ইনসাইড গ্রাউন্ড

সাম্বা তালে ব্রাজিলের প্রথম শিরোপা

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ২০ নভেম্বর, ২০২২


Thumbnail

ফুটবল ইতিহাসের ১৯৫৮ বিশ্বকাপ হয়ে আসে বাঁক বদলের বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপের ষষ্ঠ আসর দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে ক্রমে পাল্টে যাওয়া আধুনিক ফুটবল। যেখানে বীজ রোপণ করা হয়েছিল ভবিষৎ ফুটবলের।

বিশ্বযুদ্ধের রেশ কাটিয়ে ততদিনে অনেক দেশই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। যার প্রমাণ এই বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য আগ্রহ দেখায় চারটি দেশ। যেখানে ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপের জন্য ব্রাজিল ছাড়া আগ্রহ দেখায় নি কেউই। পরে ফিফা কংগ্রেসের ভোটে জয়ী হয়ে স্বাগতিক দেশ হয় সুইডেন।

এই বিশ্বকাপেও মূলে পর্বে অংশ নেয় ১৬টি দেশ। স্বাগতিক হিসেবে সুইডেন ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পশ্চিম জার্মানি সরাসরি খেলার সুযোগ পায়। বাছাই পর্ব পেরিয়ে আসে ১৪টি দেশ। ৮ থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত ১২টি ভেন্যুতে ১৬ দলের অংশগ্রহণে ৩৫টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় সে বিশ্বকাপে।

এ আসরে ইউরোপের প্রতিনিধিত্ব করে সুইডেন, অস্ট্রিয়া, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস, যুগোস্লাভিয়া, সোভিয়েত ইউনিয়ন, হাঙ্গেরি, পশ্চিম জার্মানি, ফ্রান্স ও চেকোস্লোভাকিয়া। লাতিন আমেরিকা থেকে অংশ নেয় ব্রাজিল,আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়ে। আর উত্তর আমেরিকা থেকে একমাত্র দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ খেলে মেক্সিকো। প্রথমবার ফুটবলের বিশ্বমঞ্চে খেলার সুযোগ পায় নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড, ওয়েলস ও সোভিয়েত ইউনিয়ন।

চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয় অংশগ্রহণকারি দলগুলোকে। রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে প্রতিটি গ্রুপের দলগুলো খেলে ৩টি করে ম্যাচ।

গ্রুপ-১ থেকে ৪ পয়েন্ট নিয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠে পশ্চিম জার্মানি। তবে দ্বিতীয় স্থানের জন্য লড়াই চলে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ও চেকোস্লোভাকিয়ার মধ্যে। প্লে-অফ ম্যাচে অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতে নেয় পশ্চিম জার্মানি। বাদ পড়ে চেকোস্লোভাকিয়া ও আর্জেন্টিনা।

গ্রুপ-২ থেকে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠে ফ্রান্স ও যুগোস্লাভিয়া। সমান ৪ পয়েন্ট ছিল দুই দলেরই। তবে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় গ্রুপ সেরা হয় ফরাসিরা। এই গ্রুপের খেলাতেই ৫৮ বিশ্বকাপ আসরের প্রথম হ্যাটট্রিক আসে ফ্রান্স-প্যারগুয়ে ম্যাচে। আর ফুটবল বিশ্বের পরিচয় হয় জুস্ত ফন্টেইন নামের এক জাদুকরের সাথে।

গ্রুপ-৩ থেকে শেষ আটে যায় সুইডেন ও ওয়েলস। ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা হয় সুইডেন। ওয়েলস ও হাঙ্গেরির পয়েন্ট সমান ৩ হওয়ায় তাদের খেলা গড়ায় রি-প্লে ম্যাচে। সেখানে ২-১ গোলে আগের আসরের রানার্সআপদের হারিয়ে দেয় ওয়েলস।

আর গ্রুপ-৪ থেকে কোয়ার্টার-ফাইনালের টিকিট পায় ব্রাজিল এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন। ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা হয় ব্রাজিল। এই গ্রুপেও শেষ ষোলর দ্বিতীয় দল বাছাইয়ে খেলতে হয় প্লে-অফ ম্যাচ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতে পরের ধাপে যায় সোভিয়েতরা। তবে এই গ্রুপের খেলাতে বিস্ময় উপহার দেয় ব্রাজিল। পেলে-দিদি-গারিঞ্চাদের ফুটবল শৈলীতে নিজেদের ইতিহাসের সেরা ফুটবল উপহার দেয় লাতিন আমেরিকার দেশটি।

শেষ আটের ম্যাচে অবশ্য ব্রাজিলের কঠিন পরীক্ষা নেয় ওয়েলস। ১-০ গোলে জেতে ব্রাজিল। তবে এক গোলের কষ্টার্জিত জয় হলেও, সকলের নজর কেড়ে নেন পরবর্তীতে কিংবদন্তি হয়ে উঠা লিকলিকে শরীরের পেলে। জয়সূচক গোলটিও এসেছিল তার পা থেকেই।

তবে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডকে হারাতে বেগ পেতে হয়নি ফ্রান্সকে। ৪-০ গোলে ফরাসিদের জয়ের ম্যাচে জোড়া গোল করেন জুস্ত ফন্টেইন। ফঁতেইনের জোড়া গোলে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডকে ৪-০ গোলে হারায় ফ্রান্স। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে ২-০ গোলে জয় পায় সুইডেন। আর যুগোস্লোভাকিয়াকে ১-০ গোলে হারায় পশ্চিম জার্মানি।

কোয়ার্টার ফাইনালে শৈল্পিক ফুটবলে মুগ্ধ করা পেলের আগমনী বার্তার মূল চেহারা দেখা যায় ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমিফাইনালে। তার হ্যাটট্রিকে ফ্রান্সকে ৫-২ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠে ব্রাজিল। ১৯৫০ সালের মারাকানার স্বপ্নভঙ্গের পর আবারো ফাইনালে উঠে সেলেসাওরা। আর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন পশ্চিম জার্মানিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠার কৃতিত্ব দেখায় সুইডেন।

২৯ জুন সুইডেনের রাসুন্দা স্টেডিয়ামে ফাইনাল দেখতে উপস্থিত হয়েছিল প্রায় ৫০ হাজার দর্শক। ম্যাচের শুরুতেই নিলস এরিক লিদহোমের গোলে লিড নেয় স্বাগতিকরা। তবে ভাভা জোড়া গোল করে প্রথমার্ধেই লিড নেয় ব্রাজিল। বিরতির পর স্বাগতিকদের জালে আরো তিনবার বল পাঠায় ব্রাজিল। ৫৫ ও ৯০ মিনিটে জোড়া গোল করেন পেলে। দলের হয়ে বাকি গোলটি আসে অধিনায়ক মারিও জাগালোর কাছ থেকে। ৮০ মিনিটে স্বাগতিকদের হয়ে এক গোল শোধ করেন আগনা সিমন্সন।

আর বিশ্বকাপ পেয়ে যায় নতুন চ্যাম্পিয়নকে। আর পেলে-গারিঞ্চা-ভাভাদের হাত ধরে ব্রাজিল ফুটবলে নতুন যাত্রার শুরু হয়। সাম্বার ছন্দ ও শৈল্পকতার সে মেলবন্ধন আজো মোহিত করে রেখেছে বিশ্বজুড়ে অগণিত ভক্ত-সমর্থকদের।

সেমিফাইনালে ফ্রান্স বাদ পড়লেও অনন্য এক কীর্তি গড়েন জুস্ত ফন্টেইন। ৬ ম্যাচ খেলে করেন ১৩ গোল। যা এখনও জ্বলজ্বল করছে এক আসরে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড হয়ে।


কাতার বিশ্বকাপ   ব্রাজিল   পেলে   জুস্ত ফন্টেইন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

ইউরোতে জার্মানির স্কোয়াডে চমকের ছড়াছড়ি

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

আগামী জুনে বসছে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের আসর। স্বাগতিক দেশ হওয়ায় জার্মানিকে এবারের ইউরোর বাছাই পর্ব খেলতে হয়নি। তাই প্রীতি ম্যাচ খেলেই নিজেদের প্রস্তুতি সেরেছে তিনবারের ইউরোপসেরারা।

আসন্ন ইউরোতে চতুর্থ শিরোপার সন্ধানেই মাঠে নামবে ডাইমানশ্যাফট খ্যাত দলটি। এই টুর্নামেন্টকে ঘিরে ২৭ সদস্যের প্রাথমিক স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন জার্মান কোচ নাগেলসম্যান।

নাগেলসম্যানের দলে সুযোগ হয়নি বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠা ম্যাট হ্যামেলস, জুলিয়ান ব্রান্ডট, করিম আদেয়েমি ও নিকোলাস সুলের। এমনকি জায়গা পাননি বায়ার্ন মিউনিখের মিডফিল্ডার লিওন গোরেৎস্কাও।

নাগেলসম্যান ইউরোর দলে ডাকার ক্ষেত্রে বুন্দেসলিগার চলতি মৌসুমের পারফরম্যান্সকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। দলে ডাক পেয়েছেন ভিএফবি স্টুটগার্টের ফরোয়ার্ড দেনিজ উন্দাভ ও টিএসজি হফেনহেইমের ম্যাক্সিমিলান বেইয়ের। কোচের অনুরোধে অবসর ভেঙে ফেরা রিয়াল মাদ্রিদের মিডফিল্ডার টনি ক্রুস আছেন ইউরোর দলে।

জার্মানির ইউরো স্কোয়াড

গোলরক্ষক: ম্যানুয়েল ন্যুয়ার, টার স্টেগান, অ্যালেক্সান্ডার নুবেল, অলিভার বাউম্যান। ডিফেন্ডার: নিকো স্ক্লটারব্যাক, জোনাথান টাহ, রবিন কচ, ম্যাক্সিমিলান মিটেলস্ট্যাড, জশুয়া কিমিখ, অ্যান্টনি রুডিগার, ডেভিড রাম, ভালদেনার আন্টন, বেঞ্জামিন হেনরিখস।

মিডফিল্ডার: আলেকসান্ডার প্যাভলোভিচ, রবার্ট আন্ডরিচ, প্যাসকাল গ্রব, ইলকায় গুন্দোয়ান, ফ্লোরিয়ান রিটজ, জামাল মুসিয়ালা, টনি ক্রুস। ফরোয়ার্ড: নিকলাস ফুলক্রুগ, কাই হাভার্টজ, লেরয় সানে, দেনিজ উন্দাভ, টমাস মুলার, ম্যাক্সিমিলান বেইয়ের।


জার্মানি   ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ   ফুটবল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

মুস্তাফিজকে শুভকামনা জানাল চেন্নাই

প্রকাশ: ০৮:০৯ পিএম, ১৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

চলছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ১৭তম আসর। যেখানে এবার শুরু থেকেই চেন্নাইয়ের জার্সিতে দ্যুতি ছাড়িয়েছিলেন বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। তবে জাতীয় দলের ব্যস্ততার কারণে টুর্নামেন্টের মাঝপথেই দেশে ফিরতে হয়েছিল তাকে। এতে দলটির হয়ে বাকি ম্যাচগুলো মিস করেছেন কাটার মাস্টার।

দলের সঙ্গে না থাকলে কি হবে মুস্তাফিজকে মাঝেমধ্যেই মনে করে চেন্নাইয়ের মিডিয়া বিভাগ। আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপের জন্য এই বাংলাদেশি পেসারকে শুভকামনা জানিয়েছে আইপিএলের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা।

বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুস্তাফিজের একটি ছবি পোস্ট করেছে চেন্নাই। সেখানে তারা লিখেছে, ‘মিশন কাটার। সুইং স্ট্রং। তোমাকে শুভকামনা ফিজ।’

এবারের আসরে চেন্নাইয়ের হয়ে ৯ ম্যাচ খেলেছেন মুস্তাফিজ। যেখানে নিজের ঝুলিতে ভরেছেন ১৪টি উইকেট। দলটির হয়ে বাকি ম্যাচগুলো খেললে হয়তো আইপিএলে নিজের করা ২০১৬ সালের রেকর্ডটি ভাঙতে পারতেন এই পেসার। সেবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে ১৭ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে ইমার্জিং ক্রিকেটারের পুরস্কারও জিতেছিলেন।

এদিকে আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপ খেলতে এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে উড়াল দিয়েছে বাংলাদেশ দল। সতীর্থদের সঙ্গে সেখানে পাড়ি দিয়েছেন দ্য ফিজও।


মুস্তাফিজ   চেন্নাই সুপার কিংস   আইপিএল   টি-২০ বিশ্বকাপ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

অবশেষে অবসরে যাচ্ছেন ভারতের ফুটবলের মহাতারকা

প্রকাশ: ০৩:৫৪ পিএম, ১৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

অবশেষে ভারতীয় ফুটবলে ঘটতে চলেছে একটি যুগের অবসান। দেশটির ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকা সুনীল ছেত্রী শেষমেশ অবসর নিতে চলেছেন। জানা গেছে, আগামী ৬ জুন যুবভারতী স্টেডিয়ামে কুয়েতের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানাবেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এক ভিডিও বার্তায় এ কথা নিজেই জানিয়েছেন সুনীল।

২০০৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে অভিষেক হয়েছিল সুনীল ছেত্রীর। ৩৯ বছর বয়সী ভারতীয় এই কিংবদন্তি অধিনায়ক দীর্ঘ সময় ভারতের আক্রমণভাগকে একাই নেতৃত্ব দিয়েছেন। অসংখ্য ম্যাচে দলকে জিতিয়েছেন তিনি। অনেক হৃদয়-বিদারক ম্যাচের সাক্ষীও তিনি। বাংলাদেশের বিপক্ষেও তার রয়েছে উজ্জ্বল পারফরম্যান্স।

অবসরের ঘোষণা দিয়ে সুনীল বলেন, ‘একটা দিন জীবনে কোনও দিন ভুলতে পারব না। যে দিন দেশের জার্সি গায়ে প্রথম বার ভারতের হয়ে খেলতে নেমেছিলাম। অবিশ্বাস্য অনুভূতি। গত ১৯ বছরে অসহ্য চাপ এবং দেশের হয়ে খেলার আনন্দ, দুটোই আমার সঙ্গে সব সময় ছিল। ব্যক্তিগত ভাবে আমি কোনও দিন ভাবতে পারিনি দেশের হয়ে এত গুলো ম্যাচ খেলব, ভাল হোক বা খারাপ, এত কিছু করতে পারব। এখন আমি সেটা পেরেছি। গত এক-দেড় মাসে আমি সেটা পেরেছি এবং খুব অদ্ভুত লেগেছে। হয়তো করতে পেরেছি কারণ, আমি বুঝতে পেরেছিলাম পরের ম্যাচটা আমার শেষ ম্যাচ হতে চলেছে।’

জাতীয় দলের হয়ে খেলতে নামলে এখনও সুনীলের দিকে তাকিয়ে থাকেন ভারতের সমর্থকেরা। কত বার তিনি ভারতকে লজ্জার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন বা দেশকে গর্বিত করেছেন তা গুনে শেষ করা যাবে না। এখন পর্যন্ত সুনীলের যোগ্য উত্তরসূরি খুঁজে পায়নি ভারত। সম্ভাব্য হিসাবে অনেকের নাম উঠে আসলেও কেউই তার মানের হতে পারেনি।


সুনীল ছেত্রী   ভারত   ফুটবল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

মাত্র ২ মাসেই খোলা ময়দানে তৈরি হল বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ভেন্যু

প্রকাশ: ০৩:৩২ পিএম, ১৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

সবমিলিয়ে আর মাত্র ১৬ দিন। এরপরই যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে শুরু হবে ব্যাটে-বলের সেই লড়াই। যেখানে চার-ছক্কার জোর যার বেশি, দাপটটাও তাদেরই বেশি। আর তাই এবার আসন্ন এই টি-২০ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে প্রতিটি দলই তাদের সেরা খেলোয়াড়দের নিয়েই দল সাজিয়েছে।

শুধু তাই নয়, এরই মাঝে প্রস্তুত করা হয়েছে সম্পূর্ণ খোলা ময়দানে কাজ শুরু হওয়া বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ভেন্যু। নিয়ইয়র্কের সেই নাসাউ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত–পাকিস্তানের ম্যাচও।

কাজ শুরুর পর মাত্র দুই মাসে সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভেন্যুটি। গতকাল (বুধবার) আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচনের পর সেখানে পা রেখেছেন এই বিশ্বকাপের শুভেচ্ছা দূত উসাইন বোল্ট, ক্যারিবীয় কিংবদন্তি কার্টলি অ্যামব্রোস ও পাকিস্তানের শোয়েব মালিকরা।

নাসাউ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দর্শকধারণ ক্ষমতা ৩৪ হাজার। বিশ্বকাপের সূচি অনুযায়ী আগামী ৯ জুন নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে ভারত বনাম পাকিস্তানের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। যে ম্যাচের টিকিট শেষ হওয়ার আগে সর্বোচ্চ দাম দুই কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। এরই মধ্যে ম্যাচটির সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।

এই স্টেডিয়ামের অবকাঠামোর সঙ্গে লাস ভেগাসের ফর্মুলা ওয়ান রেসিং কারের সার্কিটের সঙ্ মিল রয়েছেগে। এছাড়া এই মাঠে বসানো হয়েছে ড্রপ-ইন পিচ। এই পিচগুলো তৈরি হয়েছে ফ্লোরিডা শহরে। এই পিচে স্বাভাবিক ঘাসের সঙ্গে পাঁচ শতাংশ সিন্থেটিক ফাইবার মেশানো হয়েছে। যাতে এর দৃঢ়তা বজায় থাকে।

গ্রুপ পর্বে এই নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ভারতের জন্য কার্যত হোম গ্রাউন্ডের কাজ করবে। এখানে রোহিতরা শুধু পাকিস্তানের বিপক্ষে নয়, আয়ারল্যান্ড এবং আয়োজক দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও মুখোমুখি হবে। এছাড়া ১০ জুন বাংলাদেশ নাসাউয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মোকাবিলা করবে।

একেবারে নতুন করে ভেন্যু তৈরি হওয়ায় সেখানকার কন্ডিশন ও পিচের ধরন নিয়ে কেউ জানে না। তবে ধারণা করা হচ্ছে এখানকার পিচ হবে অনেকটা অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডের মতো। সেখানকা ম্যাচের পিচ অস্ট্রেলিয়া থেকে জাহাজে করে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার ‘অ্যাডিলেড টার্ফ সলিউশনস’ ড্রপ-ইন পিচ তৈরিতে বিখ্যাত। অ্যাডিলেডের পিচ প্রস্তুতকারক ডেমিয়েন হাউয়ের অধীনে তৈরি হয় ক্রিকেটের এসব পিচ। আইসিসি ইভেন্টের জন্য এই ডেমিয়েনের সঙ্গে চুক্তি করে আমেরিকা। যে সব মাঠে খেলা হবে সেখানকার পিচ তৈরি করছেন ডেমিয়েন।

উল্লেখ্য, আগামী ২ জুন থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ যৌথভাবে টি-২০ বিশ্বকাপের আয়োজন করবে। ২০ দলের এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের অভিযান শুরু হবে ৭ জুন থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করবে টাইগাররা। ১৭ জুন নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে গ্রুপপর্ব শেষ করবে বাংলাদেশ।


বাংলাদেশ   টি-২০ বিশ্বকাপ   ক্রিকেট   বিসিবি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

সতীর্থদের ভালোবাসায় টাইগাররা, তবুও ভক্তদের ক্ষোভ!

প্রকাশ: ০৩:০০ পিএম, ১৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

সবমিলিয়ে আর মাত্র ১৬ দিন। এরপরই যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে শুরু হবে ব্যাটে-বলের সেই লড়াই। যেখানে চার-ছক্কার জোর যার বেশি, দাপটটাও তাদেরই বেশি। আর তাই এবার আসন্ন এই টি-২০ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে প্রতিটি দলই তাদের সেরা খেলোয়াড়দের নিয়েই দল সাজিয়েছে।

এশিয়া থেকে ইউরোপ, বাংলাদেশ থেকে ইংল্যান্ড- সবখানেই যেন বিশ্ব ক্রিকেটের এই মেগা টুর্নামেন্টকে ঘিরে ছড়াচ্ছে ব্যাপক উন্মাদনা। এর অবশ্য কিছু কারণও রয়েছে। সেটি হচ্ছে মূলত এবারের টুর্নামেন্টের সমীকরণ। প্রতিবার ১০ দল নিয়ে টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হলেও এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ দলে। আর এর মধ্য দিয়েই এই বৈশ্বিক আসরকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়েছে ক্রীড়াঙ্গনে।

ইতোমধ্যেই প্রায় প্রতিটি দল তাদের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে একমাত্র পাকিস্তান ছাড়া। ২০ দলের এই টুর্নামেন্টে ১৯তম দল হিসেবে গত মঙ্গলবার দল ঘোষণা করে বাংলাদেশ। যেখানে অভিজ্ঞদের সাথে তারুণ্যের মিশেলে সাজানো হয়েছে এবারের স্কোয়াড। তবে দল ঘোষণার পর কিছুটা সমালোচনার মুুখেও পড়তে হয়েছিল বিসিবিকে।

দলে টানা ব্যর্থতার পরও লিটনের জায়গা পাওয়া, ইনজুরির পরও তাসকিনকে সহ-অধিনায়ক করা, সাইফউদ্দিন-মিরাজের বাদ পড়া ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে এখনও চলছে আলোচনা-সমালোচনা। তবে এসব সমালোচনার মধ্যেই গতকাল (বুধবার) রাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে বাংলাদেশ দল। 

এর আগে গতকাল দুপুরে বিশ্বকাপের অফিসিয়াল ফটোশ্যুট সারেন টাইগাররা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সভাপতি ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন। এছাড়াও বিসিবির অন্যান্য কর্মকর্তারাও সেই ফটোশ্যুটে অংশ নেন।

বিশ্বকাপের উদ্দেশ্যে দল রওনা দেওয়ার পরপরই দেশের ক্রীড়াঙ্গনে টাইগারদের জন্য ‘শুভ কামনা’র বন্যা বয়ে যাচ্ছে। সাবেক-বর্তমান সতীর্থ থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সকলেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ দলের জন্য শুভেচ্ছা বার্তা পোস্ট করেন।

টাইগারদের বুকভরা সাহস দিয়ে সাবেক সফল অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বুধবার বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘সাহস সবসময় গর্জন করে না, শুধু দিন শেষে শান্ত কন্ঠস্বরে বলে, আগামীকাল চেস্টা করব। Go and kill it champs। সব সময় শুভ কামনা আমার প্রাণের দেশ, প্রাণের দলের প্রতি। বাংলাদেশ।’ সেই সঙ্গে বাংলাদেশের পতাকার ইমোজি এবং বিজয়ের চিহ্নও জুড়ে দিয়েছেন ম্যাশ।

দলে সুযোগ না পাওয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে অন্যতম মেহেদী হাসান মিরাজ। দলে না থাকলেও সতীর্থদের জন্য বিশেষ বার্তা দিয়েছেন তিনি। নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পোস্টে শান্তদের শুভকামনা জানিয়ে মিরাজ লিখেছেন, ‘দলের সাথে সরাসরি না থাকলেও একজন সমর্থক ও শুভাকাঙ্খী হিসেবে সবসময় আমিও এই দলেরই একজন...। টি-২০ বিশ্বকাপের এই পথচলায় সবার প্রতি শুভকামনা।’

এছাড়া শেষ মুহুর্তে এসে দল থেকে বাদ পড়া মোহাম্মদ সাউফউদ্দিনও নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পোস্টে সতীর্থদের জন্য জানিয়েছেন বার্তা। বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনের ছবি পোস্ট করে তিনিও লিখেছেন, শুভকামনা বাংলাদেশ দলের জন্য।

এছাড়া দলের সতীর্থদের জন্য শুভ কামনা জানিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও। নিজের ফেসবুক ওয়ালে তিনিও দলের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘ফি-আমানিল্লাহ...ইনশাআল্লাহ এই আসন্ন বিশ্বকাপে আমরা ভালো করব..আমার সকল ভাইদের জন্য শুভ কামনা’।

শুধু তারাই নয়, দলের অন্যান্য খেলোয়াড় থেকে শুরু করে অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সকলেই জানিয়েছেন শুভকামনা। কিন্তু ভক্ত-সমর্থকদের মধ্যে যেন ক্ষোভের কমতি নেই। দল গঠন থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স, সবমিলিয়ে যেন তোপের মুখে ক্রিকেট বোর্ড। অনেকেই নিজ নিজ ফেসবুক টাইমলাইনে লিটনকে দলে রাখা এবং মিরাজ-সাইফউদ্দিনকে বাদ দেওয়া নিয়ে নানা সমালোচনা করেছেন।

কেউ কেউ মিরাজকে বাদ দেওয়া নিয়ে ইমরুল কায়েসের সাথে তুলনা করে বলেছেন যে, ইমরুল কায়েসের সাথে ব্যবসাতে নাম লেখানোর পর থেকে মিরাজেরও ইমরুলের মতোই বিসিবির সাথে সম্পর্কে ভাটা পড়েছে। আর এজন্যই তাকে দলে নেওয়া হচ্ছে না। আর সাইফউদ্দিনের বিষয়ে অনেকে বলছেন যে, বিপিএলে এত সুন্দর কামব্যাক করার পরও সাইফউদ্দিনকে দলে না রাখাটা অযৌক্তিক। আর সবমিলিয়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেই চলেছেন ভক্ত-সমর্থকরা।

তবে এই ক্ষোভ দলের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে পারে বলে শঙ্কিত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, পারিপার্শ্বিক সবকিছু দলের জন্য এক ধরনের চাপ তৈরি করে। আর বর্তমানে এই পরিস্থিতিতে দল যত চাপমুক্ত থাকবে ততই ভালো পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে।

উল্লেখ্য, আগামী ১ জুন থেকে শুরু হবে টি-২০ বিশ্বকাপের নবম আসর। আর ৮ জুন নিজেদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ দল। আসরে তাদের প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ শ্রীলংকা।

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড
লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী অনিক, তানভীর ইসলাম, শেখ মাহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ (সহ-অধিনায়ক), মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও তানজিম হাসান সাকিব। রিজার্ভ: হাসান মাহমুদ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব।


ক্রিকেট   বিসিবি   বাংলাদেশ ক্রিকেট   আইসিসি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন