নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:১১ পিএম, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৮
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলে নতুন মুখের আর্বিভাব হচ্ছে। ইতিমধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এবং রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির হাই কমান্ডের পক্ষ থেকে বেশ কিছু তরুণ এবং উদীয়মানকে মাঠে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে এদের মধ্যে বেশির ভাগই রাজনৈতিক নেতাদের ছেলে-মেয়ে রয়েছেন। এছাড়া খেলোয়াড়, অভিনয় শিল্পী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক এবং ব্যারিস্টারও আছেন এ তালিকায়। ক্ষমতাসীন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার ইচ্ছে রয়েছে জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক, নড়াইল এক্সপ্রেস খ্যাত মাশরাফি বিন মর্তুজার। নড়াইল সদর আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। ইতিমধ্যে দলের হাই কমান্ড থেকে তাঁকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এলাকায় গণসংযোগও করছেন এ ক্রিকেট তারকা। গোপালগন্জ এর মুকসেদপুর থেকে নির্বাচন করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন ঢালিউডের সুপার ষ্টার তারকা শাকিব খান। তাঁর এ ইচ্ছের কথা ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কানে দেওয়া হয়েছে। শাকিব চান হাইকমান্ড তাকে সবুজ সংকেত দিলে গণসংযোগ শুরু করবেন। বর্তমানে এখানে সংসদ সদস্য আছেন আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্ণেল (অব.) ফারুক খান।
নওগাঁ থেকে নির্বাচন করতে চান আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আব্দুল জলিল এর ছেলে ব্যারিস্টার জন জলিল। এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করছেন তিনি। বাবার ইমেজকে কাজে লাগিয়ে আগামীতে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য হতে চান তিনি। রাজনীতিবিদদের উত্তরসূরি হিসেবে বিএনপির সাবেক মহাসচিব কে,এম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে শ্যামা ওবায়েদ রিংকু ফরিদপুরের নগরকান্দা আসন থেকে নির্বাচন করবেন। দল তাকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছে। গত নির্বাচনে জাতীয় সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর কাছে স্বল্পতম ভোটে পরাজিত হন শ্যামা ওবায়েদ। শ্যামা ওবায়েদ বর্তমানে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। একইসাথে টকশোর পরিচিত মুখ। এদিকে, একই আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পেতে চান তারেক জিয়ার আর্শিবাদপুষ্ট বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক ছাত্রনেতা শহীদুল ইসলাম বাবুল। বাবুল নিয়মিত এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। একই আসনে মা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর অসূস্থতাজনিত কারণে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচন করার অভিপ্রায় নিয়ে কাজ করছেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আয়মন আকবর চৌধুরী বাবলু। ওই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের পরিচালক অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া। অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া এক সময় সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন। ২০ দলীয় জোটের শরীক দল জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) থেকে কুমিল্লার লাংগলকোট থেকে নির্বাচন করবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত কাজী জাফর আহমেদের মেয়ে জয়া কাজী। কাজী জয়া নিয়মিত এলাকায় গণসংযোগ করছেন। জানা গেছে, বিএনপি থেকে তাঁকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। বিএনপি থেকে নির্বাচন করার জন্য মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন যুদ্ধাপরাধী মামলায় ফাঁসি হওয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী। রাউজান থেকে নির্বাচন করবেন হুম্মাম কাদের। চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নওফেল চৌধুরী। তাঁর এ মনের অভিপ্রায় ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন তিনি। বাগেরহাট ২ আসন থেকে আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে কাজ করছেন শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলালউদ্দিন এমপির ছেলে শেখ সারহান নাসের তন্ময়। সুদর্শন এবং হাস্যেজ্জ্বল এবং সুবক্তা হিসেবে তন্ময় ইতিমধ্যে সবার দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়েছেন। বাবা শেখ হেলাল বাগেরহাট ১ আসনের সংসদ সদস্য থাকায় তন্ময়কে বাগেরহাট ২ আসনের জন্য প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। জানা যায়, শেখ তন্ময় লন্ডন থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে ব্যবসা করছেন। প্রধানমন্ত্রীর আরেক নিকটাত্মীয় সাবেক চীফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর ছেলে সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশাল সদর থেকে নির্বাচন করার জন্য মাঠে কাজ করছেন। সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে ইতিমধ্যে