সিরাজগঞ্জের মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো ঈদ যাত্রায় ড্রোন
দিয়ে মনিটরিং করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি)
মো. আনিসুর রহমান।
তিনি বলেন, মহাসড়কে কোনো প্রকার থ্রি হুইলার (তিন চাকার যান) ও
ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলতে দেওয়া হবে না। এগুলো নিয়ে আমরা খুব শক্ত অবস্থানে আছি। কেউ চালানোর
চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও সংযোগ সড়কগুলো সিল (বন্ধ)
করে দেওয়ায় থ্রি হুইলার ঢুকতেই পারবে না।
বুধবার (৩ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে মহাসড়ক পরিদর্শনে এসে হাটিকুমরুল
গোলচত্বর এলাকায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
ডিআইজি বলেন, ‘এবার মহাসড়কও যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো আছে। আমি মনে
করছি এবারের ঈদ যাত্রা অন্যান্য যেকোনো বছরের চেয়ে স্বস্তির ও সুন্দর হবে। আমি ইতোমধ্যেই
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত মহাসড়কটি কয়েকবার ঘুরে দেখেছি ও গুরুত্বপূর্ণ
জায়গাগুলো চিহ্নিত করেছি। সেই অনুযায়ী জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে, ৭০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে যার তদারকিতে থাকবেন ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তারা। এছাড়াও মোবাইল টিম, ক্রস পেট্রোলিং, যাত্রাপথে কোনও গাড়ি নষ্ট হলে তা
দ্রুত সরিয়ে নিতে ৬টি রেকারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকবে। ঈদযাত্রায় সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে
বালুবাহী ট্রাক বা এই জাতীয় কোনো পরিবহন চলতে দেওয়া হবে না’।
এক প্রশ্নের উত্তরে ডিআইজি আনিসুর বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে অজ্ঞান
পার্টি, মলম পার্টির প্রাদুর্ভাব ঘটে। এটা নিয়ে আমরা গত ৫-৭ বছরের তালিকা নিয়ে কাজ
শুরু করেছি। শুধু সিরাজগঞ্জ নয় রাজশাহী বিভাগের সব জেলাতেই একযোগে ঈদ পরবর্তী পর্যন্ত
এটা নিয়ে বিশেষ অভিযান চলছে। যার ফলে যতপ্রকার প্রতারক পার্টি আছে তারা কেউই এবার ঈদে
সুবিধা করতে পারবে বলে মনে করি না’।
অন্য প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমাদের পরামর্শ থাকবে চালক যেন
খুবই সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালান। কেউ যেন ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে
হাত না দেন এবং ফিটনেস বিহীন গাড়ি চালানোর চেষ্টা না করেন। নাহলে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের
বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা যাত্রা নিরাপদ, সুন্দর ও যানজটমুক্ত রাখতে
সব ধরনের পদক্ষেপ নেব’।
এসময় সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল ছাড়াও অতিরিক্ত
পুলিশ সুপার, সকল সার্কেলের অতিরিক্ত ও সহকারী পুলিশ সুপার, সকল থানার ওসি, ট্রাফিক
বিভাগের পরিদর্শক, হাইওয়ে থানা পুলিশের পরিদর্শকগণ ছাড়াও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা
উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সাউথ এশিয়ান সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক-২) এর
প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান রাসেল বলেন, ‘ইতোমধ্যেই সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু
পশ্চিম থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত পুরো মহাসড়কেই চার লেন চালু করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া
ঈদযাত্রায় ঘরে ফেরা মানুষের যাতায়াতে যেন বিঘ্ন না ঘটে এ জন্য হাটিকুমরুল গোলচত্বর
এলাকায়, যেখানে ইন্টারচেঞ্জ হবে সেখানে কংক্রিটের রাস্তা ঢালাই করে দেওয়া হয়েছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘বিশেষ করে কড্ডার মোড় ও নলকার মোড়ে প্রতিবছর যানজট
বেশি দেখা গেলেও এবার এ জায়গাগুলোতে আন্ডারপাস খুলে দেওয়ায় দূরপাল্লার গাড়িগুলো ওপর
দিয়ে চলে যাবে। আর অন্যান্য গাড়িগুলো আন্ডারপাসের নিচ দিয়ে চলাচল করলে আশা করছি এ বছর
যানজট হবে না। এবারের ঈদযাত্রা অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেকটা স্বস্তিদায়ক ও ভোগান্তিমুক্ত
হবে’।
সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) মো. জাফর উল্লাহ
