ইনসাইড পলিটিক্স

১৪ দলের শরিক দলগুলোতে অসন্তোষ


Thumbnail

সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপি ও সমমনা জোটবদ্ধ দলগুলোর বিভিন্ন কর্মসূচি দেখা গেলেও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের তেমন কোনো কর্মসূচি চোখে পড়ছে না। ফলে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন ওঠেছে, ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোকে এখন কি আর প্রয়োজন মনে করছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ? নাকি আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরিক দলগুলোকে বাদ দিয়ে এককভাবেই নির্বাচনের চিন্তা করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ? আবার কেউ কেউ বলছেন, বিভিন্ন মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে বা পুরোনো মামলা নতুন করে সামনে এনে শরিক দলগুলোকে চাপে রেখেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ফলে শরিক দলগুলোতে ছড়িয়েছে অসন্তোষের ডালপালা।

সূত্র জানায়, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার জালে আটকে পড়ায় অস্বস্তিতে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের দুই শরিক দল- বিকল্পধারা বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের শীর্ষ নেতারা। এছাড়াও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে ১৪ দল নিয়ে তাদের হতাশার কথা। যদিও সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া এক সময়ে ১৪ দলীয় জোটের হয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব  পেয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে প্রাক্তন মন্ত্রীর প্রতি বর্তমান শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর উদাসীনতা তাকে হতাশ করেছে বলেও জানিয়েছে একাধিক সংশ্লিষ্ট সূত্র।      

এছাড়াও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার জালে আটকে পড়ায় তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সাংসদ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। অন্যদিকে কিছুদিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এখন মুখ খুলেছেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের দুই শীর্ষ নেতা- মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান এমপি এবং মাহী বি. চৌধুরী এমপি। এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের বাকি শরিক দলগুলোর মধ্যেও দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া । 

তাদের মতে, নানান কারণে এমনিতেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটের শরিকদের টানাপোড়েন চলছে। দিন দিন দূরত্ব বাড়ছে। এর মধ্যে এ ধরনের মামলা-মোকদ্দমা প্রমাণ করে ক্ষমতাসীনরা ক্রমেই একা হয়ে পড়ছে। অবশ্য আওয়ামী লীগ এখন শরিকদের প্রয়োজন মনে করে কিনা- এমন প্রশ্নও তুলেছেন ১৪ দলীয় জোটের কেউ কেউ।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের শরিক সাম্যবাদী দলের (এমএল) সাধারণ সম্পাদক এবং সাবে শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ‘আমাদের রাজনীতি করার, আমরা রাজনীতি করি। বিএনপি যখন জঙ্গিবাদের সাথে, সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী শক্তির সাথে আঁতাত করেছে। তারা বাংলা ভাইকে প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনীতিকরণ করেছে। বিএনপির ছত্রছায়ায় যখন সারাদেশে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদের উত্থান হয়েছে, তখন বামপন্থীরা বাধ্য হয়েছিল আওয়ামী লীগের সাথে জোট করার জন্য। সেদিন বিএনপি যদি মৌলবাদীদেরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় না দিতো, তাহলে তো আজকে এই পরিস্থিতি হতো না।’

১৪ দলীয় জোট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আর কথা বলে কি হবে? মন্তব্য করেই বা কি হবে? ১৪ দলীয় জোট আছে কি না- তাই তো জানি না। কিছু দিবস পালন করা ছাড়া এই জোটের কাজ কী তা-ও বুঝি না। আসলে আওয়ামী লীগ এখন আর শরিকদের প্রয়োজন মনে করে কি না- সেটাই বড় প্রশ্ন।’

সূত্র জানায়, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর দুই ছেলেসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দুদক। এর আগে দুদক গত ২৬ জানুয়ারি একই অভিযোগে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান ও তার স্ত্রী উম্মে কুলসুম মান্নান এবং তাদের দুই মেয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। একই দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র মাহী বি চৌধুরী এবং তার স্ত্রী আশফা হক লোপার বিরুদ্ধে আমেরিকায় অর্থ পাচারের অভিযোগ এনে ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর তাদের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ দেয় দুদক।

এসব বিষয়ে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী দেশের বহুল প্রচারিত একটি গণমাধ্যমকে জানান, সরকারের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা স্বাধীনতাবিরোধী এবং তরিকতবিরোধী ও সহি মতবাদবিরোধী অপশক্তি মিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার দূরত্ব সৃষ্টি করতে চায়। এর অংশ হিসাবেই দুদককে দিয়ে তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা করানো হয়েছে। এই মামলার মূল টার্গেট তার দুই ছেলে নয়, টার্গেট মূলত তিনি। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চলছে। এটা অনেকদিন ধরেই চলছে। ৪০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ইতোমধ্যে ৬৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন তিনি। আয়কর নথিতেও এ বিষয় উল্লেখ আছে। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে অর্থ আত্মসাৎ বা অর্থ পাচারটা হলো কীভাবে? 

মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান ওই গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে মহাজোট গঠন করে সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন করেছি। আমি এবং আমাদের দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র মাহী বি. চৌধুরী দুটি আসন থেকে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছিল, আমাদের দুজনেরই একটি পরিচ্ছন্ন অতীত আছে। আমাদের রাজনীতি অত্যন্ত পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন। আমরা হাওয়া ভবনের দুর্নীতির প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি থেকে বেরিয়ে এসে অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে বিকল্পধারা বাংলাদেশ গঠন করেছি। দুর্নীতি করে অর্থ আয় করতে চাইলে তো ওই সময় বিএনপির সঙ্গে থাকলেই হতো। দল থেকে বেরিয়ে আসার দরকার হতো না। পেছনে একটি অপশক্তি কলকাঠি নাড়ছে। ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চলছে। জোটের শরিকদের ভেতরে আস্থাহীনতা, অবিশ্বাস-এসব তৈরি করার জন্য নেপথ্যে কেউ হয়তো কাজ করছে।’

এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট এখনও বিলুপ্ত করা হয়নি। বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো যেমন ২০ দলীয় জোট ভেঙ্গে দিয়ে বিভিন্ন জোটে বিভাজিত হয়েছে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট এবং শরিক দলগুলোর মধ্যে তেমন কিছু এখনও দেখা যায়নি। তবে রাজনীতিতে অস্থিরতা বিরাজমান করতেই অপশক্তি ১৪ দলীয় জোটবদ্ধ দলগুলোর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির লক্ষ্যে কূটচাল করতে পারে, অসন্তোষ ছড়িয়ে দিতে পারে। আর জোটবদ্ধ শরিক দলগুলোর যেসব নেতাদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা রয়েছে, সেগুলো আইনী ব্যাপার। আইনের মাধ্যমেই সে মামলাজট পরিষ্কার করতে হবে। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, তবে আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও অন্যান্য সমমনা দলগুলো বাম ও ইসলামপন্থী দলগুলোকে নির্বাচনের আগে কাছে টানছে- এটা স্পষ্ট। হয়তো এসব কারণেই বিরোধী ও সমমনা দলগুলোর কূটচালে প্রলোভিত হয়ে ১৪ দলের শরিক দলগুলোতে অসন্তোষ দানা বেঁধে ওঠতে পারে। এসব ব্যাপারে শরিক দলগুলোর নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এখন কেবলই দেখার বিষয় শরিক দলগুলোর ব্যাপারে কি পদক্ষেপ নেয় আওয়ামী লীগ? নাকি এককভাবেই নির্বাচনে আসতে চাইছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ?


১৪ দল   আওয়ামী লীগ   দিলীপ বড়ুয়া   শিল্পমন্ত্রী   সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী   মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান   মাহী বি চৌধুরী   দুদক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

হাইকমান্ডের হাতে বিএনপির ৩০০ নেতার ভাগ্য

প্রকাশ: ০৭:১৯ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

দীর্ঘদিন ধরে চলছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সরকারবিরোধী আন্দোলন। এই আন্দোলনকে ঘিরে নানা কারণে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে এখন পর্যন্ত সাত শতাধিক নেতাকে বহিষ্কার করেছে দলটি। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতারাও রয়েছেন। বহিষ্কার হওয়া এসব নেতারা এবার ভুল স্বীকার করে দলে ফিরতে চান।

এরই মধ্যে ক্ষমা চেয়ে অন্তত তিনশজন আবেদন করেছে দলীয় হাই কমান্ডের কাছে। আবেদনের পর এখন পর্যন্ত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে মাত্র ২০ জনের। বাকিদের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তে অনড় হাইকমান্ড।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্ষমা না পেয়ে কেউ কেউ একাধিকবার আবেদনও করেছেন। ঘুরছেন বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কাছে।

তবে কোনো সংকেত না মিললেও বিএনপির কর্মসূচিতে বহিষ্কৃত অব্যাহতি পাওয়া নেতাদের অনেকেই অংশ নিচ্ছেন।

ক্ষমা না করার কারণ হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, বেশ কয়েকজন একাধিকবার আবেদন করলেও স্থানীয় গ্রুপিং-দ্বন্দ্বের কারণে দলে ফেরানোর সিদ্ধান্ত হচ্ছে না। আবার ঢালাওভাবে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করলে দলে চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়তে পারে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বহিষ্কৃত নেতাদের আবেদন বিবেচনাধীন রয়েছে।

এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় কেন্দ্রীয় জেলা পর্যায়ের ১৪ জনকে বহিষ্কার করে বিএনপি। এর মধ্যে দুজন ছাড়া কেউ বিজয়ী হতে পারেননি। ফলে বাকিদের কেউ কেউ বিএনপিতে ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছেন। ছাড়া ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত বহিষ্কার করা হয়েছে ২০৪ নেতাকে।


হাইকমান্ড   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তারেক কি যুক্তরাজ্যে অবাঞ্ছিত হচ্ছেন?

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রায় ১০ হাজারের বেশি অবৈধভাবে বসবাস করা বাঙালিকে যুক্তরাজ্য ফেরত পাঠিয়েছে। তাদের সেখানে থাকার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের দৈনিক টেলিগ্রাফ এবং স্ট্যান্ডার্ডের খবরে বলা হয়েছে, ১১ হাজার বাংলাদেশী শিক্ষার্থী, ভ্রমণ কিংবা অন্য কোন কাজের পেশায় যুক্তরাজ্যে যান। সেখানে তারা বসবাসের জন্য রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। তবে তাদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। বাকি ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। আবেদন খারিজ হওয়া এসব বাংলাদেশীকে এখন বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন’ চুক্তির আওতায় এসব বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানানো গেছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র ‘ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন’ চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এই চুক্তি অনুযায়ী যারা যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে বসবাস করবেন তাদেরকে দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, তারেককে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার কৌশল হিসেবেই যুক্তরাজ্যের সাথে ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। এই চুক্তির আওতায় শুধুমাত্র অবৈধ ব্যক্তিদেরকেই দ্রুত ফেরত পাঠানো হবে না, বাংলাদেশে দন্ডিত, অপরাধী এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদেশে বসে অপপ্রচারকারীদেরও ফিরিয়ে নানার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এই চুক্তিতে বলা হয়েছে, যারা বাংলাদেশে অপরাধ করে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে যাবে তাদেরকে যুক্তরাজ্য ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করবে এবং তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিল করার জন্য প্রক্রিয়া করবে। সেই বিবেচনায় তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের একটি অন্যতম রাজনৈতিক কৌশল হল, তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে এনে দন্ড কার্যকর করা। ইতোমধ্যে তারেক জিয়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছেন। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেননি এবং আপিল করার সময়সীমাও পেরিয়ে গেছে। এছাড়াও অর্থপাচারের একটি মামলায় হাইকোর্ট তাকে ৭ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত করেছেন। তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ সরকার নানা রকম দেন দরবার করে আসছেন। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে তারেক জিয়াকে দেশে আনা সম্ভব হয়নি।

তারেক এখন যুক্তরাজ্যে আছে রাজনৈতিক আশ্রয়ে এবং রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করা ব্যক্তিকে যে সমস্ত শর্ত এবং নিয়ম মানতে হয় তা মানছেন না বলেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একাধিকবার অধিকার করা হয়েছে। যেমন- লন্ডনে বসে তারেক বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্র এবং সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকম বিষেদাগার করছেন, সরকার পতনের জন্য ষড়যন্ত্র করছেন।

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর অন্তত ৩টি সফরে তারেক জিয়া লন্ডনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিলেন এবং তার নির্দেশে সেখানে সহিংস ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। বাংলাদেশ দূতাবাসেও তারেক জিয়ার নির্দেশে হামলা করা হয়েছিল এবং এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ বলে বাংলাদেশ সরকার মনে করে। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের দূতাবাস তারেক জিয়াকে ফিরিয়ে আনার জন্য কয়েক দফা আবেদন করেছে এবং কূটনৈতিকরা মনে করছেন, তারেক জিয়াকে ফিরিয়ে আনার স্বার্থেই ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে।

তবে কোন কোন মহল বলছে, তারেক জিয়ার বিষয়টি স্পর্শকাতর। তাকে যেহেতু যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া হয়েছে এবং তারেক জিয়া সেই রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের আবেদন সংক্রান্ত চিঠিতে উল্লেখ করেছেন যে, বাংলাদেশে এলে তার জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে সেকারণেই তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে পাঠানোর বিষয়টি এত দ্রুত নাও হতে পারে। তবে বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে এ ব্যাপারে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখবে বলেই জানা গেছে।


তারেক জিয়া   বিএনপি   যুক্তরাজ্য   ফাস্ট ট্র্যাক চুক্তি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপির লিফলেট বিতরণ: কাদের

প্রকাশ: ০১:০০ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন।

শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। 

বিএনপিকে উপহাস করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে তারা লিটলেট বিতরণ কর্মসূচিতে নেমে এসেছে। এবার বুঝুন তাদের অবস্থা।

তিনি বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতার কারণেই আজ দেশের এত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি হয়েছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর কাছে আবেদন করে বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন, কিন্তু বিএনপি এবং মির্জা ফখরুল বাকশালকে গালিতে পরিণত করতে চায়।

তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমও লিখছে ভারত বিরোধিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখবে বিএনপি। ভারত প্রশ্নে এখন মধ্যপন্থা নিতে চায় বিএনপি।                     

সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্রের কোনো ঘাটতি নেই, সংসদ এবং সংসদের বাইরেও সরকারের বিরোধিতা জারি আছে। সরকার কোনো দল বা গোষ্ঠীর ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে না। গণতন্ত্রের বিচারে বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।


বিএনপি   লিফলেট   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। 

বিএনপির একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেছেন, দল এখন আন্দোলনে ব্যস্ত, তবে আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গে সংগঠনের বিষয়টিও সম্পৃক্ত। আন্দোলন এবং সংগ্রাম একসাথেই চলবে। এই অংশ হিসেবেই আমরা দলের নেতৃত্বের পুনর্গঠনের বিষয়টি বিবেচনা করছি। 

বিএনপির এই নেতা বলেন, তারেক জিয়া যখন বলবেন তখনই কাউন্সিল করার জন্য তাদের প্রস্তুতি আছে। তবে বিএনপির একাধিক নেতা আভাস দিয়েছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ তারা একটি সংক্ষিপ্ত কাউন্সিল করতে পারেন এবং সংক্ষিপ্ত কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতৃত্ব পুনর্গঠন করা হতে পারে। 

বিএনপিতে এখন নীতি নির্ধারণী সংস্থা স্থায়ী কমিটিতে পাঁচ সদস্য পদ শূন্য রয়েছে। আবার যারা স্থায়ী কমিটিতে আছেন এ রকম বেশ কয়েক জন এখন গুরুতর অসুস্থ এবং জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। অনেকে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলামের মতো নেতারা এখন এতই অসুস্থ যে তারা কোন রাজনৈতিক দায়িত্ব পালনের মতো অবস্থায় নেই। 

বিএনপির একজন নেতা স্বীকার করেছেন, তারা দলকে সার্ভিস দিতে পারছেন না। কিন্তু বিষয়টি খুব স্পর্শকাতর বলে মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, অসুস্থ অবস্থায় তাদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে অমানবিক। তবে বিএনপির তরুণ নেতারা মনে করেন, এটি মোটেও অমানবিক নয়। একজন পদে থাকা ব্যক্তি যদি দায়িত্ব পালন না করতে পারেন তাহলে তাকে কোন আলঙ্কারিক পদ দিয়ে ওই শূন্যপদ পূরণ করা উচিত। বিএনপির মধ্যে একটি চাপ আছে যে, যারা মাঠের আন্দোলনে সক্রিয়, অপেক্ষাকৃত তরুণ তাদেরকে নেতৃত্বের সামনে আনা হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে তারেক জিয়া এবং বেগম খালেদা জিয়ার মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। 

তারেক জিয়া বিএনপিতে তরুণদেরকে সামনে আনতে চান। তবে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন এ ধরনের ব্যক্তিদেরকে খালেদা জিয়া এখনই দল থেকে বাদ দিতে রাজি নন বলেই বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। এ প্রসঙ্গে বলা যায় যে, রফিকুল ইসলাম মিয়া বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। বিভিন্ন সংকটে তিনি বেগম জিয়ার পাশে ছিলেন। এ কারণেই দীর্ঘদিন রোগশয্যা থাকার পরও তাকে স্থায়ী কমিটিতে রাখা হয়েছে। যদিও তারেক জিয়া তাকে স্থায়ী কমিটি থেকে সরিয়ে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদে দেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার আপত্তির কারণে তিনি সেটি করতে পারেননি। 

একইভাবে ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকারকেও স্থায়ী কমিটিতে না রাখার ব্যাপারে তারেক জিয়ার আগ্রহ আছে। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার অত্যন্ত আস্থাভাজন হওয়ার কারণ তারেক জিয়ার সেই চেষ্টা সফল হয়নি। আর এ কারণেই তারেক জিয়া কাউন্সিল করছেন না বলে অনেকে মনে করেন। কারণ এখন কাউন্সিল হলে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাকে সমঝোতা করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়ার পছন্দের অনেক ব্যক্তিকে দলের নেতৃত্ব রাখতে হবে। সেটি তারেক জিয়া চান। খালেদা জিয়ার হাত থেকে বিএনপির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিলেও এখন তারেক বিএনপিকে খালেদা জিয়ার প্রভাব মুক্ত করতে পারেনি। তাই কাউন্সিলের জন্য তার অপেক্ষা। তবে একাধিক সূত্র বলছে, দলের নেতাকর্মী মধ্যে কাউন্সিল করে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য একটি বড় ধরনের চাপ আছে।


কাউন্সিল   বিএনপি   তারেক জিয়া   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   বেগম খালেদা জিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

জামিনে কারামুক্ত হলেন বিএনপি নেতা

প্রকাশ: ০৯:৩৬ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

এ সময় কারাফটকে তাকে স্বাগত জানাতে শত শত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে হাবিবুর রশিদ হাবিব বলেন, পুরো দেশটাকে কারাগারে পরিণত করেছে এই জালিম সরকার।

তারা শুধু বিএনপি নেতাকর্মী নয়, দেশের জনগণের অধিকার, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সবকিছুকে ধ্বংস করেছে। এই মাফিয়া আর পুতুল সরকার থেকে মুক্তি পেতে আন্দোলনের বিকল্প নাই। সেই আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান হাবিব।

উল্লেখ্য, গত ১৮ এপ্রিল নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে হাবিবুর রশীদ হাবিবকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন আদালত। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তাকে তিন মামলায় ৬ বছর নয় মাসের সাজা দেন আদালত।

এছাড়া দুটি মামলা গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও ছিলো। সব মামলায় জামিন শেষে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

হাবিবুর রশিদ হাবিব   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন