ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

আরব আমিরাতের রমজান ও ইফতার সংস্কৃতি

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৪ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

মরুর অঞ্চলে বিলাসিতা ও আভিজাত্যে অতুলনীয় একটি দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। বিশ্ববাসীর কাছে দেশটি স্বপ্নপুরীর চেয়ে কম নয় কোন অংশেই। রমজান শুরুর আগেই দেশটিতে রমজান উদযাপনের ধুম লেগে যায়। আর পুরো রমজান জুড়ে বিরাজ করে সেই উৎসবমুখর পরিবেশ। আরব আমিরাতের রমজান সংস্কৃতি নিয়ে কৌতূহল রয়েছে অনেকের মনেই। 

বাংলা ইনসাইডার আয়োজিত 'ইনসাইড রমজান' ধারাবাহিক এর আজকের পর্বে আমরা জানবো সংযুক্ত আরব আমিরাতের মুসলিমদের রমজান ও ইফতার সংস্কৃতি-  

আমিরাতে রমজান শুরুর আগেই বেশ উল্লাসের সঙ্গে পালন করা হয় 'হক আল লায়লা'। মূলত রমজানকে স্বাগত জানাতেই এই অনুষ্ঠানের আয়জন করা হয়। পবিত্র রমজান মাস শুরুর ১৫ দিন আগে অর্থাৎ ১৫ শাবান আসন্ন রমজানকে উদযাপন করতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটিকে অনেকটা হ্যালুইনের ট্রিক অর ট্রিটের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হতে পারে। কারণ, এখানেও বাচ্চাদের হাতে দেওয়া হয় খেজুর ও চকলেট। তবে এ উৎসবের পেছনের উদ্দেশ্যটা একটু আলাদা। মূলত রমজানের মাহাত্ম্য ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যকে শিশুদের সামনে আনন্দ উৎসবের মাধ্যমে তুলে ধরার প্রয়াসই হলো 'হক আল লায়লা'। বহু বছর ধরে পালিত হয়ে আসা এ উৎসব এখন আমিরাতের সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।  

আমিরাতের আরও একটি প্রথাগত ঐতিহ্য হলো খারিতা পালন। শাবান মাসের ১৫ তারিখ থেকে শুরু হয় খারিতা অনুষ্ঠান। এতে শিশুরা উজ্জ্বল কাপড় পরে দলবেঁধে প্রতিবেশীদের বাড়ি যায়। তাদের সঙ্গে থাকে ঝোলা। তারা প্রতিবেশীদের দরজায় কড়া নাড়ে এবং সুর করে বলেন,'তোমরা আমাদের দাও, আল্লাহ তোমাদের দেবেন। মক্কায় আল্লাহ তার ঘর পরিদর্শন করাবেন।' এসময় তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিষ্টি, বাদাম ও অন্যান্য খাবার সংগ্রহ করে। বাচ্চারা উৎসাহের সঙ্গে রাস্তায় রাস্তায় এ গান গেয়ে বেড়ায় এবং খাবার সংগ্রহ করে। দেশটিতে এ উদযাপন আমিরাতের জাতীয় পরিচয়ের অন্তর্ভুক্ত।   

মূলত, আজকের আধুনিক সমাজে মানুষ যখন একে অপরের থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবনযাপন করে, তখন এ প্রথা আগেকার সেই সহজ সরল জীবনের কথা মনে করিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে সামাজিক বন্ধন এবং পারিবারিক মূল্যবোধের গুরুত্বের ওপরও আলোকপাত করে।

এছাড়াও, সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে পাড়া-মহল্লা বা বড় বড় মসজিদের পাশে তাবু-প্যান্ডেল টানিয়ে ইফতার আয়োজনের পাশাপাশি রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে ইফতার দেওয়া আমিরাতের আরও একটি ঐতিহ্য। 

সেহরি-ইফতার

সংযুক্ত আরব আমিরাতে রমজানের চাঁদ দেখার পর একে অন্যকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু হয় রোজা। আর ইফতার ও সেহরি শুরু হয় কামান দাগিয়ে। একই দিনে রমজান শুরু হলেও সেহরি ও ইফতারে আলাদা সময়সূচি অনুসরণ করে শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়।

আর বিশ্বের উচ্চতম বিল্ডিং বুর্জ খলিফার ৮০ তলার ওপরে যারা বাস করেন, তাদের রমজানের সময় অতিরিক্ত ২-৩ মিনিট অপেক্ষা করতে হয় ইফতারের জন্য। কারণ, উঁচুতে সূর্যকে বেশ কিছুক্ষণ দেখতে পান তারা।

সুন্নত মেনে খেজুর দিয়ে রোজা ভাঙেন আমিরাতবাসী। ইফতারের প্রধান মেন্যুতে থাকে ঐতিহ্যবাহী থারিদ, বিরিয়ানি, কাতায়েফ, সালাদ, ইতালিয়ান পাস্তা, ফল। তবে নবিজির প্রিয় অ্যারাবিয়ান ডিশ-রুটিতে ছড়ানো মাংসের 'হারিস' তাদের ভীষণ পছন্দ।   

দুবাইয়ে রমজান

দুবাইয়ে রমজান শুরুর ঘোষণা দেয় 'দি ইউনাইটেড আরব আমিরাত মুন সাইটিং কমিটি'। রমজান উপলক্ষে সেখানকার মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক শুভেচ্ছা বিনিময়ের সংস্কৃতি বেশ পুরোনো। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে দেশব্যাপী রমজান সংশ্লিষ্ট সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া মাহে রমজানে আন্তর্জাতিকভাবে এখানে কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে। রমজান এলেই পুরো দুবাই নতুন উদ্যমে সেজে ওঠে।                  

মুক্ত হস্তে দান

পবিত্র রমজান মাসে আরব দেশগুলোর ধনী ব্যক্তিরা সাধারণত জাকাত দানে উৎসাহী হন। কিন্তু তেল সম্পদের প্রাচুর্যে ধনী উপসাগরীয় দেশগুলোর স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে জাকাত নেওয়ার মতো কেউ নেই। তাই ধনকুবেরদের কাছ থেকে জাকাত গ্রহণের সুযোগটি নেন পৃথিবীর বিভিন্ন অনুন্নত দেশের মানুষ। রমজানে তারা উড়ে যান দুবাইসহ উপসাগরীয় দেশগুলোতে। দুবাইয়ের মতো জৌলুসময় নগরীগুলোতে ধনকুবেররা জাকাত গ্রহণের লোক পেয়ে অনেকটা স্বস্তির হাসি দিয়ে মুক্ত হস্তে দান করেন।

রমজানে বাড়তি আমেজ

রোজা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে যায় দেশটির চিত্র। রমজান মাসজুড়ে বন্ধ থাকে নাইট ক্লাব ও মদের বার এমনকি, প্রকাশ্যে পানাহার ও ধূমপান, দণ্ডনীয় অপরাধ। বছরজুড়ে সড়কগুলো পরিচ্ছন্ন থাকলেও এ সময় হয় আরও ঝকঝকে। জাঁকালো আলোক সজ্জায় সাজে তেলসমৃদ্ধ উপসাগরীয় দেশটি।

এছাড়াও, বাণিজ্যিক হোটেলগুলো এ মাসে প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। শুধু ইফতারির আগে খাবারের দোকানগুলো হরেক রকমের ইফতারির পসরা সাজিয়ে রাখতে দেখা যায়।

সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, রমজান উপলক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার বহু কারাবন্দিকে মুক্তি দেন। কারাবন্দিরা যেনো সংশোধন হয়ে পরিবারের মাঝে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে, সেজন্য এ সুযোগ দেওয়া হয় বলে সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়। 


আরব আমিরাত   রমজান   ইফতার   সংস্কৃতি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসির লাশ উদ্ধার

প্রকাশ: ০৪:১৩ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান। পরে দুর্ঘটনাস্থল থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

আর এর মাধ্যমে অনুসন্ধান অভিযানও সমাপ্ত করা হয়েছে। সোমবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

সোমবার ইরানের রেড ক্রিসেন্ট বলেছে, হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান এবং অন্যদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আর এর মাধ্যমে অনুসন্ধান অভিযানও শেষ হয়েছে। 

রেড ক্রিসেন্ট প্রধান পীর হোসেইন কুলিভান্দ রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেন, 'আমরা শহীদদের মরদেহ ইরানের উত্তর-পশ্চিমে তাবরিজে স্থানান্তর করার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছি। তল্লাশি অভিযান শেষ হয়েছে।'

প্রসঙ্গত, রোববার উত্তর-পশ্চিম ইরানে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান এবং আরও কয়েকজন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভি জানায়।

এর আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়ার বেশ লম্বা সময় পর অবশেষে উদ্ধারকারীরা রাইসির হেলিকপ্টার খুঁজে পান। তবে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরআইএনএন এবং আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজ জানিয়েছিল, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির দুর্ঘটনাস্থলে 'কোনও জীবিত ব্যক্তি' পাওয়া যায়নি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইরানের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, 'প্রেসিডেন্ট রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং হেলিকপ্টারে থাকা সকল যাত্রী দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন'।

পরে ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহসেন মনসুরি এবং রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক বিবৃতিতে রাইসির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।


ইরান   প্রেসিডেন্ট   ইব্রাহিম রাইসি   পররাষ্ট্রমন্ত্রী   হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ

প্রকাশ: ০৩:৫১ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর সন্ধান মিলল ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের। তবে প্রেসিডেন্ট রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমতি কেউই আর বেঁচে নেই।

সোমবার (২০ মে) এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের ছবি-ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে।

ইরানের রাষ্ট্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল প্রেস টিভি একাধিক ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেছে।

এর আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরআইএনএন এবং আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজ জানিয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির দুর্ঘটনাস্থলে 'কোনও জীবিত ব্যক্তি' পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত রোববার (১৯ মে) একটি বাঁধ উদ্বোধন করে ইরানি প্রদেশ পূর্ব আজারবাইজানের তারবিজে যাচ্ছিলেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। এই সময় তার সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ছিলেন। তারবিজে ফেরার পথেই হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।


ইব্রাহিম রাইসি   হেলিকপ্টার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাইসির মৃত্যুতে ইরানে পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা

প্রকাশ: ০৩:৪১ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদোল্লাহিয়ানের নিহতের ঘটনায় পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে ইরান। সোমবার (২০ মে) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

এদিকে এমন পরিস্থিতিতে ইরানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশটির বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবেরের নাম অনুমোদন করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি। তিনি দুই মাস এ দায়িত্ব পালন করবেন।

ইরানের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ গার্ডিয়ান কাউন্সিল সোমবার (২০ এপ্রিল) জানিয়েছে, মোখবার দেশের নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করার ৫০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হবে।

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আলি খামেনি জানিয়েছেন, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ মোখবারকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পাঁচ দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেন তিনি।

আলি খামেনির বরাত দিয়ে ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যম ইরনা জানায়, মোখবার দেশের নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করবেন এবং ৫০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবেন।

উল্লেখ, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মিলেছে দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর। তবে প্রেসিডেন্ট রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদোল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতিসহ ৯ জন নিহত হয়।


ইব্রাহিম রাইসি   ইরান   হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা   রাষ্ট্রীয় শোক  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানকে সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় সব করতে প্রস্তুত রাশিয়া

প্রকাশ: ০৩:২৭ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পড়ার পর রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, ভেনিজুয়েলার রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান শোক প্রকাশ করেছেন। সেই সাথে ইরানের এমন পরিস্থিতিতে সহযোগিতা করার জন্যও হাত বাড়িয়েছে বিভিন্ন দেশ ও রাষ্ট্র।

ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইরানকে সহযোগিতা করার জন্য এই মুহূর্তে যা যা প্রয়োজন সব করতে প্রস্তুত রয়েছে রাশিয়া। রোববার (১৯ মে) ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পর প্রেসিডেন্ট পুতিন মস্কোয় ইরানি রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালির সঙ্গে দেখা করে এ কথা বলেন।

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার খবর শুনে প্রেসিডেন্ট পুতিন ইরানি রাষ্ট্রদূতকে তার কার্যালয়ে জরুরি আমন্ত্রণ জানান। এ সময় তিনি দুর্ঘটনার বিস্তারিত খোঁজখবর নেন এবং ইরানের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে প্রস্তুতির কথা জানান।

যদিও রোববার রাশিয়ায় সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিন ছিল তবুও প্রেসিডেন্ট পুতিন জরুরিভিত্তিতে তার অফিসে আসেন এবং ইরানি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় সেখানে শীর্ষপর্যায়ের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, এই দুর্ঘটনায় তারা অত্যন্ত দুঃখিত এবং মর্মাহত। রাশিয়ার পক্ষ থেকে শোকবার্তা ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালীকে অনুরোধ জানান।

প্রেসিডেন্ট পুতিন আরও বলেন, উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়ার জন্য তারা দুটি বিমান প্রস্তুত রেখেছেন, সঙ্গে রয়েছে ৫০ সদস্যের একটি শক্তিশালী ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দল।

এর আগে রোববার ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকার কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি। হেলিকপ্টারে রাইসি ছাড়াও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমতি এবং এই প্রদেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম ছিলেন।

দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়া যায়। এ দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতি কেউই আর বেঁচে নেই। সোমবার (২০ মে) বিবিসি, রয়টার্সসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ইব্রাহিম রাইসি ইরানের অষ্টম প্রেসিডেন্ট। তিনি একাধারে রাজনীতিবিদ ও বিচারক। রাইসি বিশ্ব রাজনীতিতেও অন্যতম প্রভাবশালী নেতাদের একজন। ইব্রাহিম রাইসি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও পরিচিত। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে দেশটির প্রধান বিচারপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার কারণেই দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা কমেছে।

ইব্রাহিম রাইসির জন্ম ১৯৬০ সালের ১৪ ডিসেম্বর উত্তর-পূর্ব ইরানের পবিত্র শহর মাশহাদে। মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি তেহরানের পার্শ্ববর্তী শহর কারাজের প্রসিকিউটর-জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৮৯ থাকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেহরানের প্রসিকিউটর-জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন রাইসি। ২০০৪ সাল থেকে তিনি এক দশক জুডিশিয়াল অথরিটির উপপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে তাকে বিচার বিভাগের প্রধান নিযুক্ত করেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি।


পুতিন   রাশিয়া   রাইসি   ইরান   ইরানে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা

প্রকাশ: ০৩:১০ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান মারা গেছেন। এর ফলে ইরানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মোহাম্মদ মোখবেরের নাম অনুমোদন করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি। তিনি দুই মাস এ দায়িত্ব পালন করবেন।

ইরানের সংবিধান অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মারা গেলে বা কোনো কারণে দায়িত্ব পালনে সক্ষম না হলে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে এবং নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে হবে। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব সামলাবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।

নতুন প্রেসিডেন্ট যিনিই হন না কেন, তাকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার অনুমোদন নিতে হবে। ইরানে রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে ভূমিকা পালন করেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি। ক্ষমতাকাঠামোয় এরপরই রয়েছেন প্রেসিডেন্ট। তাকে সরকারের প্রধান হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

রাইসি নিহত হওয়ায় খামেনির অনুমোদন সাপেক্ষে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবারের ইরানের পরবর্তী কাণ্ডারি হওয়ার পথ খুলে গেছে বলা যায়।

আগে ইরানে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছিল। ১৯৮৯ সালে তা বিলুপ্ত করা হয়। সরকারে প্রেসিডেন্টের পরবর্তী পদে বসানো হয় একজন ভাইস প্রেসিডেন্টকে। তবে প্রেসিডেন্টের মতো এই পদ নির্বাচিত নয়। ভাইস প্রেসিডেন্টকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

২০২১ সালের আগস্টে ইরানের প্রেসিডেন্ট হন ইব্রাহিম রাইসি। এর পরপরই খামেনির অনুমতি সাপেক্ষে মোহাম্মদ মোখবারকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। সংবিধান সংশোধনের পরবর্তী সময়ে ইরানের সপ্তম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মোহাম্মদ মোখবার।

ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে মোহাম্মদ মোখবার ইরানের সিতাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে টানা ১৪ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। এটা ইরানের অন্যতম শক্তিশালী একটি অর্থনৈতিক কনগ্লোমারেট (একটি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের অধীন থাকা বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠী)। মূলত দাতব্যকাজের জন্য এ প্রতিষ্ঠান বিশেষভাবে পরিচিত। সর্বোচ্চ নেতার সরাসরি তত্ত্বাবধানে এটা পরিচালিত হয়। একসময় ইরানের খুজেস্তান প্রদেশের গভর্নর ছিলেন মোহাম্মদ মোখবার।

ইরানের প্রেসিডেন্ট   ইব্রাহিম রাইসি   হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন