ইনসাইড থট

ভারতের চিকিৎসা ভিসা এড়াতে স্বাস্থ্যখাতে আমাদের করণীয়


Thumbnail ভারতের চিকিৎসা ভিসা এড়াতে স্বাস্থ্যখাতে আমাদের করণীয়

আমার এক নিকট আত্মীয় পিঠে ও কোমর ব্যথায় অতিষ্ঠ হয়ে ভারত যেতে চাইছে। সে জানে চেন্নাইতে আমার এক চিকিৎসক বন্ধু পল টি হেনরি নিউরো সার্জারিতে বেশ নাম করেছে। আমি তার সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিলাম। পলের সাথে আমার নিজেরও একটা প্রতিশ্রুতি ছিল একবার তার ওখানে যাবো। সে যুক্তরাষ্ট্রের ‘হেনরি ফোর্ড হেলথ সিস্টেমে’র সাথে সমন্বয় করে সেখানে একটি অলাভজনক হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে। পল হেনরির অনুরোধে আমিও সেই আত্মীয়ের সাথে যেতে মনস্থ করলাম। খুশিতে আত্মহারা পল আমন্ত্রণপত্র মেইল করে লিখলো, ‘বি মাই গেস্ট ডিয়ার’! 

পলের দেয়া সকল কাগজপত্র নিয়ে আমি ট্যুরিষ্ট ভিসা ও আমার সেই আত্মীয় মেডিক্যাল চেক-আপের জন্যে ভারতীয় ভিসা সেন্টারে ভিসার জন্যে আবেদন করি। শত শত লোকের ভিড় ঠেলে আমাদের সেই আবেদন জমা দিতে সময় লেগেছে প্রায় ৪ঘন্টা। ভিড় ঠেলে বাইরে এসে জমা স্লিপে দেখি ভিসা ডেলিভারি হবে ২২দিন পরে! আবার ভিড় ঠেলে অনুসন্ধান কাউন্টারে গিয়ে জানালাম এই ভিসা আরও আগে পাওয়া দরকার কারণ যিনি অসুস্থ তার জন্যে এই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করা কঠিন হবে। সেখানকার স্টাফ জানালেন ই-মেইল করতে হবে হাই কমিশনে।

আমি বাসায় ফিরেই আনুমানিক ৩টার দিকে সেই আত্মীয়ের পক্ষে ই-মেইল করলাম বিস্তারিত জানিয়ে। কোন উত্তর আজও পর্যন্ত আসেনি। না কোন প্রাপ্তি স্বীকার না কোন প্রতিউত্তর। একটি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সৌজন্য ও পেশাদারিত্ব সম্পর্কে আমার মনে সন্দেহ তৈরি হলে আমি তাদের ফোন করার উদ্যোগ নিলাম। একে একে সব কর্মকর্তাদের ফোন করলেও কেউ কখনও ফোন ধরেনি। তাহলে এদের ফোন কি সব নষ্ট! আমি সরাসরি হাই কমিশনারের নাম্বারে কল দিলাম। এক ভদ্রলোক ধরলেন ও সব শুনে বললেন আমি যেন ই-মেইলে সব জানাই। এছাড়া তার আর কিছু বলার নেই।

