ্য যাচাই না করে অন্যের খবর কপি করে প্রকাশের কারণে কোনো কোনো ঘটনায় ১৫ এর অধিক মূলধারার গণমাধ্যম একই ভুয়া খবরের ফাঁদে পা দিয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ফেসবুকের ফ্যাক্ট চেক পার্টনার হিসেবে বুম বাংলাদেশ দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত সেসব ভুয়া খবর নিয়ে কাজ করেছে, যেসব ভুয়া খবর গণমাধ্যমগুলো তাদের ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে প্রচার করেছে। পরিসংখ্যানে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সেসব ভুয়া খবরের হিসেবই উঠে এসেছে, যেসব ভুয়া খবরকে খণ্ডন করে বুম বাংলাদেশ প্রতিবেদন তৈরি করেছে এবং গণমাধ্যমগুলোর সংশ্লিষ্ট ফেসবুক পোস্টকে রেট করেছে। তাই এই পরিসংখ্যানে বাংলাদেশে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভুয়া খবরের পুরো চিত্র ফুটে উঠবে না বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বুম বাংলাদেশ   প্রথম আলো   ভুয়া খবর  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

সাব এডিটরস কাউন্সিলের সভাপতি অনিক, সম্পাদক জাওহার

প্রকাশ: ০৮:৫২ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের নির্বাচনে সভাপতি পদে বিজয়ী হয়েছেন ডিবিসি নিউজের মুক্তাদির অনিক। আর সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশের আলোর জাওহার ইকবাল।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। রাতে ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল।

ঘোষিত ফলাফলে সভাপতি পদে ৩৫৯ ভোট পেয়ে মুক্তাদির অনিক বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কে এম শহীদুল হক ২৩২ ভোট এবং আবুল কালাম আজাদ পান ২২৮ ভোট।

আর সাধারণ সম্পাদক পদে জাওহার ইকবাল খান ৪৯৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কবীর আলমগীর পেয়েছেন ৩১৬ ভোট। 

সাংগঠনিক সম্পাদক পদে শহীদ রান ৪৬৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৌফিক অপু পেয়েছেন ৩২৯ ভোট।

নির্বাচনে সহসভাপতি পদে আলী ইমাম সুমন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে মনির আহমাদ জারিফ, কোষাধ্যক্ষ পদে নাজিম উদ-দৌলা সাদি, দফতর সম্পাদক পদে জাফরুল আলম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে আরিফ আহমেদ, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক পদে তারেক হোসেন বাপ্পি, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে নাহিদ হাসান, কল্যাণ সম্পাদক পদে মীম ওয়ালী উল্লাহ এবং নারী বিষয়ক সম্পাদক পদে ফারজানা নাজনীন ফ্লোরা বিজয়ী হয়েছেন।

এছাড়া কার্যনির্বাহী সদস্য পদে শামসুল আলম সেতু, আনজুমান আরা শিল্পী, আজুমান আরা মুন, জেসমিন জাহান, তানজিমুল নয়ন, মাশরেকা জাহান ও মোহাম্মদ আবু ইউসুফ বিজয়ী হয়েছেন।

সাব এডিটরস কাউন্সিল  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

বিডিনিউজ সম্পাদক খালিদীর বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট দাখিল

প্রকাশ: ০৬:৪৯ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে দুদক।

রোববার (২৮ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। আদালত আগামী ১০ জুন অভিযোগপত্র গ্রহণ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন রেখেছেন। দুদকের উপপরিদর্শক আক্কাস আলী এ তথ্য জানান।

গত ১৮ এপ্রিল তৌফিক ইমরোজ খালিদীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচার মামলার চার্জশিটে অনুমোদন দেয় দুদক। 

অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে ২০২০ সালের ৩০ জুলাই দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ ওই মামলা করেন। 

এতে বলা হয়েছে, কোনো ধরনের বৈধ উপার্জন ছাড়াই তৌফিক ইমরোজ খালিদী এইচএসবিসি, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, সাউথ ইস্ট ব্যাংক লিমিটেড এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট্র ব্যাংক লিমিটেডের চারটি ব্যাংকের বিভিন্ন হিসাবে ৪২ কোটি টাকা জমা রেখেছেন। ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে প্রতারণার মাধ্যমে তিনি এসব টাকা অর্জন করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

এর আগে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত বিডিনিউজের ৯টি ও তৌফিক ইমরোজ খালিদীর নিজ নামে ১৩টি স্থায়ী আমানতের মোট ৪২ কোটি টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছিলেন। তার আগে একই বছরের ২৬ নভেম্বর খালিদীকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিডিনিউজ প্রধান সম্পাদক। অভিযোগপত্র অনুমোদনের পর এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘এ অভিযোগ এতটাই হাস্যকর, যুক্তিহীন ও ভিত্তিহীন যে দুর্নীতি দমন কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতাকে এটা গভীরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। এক্ষেত্রে তদন্তের যে দীর্ঘসূত্রতা হলো, আর তার যে ফল এ পর্যন্ত এল, তাতে কার্যত ন্যায়বিচার থেকেই বঞ্চিত রাখা হলো। এ ধরনের প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে সাধারণ মানুষের মনে আস্থার সংকট তৈরি করতে পারে। তারপরও আমরা এর নিষ্পত্তিতে বিচার ব্যবস্থা এবং বিচারকদের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখতে চাই। আমি আত্মবিশ্বাসী, ন্যায়বিচার আমি পাব।’

বিডিনিউজ   দুদক   তৌফিক ইমরোজ খালিদী  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

শেরপুর প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি ঘোষণা

প্রকাশ: ০৩:২২ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিটিভি ও দৈনিক সমকাল পত্রিকার শেরপুর জেলা প্রতিনিধি দেবাশীষ ভট্রাচার্যকে সভাপতি ও বাংলা ইনসাইডারের স্টাফ রিপোর্টার প্রতিনিধি মোঃ মেরাজ উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করে শেরপুর প্রেসক্লাবের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি নির্বাচন করা হয়েছে।

 

এর আগে ক্লাবের বিপুল সংখ্যক সদস্যসহ জেলার প্রায় পৌনে দুইশ সাংবাদিকের উপস্থিতিতে ইতিপূর্বে সম্পূর্ন অনিয়মতান্ত্রিকভাবে গঠিত শেরপুর প্রেসক্লাবের কমিটি ক্লাবের স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম ও ব্যর্থতার অভিযোগে ক্লাবের সদস্যদের দাবীর মুখে শেরপুর প্রেসক্লাবের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করা হয়। এতে ক্লাবের দুই তৃতীয়াংশ সদস্য সর্বসম্মত সমর্থন প্রদান করেন।   

 

এর আগে বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে শেরপুরের প্রবীন সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযুদ্ধা আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় ভার্চুয়ালী যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন সংসদ উপ নেতা ও শেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেরপুর-১ সদর আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ছানুয়ার হোসেন, শেরপুর-৩ আসনের এমপি এডিএম শহিদুল ইসলাম, শেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমান, শেরপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ রফিকুল ইসলাম, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুন্নাহার কামাল, জেলা জাসদের সভাপতি শেরপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন, শেরপুর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবিহা জামান শাপলা, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বায়েযীদ হাসানসহ আরো অনেকে।

 

এসময় বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান সরকার সাংবাদিকদের কল্যাণে নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। স্বাধীনভাবে খবর প্রচার করে আসছে। আমরা শেরপুরের সাংবাদিকদের কল্যাণে সব ধরনের সহযোগিতা করবো। আমি নতুন নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানাই।’ 

 

আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সদস্যরা উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করে। পরে সর্বসম্মতিক্রমে উপদেষ্টা পরিষদের কাছে দায়িত্ব অর্পন করা হয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করার জন্য। উপদেষ্টা পরিষদ সভাপতি হিসেবে বিটিভি ও দৈনিক সমকালের শেরপুর জেলা প্রতিনিধি দেবাশীষ ভট্রাচার্যকে সভাপতি ও ইনডিপেনডেন্ট টিভির স্টাফ রিপোর্টার মেরাজ উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তাব করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত করা হয়। 


প্রেসক্লাব   নতুন কমিটি  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

প্রথম আলো বিক্রি: দর কষাকষিতে চারটি শিল্প গ্রুপ

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মিডিয়া স্টার লিমিটেডের মালিকানাধীন প্রথম আলো বিক্রির জন্য মালিকপক্ষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারা প্রথম আলো বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের সাথে কথাবার্তা বলছেন। প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান নিজেই দু একটি শিল্প গ্রুপের সাথে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও মালিকপক্ষের অন্যরা সিমিন রহমান শাজরেহ হক দুজনই প্রথম আলো বিক্রির জন্য বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে আলাপ করছেন বলে জানা গেছে। 

বিষয়ে বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, প্রথম আলো বিক্রির জন্য যে দর হাঁকা হয়েছে সেটি অনেক বেশি এবং একারণে আলাপ আলোচনা শুরু হলেও দর কষাকষি চলছে বেশ ভালোভাবেই। সাবের হোসেন চৌধুরীর মালিকানাধীন কর্ণফুলী গ্রুপ প্রথম আলো কিনতে আগ্রহী ছিল। কিন্তু প্রথম আলোর পক্ষ থেকে যে দাম চাওয়া হয়েছে সেই দামে কর্ণফুলী গ্রুপ প্রথম আলো কিনতে রাজি নয় বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। 


বিভিন্ন সূত্রগুলো জানিয়েছে, কর্ণফুলী গ্রুপের দর কষাকষির প্রেক্ষাপটে আরও কয়েকটি বড় বড় শিল্প পরিবার প্রথম আলো কেনার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেছে এবং তারাও মিডিয়া স্টারের পরিচালকদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা শুরু করেছে। 

যে সমস্ত শিল্প গ্রুপ প্রথম আলো কেনার ব্যাপারে আগ্রহ উঠেছে তাদের মধ্যে এখন সবার শীর্ষে রয়েছে এস আলম গ্রুপ। এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এক সময় প্রথম আলোতে কর্মরত ছিলেন এবং তিনি মতিউর রহমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ প্রিয় ভজন হিসেবে পরিচিত। রাজনৈতিক ভাবেও তারা এক সময়ে কমিউনিস্ট রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার মাধ্যমেই এস আলম গ্রুপ এখন প্রথম আলো গ্রুপের সঙ্গে পত্রিকা বিক্রির বিষয়টি নিয়ে আলাপ আলোচনা শুরু করেছেন। 

প্রথম আলোর বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এখন এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। তারা এই বিষয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে দর কষাকষি করছে বলে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। দর কষাকষিতে পিছিয়ে নেই দেশের অন্যতম শিল্প গ্রুপ স্কয়ারও। স্কয়ার গ্রুপের সঙ্গে প্রথম আলোর একটি আলাদা সম্পর্ক রয়েছে। মতিউর রহমানের সঙ্গে স্কয়ার গ্রুপের মালিক দুই ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে স্কয়ার গ্রুপের অর্থায়নে প্রতি বছর প্রথম আলো মেরিল প্রথম-আলো উৎসব করে থাকে, যেখানে তারকাদেরকে পুরস্কার দিয়ে প্রথম আলোর একান্ত অনুগত করে রাখা হয়। স্কয়ার গ্রুপের পক্ষ থেকেও পত্রিকাটি কেনার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে বলে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। 


উল্লেখ্য, স্কয়ারের মালিকানাধীন মাছরাঙা টেলিভিশন রয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্কয়ার গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার অঞ্জন চৌধুরী পত্রিকা কেনার ব্যাপারে প্রথম আলোর মালিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও একাত্তর টেলিভিশনের মালিক প্রতিষ্ঠান এমজিআই বা মেঘনা মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজও প্রথম আলো কিনতে আগ্রহী। এমজিআই অন্যতম দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং একাত্তর টেলিভিশনের মালিকানায় রয়েছে। তারা প্রথম আলো কেনার ব্যাপারে ইতোমধ্যে কথাবার্তা বলছে বলে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।

একাধিক সূত্র বলছে, প্রথম আলো বিক্রির জন্য যে দাম চাওয়া হচ্ছে সেটি অনেক বেশি। আর এ কারণেই এখন দর দামের বিষয়টি মূখ্য হয়ে উঠেছে। তবে প্রথম আলো যে শেষ পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে সেটি এখন পর্যন্ত মোটামুটি নিশ্চিত।

প্রথম আলো   স্কয়ার গ্রুপ   মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ   একাত্তর টিভি   মিডিয়া স্টার লিমিটেড  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন