সরকারবিরোধী আন্দোলনে মাঠে অবস্থান করছে বিএনপি। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় দলটি। সে দাবিতে আন্দোলন করছে তারা। কিন্তু আন্দোলনে নেমে দাবি আদায় কোণঠাসা হয়ে পড়ছে বিএনপি। ইতোমধ্যে সারাদেশে গণসমাবেশ করেছে। গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগ মাঠে গণসমাবেশ করেছে দলটি। এর আগে বিএনপি ঘোষণা করেছিল যে, ১০ ডিসেম্বর তারা সরকারের পতন ঘটাবে। ১০ ডিসেম্বরের পর বিএনপি সরকার গঠন করবে এবং সেই সরকারের সরকার প্রধান হবেন বেগম খালেদা জিয়া। বেগম জিয়ার কথাই দেশ চলবে। কিন্তু ১০ ডিসেম্বরের আগেই বিএনপির অতি উৎসাহ নেতাকর্মীরা অনুমতি না থাকার পরও নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে গিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থল থেকে সেদিন দলটির একাধিক সিনিয়র নেতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন এবং পরবর্তীতে দলের মহাসচিব এবং স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য মির্জা আব্বাসও গ্রেফতার হন।
মির্জা ফখরুলের গ্রেফতারের ঘটনায় বিএনপি অনেকটা নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়েন। উল্লেখ্য যে, মির্জা ফখরুল ইসলামকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার অত্যন্ত আস্থাভাজন বলে মনে করা হয়। তারেক জিয়া লন্ডন থেকে যেভাবে নির্দেশনা দেন মির্জা ফখরুল সেভাবে দল পরিচালনা করেন। ফখরুলসহ দলের সিনিয়র একাধিক নেতা গ্রেফতার হলেও ঢাকায় সমাবেশ করে বিএনপি। ওই সমাবেশ থেকে দলটির সংসদ সদস্যরা জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন এবং জাতীয় পার্টিকেও পদত্যাগ করতে আহ্বান জানান। কিন্তু জাতীয় পার্টি পদত্যাগ কবরে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। উল্লেখ্য যে, বিএনপি-জাতীয় পার্টি জোট গঠন করার একটা গুঞ্জন উঠেছিল। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের সরকারের সমালোচনায় সরব ছিলেন। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে রাজনীতিতে কার্যত তিনি নিষ্ক্রিয়।
এদিকে বিএনপির আন্দোলনের সাথে একাত্মতা জানিয়েছে নব গঠিত রাজনৈতিক জোট গণতন্ত্র মঞ্চ। কিন্তু নাম সর্বস্ব দল দিয়ে গঠিত এই রাজনৈতিক জোট এখন পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলনে কোনো ধরনের সাড়া ফেলতে পারেনি। বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ের আন্দোলনের মধ্যেই আগামীতে দেশের সব নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা করেছে জাতীয় পার্টি। অন্যদিকে সমমনা ২২ টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের ব্যাপারে চূড়ান্ত রূপরেখার কথা শোনা গেলেও এখন পর্যন্ত বাস্তবায়নের মুখ দেখা যায়নি। এদিকে বিএনপির আন্দোলনের ব্যাপারে সরকারের কঠোর অবস্থান এবং দেশব্যাপী ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক পাহারা সব মিলিয়ে বিএনপি এখন কোণঠাসা। এমন বাস্তবতায় এখন দেখা বিষয় আগামী ৩০ ডিসেম্বর বিএনপি সফল গণমিছিল করতে পারে কিনা।
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন।
শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপিকে উপহাস করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে তারা লিটলেট বিতরণ কর্মসূচিতে নেমে এসেছে। এবার বুঝুন তাদের অবস্থা।
তিনি বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতার কারণেই আজ দেশের এত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি হয়েছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর কাছে আবেদন করে বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন, কিন্তু বিএনপি এবং মির্জা ফখরুল বাকশালকে গালিতে পরিণত করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমও লিখছে ভারত বিরোধিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখবে বিএনপি। ভারত প্রশ্নে এখন মধ্যপন্থা নিতে চায় বিএনপি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্রের কোনো ঘাটতি নেই, সংসদ এবং সংসদের বাইরেও সরকারের বিরোধিতা জারি আছে। সরকার কোনো দল বা গোষ্ঠীর ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে না। গণতন্ত্রের বিচারে বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন। শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।