বাংলাদেশের
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মো. মামুন এমরান
খান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আরাভ খান অবৈধভাবে
সীমান্ত অতিক্রম করে গা ঢাকা
দিয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার
অধীন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ফরতাবাদ এলাকায়।
আসল
পরিচয় গোপন করে পাঁচ-ছয় বছর ফরতাবাদ
এলাকার উদয় সংঘ ক্লাবের
পাশেই এক বস্তিতে ছিলেন
তিনি। স্থানীয় বাসিন্দা জাকির খানের ভাঙাচোরা বাসার দোতলায় মাসিক ২ হাজার রুপিতে
ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন আরাভ ও তার
স্ত্রী সাজেমা নাসরিন।
এরপর
জাকির খান ও তার
স্ত্রী রেহানা বিবি খানের সাথে
সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন তারা।
আর সেই সম্পর্ককে কাজে
লাগিয়েই জাকির ও রেহানার ভারতীয়
আধার কার্ড সংগ্রহ করে তাদের উভয়কেই
কথিত বাবা-মায়ের পরিচয়
দিয়ে আরাভ ভুয়া ভারতীয়
পাসপোর্ট তৈরি করেন বলে
অভিযোগ। এরপর সেই পাসপোর্ট
দিয়েই দুবাইয়ে পালিয়ে যান পুলিশ খুনের
আসামি আরাভ। এরপর থেকে গত
কয়েক বছর ধরে দুবাইতেই
অবস্থান করছেন দুবাইয়ের গোল্ড বাজারে অবস্থিত আরাভ জুয়েলারি শোরুমের
মালিক আরাভ খান।
দিন
কয়েক আগে এক ভিডিও
বার্তায় দুবাইয়ে আরাভ জুয়েলারি নামে
একটি শোরুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আমন্ত্রণ
জানাতে দেখা যায় বাংলাদেশের
তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে। সাকিবের
এই ভিডিও বার্তাটি ওই জুয়েলারির স্বত্বাধিকারী
আরাভ খানের ফেসবুক পেজ থেকেই গত
৩ ফেব্রুয়ারি শেয়ার করা হয়।
এরপর
গত ১৫ মার্চ আরাভ
জুয়েলারি শোরুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন শাকিব
খানসহ দেশ বিদেশের একাধিক
সেলিব্রেটি। কিন্তু কার ডাকে তারা
দুবাইয়ে পাড়ি দেন? কে এই
আরাভ খান? এই প্রশ্নের
উত্তর খোঁজ করতে গিয়ে
বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
জানা
গেছে, আরাভ খান ওরফে
রবিউল ইসলাম ওরফে আপন ওরফে
সোহাগ ওরফে হৃদয় নামের
ব্যক্তিটি আদতে বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের
কোটালীপাড়ার আশুতিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম
মতিউর রহমান মোল্লা।
যদিও
আরাভ ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করেই গত কয়েক
বছর ধরে দুবাইয়ে অবস্থান
করছেন বলেই অভিযোগ। তার
ভারতীয় পাসপোর্ট নাম্বার ইউ ৪৯৮৫৩৮৯। ওই
পাসপোর্টেই পশ্চিমবঙ্গের নরেন্দ্রপুরের ঠিকানা দেওয়া রয়েছে।
শুধু
তাই নয়, তার স্ত্রী
ভারতীয় নাগরিক (আসাম) সাজেমা নাসরিনের পাসপোর্টটিও ভারতীয়। এমনকি আরাভের কথিত বাবা-মা
জাকির খান ও রেহানা
বিবি খানের পাসপোর্টেও তাদের উভয়ের ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ রয়েছে কন্দর্পপুর, উদয় সংঘ ক্লাব,
রাজপুর-সোনারপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা-৭০০০৮৪।
কলকাতার
ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস (ইএম বাইপাস) ধরে
সোজা ফরতাবাদ মোড় থেকে বাম
দিকে ৮০০ মিটার ভেতরে
ঢুকলেই কন্দর্পপুর উদয় সংঘ ক্লাব।
সেখানে জাকির খানের নাম বলতেই এক
নারী এসে তার বাড়ি
দেখিয়ে দিলেন। বোঝাই গেলো, ওই এলাকায় যথেষ্ট
পরিচিত নাম জাকির খান।
যদিও বছর দুয়েক আগে
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান
জাকির। তার বাড়িতে ঢুকতেই
দেখা হলো তার স্ত্রী
রেহানা বিবি খানের সাথে।
প্রথম দিকে মুখ খোলার
ব্যাপারে কিছুটা ইতস্তত বোধ করলেও গণমাধ্যমের
কর্মী বলে পরিচয় দিতেই
কিছুটা স্বাভাবিক হন রেহানা। মোবাইলে
আরাভের ছবি দেখতেই রেহানা
জানান ‘৫ বছর আগে
আমাদের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে এসেছিল। আমাদের বাসায় এক বছর ভাড়া
ছিল, এরপর চলে যায়।
মাসিক ২০০০ রুপি করে
ভাড়া দিত।
রেহানার
দাবি ‘আমাদের আধার কার্ড নিয়ে
আরাভ কী একটা ডকুমেন্টস
তৈরি করবে বলেছিল। সেই
কারণে আমি ও আমার
স্বামী উভয়ই আরাভকে আমাদের আধার কার্ড দিয়ে
দিই।’
আর সেই ভারতীয় আধার
কার্ড দিয়েই নিজের স্ত্রীর ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করেছিলেন আরাভ
খান। যদিও তাকে কোনোদিনই
সন্দেহ হয়নি বলেও জানান রেহানা।
আরাভের
কথিত মা হিসেবে পরিচয়
দেওয়া রেহানা জানান, ‘মালিকের সাথে একজন ভাড়াটিয়ার
যে সম্পর্ক থাকে আরাভ খানের
সঙ্গে আমাদেরও সেই সম্পর্ক ছিল।’
রেহানার
দাবি, ‘আজকে সকালেই আমি
ইউটিউবে আরাভ খানের দুবাই
যোগের বিষয়টি জানলাম। এলাকার লোকের সাথেও খুব একটা মেলামেশা
করত না আরাভ। বাইরেও
খুব একটা বের হতো
না।’
যদিও
এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা
গেল প্রত্যেকেই ব্যক্তিগতভাবে আরাভকে চিনতেন। বিএমডব্লিউ মোটরসাইকেলে করে এলাকায় স্টান্ট
করতেও দেখা যেত তাকে।
আরাভ নিজেকে একজন ফিল্ম আর্টিস্ট
বলে পরিচয় দিতেন। এমনকি তার কথিত মা
রেহানা বিবি খানও আরাভকে
আর্টিস্ট বলেই জানতেন।
জানা
গেছে, ২০১৮ সালে পুলিশ
কর্মকর্তা মামুন ইমরান খানকে হত্যার পর পেট্রল ঢেলে
লাশ পুড়িয়ে গাজীপুরে এক জঙ্গলের ভেতর
ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই
মামলার মূল অভিযুক্ত ছিলেন
আরাভ খান। আর ওই
সময় থেকেই পলাতক তিনি। পরে জানা যায়
প্রকৃত আসামি আরাভের পরিবর্তে সে সময় কারাগারে
যান আবু ইউসুফ লিমন
নামে স্থানীয় এক যুবক।
এদিকে
ওই খুনের ঘটনার পরই অবৈধভাবে সীমান্ত
পেরিয়ে সে বছরই ভারতে
আশ্রয় নেন আরাভ খান।
আসল পরিচয় গোপন করে আরাভ
খান নামেই পরিচয় দিতে থাকেন তিনি।
ভারতে এসেই আসামের গোয়ালপাড়ার
বাসিন্দা সাজেমা নাসরিনকে বিয়ে করেন আরাভ।
আরাভ খান দুবাই পলাতক কলকাতা বস্তি
মন্তব্য করুন
বর্তমানে রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলাচল করছে মেট্রোরেল। তবে এই লাইন বধিত হচ্ছে নতুন নকশায়। যা দিয়াবাড়ি থেকে সাভারের আশুলিয়া নয়, বর্ধিত হবে টঙ্গী পর্যন্ত।
এরই মধ্যে বর্ধিত এ পথের সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। দ্রুতই নকশা চূড়ান্ত করে টেন্ডার প্রক্রিয়ার কথা জানিয়েছেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। মেট্রোরেল এখন চলছে উত্তরা থেকে মতিঝিল। বর্ধিতাংশ আসছে বছর কমলাপুরে পর্যন্ত চালু হবে।
এদিকে এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণের সময়ই দিয়াবাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পথ তৈরি করে রাখা হয়েছে ভবিষ্যতের কথা ভেবে। পরিকল্পনা ছিল পথটি আশুলিয়া পর্যন্ত নেয়ার। তবে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারণে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে কর্তৃপক্ষ।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টঙ্গী পর্যন্ত নেয়া হবে এ রেলপথ; পরিকল্পনা টঙ্গী রেলস্টেশন পর্যন্ত যুক্ত করার।
উত্তরা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত পথ তৈরি হয়েছে বিআরটি। সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে। ফলে এ পথে নতুন করে আরো একটি উড়াল রেলপথ বের করা অসম্ভব। যার জন্য রুট কোনটি হবে তা নিয়ে চলছে পরিকল্পনা।
মেট্রোরেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, এখন টঙ্গী রেলস্টেশন পর্যন্ত এ পথটি যুক্ত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। মূলত টঙ্গী রেলস্টেশন এবং সড়ক জংশনকে যদি সংযুক্ত করতে পারি, তাহলে ঐ অঞ্চলের মানুষের সুবিধা বাড়বে।
তিনি বলেন, যদিও প্রাথমিক পরিকল্পনায় এখনই এ অংশের কাজে হাত দেওয়ার কথা ছিল না। তবে এবার দ্রুত এ পথে হাঁটতে চায় ডিএমটিসিএল। এরই মধ্যে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি শুরু হয়েছে। শিগগিরই চূড়ান্ত নকশা হবে। এ পথটি যুক্ত হলে টঙ্গী থেকে কমলাপুর পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে ৪৮ মিনিট।
মেট্রোরেল বাংলাদেশ ঢাকা রাজধানী
মন্তব্য করুন
চট্টগ্রামের
পতেঙ্গায় বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত পাইলট
অসিম জাওয়াদকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১০ মে) বিকেল ৩টার দিকে মানিকগঞ্জ
জেলা শহরের সেওতা কবরস্থানে নানা মরহুম মোহাম্মদ
রউফ খানের কবরে তাকে দাফন
করা হয়।
এর
আগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে
নিহত পাইলট অসিম জাওয়াদের মরদেহ
বহনকারী বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার মানিকগঞ্জের
শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে অবতরণ
করে। এর কিছুক্ষণ পর
হেলিকপ্টার থেকে তার কফিনবন্দি
মরদেহ কাঁধে করে নামিয়ে আনেন
বিমানবাহিনী সদস্যরা। পরে নিহত অসিমকে
গার্ড অব অনার দেওয়া
হয়। ছেলের কফিনবন্দি মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে
পরেন মা নিলুফা খানমসহ
স্বজনরা।
পরে
দুপুর ২টার দিকে শহীদ
মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে জুমার
নামাজের পর পাইলট আসিম
জাওয়াদের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়। এর পর
লাশবাহী গাড়িতে করে মরদেহ সেওতা
কবরস্থানে নেওয়া হয়। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা
শেষে নানা মরহুম মোহাম্মদ
রউফ খানের কবরে দাফন করা
হয় এই পাইলটকে।
এদিকে
পাইলট অসিম জাওয়াদের মরদেহ
শেষবারের মতো এক নজর
দেখতে সকাল থেকেই স্টেডিয়ামে
ভিড় করতে থাকেন নানা
শ্রেণি-পেশার মানুষসহ তার স্বজনরা। অসিমের
মরদেহ বহনকারী বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার করে তার বাবা
আমানউল্লাহ, স্ত্রী অন্তরা আক্তার ও দুই সন্তানসহ
স্বজনরা সেখানে নামেন। এ সময় এক
হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
নিহত অসিম জাওয়াদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের ডা. মোহাম্মদ আমানউল্লার ছেলে। তার মায়ের নাম নিলুফা খানম। নিহত পাইলট অসিম মৃত্যুকালে স্ত্রী, ছয় বছর বয়সী কন্যা আইজা ও এক পুত্র সন্তান রেখে গেছেন।
মন্তব্য করুন
একমাত্র সন্তান বৈমানিক অসিম জাওয়াদকে হারিয়ে শোকে কাতর চিকিৎসক বাবা আমান উল্লাহ। সন্তানের লাশ সামনে রেখে তিনি জানান, জীবনের ঝুঁকি জেনেও একমাত্র সন্তানকে তারা বিমান বাহিনীতে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের রেখে সন্তান এভাবে চলে যাবে- সেটা কখনো ভাবতে পারেননি। শুক্রবার (১০ মে) দুপুরে তিনি এসব কথা বলেন ।
ড. আমান উল্লাহ বলেন, আমি তো ডাক্তার, আমি জানি কতটা জীবন ঝুঁকি আছে এ দায়িত্বে। ওর মাও নিষেধ করেছিল। কিন্তু আমি ওর পছন্দকে শ্রদ্ধা জানিয়ে, ঝুঁকি জেনেও বিমান বাহিনীতে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু আমি ভাবিনি যে, আমার ছেলে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। ও শুধু আমাদের ছেড়ে যায়নি। ওর ছোট্ট বাচ্চাগুলোকেও ছেড়ে গেল। আমি জানি না, ওর মতো করে বাচ্চাগুলোকে পালন করতে পারব কিনা।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা জহুরুল হক বিমান ঘাঁটির থেকে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়ন করে। এর কিছুক্ষণ পরই বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয় এবং বিমানটিতে আগুন ধরে যায়।
কর্ণফুলী নদীতে ভূপাতিত হওয়ার আগেই বিমানে থাকা বৈমানিক উইং কমান্ডার সোহান ও বৈমানিক স্কোয়াড্রন লিডার অসীম জাওয়াদ প্যারাসুট দিয়ে নদীতে নামলেও দুজন আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে পতেঙ্গা বিএনএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে বিমান বিধ্বস্তর ঘটনায় বৈমানিক অসীম জাওয়াদ বিএনএস পতেঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
শুক্রবার (১০ মে) বেলা আড়াইটার দিকে মানিকগঞ্জের শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলার হাজারও মানুষ অংশ নেন। জানাজা শেষে পাইলট অসিম জাওয়াদ রিফাতের মরদেহ জেলা শহরের সেওতা কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মন্তব্য করুন
রাজধানী
উত্তরার একটি বেসরকারি কলেজ
পড়ুয়া শিক্ষার্থী মোছা.
