ইনসাইড পলিটিক্স

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বিএনপির সব দরজা

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২১ নভেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

একে একে বিএনপির সব দরজাই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিএনপি না পারছে আন্দোলন করতে না পারছে নির্বাচনে যেতে। এমনকি তাদের ভাষায় একতরফা নির্বাচনের পরও যে তারা আন্তর্জাতিক সহানুভূতি সমর্থন পাবেন এমন সম্ভাবনাও ক্রমশ নিঃশেষিত হয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহল বরং আওয়ামী লীগের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে বলে বিএনপি নেতারা মনে করছেন। এরকম একটি বাস্তবতায় বিএনপির জন্য একরাশ হতাশা এবং তীব্র অস্তিত্বের সংকট দানা বেঁধে উঠেছে। বিএনপির দরজাগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন তাদের অদূরদর্শী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এবং ভুল কৌশল তাদেরকে এই অবস্থায় নিয়ে এসেছে। বিএনপির জন্য যে সব ক্ষেত্রে দরজাগুলো বন্ধ হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে:

১. নির্বাচনের আন্দোলন মুখ থুবরে পড়েছে: সাধারণ মানুষ এখন আন্দোলন পছন্দ করে না। তারা জ্বালাও-পোড়াও, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ইত্যাদিকে মোটামুটি ঘৃণা করে। বিএনপি সেই পথেই গেছে। একের পর এক অবরোধে তারা গাড়ি ভাঙচুর করেছে, নিরীহ মানুষের ওপর আক্রমণ করেছে, বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসী তৎপরতা করেছে। এর ফলে সাধারণ জনগণ বিএনপির ওপর ক্ষুব্ধ হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ বিএনপিকে আর পছন্দ করতে পারছে না। এই ধরনের পদ্ধতি জনগণের থেকে বিএনপিকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। 

২. আন্দোলনের গতি নেই: বিএনপি ধারণা করেছিল যে, তাদের নেতাকর্মীরা আন্দোলনে যাবে এবং হরতাল, অবরোধ ইত্যাদি সফল করার ক্ষেত্রে নির্ভীক ভূমিকা রাখবে। কিন্তু বিএনপির আন্দোলন গতিহীন হয়ে পড়েছে। নেতারা এখন বিভ্রান্ত, দ্বিধান্বিত। তারা এই সমস্ত আন্দোলনের সঙ্গে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত রাখতে পারছেন না। কর্মীরা হতাশ হয়ে যে যার মতো বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বিএনপির একটি বড় অংশ পদত্যাগ করছে এবং তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। 
৩. নির্বাচনে যাওয়ারও পথ বন্ধ: বিএনপির সিদ্ধান্তহীনতা, অযৌক্তিক রাজনৈতিক অবস্থান তাদেরকে নির্বাচন থেকেও দূরে রেখেছে। এখন এমন একটা অবস্থায় গিয়েছে যে বিএনপি নির্বাচনও করতে পারবে না। তাদের দলের অন্তত দুইশ জন নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। আরও কিছু নেতা আছেন যারা নির্বাচনের জন্য অযোগ্য। এরকম অবস্থায় বিএনপির জন্য নির্বাচন করার আর কোন পথ খোলা নেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আর নির্বাচনে গেলে বিএনপি ভাল ফলাফল করত, এমনকি সংগঠনকে গুছিয়ে নেওয়ার একটা সুযোগ পেত, সেই সুযোগও বিএনপি হারিয়েছে।
 
৪. আন্তর্জাতিক মহলও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে: আন্তর্জাতিক মহল বিএনপির নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত এবং ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপি যে সন্ত্রাস সহিংসতার রাজনীতির পথ বেছে নিয়েছে, তার ফলে অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছে এবং বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক মহল থেকে বিএনপি কোন সহানুভূতি বা সহযোগিতা পাচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত কয়েকটি দেশ বিএনপিকে নির্বাচনে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল এবং সেই পরামর্শ অনুযায়ী বিএনপিকে শর্তহীন সংলাপের কথাও বলেছিল। কিন্তু এসব কোন কিছুতেই কর্ণপাত করেনি। বরং বিএনপির একগুয়েমি রাজনীতির কারণে এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বিএনপির প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে এবং বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এর ফলে বিএনপি একটি বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। কারণ আন্তর্জাতিক মহলই ছিল বিএনপির শক্তির মূল উৎস। তারাই যখন বিএনপিকে সমর্থন দিচ্ছে না তখন একটি কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছে বিএনপি। 

একে একে সব দরজাই দলটির জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাহলে কি এই নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপির কবর রচিত হবে? বিএনপির কফিনে কি শেষ পেরেক ঠুকছে?


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

একদফা দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক বিএনপির

প্রকাশ: ১২:০৮ এএম, ২৭ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সরকার পতনের একদফা দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে বিএনপি। শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ ডাক দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ন্যূনতম একদফা- সরকারের পতনের দাবিতে সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য জাতীয় ঐক্যের আহ্বান বিএনপির।’

এতে আরও বলা হয়, ‘জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে বৃহত্তর স্বার্থে, লুণ্ঠিত গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, অধিকারহীন জনগণের ও জাতির মুক্তির লক্ষ্যে আমরা উপরোক্ত ন্যূনতম একদফার ভিত্তিতে এবং দাবিতে দেশের সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, ব্যক্তি ও শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি ‘জাতীয় ঐক্য’ গঠনের আহ্বান জানাচ্ছি।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমরা বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎ আন্দোলনে সকল শরীক দল ও জোট, বাম-ডান সকল রাজনৈতিক দল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য ধর্মভিত্তিক ও সকল ইসলামি রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের প্রতি ও জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাচ্ছি।’

জাতীয় ঐক্যের এই ঐতিহাসিক ঘোষণা ও দলিল দেশ ও জাতির মুক্তি ত্বরান্বিত করবে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। আরও জানানো হয়, শীঘ্রই সম্মতিপ্রাপ্ত সকলের স্বাক্ষরে যৌথ বিবৃতি প্রদান করা হবে।

বিএনপি   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সাইবার যুদ্ধে আওয়ামী লীগের শোচনীয় পরাজয় কেন?

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

এখন ষড়যন্ত্র এবং আন্দোলনের দু’টি অংশ হচ্ছে। একটি দৃশ্যমান অংশ যেটি মাঠে হচ্ছে। সরকার পতনের লক্ষ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ওপর ভর করে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, পেশাদার সন্ত্রাসীরা এক জোট হয়ে দেশে নাশকতা সৃষ্টি করেছে। একটি ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টির চেষ্টা করে সরকারকে হটানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলো। অন্যটি সাইবার জগতে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

ভার্চুয়াল দুনিয়ায় একটি দৃশ্য ছিলো যেই দৃশ্যে সরকারকে নানাভাবে অপপ্রচারের শিকার হতে হয়েছে। এই ঘটনাগুলোকে বিকৃত করে, অপ-তথ্য প্রকাশ করে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহলকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। সরকার মাঠের আন্দোলনকে দমন করে মোটামুটি স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে পেরেছে। বিশেষ করে সেনা মোতায়নের পর আস্তে আস্তে পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। সাধারণ মানুষও যে হত্যা, বিভীষিকা এবং তাণ্ডব হয়েছে তা নিয়ে বিস্মৃত এবং হতবাক। তারা এধরনের পরিস্থিতিকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ বলেই মনে করছেন।


এই যুদ্ধে দৃশ্যতই সরকার বিজয়ী হয়েছে এবং সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। সাধারণ মানুষ আর যাই হোক, এই ধরনের ভাঙচুর, বিশেষ করে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, সেতু ভবনের মতো অতিগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ভাঙচুরকে সমর্থন করেনি। তারা এই আন্দোলন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু আন্দোলনের তথ্যগুলো আমাদের মূল ধারার টেলিভিশন বা সংবাদপত্রে যেভাবে আসছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসছে তার উল্টোভাবে। কিছুদিন ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকার কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ যেতে পারেনি। কিন্তু সাইবার যুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত, বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী বিশ্বব্যাপী তাদের অপপ্রচার অব্যাহত রেখেছে। আর একারণেই আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল, বিভ্রান্তিকর তথ্যগুলো ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিতও হয়েছে। আর এই যুদ্ধে আওয়ামী লীগ শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছে। এখন যখন ইন্টারনেট খুলে দেয়া হয়েছে, গতকাল থেকে ইউটিউব চালু হয়েছে তখন দেখা গেছে ইন্টারনেট জগত পুরোটা বিএনপি-জামায়াতের। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠীরদের দখলে। সেখানে এমন সব আজগুবি, বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করা হচ্ছে যা কল্পনারও অতীত।


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়ানো হয়েছে র‌্যাব নাকি হেলিকপ্টার থেকে গুলি করেছে। র‌্যাব কখনোই হেলিকপ্টারে করে গুলি করেনি। হেলিকপ্টার থেকে টহল দিয়েছে, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। সেটিকে গুলিবর্ষণ হিসেবে চালিয়ে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, পুলিশ নির্মমভাবে ছাত্রদের হত্যা করেছে। কিন্তু পুলিশ পিটুনি খেয়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাদে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলো। সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়। ছাত্রদের সাথে কোন ধরনের সহিংসতায় না জড়ানোর জন্য এবং রক্তপাত এড়ানোর জন্যই পুলিশ এ অবস্থান নিয়েছে। পুলিশের সহনশীলতার কারণেই এই আন্দোলনের সাথে যখন সন্ত্রাসীরা যুক্ত হন তখন আন্দোলন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিলো। অথচ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বীভৎস মিথ্যা এবং বিকৃত ছবি প্রচার করা হয়েছে। বিএনপি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রকাশ করেছে যা আসলে মিথ্যা এবং সেখানে অতীতের বিভিন্ন সন্ত্রাস, সহিংসতার ঘটনাকে জোড়া লাগিয়ে সেটি সাম্প্রতিক সময়ের সহিংসতা হিসেবে চালিয়ে দিয়েছে।


প্রশ্ন উঠেছে, আওয়ামী লীগ ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রবর্তক। ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছিল এবং আওয়ামী লীগের হাত ধরেই বাংলাদেশ আজ তথ্য প্রযুক্তিতে নীরব বিপ্লব করেছে। কিন্তু এই সাইবার যুদ্ধে কেন আওয়ামী লীগ শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী গর্ব করে বলেছিলেন, তার এক লাখ সাইবার যোদ্ধা মাঠে নামানো হয়েছে। সেই যোদ্ধারা এখন কোথায়? আওয়ামী লীগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেন শোচনীয়ভাবে হেরে গেল? রাজনীতির কৌশলে এবং আন্দোলন দমনের ক্ষেত্রে সরকার যতোটা ভালো করেছে ঠিক ততটাই ব্যর্থ হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এর কারণ কী?

এর কারণ হলো, আওয়ামী লীগের নেতাদের আত্মতুষ্টি, অহংকার এবং তাদের এ ব্যাপারে মনোযোগী না হওয়া। সাইবার এই যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার কারণে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে নানারকম নেতিবাচক তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। আর একারণেই তথ্য প্রযুক্তির এই ক্ষেত্রটির দিকে নতুন করে নজর দিতে হবে। অপ-তথ্যে সয়লাব হয়ে যাওয়া বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক তথ্য দিয়ে এক ধরনের আবহ সৃষ্টি করার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সুস্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে এখনই। 


সাইবার যুদ্ধ   আওয়ামী লীগ   কোটা আন্দোলন   তথ্য   ডিজিটাল বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতে বিএনপিসহ সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে: ফখরুল

প্রকাশ: ০৬:৪৫ পিএম, ২৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সরকার নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ব্যর্থতা আড়াল করতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলামগীর।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান তিনি। 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে হামলা চালিয়ে ইতিহাসে হতাহতের যে বর্বরোচিত নজীর স্থাপন করেছে তা দেশ-বিদেশের সকল নির্মম-নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘একটি স্বাধীন দেশে সরকারের দায়িত্ব হলো-রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া, গত কিছুদিন যাবত কোটা সংস্কার আন্দোলনে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা যখন যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলনরত তখন সেই মুহূর্তে সরকারি দলের নেতা-মন্ত্রীরা তাদেরকে তাচ্ছিল্য করে আওয়ামী সন্ত্রাসীদেরকে নির্দেশ দেয় তাদেরকে নির্মূল করার।’


বিএনপি মহাসচিব এই গণহত্যা, নির্যাতন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে সকল দেশ প্রেমিক মানুষ, রাজনৈতিক দল, ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, শ্রমিক ও পেশাজীবীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভয়াবহ ফ্যাসীবাদী শাসক গোষ্ঠীকে পরাজিত করে জনগণের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের দূর্বার সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার আহ্বান জানান।

বিএনপি   গ্রেপ্তার   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলামগীর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

গ্রেপ্তার হচ্ছে তারেকপন্থিরা, বহাল তবিয়তে ফখরুলের লোকজন

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযান চলছে। নির্বাচনের আগে ২৮ অক্টোবর বিএনপির তাণ্ডবের পর যেভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করেছিল সরকার ঠিক একইভাবে এবারও ১৭ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে যে সন্ত্রাস, সহিংসতা হচ্ছে তার হোতাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এই সময় নাশকতায় ছাত্রশিবির এবং জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রদল এবং বিএনপি নেতারা সরকার পতনের একটা নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন। সেই চেষ্টা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তারা আন্দোলনকে সহিংস এবং নাশকতার পথে নিয়ে যান। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো যেমন বিটিভি, সেতু ভবন ইত্যাদি হামলার পিছনে বিএনপির সরাসরি সম্পৃক্ততার খবর পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর এই কারণেই যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। 

তবে মজার ব্যাপার হলো যে, এই গ্রেপ্তারে তারেকপন্থিরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। অন্যদিকে ফখরুলপন্থিরা বহাল তবিয়তে আছে। এখন পর্যন্ত যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা প্রায় সবাই তারেকের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন হিসেবে বিবেচিত হন। এদেরকে দিয়ে তারেক তার বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। বিএনপিতে তারা তারেক জিয়ার একান্ত অনুগত এবং পদলেহি বলেই পরিচিত। 

গ্রেপ্তার অভিযানের প্রথম গ্রেপ্তার শুরু হয়েছে গত শুক্রবার। শুক্রবার (১৯ জুলাই) প্রথম গ্রেপ্তার হন রুহুল কবির রিজভী। রিজভীকে বিএনপির সম্ভাব্য মহাসচিব হিসেবে মনে করা হয় এবং তিনি এখন তারেক জিয়ার সবচেয়ে আস্থাভাজন ব্যক্তিদের একজন। তার পরামর্শে এবং নেতৃত্বেই বিএনপিতে শুদ্ধি অভিযান পরিচালিত হচ্ছিল। এছাড়াও গ্রেপ্তার হয়েছেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যিনি তারেক জিয়ার আরেকজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি এবং অর্থদাতা হিসেবেও পরিচিত। গ্রেপ্তার হয়েছেন শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। যিনি তারেক জিয়ার আরেকজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি।

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) নেতা আন্দালিব রহমান পার্থকে তারেক জিয়ার উপদেষ্টা মনে করা হয়। তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারেক জিয়া ছাত্রদলের যে নতুন কমিটি করেছেন সেই কমিটিতে যাদেরকে নিয়েছেন তাদের মধ্যে থেকেও বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অর্থাৎ একটু খতিয়ে দেখলে দেখা যায় যে, গ্রেপ্তার অভিযানে তারেক জিয়ার লোকজনকে বেশি টার্গেট করা হয়েছে। অন্যদিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে যারা ঘনিষ্ঠ তাদেরকে আড়ালে দেখা যাচ্ছে। তারা তাদেরকে খুব একটা তৎপর দেখা যাচ্ছে না। যেমন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এমরান সালেহ প্রিন্স এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হননি। হাবিবুর রহমান বাইরে আছেন। বাইরে আছেন আসাদুজ্জামান খান রিপন। এরকম অনেক ফখরুল ঘনিষ্ঠরা এখন বহাল তবিয়তে আছেন। তারা বিভিন্ন টকশোতেও যাচ্ছেন। 

তবে এর কারণ হিসাবে অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা গেছে যে, বিএনপি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে সহিংসভাবে যুক্ত হবে কি না এ নিয়ে বিএনপির মধ্যেই মতবিরোধ হয়েছে। তারেক জিয়া অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে এই আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন এটি হবে আত্মঘাতী। এ কারণে তারেক জিয়া মির্জা ফখরুলকে পাশ কাটিয়ে তার ঘনিষ্ঠদের এই আন্দোলনে যুক্ত করেন। ছাত্রদল ও যুবদলের ক্যাডারদের মাঠে নামান। আর এ কারণেই ফখরুলপন্থিরা এখন নিরাপদে আছেন। আর তারেক জিয়ার যারা ঘনিষ্ঠ তারা এই ষড়যন্ত্রের অংশ হওয়ার কারণে গ্রেপ্তার হচ্ছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘনিষ্ঠরা এ সময় নিষ্ক্রিয় অবস্থায় ছিলেন।

কোটা আন্দোলন   গ্রেপ্তার   তারেক জিয়া   নাশকতা   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কাদেরকে নিয়ে টালমাটাল আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

টানা তিন বারের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। দলে তার কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা আওয়ামী লীগ সভাপতির পরপরই। সারাদিনই দলীয় কার্যালয়ে কিছু না কিছু বলেন। সংবাদ সম্মেলন করে নানা বিষয়ে বক্তব্য রাখাকে তিনি রীতিমতো একটি রেওয়াজে পরিণত করেছেন। কিন্তু সেই ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে আওয়ামী লীগে এখন নানা রকম অস্বস্তি এবং প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে। 

ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বেই আওয়ামী লীগের এই বেহাল দশা কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন করেছেন দলের কর্মীরা। তারা ওবায়দুল কাদেরের অতিকথনের সমালোচনাও করছেন। আর সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে আত্মসমালোচনা চলছে। বিশেষ করে কোটা আন্দোলন যখন সহিংসতায় রূপ নেয় তখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যেভাবে মাঠে নামার কথা ছিল সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য আওয়ামী লীগ সেটা করতে পারেনি। আর এ নিয়ে দফায় দফায় আত্মসমালোচনা হচ্ছে আওয়ামী লীগে। প্রতিদিনই আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন নেতাদের নিয়ে কথা বলছেন। কিন্তু এই সমস্ত বৈঠকগুলোতে প্রায় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। গতকালও আওয়ামী লীগের আত্মসমালোচনামূলক বৈঠকে হইচই হট্টগোল হয়েছিল। অনেকে ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান পর্যন্ত দেয়। এরকম পরিস্থিতিতে সংগঠনকে পুনর্বিন্যাস করা, সংগঠনকে শক্তিশালী করার বিষয়ে অনেকে গুরুত্ব দিয়েছেন। 


ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে যে প্রশ্নগুলো এবং সমালোচনাগুলো উঠেছে তার মধ্যে রয়েছে;

১. অতিকথন: ওবায়দুল কাদের অতিকথন করেন। সারাক্ষণই তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন এবং এ সমস্ত কথাবার্তার মধ্যে অনেক সময় মাত্রা জ্ঞান ঠিক থাকে না। যার ফলে জনমনে অস্বস্তি হয়। এ কারণে তার কথার লাগাম টেনে ধরা উচিত বলে অনেকে মনে করেন।

২. সিনিয়র নেতাদেরকে পাত্তা না দেওয়া: অনেকেই বলছেন যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসাবে, সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে অনেক চৌকস জনপ্রিয় এবং মাঠের নেতা রয়েছেন। কিন্তু তাদের কাউকেই কথা বলতে দেওয়া হয় না। প্রতি সংবাদ সম্মেলনে কেন ওবায়দুল কাদেরকে কথা বলতে হবে। সব বিষয়ে তিনি কেন সংবাদ সম্মেলন করবেন- এই প্রশ্ন উঠেছে আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেই। বিশেষ করে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন তখন দেখা গেছে যে, সৈয়দ আশরাফ কথা বলতেন কম, অধিকাংশ সময় কথা বলতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এখন সেই পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। কোনও নেতাকেই কোনও স্পেস দেওয়া হয় না। এটি নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। 


৩. সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না: ওবায়দুল কাদেরের বড় সমস্যার বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে যে, তিনি ঠিকমতো সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। উদাহরণ হিসাবে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের পূর্ণাঙ্গ কমিটির প্রসঙ্গ নিয়ে কথা উঠেছে। এই কমিটিগুলো জমা দেওয়া হয়েছে, কমিটির বিরুদ্ধে পদ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। টাকা নিয়ে অডিও রেকর্ড পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এরপরও এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি। তিন বছর হতে চলল ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের কোনও কমিটি হয় না। সাধারণ সম্পাদকের কারণে সারাদেশে আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি কোন্দল দানা বেঁধে উঠছে বলে অনেকে মনে করেন। যদি তিনি নির্লিপ্ত না থাকতেন, উদাসীন না থাকতেন এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারতেন তাহলে এই পরিস্থিতি গুলো হতো না বলে অনেকে মনে করেন। 


৪. কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই: ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে কর্মীদের যোগাযোগ নেই। তিনি দলীয় কার্যালয়ে আসেন। কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেন, আবার চলে যান। কর্মীদের সাথে অনেক সময় তার রূঢ় ব্যবহারেরও অভিযোগ রয়েছে। কর্মীরা বলছেন যে, সাধারণ সম্পাদক যদি কর্মীদের সঙ্গে কথা না বলেন তাহলে তিনি কিভাবে দল চালাবেন।

৫. সবকিছুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকা: ওবায়দুল কাদের কথা যেমন বেশি বলেন তেমনি সব সিদ্ধান্তের জন্য তাকিয়ে থাকেন আওয়ামী লীগ সভাপতির দিকে। নিজে তিনি কোনও সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না। ফলে দলের নেতা এবং কর্মীরাও জাননে না দলের নির্দেশনা কি। উদাহারণ হিসেবে বলা হচ্ছে কোটা আন্দোলনের পর এখন যে পরিস্থিতি সেই পরিস্থিতিতে করণীয় কি সে ব্যাপারে ওবায়দুল কাদেরের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনও দিক নির্দেশনা পাওয়া যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন দলের দায়িত্ব পালন করেছেন ওবায়দুল কাদের। এক সময় ত্যাগী পরীক্ষিত নেতা হিসেবে তিনি সন্মানের জায়গায় আছেন কিন্তু অনেকে মনে করেন যে, এখন সময় হয়েছে, ওবায়দুল কাদের দলকে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিতে পারছেন না। এই বিষয়টি এখন আওয়ামী লীগের ভেতরেই বড় হয়ে সামনে এসেছে।

কোটা আন্দোলন   আওয়ামী লীগ   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন