ইনসাইড বাংলাদেশ

সাইবার নিরাপত্তা আইন পাশ হলে, তা হবে ‘কালো আইন’ : টিআইবি

প্রকাশ: ০৬:৩০ পিএম, ৩০ অগাস্ট, ২০২৩


Thumbnail সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া নিয়ে টিআইবি’র সংবাদ সম্মেলন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খোলস পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়াটি করা হয়েছে। কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মৌলিক দুর্বলতা ও উদ্বেগের কারণগুলো রয়েই গেছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়াটি বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, সেটি যদি আইনে প্রণীত হয়, তাহলে এটিও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো ‘কালো আইন’ হিসেবে প্রণীত হবে। তখন এটিও মানুষের মৌলিক স্বাধীনতা খর্ব করার ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। তাই অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে খসড়াটিতে ঢেলে সাজাতে হবে।

বুধবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। ‘খসড়া সাইবার নিরাপত্তা আইন–২০২৩: পর্যালোচনা ও সুপারিশ’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের তুলনামূলক তথ্য উপস্থাপন করেন টিআইবির পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ মনজুর-ই-আলম।

নতুন করে দুটি ধারাকে জামিনযোগ্য করে গত সোমবার ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন–২০২৩’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এতে এখন প্রস্তাবিত আইনে জামিনযোগ্য ধারাগুলো হলো ১৮ (১) (খ), ২০, ২১,২২, ২৩,২৪, ২৫,২৬, ২৮,২৯, ৩০,৩১, ৩২ ও ৪৬। এর আগে মন্ত্রিসভা নীতিগত অনুমোদন দেওয়ার সময়ে (৭ আগস্ট) আইনের খসড়ায় অজামিনযোগ্য ধারা ছিল ছয়টি। এখন দুটি ধারা (২১ ও ৩০) নতুন করে জামিনযোগ্য করায় অজামিনযোগ্য ধারা রয়েছে চারটি। যদিও সাংবাদিক, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মীসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের অনেকের আশঙ্কা, প্রস্তাবিত আইনে সাজা কমানো ও জামিনযোগ্য ধারা বাড়ানো ইতিবাচক হলেও বিভিন্ন অপরাধের সংজ্ঞা সুনির্দিষ্ট না করা এবং  ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অনেক বিষয়বস্তু প্রায় একইভাবে রেখে দেওয়ার কারণে প্রস্তাবিত আইনেও মানুষকে হয়রানি করার সুযোগ থেকেই যাবে। অবশ্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে অংশীজনদের ডেকে আলোচনা করা হবে।

প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া নিয়ে আলোচনার মধ্যেই আজ সংবাদ সম্মেলনে আইনের খসড়াটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছে টিআইবি।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়াটি প্রক্রিয়া ও বিষয়বস্তু—উভয় বিবেচনায় বিতর্কিত। প্রক্রিয়াগত বিতর্কের কারণ হলো, এই সরকারের সময় একটি ইতিবাচক চর্চা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত করা। কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া প্রণয়নের ক্ষেত্রে সেটি হয়নি। শুধু মতামতের জন্য ১৪ দিন সময় দিয়ে খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁরা ধরে নিতে চান সংশ্লিষ্ট অংশীজনকে সম্পৃক্ত করার এখনো সুযোগ আছে এবং সরকার এটি নিশ্চিত করবে।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়াটি যেভাবে প্রণীত হয়েছে, তাতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে শাস্তির পরিমাণ কমানো হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাড়ানোও হয়েছে। তা সত্ত্বেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মৌলিক দুর্বলতাগুলো এখানেও রয়ে গেছে। যেসব কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের উদ্বেগ ছিল, সেগুলোও রয়ে গেছে। মানুষের মৌলিক অধিকার, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, বাক্‌স্বাধীনতা, বিবেক ও চিন্তার স্বাধীনতা বিশেষ করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা—এ বিষয়গুলো খর্ব করার মতো অনেক উপাদান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ছিল, সেগুলোর চেতনা ও বিষয়বস্তু দুটিই সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়াতেও আছে। শাস্তি কমানোয় সাধুবাদ। কিন্তু মূল বিষয় হলো এটি (বর্তমান খসড়াটি) নিবর্তনমূলক।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যেভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ‘কালো আইন’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল, সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, সেটিই যদি আইনে প্রণীত হয়, তাহলে এটিও ‘কালো আইন’ হিসেবে প্রণীত হবে। তখন এটিও মানুষের মৌলিক স্বাধীনতা খর্ব করার মতো ঝুঁকি সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মত প্রকাশ করলে, তথ্য প্রকাশ করলে, চিন্তা ও বিবেক প্রকাশ করলে ঝুঁকির সম্মুখীন হওয়ার বার্তাটি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। এটি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এই আইনের উদ্দেশ্য যদি হয়, সাইবার নিরাপত্তা তাহলে তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। খসড়াটি এখন যে অবস্থায় আছে, সেটি যদি অনুমোদিত হয় তাহলে সেটিকেও ‘নিবর্তনমূলক আইন’ বলা ছাড়া উপায় থাকবে না। এটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কিছুটা পরিবর্তন করে, কিছু শাস্তি বাড়ানো-কমানোর নামে শুধু খোলস পরিবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু মূল বিষয়বস্তু অপরিবর্তিত রয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনের যেটি উদ্দেশ্য হওয়ার কথা ছিল, সেই সাইবার সিস্টেমকে নিরাপত্তা না করে সাইবার সিস্টেম ব্যবহার করে মতপ্রকাশ, তথ্যপ্রকাশ, চিন্তার প্রকাশের জায়গায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট অংশীজন, বিশেষ করে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাইবার নিরাপত্তার যে চর্চা, সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়াটি ঢেলে সাজাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনের যে মূল উদ্দেশ্য, সেখানে মতপ্রকাশ ও বাক্‌স্বাধীনতা খর্ব করতে পারে—এ রকম বিষয়বস্তু থাকার কথা নয়। যদি মতপ্রকাশের নামে বা তথ্যপ্রকাশের নামে অন্য কারও অধিকার হরণ বা মানহানি হয়, সে জন্য প্রচলিত আইন আছে। প্রচলিত আইনেই তার বিচার হবে। এখানে সাইবার নিরাপত্তা আইনে তার বিচার নির্ধারণ করে দেওয়ার কোনো যুক্তি আছে বলে তিনি মনে করেন না।

সংবাদ সম্মেলনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের তুলনামূলক তথ্য উপস্থাপন করতে গিয়ে টিআইবির পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ মনজুর-ই-আলম বলেন, সাইবার অপরাধ একটি ভিন্নধর্মী অপরাধ, সাইবার নিরাপত্তা ভিন্ন ধরনের কাঠামো; যেখানে কম্পিউটার ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো ইত্যাদির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা। এর বাইরে যত অপরাধ আছে, সেগুলো প্রচলিত আইনে বিচার করা সম্ভব। এগুলো সাইবার নিরাপত্তার অংশ হতে পারে না।

শেখ মনজুর-ই-আলম বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইন নামে যে খসড়াটি হয়েছে, সেটি মূলত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম পরিবর্তন করে করা হয়েছে। এ ছাড়া যে পরিবর্তন, সেটি হলো কোনো কোনো ক্ষেত্রে কারাদণ্ড বাদ দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কমানো হয়েছে। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে জরিমানা বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া বেশ কিছু ধারা জামিনযোগ্য করা হয়েছে।

শেখ মনজুর-ই-আলম আরও বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়াতেও পুলিশকে ‘ঢালাও ক্ষমতা’ দেওয়া হয়েছে। এখানে পুলিশ কর্মকর্তার ‘মনে করার ওপর’ নির্ভর করতে হচ্ছে। কারণ, পুলিশ কর্মকর্তা যদি মনে করেন, প্রস্তাবিত আইনের অধীনে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে তাহলে তিনি বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি করতে পারবেন এবং প্রয়োজনে গ্রেপ্তারও করতে পারবেন। এটি ভয়ংকর আশঙ্কা তৈরি করছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন টিআইবির উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) সুমাইয়া খায়ের ও কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম। 


সাইবার নিরাপত্তা আইন   খসড়া   টিআইবি   সংবাদ সম্মেলন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু দিয়ে ট্রেন চলবে চলতি বছরই

প্রকাশ: ০৬:০৭ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রমত্তা যমুনার বুকে এক রেখায় সম্পূর্ণ দৃশ্যমান বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু। নির্মাণাধীন সেতুটির ৪৯টি স্প্যানের সব বসে যাওয়ার পর গত মাসেই সেতুর ৪.৮ কিলোমিটারের সম্পূর্ণটা দৃশ্যমান হয়েছে। বর্তমানে কিছু জায়গায় চলছে সংযোগের কাজ। সেতু নির্মাণ প্রকল্পের বাকি কাজ শেষ করে চলতি বছরের শেষ নাগাদ উদ্বোধনের প্রস্তুতির লক্ষ্যে বর্তমানে পুরোদমে এগিয়ে চলছে বাকি কর্মযজ্ঞ।

 

এরই মধ্যে সেতুতে দেড় কিলোমিটার রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। তারপর আগামী আগস্টে সেতুটিতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করবে। এর পরই প্রমত্তা যমুনার বুকে ছুটবে দ্রুতগতির ট্রেন।

ট্রেন চলাচলের জন্য সেতুটি খুলে দেওয়ার পর বাড়বে রেলের সক্ষমতা। সেতুটির মাধ্যমে দেশের পূর্বাঞ্চল রেল ও পশ্চিমাঞ্চল রেল নতুন আঙ্গিকে যুক্ত হবে।

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাকি কাজ শেষ করতে প্রকল্প কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন শ্রমিকরা। সেহেতু রেললাইন বসানো, বাকি অংশের সংযোগ স্থাপন, টেলিকমিউনিকেশন, স্টেশন নির্মাণসহ সব ধরনের কাজই সমানতালে এগিয়ে চলেছে। সেতুর দুই পারের ১৩ কিলোমিটার সংযোগ রেললাইনের অর্ধেক এরই মধ্যে বসে গেছে।

 

বঙ্গবন্ধু রেল সেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘সেতুর কাজ প্রায় শেষ। সেতুর ওপর রেললাইন বসানো শুরু হয়ে গেছে। আগামী ডিসেম্বরে উদ্বোধনের পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এখন কাজ করছি।’

 

বঙ্গবন্ধু রেল সেতু চালু হলে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগের বর্তমান অবস্থা পাল্টে যাবে। মূলত যমুনা নদী রেলওয়ের দুই অঞ্চলকে বিভক্ত করে রেখেছিল।বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর পূর্বাংশ থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম পর্যন্ত এলাকা পূর্বাঞ্চল। আর সেতুর পশ্চিমাংশ থেকে রাজশাহী, খুলনাসহ পশ্চিমাঞ্চল।

 

এই দুই অঞ্চলের রেললাইনের ধরন আলাদা। পূর্বাঞ্চলের রেললাইনের প্রায় পুরোটায় মিটার গেজ ট্রেন চলাচল করে। এই ট্রেনগুলো প্রস্থে ছোট হওয়ায় রেললাইনগুলোও সরু। আর পশ্চিমাঞ্চলের রেললাইনে বেশির ভাগ চলাচল করে ব্রড গেজ ট্রেন। ফলে রেললাইনও বড়।

 

বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুতে বর্তমানে রয়েছে এক লাইনের রেল ট্র্যাক। এই লাইন দিয়ে খুব ধীর গতিতে ট্রেন চলাচল করে। পূর্ব স্টেশন থেকে একটি ট্রেন ছাড়লে পশ্চিম স্টেশনের ট্রেনকে অপেক্ষায় থাকতে হয়। নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু রেল সেতু ডুয়াল গেজ রেল সেতু। সেতুটি দিয়ে ব্রড গেজ ও মিটার গেজ দুই ধরনের ট্রেনই চলাচল করতে পারবে। ফলে সেতু পারাপারে অন্য পারে আর ট্রেনকে অপেক্ষায় থাকতে হবে না।

 

১৯৯৮ সালের ২৩ জুন প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু সেতুতে রেল সংযোগ চালু হয়। সেতুটির ওপর দিয়ে বর্তমানে সর্বোচ্চ ৪৩.৭০ কিলো-নিউটন/মিটার ওজন বহনের অনুমতি রয়েছে। ট্রেনে বেশি বগি যুক্ত করার সুযোগও নেই। সঙ্গে রয়েছে এক লাইনের সীমাবদ্ধতা। ফলে বেশি ট্রেন পরিচালনা করা সম্ভব নয়।

 

রেলের তথ্য মতে, বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে বর্তমানে দিনে ৩৮টি ট্রেন চলাচল করছে। নতুন সেতু চালু হলে দিনে চলবে ৮৮টি ট্রেন। বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে যেখানে ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করে, সেখানে নতুন এই রেল সেতুতে ব্রড গেজ ট্রেন প্রতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার এবং মিটার গেজ ট্রেন ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করতে পারবে। এতে সময়ও বাঁচার পাশাপাশি ট্রেন চলাচলের সময় প্রায় ৩৫ মিনিট কমে আসবে।

 

একই সঙ্গে নতুন সেতুটি সার্ক, বিমসটেক, সাসেক ও অন্যান্য আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক রেলওয়ে রুট এবং ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের অংশে পরিণত হতে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে নানা জটিলতা কাটিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ, আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহনের সুযোগ তৈরি হতে যাচ্ছে।'

 

২০১০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন হলেও মূল কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ১০ আগস্ট। দুই ভাগে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলমান আছে।

 

প্রকল্পের অগ্রগতি প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, গত ১ মে পর্যন্ত নির্মাণ কাজের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৮৪ শতাংশ। আর আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৬২.৫ শতাংশ।

 

সেতুর মোট ৫০টি খুঁটির মধ্যে ৫০টিই বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এই ৫০টি খুঁটির মধ্যে রেলের পশ্চিমাঞ্চলে ২৩টি আর পূর্বাঞ্চলে ২৭টি খুঁটির অবস্থান।

 

যমুনা নদীর ওপর রেলপথ পুরনো হলেও নতুন করে যুক্ত হতে যাচ্ছে ৩০ কিলোমিটার রেললাইন। বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে নির্মিত হচ্ছে ডুয়াল গেজ ডাবল লাইনের মূল সেতুটি। এর সঙ্গে সেতুর দুই প্রান্তে থাকছে দশমিক ০৫ কিলোমিটার সংযোগ সেতু, ৭.৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে সংযোগ বাঁধ এবং লুপ ও সাইডিংসহ মোট ৩০.৭৩ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।'

 

জানতে চাইলে পরিবহন ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘দীর্ঘ মেয়াদে এই রেল সেতু দেশের রেল ব্যবস্থায় প্রভাব রাখবে। কারণ, যমুনা নদী রেল ব্যবস্থাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে রেখেছিল। এখন ডুয়াল গেজ লাইন নির্মাণ হওয়ায় ব্রড গেজ ও মিটার গেজ দুই ধরনের ট্রেনই চলাচল করতে পারবে।’

 

প্রসঙ্গত, নতুন রেল সেতুটি নির্মাণে প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। প্রথম সংশোধনীর পর ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে চার হাজার ৬৩১ কোটি টাকা। আর জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা, যা প্রকল্পের ৭২.৪০ শতাংশ।'


বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু   দৃশ্যমান   কাজের অগ্রগতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

নরসিংদীতে হাসাপাতাল কতৃপক্ষের অবহেলার রোগী মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশ: ০৫:৪৮ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

নরসিংদীর মাধবদীতে সিটি (প্রাঃ) হাসপাতালে সিজারের পর রোগীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পরিবার ও এলাকাবাসী হাসপাতালের দায়িত্ব অবহেলায় মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন ।

 

জানা যায় রবিবার (১৯ মে) রাত ১১টায় বথুয়াদী গ্রামের ইয়ামিনের স্ত্রী ছনিয়া আক্তার (২০) বাচ্চা প্রসবের ব্যাথ্যা হলে মাধবদী সিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে অপারেশনের মাধ্যমে ছেলে বাচ্চা জন্মদানের পর রোগীর মৃত্যু হয়।

 

বিভিন্ন সূত্র জানায়, আজ সোমবার (২০ মে) বেলা ১১টা পর্যন্ত বিষয়টি সমাধানের জন্য হাসপাতালেই লাশ পরেছিল। পরে ভুক্তভোগীর পরিবারকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিশাল অংকের অর্থের বিনিময়ে চুপ থাকতে বলে। 

 

এবিষয়ে মৃত ছনিয়ার স্বামী বলেন মোঃ ইয়ামিন বলেন, ‘সিজার করার পর রোগী অসুস্থ হয়ে যায়। সারারাতই রোগী কষ্ট পায়। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ডাক্তার আনার কথা বললেও ডাক্তার আসেনি। অন্য হাসপাতালে নেওয়ার কথা বললেও তারা রোগী নিয়ে যেতে দেয়নি।’

 

রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে মাধবদী সিটি হাসপাতালের ম্যানেজার জাকির হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ‘রাত ১১টায় রোগী ভর্তি হয়। রাত ১২টার সময় ডাঃ শের ই মোস্তফা সিজার করলে একজন ছেলে বাচ্চার জন্ম হয়। পরে রোগীর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে হাসপাতালের নিয়মিত ডিউটি ডাক্তার সুমন কুমার নাথ চিকিৎসা করেন। এসময় অন্যকোন ডাক্তার ছিলোনা। রোগী ভোর ৫টায় মৃত্যুবরণ করেন।’

 

হাসপাতালের নিয়মিত ডিউটি ডাক্তার সুমন কুমার নাথ বলেন, রাতে যখন নিয়ে আসে তখন আমরা বলেছিলাম যে রোগীর অবস্থা ভালো নয়। রোগী ও বাচ্চা দুইজনই মারা যেতে পারে। আমরা সিজার করাতে পারব না। কিন্তু রোগীর গার্জিয়ানের কথায় আমরা সিজার করিয়েছি।’

 

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে মাধবদী সিটি হাসপাতালের এমডি মোঃ তানিনের সাথে কথা বলতে হাসপাতালে গিয়ে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে কল দিলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

 

উল্লেখ্য যে মাধবদীর হাসপাতাল গুলোতে কয়েকদিন পরপর রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। গত বছরের মার্চ মাসে মাধবদী প্রাইম জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তারের অবহেলায় বিনা চিকিৎসায় ফাবিহা মাদেহা নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। গত রমজান মাসে মাধবদী হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালে সিজার করার আগ মুহূর্তে রোগীকে এনেস্থিসিয়া দেয়ার কিছুক্ষণ পর মৃত্যুবরণ করে। পেটে থাকা বাচ্চাটিকেও পরে বের করা হয়নি। ফলে এক সাথে দুইটি জীবন চলে গেলো।

তাই এলাকাবাসী হাসপাতালগুলোতে সিভিল সার্জনের নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন। প্রশাসনের তদারকির মাধ্যমে যেসকল হাসপাতাল পরিচালনার যোগ্য নয় তাদের অনতিবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়ার দাবি করেন। পাশাপাশি অত্র অঞ্চলের জন্য একটি সরকারি হাসপাতাল নির্মানের দাবী জানান।


রোগী মৃত্যু   হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ   সিজার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক দেবে সরকার, পুরস্কার কোটি টাকা

প্রকাশ: ০৫:৩০ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অবদান রাখাসহ বিভিন্ন অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পদক দেবে সরকার। প্রতি ২ বছর পর একজন ব্যক্তিকে এ পুরস্কার দেওয়া হবে। 

সোমবার (২০ মে) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

পদক পাওয়া ব্যক্তি ১ লাখ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা পাবেন। এছাড়া তিনি ৫০ গ্রাম ওজনের (চার ভরির বেশি) ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ পদক পাবেন।

এ লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পদক নীতিমালা-২০২৪ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান।

বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক   সরকার   মন্ত্রিসভা বৈঠক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

নীলফামারীতে যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় কৃষি যন্ত্র বিতরণ


Thumbnail

নীলফামারীতে কৃষি মন্ত্রনালয়ের সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় ভর্তুকি মূল্যে কম্বাইন হারভেস্টর প্রদান করা হয়েছে কৃষককে।

 

সোমবার (২০ মে) নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে চাবি তুলে দিয়ে কম্বাইন হারভেস্টর প্রদান করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী হাসান। এতে সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক আহমেদ।

 

এসময় জানানো হয় ৩০লাখ ৫০হাজার টাকা দামের এই কৃষি যন্ত্র সুবিধাভোগী কৃষকরা পাবেন ১৫লাখ ২৫ হাজার টাকা দামে। 

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক আহমেদ জানান, 'এই কৃষি যন্ত্রের ফলে শ্রমিক সংকট দুরীকরণ, অর্থনৈতিক ও সময় সাশ্রয় হবে কৃষকের। পাশাপাশি এক যন্ত্র দিয়ে ধান কর্তন ও মাড়াই করতে পারবেন কৃষকরা। এরফলে লাভবান হবেন কৃষকরা। সদর উপজেলায় পাঁচজনকে এই কৃষি যন্ত্র প্রদান করা হবে।'


কৃষি যন্ত্র   কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশন শুরু আগামী ৫ জুন

প্রকাশ: ০৪:৪৭ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

আগামী ৫ জুন থেকে শুরু হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় ও বাজেট অধিবেশন। ওই দিন বিকাল ৫টা থেকে জাতীয় সংসদের অধিবেশন আহ্বান করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

সোমবার জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কেএম আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৬ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বাজেট নিয়ে হওয়া এবারের অধিবেশন দীর্ঘ হবে বলে জানা গেছে। ৫ জুন অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে সংসদের কার্য উপদেষ্টা বৈঠকে সংসদ কত দিন চলবে তা নির্ধারণ করা হবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন চলতি মাসের ২ তারিখ হতে শুরু হয়ে ৯ মে শেষ হয়। ওই অধিবেশনে একটি বিল পাশ হয়।


বাজেট অধিবেশন   অর্থনীতি   জাতীয় সংসদ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন