ইনসাইড পলিটিক্স

কাদিয়ানিদের ওপর অগ্নিসন্ত্রাস: বিএনপি-জামায়াতের নতুন ষড়যন্ত্র


Thumbnail

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানি) ওপর অগ্নিসন্ত্রাসী হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার (৬ মার্চ) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সম্প্রতি পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে সরকার জনগণের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য এ ভয়ানক হীন সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করছে।

অন্যদিকে রোববার (১২ মার্চ) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেছেন,‘পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর অগ্নিসন্ত্রাসী হামলা এবং উস্কানি বিএনপি-জামাতের ২০১৩-১৪-১৫ সালের নৈরাজ্যের মতোই এবং ঢাকা ও লন্ডন থেকে তা মনিটর করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বাঁশের কেল্লা’ কারা পরিচালনা করে আপনারা জানেন। সেই বাঁশের কেল্লা  পেজ থেকে এবং কাদিয়ানিদের বিরুদ্ধে ‘ঐক্যপরিষদে’র পক্ষ থেকে রুমিন ফারহানা, বিএনপির সাবেক এমপি হারুন অর রশীদের ফেসবুক পেজ থেকে উস্কানি ছড়ানো হয়েছে। একইসাথে এখানকার যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তার মোটর সাইকেল সংক্রান্ত উস্কানি ছড়িয়েছে, শিবিরের তেঁতুলিয়ার সভাপতি সেও উস্কানি ছড়িয়েছে এবং এখানে যারা যুক্ত ছিলো তাদের বেশিরভাগই বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী। তারা ব্যবহার করেছে অন্য ব্যানার, কিন্তু মূলত: তারা বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মী।’

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর অগ্নিসন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটিয়ে ষড়ষন্ত্রের নতুন জাল বুনতে চেষ্টা করছে বিএনপি-জামায়াত। আবার অন্যদিকে এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে লোক দেখানো নাটকও সাজিয়েছে দলটি। পঞ্চগড়ে সাম্প্রদায়িক গণ্ডগোল লাগিয়ে সারাদেশে একটা গণ্ডগোল লাগানোর চেষ্টা ছিল তাদের। সূত্রগুলো বলছে, জামায়াতের ছাত্র সংগঠন দ্বারা পরিচালিত সামাজিক যোগাযোগ  মাধ্যম ফেইসবুকের পেইজ ‘বাঁশের কেল্লা’র মাধ্যমে আহমদিয়া (কাদিয়ানি) সম্প্রদায়ের ওপর হামলার উস্কানি দেওয়া হয়। এছাড়া পদত্যাগকৃত বিএনপির সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানার ফেইসবুক পেইজ থেকেও এই ধরনের উস্কানির তথ্য পাওয়া গেছে।      

সোমবার (৬ মার্চ) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মির্জা ফখরুল বলেন, এ ঘটনায় সরকার এখন পর্যন্ত প্রায় ৯০ জন বিএনপি সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। রেলমন্ত্রী সুজন পঞ্চগড় সফরে গেলে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সদস্যরা তাকে স্পষ্ট জানান যে, আক্রমণকারীরা তার সঙ্গেই রয়েছেন। সভা মনে করে, এ ঘটনা প্রমাণ করে সরকারের হীন পরিকল্পনা অনুযায়ী আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা এ সাম্প্রদায়িক হামলা সংঘটিত হয়েছে। এ সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই ধারাবাহিকভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর একের পর এক হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটের ঘটনা ঘটছে। যা এ অবৈধ সরকারের ক্ষমতায় অবৈধভাবে টিকে থাকার নীল নকশার অংশ। এ বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করার জন্য দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি দল অতি দ্রুত পঞ্চগড়ে সফর করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

রোববার (১২ মার্চ) দুপুরে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদের নেতৃত্বে একটি দল পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ফুলতলা আহমদনগরে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর পরিদর্শনে যান। বোদা’র সংসদ সদস্য রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, পঞ্চগড় জেলা সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত, জেলার ডিসি মো. জহুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনকালে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত ২, ৩, ৪ মার্চ আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর যে নারকীয় হামলা পরিচালনা করা হয়েছে সেটি সরেজমিনে দেখার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমরা এসেছি। এই জঘন্য হামলা পরিচালনা করার আগে থেকেই কিন্তু উস্কানি ছড়ানো হয়েছে। ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে যেভাবে সরকারি স্থাপনায় আক্রমণ পরিচালনা করা হয়েছিল ঠিক একই কায়দায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মাহফিলকে কেন্দ্র করে আগে থেকে উস্কানি ছড়ানো হয়েছে। উস্কানি ছড়িয়ে সংগঠিত করে তারপর এই হামলা পরিচালনা করা হয়েছে। যারা সারা বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায়, ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়, তাদের সেই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই হামলা পরিচালনা করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বাঁশের কেল্লা’ কারা পরিচালনা করে আপনারা জানেন। সেই বাঁশের কেল্লা  পেজ থেকে এবং কাদিয়ানিদের বিরুদ্ধে ‘ঐক্যপরিষদে’র পক্ষ থেকে রুমিন ফারহানা, বিএনপির সাবেক এমপি হারুন অর রশীদের ফেসবুক পেজ থেকে উস্কানি ছড়ানো হয়েছে। একইসাথে এখানকার যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তার মোটর সাইকেল সংক্রান্ত উস্কানি ছড়িয়েছে, শিবিরের তেঁতুলিয়ার সভাপতি সেও উস্কানি ছড়িয়েছে এবং এখানে যারা যুক্ত ছিলো তাদের বেশিরভাগই বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী। তারা ব্যবহার করেছে অন্য ব্যানার, কিন্তু মূলত: তারা বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ধর্মের নামে এভাবে কারো ওপর হামলা পরিচালনা করা ইসলাম কোনোদিন অনুমোদন করে না। রাসুল (সা.) এভাবে মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য কখনো বলেন নাই। এভাবে ইসলামের নামে যারা মানুষের ওপর হামলা পরিচলনা করে তারা ইসলামেরও শত্রু। তারা ইসলামের গায়ে কালিমা লেপন করছে। এই শত্রুদের প্রতিহত করার জন্য আমি দেশবাসীকে আহ্বান জানাই এবং তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বিধান করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’ 

এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি ইসলামপন্থী দলগুলোকে বরাবরই আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে আসছে। পঞ্চগড়ের ঘটনার দিনও স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা জামায়াতের সাথে যুক্ত হয়ে আহমদিয়াদের (কাদিয়ানি) ওপর হামলা চালিয়েছে- যা গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশিত হয়েছে। তবে তারা ধর্মের নামে অগ্নি-সন্ত্রাস করছে। ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম। ইসলাম ধর্ম কখনই এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করে না। তাছাড়া, পরোক্ষভাবে এ ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপির নেতারা নিজেদের দোষ ঢাকার জন্য সরকারের রেলমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। বিএনপি নেতা মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যে এইটা স্পষ্ট। স্থানীয় লোকজন এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষীর ভিত্তিতেই পুলিশ স্থানীয় বিএনপি কর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে। তবুও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব ঘটনার দায় সরকারের ওপর চাপাতে চেষ্টা করছেন। মূলত আহমদিয়া (কাদিয়ানি) সম্প্রদায়ের ওপরে হামলার ঘটনা ঘটিয়ে নতুন ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে চাইছে বিএনপি। কিন্তু এই ষড়যন্ত্র খুব একটা বেশি ফলপ্রসু হয়নি। এখন দেখার বিষয় এই ষড়যন্ত্র করে বিএনপি কতদূর এগিয়ে যেতে পারে?

কাদিয়ানি   বিএনপি   জামায়াত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ফিরোজায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া

প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের ফিরোজায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

বৃহস্পতিবার (২ মে) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার।

এর আগে, বুধবার খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন।

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, হৃদ্‌রোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।

সবশেষ ৩০ মার্চ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল খালেদা জিয়াকে। তিনদিন পর তিনি বাসায় ফেরেন।

ফিরোজা   খালেদা জিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

প্রচণ্ড তাপদাহে ১৪ দলে স্বস্তির বৃষ্টি

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে জানালেন যে, ১৪ দল বিলুপ্ত হয়নি, ১৪ দল আছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি সাফ জানিয়ে দিলেন, খুব শীঘ্রই তিনি ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন। 

প্রধানমন্ত্রী এটিও বলেছেন যে, ১৪ নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে। ১৪ দলের সমন্বয়ক নিয়মিত ১৪ দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এছাড়াও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও ১৪ দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন। 

