প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের ওপর বারবার আঘাত, হামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। ইয়াহিয়া খান চেষ্টা করেছে, জিয়াউর রহমান চেষ্টা করেছে, এরশাদ-খালেদা জিয়াও চেষ্টা করেছে আওয়ামী লীগকে কীভাবে ধ্বংস করা যায়? আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষের সংগঠন হিসেবে গড়ে উঠেছে। তাই এই সংগঠনকে কেউ ধ্বংস করতে পারেনি, পারবেও না।’
শনিবার (৩ জুন) বিকেলে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নবনির্মিত কার্যালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ শুধু একটি দল নয়, আওয়ামী লীগ ইনস্টিটিউটের মতো। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এদেশের উন্নতি হয়, এটাই বাস্তব। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিয়েই বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলে স্বল্প সময়ের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলেন। আওয়ামী লীগ নামক সংগঠন এদেশের মানুষের জন্য আন্দোলন সংগ্রামে সব সময় ভূমিকা পালন করেছে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের কল্যাণ হয়। মানুষের কল্যাণে সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। আমরা যেসব কাজ করি, আওয়ামী লীগ যেসব পরিকল্পনা নেয়, প্রকল্প নেয়, তা সুপরিকল্পিতভাবেই করা হয়। আমাদের মাটি, মানুষ, পরিবেশ, আমাদের দেশের ভৌগলিক অবস্থান, প্রাকৃতিক অবস্থা, সবকিছু বিবেচনা করেই আমরা প্রকল্প গ্রহণ করি। তার ফলে আমাদের প্রতিটি প্রকল্পই সাফল্য অর্জন করে। মানুষ তার সুফল পায়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ এর বাংলাদেশ কী ছিল, এখন বাংলাদেশ কী অবস্থায় আছে, কেউ তুলনাটা বিবেচনা করলেই পরিবর্তনটা দেখতে পারবেন। একই দিনে ১০০ সড়ক উদ্বোধন করা, এটা কী কোনো সরকার আগে করেছে, পারেনি। কে পেরেছে? আওয়ামী লীগ। আজকে আমরা বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি, এখন আমাদের বেকারত্ব মাত্র ৩ শতাংশ। সেটাও থাকবে না। যদি কেউ উদ্যোগ নেয় সেও কাজ করতে পারবে। আমরা সেই ব্যবস্থাটাও করে দিয়েছি। আমাদের গ্রামের অর্থনীতি অনেক মজবুত। গ্রামের দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কৃষকদের আমরা সব ধরনের প্রণোদনা দিচ্ছি, দুই কোটি ১০ লাখ কৃষককে কার্ড দিয়েছি। ভর্তুকির টাকাটা তার ব্যাংকে চলে যায়। ১০ টাকা দিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ আমরা করে দিয়েছি। এক কোটি ২ লাখ ৭০ হাজার ১৪৩ জন কৃষক পুরো বাংলাদেশে অ্যাকাউন্ট খুলেছে। এখন তারা সেখানে বসে টাকা পেয়ে যায়। ধান কাটার মৌসুমে মানুষ পাওয়া যায় না, মজুরের দাম বেড়ে গেছে। আমি আহ্বান করেছি আমার ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী মাঠে চলে গেছে, কৃষকের ধান কেটে ঘরে পৌঁছে দিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ শতভাগ দিতে পেরেছি, এখন যেহেতু তেলের দাম বেড়ে গেছে, গ্যাসের দাম বেড়ে গেছে, কয়লার দাম বেড়ে গেছে, কয়লাও পাওয়া যাচ্ছে না। আগে এক সময় যারা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা করেছিল, তারাই এখন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করছে। তার কারণে কয়লা কিনে আনতে সমস্যা হচ্ছে। আমি জানি মানুষের অনেক কষ্ট হচ্ছে, আমরা তো লোডশেডিং একেবারে দূর করে দিয়েছিলাম, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ যদি না হতো আর করোনাভাইরাস যদি না দেখা দিতো, আজকে যদি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা না দেখা দিতো, মুদ্রাস্ফীতি না দেখা দিতো, তাহলে মানুষের কষ্ট হতো না। আজকে আমরা ভেতরে যতই চেষ্টা করি, যে জিনিসটা বাইরে থেকে আনতে হচ্ছে, সেটা কষ্ট করে আমাদেরকে জোগাড় করতে হচ্ছে।’
জ্বালানির সুখবর জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কাতার ও ওমানের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়ে গেছে। আমরা আরো কয়েকটা দেশের সঙ্গে করছি যাতে গ্যাস কিনতে পারি। এই কষ্ট দূর করতে পারি। একবার অভ্যাস হয়ে গেলে মানুষের কষ্ট বাড়ে, বিএনপি-জামায়াতের আমলে তো বিদ্যুৎ ছিলই না। তখন মানুষ হাহাকার করত। বিদ্যুৎ চাওয়ার কারণে কানসার্টে খালেদা জিয়া গুলি করে মানুষ হত্যা করেছিল। সারের দাবি করেছিল বলে ১৮জন কৃষক হত্যা করছিল। শ্রমিকের মজুরি দাবি করেছিল বলে ২৭ জন শ্রমিককে রোজার সময় তাদের হত্যা করেছিল।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।