নানা
বাধাবিপত্তি ঠেলে খুলনার দিকে রওনা হয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এছাড়া আশপাশের বিভিন্ন
জেলার নেতা-কর্মীরাও গতকাল বৃহস্পতিবার থেকেই খুলনা অভিমুখে যাত্রা করেছেন। কোথাও কোথাও
চিড়া, গুড়-মুড়ি জাতীয় শুকনো খাবার নিয়ে ট্রেনে, বাসে চড়ে বসেছেন কর্মীরা। বাস বন্ধের
ঘোষণায় অনেক স্থান থেকে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে গণসমাবেশের এক দিন আগেই খুলনা শহরে পৌঁছাচ্ছেন
তাঁরা।
এদিকে,
আগামীকাল শনিবারের বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ পুরোনো মামলায়
নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। গত দুদিনে যশোরে বিএনপির ৪৮ জন
নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে
ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগও আজ শুক্রবার খুলনায় পাল্টা সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সরকারের উন্নয়ন প্রচারে বিকেলে খুলনায় সমাবেশ ও মিছিল এর আয়োজন করবে ছাত্রলীগ, যুবলীগ
ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ।
এর
আগে চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে বিএনপির গণসমাবেশে জনসমাগম ঠেকাতে বাধা দেয়া হয়েছিলো। চট্টগ্রামের
সমাবেশে আসার পথে বিক্ষিপ্ত হামলা ও বাধার পাশাপাশি ময়মনসিংহে সড়কপথে যানবাহন চলাচল
বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
এবার
খুলনায় গণসমাবেশের দুদিন আগেই বাস চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক
ইউনিয়নের নেতারা। এমন ঘোষণার পর বিএনপি নেতা-কর্মীরা উল্টো দলে দলে ভাগ হয়ে খুলনা অভিমুখে
যাত্রা শুরু করেছেন।
কর্মসূচিতে
যত বাধা আসবে, ততই আন্দোলনে সফলতা আসবে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর
চন্দ্র রায় বলেছেন, চলমান আন্দোলন বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। যারা গণতন্ত্রে
বিশ্বাসী না তাদের হটানোর আন্দোলন। গতকাল সন্ধ্যায় খুলনা নগরের কে ডি ঘোষ রোডে দলীয়
কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ বলেন।
চিড়া-মুড়ি
নিয়ে রওনা
চুয়াডাঙ্গা
থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দুদিন আগেই খুলনার পথে রওনা দিয়েছেন। গতকাল দুপুরে দলের
প্রস্তুতি সভা শেষে নেতা-কর্মীদের কেউ ট্রেনে, কেউ বাসে চড়ে রওনা দেন। সমাবেশের দিন
খুলনায় হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধের আশঙ্কায় দলীয় নেতাদের পরামর্শে তাঁরা পানির বোতল, চিড়া-মুড়িসহ
শুকনা খাবার সঙ্গে নিয়ে রওনা হয়েছেন।
খুলনার
গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে গতকাল দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভা
হয়। জেলা বিএনপির সদস্য খোন্দকার আবদুল জব্বারের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন
দলের খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম।
চুয়াডাঙ্গা
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সবাইকে আগে থেকেই নির্দেশনা
দেওয়া আছে, প্রত্যেকে এক বোতল পানি ও শুকনা খাবার সঙ্গে নিয়ে রওনা দেবেন। এই ফ্যাসিস্ট
সরকারের পতন হওয়ার জন্য আমরা রাজপথে নেমেছি। পতন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের আন্দোলন চলবেই।’
খুলনায়
আসতে মাগুরায় যানবাহন ভাড়া পাচ্ছেন না বিএনপির নেতারা। এমনকি বায়নার টাকাও ফেরত দিচ্ছেন
অনেক পরিবহনমালিক। গণসমাবেশে যাওয়ার জন্য মাগুরায় আটটি বাস ও পাঁচটি মাইক্রোবাস ভাড়া
করেছিলেন শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি বদরুল আলম।
কিন্তু
গতকাল সকালে বাসের অগ্রিম টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছেন মালিকেরা। গণসমাবেশে যোগ দিতে কুষ্টিয়া
থেকে অন্তত পাঁচ হাজার নেতা-কর্মী খুলনা যাচ্ছেন বলে জেলা বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন।
সাবেক
নেতারাও মাঠে
গণসমাবেশ
সফল করতে বহুদিন ধরে দলে নিষ্ক্রিয় এমন নেতারাও এবার মাঠে নেমেছেন। প্রায় সাড়ে ১০ মাস
পর বিএনপির হয়ে দলবল নিয়ে আবার মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক
সভাপতি নজরুল ইসলাম ওরফে মঞ্জু।
গতকাল
খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ ঘোষণা দেন। খুলনা বিভাগীয় বিএনপির গণসমাবেশ
সামনে রেখে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে তাঁরা মাঠে
নামছেন বলে জানিয়েছেন নজরুল ইসলাম।
গত বছরের ডিসেম্বরে হঠাৎ কেন্দ্র থেকে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হলে সেই কমিটি থেকে বাদ পড়েন নজরুল ইসলাম। পরে তাঁকে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ রাজনীতি বিএনপি গণসমাবেশ খুলনা বাঁধা
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।