সাদিক আব্দুল্লাহ মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা-চরভদ্রাসন-সদরপুর আসন থেকে বিএনপির টিকেট চান সাবেক মন্ত্রী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে চৌধুরী নায়াব ইবনে ইউসুফ। এক সময় তার চাচা চৌধুরী আকমল ইবনে ইউসুফ এ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। বর্তমানে ঐ আসনের সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর নিকটাত্মীয় নিক্সন চৌধুরী। চৌধুরী নায়াব ইবনে ইউসুফ এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করছেন। বাবার ইমেজকে কাজে লাগিয়ে আগামী নির্বাচনে তিনি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। যশোর ২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসন থেকে নির্বাচন করার জন্য মাঠে দৌড়ঝাঁপ করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। ঢাকার পাশ্ববর্তী কেরানীগঞ্জ থেকে নির্বাচন করতে চান বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মেয়ে নিপুন রায় চৌধুরী। নিপুন রায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটিরি নিবার্হী সদস্য।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ডাকসাইটে রাজনীতিবিদদের উত্তরসূরিরা এলাকায় নানামুখী কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
সুশীল ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বদিউল আলম মজুমদার আদিলুর রহমান খান
মন্তব্য করুন
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজা উপত্যকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও একমত বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার (১৫ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, “গাজায় শান্তি স্থাপন করার বিষয়টি আমরা আলোচনা করেছি। তিনি (ডোনাল্ড লু) বলেছেন, ইউএস অত্যন্ত টায়ারডলেসলি (অক্লান্তভাবে) কাজ করছে যাতে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তিনি আমাকে যেটুকু বলেছেন- ‘তারা আশাবাদী’।”
‘আমরা বলেছি, গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে, নিরীহ নারী ও শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে। ৩৫ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, তার মধ্যে ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু’, যোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এটি আসলে মেনে নেয়া যায় না। আমি বলেছি, টেলিভিশনে যখন এগুলো দেখি, তখন টেলিভিশন দেখা কন্টিনিউ করতে পারি না। সেখানে শান্তি স্থাপন করা দরকার। তিনিও একমত যে, সেখানে শান্তি স্থাপন করা দরকার। তিনি জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য টায়ারলেসলি কাজ করছেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক খুবই চমৎকার। আমাদের বহুমাত্রিক সহযোগিতার ক্ষেত্র রয়েছে। একইসাথে গত ৫৩ বছরের আমাদের অভিযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যে কারণে ডোনাল্ড লুকে ধন্যবাদ জানিয়েছি।’
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো সরকার গঠনের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। তিনি সম্পর্ককে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে যাওয়ার অভিপ্রায় প্রকাশ করেছেন। সেই অভিপ্রায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।’
‘আমাদের আলোচনা সেই লক্ষ্যেই হয়েছে। একক দেশ হিসেবে আমাদের রফতানির সবচেয়ে বড় গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী দেশও যুক্তরাষ্ট্র। আমি ডোনাল্ড লু’কে অনুরোধ জানিয়েছি, বাংলাদেশে ৪০টি আইটি ভিলেজ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেখানে যাতে যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগ বাড়ায়। যদিও কিছু বিনিয়োগ তারা এরইমধ্যে করেছে।’
হাসান মাহমুদ ডোনাল্ড লু ফিলিস্তিন গাজা
মন্তব্য করুন
রাজধানী ঢাকায় যেন ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বুধবার (১৫ মে) বনানীতে বিআরটিএর সদর কার্যালয়ে আয়োজিত সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্যাটারিচালিত কোনো গাড়ি (তিন চাকার) যেন ঢাকা সিটিতে না চলে। আমরা ২২টি মহাসড়কে নিষিদ্ধ করেছি। শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়, চলতে যেন না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। এর আগে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ঢাকার মধ্যে অটোরিকশা বন্ধে সম্মতি জানান।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ভয়াবহ ব্যাপার যখন রিকশাচালকরা দুই পা ওপরে উঠিয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালায়। অনেক প্রতিবন্ধী আছেন যারা চোখে কিছুটা কম দেখেন তারাও এই রিকশা নিয়ে নেমে পড়েন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, সিদ্ধান্তে আসা দরকার যে ঢাকায় ইজি বা অটোরিকশা চলবে না। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
সভায় বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানী ওবায়দুল কাদের অটোরিকশা
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফর করছেন। দু’দিনের সফরে প্রথম দিনে তিনি বাংলাদেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পিটার ডি হাসের বাসভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক ছিল একটি বড় ধরনের চমক। অতীতে দেখা গেছে, যে কোন মার্কিন প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করলেই একগুচ্ছ সুশীলের সঙ্গে বৈঠক করতেন। সেই সুশীলরা সকলেই পরিচিত ছিল। এর আগেও ডোনাল্ড লু, আফরিন আখতার বাংলাদেশ সফর করে যে সমস্ত সুশীলদের সাথে দেখা করেছিলেন এবার তাদেরকে এড়িয়ে গেছেন।
গত দুই বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে সমস্ত কর্মকর্তারা এসেছিলেন তারা বাংলাদেশের সুশীল সমাজের যে সমস্ত প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, বদিউল আলম মজুমদার, ড. স্বাধীন মালিক, ড. আসিফ নজরুল, পরিবেশ আন্দোলনের নেত্রী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মানবাধিকার কর্মী আদিলুর রহমান খান, তৃতীয় মাত্রার বিতর্কিত উপস্থাপক জিল্লুর রহমান, মতিউর রহমান, নুরুল কবিরের মত ব্যক্তিদেরকে। যারা সকলেই আওয়ামী বিরোধী এবং বিএনপি পন্থী হিসেবে পরিচিত। এদের কেউ কেউ স্বাধীনতাবিরোধীও বটে। এই সমস্ত বিরোধী পক্ষের সুশীলদেরকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বৈঠক করত এবং এই ধরনের বৈঠকগুলোর পরে সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকম বিষোদগার করা হত।
তবে এবার ডোনাল্ড লুর বৈঠকে এই সুশীলদের কাউকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ নীতিতে বড় পরিবর্তন বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। গতকালের বৈঠকে যে সমস্ত সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তাদের মধ্যে ছিলেন ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওম্যান সলিডারিটির নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার, মানবাধিকার কর্মী মহম্মদ নুর খান, চাকমা সার্কেলের রানী ও মানবাধিকার কর্মী ইয়ানিয়ান, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংগঠক সোয়ানুর রহমান, তরুণ সংগঠক মাহমুদা আক্তার মনীষা।
এটি সম্পূর্ণ নতুন একটি সুশীল প্রতিনিধি দল যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সুশীল পরিবর্তন কেন এ নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বদিউল আলম মজুমদার, আদিলুর রহমান খান ও জিল্লুর রহমানের মতো ব্যক্তিদের সঙ্গে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার না হওয়াটাকে অনেকে বিস্ময়কর মনে করছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ নীতিতে তার অবস্থান পাল্টেছে। বাংলাদেশ কৌশল পরিবর্তন করার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে মার্কিন নীতিও পরিবর্তন হয়েছে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। বাংলাদেশের বাজারে যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান থাকে সে জন্য দেশটির তৎপরতা লক্ষণীয়। ডোনাল্ড লু সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বৈঠকেও মার্কিন কম্পানিগুলোর অর্থছাড় বিষয়েও আলোচনা করেছেন।
সবকিছু মিলিয়ে নতুন সরকারের সঙ্গে নতুনভাবে কাজ করতে আগ্রহী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর এ কারনেই এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগে যারা তাদের মিত্র ছিল সেই মিত্রদেরকে পরিবর্তন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন নতুন সুশীলদের সঙ্গে সম্পর্ক করছেন। যারা এতদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে গলাবাজি করত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংরক্ষণই যাদের দায়িত্ব ছিল তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অপাঙ্ক্তেয় হয়ে গেছে। আর এটি বোধহয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শিক্ষা। যুক্তরাষ্ট্রের যারা বন্ধু হয় তাদের শত্রুর দরকার হয়না।
ডোনাল্ড লু সুশীল সমাজ বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশে সুশীল সমাজের কিছু প্রতিনিধি আছেন যাদেরকে মনে করা হয় তারা মার্কিনপন্থী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে তারা গর্ব অনুভব করেন। কথায় কথায় মার্কিন দূতাবাসে যান। সেখানে প্রাতঃরাশ, মধ্যাহ্নভোজ, নৈশভোজে মিলিত হন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যা বলে তারা তার চেয়ে তিন ধাপ গলা উঁচিয়ে কথা বলেন। বাংলাদেশ নিয়ে তাদের কোন ভালবাসা নেই, প্রেম নেই, আগ্রহ নাই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এবং নীতি বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করাই যেন তাদের প্রধান লক্ষ্য। এই সমস্ত সুশীলদেরকে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রোফোন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফর করছেন। দু’দিনের সফরে প্রথম দিনে তিনি বাংলাদেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পিটার ডি হাসের বাসভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক ছিল একটি বড় ধরনের চমক। অতীতে দেখা গেছে, যে কোন মার্কিন প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করলেই একগুচ্ছ সুশীলের সঙ্গে বৈঠক করতেন। সেই সুশীলরা সকলেই পরিচিত ছিল। এর আগেও ডোনাল্ড লু, আফরিন আখতার বাংলাদেশ সফর করে যে সমস্ত সুশীলদের সাথে দেখা করেছিলেন এবার তাদেরকে এড়িয়ে গেছেন।