নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৩ জুন, ২০১৮
আওয়ামী লীগের ৬৯ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে একটি লিখিত বিবৃতি তৈরি করেছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার তীব্র আপত্তির মুখে শেষ পর্যন্ত বিবৃতিটি গণমাধ্যমে দিতে পারলেন না বিএনপি মহাসচিব। শুধু তারেক জিয়া নয়, বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দও মির্জা ফখরুলের বিবৃতির ব্যাপারে আপত্তি তোলেন। এ যাত্রায় হেরে গেলেন মির্জা ফখরুল।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ৬৯ বছর পূর্ণ করল আজ। এ উপলক্ষে দলটিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি বিবৃতি তৈরি করেছিলেন বিএনপি মহাসচিব। যে বিবৃতিতে তিনি আওয়ামী লীগকে একটি ‘ঐতিহ্যবাহী’ দল হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। মির্জা ফখরুল তাঁর বিবৃতিতে দেশের গণতন্ত্র এবং স্বাধীকার আন্দোলনে অনেক অবদানের কথাও স্মরণ করেন। এটি উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকের আওয়ামী লীগ ‘ভ্রান্ত নীতিতে’ চলছে। গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করা দলটি গণতন্ত্রের হন্তারক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বলেও মির্জা ফখরুল বিবৃতিতে উল্লেখ করেছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব তাঁর বিবৃতির শেষাংশে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন যে, ‘নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগের বোধোদয় ঘটবে এবং দলটি ‘জনগণের অধিকার’ ফিরিয়ে দেওয়ার পথ উন্মুক্ত করবে। একটি অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে পদত্যাগ করবে।’
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আজ সকালেই এই বিবৃতিটি গণমাধ্যমে দেওয়ার কথা ছিল। বিএনপি মহাসচিব বিবৃতিটি চূড়ান্ত করে এরকম একটি বিবৃতি দেওয়ার অভিপ্রায় জানিয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। দুজন সিনিয়র নেতা এরকম সময়ে এই বিবৃতি দেওয়া যুক্তিসঙ্গত হবে কিনা সে প্রশ্ন তোলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, বিএনপি এখন চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, এসময় এই বিবৃতি কর্মীদের বিভ্রান্ত করতে পারে। এদের আপত্তির কারণেই মির্জা ফখরুল লন্ডনে অবস্থানরত তারেক জিয়ার দ্বারস্থ হন। তারেক জিয়া বিএনপি মহাসচিবকে ই-মেইলে বিবৃতিটি পাঠাতে বলেন। তাৎক্ষণিক ভাবেই মির্জা ফখরুল এটি তারেক জিয়ার ই-মেইলে পাঠান। কিন্তু বিবৃতি পাঠানোর মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যেই তারেক কেবল বিবৃতি বাতিলই করেননি বরং ‘এরকম চিন্তা মাথায় আনার জন্য বিএনপি মহাসচিবের তিরস্কার করেন।’
একাধিক সূত্র বলছে, তারেক বিএনপি মহাসচিবকে নতুন ইতিহাস শিখিয়েছেন। তারেকের মতে আওয়ামী লীগ মোটেও ঐতিহ্যবাহী দল নয়। তাছাড়া আওয়ামী লীগ এখন জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে বলেও তারেক দাবি করেন। এরকম একটি দলের কাছে, গণতন্ত্রের জন্য অনুনয়-বিনয় অর্থহীন বলেও দাবি তাঁর। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলে কথা। মহাসচিবকে তো চেয়ারম্যানের নির্দেশ অনুযায়ী চলতে হবে। অত:পর তিনি বিবৃতিটিকে ‘মৃত’ঘোষণা করলেন। তবে তাঁর সঙ্গে থাকা কর্মীদের বললেন, ‘সৌজন্যতা ও শিষ্টাচারের রাজনীতির দিন শেষ।’
উল্লেখ্য, এর আগেও বিএনপি মহাসচিব একাধিক বক্তৃতায় আওয়ামী লীগকে ‘ঐতিহ্যবাহী’ গণতান্ত্রিক দল হিসেবে অভিহিত করে সমালোচিত হয়েছিলেন। বাম ধারার রাজনীতি থেকে বিএনপিতে আসা ফখরুল সম্মানী এবং ভদ্রলোক হিসেবে দলের বাইরে সমাদৃত।
Read in English- https://bit.ly/2twVygR
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার মনে করেছে নির্বাচনের পর সংকট উতরে গেছে। তা হয়নি, বরং আরও বেড়েছে। সরকার দেশকে পরিকল্পিতভাবে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
রোববার
(১২ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ
সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
গত
বুধবার অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন
করে বিএনপি।
বিএনপি
মহাসচিব বলেন, নির্বাচনের পূর্বে বহু নেতাকর্মীকে একতরফাভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে। এর
তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। এখনো গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতা কারাগারে
রয়েছেন। বিরাজনীতিকরণ করতে ২ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর মূল
উদ্দেশ্য হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দল যেন না থাকে। মানুষের সর্বশেষ আশা ভরসারস্থল হচ্ছে
কোর্ট, কিন্তু সেখানেও কেউ কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না।
সাংবাদিকের
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ, এটি একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র। সরকার দেশকে পরিকল্পিতভাবে
একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এটি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। একটি রাষ্ট্র তখন
ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়, যখন অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙে যায়, রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট
হয়ে যায়। গোটা রাষ্ট্র একটি নৈরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় না। তাও আবার
ক্ষমতাসীন দলের ছাড়া সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
সরকারের এমপি-মন্ত্রীরা টাকা পাচার করে সেটি বিনিয়োগ করেছে বিদেশে, অথচ বাংলাদশের
মানুষের অবস্থা খারাপ।
ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে আসছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কে আসলো তাতে ইন্টারেস্ট নেই। জনগণই বিএনপির শক্তি। সরকার মনে করছে নির্বাচনের পর সংকট উতরে গেছে। কিন্তু সংকট আরও বেড়েছে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য খুবই খারাপ। তাকে হাসপাতালে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টাই তিনি চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে আছেন।
মন্তব্য করুন
কুমিল্লায় তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চারটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র চার সংসদ সদস্যের চার স্বজন প্রার্থী হয়েছেন। ওই চার সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হলেও তাঁরা আওয়ামী লীগের নেতা। এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও ভোটাররা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে কুমিল্লার চারটি আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় চার নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত হন।
কুমিল্লা-২ (হোমনা ও মেঘনা) আসনের সংসদ সদস্য হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবদুল মজিদের স্ত্রী রেহানা বেগম হোমনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন। রেহানা বেগম কুমিল্লা উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
জানতে চাইলে রেহানা বেগম বলেন, ‘২০১৯ সালেও আমি চেয়ারম্যান হয়েছি নৌকা প্রতীক নিয়ে। এবার দল সবার জন্য প্রার্থিতা উন্মুক্ত রেখেছে। নেতা-কর্মীদের চাপে প্রার্থী হয়েছি।’
কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে আহসানুল আলম সরকার উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছেন। ২০১৯ সালেও আহসানুল চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক নিয়ে জয়ী হন। আহসানুল আলম সরকার মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই মামুনুর রশিদ কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবলীগের সদস্য। তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।
কুমিল্লা-৫ ( বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এম এ জাহেরের বড় ভাইয়ের ছেলে আবু তৈয়ব ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তৃতীয় ধাপে প্রার্থী হয়েছেন। আবু তৈয়ব কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন।
স্বজনদের প্রার্থী হওয়া বিষয়ে সংসদ সদস্য মো. আবদুল মজিদ ও জাহাঙ্গীর আলম সরকারে ভাষ্য, প্রার্থীরা গতবার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। তাই এবারও তাঁরা প্রার্থী।
সংসদ
সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, দল প্রার্থিতা সবার জন্য উন্মুক্ত রেখেছে। সারা দেশে বড়
নেতাদের ভাই, ছেলে, স্ত্রী, সন্তানেরা প্রার্থী হয়ে ইতিমধ্যে অনেকে জয়ী হয়েছেন। দেবীদ্বারের
তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা মামুনুরকে চান। অনেকটা একই রকম বক্তব্য দিয়েছেন সংসদ সদস্য এম
এ জাহের।
মন্তব্য করুন
আগামী ১৪ ও ১৫ মে দুদিনের ঢাকা সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। ভারত ও শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে তাঁর। গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফর নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা রকম গুঞ্জন বা এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করলেও এবার তেমনটি দেখা যাচ্ছে না। রাজনীতিতে তেমন কোন উত্তেজনা বা আতঙ্কও নেই যেমনটি ছিল নির্বাচনের আগে আগে। তবে ডোনাল্ড লুর সফর ঘিরে নতুন করে আশার বুক বাঁধছে বিএনপি। রাজনীতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে দলটির মধ্যে। এরই মধ্যে বিএনপি গত শুক্রবার ঢাকায় সমাবেশ করেছে। পাশাপাশি সরকারবিরোধী দেশের সব সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে আবার আলোচনা শুরু করেছে দলটি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধ নিরসন না হতেই উপজেলা নির্বাচন ঘিরে তৃণমূল আওয়ামী লীগে বিভক্তি বাড়ছে, বাড়ছে সহিংসতা। এবার উপজেলা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক নৌকায় নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নেয়। এমনকি দলটি কেন্দ্রীয়ভাবেও কাউকে সমর্থন দেয়নি। এর ফলে নির্বাচনে দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্য থেকে যে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন। যদিও দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্যরা নির্বাচন করতে পারবে না। কিন্তু সে নির্দেশনা মানছেন আওয়ামী লীগের কেউই। বরং মন্ত্রী-এমপিরা তাদের পরিবারের সদস্য বা মাই ম্যানদের পক্ষে সরাসরি ভূমিকা রাখছে। এর ফলে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে। আর যার ফলে বাড়ছে কোন্দল, বাড়ছে সহিংসতা। সংসদ নির্বাচনের পর পরই দলীয় প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে যেমন সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল উপজেলা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একই রকম আশঙ্কা করা হচ্ছে।