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য ১৪ দলের নেতাদেরকে উল্লসিত করেছে। তীব্র তাপদাহে যেন তাদের কাছে এক স্বস্তির বৃষ্টি। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর ১৪ দলের শরিকরা এতিম হয়ে পড়েছিল। তারা কোথাও পাত্তা পাচ্ছিল না। মন্ত্রিসভাতে যেমন ১৪ দলের কাউকে রাখা হয়নি, ঠিক তেমনই সংরক্ষিত নারী আসনে যে ৪৮ জনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সেখানও ১৪ দলের কোন প্রতিনিধিকে রাখা হয়নি। ১৪ দলের নেতাদের এ বার নির্বাচনে বড় ধরনের ভরাডুবি ঘটেছে। হাসানুল হক ইনু, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, ফজলে হোসেন বাদশার মতো ১৪ দলের হেভিওয়েট নেতারা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন। এরপর ১৪ দলের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ১৪ দলের নেতারা সেই সময় থেকেই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু বারবার চেষ্টা করেও তারা দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেননি। এর মধ্যে ১৪ দলের বৈঠক নিয়ে কিছু কথাবার্তা হলেও শরিকরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন এবং ১৪ দলের অন্তত তিনজন নেতা গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে সংশয় প্রকাশ করে বলেছিলেন যে, ১৪ দল শেষ পর্যন্ত থাকবে কি না তা নিয়ে তারা শঙ্কিত।

২০০১ সালে নির্বাচনের বিপর্যয়ের পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আওয়ামী লীগ এই ১৪ দলীয় জোট গঠন করেছিল। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের ভূমিধ্বস বিজয়ের পর ১৪ দলের সদস্যদেরকে মন্ত্রিসভায় রাখা হয়েছিল। সেই সময় দিলীপ বড়ুয়া মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে গঠিত মন্ত্রিসভাতেও ১৪ দলের নেতা রাশেদ খান মেনন এবং হাসানুল হক ইনুকে রাখা হয়েছিল। এরপর থেকেই ১৪ দলের শরিকদেরকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হয়। 

এবার নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি নিয়ে শরিকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তিক্ততা সৃষ্টি হয় এবং তিক্ত অবস্থা রেখেই আওয়ামী লীগ ১৪ দলের শরিকদের জন্য মাত্র ৬টি আসন দেয়। শেষপর্যন্ত জোটের স্বার্থে ১৪ দল নির্বাচনে ওই কয়েকটি আসন নিয়ে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু সেখানে ১৪ দলের অধিকাংশ নেতার বিপুল ভরাডুবি হয়। বিশেষ করে হাসানুল হক ইনু, ফজলে হোসেন বাদশা এবং আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর বিপর্যয় ১৪ দলকে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেয়। এমনকি শিরীন আখতারকে পরবর্তীতে সংরক্ষিত আসনের এমপি করা হবে- এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল বলেও জাসদের নেতারা দাবি করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শিরীন আখতারও সংরক্ষিত কোটায় এমপি হতে পারেননি। এরকম অবস্থায় ১৪ দলের মধ্যে চাপা ক্ষোভ, অসন্তোষ এবং হতাশা ছিল দৃশ্যমান। কিন্তু আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করলেন যে, তিনি ১৪ দলের সঙ্গে বসবেন। 

তিনি বলেছেন, কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে বৈঠক করার পর তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর তিনি ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ১৪ দলের এই বৈঠকের নেতাদেরকে উল্লসিত করেছে। তারা এখন আশায় বুক বেঁধে আছেন। 

১৪ দলের নেতারা আসলে কর্মীহীন, অস্তিত্বের সংকটে ভুগছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে লতাপাতার মতো জড়িয়ে থেকে তারা কোন রকম অস্তিত্ব রক্ষা করতে চেষ্টা করছেন। এখন তিনি আওয়ামী লীগ যদি তাদের থেকে ছাতা সরিয়ে নেয় তাহলে এই দলগুলো মৃত্যু ঘটবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি আজ তাদেরকে জীবিত করার যেন মহৌষধ দিলেন।

১৪ দল   আওয়ামী লীগ   প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কমে গেল কাদেরের দাপট?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান এমন একজন নেতা যিনি ওবায়দুল কাদেরের এই সিদ্ধান্ত মানেননি। সিদ্ধান্ত না মেনে তিনি ধানমণ্ডি ৩ নম্বর কার্যালয়ে গিয়ে ওবায়দুল কাদেরের তোপের মুখে পড়েন। ওবায়দুল কাদের তাকে বলেন, আপনি তো দলের কোন সিদ্ধান্তই মানেন না। কিন্তু তার পরও শাজাহান খান তার ছেলেকে প্রার্থী হিসেবে রাখেন এবং দলের তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমন আশঙ্কার মধ্যেই তিনি উপজেলা নির্বাচনে ভূমিকা রাখতে শুরু করেন। কিন্তু আজ আওয়ামী লীগ সভাপতির সংবাদ সম্মেলনের পর দেখা গেল যে, ওবায়দুল কাদের যা বলেছেন এবং আওয়ামী লীগের যে সিদ্ধান্ত তার মধ্যে দুস্তর ফারাক রয়েছে। ওবায়দুল কাদের যেভাবে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন বাস্তবতা তা নয়। ওবায়দুল কাদের যত গর্জেছেন বাস্তবে আওয়ামী লীগ তত বর্ষেনি। আর একারণেই এখন ওবায়দুল কাদেরের কর্তৃত্ব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।


এমনিতেই আওয়ামী লীগে বেশ কিছুদিন ধরে এক ধরনের বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির বাইরে অন্য কোন নেতার কথা তৃণমূলের আওয়ামী লীগ বা মাঠ পর্যায়ের নেতারা মোটেও কর্ণপাত করেন না। তাদেরকে খুব একটা আমলে নেন না। তারপরও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলে কথা। তিনি দলের দ্বিতীয় ক্ষমতাবান ব্যক্তি। সেই ক্ষমতাবান ব্যক্তি যখন বলছেন, সকলে ধরে নিয়েছিল যে, এটি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা এবং ওবায়দুল কাদের এটিকে শেখ হাসিনার নির্দেশনা বলেই অভিহিত করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলার পরে তিনি আওয়ামী লীগের নেতা একরামুল করিম চৌধুরী, শাজাহান খান এবং ড. রাজ্জাকের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন এবং তাদের স্বজনদেরকে প্রার্থিতা থেকে সরে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু এই তিনজনের কেউই ওবায়দুল কাদেরের কথায় কর্ণপাত করেননি। 

ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনা অমান্য করে তারা প্রার্থী হওয়ার পর এখন দেখা গেল যে, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের অবস্থানই এখন আর সঠিক নেই। ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কোন আলোচনাই হয়নি। অথচ ওবায়দুল কাদের একাধিক গণমাধ্যমে বলেছিলেন যে, ৩০ এপ্রিল যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু ৩০ এপ্রিল এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনাই হয়নি। তাহলে কী ওবায়দুল কাদের বাড়িয়ে বলেছেন? 


কেউ কেউ দাবি করেন, যেহেতু একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন সেহেতু ওবায়দুল কাদের বিষয়টিকে বড় করে দেখেছেন এবং তিনি নিজেই উপজেলা নির্বাচনের বিষয় নিয়ে আগ্রহী ছিলেন। কারণ তার নির্বাচনী এলাকায় যদি একরামুল করিমের সন্তানও উপজেলা চেয়ারম্যান হয় তাহলে তার এলাকায় আধিপত্য কমে যাবে। আর একারণেই হয়তো তিনি বিষয়টিকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ করেছিলেন বলে অনেকে মনে করেন।

আজ আওয়ামী লীগ সভাপতির বক্তব্য থেকে স্পষ্টতই মনে হয় যেভাবে আওয়ামী লীগের নেতারা এই বিষয় নিয়ে গর্জে ছিলেন বাস্তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বিষয়টিকে অতটুকু গুরুত্বতর মনে করেন না। বরং তার প্রধান আগ্রহের ব্যাপার হলো উপজেলা নির্বাচন যেন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়। আর এ কারণেই প্রশ্ন উঠেছে তাহলে ওবায়দুল কাদের শেখ হাসিনা সবসময় যা বলেন সেটিরই পুনঃউচ্চারণ করেন এই বক্তব্যটি ঠিক না। শেখ হাসিনা আত্নীয় স্বজনদের ব্যাপারে ওবায়দুল কাদেরের অবস্থানের সঙ্গে পুরোপুরি একই রকম বক্তব্য রাখেননি। আর এর ফলে ভবিষ্যতে ওবায়দুল কাদেরের হুশিয়ারি বা নির্দেশনা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কতটুকু শুনবে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকে প্রশ্ন করেছেন তাহলে কী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দাপট কমে গেল?




ওবায়দুল কাদের   আওয়ামী লীগ   সাধারণ সম্পাদক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে কী ধর্মঘট চলছে?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না। 

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ সৌদি আরবে যাচ্ছেন ওমরা পালনের জন্য। অন্যান্য নেতারাও তীব্র গরমে বাসায় শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ছেড়ে দিয়ে চুপচাপ বসে আছেন। কোন নেতাই কোন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন না। একমাত্র আশার প্রদীপ হয়ে জ্বলে আছেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি সারাক্ষণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলছেন। কিন্তু রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের কাছে আর্তনাদের মতো শোনাচ্ছে।


বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রগুলো বলছে, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভুল সিদ্ধান্তের কারণে বিএনপির মধ্যে এখন এক ধরনের হতাশা দেখা দিয়েছে এবং এই হতাশার কারণে বিএনপির সিনিয়র নেতারা এখন বিরক্ত। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, মূলত তারেক জিয়ার খাম খেয়ালিপনা এবং স্ব-বিরোধী সিদ্ধান্তের জন্যই বিএনপি নেতারা বিরক্ত এবং নিজেদের হাত পা গুটিয়ে বসে আছেন। 


বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন যে, আমাদের কোন ক্ষমতা নেই। সিদ্ধান্ত তিনি নিচ্ছেন, তিনি আমাদেরকে জানাচ্ছেন। কাজেই আমরা কী করব? স্থায়ী কমিটির আসলে কোন কাজ নেই। স্থায়ী কমিটিতে দূরের কথা, কেন্দ্রীয় কমিটিতেও কোন কাজ নেই। 

তিনি বলেন, বিএনপির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে উপজেলা নির্বাচনে তারা বর্জন করবে। কিন্তু যারা উপজেলা নির্বাচনে স্বতন্ত্র অংশগ্রহণ করছে তাদের বহিষ্কারের ক্ষেত্রে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করার কথা ছিল সেই প্রক্রিয়ার কোনটাই অনুসরণ করা হয়নি। তাদেরকে কোনো কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়নি, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। এমনকি এমন অন্তত ৫ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে যারা কাগজে কলমে বিএনপিও করে না। বিএনপি শুভাকাঙ্খী হিসেবে, বিএনপির সমর্থক হিসেবে  তারা পরিচিত। এই যদি হয় দলের অবস্থা তাহলে সেই দলে যে কোন কথা বলে বিপদ বলে মনে করেন ওই স্থায়ী কমিটির সদস্য। 

এরকম কথাবার্তা শোনা যায়, বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের মুখে। বিএনপির আন্দোলনের কর্মসূচি এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নতুন করে আন্দোলন শুরু করার কথা বলেছেন, বারবার তাগাদা দিচ্ছেন। কিন্তু এ নিয়ে উদ্যোগ নিচ্ছেন না কোন বিএনপির সদস্যরা। 


বিএনপির স্থায়ী কমিটির একটি বড় অংশ অসুস্থ অথবা অকার্যকর। স্থায়ী কমিটির পুনর্গঠনের জন্য বলা হয়েছিল দু মাস আগে। তারেক জিয়া তখন নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, স্থায়ী কমিটিতে ৫ জন সদস্য নিয়োগ দেয়া হবে। তিনি ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত ঐ বৈঠকে ঘোষণা করেছিলেন যে, এক মাসের মধ্যে স্থায়ী কমিটির শূণ্যপদ পূরণ করা হবে। কিন্তু ২ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও স্থায়ী কমিটির ঐ শূণ্যপদগুলো পূরণ করা হয়নি। বিএনপিতে কাউন্সিল অনুষ্ঠানের কথা ছিলো, সে কাউন্সিল নিয়েও তারেক জিয়া কোন রকম সিদ্ধান্ত দেননি। ফলে দলের নেতাকর্মীরা এখন গা ছেড়ে দিয়েছেন। 

বিএনপির একজন নেতা বলছেন যে, বিএনপিতে এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার এখন কারও নেই। যার কারণে সিদ্ধান্ত যদি না দিতে পারা যায়, তাহলে দলের হাল ধরাও কঠিন। আর তাই বিএনপি নেতারা হালও ধরছেন না সিদ্ধান্তও দিচ্ছেন না। তারা এক ধরনের অঘোষিত ধর্মঘটে আছেন।  


বিএনপি   ধর্মঘট   রাজনীতির খবর   তারেক জিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কেন পিছু হঠল আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে। 

প্রশ্ন উঠল, আওয়ামী লীগ কেন তারা অবস্থান থেকে সরে এলো বা কেন আওয়ামী লীগ আত্মীয় স্বজনদের প্রার্থী করার বিষয়টি নিয়ে পিছু হঠল।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র এ ব্যাপারে একেক রকম মতামত দিয়েছে। আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য দাবি করেছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি কখনোই আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না- এ ধরনের মনোভাব পোষণ করেননি বা সরাসরি এ ধরনের কথা বলেননি। তার বক্তব্য হয়তো আওয়ামী লীগের অনেকেই বুঝতে পারেননি এবং বোঝার চেষ্টা করেননি। শেখ হাসিনা কী বলতে চান তা আজ সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট করেছেন। 

তিনি বলেছেন, যারা মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্যদের কথা। পরিবারের সদস্য বলতে তিনি সন্তান, স্ত্রী এবং পরিবারের মূল ব্যক্তিকে বুঝিয়েছেন। অন্য আত্মীয়দেরকে বোঝাননি। এখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের হয়তো বুঝতে ভুল হয়েছে। 

দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগ সভাপতি তাদেরকে নির্বাচন করা যাবে না এমনটা বলেননি, বরং তিনি বলেছেন যে, তারা যেন তৃণমূলের অন্যান্য নেতাকর্মীদেরকেও সুযোগ দেয়। সবকিছু যেন তারা দখল করে না নেয়। 

তৃতীয়ত, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যারা বিভিন্ন পদ পদবীতে আছেন বা নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসাবে ইতোমধ্যে দায়িত্ব পালন করেছেন তারা নির্বাচন করবে না কেন? অর্থাৎ যারা বিভিন্ন দায়িত্বে আছেন উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবে, পৌরসভার মেয়র হিসেবে বা আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতে অর্থাৎ আগে থেকে রাজনীতি করছেন তারা নির্বাচন করলে কোনো বাধা নেই। অর্থাৎ ড. রাজ্জাক বা শাজাহান খানের তার ছেলে বা ভাই নির্বাচন করলে সেটি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। 

আওয়ামী লীগ সভাপতি সুস্পষ্ট ভাবে কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল না, মন্ত্রী-এমপি হওয়ার সুবাদে ছেলে বা স্ত্রীকে রাজনীতিতে টেনে আনায় আনা হয়েছে এবং এলাকায় দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য এরকম ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছেন। এরকম ব্যক্তির সংখ্যা খুবই কম। আওয়ামী লীগ সভাপতি আজ সংবাদ সম্মেলনেও সাংবাদিকদের কাছে জানতে চাইছেন এই সংখ্যা কত জন। ওই সাংবাদিক বলেছেন, জনা পঞ্চাশেক হবে। তিনি বলেছেন, এই সংখ্যা খুব কম নয়। 

তবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার কারণে এলাকায় এক ধরনের উত্তেজনা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি হয়েছে। একদিকে মন্ত্রী-এমপিদের প্রার্থী এবং অন্যদিকে মন্ত্রী-এমপিদের আধিপত্যের বিরুদ্ধে তৃণমূলের ঐক্য। সব কিছু মিলিয়ে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আর প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন মানেই হলো ভোটার উপস্থিতি বৃদ্ধি। আর সেই ভোটার উপস্থিতি বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্যই প্রধানমন্ত্রী হয়তো তার কৌশলের ব্যাখ্যা দিলেন। আসলে আওয়ামী লীগের পিছু হঠা নয়, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ্য একটাই। নির্বাচন যেন অর্থপূর্ণ হয়, ভোটার উপস্থিতি যেন বাড়ে। আর সে কারণেই আপাতত নির্দেশ অমান্যকারীদেরকে স্বাগত জানাচ্ছে আওয়ামী লীগ। যেমন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে স্বতন্ত্রদের স্বাগত জানিয়েছিল।

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন   কার্যনির্বাহী কমিটি   ওবায়দুল কাদের   রাজনীতির খবর  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন