আগামী ১০ ডিসেম্বরকে
ঘিরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ৯ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী
লীগ সমাবেশ ডেকেছে। এর ফলে একটি সহিংসতার শঙ্কা নতুন করে দেখা দিয়েছে বলে রাজনিতিক
বিশ্লেষকরা বলছেন। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে ১০ ডিসেম্বর তাদের অবস্থান সম্পর্কে একেকবার
একেক কথা বলে হচ্ছে। প্রথমে বলা হয়েছিল যে, ১০ ডিসেম্বরের পর থেকে খালেদা জিয়ার কথা
দেশ চলবে, এ সরকারের কথা দেশ চলবে না। এরপর এটি সংশোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা
ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ঘোষণা করেন যে, ১০ ডিসেম্বর কিছুই হবে না। এটি অন্য মহাসমাবেশের
মত একটি মহাসমাবেশ হিসেবেই বিএনপি বিবেচনা করছে। কিন্তু গতকাল তিনি আবার সুর পাল্টেছেন।
তিনি বলেছেন, ১০ ডিসেম্বরের পর থেকে এক দফা আন্দোলন শুরু হবে। ১০ ডিসেম্বর বিএনপির
পরিকল্পনা কি এটি বিএনপির কেউই খোলাসা করে কিছু বলছে না। বিএনপির নেতারা বিষয়টি নিয়ে
এক ধরনের গোপনীয়তা রক্ষা করে চলেছেন। তবে নয়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশের মধ্যে দিয়ে একটি
জিনিস প্রমাণিত হয়েছে যে, বিএনপির লক্ষ্য রাজপথ। রাজপথ বিএনপি যেকোনভাবে দখল নিতে চায়।
বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে দেখা গেছে যে, ১০ ডিসেম্বরকে ঘিরে বিএনপি ত্রিমুখি
আক্রমণ করতে চায়।
প্রথমত, ঢাকার
সড়কগুলোতে বিএনপি মিছিল সমাবেশের মাধ্যমে দখল করতে চায় এবং এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি
করতে চায় যে, রাজপথ বিএনপির দখলে। বিএনপি এ কারণেই নয়া পল্টনে সমাবেশ ডেকেছে। নয়া পল্টনের
যায়গাটি এমনিতেই অনেক সরু একটি জায়গা। ফলে জনসমাগম যদি বেশি হয় তাহলে নয়া পল্টন পেড়িয়ে
এটি শাহবাগ এবং মতিঝিল পর্যন্ত বিস্তৃত করার একটি পরিকল্পনা বিএনপির আছে। লোকসমাগম
যাই হোক না কেন, মতিঝিল, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বরসহ বিভিন্ন এলাকাগুলোতে
অবস্থান নিয়ে বিএনপি একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।
দ্বিতীয়ত, ১০
ডিসেম্বরের আগেই বাংলাদেশে বড় ধরনের কোন জঙ্গি হামলা ঘটানোর ব্যাপারেও বিএনপির প্রত্যক্ষ
এবং পরোক্ষ মদদ রয়েছে বলে একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে। বিশেষ করে
সাম্প্রতিক সময়ে দুই জঙ্গীর ঘটনার মাধ্যমে জঙ্গীদের নতুন করে উত্থানের ঘটনা আবার প্রমাণিত
হয়েছে। এইসব জঙ্গীরা বিভিন্ন জায়গায় প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ঢাকায় ১০ ডিসেম্বর বা তার আগে
বড় ধরণের নাশকতা তৈরী করে সরকারকে দুর্বল করতে চায়।
তৃতীয়ত আওয়ামী
লীগের সঙ্গে সহিংসতায় জড়াতে চায়। গায়ে পড়ে আওয়ামী লীগের সাথে সহিংসতার পরিকল্পনাও বিএনপির
রয়েছে। এরমাধ্যমে লাশ পড়বে, পরিস্থিতি সংঘাতময় হয়ে উঠবে। মোট কথা হলো বিএনপি একটি
সনহিংসু পরিস্থিতি তৈরী করতে চান, যেটি মাধ্যমে তারা একদফা আন্দোলনের সুযোগ সৃষ্টি
করতে চায়। বিএনপির নেতারা বলছেন সরকারকে আর সময় দেয়া যায় না, কাজেই ডিসেম্বর মাসেই
চূড়ান্ত আন্দোলনটি দৃশ্যমান করতে চায়। আর এ লক্ষেই দশ ডিসেম্বরটি তাদের জন্য টার্নিং
পয়েন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিএনপির বিভিন্ন নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে তারা যদি দশ ডিসেম্বর
যদি একটি বা একাধিক লাশ পড়ে তাহলেই পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। আর সে লক্ষ নিয়েই বিএনপি
আগাচ্ছে।
বিএনপি ১০ ডিসেম্বর ত্রিমুখী আক্রমণ
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।