সামিয়া। তিনি ডেটিং অ্যাপস ট্যানট্যানে তারই কাছের এক বান্ধবীকে বিক্রি করে ফায়দা তুলেছেন।
সেখানে
মাহি নামের একটি অ্যাকাউন্টে ব্যবহার
করেছেন তার বান্ধবীর ছবি। আর সেই ডেটিং অ্যাপসের অ্যাকাউন্ট থেকে রুম ডেট
করার নামে বহু মানুষের
কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন
লাখ লাখ টাকা।
ভুক্তভোগী
ওই শিক্ষার্থী জানান, সামিয়া এসব অ্যাপসে নিজের
ছবি ব্যবহার করে বহু মানুষের
কাছ থেকে টাকা নিয়েছে।
রুম ডেটের কথা বলে ২০০
টাকা থেকে শুরু করে
৫০ হাজার; এমনকি সুযোগ বুঝে লাখ টাকাও
নিয়েছে কারও কারও কাছ
থেকে। ভুয়া জন্মদিনের কথা
বলে নিয়েছে দামি উপহার। এমনকি
বাসার জন্য মাছ, মাংসসহ
বাজারও নিয়েছে।
নিজের
ছবিতে যখন আর কাজ
হচ্ছিল না, তখন বান্ধবীর
ছবি ব্যবহার করে প্রতারণা শুরু
করে সামিয়া। রুম ডেটের জন্য
বিকাশে টাকা নেওয়ার পর
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ব্লক করে দেন।
অভিযুক্ত সামিয়ার এসব অপকর্মের এবং
বিভিন্ন পুরুষের কাছ থেকে টাকা
লেনদেনের অডিও ও মেসেজের
তথ্য গণমাধ্যমে উঠে আসছে।
বান্ধবীর
দ্বারা এমন হেনস্তার শিকার
হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন সেই শিক্ষার্থী। বান্ধবীর
নামে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। কাছের বান্ধবীর এমন আচরণে মানসিকভাবে
ভেঙে পড়েছেন। তিনি বলেন, আমি
রাস্তাঘাটে বের হতে পারছি
না। সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছি। তার দ্বারা যেন
অন্য কেউ আর প্রতারিত
না হয়। আমি এই ঘটনার বিচার
চাই। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী থানায়
অভিযোগ করার পরই নিজের
ফেসবুক আইডি, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাকটিভ করে দিয়েছে সামিয়া।
এ
বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ
ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক
বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক শ্রেণির নারী
প্রতারক চক্র পুরুষদের নানাভাবে
প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়।
এসব ক্ষেত্রে পুরুষদের সচেতন হতে হবে। এ
বিষয়ে ঢাকা মহানগর
পুলিশের উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক পার্থ প্রতিম ব্রহ্মচারী গণমাধ্যমকে জানান,
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী একটি
জিডি করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
যমুনা নদীর বুকে সম্পূর্ণ দৃশ্যমান হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে
সেতু। সেতুটির সব কটি স্প্যান বসানো হয়েছে। নির্মাণাধীন সেতুটির গত এপ্রিল থেকেই ৪
দশমিক ৮ কিলোমিটারের পুরোটাই দৃশ্যমান। তবে এখনো শেষ হয়নি নির্মাণকাজ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ
বলছে, আগামী ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে সেতু নির্মাণ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করে উদ্বোধন
হতে পারে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর
রহমান বলেন, ‘৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যান বসিয়ে সেতুর পুরো ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার
সুপার স্ট্রাকচার এখন পুরোটাই দৃশ্যমান। এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পে ৮৪ শতাংশ কাজ শেষ
হয়েছে। বাকি ১৬ শতাংশ কাজ দ্রুতই সম্পন্ন করা হবে। বাকি কাজের মধ্যে এখন সেতুর ওপর
ডুয়েল গেজ রেললাইন বসানোর কাজ চলছে’।
আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ইতিমধ্যে ৪০ থেকে ৫০ ভাগ রেললাইন
বসানোর কাজও সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু অ্যাডজাস্টমেন্ট বাকি রয়েছে। অ্যালাইনমেন্ট ও
লেভেল ঠিক করা হচ্ছে। বিভিন্ন ড্রেনের কাজ ও কালভার্টগুলোর কাজ শেষ হয়ে গেছে। দুই পাশের
স্টেশন বিল্ডিংয়ের কাজ, প্ল্যাটফর্ম স্থাপনের কাজ ও ট্র্যাকের কাজ চলছে। আশা করছেন,
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে ডিসেম্বরের শেষ দিকে সেতুটি
উদ্বোধন করা সম্ভব হবে’।
সেতুটির ৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যান বসিয়ে সেতুর পুরো ৪ দশমিক
৮ কিলোমিটার সুপার স্ট্রাকচার এখন পুরোটাই দৃশ্যমান। এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পে ৮৪ শতাংশ
কাজ শেষ হয়েছে। এই প্রকল্পের ব্যয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা।
সেতুটির প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ
অর্থায়নে সেতুটি নির্মিত হচ্ছে। এর নির্মাণ ব্যয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। ২০২০ সালের
২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এই রেলসেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু
হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে। ডব্লিউডি-১ ও ডব্লিউডি-২ নামে দুটি প্যাকেজে জাপানি পাঁচটি
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ডব্লিউডি-১ প্যাকেজটি বাস্তবায়ন করছে
জাপানি আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওবাইসি, টোআ করপোরেশন ও জেইসি (ওটিজে) জয়েন্ট
ভেঞ্চার।
ডব্লিউডি-২ প্যাকেজটি বাস্তবায়নে রয়েছে জাপানের আইএইচআই ও এসএমসিসি
জয়েন্ট ভেঞ্চার। এ ছাড়া সেতুর উভয় প্রান্তের দুই স্টেশনে সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনে
ডব্লিউডি-৩ নামে অপর একটি প্যাকেজের কাজও চলছে। সেতুটি নির্মাণে জাপান, ভিয়েতনাম, নেপাল,
অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশের কর্মীরা নিয়োজিত আছেন। ডব্লিউডি-১ প্যাকেজের ৯৬
দশমিক ১৫ শতাংশ, ডব্লিউডি-২ প্যাকেজের ৯০ শতাংশ ও ডব্লিউডি-৩ প্যাকেজের প্রায় ৬৬ শতাংশ
কাজ শেষ হয়েছে।
প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম বলেন, সেতুটির ওপরে রেললাইন
স্থাপন শেষ হয়েছে ২ দশমিক ২৫ কিলোমিটার। প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানিদের অত্যাধুনিক
প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হচ্ছে। ফলে সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন
চলাচল করতে পারবে। সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের সেতুটির নির্মাণকাজ ডিসেম্বরেই
শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু
সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে
২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। বর্তমানে এই
সেতু দিয়ে ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করে।
রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। ঢাকার সঙ্গে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা অঞ্চলের রেল যোগাযোগে বর্তমান যে বিড়ম্বনা রয়েছে, সেটা আর থাকবে না। নির্মাণ শেষে সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৮৮টি যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে। কমে যাবে পরিবহনের খরচও। সেই সঙ্গে মহাসড়কের ওপর চাপও অনেকটা কমে আসবে’।
যমুনা নদী দৃশ্যমান সেতু বঙ্গবন্ধু রেলসেতু
মন্তব্য করুন
যমুনা নদীর বুকে সম্পূর্ণ দৃশ্যমান হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। সেতুটির সব কটি স্প্যান বসানো হয়েছে। নির্মাণাধীন সেতুটির গত এপ্রিল থেকেই ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের পুরোটাই দৃশ্যমান। তবে এখনো শেষ হয়নি নির্মাণকাজ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে সেতু নির্মাণ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করে উদ্বোধন হতে পারে।