ইনসাইড হেলথ

সাতক্ষীরার কৃষ্ণকাটি গ্রামে আর্সেনিকের ভয়াবহ রূপ


Thumbnail আর্সেনিকের ভয়াবহ রূপ সাতক্ষীরার কৃষ্ণকাটি গ্রামে

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার কৃষ্ণকাটি গ্রামটিতে পানি বাহিত আর্সেনিক রোগের ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার। গত বিশ বছরে এই গ্রামে আর্সেনিক নামক রোগে আক্রান্ত হয়ে একই পরিবারের সাত জন সহ ৫০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানা গিয়েছে।

আর্সেনিকের অভিশাপে অভিশপ্ত হয়ে তালার কৃষ্ণকাটি গ্রামের প্রায় ২ হাজার মানুষ মানবতার জীবনযাপন করলেও নজরে আসেনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। এমনকি বছরের কত জন মানুষ আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তার কোন সঠিক তথ্য দিতে পারেনি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের কর্তাদের কাছে। যদিও প্রশাসনের দাবি, আর্সেনিক প্রবণ এলাকায় তারা সুপেয় পানির ব্যবস্থা করছেন এবং অকেজো ওয়াটার প্লান্ট গুলো চালু করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

সরেজমিনে কৃষ্ণকাটি গিয়ে দেখা যায়, আর্সেনিক নামক নীরব এই ঘাতকটি এই অঞ্চলের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ সাধারন মানুষের গ্রাস করেছে ফেলেছেন ইতিমধ্যে। কৃষ্ণকাটি গ্রামের ২ হাজার লোক সংখ্যার সকল পরিবারের মধ্য  কেই না কেই এই মরণ ব্যাধি আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়েছেন। আর্সেনিক বিষে আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্যগত বিপর্যয়ের মধ্যে নিপতিত হয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন তারা। কিন্তু তাদের রক্ষার জন্য কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না কর্তৃপক্ষ ।
 
জানা গেছে, দীর্ঘ ২০ ধরে বছর কৃষ্ণকাটি গ্রামের মানুষরা আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার অভাবে মানবতার সাথে দিনাতিপাত করছেন। শরীরে আর্সেনিকের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় নানা ধরনের সমস্যায় ভুগছে এখানকার মানুষ। শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুটিগুটি ক্ষত সৃষ্টি হওয়ায় রোদে গিয়ে পরিশ্রম করতে পারেন না এলাকার পুরুষেরা।

আর্সেনিক নিরোধকল্পে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন এনজিও থেকে সুপেয় পানির প্ল্যান্ট করা হলেও সেগুলো দীর্ঘ বছর যাবত অকেজো হয়ে পড়ে আছে। সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ সুপেয় পানির ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে উক্ত গ্রামের প্রতিনিয়ত আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছেন। এলাকার শিশুরাও আর্সেনিক ঝুঁকিতে রয়েছেন অনেকটা। এই এলাকায় নামকাস্থ গভীর নলকূপ থাকলেও আর্সেনিকমুক্ত পানি পাওয়া বেশ দুষ্কর। তাই এক প্রকার নিরুপায় হয়ে আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছেন তারা।

এদিকে, জনস্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সরকারিভাবে ওয়াটার প্লান্ট বসানো হলেও সেটা দীর্ঘদিন যাবত অকেজো হয়ে পড়ে থাকার কারণে সুপ্রিয় পানি হতে বঞ্চিত হতে হচ্ছে তাদের। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর দুই বার টিউবওয়েলের আর্সেনিক পরীক্ষা করার কথা থাকলেও জনস্বাস্থ্য বিভাগ তা করে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

তথ্যমতে, আর্সেনিক আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে বা হাতের তালুতে বাদামি ছাপ পড়া সহ সাধারণত বুকে, পিঠে কিংবা বাহুতে ‘পিগমেনটেশন’ দেখা দেয়। যা পরবর্তীতে ক্যান্সারে রূপ নেয়। সাদা এবং কালো দাগের পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তির জিহ্বা, মাড়ি, ঠোঁট ইত্যাদিতে মিউকাস ব্রন মেলানোসিসও দেখা দেয়। কারও কারও হাতের চামড়া পুরো হয়ে যায়, আঙুল বেঁকে যায় । এছাড়া পায়ের আঙুলের মাথায়ও পচন ধরে। আর্সেনিকের বিষক্রিয়ার অন্যান্য লক্ষণগুলো হচ্ছে- হজমে শক্তি কমে যাওয়া, পেটব্যথা, খাবারে অরুচি, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া ইত্যাদি।

স্থানীয় বাসিন্দা রুমানা বেগম জানান, সর্বপ্রথম কৃষ্ণকাটি গ্রামে তার পরিবারে আর্সেনিক শনাক্ত হয়। আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়ে তার স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের সাতজন সদস্য মারা গেছেন। একই পরিবার থেকে এতগুলো মানুষ আর্সেনিক আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়নি। এলাকায় সুপেয় পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই বাধ্য হয়ে প্রতিনিয়ত তারা পানি নামক বিষ গ্রহণ করছেন। যার ফলশ্রুতিতে প্রতি বছরই এই গ্রামের অনেকের মৃত্যু হচ্ছে। কখন নিজে ও সন্তানরা আর্সেনিকে আক্রান্ত হবেন, সেই শঙ্কায় রয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা জলিল মোড়ল জানান, তার সমস্ত শরীরে আর্সেনিক আছে। তবে কোনো ওষুধ খেয়ে এটা থেকে মুক্তি মেলেনি কারও। তার বাবা-দাদারাও আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। টিউবওয়েলে আর্সেনিক পরীক্ষা করে লাল রং দিয়ে সনাক্ত করে গেলেও সরকার সুপেয় পানির ব্যবস্থা না করায় বাধ্য হয়ে সেই পানি গ্রহণ করতে হচ্ছে।

রুহুল আমীন নামে অপর ব্যক্তি জানান, বর্তমানে কৃষ্ণকাটি এই গ্রামে ৫০-৬০টি পরিবারে আর্সেনিক আক্রান্ত রোগী রয়েছে। তিনি নিজেও একজন আর্সেনিক রোগী। রোদে গিয়ে পরিশ্রম করতে পারেন না, কারণ শরীরের ভেতর জ্বালাপোড়া করে।

নাজমা বেগম নামে এক রোগী জানান, আর্সেনিকে তার স্বামী, ছেলে, দেবর ও শ্বশুর মারা গেছে। দীর্ঘ ২০-২২ বছর নিজেও আর্সেনিক বয়ে বেড়াচ্ছেন। ঢাকায় গিয়ে কেমোথেরাপি দিতে হয়। তবে টাকার অভাবে বহুদিন ঢাকায় যাওয়া হয়নি ও চিকিৎসাও করানো হয়নি তার। সরকারের পক্ষ থেকে যদি এটা রোধে কোনো ব্যবস্থা না করা হয় তাহলে কিছু বছর পরে হয়তো এই গ্রামটি জনশূন্য হয়ে পড়বে।

জালালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মফিদুল হক লিটু জানান,  এই কৃষ্ণকাটি গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটা গওামে আর্সেনিকের ভয়াবহ আকার ধারণ করাসহ দিনদিন এরা মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই এলাকায় একই পরিবারের সাতজন ও  চারজন আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। আর্সেনিক প্রতিকার করার মতো কোনো চিকিৎসা নেই। তাই বাধ্য হয়ে তারা এই ব্যাধি বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন। সাধারণত বিশুদ্ধ পানির অভাবে আর্সেনিকের সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নানান ধরনের ক্ষত সৃষ্টির একটি পর্যায়ে ক্যান্সারে রূপ নিয়ে। আক্রান্ত ব্যক্তি মারা যায়।

তিনি আরও জানান, ইতোপূর্বে অনেকবার কয়েকটি ওয়াটার প্ল্যান্ট তৈরি করা হয়েছে। তবে সেটাতে আর্সেনিক নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। যদি আর্সেনিকমুক্ত ওয়াটার প্ল্যান্ট তৈরি করা সম্ভব হয় তাহলে আর্সেনিকের ভয়াবহতা থেকে মুক্তি পেতে পারেন বলে জানান তিনি।

তালা উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের উপ-প্রকৌশলী মফিজুর রহমান জানান, আর্সেনিক আক্রান্ত এলাকা সহ আশাপাশের এলাকাগুলোতে  অতিদ্রুত পুনরায় আর্সেনিক পরীক্ষা করা হবে। ওই এলাকায় কয়েকটি ওয়াটার প্ল্যান্ট করা থাকলেও সেগুলোর অধিকাংশ অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এ বিষয়টি নিয়ে দ্রুত কাজ করা হবে। ওয়াটার প্ল্যান্টগুলো চালু করে তাদের সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হবে।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. মো.হুসাইন সাফায়াত হোসেন  জানান, আর্সেনিক আক্রান্তদের খুব বেশি ভালো কোনো চিকিৎসা নেই। প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু মেডিসিন তাদের জন্য সাজেস্ট করা হয়। এতে করে আর্সেনিকের প্রবলতা কিছুটা কমে গেলেও সেটি নির্মূল হয় না।আর্সেনিকে আক্রান্ত ব্যক্তির সর্বশেষ পরিণতি হচ্ছে মৃত্যু।এ জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হল প্রথম থেকে আর্সেনিকযুক্ত পানি না খাওয়া, বিশুদ্ধ পানি পান করা। প্রথমদিকে এটা নিয়ে বেশ জনসচেতনতামূলক প্রোগ্রাম করা হয়েছে এবং বিনামূল্যে পানির আর্সেনিক পরীক্ষা করা হয়েছে।তাছাড়া যে পানিটা আমরা পান করি, সেটা বছরে দুই বার শীতের সময় ও বৃষ্টির সময় আর্সেনিক পরীক্ষা করতে হবে।

আর্সেনিক   সাতক্ষীরা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

হাসপাতালের অনুমোদনহীন ক্যান্টিন-ফার্মেসি বন্ধের নির্দেশ

প্রকাশ: ০৬:৩৫ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

সরকারি হাসপাতালের ভেতরে অবৈধভাবে তৈরি করা অনুমোদনহীন ক্যান্টিন, মেয়াদোত্তীর্ণ প্রতিষ্ঠানের (ফার্মেসি) কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। 

শুক্রবার (১০ মে) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই নির্দেশনা দেয়া হয়।

এতে বলা হয়, দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা সদর, জেনারেল হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবস্থিত অবৈধ, অনুমোদনহীন, ইজারা দেয়া মেয়াদোত্তীর্ণ ফার্মেসি, ক্যান্টিন বা ক্যাফেটেরিয়ার কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। তবে সরকারি বকেয়া বা পাওনা থাকলে তা আদায়ের ব্যবস্থা করে নির্দেশনা মানতে হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, সরকারি হাসপাতালের ভেতরে নতুনভাবে কোনো ফার্মেসি, ক্যান্টিন বা ক্যাফেটেরিয়া স্থাপনের অনুমতি প্রদান করা যাবে না। এ ছাড়া ইতোমধ্যে স্থাপিত ফার্মেসি-ক্যান্টিনের অনুমোদন নবায়ন না করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খতিয়ে দেখার নির্দেশ

প্রকাশ: ০১:০৩ পিএম, ০৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা গ্রহণের কারণে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগে বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে এই টিকা যারা নিয়েছেন তাদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কি না, তা খুঁজে দেখতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

বুধবার (৮ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে টিকাদান কর্মসূচিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আয়োজিত সভায় মন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন।

সামন্ত লাল সেন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। কিছু দেশে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গেছে। আমরাও যেহেতু অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা গ্রহণ করেছি, আমাদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কি না, তা খুঁজে দেখতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। 


স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন   অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে জেনে নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ: ০৯:২৬ এএম, ০৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তস্বল্পতাজনিত দুরারোগ্য ব্যাধি। এ রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশে এই রোগের জিন বাহকের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। বাহকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। বাহকে-বাহকে বিয়ে হলে দম্পতির সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিধায় বিয়ের আগে এই রোগের জিন বাহক কি না তা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

বুধবার (৮ মে) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এই আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্য খাতে ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা সক্ষম হব, ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এবং জনসাধারণকে সুলভে মানসম্মত স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার কল্যাণ (এইচএনপি) সেবা দেওয়ার মাধ্যমে একটি সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। আমরা একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করে যুগোপযোগী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন নতুন হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে হাসপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধিসহ চিকিৎসক, নার্স, সাপোর্ট স্টাফের সংখ্যাও বৃদ্ধি করেছি। গ্রামপর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারা দেশে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ফ্রি স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ ও পুষ্টি সেবা দেওয়া হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা চালু করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে গত ১৫ বছরে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ মাতৃমৃত্যু, নবজাতকের মৃত্যু ও অনূর্ধ্ব ৫ বছর বয়সী শিশুমৃত্যু হার, অপুষ্টি, খর্বতা, কম ওজন ইত্যাদি হ্রাসে ক্রমাগত উন্নতি হচ্ছে। সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এমডিজি লক্ষ্য অর্জনে অসাধারণ সফলতা দেখিয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টগুলো (এসডিজি) অর্জনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।


প্রধানমন্ত্রী   থ্যালাসেমিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান

প্রকাশ: ০৮:০৬ এএম, ০৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সমাজের সচেতন নাগরিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

বুধবার (৮ মে) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি এবং অনেক ক্ষেত্রেই তা জটিল আকার ধারণ করতে পারে। তাই এ রোগ প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই। থ্যালাসেমিয়া বিস্তার রোধে বাহকদের এবং আত্মীয়ের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ককে নিরুৎসাহিত করতে হবে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রে সন্তান ধারণের পর প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। 

বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি কর্তৃক ‘বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস’ উদযাপনের উদ্যোগকে রাষ্ট্রপতি স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘সবাই মিলে থ্যালাসেমিয়া মুক্ত বাংলাদেশ গড়ব-এটাই হোক এবারের বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবসের অঙ্গীকার।’

তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়া একটি জিনবাহিত রোগ যা বাহকের মাধ্যমে ছড়ায়। স্বামী-স্ত্রী উভয়ই থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক হলে সন্তানদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে থ্যালাসেমিয়া জিনবাহক নারী-পুরুষের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়ে থাকে। এজন্য বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আগেই পরীক্ষার মাধ্যমে পুরুষ বা নারী কেউ এ রোগের বাহক কিনা তা নির্ণয় করা জরুরি। এছাড়া রক্তস্বল্পতাজনিত ভয়াবহ এ রোগটি প্রতিরোধে জনসচেতনতা গড়ে তোলাও প্রয়োজন।  

রাষ্ট্রপতি ‘বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।


রাষ্ট্রপতি   মো. সাহাবুদ্দিন   থ্যালাসেমিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

চিকিৎসাসেবা খাতে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ৬৫ শতাংশ অভিযোগ

প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

গত পাঁচ বছরে চিকিৎসাসেবা খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের ৩৫ শতাংশ নিষ্পত্তি করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। অন্যদিকে ৬৫ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।

কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

অভিযোগ নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রতার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহে ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।

আরও পড়ুন: অসুস্থতা নিয়েও পুরুষের তুলনায় বেশিদিন বাঁচে নারী: গবেষণা

বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে চিকিৎসাসেবাসংক্রান্ত ৬৬টি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ সময় নিষ্পত্তি হয়েছে ২৩টি অভিযোগ। সে হিসাবে ৩৫ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে। নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে ৪৩টি অভিযোগ, যা মোট অভিযোগের ৬৫ শতাংশ।

এর মধ্যে ২০২৩ সালে চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত ২৫টি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে মানবাধিকার কমিশন, যা গত পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ। চলতি বছরের ৩১ মার্চ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে ২০২৩ সালের (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) বার্ষিক প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।

এদিকে ২০২৩ সালের ২৫টি অভিযোগের মধ্যে ভুক্তভোগী কর্তৃক দায়ের করা অভিযোগ দুটি।

অন্যদিকে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমটো) হয়ে গ্রহণ করা অভিযোগের সংখ্যা ২৩, যা এ সময় কমিশন কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন সুয়োমটো অভিযোগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ। ভুক্তভোগীদের দায়ের করা দুটি অভিযোগ নিষ্পত্তি হলেও কমিশন কর্তৃক গৃহীত ২৩টি অভিযোগের মধ্যে মাত্র তিনটি অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে।

নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে আরও ২০টি অভিযোগ। সে হিসাবে গত বছর চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত অভিযোগের ৮০ শতাংশ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।

এদিকে, ২০২০ সালে করোনাকালীন সর্বনিম্ন দুটি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে কমিশন।

এর মধ্যে একটি অভিযোগ জমা পড়ে আর কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দায়ের করে অন্যটি। ওই বছর কোনো অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়নি।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯-এর ধারা ১২ অনুযায়ী, দেশের নাগরিকরা কমিশনে চিকিৎসাসেবা খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবা খাতের অব্যবস্থাপনার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এসবের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করে সংস্থাটি। প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে কমিশন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। প্রতিবেদন পাওয়ার পর কোন কোন ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হয়েছেন তার গুরুত্ব বিবেচনা করে উচ্চ আদালতে রিট করে কমিশন।

আরও পড়ুন: করোনা টিকা ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

চিকিৎসাসেবা খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহের ঘাটতিকে দায়ী করছেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘যেসব অভিযোগ কমিশনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা পড়েছে, সেগুলো নিষ্পত্তির জন্য আমরা নিয়মিত তাগিদ দিয়ে থাকি। চিকিৎসাসেবা খাতের অভিযোগগুলো নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আরো বেশি আগ্রহী হতে হবে।’

এ খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে কমিশন অনেক ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসাসেবা নিতে এসে অনিয়মের শিকার রোগীদের অভিযোগ জমা পড়তে পড়তে পাহাড় হয়েছে। আবার ভুল চিকিৎসা, সেবা নিতে গিয়ে অনিয়মের শিকার হয়েছেন এমন অভিযোগও অনেক। স্বাস্থ্যসেবার প্রকৃত চিত্র শিগগিরই পরিসংখ্যানের মাধ্যমে তুলে ধরবে কমিশন। এরপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘জনসাধারণকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে মনে করে কমিশন। গত বছর আমরা জরায়ু ক্যান্সারের ভুয়া ভ্যাকসিন, হাসপাতালের শয্যা নিয়ে বাণিজ্য, ওষুধের মোড়ক পরিবর্তন করে বিদেশি ওষুধ বলে বিক্রি, অনুমোদন ছাড়া ক্লিনিক এবং বেসরকারি হাসপাতাল বন্ধে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে আইনের সীমাবদ্ধতার কারণে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে পারে না কমিশন। এ জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে কার্যকর ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে প্যারিস নীতিমালার আলোকে আইনের সংশোধন জরুরি।’


চিকিৎসাসেবা   জাতীয় মানবাধিকার কমিশন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন