ইনসাইড টক

‘অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে আছে’


Thumbnail ‘অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে আছে’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত বলেছেন, বৈশ্বিক অর্থনীতির বিষয়ে এক সময় বলা হতো যে, যারা বিশ্ব অর্থনীতিতে যত বেশি সম্পৃক্ত, তারা তত ভালো অবস্থানে আছে। এই কথাটা এখন একটু মিথ্যা প্রমাণিত হচ্ছে। কোভিডের পরে এটি মিথ্যা প্রমাণিত হচ্ছে। এটা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরে মিথ্যা প্রমাণিত হচ্ছে। তাতে দেখা যাচ্ছে যে, যেসব দেশ নিজের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে পেরেছে, তাদের নিজেকে রক্ষা করার ক্ষমতা বেশি। সেই দিক থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি ভালো অবস্থানে আছে।

সম্প্রতি কানাডাভিত্তিক সংবাদ প্রতিষ্ঠান ভিজুয়াল ক্যাপিটালিস্ট পরিচালিত এক জরিপে জিডিপির আকার অনুযায়ী বাংলাদেশ বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। অর্থনীতির এই শক্ত অবস্থানের পরও বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হবে বলে মন্তব্য করেন অনেকেই। এই বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান তুহিন।

অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত বলেন, আগে অর্থনীতি একটি অভ্যন্তরীণ বিষয় ছিলো। এখন আমরা অনেক বিষয়ে বহির্বিশ্বের ওপর নির্ভরশীল। তারাও আমাদের ওপর নির্ভরশীল। আমাদের রপ্তানির ওপর তারা নির্ভরশীল, তাদের রপ্তানির ওপর আমরা নির্ভরশীল। সব মিলিয়ে অর্থনীতি আগের তুলনায় অনেক বেশি জটিল, অনেক বেশি সরলরৈখিক ঘটনা নয়। এই অ-সরলরৈখিক অর্থনীতির মধ্যে অনেককিছু আছে, যেগুলো নিয়ে পোস্টমর্টেম না করতে পারলে খুব ভালো কোনো উপসংহার টানা যায় না।

তিনি আরও বলেন, অর্থনীতি বিষয়টি যথেষ্ট মাত্রায় অনিশ্চিত। এই অনিশ্চয়তার মধ্যে অনেক ঝুঁকি আছে। সেই ঝুঁকি গুলোর মধ্যে মাপঝোক করেই কথাবার্তা বলা দরকার। সেটা যদি আমরা বলি তাহলে বিশ্বের সব অর্থনীতিকে যেভাবে র‍্যাংক করা হয় (সব র‍্যাংকের সঙ্গে আমরা একমত হইও না) কোনটা শক্ত অর্থনীতি, কোনটা দুর্বল অর্থনীতি, মাঝারি অর্থনীতি। তবে এটা পরিষ্কার যে, ২০-৩০ বছর আগের বাংলাদেশে অর্থনীতি বৈশ্বিক অর্থনীতির মধ্যে শক্ত অবস্থানের নিরিখে, ২০-৩০ আগে যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থায় এখন বাংলাদেশ নেই। বাংলাদেশ তার থেকে অনেক শক্তিশালী অবস্থানে আছে।

অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত বলেন, আমরা অর্থনীতিতে কনসিসটেন্টলি গত ১০ বছর একধরনের একটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করছি, যেটা খুব বেশি দেশ করেনি। সেটাও একটি দুর্বল অর্থনীতিতে নয়, মোটামুটি একটি সবল অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি। দুর্বল অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হলেও খুব বেশি আশে যায় না হয়তো। এটি সবল অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি এটা ওয়েলকামিং এবং এটা ভালো।

তিনি বলেন, আমরা বহু দেশ থেকে ঋণ নিয়েছি। যথেষ্ট ঋণ আমাদের আছে। দায়-দেনা ভালো জিনিষ না তবুও এই দায়-দেনা আমাদের আছে। এই দায়-দেনা শোধও করতে হয়। এই দায়-দেনা পরিশোধ করার বিষয়টি এখন আমার মনে হয়, আমাদের মাথায় বড় বিষয়। আমাদের মাথায় বড় বিষয় কয়েকটি। একটি হচ্ছে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির কথা যদি বলেন, তাহলে সত্য কথা যদি বলা হয়, তাহলে মুদ্রাস্ফীতি, মূল্যস্ফীতি এগুলো বড় বিষয়। আর অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে কৃষি। কৃষির শক্তি এটা বড় বিষয়। অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি, অভ্যন্তরীণ দেশের মানুষের চাহিদা মেটানোর জন্য যে উৎপাদন, সেটা শিল্প পণ্য হোক, কৃষি পণ্য হোক বা সেবা পণ্য হোক এই উৎপাদন বড় বিষয়।

তিনি আরও বলেন, অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে খুব বড় বিষয় হলো ইমপ্লোয়েমেন্ট। আনইমপ্লোয়েমেন্ট ফিগার কম বলা যেতে পারে, কিন্তু সেই আনইমপ্লোয়েমেন্ট ফিগারের মধ্যে যদি এমন ইমপ্লোয়েমেন্ট থাকে যেখানে মজুরি কম। কারণ অনেক খাতই আছে বাংলাদেশে যেগুলো হলো অনানুষ্ঠানিক খাত। অনানুষ্ঠানিক খাতে মজুরি আসলে অনেক কম। সেগুলো আমাদের বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়।

অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত বলেন, আমাদের অর্থনীতির একটি জিডিপি হয়। জিডিপির হারটা ৪০ লক্ষ কোটি টাকার আশেপাশে। এই জিডিপির সঙ্গে অনেক কিছুকে তুলনা করা হয় যে, সামনে কেমন হবে সেটা বোঝা যাবে। একটা তুলনা হয় যে, আমরা যেসব লোন পরিশোধ করি (দুইটি ঋণ পরিশোধ করি, একটি দেশের ভিতরে, একটি দেশের বাহিরে) এই ঋণ আমাদের কত পরিশোধ করতে হবে। প্রতি সালে কত পরিশোধ করতে হবে। এখন ঋণ পরিশোধ তো টাকায় করা হয় না, ডলারে করতে হয়। আমাদের এখন ফরেন কারেন্সির অবস্থা ৪০ বিলিয়ন ডলার বলা হয়। তার মধ্যে প্রশ্ন করা হয় যে, আমরা সরকারিভাবে যে ফিগারটা বলি সেটা ঠিক কিনা। সেখানে আইএমএফও বলে যে, তোমাদের ৭ বিলিয়ন ডলার তোমরা বেশি বলো। সেসব যদি বাদ দেই, তাহলে যেটা দাঁড়ায় সেটা আসে আমার দুটো জায়গা থেকে। একটি হলো আমরা যে রপ্তানি করি সেখান থেকে ফরেন কারেন্সি পাই। আরেকটা হলো আমাদের রেমিটেন্স। বিদেশে যারা কাজ করে তারা যে টাকাটা পাঠায়। এর বাহিরে কিছু নেই।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

কোরবানিতে পশুর কোন সংকট হবে না: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

আগামী কোরবানি ঈদে চাহিদার তুলনায় গবাদি পশুর যোগান বেশি আছে, ফলে পশুর কোনো সংকট হবে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এক কোটি ৩০ লাখের বেশি পশু রয়েছে।  

মঙ্গলবার (১৪ মে) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এ কথা বলেন মন্ত্রী।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, চাহিদার তুলনায় কোরবানির পশু বেশি আছে। সুতরাং এটি নিয়ে বিভ্রান্তি হওয়ার কোন কারণ নেই। হতাশা হওয়ারও কোন কারণ নেই। আমরা আমাদের উৎপাদিত গবাদি পশু দিয়েই কোরবানির চাহিদা মেটাতে পারব। 

তিনি বলেন, কেউ একটা গরু মোটা অংকের টাকা দিয়ে কেনে সে যেমন কোরবানি দিয়ে ধর্মীয় অনুশাসন পালন করে তেমনি অন্যদিকে তার একটা সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধিরও বিষয় বা ক্ষেত্র তৈরি করতে চায়। সুতরাং মোটাতাজা গরুর যেমন চাহিদা আছে আবার ছোট বা মাঝারি গরুরও আলাদা একটা চাহিদা আছে। এবং সেভাবে আমাদের প্রস্তুতিও আছে। আমি মনে করি ক্রেতাদের কাউকে বিমুখ হয়ে ফেরত যেতে হবে না। মানুষের চাহিদা মতো এবার আমাদের গবাদি পশু প্রস্তুত আছে।

কোরবানি পশু দাম বৃদ্ধির জন্য সিডিকেন্ট একটি কারণ উল্লেখ্য করে আব্দুর রহমান বলেন, সিডিকেন্ট একটা ব্যাধির মতো। এটি বন্ধ করতে যে জায়গা গুলো চিহ্নিত করার প্রয়োজন সেটি হলো পথে পথে চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়া, হাট বাজারে হাসিল নিয়ে নানা ধরনের বিষয়াদি থাকে। গরুর বেপারীদের হয়রানির বিষয় থাকে। এগুলোকে চিহ্নিত করার জন্য আমরা আন্ত:মন্ত্রণালয় একটা বৈঠক খুব শিগগিরই করবো। এ নিয়ে আমরা ১৬ তারিখে খামারিদের নিয়ে বসবো। এই সমস্যাগুলো নিরসন করতে কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে সে বিষয়গুলো নিয়ে তাদের সাথে আলাপ করবো।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে এখন অনলাইনে গবাদি পশু কেনাবেচার প্রবণতা বা আগ্রহের বিষয়টি বাড়ছে। এটি আমরা কীভাবে আরও উৎসাহিত করতে পারি এবং ঝামেলামুক্ত করতে পারি সেটা নিয়েও আমাদের আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে। অনেকে পরিবার সহ গরু কিনতে যেতে পছন্দ করেন আবার কেউ কেউ আছেন যারা এটাকে ঝামেলা মনে করে অনলাইন পাঁচটি গরু দেখে পরে একটা পছন্দ করে কেনেন। সুতরাং পুরো বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয় আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘নতুন কারিকুলাম অনুসারে তীব্র তাপদাহেও স্কুল খোলা না রেখে উপায় নাই’

প্রকাশ: ০৪:০৫ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, এপ্রিল মাসে তীব্র তাপদাহ যাচ্ছে। এটা একটু কষ্টদায়ক বটে। তবে মে মাসেও তো আবহাওয়া এমন থাকবে এবং সে সময় প্রচন্ড গরম থাকবে। কিন্তু তাই বলে তো আর স্কুল, কলেজ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এত লম্বা সময় ধরে বন্ধ রাখা যায় না।

দেশে চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এসব কথা বলেছেন। 

অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, আমাদের নতুন যে কারিকুলাম সেটা বাস্তবমুখী শিক্ষা। সে অনুযায়ী স্কুলে উপস্থিত থাকার বিষয়টি এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ স্কুলে না গিয়ে শেখার উপায় নেই। এছাড়াও করোনার সময় এমনতেই আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় একটা বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে। তাছাড়া কিছুদিন আগে ঈদের ছুটি, পয়লা বৈশাখের ছুটি সব মিলিয়ে একটা বড় সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই দেশের তাপমাত্রা কমে আসবে। এখন যেহেতু তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে সেজন্য আমরা মনিং স্কুল চালু করতে পারি। এখন হয়ত সকাল ৮টায় ক্লাস শুরু হয় সেখানে আমরা এখন থেকে সকাল ৭টায় ক্লাস শুরু করতে পারি এবং ১১ টার মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। যেমন, আজকে সকালে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। তাছাড়া দেশের সব জাগয়ায় তাপমাত্রা একই রকম না। যেমন সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহে তুলনামূলক তাপমাত্রা কম এবং এই অঞ্চলগুলো গত দুদিন ধরে বৃষ্টি হয়েছে। এরকম অবস্থায় স্কুল বন্ধ রাখলেও তো আবার তাদের জন্য ক্ষতি।

তীব্র তাপপ্রবাহের বাস্তবতা মেনে নিয়ে আমাদের পাঠ্যক্রম এগিয়ে নিতে হবে উল্লেখ্য করে অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান  বলেন, যেহেতু তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে সেজন্য আমরা কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে পারি। যেমন, এ সময় আমাদের স্কুলগুলোতে পযাপ্ত আলো-বাতাস বিশেষ করে এ সময় যেন লোডশেডিং না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। গ্রামের স্কুলগুলোতে যেন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে সে ব্যাপারে আমাদের বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে কেউই রাজনীতিতে ভালো করতে পারেননি’

প্রকাশ: ০৪:০৫ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, যারা দলের নির্দেশনা মানতে পারেননি, তারা তো না পারার দলে। দল থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না। এটা ছিল দলের বৃহত্তর স্বার্থে। সেজন্য সেটা পালন করা সবাই নৈতিক দায়িত্ব ছিল। কিন্তু যখন কেউ কেউ সেই নির্দেশ মান্য করেননি সেটার দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে। দলের প্রতি তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে আমার বড় প্রশ্ন রয়েছে।

কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনেরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না—এমন নির্দেশনা থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি কোন কোন এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনেরা। এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। পাঠকদের জন্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ। 

তিনি বলেন, দল করলে আপনাকে দলের সিদ্ধান্ত, গঠনতন্ত্র, শৃঙ্খলা ইত্যাদি বিষয়গুলো মানতেই হবে। সেটা না করলে আপনি রাজনীতিতে কখনও ভালো করতে পারবেন না। এটা শুধু রাজনীতিতে নয়, যে কোন সেক্টরে এটা প্রযোজ্য। আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন নির্দেশ দিলেন তখন সেটা অমান্য করার প্রশ্নই আসে না। এরপরও যারা দলের সিদ্ধান্তকে মানলেন না তাদের আদর্শ নিয়ে তো বড় প্রশ্ন আছে। কারণ নির্দেশ অমান্য করা দলের নীতি আদর্শের সাথে যায় না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তাদের মধ্যে কতটুকু আছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন। তবে এখনও সময় ফুরিয়ে যায়নি। যারা এখনও মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তাদের উচিত হবে অনতিবিলম্বে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয়া।

নির্দেশনা অমান্য করা ক্ষেত্রে দলের কৌশলের ভুল আছে কিনা বিশেষ করে এর আগে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার বহিষ্কার করে আবার দলে ফিরিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে—এমন প্রশ্নের জবাবে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এটা থেকে যদি কেউ অনুপ্রাণিত হয় তাহলে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত ভালো হবে না এটা নিশ্চিত। আমি বলব তারা ভুল রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণ করেছে। এরা অচিরেই রাজনীতিতে হারিয়ে যাবে। দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে বা গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে কেউই এখন পর্যন্ত রাজনীতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারেনি। বরং যিনি দলের প্রতি অবিচল থেকেছেন, দলের সিদ্ধান্তকে মান্য করেছেন, দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি তারা ধাপের ধাপে রাজনীতিতে উন্নতি করেছেন দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরেছেন, জনগণের নেতাতে পরিণত হয়েছেন, রাজনীতিতে অমরত্ব লাভ করেছেন। কিন্তু যারা এর ব্যতিক্রম করেছেন তারা সেই স্বাদ পাননি।

তিনি আরও বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ হয়তো সাময়িক ভাবে লাভবান হতে পারেন কিন্তু একটা সময়ের পর রাজনীতিতে থেকে জীবনের জন্য হারিয়েছে যাবেন। রাজনীতিতে তারা অপাঙ্ক্তেয় হয়ে পড়বেন। জনগণের কাছে তাদের মযার্দার আসন হারাবেন, জনগণ দ্বারা প্রত্যাখান হবেন। কেউ যদি সে পথে পা বাড়ান সেটার দায়-দায়িত্ব তার নিজের।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত ত্যাগী কর্মীদের অনুপ্রাণিত করেছে’

প্রকাশ: ০৫:০৩ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে একটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনীতির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর উত্থান হয়েছে এবং তিনি যে দল ও ত্যাগী নেতাদের ভালোবাসেন, তাদের প্রতি যে তার মমত্ববোধ সেটি প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে নতুন আলোর সঞ্চার দেখছেন এবং তারা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাজনীতি রাজনীতিবিদদের কাছেই থাকবে।

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নির্দেশের যৌক্তিকতা এবং দলের অবস্থান সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে আলাপচারিতায় জাহাঙ্গীর কবির নানক এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের অনেকে আছেন যারা উত্তরাধিকারে সূত্রে রাজনীতিতে এসেছেন এবং তারা স্ব স্ব অবস্থানে ভালো অবদান রাখছেন তাহলে এখন কেন আওয়ামী লীগ এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলো—এমন প্রশ্নের উত্তরে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, রাজনীতির বিষয়টি ধন-সম্পদের মত বিষয় নয়। কোন এমপি বা মন্ত্রীর সন্তান উপজেলা নির্বাচন করছে সেটা নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। যিনি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন বা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন তিনি নির্বাচন করতেই পারেন। নির্বাচন করা তার অধিকার। কিন্তু বাস্তবতা হলো কোন কোন এমপি বা মন্ত্রীর সন্তান কিংবা স্বজনেরা সরাসরি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থাকলেও তাদের সন্তান, শ্যালক, ভাগ্নে বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের নির্বাচনে দাঁড় করানো হয়েছে। অথচ তিনি হয়তো কোনদিনই একবারের জন্যেও জয় বাংলা স্লোগান দেননি কিংবা দলের প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেননি। এরকম যাদের অবস্থান তাদের বিরুদ্ধে দলের নেতাকর্মীদের ক্ষোভ। উত্তরাধিকার সূত্রে রাজনীতি করা বা আসা সেটা মূখ্য নিষয় নয়। কারও পরিবারতন্ত্রের কারণে যেন দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা বঞ্চিত না হন সেটার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা। 

কোন কোন উপজেলায় এমপিরা একক প্রার্থী ঘোষণা করেছেন সেটি দলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, এটি অবশ্যই সাংঘর্ষিক। কারণ উপজেলা নির্বাচনে দল থেকে কাউকে মনোনয়ন না দেওয়া সিদ্ধান্ত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি যে সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা দিয়েছেন সেটি অমান্য করার কোন প্রশ্নই আসে না। কারও অধিকারও নেই এই নির্দেশ অমান্য করার। এমনকি এ ধরনের মনোবৃত্তি দেখানোরও কোন সুযোগ নেই। আমি মনে করি যিনি নেত্রীর সিদ্ধান্তকে অনুসরণ করবে না তিনি এই দলের জন্য কোন ভাবেই মঙ্গলজনক হতে পারে না।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘কেউ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে দ্রুত ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

গত কয়েক দিন ধরে সারা দেশের ওপর বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। আবহাওয়া নিয়ে সহসাই কোনো সুসংবাদ নেই। এরকম তাপদাহ আগামীতে আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ রকম এক অস্বস্তির মধ্যে কীভাবে নারী পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশু কিশোর সুস্থ্ থাকতে পারে সে ব্যাপারে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, রোদে যারা কাজ করেন, তাদের একটানা দীর্ঘক্ষণ রোদে কাজ করা যাবে না। এতে মাথাব্যথা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, যা থেকে হিটস্ট্রোক হয়। হিটস্ট্রোক হলে যে কেউ মারাও যেতে পারেন। হিট স্ট্রোকের মূল ঝুঁকি মূলত যারা অনেকক্ষণ রোদে কাজ করে তাদের। মানব দেহে স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। প্রচণ্ড গরমে মানুষের শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে প্রবল। এ অবস্থায় শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে হিট স্ট্রোক হয়। শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে ১০৫-এর উপর উঠলে ঘাম হয় না, মাথা ব্যথা, অস্থিরতা, বুক ধড়ফড়, ক্লান্তি, অবসাদ হয়। এক সময় অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা হয়, অজ্ঞানও হয়ে যায় অনেকে। এটি বিপজ্জনক। এটি খুবই সিরিয়াস, সাথে সাথে চিকিৎসা না দিলে রোগী মারাও যেতে পারে। 

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এই অধ্যাপক বলেন, দেশে বর্তমানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। এ তাপমাত্রা শিশু থেকে বয়স্ক সবার জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ। এখন সুস্থ থাকতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। অপ্রোয়জনে একদম বাইরে ঘোরাঘুরি করা যাবে না। যারা কাজের জন্য বাইরে থাকেন, তাদের ছাতা ব্যবহার বা মাথায় কাপড় দিতে হবে। কাজের ফাঁকে এক-দুই ঘণ্টা পর পর ১০-১৫ মিনিটের জন্য ছায়াযুক্ত স্থানে বসবেন। একটানা রোদের মধ্যে থাকা যাবে না। লবণ মিশ্রিত পানি খেলে ভালো হয়, স্যালাইন খেতে পারেন। ডিহাইড্রেশন যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। 

আরেকটা জরুরী বিষয় হলো, ঢিলেঢালা কাপড় পরতে হবে। জিন্স না পরাই ভালো। 

বয়স্ক এবং যারা ডায়বেটিস, কিডনিসহ বিভিন্ন ক্রনিক রোগে ভোগেন, তাদের জন্য ঝুঁকিটা বেশি। তারা অপ্রয়োজনে বাইরে যাবেন না। 

শিশুদের বিষয়ে ডা. আবদুল্লাহ বলেন, গরমে বাচ্চাদের জন্যও ঝুঁকি বেশি। এখন স্কুল বন্ধ তাই বাচ্চাদের বাইরে বের না করাই ভালো। বাচ্চাদের বেশি বেশি পানি খাওয়াতে হবে। তারা যেন রোদের মধ্যে অনেক বেশি দৌড়ঝাঁপ না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, হিট স্ট্রোকের পাশাপাশি গরমে ডায়রিয়া, টাইফয়েড, জন্ডিস বাড়ছে। অ্যাজমা, হাঁপানি যাদের আছে, গরমের কারণে তাদের শ্বাসকষ্ট ওঠানামা করছে। তাদেরও সতর্ক থাকতে হবে।

পানিশূন্যতা গরমে সবচেয়ে বড় সমস্যা উল্লেখ্য করে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এই অধ্যাপক বলেন, এই গরমে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। ওরাল স্যালাইন খাওয়া ভালো। এছাড়া পানিতে লবন মিশিয়েও খাওয়া যাবে। তবে রাস্তায় বিক্রি হওয়া লেবু পানি, আখের জুস খাওয়া যাবে না। অস্বাস্থ্যকর, বাসি কোনো খাবারও পরিহার করতে হবে। শিশু ও বয়স্কদের যতটা সম্ভব ঘরে রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শিশু, নারী ও বয়স্কদের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস রোগীদের সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এসব রোগীর হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন