ইসরায়েল-হামাসের চলমান সংঘাতের অবসানে ‘অবিলম্বে টেকসই যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স। এর আগে, যুক্তরাজ্য ও জার্মানিও গাজায় ‘টেকসই যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানিয়েছে। উভয় দেশ বলেছে, এ যুদ্ধবিরতি অবিলম্বে হওয়া উচিত।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেনের সঙ্গে বৈঠক করতে রোববার তেল আবিব সফরে গেছেন ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলোনা। তার সফর শুরুর আগে ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতির পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানাবেন।
সফরে টেকসই যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথরিন কোলোনা বলেছেন, ‘গাজার পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন প্যারিস। এ যুদ্ধে অনেক বেসামরিকের প্রাণহানি ঘটছে। আঞ্চলিক উত্তেজনার বিস্তার রোধে ফ্রান্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ’
যদিও ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেন বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি করাটা হবে ভুল। সেখানে কোনও ধরনের যুদ্ধবিরতি দেওয়া হলে তা হামাসের জন্য উপহার হিসাবে আবির্ভূত হবে বলেও মন্তব্য করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথরিন কোলোনা বলেন, ‘গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার শিকারদের ভুলে যাওয়া উচিত নয়। ইসরায়েলি নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য ‘যা যা করা দরকার’ করবে। তবে লেবাননের সাথে উত্তর সীমান্তে আরেকটি যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি করার কোনও ইচ্ছা নেই ইসরায়েলের।’
এদিকে, রোববার সকালের দিকে ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বায়েরবক গাজা সংঘাতে ‘‘টেকসই যুদ্ধবিরতির’’ আহ্বান জানিয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমসে লেখা যৌথ এক নিবন্ধে তারা বলেন, দীর্ঘমেয়াদী এবং টেকসই যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেই তারা কেবল তাতে সমর্থন জানাবেন। যদিও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই আহ্বানের সাথে দেশটির অবস্থানের কোনও মিল নেই।
কারণ গত মঙ্গলবার জাতিসংঘে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে তোলা এক প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত ছিল যুক্তরাজ্য এবং জার্মানি। ওই প্রস্তাবে বিশ্বের ১৫৩টি দেশের প্রতিনিধিরা সমর্থন জানিয়েছিলেন।
ইসরায়েলি বাহিনীর দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলমান হামলায় কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা। বিশেষ করে বিমান বাহিনীর নিয়মিত গোলা বর্ষণের কারণে উপত্যকার কোনো ভবনই অক্ষত নেই। ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির সংখ্যা ১৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
গাজা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ফ্রান্স জার্মানি যুক্তরাজ্য
মন্তব্য করুন
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর ঘটনায় ইসরায়েলের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা।
তিনি বলেছেন, 'দুর্ঘটনার পেছনে আমরা নেই।' তবে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যুতে তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েলি সরকারের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের বিরোধী দল বেতেনু পার্টির চেয়ারম্যান এম কে আভিগদোর লিবারম্যান বলেছেন, রাইসির মৃত্যু এই অঞ্চলে ইরানের নীতিতে কোনও পার্থক্য আনবে বলে ইসরায়েল আশা করে না।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেইটকে তিনি বলেছেন, 'আমাদের জন্য, এটা কোনও বিষয় নয়। এই ঘটনা ইসরায়েলের (ইরানের প্রতি) মনোভাবে কোনও প্রভাব ফেলবে না। ইরানের নীতি দেশটির সর্বোচ্চ নেতার (আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি) মাধ্যমে নির্ধারিত হয়।'
তিনি আরও বলেন, 'ইরানের প্রেসিডেন্ট যে একজন নিষ্ঠুর লোক ছিলেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আমরা তার জন্য একফোঁটা চোখের পানিও ফেলব না।'
ইসরায়েলের অতি-রক্ষণশীল নোয়াম পার্টির নেতা এম কে আভিগদোর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উপমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, 'এক মাসেরও কম সময় আগে রাইসি হুমকি দিয়েছিলেন যে, ইসরায়েল আক্রমণ চালালে এর কোনও কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। আর এখন তিনিই ইতিহাসের ধূলিকণা।'
উল্লেখ্য, রোববার প্রতিবেশি দেশ আজারবাইজানের সাথে যৌথ অর্থায়নে নির্মিত কিজ কালাসি বাঁধের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তা। পরে সেখান থেকে ইরানের তাবরিজ শহরে আরেকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করতে যাওয়ার সময় ভারজাকান অঞ্চলের দিজামারের পার্বত্য এলাকায় প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।
কয়েক ঘণ্টার দীর্ঘ তল্লাশি অভিযানের পর সোমবার দিজামারের উজি ও পীর গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত করা হয়। সেখান থেকে ইরানের উদ্ধারকারী দলের কর্মকর্তারা প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করেন।
রাইসির মৃত্যুর পর ইরানের নতুন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবেরের নাম ঘোষণা করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
এছাড়াও, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনায় ৫ দিনের রাষ্ট্রীয় শোকও ঘোষণা করেছেন তিনি।
ইব্রাহিম রাইসি মৃত্যু মধ্যপ্রাচ্য রাজনীতি ইসরায়েল
মন্তব্য করুন
রহস্যজনকভাবে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যুতে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে কোন পরিবর্তন আসবে কিনা বা এটার প্রভাব কেমন হতে পারে! এটাই এখন বিশ্বরাজনীতির আলোচিত বিষয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রভাবশালী এই দুই নেতার মৃত্যুতে অনেকটাই পাল্টে যেতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক সমীকরণ। আর রাইসির মৃত্যু থেকে এখন ইসরায়েলই সবচেয়ে লাভবান হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইব্রাহিম রাইসি ও হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যু মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চলমান সংঘাতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
গত কয়েক দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছিল তেহরান। বিশেষ করে লেবানন, সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন, বাহরাইন ও ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অর্থ ও সমরাস্ত্রের অন্যতম যোগানদাতা ছিল ইরানের ইসলামী বিপ্লবী রক্ষীবাহিনী।
আর এসব গোষ্ঠী মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকা ও ইসরায়েলের স্বার্থের জন্য ক্রামাগত হুমকি তৈরি করে আসছিল।
গত মাসে ইব্রাহিম রাইসির সরকার সরাসরি ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলও ইরানের ইস্ফাহান শহরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই ঘটনার আগে কেউ কখনো কল্পনাই করতে পারেনি মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ ইসরায়েলের হামলার সাহস করতে পারে, সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখিয়েছিলেন ইব্রাহিম রাইসি।
শুধু এ হামলা নয়, কয়েক দশক ধরে ইরানের পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে বেশ অসন্তুষ্ট ইসরায়েল ও পশ্চিমা দেশগুলো। এমনকি এ তালিকায় রয়েছে সুন্নি প্রধান দেশ সৌদি আরবও। আর পশ্চিমা শক্তির কোনো তোয়াক্কা না করে পরমাণু কর্মসূচিতে জোরদার ভূমিকা পালন করেছেন ইব্রাহিম রাইসি। এমনকি বেশ কয়েকবার ইসরায়েলকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার হুমকিও দিয়েছিলেন সদ্য নিহত ইরানি প্রেসিডেন্ট। এ কারণে বিশ্লেষকরা বলছে, রাইসির মৃত্যু প্রভাব ফেলতে পারে দেশটির পরমাণু কর্মসূচিতেও।
এছাড়া, রাইসির মৃত্যু শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয় বরং মধ্য এশিয়া ও ইউরোপীয় ভূরাজনীতিতেও প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে রুশ বাহিনীকে যে বিপুল পরিমাণ ড্রোন ও সমরাস্ত্র সরবরাহ করেছিল তেহরান এখন সেই পদক্ষেপ কতটা ধারাবাহিক থাকবে সে প্রশ্ন উঠেতে শুরু করেছে অনেক মহলে। এছাড়াও রাইসির নেতৃত্বে আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সংঘাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল তেহরান।
ইব্রাহিম রাইসি মৃত্যু মধ্যপ্রাচ্য রাজনীতি সৌদি আরব
মন্তব্য করুন
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি
মন্তব্য করুন
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি
মন্তব্য করুন
ইরান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বাঘেরি কানি
মন্তব্য করুন
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর ঘটনায় ইসরায়েলের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, 'দুর্ঘটনার পেছনে আমরা নেই।' তবে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যুতে তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েলি সরকারের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
রহস্যজনকভাবে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যুতে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে কোন পরিবর্তন আসবে কিনা বা এটার প্রভাব কেমন হতে পারে! এটাই এখন বিশ্বরাজনীতির আলোচিত বিষয়। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রভাবশালী এই দুই নেতার মৃত্যুতে অনেকটাই পাল্টে যেতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক সমীকরণ। আর রাইসির মৃত্যু থেকে এখন ইসরায়েলই সবচেয়ে লাভবান হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।