আওয়ামী লীগ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধানের আওয়তায় করতে চায়। সংবিধানে যেভাবে বলা আছে সেভাবেই
দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চায়। নির্বাচনের যাবতীয় ক্ষমতা ন্যস্ত করা হবে
নির্বাচন কমিশনের ওপর। এই বক্তব্যটিকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরার দিকেই প্রধান
মনোযোগ দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। পুনরায় ক্ষমতায় আসা নয় বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে
অসাড়, অযৌক্তিক প্রমাণই আওয়ামী লীগের বর্তমান রাজনৈতিক-কূটনীতির প্রধান লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা সাম্প্রতিক সময়ে তিনটি দেশের সফরে রয়েছেন। জাপান সফর শেষ করে তিনি এখন
যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন। এই সফরে মূলত বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সাথে তাঁর আনুষ্ঠানিক
বৈঠক করার কথা রয়েছে। তবে এই বৈঠকের ফাঁকে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক,
নীতিনির্ধারক এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন বলে একাধিক
সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই সমস্ত বৈঠকে তিনি সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করা এবং সংবিধানকে
সমুন্নত রাখার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেবেন।
মূলত চলতি বছরের
শুরু থেকেই বাংলাদেশ আগামী নির্বাচন কেন্দ্রিক কূটনীতি করছে এবং এই কূটনীতির প্রধান
লক্ষ্য হলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে অগণতান্ত্রিক এবং অযৌক্তিক হিসেবে প্রমাণ
করা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এম আব্দুল মোমেন
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সাথে বৈঠকেও তত্ত্বাবধায়ক
সরকারের দাবিকে অযৌক্তিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং সংবিধান সম্মতভাবে অন্যান্য গণতান্ত্রিক
রাষ্ট্রগুলোতে যেভাবে নির্বাচন হয়, একইভাবে বাংলাদেশে নির্বাচন করার অঙ্গীকার করেছেন।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিপরীতে যে একগুচ্ছ প্রস্তাবনা বলা হচ্ছে
তার মধ্যে রয়েছে: (ক) অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে এটি নিশ্চিত করা, (খ) নির্বাচন
কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া, (গ) নির্বাচনকালীন সরকারের ক্ষমতা সীমিত করা,
(ঘ) প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্বাচনের নিরপেক্ষ রাখা এবং (ঙ) আন্তর্জাতিক
পর্যবেক্ষকদের অবাধে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেওয়া।
এই বক্তব্যগুলোই
এখন প্রভাবশালী দেশগুলোর কাছে বলা হচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের
সাথে বৈঠকের আগে মার্কিন দূতাবাসে মধ্যাহ্নভোজে গিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
ওবায়দুল কাদেরসহ নেতৃবৃন্দ। তারাও সেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির অসাড়তা প্রমাণ
করেছেন। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক নেতা বলছেন, পশ্চিমা দেশগুলো তত্ত্বাবধায়ক
সরকারের দাবির ব্যাপারে সহমত নয়। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য
কোন ধরনের চাপও সৃষ্টি করছে না। বরং তারা নিশ্চিত করতে চায় একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ
নির্বাচন। যে নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটবে। সেই ব্যাপারে সরকার তাদেরকে আশ্বস্ত
করেছে। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি যে অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য এটিও আওয়ামী লীগ
ব্যাখ্যা করছে।
বিভিন্ন সূত্রগুলো
বলছে যে, পাল্টা কূটনীতিতে আওয়ামী লীগ বেশ সফলও হয়েছে এবং ইতিবাচক ফলাফল পাচ্ছে।
শেষ পর্যন্ত যদি পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন
তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে সমর্থন না করে তাহলে নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের একটি
কূটনৈতিক বিজয় অর্জিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং এর ফলে বিএনপির নির্বাচন বয়কট
আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। বরং বিএনপির ওপর একটি চাপ আসবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার এবং সেখানে বিএনপি চাপে পরবে বলে
ধারণা করা হচ্ছে। সূত্রমতে, এই কৌশল নিয়েই এখন সরকার এগুচ্ছে। এখন দেখার বিষয় যে
আন্তর্জাতিক মহলকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কতটা সচেতন করতে পারে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাংলাদেশ নির্বাচন আওয়ামী লীগ কূটনীতি
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক কারাগা
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল। সারা দেশেই বাড়ছে দলটির গৃহদাহ। দল পুনর্গঠন ও চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচন ঘিরে দলীটির বিবাদ প্রকাশ্যে আসছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশ সবচেয়ে বেশি লঙ্ঘন করছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতারা। তাদের অনেকে এলাকায় গিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করতে গোপনে উসকে দিচ্ছেন স্থানীয় নেতাদের। ঢাকায় ফিরে তারাই আবার দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনের দায়ে সংশ্লিষ্ট নেতাদের বহিষ্কারের মাধ্যমে নিজেদের পথ প্রশস্ত করছেন। এতে পারস্পরিক সন্দেহ-অবিশ্বাস ঘনীভূত হচ্ছে।
দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানায়, গত বছরের ২৮ অক্টোবরের দলীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে কারাগারে যাওয়া নেতাদের অনেকের ভূমিকা রহস্যজনক বলে মনে করছেন দলীয় অনেকে। এ নিয়ে দলের ভিতরে রয়েছে বিতর্ক। সুনির্দিষ্ট প্রমাণের (অডিও-ভিডিও) ভিত্তিতে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। অনেককে অঘোষিতভাবে ‘ওএসডি’ করা হয়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে। এ নিয়ে ক্ষোভে কেউ কেউ রাজনীতি থেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন। চলে যাচ্ছেন দেশ ছেড়ে।
এসব বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি মহাসাগরের মতো বিস্তৃত একটি বিশাল রাজনৈতিক দল। এ দলে নেতাদের মধ্যে কোনো বিষয়ে মতামত প্রদানের ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকতেই পারে। তবে কোনো রকমের অভ্যন্তরীণ বিরোধ বা কোন্দল নেই।
জানা গেছে, সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি বিরোধ-কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে চলমান উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। এই নির্বাচনের প্রাক্কালে দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বয়কটের পক্ষে নেতা-কর্মীদের মধ্যে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সারা দেশে সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বেশির ভাগ নেতাই তাদের নিজ নিজ এলাকায় সেই দায়িত্ব পালন করেননি। অনেকে এলাকাতেই যাননি। জেলা বিএনপির শীর্ষকর্তারাও তেমন কোনো ভূমিকা রাখেননি। বরং উল্লিখিত নেতাদের এলাকাতেই ভোট কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি ভোটারের উপস্থিতি দেখা গেছে। নির্বাহী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত এসব নেতার দ্বৈত ভূমিকায় তৃণমূলের নেতারা ক্ষুব্ধ।
মন্তব্য করুন