আবার ই-মেইল! শুনে আমার ডাক্তার বন্ধু পল হেনরিও সাথে সাথে ই-মেইল করেছে। কয়েকদিন যাবত আমরা চেষ্টা করলাম যেন দ্রুত ভিসা পাওয়া যায় বা ভিসা ছাড়াই যেন পাসপোর্ট দিয়ে দেয় যাতে অসুস্থ মানুষটি অন্য কোন দেশে যেয়ে চিকিৎসা নিতে পারে। শেষে সাংবাদিক বন্ধু, আমলা বন্ধু, পররাষ্ট্রের পরিচিতজন, সাবেক ভারতীয় এক ডেপুটি হাই কমিশনার, দিল্লীতে তাদের পররাষ্ট্র দপ্তরের পরিচিতজন সকলের মাধ্যমে ধরনা দিয়েও কোন কাজ হলো না। ছয়দিন পরে তারা ফোন করে জানালো এসে পাসপোর্ট নিয়ে যান। আমি সাথে সাথে গেলে পাসপোর্ট দিয়েছে কিন্তু সেই আত্মীয়েরটা দেয় নাই। তাকেই আসতে হবে। সে তো অসুস্থ, নড়তে পারে না, বলেছে তার স্ত্রী বা বাবা-মা আসতে পারে! আমি নিকটাত্মীয়, তার চিকিৎসার জন্যে টিকেট পর্যন্ত কাটা কিন্তু তাদের হৃদয় গলে নাই। উল্টো হাই কমিশনে কাকে বা কেন মেইল করেছিলাম ইত্যাদি প্রশ্নবাণে জর্জরিত হলাম। বলেছি তার নাম্বারে কল করে ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই করে পাসপোর্ট দিন। কানেই নিলো না!

ফিরতে ফিরতে ভাবলাম ভারতীয় দূতাবাস বা তাঁদের কর্মকর্তারা তো এমন ছিল না। বাংলাদেশের প্রতি এমন কৌশলে কেন তারা গেল! আমি সরকারের মেধাবৃত্তি পেয়ে ১৯৮৪ সালে ভারতে (যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়) স্নাতকোত্তর থিসিস করতে গিয়েছি। সে দেশের বহু স্বনামধন্য মানুষ আমার পরিচিত। আমি দুই বাংলার সাংস্কৃতিক বিনিময় পরিষদের উদ্যোক্তা-আহবায়ক ছিলাম টানা ৫ পছর (১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত)। এই জীবনে শতাধিকবার ভারতে গেছি। আমার জন্যে চেন্নাই থেকে চিকিৎসক মেইল করেছে। দিল্লিতে তাদের পররাষ্ট্রের আমার যারা বন্ধু তাঁরা সুপারিশ করেছে। আগের ডেপুটি হাই কমিশনার বিশ্বদ্বীপ দে (এখন মুম্বাইতে এটমিক এনার্জিতে আছেন) বলেছেন কিন্তু তারা সামান্য সৌজন্য দেখায়নি। এটা কষ্টকর ও নাগরিক হিসেবে অপমানজনক। একজন মুমূর্ষু মানুষকেও নিজে যেয়ে কয়েক শো মানুষের লাইনে দাঁড়িয়ে পাসপোর্ট জমা দিতে হবে, এম্বুলেন্সে করে হলেও নিজে যেয়ে পাসপোর্ট নিয়ে আসতে হবে – এসব কটু কথা আমাদের দুই দেশের বন্ধুত্ব ও সম্পর্কের জন্যে ক্ষতিকর। মেডিক্যাল এথিক্স ও কূটনীতির ব্যবস্থাপনা যে এক নয়, এটা আর যাই হোক ভারত বা এই দূতাবাস সেটা বুঝে না।

বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। ভারতের চেয়ে আমাদের উন্নতি কোন অংশে কম নয়। আমাদের স্বাস্থ্য খাতের উন্নতির প্রশংসা খোদ অমর্ত্য সেনও করেছেন। অপরদিকে আমরা এই দেশের স্বাস্থ্য খাতে একটি সাংস্কৃতিক দৈন্য তৈরি করে রেখেছি। ওবায়দুল কাদের সাহেব যখন গুরুতর অসুস্থ হলেন আমাদের দেশের চিকিৎসকগণ তার জন্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন ও তাঁকে যথাসম্ভব জরুরি ব্যবস্থাপনা দিতে পেরেছেন। কিন্তু আমরা ভারত থেকে ভাড়া করা বিমানে দেবি শেঠিকে নিয়ে এলাম, তিনি এসে জানালেন সব চিকিৎসা যথাযথ হয়েছে। এই সনদপত্রের কি আমাদের খুব জরুরি ছিল? আমরা তো ওবায়দুল কাদের সাহেবকে আরও উন্নততর চিকিৎসার জন্যে সিঙ্গাপুরে পাঠালাম, ভারতে নয়। কিন্তু দেশের মানুষের কাছে কী বার্তা গেল? দেশের মানুষ আমাদের চিকিৎসক সমাজের প্রতি একটি অনাস্থা ও অবিশ্বাসের বার্তা পেলো- যতই যা হোক, ভারতের ডাক্তার না দেখালে আমরা সন্তুষ্ট হ’তে পারছি না।

ভারতের তুলনায় আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা মোটেই দুর্বল নয়। দুর্বলতা হলো আমাদের মনের মধ্যে আর অন্যতম দু’টি দুর্বলতা হলো আমাদের চিকিৎসক সমাজের ধারাবাহিক চিকিৎসা পড়াশুনার (CME – Continuing Medical Education) ঘাটতি। আর এর সাথে আছে গবেষণার ব্যাপক দুর্বলতা। ভারতের চিকিৎসায় গবেষণার বালাই নেই। এরা যে কাজটা করেছে তা হলো প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় উন্নত দেশের গবেষণা ফলাফল দৃশ্যমান অনুকরণ আর কাউন্সেলিং-কে রিচুয়াল বা ধর্মের সাথে মিশিয়ে সেবাকে বড় করে দেখানো। এটা সাংস্কৃতিক নৃতত্ত্বের কাজ, এরা স্বাস্থ্য ব্যবসায় এই কৌশল নিখুঁতভাবে মেশাতে পেরেছে ফলে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন চিকিৎসাপ্রার্থী খুব সহজেই ভারতীয়দের এই সেবায় আকৃষ্ট হয়ে তাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পরমজ্ঞান বা আরাধ্য করে ফেলেছেন।

আমরা কখনও হিসাব করে দেখিনি বছরে আমরা আমাদের কী পরিমাণ কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ভারতে খরচ করি। চিকিৎসা সেবা ও তীর্থ ভ্রমণ এক করে ভারতে যাবার যে পারিবারিক পরিকল্পনা আমরা করি তা অসম ও বাংলাদেশে পর্যটক আকর্ষণ করার তুলনায় নিতান্তই ক্ষীণ। বিশেষ করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ভারতের তুলনায় আমাদের উন্নততর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা মোটেই কঠিন নয় যদি আমরাও সেবা সহনশীল হয়ে একে সংবিধানের মৌলিক অধিকারের অন্যতম কর্তব্য মনে করে নেই। এটাও মনে রাখতে হবে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন শুধু সরকারের নয় জনগণেরও। আমরা বেসরকারি স্বাস্থ্য খাতে যেসব বিনিয়োগ করি তা খুবই অপরিকল্পিত ও রোগ-ব্যাধি নির্ভর নয়। আমরা দ্রুত মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে জেলা উপজেলায় অগণিত ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে বসেছি তা অনুমোদিত হোক বা না হোক, লক্ষ্য হলো মানুষ। অথচ চিকিৎসা ব্যবস্থায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল রোগ যেন তা মানুষ বা সমাজ বা পরিবেশের এমনকি অন্যান্য প্রাণিকুলের জীবনেও যেন অসুখ নিয়ে না আসে, যেন সবাই নিরোগ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করতে পারে। এই ইনক্লুসিভ বা সমেত প্রতিরোধ চিন্তা আমাদের এখন জরুরি। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্কট যেন কখনও প্রকট হয়ে আমাদের উন্নয়ন অর্থনীতিকে হুমকি না দেয় সে কারণেও আমাদের এই নাগরিক কর্তব্য বোধ জরুরি।

আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্যে এখন অতি আবশ্যক হলো রোগ প্রতিরোধ ও রোগ নির্ণয়ে জোর দেয়া। কোভিড সঙ্কটে দেখা গেছে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক কেন্দ্রগুলো ফাঁকা, ডাক্তার সাহেবদের চেম্বার যেগুলো রাত ১টা ২টা পর্যন্ত রোগী দেখতো সেখানে কেউ নেই! কিন্তু দেশে মৃত্যুর বন্যা বয়ে যায়নি। ভারতে এতো পরিচিত সুন্দর স্বাস্থ্যব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও সে সময়ে রাস্তা ঘাটে মানুষের মৃতদেহ পড়ে থাকার বীভৎস ছবি আমরা দেখেছি। আমাদের দেশের মানুষের মনোবল, আমাদের সামাজিক সাহস ও রোগ প্রতিরোধে সম্মিলিত চেষ্টা সে সময়ে প্রমাণিত হয়ে গেছে। তাহলে শুধু চিকিৎসার দ্বিতীয় মতের জন্যে আমাদের কেন ভারতে যেতে হবে?

আরও একটি বিষয় আমাদের ভালো করে বুঝা দরকার মানুষ কিন্তু অসুস্থ হয় বাড়িতে, হাসপাতালে নয়। কিন্তু আমরা এতো হাসপাতাল বানাচ্ছি কেন? আমাদের বানাতে হবে প্রান্তিক পর্যায়ের আধুনিক রোগ নির্ণয় কেন্দ্র যার একটি মডেল ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ ধারণ করতে পারে। এই ব্যবস্থায় গ্রামের যে কোন মানুষ সামান্য খরচে তার অসুখের পরামর্শ পেতে পারে ও ধীরে ধীরে রোগের মাত্রা বুঝে সে গ্রাম থেকে ইউনিয়নে, ইউনিয়ন থেকে উপজেলা-জেলা ও বিভাগীয় শহরে যেতে পারে। কিন্তু কাজটা শুরু হ’তে হবে বাড়ী থেকেই। আমি আমার রামপাল স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্পের কাজে লক্ষ্য করেছি ১০০জন গ্রামবাসীর স্বাস্থ্যগত অসুবিধা যাচাই করে যদি যথাযথ নির্ণয় সেবা দেয়া যায় ধাপে ধাপে বিভাগীয় শহরে বা তৃতীয় প্রশাখা (টারশিয়ারী) স্তরের চিকিৎসার জন্যে গ্রামগুলো থেকে যাবার উপযুক্ত হন মাত্র ৬জন। বাকী ৯৪জনের চিকিৎসা বাড়িতে বা স্থানীয় স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে দেয়া সম্ভব। কিন্তু শহরের চাকচিক্যময় ডায়াগনস্টিক কেন্দ্রগুলো সেবা প্রত্যাশীদের উঁচু দাম নিয়েও হিমশিম খাচ্ছে, ভিড়ের জন্যে সেসবের বারান্দায় হাঁটাচলাও দায়।

আর বাড়িতে রেখে চিকিৎসার জন্যে যুক্ত হ’তে পারে ভার্চুয়াল কেয়ার বা দূরসেবা যা মাইক্রোসফটের সহায়তায় আমি আমার প্রকল্পে নিরাপদ করতে পেরেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্যে এই এক বিশাল সুযোগ। প্রতি গ্রামে যদি একজনও স্বাস্থ্য কর্মী থাকে তার হাতে একটি স্মার্ট ফোন থাকলেই যথেষ্ট। গ্রামের মানুষ যে কোন প্রয়োজনে ওই কর্মীর কাছে যাবে বা তাঁকে বাড়ি ডেকে নেবে। সেই কর্মী সব শুনে, সব তথ্য ফোনের মাধ্যমে চিকিৎসা কেন্দ্রে বা চিকিৎসকের কাছে পাঠিয়ে ভিডিওতে কথা বলতা পারে। বড় শহরে যাওয়া আসার খরচ ও ব্যয়ের চিন্তা বাদেও যদি এই কর্মীকে সেবা পেয়ে সামান্য সম্মানী দেয়া হয় তাতে গ্রামে গ্রামে অন্তত একজন মানুষের কর্মসংস্থান হয়। কেন আমরা মানুষের কাছে সেবা নিয়ে যাবার এই চিন্তা করছি না জানিনা, নাকি একটি ‘চিকিৎসা কূটনীতি’র চক্র আমাদের যেতে দিচ্ছে না তা নিয়ে সকলের ভাবা উচিত। 


পরিচালক, আমাদের গ্রাম গবেষণা প্রকল্প 
ই-মেইল: rezasalimag@gmail.com


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশী জনগণের জন্য ‘আলোক বর্তিকা’


Thumbnail

সাম্প্রতি ‘‘১৭ মে ১৯৮১, তোমার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ এর সূচনা, ১৭ মে ২০২৩, কমিউনিটি ক্লিনিক: ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ দিলো নতুন মর্যাদা’’ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর। বৈঠক ডা. কাইয়ুম তালুকদার যে আলোচনা করেছেন তাঁর চুম্বক অংশ প্রকাশ করা হলো।

সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিতে বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক অভাবনীয়, অনন্য এবং যুগান্তকারী একটি মডেল। শিশু স্বাস্থ্য, মাতৃ স্বাস্থ্য এবং কিশোরীদের স্বাস্থ্য পরিসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি একটি অসাধারণ উদ্যোগ। নবজাতকের মৃত্যু, মাতৃ মৃত্যু কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনুসরণ শুরু করেছে। গত বছর ১৭ মে কমিউনিটি ক্লিনিক ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিসিয়েটিভ’ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়। ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ সারা বিশ্বের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশী জনগণের জন্য ‘আলোক বর্তিকা’। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ এর প্রবক্তা। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা উন্নয়ন কৌশল জাতির পিতার ভাবনা থেকেই উৎসারিত। অল্প সময়ের মধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রান্তিক সুবিধা বঞ্চিত মানুষের আপন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে জনগণের বিপুল সমর্থনে আবার সরকার গঠন করেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। ভবিষ্যতে আর কোন অপশক্তি যেন কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ করতে না পারে সেজন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এই প্রতিষ্ঠানের সাথে জনগণকে সম্পৃক্ত করেন। বর্তমানে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে নির্মিত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবার ‘বাতিঘর’ এই প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে জনগণ জমি দিচ্ছেন, সরকার ভবন করে দিচ্ছেন। কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রমের পুরোটাই পরিচালিত হচ্ছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ মানেই স্মার্ট উদ্যোগ। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার উদ্ভাবন মানেই জনবান্ধব কর্মসূচি। কমিউনিটি ক্লিনিক পাল্টে দিচ্ছে গ্রামীণ জনপদ। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে কমিউনিটি ক্লিনিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বিশ্ববাসী আজ শেখ হাসিনাকে গুরুত্ব না দিয়ে পারে না


Thumbnail

সাম্প্রতি ‘‘১৭ মে ১৯৮১, তোমার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ এর সূচনা, ১৭ মে ২০২৩, কমিউনিটি ক্লিনিক: ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ দিলো নতুন মর্যাদা’’ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর। বৈঠক ফরিদা ইয়াসমিন, এমপি যে আলোচনা করেছেন তাঁর চুম্বক অংশ প্রকাশ করা হলো।

আজকে আমরা ১৭ মে নিয়ে কথা বলছি। যেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। আবার গত বছর এই দিনে তাঁর চিন্তা প্রসূত কমিউনিটি ক্লিনিককে জাতিসংঘ ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আজকে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছি, উন্নয়নশীল বাংলাদেশের কথা বলছি, যে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি, একদিন উন্নত বাংলাদেশ হব বলে স্বপ্ন দেখছি এই সবকিছু শেখ হাসিনার স্বপ্ন, শেখ হাসিনার ইনিশিয়েটিভ। বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা স্মরণ করতে চাই সে দিনটি যেদিন শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এলেন। সমগ্র বাঙালীর আনন্দিত উদ্বেলিত অপেক্ষার দিন। সমস্ত কিছু উপেক্ষা করে মানুষ বঙ্গবন্ধু কন্যাকে স্বাগত জানিয়েছে সেদিন। সেদিন তিনি দেশে আসার পর ৩২ নম্বরে ঢুকতে পারেননি। তিনি চেয়েছিলেন একটি মিলাদ করবেন, নিজের বাড়িতে ঢুকবেন কিন্তু সেটি তিনি পারেননি। তাকে রাস্তায় বসে মিলাদ পড়াতে হয়েছে। তার ওপর এত জুলুম বাধা বিপত্তি সব কিছু পেরিয়ে আজকে তিনি বাংলাদেশের শুধু রাষ্ট্রনায়ক না, তিনি সারা বিশ্বের একজন নেতা হিসেবে পরিণত হয়েছেন। বিশ্ববাসী আজ শেখ হাসিনাকে গুরুত্ব না দিয়ে পারে না। বাংলাদেশের একজন প্রধানমন্ত্রীকে সেরকম গুরুত্ব না দিলেও পারত কিন্তু তারা শেখ হাসিনাকে উপেক্ষা করতে পারেন না। কারণ তিনি শেখ হাসিনা। তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা। তাঁর যে স্বপ্ন, তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন সেটি সকলের কাছে একটি বিস্ময়। আজকে পাকিস্তানিরা বলে আমাদেরকে বাংলাদেশ বানিয়ে দাও। 

ছিয়ানব্বইয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেই শেখ হাসিনা জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেন। কমিউনিটি ক্লিনিক এর মত একটি উদ্যোগ এটি কেউ চিন্তাও করেননি। এটা একেবারে শেখ হাসিনার চিন্তাপ্রসূত। কিন্তু সরকারের পালা বদল হবার সাথে সাথে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসেছে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দিলেন। কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ হওয়ার ফলে আবার জনগণের স্বাস্থ্যসেবা মুখ থুবড়ে পড়ে। বিভিন্ন জায়গায় কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো একেবারে ভূতড়ে বাড়ির মত হয়ে গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী পরের বার ক্ষমতায় এসে সেই ক্লিনিকগুলো আবার চালু করেন। জাতিসংঘ এটিকে মডেল হিসেবে নিয়েছে এবং ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার সেটি বন্ধ করে দিয়েছিল। আজকের দিনে এসে বুঝা যায় যে এটি আসলে কতটা ইনোভেশন ছিল। শেখ হাসিনার এই উদ্যোগ আজ অন্যান্য দেশ অনুসরণ করতে চায়। 


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

১৮ কোটি মানুষের ঠিকানা জননেত্রী শেখ হাসিনা


Thumbnail

সাম্প্রতি ‘‘১৭ মে ১৯৮১, তোমার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ এর সূচনা, ১৭ মে ২০২৩, কমিউনিটি ক্লিনিক: ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ দিলো নতুন মর্যাদা’’ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর। বৈঠক অধ্যাপক ডা. নুরুল হুদা লেনিন যে আলোচনা করেছেন তাঁর চুম্বক অংশ প্রকাশ করা হলো।

১৭৮১ সালে পলাশি যুদ্ধে ইতিহাসের ঘৃণিত সেনাপতি মির্জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাব সিরাজ উদ্দৌলার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ২০০ বছরের গোলামী আমাদের ললাটে এসেছিল। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হলেও বাঙালী এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা পায়নি। যার পটভূমিতে বীরদর্পে আবির্ভূত হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ থেকে ৭৫’ বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে স্বাধীনতার লাল পতাকা উড়েছিল বাঙালী আশায় বুক বেধেছিল। কিন্তু বাংলার নব্য মির্জাফরেরা জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার চেতনাকে ভুলুন্ঠিত করেছিল। ভাগ্যক্রমে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা বিদেশে থাকার কারণে জীবনে বেচে যান। কোন অন্যায় না করেও পিতার অসাধারণ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত স্বাধীন বাংলাদেশে আসতে তাকে বাধা দেওয়া হয়েছিল। সামরিক শাসক এবং শাসনের কারণে বরণ করতে হয়েছিল নির্বাসিত জীবন। দেশের আপামর জনগণ, আবাল-বৃদ্ধা-বণিতা শেখ হাসিনার এই অকৃত্রিম ভালোবাসাকে হৃদয়ের বেরোমিটার দিয়ে মাপতে পারে তাকে বাংলায় রুখবে কে। তাইতো ঐক্যের প্রতীক হয়ে বাঙালির ভাগ্যাকাশে জ্বলজ্বলে স্বধীনতার সূর্য হাতে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরেছিলেন শেখ হাসিনা নামের একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। যার আলোর বিচ্ছরণ ঘটাচ্ছে ১৮ কোটি মানুষের প্রতিটি হৃদয়ে। বাঙালির ভাগ্য উন্নয়নের চাকা এখন সঠিক পথে সঠিক গন্তব্যের দিকে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ধাবমান। 

১৯৮১ সালের ১৭ মে যেদিন তিনি বাংলার মাটিতে পা রাখেন সেদিন তার পথ ছিল অনেকটা কন্টকাকীর্ণ। নিজের বাড়ি, নিজের পিতার বাড়িতে একজন সাধারণ নাগরিকেরও প্রবেশের অধিকার থাকে। কিন্তু শেখ হাসিনার সেই অধিকার খর্ব করা হয়েছিল। ১৯৮১ সালের ১৭ মে, দেশের মাটিতে পা রাখার পর শেখ হাসিনার হৃদয়ের টেবিলে দু’টি ফাইল ছিল। দু’টি ফাইলের একটি ছিল ৭৫ এর ১৫ আগস্ট পিতা-মাতাসহ স্বজন হারানো মমগাথা ও তাঁর বিচার প্রসঙ্গ। অন্যটি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ তথা বাঙালী জাতির ভাগ্য উন্নয়ন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে যদি জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে না ফিরতেন, তবে বাঙালি জাতির ভাগ্য কখনো আলোর মুখ দেখতো না। তলিয়ে থাকতো অটল অন্ধকারে। তাইতো বাংলার মানুষ সবাই ধারণ করে একটি শ্লোগান, ‘১৮ কোটি মানুষের ঠিকানা, জননেত্রী শেখ হাসিনা।’  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বদলে যাওয়ার বাংলাদেশের কারিগরি শেখ হাসিনা


Thumbnail

সাম্প্রতি ‘‘১৭ মে ১৯৮১, তোমার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ এর সূচনা, ১৭ মে ২০২৩, কমিউনিটি ক্লিনিক: ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ দিলো নতুন মর্যাদা’’ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর। বৈঠক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ যে আলোচনা করেছেন তাঁর চুম্বক অংশ প্রকাশ করা হলো।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বিয়োগান্তের ঘটনায় জাতি ছিল দিক নির্দেশনাহীন। নারকীয় এই ঘটনায় জনগণ হয়ে পড়েন দিশেহারা। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করার কোন শক্তি সাহস ছিল না। দলের অনেক বড় বড় নেতাও ছিলেন কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ধানমন্ডির ৩২ বাড়ি ছিল কবরের নীরবতা। সমগ্র জাতি তখন অন্ধকারে। সামরিক বুটে পিষ্ঠ গণতন্ত্র। নির্বাসনে সংবিধান আর মানুষের মৌলিক অধিকার। বাক স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। এমনকি বঙ্গবন্ধু নাম উচ্চারণ ছিল নিষিদ্ধ। 

তৎকালীন রেডিও, টেলিভিশন কোথাও বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করতে দেওয়া হত না। দেশকে টেলে দেওয়া হয়েছিল উল্টোপথে। ১৯৭১ সালে যে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল ১৯৭৫ এসে সেই বাংলাদেশ হারিয়ে গিয়েছিল। সারা দেশে শুধু তখন হতাশ আর নাভিশ্বাস অবস্থা। এর প্রায় ৬ বছর পর নির্বাসনে থাকার জননেত্রী শেখ হাসিনা জীবনের পরোয়া না করে ভয় ভীতি উপেক্ষা করে অনেক ঝুকি নিয়ে পরিবারের সদস্যদের বিদেশের মাটিতে রেখে সেই ১৯৮১ সালের ১৭ মে পদাপণ করেন বাংলার মাটিতে। তিনি যখন দেশে এসেছিলেন তখন অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণ হয়। 

আমার এখনো স্পষ্ট মনে আছে লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ তাকে পেয়ে আনন্দিত উদ্বেলিত ছিলেন। তিনি এসেছিলেন এক আলোক বতিতা, আলোর ফেরিয়াওলা হয়ে। তিনি হয়ে উঠেন সকলের আশা আকাঙ্ক্ষা প্রতীক। বিশ্বস্ততার ঠিকানা। শাসক গোষ্ঠীর ভিত তখন কেপে উঠেছিল। দেশে আসার পর জননেত্রী শেখ হাসিনার চলার পথ সহজ ছিল না। মসৃণ ছিলো না। কিন্তু তিনি সমস্ত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে তার মেধা, দক্ষতা, সততা, নিষ্ঠা, যোগ্যতা, প্রজ্ঞা, সৃজনশীলতা উদার গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি আর দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল আর আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। জনগণ ফিরে পায় তার সব ধরনের অধিকার। আল্লাহ অশেষ রহমত শেখ হাসিনার মতা আমরা একজন নেত্রী পেয়েছি। বঙ্গবন্ধু বানিয়েছেন বাংলাদেশ আর শেখ হাসিনা বানিয়েছেন বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। যত দিন থাকবে শেখ হাসিনার হাতে দেশ পথ হারাবে না বাংলাদেশ।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের বিস্ময়


Thumbnail

সাম্প্রতি ‘‘১৭ মে ১৯৮১, তোমার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ এর সূচনা, ১৭ মে ২০২৩, কমিউনিটি ক্লিনিক: ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ দিলো নতুন মর্যাদা’’ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর। বৈঠক অধ্যাপক ডা. নাহিদ ফেরদৌসী যে আলোচনা করেছেন তাঁর চুম্বক অংশ প্রকাশ করা হলো।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের মৌলিক চরিত্রকেই বদলে ফেলা হয়। বিশেষ করে পাকিস্তানি ধারায় সামরিক শাসনের সংস্কৃতির প্রবর্তন ঘটে দেশে। সাম্প্রদায়িকতা ফিরে আসে রাজনীতি, প্রশাসন, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে। একের পর এক স্বপ্নভঙ্গের ঘটনা ঘটতে থাকে দেশে। বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার। ঠিক এমন প্রতিকূল সময় ১৯৮১ সালের ১৭ মে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর রক্তস্নাত মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন বাঙালির মুক্তির মহানায়কের যোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনা। তার স্বদেশে ফেরার ওইদিন রাজধানী ঢাকা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। তুমুল বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে একনজর দেখার জন্য বিমানবন্দর থেকে শেরেবাংলা নগর এলাকাজুড়ে ছিল মানুষের ঢল। শেখ হাসিনা - সেদিন বাংলার মাটিতে ফিরে এসেছেন কোটি বাঙালির আশার প্রদীপ হয়ে - বাঙালি জাতিকে আলোর ঠিকানায় পৌছে দিতে। সেদিন বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে সারা দেশ থেকে আসা লাখ মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হন বঙ্গবন্ধু কন্যা। জনসমুদ্রে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের মাধ্যমে পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার শপথ নেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।

জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার সাহসী ভূমিকা রেখে চলেছেন। তিনি ফিরে আসার পর আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ফিরে পেয়েছি। দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ এর সূচনা হয়েছে। ছিয়ানব্বইয়ে সরকার গঠন করে তিনি ‘দায়মুক্তি অধ্যাদেশ বাতিল আইন, ১৯৯৬’ সংসদে পাশ করে জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের ঘাতকদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করান এবং পরবর্তীতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসেন। তাঁর আন্তরিক উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় মহান ‘২১ ফেব্রুয়ারি’ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা পায়। ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কারো মধ্যস্থতা ছাড়াই স্বাক্ষরিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি।

১৭ মে ২০২৩ দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবন “কমিউনিটি ক্লিনিক'-কে জাতিসংঘ “দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ' হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এটা বাংলাদেশের সবার জন্য গর্বের। জাতিসংঘ প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্ভাবনী চিন্তাকে জাতিসংঘের অন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোকেও অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের বিস্ময়। তার গতিশীল নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে। 


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন