ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

২০২৩ সালে বিশ্ব পরিস্থিতির সম্ভাবনা

প্রকাশ: ১১:৩৪ এএম, ০১ জানুয়ারী, ২০২৩


Thumbnail

২০২০ সালে বিশ্বের অধিকাংশ অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে। ২০২১ সাল থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার শুরু হয়। অনেক দেশই সে বছর ঘুরে দাঁড়ায়। ধারণা করা হয়েছিল, ২০২২ সালে এই পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া অনেকটাই গতি পাবে। কিন্তু মানুষ ভাবে এক আর হয় আরেক।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালালে বিশ্ব পরিস্থিতি নতুন মোড় নেয়। শুরু হয় নানা ধরনের সংকট, ইংরেজিতে যাকে বলা হয় ‘পলিক্রাইসিস’। ইতিহাসবিদ অ্যাডাম টুজ এই শব্দবন্ধটি জনপ্রিয় করে তোলেন। বাস্তবতা হলো, ২০২৩ সালে যুদ্ধজনিত সংকট অবসানের লক্ষণ তো নেই, বরং পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।

আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামষ্টিক অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক রোয়েল বিটসমা এএফপিকে বলেন, এই শতকের শুরু থেকেই সংকট বাড়তে শুরু করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তরকালে আর কখনো পরিস্থিতির এতটা অবনতি হয়নি।

২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় বিশ্বের অধিকাংশ দেশ কোভিডজনিত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নেয়। তখন হঠাৎ করেই মানুষের চাহিদা বেড়ে যায়। এত দিন নানা ধরনের বিধিনিষেধের কারণে মানুষ প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করেনি। অনিশ্চয়তার মধ্যে সেটাই স্বাভাবিক। হঠাৎ করে কেনাকাটা বেড়ে গেলে মূল্যস্ফীতি বাড়তে শুরু করে। সেই বাস্তবতায় বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলে, অর্থনীতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে, ফলে এই মূল্যস্ফীতি সাময়িক। কিন্তু সেই আশায় গুড়ে বালি। রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করলে জ্বালানি ও খাদ্যের দাম আকাশ স্পর্শ করে। এরপর তো ইতিহাস-বিশ্বের দেশে দেশে রেকর্ড মূল্যস্ফীতি।

এই পরিস্থিতিতে অনেক দেশের মানুষ বিপাকে পড়েছে, কারণ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে একই হারে মজুরি বাড়েনি। এতে মানুষকে পারিবারিক ব্যয় কমাতে হয়েছে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের মূল দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। উচ্চ মূল্যস্ফীতির জমানায় তারাও বসে থাকেনি। ধাপে ধাপে নীতি সুদহার বাড়াতে থাকে তারা। এতে সমাজে অর্থপ্রবাহ কমে যায়। যাদের নিতান্ত প্রয়োজন আছে, কেবল তারাই ঋণ নেয় তখন। মানুষের হাতে ব্যয় করার মতো অর্থের টান পড়ে। চাহিদা কমে যায়।

নীতি সুদ বৃদ্ধির কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতির হার কমে এসেছে। কিন্তু পূর্বাভাস হচ্ছে, আগামী বছর এসব দেশ মন্দার কবলে পড়বে। অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) বলছে, জি-২০ ভুক্ত ও উদীয়মান দেশগুলোতে ২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকে মূল্যস্ফীতির হার ৮ শতাংশে উঠবে, যদিও আগামী বছর তার গড় হার দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এই বাস্তবতায় দেশে দেশে সরকারের প্রতি ওইসিডির আহ্বান, পারিবারিক সহায়তা দেওয়া হোক।

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশ জনগণকে উচ্চ জ্বালানির হাত থেকে বাঁচাতে ৭০৪ বিলিয়ন বা ৭০ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দিয়েছে জার্মানি। তারা এযাবৎ ২৬৪ বিলিয়ন বা ২৬ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়েছে। জার্মান নাগরিকেরা এক জরিপের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, তাঁরা এখন মূলত প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতেই অর্থ ব্যয় করছেন। এ ছাড়া নীতি সুদহার বৃদ্ধির কারণেও জার্মানির ভোক্তা ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

তবে মূল্যস্ফীতি ও নীতি সুদহার—উভয়ই চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে নীতি সুদ বৃদ্ধির হার হ্রাস করেছে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ ও ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে এখনই নীতি সুদহার হ্রাসের পক্ষে নয় তারা। এমনকি প্রয়োজনে তা আরও বাড়াতে হতে পারে বলে মনে করে তারা। তবে বৃদ্ধির হার কমে আসবে।

অর্থনীতিবিদেরা ধারণা করছেন, জার্মানি ও ইতালি মন্দার কবলে পড়বে। যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ইতিমধ্যে সংকুচিত হতে শুরু করেছে। ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল মনে করছে, ইউরো অঞ্চল ২০২৩ সালে স্থবিরতার কবলে পড়বে।
তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এত কিছুর পরও মনে করছে, বিশ্ব অর্থনীতি ২০২৩ সালে সম্প্রসারিত হবে। প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ২ দশমিক ৭ শতাংশ, আর ওইসিডির পূর্বাভাস, প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ২ শতাংশ।

গত নভেম্বর মাস পর্যন্ত চীন একভাবে শূন্য কোভিড নীতি অনুসরণ করেছে। সম্প্রতি শ্রমিক ও জন বিক্ষোভের মুখে তারা শূন্য কোভিড নীতি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয়। ফলে সেখানে চাহিদা বাড়বে। এ ছাড়া তারা ঘোষণা দিয়েছে, আগামী ৮ জানুয়ারি থেকে বিদেশ থেকে এলে আর নির্জন আবাসে থাকতে হবে না। ফলে চীন আরও উন্মুক্ত হচ্ছে।

রোয়েল বিটসমা মনে করেন, আগামী পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। এএফপির সংবাদে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২৬ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। আর পুনবিমা কোম্পানি সুইস রির তথ্যানুসারে, কেবল হারিকেন ইয়ানের কারণে ক্ষতি হয়েছে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। পাকিস্তানের বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৩ হাজার কোটি ডলার।

এবারের কপ ২৭-এ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত দেশগুলোর সাহায্যার্থে তহবিল গঠনের অঙ্গীকার করেছে দেশগুলো। কিন্তু জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি। এই বাস্তবতায় ভবিষ্যৎ ভালো নয় বলেই মনে করেন বিশ্লেষকেরা।
বিটসমার মতে, জলবায়ু পরিবর্তন এখন সবচেয়ে বড় সংকট, যা অনেকটা স্লো মোশনের মতো করে মানবসভ্যতার দিকে ধেয়ে আসছে।

২০২৩ সালে অর্থনীতি

সামগ্রিকভাবে, বৈশ্বিক অর্থনীতি নিয়ে গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি হতাশাবোধ করছে মানুষ। গড়ে মাত্র ৪৬% বিশ্বাস করে যে বৈশ্বিক অর্থনীতি পরের বছর শক্তিশালী হবে, গত দুই বছরের তুলনায়। উন্নতি, চীন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৭৮% এবং ৭৬% যথাক্রমে ভাল সময়ের প্রত্যাশা করে, তারা সবচেয়ে আশাবাদী।

এই হতাশাবাদের কারণগুলো স্পষ্ট। বৃহৎ সংখ্যাগরিষ্ঠরা জীবনযাত্রার ব্যয় আশা করে (৭৯% দাম বৃদ্ধির আশা করে, ৭৫% উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির হার দেখার আশা করে), বেকারত্বের মাত্রা (৬৮%), এবং সুদের হার (৭৪%) বৃদ্ধি পাবে।

আরও উদ্বেগজনকভাবে, প্রায় অর্ধেক (৪৬%) মনে করে যে তাদের দেশকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে জরুরি তহবিল দিয়ে জামিন দিতে হবে, দক্ষিণ আফ্রিকা (৭৮%) এবং আর্জেন্টিনা (৭০%) বিশেষভাবে চিন্তিত। বিশ্বের প্রধান স্টক মার্কেটগুলি ক্র্যাশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বের ১৫% লোক মনে করে যে এটি ঘটতে পারে।

২০২৩ সালে বিশ্ব নিরাপত্তা

২০২২ সালে বিশ্বের বিভিন্ন অংশে সক্রিয় সংঘাতপূর্ণ অঞ্চল এবং অন্যান্য অঞ্চলে আন্তর্জাতিক উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব নিরাপত্তা নিয়ে সবার মনেই উদ্বেগ ছিল।

এই ধরনের সংঘাত উদ্বেগ বাড়িয়েছে যে বিশ্বের কোথাও পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হবে। প্রায় অর্ধেক (৪৮%) এখন মনে করে যে এটি নিছক সম্ভাবনার পরিবর্তে একটি সম্ভাব্য দৃশ্য, যা আমরা গত বছর এই সময় দেখেছি । এই উদ্বেগ ইন্দোনেশিয়া (৬৯%) পাশাপাশি পেরু এবং কলম্বিয়াতে (উভয় ৬২%) বেশি।

বিদেশী সরকারের হ্যাকাররা বিশ্বব্যাপী আইটি বন্ধ করে দেবে। প্রায় অর্ধেক মনে করে যে একটি দুর্বৃত্ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রোগ্রাম যা বন্ধ করা যাবে না তা তাদের দেশে উল্লেখযোগ্য বিপর্যয় ঘটাবে যদিও, উত্সাহজনকভাবে, এই অনুপাতটি গত বছর থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে (১৫ শতাংশ পয়েন্ট নীচে)।

অনেকেই মনে করছেন ২০২৩ সালে পৃথিবীতে গ্রহাণু হামলার সম্ভাবনা রয়েছে। যেখানে  আবার অনেকের ধারণা যে এলিয়েন পৃথিবীতে আসবে।

২০২৩ সালে পরিবেশ

বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ বিশ্বাস করে যে আমরা২০২৩ সালে আরও জলবায়ু পরিবর্তনের আরও খারাপ পরিণতি দেখতে পাব। আগামী বছর বিভিন্ন দেশেরআরও চরম আবহাওয়ার ঘটনা ঘটবে। অনেক দেশ - বিশেষ করে ইউরোপ জুড়ে - জলবায়ু পরিবর্তন রোধে প্রযুক্তির ভূমিকা সম্পর্কে হতাশাবাদী৷ গ্রেট ব্রিটেন, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, পোল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, হাঙ্গেরি এবং রোমানিয়ার ২০% এরও কম লোক মনে করে যে এটি সম্ভবত একটি যুগান্তকারী প্রযুক্তি তৈরি হবে যা জলবায়ু পরিবর্তনকে থামিয়ে দেবে। জাপানিরাও এই এই বিষয়ে  হতাশাবাদী।

২০২৩ সম্ভবত রেকর্ডের সবচেয়ে উষ্ণ বছর হবে এবং দেশের কিছু অংশ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে কারণ আসন্ন বছর একটি চরম আবহাওয়া ঘটনা.

দশজনের মধ্যে চারজনের বেশি (গত বছরের ৩৯% থেকে ৪৫% বেশি) তাদের দেশের একটি বড় শহরে একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশা করছে। এই ইস্যুতে দেশের বৈচিত্র্যের একটি বিশেষভাবে বিস্তৃত  রয়েছে, উদ্বেগের সাথে ইন্দোনেশিয়ায় উচ্চ ৭%, তুরস্কে ৬৬% এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৬৫% আয়ারল্যান্ড, হাঙ্গেরি এবং ইস্রায়েলে ২৫%এর নিচে।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বড় অগ্রগতির প্রত্যাশা তুলনামূলকভাবে কম: কোভিড-১৯ মহামারীর আগে ২০১৯ সালের তুলনায় যারা কম উড়তে দেখেন এমন লোকের সংখ্যা গত বছরের ৪৫%থেকে কমে এখন ৪২% হয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি বিদেশী ভ্রমণের অভ্যাস পুনরায় শুরু করার ইচ্ছা দ্বারা চালিত কারণ কোভিডের বিস্তার সীমিত করার চেষ্টা করার জন্য প্রবর্তিত নিয়ম এবং বিধিনিষেধগুলি বিশ্বজুড়ে শিথিল করা হয়েছে। মাত্র এক-তৃতীয়াংশ মনে করেন যে সাইকেলের সংখ্যা তাদের রাজধানী শহরে গাড়ির সংখ্যার চেয়ে বেশি হবে (34%) অথবা এমন একটি যুগান্তকারী প্রযুক্তি তৈরি হবে যা জলবায়ু পরিবর্তনকে থামিয়ে দেবে (৩২%)।

২০২৩ সালে সমাজ

প্রতি দশজনের মধ্যে ছয়জন পরের বছর তাদের দেশে আর কোন কোভিড-১৯ লকডাউনের প্রত্যাশা করেন না কারণ লোকেরা কিছুটা স্বাভাবিকতায় ফিরে আসে। চীন এবং দক্ষিণ কোরিয়ায়, জরিপকৃত প্রায় অর্ধেক লোক (যথাক্রমে ৪৩% এবং ৪৪%) মনে করে যে এটিই হবে। যেখানে ইন্দোনেশিয়ায়, বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ (৮২%) খুব আত্মবিশ্বাসী যে তারা ২০২৩ সালে আর লকডাউনের অভিজ্ঞতা পাবে না।

কোভিড দ্বারা প্রয়োগ করা কাজের ধরণগুলির পরিবর্তনগুলি কী মাত্রায় থাকবে তা এখনও স্পষ্ট নয় - তিনজনের মধ্যে মাত্র একজন (৩৭%) বিশ্বাস করেন যে তাদের দেশে ব্যবসার জন্য চারটি বাস্তবায়ন করা স্বাভাবিক হয়ে উঠবে- ২০২৩-এ দিনের কর্ম সপ্তাহ। ভার্চুয়াল জগতে আরও অনেক মানুষ তাদের জীবন যাপন করবে এমন ধারণার অনুপাত গত বছরের থেকে কার্যত অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৬%।

বিশ্বব্যাপী, প্রায় তিনজনের মধ্যে একজন বলে যে তাদের দেশের লোকেরা একে অপরের প্রতি আরও সহনশীল হয়ে উঠবে তবে একটি দেশ থেকে অন্য দেশে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। ভারতে, এটি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে (এখনও ৬৫% যেখানে গতবছর তা ছিলো ৬০%), এবং, যদিও এটি এখনও কম, ফ্রান্সে শতাংশটি গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০২২ সালে ৯% থেকে ২০২৩ সালে ১৭%। জাপান এখন কেবলমাত্র ১২% মানুষ মনে করে যে লোকেরা একে অপরের প্রতি আরও সহনশীল হয়ে উঠবে।

২০২৩ সাল   বিশ্ব পরিস্থিতি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ট্রাম্পের খোঁচায় বাইডেন, মাদক পরীক্ষার দাবি

প্রকাশ: ১০:৩৪ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে আগামী ২৭ জুন প্রথম দফায় বিতর্কে অংশ নিতে রাজি হয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং নির্বাচনে তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু এ বিতর্কের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মাদক নিচ্ছেন কি না, তা পরীক্ষার দাবি করেছেন ট্রাম্প। গত শুক্রবার মিনেসোটায় দলীয় এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে এ দাবি করেন।

গত মার্চে বাইডেনের স্টেট অব দ্য ইউনিয়নের ভাষণ উল্লেখ করে সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট মাদক পরীক্ষার দাবি তোলেন। তিনি বলেন, স্টেট অব দ্য ইউনিয়নের ভাষণের সময় বাইডেন যেন ঘুড়ির মতো উড়ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি এই ব্যক্তির সঙ্গে বিতর্কে অংশ নিতে চাই। কিন্তু তার আগে আমি তাঁর মাদক পরীক্ষা করার দাবি করব।’ ট্রাম্প অবশ্য নিজে এ পরীক্ষা করাবেন কি না, তা বলেননি।

স্টেট অব দ্য ইউনিয়নের দীর্ঘ ভাষণের সময় ৮১ বছর বয়সী বাইডেন জোরে ও দ্রুত কথা বলছিলেন। ওই বক্তব্যের পর রিপাবলিকানদের ডক্টরস ককাসের কো-চেয়ার গ্রেগ মারফি বাইডেনের সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ৭৭ বছর বয়সী ট্রাম্পের পক্ষ থেকে অবশ্য বাইডেনের মাদক পরীক্ষা চাওয়ার বিষয়টি নতুন নয়।

এর আগে, ২০২০ সালে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে অভিযোগ তুলে বলা হয়, ডেমোক্র্যাটদের দলীয় নির্বাচনের সময় বাইডেনের আচরণ স্বাভাবিক ছিল না। তিনি বাইডেনের সঙ্গে বিতর্কের আগে তাই তাঁর মাদক পরীক্ষা করার দাবি করেছিলেন। অবশ্য ওই সময় ট্রাম্প বা বাইডেন কেউই মাদক পরীক্ষা করাননি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে ২৭ জুন এবং ১০ সেপ্টেম্বরের দুই বিতর্ক অত্যন্ত উত্তেজনাকর মুহূর্ত হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলেছে, তাদের আটলান্টা স্টুডিওতে প্রথম বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে কোনো দর্শকের উপস্থিতি থাকবে না। বিতর্কটি উপস্থাপনা করবেন জেক ট্যাপার ও ডানা ব্যাশ। ট্রাম্প অবশ্য জেক ট্যাপারের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন।

মার্কিন নির্বাচন সামনে রেখে দ্বিতীয় বিতর্কটির আয়োজন করছে সংবাদমাধ্যম এবিসি। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর এ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। বিতর্কে অংশ নেওয়ার জন্য ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেন এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। দুই প্রার্থীই সে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।


যুক্তরাষ্ট্র   প্রেসিডেন্ট নির্বাচন   ডোনাল্ড ট্রাম্প   জো বাইডেন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বাড়িতে বসেই ভোট দিলেন মনমোহন সিং

প্রকাশ: ০৮:২৯ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভারতে চলছে লোকসভার নির্বাচন। গত ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এ নির্বাচন চলবে আগামী ১ জুন পর্যন্ত। এবারের নির্বাচনে দেশটির বৃদ্ধ নাগরিকরা বাড়ি থেকে ভোট দিচ্ছেন। তারই অংশ হিসেবে বাড়িতে বসে ভোট দিয়েছেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।

দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ভোট দেওয়ার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে ভোট দিয়ে নিজের হাতের আঙ্গুলের কালি দেখাচ্ছেন তিনি। তবে ছবিটিতে মনমোহনকে দেখে শুরুতে চেনাই যাচ্ছিল না।

বৃদ্ধ বয়সের পুরো ছাপ পড়েছে তার শরীরে। ৯২ বছর বয়সী মনমোহন বয়সের ভারে যেন নুয়ে পড়ছেন। তবে তা সত্ত্বেও নিজের ভোটাধিকারটি প্রয়োগ করেছেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ব্যক্তি লিখেছেন, ৯২ বছর বয়সেও নিজের ভোট দিচ্ছেন মনমোহন। তাকে দেখে তরুণদের অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত।

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) থেকে দিল্লির প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা বাড়ি থেকে ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেন। এই প্রক্রিয়ায় ভোট দিচ্ছেন বয়স্ক ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিরা। এটি আগামী ২৪ মে পর্যন্ত চলবে।


ভোট   মনমোহন সিং  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

আট মাসের বেতনের সমান বোনাস দিচ্ছে বিশ্বের সেরা এয়ারলাইনস

প্রকাশ: ০৬:৪১ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

কর্মীদের বোনাস দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে বিশ্বের সেরা বিমান কোম্পানি সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস। সিএনএনের সংবাদে বলা হয়েছে, যে মানদণ্ড তারা স্থাপন করেছে, তার উচ্চতা অনেক বেশি।

বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের এক কর্মী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মী সিএনএনকে এ তথ্য দিয়েছেন যে, ভালো মুনাফা করার কারণে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ তার কর্মীদের আট মাসের বেতনের সমান বোনাস দেবে। কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, এ তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশিত হওয়ার নয়।

এ বিষয়ে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের সঙ্গে সিএনএন যোগাযোগ করলেও তাৎক্ষণিকভাবে তারা মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

গত বুধবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আর্থিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস। সেখানে তারা বলেছে, সেই অর্থবছরে বিমান সংস্থাটি ১৯৮ কোটি ডলার নিট মুনাফা করেছে।

আয়ের বিবরণীতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস বলেছে, উত্তর এশিয়ার দেশগুলো, যেমন চীন, হংকং, জাপান ও তাইওয়ানের মতো দেশ মহামারির পর তাদের সীমান্ত পুরোপুরি খুলে দিয়েছে। সে কারণে এসব দেশে ভ্রমণ বেড়েছে। মানুষের ভ্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসও বড় অঙ্কের মুনাফা করেছে।

সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস গত অর্থবছরের জন্য স্ক্রাইট্র্যাক্স ওয়ার্ল্ড এয়ারলাইনস অ্যাওয়ার্ডস প্রণীত ক্রমতালিকায় বিশ্বের সেরা বিমান সংস্থার পুরস্কার পেয়েছে। সংস্থাটির প্রণীত ক্রমতালিকায় গত ২৩ বছরের মধ্যে এ নিয়ে পঞ্চমবার তারা শীর্ষস্থান পেয়েছে।

সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোহ চুন ফং বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটির সব কর্মী নিরন্তর কাজ করায় এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তাঁদের এই শ্রম–ঘামের কারণে মহামারির পর সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস বাজারে খুব ভালোভাবে ফিরে আসতে পেরেছে।

তবে শুধু সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস নয়, আরও বেশ কয়েকটি এয়ারলাইনস কর্মীদের উদার হস্তে বোনাস দিচ্ছে। জানা গেছে, দুবাইয়ের এমিরেটস এয়ারলাইনস তার কর্মীদের ২০ সপ্তাহের বেতনের সমপরিমাণ বোনাস দিচ্ছে। সিএনএন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

আয় বিবরণীতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস অবশ্য বলেছে, আগামী অর্থবছরে ব্যবসার জগতে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হতে পারে। তারা বলেছে, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, সামষ্টিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, মূল্যস্ফীতির চাপ ও সরবরাহব্যবস্থায় নানা ধরনের বাধা বৈশ্বিক বিমান পরিবহন শিল্পের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

মহামারির সময় মানুষের যাতায়াতে বিধিনিষেধের কারণে বিমান সংস্থাগুলো বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছিল। সেই বাস্তবতা এখন আর নেই। বিধিনিষেধ প্রায় সবই উঠে গেছে। ফলে বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোও বড় অঙ্কের মুনাফার মুখ দেখছে।


সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস   সিএনএন সংবাদ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইসরায়েলি হামলায় ৮ ফিলিস্তিনি নিহত

প্রকাশ: ০৬:২৪ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের জাবালিয়া শরণার্থী ক্যাম্পের পশ্চিমাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় আট ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছেন। নিহতরা জাবালিয়ার আল-ফালুজা নামক একটি এলাকায় পানি আনতে গিয়েছিলেন।

এক প্রত্যক্ষদর্শী হামলার ব্যাপারে বলেন, “আমরা ফালুজা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলাম, যেটিকে নিরাপদ স্থান হিসেবে ভাবা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে ইসরায়েলিরা সেখানে গোলা ছুড়েছে। আমরা জানি না কোথায় যাব।”

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ হামলার একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

গত কয়েকদিন ধরে জাবালিয়ায় ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা। স্থল হামলা ছাড়াও বিমান থেকে প্রতিনিয়ত সেখানে বোমা ফেলছে তারা।

গাজার মধ্যে যেসব শরণার্থী শিবির রয়েছে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো জাবালিয়া। যুদ্ধের আগে এখানে হাজার হাজার মানুষ থাকতেন। এখনো শরণার্থী শিবিরটিতে অসংখ্য মানুষ রয়েছেন।


ইসরায়েল   ফিলিস্তিন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

আফগানিস্তানে ভূমিধসে ৫০ জন নিহত

প্রকাশ: ০৫:৫৩ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় ঘোর প্রদেশে হড়কা বান-ভূমিধসে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার (১৮ মে) এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ওই প্রদেশের পুলিশ।

শনিবারের বিবৃতিতে ঘোর প্রাদেশিক পুলিশের মুখপাত্র আবদুল রহমান বাদ্রি বলেন, ‘শুক্রবারের হড়কা বান-ভূমিধসে প্রদেশে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন এবং এখনও নিখোঁজ আছেন আরও অনেকে। নিখোঁজদের সন্ধানে তল্লাশি শুরু হয়েছে।’

বিবৃতিতে আবদুল রহমান বাদ্রি আরও জানান, শুক্রবারের হড়কা বানে প্রায় ২ হাজার বাড়িঘর সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং আরও কয়েক হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কয়েক হাজার গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে, শত শত একর কৃষিজমির ফসল নষ্ট হয়েছে, শতাধিক সেতু ও কালভার্ট ধ্বংস হয়েছে এবং হাজার হাজার গাছ উপড়ে গেছে। 

বানের পানি, বাড়িঘর-গাছ-পাথরের ধ্বংসস্তূপ জমা হয়ে প্রদেশের অধিকাংশ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।


আফগানিস্তান   ভূমিধস  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন