গোপালগঞ্জে
এবার কোরবানির ঈদ কেন্দ্রীক গ্রামীণ অর্থনীতি বেশ চাঙ্গা রয়েছে। গবাদি পশু প্রায় ৩০০
কোটি টাকা কেনা বেচা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা।
গোপালগঞ্জে
ছোট গৃহস্থ বাড়িতে ২টি গরু মোটাতাজা করে কমপক্ষে ১ লাখ টাকা আয় করেছেন। বড় গৃহস্থ ৫টি
পর্যন্ত গরু মোটা তাজা করে আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ পেয়েছেন। লাভের টাকায়
তাদের সারা বছরের পারিবারিক খরচ উঠে এসেছে। এছাড়া গবাদিপশু ক্রয় ও বিক্রয়ের সাথে জড়িতরাও
আয় করেছেন লাখ লাখ টাকা। গবাদি পশু কেনা বেচাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ গ্রামীণ অর্থনীতি
এখন চাঙ্গা।
প্রাণিসম্পদ
অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সরদার জানান,
এ বছর গোপালগঞ্জ জেলায় ৪ হাজার ২শ ৪টি খামারে
৩৫ হাজার ২শ ১৪ টি গবাদি পশু মোটাতাজা করা হয়। এরমধ্যে ষাড় ১৯ হাজার ৫শ ৪০ টি, বলদ
৪৪০টি, গাভী ৪ হাজার ১শ ১৬টি, মহিষ ৮টি, ছাগল ১০ হাজার ৯০৭টি, ভেড়া ১শ ৭৫ টি, গাড়ল
২৫টি মোটাতাজা করা হয়। গোপালগঞ্জে এসব গবাদি পশু প্রায় ৩০০ কোটি টাকা কেনা বেচা হয়েছে।
২ টি গরু পালনকারী ১ লাখ টাকা ও ৫টি গরু পালনকারী আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা লাভ করেছে।
এছাড়া বাণিজ্যিক খামার গুলোতে ভালো লাভ হয়েছে।
ওই
কর্মকর্তা আরো জানান, এ জেলায় অন্তত ৩ হাজার পরিবার ১০ বছর ধরে গৃহপালিত পশুর সাথে
২ টি থেকে ৫টি পর্যন্ত কোরবানির গরু মোটাতাজা করে আসছেন। মাঠে চড়িয়ে এসব গরু তারা লালন
পালন করেন। এছাড়া জমিতে উৎপাদিত ধানের খড়, ধান ভাঙ্গানো কুড়া, গমের ভূষি, চিটা ও খৈল
দিয়ে গরু মোটাতাজা করেন। তারা খুব কম খরচে গরু মোটাতাজা করেন। হাট-বজারে গোপালগঞ্জের
গৃহপালিত মাঝারি সাইজের এসব দেশী গরুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফড়িয়া, দালাল ও ক্রেতারা
গৃহস্থের কাছ থেকে সরাসরি গরু কিনে নিয়েছেন। তারা এ গুলো জেলার ২৫ পশুর হাটে বিক্রি
করেছেন। এ বছর মাঝারি ও ছোট সাইজের দেশীয় গরুর চাহিদা সবেচেয়ে বেশি ছিল। এ গরু প্রতিটি
১ লাখ ১০ হাজার থেকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ছোট-বড় খামারীও ভালো
লাভ করেছেন।
গোপালগঞ্জ
সদর উপজেলার কাঠি গ্রামের ফড়িয়া মিতুল শেখ (৫০) বলেন, জেলার বিভিন্ন গ্রামে গৃহপালিত
পশুর সাথে গরু মোটাতাজা করা হয়। এটি এখন টুঙ্গিপাড়া উপজেলার শত শত পরিবারের পেশায় পরিণত
হয়েছে। অর্গানিক পদ্ধতিতে তারা নিরাপদ মাংস উৎপাদন করে। গরুর সাইজ ছোট ও মাঝারি আকৃতির।
সব হাটেই এসব গরুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই আমরা গৃহস্থর কাছ থেকে গরু কিনে নিয়ে হাটে
বিক্রি করি। এতে আমাদেরও ভালো টাকা লাভ হয়।
কোরবানীর
হাটের ইজারাদার সালাম মোল্যা বলেন, জেলার গৃহপালিত ও খামরের পশুর চেহারা, বর্ণ, আকার
ও আকৃতি খুবই আকর্ষণীয় । তাই হাটে এ গরু আসা মাত্র একটু বেশি দামে বিক্রি হয়।
মুকসুদপুর উপজেলার কমলাপুর গ্রামের গরুর খামারি জহির হাসান টিটো মিয়া জানান সে ও তার ছেলে তাজুল হাসান এবারে ঈদের মৌসুমে তার খামার থেকে ছোট বড় ৩৪ টি গরু বিক্রি হয়েছে। তার খামারে সর্ব নিম্ম দর ছিল ৯০ হাজার টাকা, সর্বচ্চ বিক্রি হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। এবারে তার আয় ৫০ লাখ টাকার বেশী।
এবার তিনি আগামী বছরের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার তারাইল গ্রামের কৃষক হারান মল্লিক (৫০) বলেন, এ বছর ২ টি গরু মোটাতাজা করেছি। ১ লাখ ২৫ হাজার করে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ২টি গরু বিক্রি করেছি। এতে আমার অন্তত ১ লাখ ১০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। এ টাকায় আমার সারা বছরের সংসার খরচ চলে যাবে। ছাড়া সংসারের প্রায়োজনীয় সব খরচ এখন এখান থেকে মেটাতে পারছি। আমাদের গাভীর সাথেই এ গরু মোটাতাজা করি। কোরবানীর সময় এগুলো বিক্রি করে দেই। আবার পৌষ মাসের দিকে দেশীয় শংকর জাতের গরু কিনে কোরবানীর জন্য মোটাতাজা করি। এভাবে ৭ বছর ধরে গরু মোটাতাজা করছি। এতে আমরা ভালো আছি।
কোটালীপাড়া সোনাখালী গ্রামের গরু পালনকারী আরজ আলী বলেন, আমাদের এলাকা বিল বেষ্টিত। শুস্ক মৌসুমে বিলে গরু চড়াই। বর্ষা মৌসুমে বিলের পানিতে এক ধরণের ঘাস জন্মে। এ ঘাসের সাথে , খড়, গমের ভূষি, চিটা, খৈইল দিয়ে গরু মোটাতাজা করি। গরু মোটাতাজা করতে আমাদের তুলনামুলকভাবে খরচ কম লাগে। তাই গরু বিক্রি করে ভালই লাভ থাকে। বাড়িতে বসেই আমরা গরু বিক্রি করতে পারি। হাটে যেতে হয় না। কোরবানীর সময় গরু বিক্রি করে ঘরে টাকা তুলতে পেরেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সিরাজগঞ্জে গণমাধ্যম কর্মীদেরকে নিয়ে ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য নারী পক্ষ নামে একটি সংগঠন সিরাজগঞ্জ ও পাবনার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রবিবার (১৯ মে') দুপুরে শহরের এস. এস রোডস্থ নর্থ টাউন রেস্তোরাঁয় প্রোগ্রাম ফর উইম্যান ডেভোলপমেন্ট (পি ডাব্লিউডি) সার্বিক সহযোগিতা ও নারীপক্ষ আয়োজনে ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য দিনব্যাপী মতবিনিময় সভার শুভ উদ্বোধন করেন নারীপক্ষ চেয়ার পারসন গীতা দাস।
মতবিনময় সভায় নারীপক্ষ চেয়ারপার্সন গীতা দাস বলেন, মানুষ কোনো ভালো কর্ম করলে তাকে বিশেষায়িত করা যায়। কিন্তু নারীরা নির্যাতিত হলেও তাদেরকে বিশেষায়িত করা হয়। যেমন ধর্ষণের শিকার হলে তাকে ধর্ষিতা, নির্যাতনের শিকার হলে নির্যাতিতা বলা হয়। অথচ ধর্ষণের শিকার, নির্যাতনের শিকার লিখলেও হয়।’ একজন নারীকে মানুষ হিসেবে দেখলে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন কামরুন নাহার, ফেরদৌসী আখতার, পিডাব্লিউডি নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা জলি।
এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি চ্যানেল টুয়েন্টিফর সিনিয়র রিপোর্টার সাংবাদিক হীরুকগুণ, এনটিভি জেলা প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম ইন্না, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সুজন সরকার, বৈশাখী টেলিভিশন সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সুজিত সরকার, দীপ্ত টিভির সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি শিশির, দীপ্ত টিভি পাবনা জেলা প্রতিনিধি শামসুল আলম সহ অনেকে।
মন্তব্য করুন
পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামালের বিরুদ্ধে জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে প্রচারণার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের শিবপুর বাজার এলাকা থেকে জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করেন চেয়ারম্যার প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামাল।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপে আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যার প্রার্থী তানভীর ইসলাম বলেন, সাইফুল ইসলাম কামালের গুন্ডা সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত আমার কর্মী, সমর্থক, ভোটারদের ভয়ভীতি, হুমকী, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে ভোট দিতে নিরুৎসাহিত করছে। ফলে নির্বাচন কমিশনের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আচরণবিধি সাইফুল ইসলাম কামাল বারবার লঙ্ঘন করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামাল বলেন, ‘ঘোড়া নিয়ে প্রচার প্রচারণা করিনি। তবে আমি ঘেড়ার গাড়ি নিয়ে প্রচার প্রচারণা করেছি। এটাও যদি বিধি নিষেধ থাকে তাহলে এটাও পরিহার করবো।’
পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট ও রিটার্নিং অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় চেয়ারম্যান প্রার্থী এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি আমরা। তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন