খালেদা জিয়া কি তবে আবার জেলে যাবেন? দুর্নীতির মামলায় সাজা পেয়ে বেগম খালেদা জিয়া নিজ বাড়িতে বসবাস করছেন। সন্তান তারেক রহমান পরিবার পরিজন নিয়ে লন্ডনে আছেন। সেখান থেকে দলকে নির্দেশনা দিচ্ছেন। সুখেই আছেন তারা। কিন্তু দলের কর্মীরা হয়তো তেমন সুবিধা করতে পারছেন না। সেজন্য তারা আন্দোলন করতে চাইছে ক্ষমতার ভাগ পাওয়ার জন্য। সরকার আন্দোলনের সুযোগ দিয়ে আবার কঠোর অবস্থানে কেন যাচ্ছেন বোধগম্য নয়। তেমনি শান্তি ও অহিংস আন্দোলনের পরিবর্তে বিরোধীদল সহিংসতার আভাস দিচ্ছেন সেটাও বোধগম্য নয়। আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পার করেছি। ২৯০ বছর ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ২৩ বছর পাকিস্তানী শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, এরপর ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দেশি সামরিক শাসকের সঙ্গে সংঘাত করে বেঁচে আছি। এভাবে আর কতকাল আমাদের লড়াই করতে হবে?
সারা পৃথিবীতে যেভাবে নির্বাচন হয় সেভাবেই বাংলাদেশে নির্বাচন হোক আমাদের সকলের কাম্য। কিন্তু নতুন করে বিএনপি বায়না ধরেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে হবে। আর সেই সরকার আনতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নানা অপপ্রচার করে আসছে। বাংলাদেশের অবস্থা আমি বলছিনা খুব ভালো। তবে সেটাকে উন্নত করতে বিরোধীদলের গঠনমূলক রাজনীতি আমাদের সকলের কাম্য। আমরা এরই মাঝে আভাস পেয়েছি সরকার নিজেদের দলে শুদ্ধি অভিযান চালাবে। ফলে দুর্নীতি, নিপীড়ন, নির্যাতন থেকে জন্য কিছুটা স্বস্তি পাবে। তাতে করে সরকারের গ্রহণযোগ্য উঁচুমাত্রায় পৌঁছে যাবে।
সরকার নানা ভাবে সফল। সুতরাং আগামী নির্বাচনে তাদের বিজয় সুনিশ্চিত। কিন্তু আন্তর্জাতিক অর্থনীতি ও রাজনীতি সেই বিজয়ের পথে নির্বাচনের আগে থেকেই কাটা ছড়াচ্ছে। সরকারকে বিব্রত করে, অসহনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যারা ক্ষমতায় যেতে ষড়যন্ত্র করছেন তাদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাবধান বাণী : খালেদাকে আবার জেলে যেতে হবে। ওরকম সাবধান বাণী কিন্তু তিনি নিজদলের কর্মী নেতাদেরকেও দিয়েছেন। জনগণ তাকিয়ে আছে যোগ্যদের পদায়ন, মনোনয়ন ও সম্মানিত করবেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। এবং সেজন্য তিনি নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। জনগণের আশা তারা সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক জায়গায় দেখতে পাবে।
একটি সাধারণ অভিযোগ সরকারের বিরুদ্ধে - আমলাদের আধিপত্য। সরকার সেখানে কি করবে আমরা জানিনা - তবে পদ না থাকা সত্ত্বেও সেখানে গণ পদোন্নতি হচ্ছে। অন্যদিকে চাকুরীর আশায় লক্ষ লক্ষ যুবক -যুবতী আবেদনের পর আবেদন করে চলেছেন। তাদের জন্য সরকার কি ভাবছে সেটা স্পষ্ট নয়। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা হাল যেমন নড়বড়ে তেমনি আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। আমাদের যোগাযোগ খাতে বা বিদ্যুৎ খাতে অনেক উন্নয়ন হলেও শিক্ষা খুবই অবহেলিত। সেখানে প্ৰয়োজন অতিরিক্ত বাজেট। তাতে করে কর্মসংস্থান হবে, অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চলবে এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠন সম্ভব হবে।
আজ শুত্রুবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী শিক্ষার পরিধি বৃদ্ধির পক্ষে সুন্দর যুক্তি দিচ্ছিলেন। আমার কাছে ওনার সেই বক্তব্য ভালো লেগেছে। অনুষ্ঠানটি ছিল মাননীয় উপাচার্যের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান। শিক্ষার বিকাশে, নতুনত্ব আনতে আমি ২০১০ সালে একটি নৈতিক উন্নয়ন কেন্দ্রের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। সারা বিশ্ব আজ নৈতিক শিক্ষার জন্য বিভিন্ন ধরনের নীতিবিদ্যার অধ্যয়নের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু আমাদের বিভাগ, কলা অনুষদ এবং একাডেমিক কাউন্সিল সেটা পাশ করলেও সিন্ডিকেট সেটিকে অনুমোদন দেয়নি। অথচ এমন কিছু অপ্রচলিত বিষয়ের প্রসার ঘটানো হয়েছে যা প্রতিদিনের সমালোচনায় স্থান পাচ্ছে।
এরকম পরিস্থিতিতে আবার একটি চেষ্টা আমি করতে চাই। নীতিবিদ্যার ব্যাপকতাকে বিবেচনা করে পরিকল্পনা, প্রশাসন, শিক্ষা, আইন, উন্নয়ন, রাজনীতি, পলিসি, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান, গবেষণা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, সুষম বণ্টন, মানবাধিকার, স্বাধীনতা বিষয়ের একটি ইন্টারডিসিপ্লিনারি শিক্ষা কার্যক্রম চালুর প্রস্তাবনা গ্রন্থিত করেছি। সেটির নাম নির্ধারণ করেছি - শেখ রাসেল সেন্টার ফর এথিক্স এন্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্স। শেখ রাসেল নামটি বঙ্গবন্ধু রেখেছিলেন বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের নামের সঙ্গে মিলে রেখে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে প্রায় শিশু রাসেল সম্পর্কে বলতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু নাকি বঙ্গমাতাকে দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের বই পড়ে শোনাতেন। এখন আমরা একটি যুদ্ধ দেখছি এবং তার ভয়াবহতাও দেখছি। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শান্তির পক্ষে জাতিসংঘে জোরালো যুক্তি ও ভাষণ দিয়েছেন। বাংলাদেশকে তিনি শান্তির বাংলাদেশ বানাতে চান। সেই সময় কেন খালেদা জিয়াকে আবার জেলে যেতে হবে? খালেদা জিয়া কি তবে শান্তির বাংলাদেশ চান না? তিনি তো ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। কেন তিনি দেশের জন্য না ভেবে ক্ষমতার কথা ভাবছেন? তিনি কতবার প্রধানমন্ত্রী হলে শান্ত হবে জানতে পারি কি?
এটি একবিংশ শতাব্দী। আজকের তরুণরা ভিন্নভাবে সবকিছুকে দেখে। তারা বিশৃঙ্খলা চায় না। সুতরাং - শান্তির রাজনীতি যেন আমাদের পাথেয় হয়। দুর্নীতিকে, আমলাতন্ত্রকে, মোকাবেলা না করে উন্নয়ন, শান্তি অর্জন সম্ভব হবে কি? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী - সবকিছু ঢেলে সাজাবার প্রয়োজন। সবখানে অযোগ্য লোকে ভোরে গেছে। শুধু খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠিয়ে উন্নয়নের আলো ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে কি ? লিটমাস টেস্ট হিসেবে গাইবান্ধা নির্বাচনকে জনগণ নিয়েছে। পেশি শক্তি ও টাকার খেলায় আজও মানুষের মুক্তি বন্দিশালায়। বঙ্গবন্ধু সেই বন্দিশালা থেকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন। ভারত থেকে পাকিস্তান, পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি। কিন্তু দেশ এখনো কলোনি ও বাজার উভয় রয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু সেখান থেকে আমাদের মুক্ত করেছিলেন। কিন্তু আমার আবার ১৫ আগস্ট থেকে বন্দি আছি। সেই মুক্তির স্বাধ যেন জাতি আপনার হাত থেকে জনগণ পায় যেভাবে খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়েছেন। আমাদের কষ্ট হচ্ছে সংসার চালাতে। অপরদিকে প্রতিদিন রাজপথে নতুন নতুন মডেলের গাড়ি নামছে। সামাজিক বৈষম্য বাড়ছে। দুর্বৃত্তরা এখন বুক ফুলিয়ে চলছে। কেবল খালেদা জিয়াকে জেলে নিলেই সমাধান হবে কি ? আপনার আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন। অযোগ্যদের বিদায় দিন -দল থেকে, সরকার থেকে, সমাজ থেকে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে আমলাতন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আর সেজন্য শিক্ষায় মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন।
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড - সেটা এখন যাদের হাতে তাদের যোগ্যতা নিয়ে সমাজে সমুচা সিঙ্গারা খেতে খেতে হাসাহাসি চলে। সেখানে চোরেরা দাপটে চলে। জাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক দেয়ার প্রয়োজন পড়লে দ্বিধা করা ভুল হবে। মানুষ যোগ্য ব্যক্তির শাসন চায়। সেজন্য শুদ্ধি অভিযান সময়ের দাবি। আপনি বাংলাদেশকে র্যাংকিংয়ে উন্নত করে মধ্যে আয়ের দেশ বানিয়েছেন, আজকের তরুণদের আশা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে র্যাঙ্কিংয়ে উন্নত করতে ভালো মানের শিক্ষক, উচ্চমানের উপাচার্য নিয়োগ দেবেন। প্ৰয়োজনে বিদেশ থেকে শিক্ষক -উপাচার্য আনলে জনগণ আশার আলো দেখবে। আপনি কি তরুণদের কথা শুনবেন কি? আমাদের কেউ কেউ বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাডি সেন্টার করছেন। এভাবে শিক্ষার উন্নয়ন কোথাও সম্ভব হয়েছে কি?
শুদ্ধি অভিযান সরকার আন্দোলন নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।