রুবেল বলেন, আমরা ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের ঈদযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিগ্ন করতে সর্বোচ্চ
কাজ করে যাব। এবার মহাসড়কের অবস্থা ভালো আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আলাদা আলাদা টিম
করে কাজ করা ছাড়াও মোবাইল টিম কুইক রেসপন্সে কাজ করবে। আমরা মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখা
ছাড়াও মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যাব।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন,
হাইওয়ে থানার আওতাধীন মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে ও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমরা ইতোমধ্যেই
ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। মহাসড়কে শুধু হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকেই আগামী বৃহস্পতিবার
(৪ এপ্রিল) বিকেল ৫টা থেকে ১৭টি টিম কাজ করবে। এছাড়াও ৭টি মোটরসাইকেল মোবাইল টিম ও
দুইটি পেট্রোলিং মোবাইল টিম জরুরিভাবে সার্বক্ষণিক কাজ করবে। হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায়
নির্মাণ করা হবে ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সবকিছু মনিটরিং করা হবে।
তিনি বলেন, হাইওয়ে পুলিশের প্রায় ১৫০ জন সদস্যের বাইরেও মহাসড়কের
পাশে অবস্থিত ইউপির চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলে ৬০ জন কমিউনিটি পুলিশের ব্যবস্থা করা
হয়েছে। যারা ৩০ জন করে দুই শিফটে পুলিশকে সহায়তায় কাজ করবে। এছাড়া আমরা রেকারসহ অন্যান্য
সুবিধার পাশাপাশি অস্থায়ী ভিত্তিতে মেকার পর্যন্ত নিয়োগ দিয়েছি। যারা কোনও গাড়ির সমস্যা
হলে সমাধানে কাজ করবে। মহাসড়কের অবস্থাও ভালো আছে, যার ফলে এবার যানজটের সম্ভাবনা নেই
বললেই চলে। মহাসড়ক নিরাপদ ও যানজটমুক্ত রাখতে সবধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. সামিউল
আলম বলেন, ‘ঈদযাত্রায় মানুষের নিরাপদে ঘরে ফেরা, নিশ্চিন্তে যাতায়াত ও মহাসড়ক যানজটমুক্ত
রাখতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৭০১ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে। এরমধ্যে ৫০টি পিকেট
টিম, ২০ মোটরসাইকেল মোবাইল টিম, ২টি পেট্রোলিং (গাড়ি) মোবাইল টিম, ৭টি নৌ টহল, ৭টি
রেলস্টেশন পিকেট টিম, একটি কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) থাকবে। এছাড়া মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ
পয়েন্টগুলোতে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ পরিদর্শকদের নেতৃত্বে ৬টি তদারকি মোবাইল টিম কাজ করবে।
আগামী বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুর ২টা থেকে জেলা পুলিশ ঈদ উপলক্ষ্যে মহাসড়কে কাজ
শুরু করবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা’।
মন্তব্য করুন
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সাম্প্রতিক সহিংসতায় নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন যুবলীগ কর্মী জুয়েল মোল্লা। ১৯ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় এ নৃশংস ঘটনা ঘটে। ওই দিন যুবলীগ কর্মী জুয়েলকে প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা। পরে তাকে পৈশাচিকভাবে হত্যা করে বিবস্ত্র অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রাখে। একপর্যায়ে তার লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখে তারা। ইতোমধ্যে এই দুই ঘটনার ছবিই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
নিহত জুয়েল মোল্লার বাড়ি গাজীপুরের গাছা থানার চান্দুয়া গ্রামে। তার এক ভাই ও দুই বোন রয়েছে। ছাত্রজীবনে টঙ্গী সরকারি কলেজে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। হত্যাকান্ডের দিন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে ছিলেন তিনি। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত জাহাঙ্গীর আলম বর্তমানে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ১৬ জুলাই সারা দেশে সংঘর্ষ শুরু হয়। দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৯ জুলাই পর্যন্ত চলা সেই সহিংসতায় দুই শতাধিক নিহতের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে তিনজন পুলিশ সদস্য এবং একজন আনসার সদস্য নিহত হয়েছেন। এ সময় ১ হাজার ১১৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত ১৩২ জন। তিনজন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছেন। র্যাবের শতাধিক এবং আনসার বাহিনীর শতাধিক সদস্য আহত হয়েছেন।
উত্তরা যুবলীগ কর্মী জামায়াত শিবির
মন্তব্য করুন
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে
বিক্ষোভ, সংঘাত, ভাঙচুর, সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা
করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ভাগ করে ‘ব্লক রেইড’ দিয়ে
চলছে অভিযান।
অভিযান সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, যখন কোনো এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয় তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শত শত সদস্য গিয়ে এলাকাটি ঘিরে ফেলেন। ওই এলাকা থেকে কেউ যেন বের হয়ে যেতে না পারেন, এ জন্য সব পথে তাঁরা অবস্থান নেন। এরপর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন বাড়িতে তল্লাশি করে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এটিকেই মূলত তাঁরা ‘ব্লক রেইড’ বলছেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো বলছে, আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় জড়ানো ব্যক্তিদেরকেই তারা গ্রেপ্তার করছে। তবে গ্রেপ্তারকৃতদের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এদের বড় অংশ বিএনপি-জামায়াত ও তাঁদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর নেতা-কর্মী। এর বাইরে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
অভিযানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশি সহিংসতা হয়েছে এমন এলাকায় তাঁরা জোরদার অভিযান চালাচ্ছেন। তা ছাড়া সহিংসতার মদদদাতা হিসেবে সন্দেহভাজন বিএনপি–জামায়াতের নেতাদের বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে থাকার নির্দেশনাও পেয়েছেন তাঁরা। এসব নেতাদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
দেশের বিভিন্ন মহানগর, জেলা ও থানা-পুলিশ সূত্রে গত ১০ দিনে (গতকাল পর্যন্ত) ঢাকাসহ ৫৩টি মহানগর ও জেলায় ৫৫৫টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। ঢাকার বাইরে নতুন ২২টি ও ঢাকায় আরও আটটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। ঢাকায় এ নিয়ে মোট মামলার সংখ্যা ২০৯।
সারা দেশ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১০ দিনে (১৭-২৬ জুলাই) সারা দেশে মোট গ্রেপ্তার হয়েছেন অন্তত ৬ হাজার ২৬৪ জন। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন অন্তত ৭৬৫ জন। এই সময়ে রাজধানীতে গ্রেপ্তার হয়েছেন ২০৭ জন। শুধু রাজধানীতে ১০ দিনে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা অন্তত ২ হাজার ৪১৬ জন। আটককৃতদের অনেককে পুরনো মামলাতেও গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর শাহিনবাগ এলাকায় ‘ব্লক রেইড’ দিয়ে যৌথ অভিযান চালানো হয়। এ সময় ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার উড়তে দেখেন এলাকাবাসী ও আশপাশের বাসিন্দারা। হেলিকপ্টার থেকে নিচে আলো ফেলতে দেখে অনেকে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন বলে জানিয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাঁড়াশি অভিযান
মন্তব্য করুন
ভারতে পাচারকালে ১৬ কোটি টাকা মূল্যের সাপের বিষ জব্দ করেছে জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিজিবি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দিনাজপুর জেলার বিরামপুর সীমান্ত দিয়ে মুল্যবান সাপের বিষ পাচার করা হচ্ছে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুরে বিরামপুর উপজেলার দক্ষিণ দামোদরপুর মাঠের ২৮৯/৪১ নম্বর সীমানা পিলার এলাকায় অভিযান চালায় বিজিবি।
এসময় পরিত্যক্ত ২ টি কাঁচের জারে মোট ২ কেজি ৪৬৬ গ্রাম বিষ জব্দ করা হয় যার আনুমানিক মুল্য ১৬ কোটি ২লাখ ৯০ হাজার টাকা বলে জানা গেছে।
মন্তব্য করুন
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী চালানো সন্ত্রাসী তাণ্ডব ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দেশের ১৭৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক। শুক্রবার (২৬ জুলাই) কে. এইচ. মাসুদ সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত এক যুক্ত বিবৃতিতে তারা এ নিন্দা জানান। নাগরকি সমাজের নেতৃবৃন্দ যুক্ত বিবৃতিতে দেশবাসীকে এই ধ্বংস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের বিষয়টি সামনে রেখে সম্প্রতি একটি স্বার্থান্বেষী মহল দেশব্যাপী সন্ত্রাসী তাণ্ডব ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বহু মূল্যবান প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। কয়েকদিনের সন্ত্রাসী ঘটনায় পথচারী, ছাত্র, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ যারা নিহত হয়েছেন তাদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি এবং আহত হয়ে যারা চিকিৎসাধীন তাদের সুস্থতা কামনা করছি।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, এরই মধ্যে দেশের অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত জনগণের সমর্থন নিয়ে জাতি তা দ্রুত পূরণ করতে সক্ষম হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। আমরা দেশবাসীকে এই ধ্বংস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার আহ্বান জানাই।
তারা বলেন, গত ১৬ জুলাই থেকে এ নাশকতামূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন, বাংলাদেশের মানুষের বহু আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেতু ভবন, মেট্রোরেল, বিআরটিএ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, ডিজিটাল ডাটা সার্ভার স্টেশন, কারাগার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, নবনির্মিত এক্সপ্রেসওয়েসহ বিভিন্ন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট করেছে। অস্ত্রলুটসহ জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়ায় সহায়তা করেছে। জনজীবন বিপন্ন ও দুর্বিষহ করে তুলছে এবং কর্তব্যরত আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আক্রমণ ও হত্যার মাধ্যমে নিজেদের স্বরূপ উন্মোচন করেছে।
‘আমরা এ ধরনের দেশবিরোধী কার্যক্রমের নিন্দা জানাই। এ বিষয়ে বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও যারা বিদেশি হস্তক্ষেপ আহ্বান করে তাদের নেতিবাচক ভূমিকার নিন্দা জ্ঞাপন করছি। এই গোষ্ঠী ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হত্যা, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির বাসভবন, পুলিশ হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থাপনায় আক্রমণ ও নাশকতা চালিয়েছে। এরই পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বর্তমানের এই ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম।’ যোগ করেন তারা।
নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ বলেন, এরই মধ্যে কোটা সংস্কারে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করায় আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা বিশ্বাস করি এর মাধ্যমে ছাত্রদের মূল দাবি পূরণ হয়েছে। এখন ছাত্রদের পড়ালেখার প্রতি মনোযোগী হওয়ার সময়। একই সঙ্গে আমাদের সবার প্রত্যাশা, কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করে যে সন্ত্রাসীরা রাষ্ট্রবিরোধী কাজে লিপ্ত হয়ে পুনরায় অগ্নিসন্ত্রাস, রাষ্ট্রীয় গৌরবোজ্জ্বল প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি এবং জনজীবন বিপন্ন করেছে, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিচারের আওতায় এনে রাষ্ট্র, জাতীয় সম্পদ ও জনগণের নিরাপত্তা বিধানে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির মাধ্যমে সামগ্রিক বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে যারা স্বাক্ষর করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন-অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, চিত্রশিল্পী হাশেম খান, রাষ্ট্রদূত সোহরাব হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. আতিউর রহমান, চিত্রশিল্পী রফিকুন্নবী, আবুল বারক আলভী, সাবেক মুখ্যসচিব আবদুল করিম, সাবেক সচিব কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকী, উজ্জ্বল বিকাশ দত্ত, সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নূরুল হুদা, ড. হাসান মাহমুদ খন্দকার, অধ্যাপক নিসার হোসেন, ড. নিজামুল হক ভূইয়া, অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ড. মো মোতাহার হোসেন, অধ্যাপক ড. জিনাত হুসা, অধ্যাপক ড. মো. মমিন উদ্দীন, অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম, অধ্যাপক ড. সাবিতা রিজওয়ানা রহমান, অধ্যাপক ড. আ জ ম শফিউল আলম, সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ, মনজুরুল আহসান বুলবুল, ওমর ফারুক, শ্যামল দত্ত, শুকুর আলী শুভ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. মশিউর রহমান, অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, বিচারপতি সামছুদ্দিন চৌধুরী মানিক, চিত্রনায়ক আলমগীর, সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন, নৃত্যশিল্পী শিবলী মোহাম্মদ, অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক প্রধান তথ্য কর্মকর্তা এ কে এম শামীম চৌধুরী, নাট্যব্যক্তিত্ব ম হামিদ, অভিনেত্রী জয়া আহসান, চঞ্চল চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার এস এম মনজুরুল হক মঞ্জু, কাজী খায়রুল বাশার, আবুল কালাম হাজারী, নুরুজ্জামান, শাহাদত হোসেন, আবদুর রশিদ, মনিরুজ্জামান, একেএম এ হামিদ, মো. শামসুর রহমান, এইচ কে নাথ, অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. উত্তম বড়ুয়া, অধ্যাপক ডা. এ এস এম আমিন, অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
সন্ত্রাস নৈরাজ্য বিশিষ্ট নাগরিক বিবৃতি
মন্তব্য করুন
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে
সারা দেশে বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ সহিংসতাকে কেন্দ্র করে এক নারী শিক্ষার্থীর
ছবি প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, মেয়েটি গত ২২ জুলাই পুলিশের
গুলিতে মারা গেছেন। ওই নারীর নাম আনিকা তাসনিম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
তবে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া আনিকার মারা যাওয়ার খবরটি গুজব। আনিকা সুস্থ আছেন এবং ভালো আছেন। তিনি নিজেই ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এ খবর জানিয়েছেন।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) আনিকা
তাসনিম তার ফেসবুকে পোস্টে লিখেছেন, জন্মদিনের দিন পাঁচেক আগে নিজের মৃত্যু সংক্রান্ত
পোস্ট লেখার কোনো ইচ্ছা ছিল না। না লিখেও কোনো উপায় দেখছি না। আলহামদুলিল্লাহ আমি বেঁচে
আছি, সুস্থ আছি, ভালো আছি। কোনোরকম গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ রইলো। এবং কেউ র্যান্ডম
যেকোনো পোস্টে মেনশন না করলে খুশি হবো! এভরিথিং হ্যাজ এ লিমিট। আমার ভাই-বোনেরা দেশের
জন্য যা করছে, সে তুলনায় কিছুই করতে পারিনি। কথা বলার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ টপিক
আছে।
মন্তব্য করুন
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সাম্প্রতিক সহিংসতায় নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন যুবলীগ কর্মী জুয়েল মোল্লা। ১৯ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় এ নৃশংস ঘটনা ঘটে। ওই দিন যুবলীগ কর্মী জুয়েলকে প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা। পরে তাকে পৈশাচিকভাবে হত্যা করে বিবস্ত্র অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রাখে। একপর্যায়ে তার লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখে তারা। ইতোমধ্যে এই দুই ঘটনার ছবিই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভারতে পাচারকালে ১৬ কোটি টাকা মূল্যের সাপের বিষ জব্দ করেছে জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা। শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিজিবি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দিনাজপুর জেলার বিরামপুর সীমান্ত দিয়ে মুল্যবান সাপের বিষ পাচার করা হচ্ছে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুরে বিরামপুর উপজেলার দক্ষিণ দামোদরপুর মাঠের ২৮৯/৪১ নম্বর সীমানা পিলার এলাকায় অভিযান চালায় বিজিবি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী চালানো সন্ত্রাসী তাণ্ডব ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দেশের ১৭৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক। শুক্রবার (২৬ জুলাই) কে. এইচ. মাসুদ সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত এক যুক্ত বিবৃতিতে তারা এ নিন্দা জানান। নাগরকি সমাজের নেতৃবৃন্দ যুক্ত বিবৃতিতে দেশবাসীকে এই ধ্বংস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।