ইনসাইড পলিটিক্স

ছাত্রলীগের অন্যপীঠ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ০২ অগাস্ট, ২০১৮


Thumbnail

বেশ কয়েক বছর ধরে ছাত্রলীগ বলতেই সাধারণ মানুষের চোখে ভেসে ওঠে এমন একটি ছাত্র সংগঠন যারা সর্বক্ষণ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকে। কিন্তু এর পেছনে কারণ কী? ছাত্রলীগ কি আসলেই হানাহানি, মারামারি ছাড়া অন্য কোনো কাজ করে না? নির্দিষ্ট কিছু গণমাধ্যমের সংবাদ পরিবেশনের ধরন দেখলে এমনটাই মনে হয়। এই গণমাধ্যমগুলোর যেন ছাত্রলীগের ওপর আজন্ম আক্রোশ আছে৷ খুঁজেপেতে তাঁরা কেবল ছাত্রলীগের নেতিবাচক সংবাদগুলোই প্রকাশ করে। এই সংবাদগুলো দেখলে যে কারোরই মনে হবে, ছাত্রলীগের ছেলেমেয়েরা যেন ভয়ংকর, নৃশংস কোনো প্রাণি, যাদের দ্বারা ভালো কোনো কাজ সম্ভব না। যাদেরকে অবশ্যই এবং অবশ্যই ঘৃণা করতে হবে। একথা অস্বীকার করার উপায় নেই, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মাঝেমাঝে কিছু নিন্দনীয় কাজ করেন। কিন্তু নির্দিষ্ট গণমাধ্যমগুলোর প্রপাগান্ডার ছাত্রলীগের বাইরেও অন্য একটি ছাত্রলীগ আছে যার নেতাকর্মীরা অত্যন্ত মেধাবী, সজ্জন, দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ এবং রাজনীতি ও রাজনীতির বাইরের ক্যারিয়ারে সফল।

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যে ছেলেমেয়েরা ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয় তাঁদের অনেকে পরবর্তীতেও রাজনীতিতে থেকে যায়, অনেকে থাকে না। যারা থাকে না তাঁরা কিন্তু ব্যর্থ ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশ জীবন কাটান না, যেটা মিডিয়ার প্রচার-প্রচারণা ধরন দেখে মনে হয়। বিসিএস ক্যাডার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কিংবা চিকিৎসা, প্রকৌশল, ওকালতি পেশার মতো সম্মানজনক পেশায় জড়িত আছেন তাঁরা। এছাড়া ছাত্রলীগে আছেন সৃজনশীল সব মানুষ; যারা কবি, শিল্পী, লেখক। এই তালিকাটা এতটাই লম্বা যে, ছাত্রলীগ মাত্রই সন্ত্রাসী, মিডিয়ার এমন প্রচারণাকে তা হাস্যকর প্রমাণিত করে ছাড়ে।

উদাহরণ হিসেবে বেশ কয়েকজনের কথা বলা যায়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইমাউল হক সরকার টিটু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইমাদুল হক সোহাগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন মাহী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর হিসেবে কর্মরত আছেন। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মো. আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান রাফি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আওয়াল কবির জয় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ সরকার মাসুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি মশিউর রহমান বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুরের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নিউরোসার্জন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া কর্মরত আছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার জন্য যে বিভাগে ভালো ফলাফল করা জরুরি একথা সর্বজন বিদিত। তাই ছাত্রলীগের ছেলেমেয়েরা পড়ালেখ না করে কেবল গুন্ডামি-মাস্তানি করে এই শিক্ষকেরাই তা ভুল প্রমাণ করেন। বলাই বাহুল্য, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে ছাত্রলীগের যেসব নেতাকর্মী কর্মরত আছেন এই তালিকাটি তার ছোট্ট একটি উদাহরণ মাত্র।

শুধু শিক্ষকতা পেশাতেই নয়, দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে কর্মরত থেকে দেশ সেবায় অবদান রেখে আসছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফএইচ হল ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কবির  বিন আনোয়ার বর্তমানে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসীন হলের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল মালেক তথ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ঢাবির স্যার.এ.এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ নুরুল ইসলাম বাংলাদেশ পুলিশের এসপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অনেকে বলতে পারেন উনারা ছাত্রলীগের সোনালী সময়ের ফসল, বর্তমান সময়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বইপত্রের ধারেকাছে ঘেঁষে না। কিন্তু সাম্প্রতিক কয়েকটি বিসিএসের ফলাফলের দিকে তাকালে এই তথ্যটিও ভুল প্রমাণিত হয়। ছাত্রলীগের সাবেক উপবিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল রিফাত ৩৭তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে, জগন্নাথ হলের দেবজিৎ পাল পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত। শিবির ক্যাডারদের নৃশংস হামলায় হারিয়ে সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যাওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক হাবিবও ৩৭তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।

এছাড়া ঢাবির এফ এইচ হল ছাত্রলীগ সাবেক সাংগঠনিক -সম্পাদক জায়েদ ইমরুল ৩৬তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে, একই হলের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক সুমন সাইফ ৩৬ তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মামুনুল হক ৩৬ তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত।

জেনারেল ক্যাডারের পাশাপাশি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা টেকনিক্যাল ক্যাডারেও নিজ যোগ্যতায় জায়গা করে নিচ্ছেন। পাবনা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক মুহাম্মদ সায়েম শাহরিয়ার, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের উপ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আসাদ আদনান উপল এবং একই মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শুভজিৎ সরকার ৩৭ তম বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত। বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোকাম্মেল ৩৬ তম বিসিএসে আইসিটি ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত।

শুধু বিগত দুটি বিসিএসই নয়, প্রতিটি বিসিএসেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে থাকেন।

এছাড়া বিভিন্ন সরকারি, আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং স্বনামধ্যন্য বহুজাতিক সংস্থায়ও কাজ করে নিজেদের মেধার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বিপ্লব বড়ুয়া একজন সফল আইনজীবী। আরেক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ড.মঈনুল ইসলাম একজন একুশে পদক প্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ। বস্তুত,

স্বাধীনতার পর থেকে এই পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করা মেধাবী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের তালিকা যদি তৈরি করা হয় তবে তাকে একটি প্রতিবেদনের সীমিত পরিসরের জায়গা করে দেওয়া সম্ভব হবে না।

শুধু কি চাকরি-বাকরি! ছাত্রলীগ সৃজনশীলদের প্রতিভাতেও সমৃদ্ধ। প্রয়াত মাহাবুবুল হক শাকিলের কবিতার বই দারুণ বিক্রি হতো। এই কবিও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক ডাল্টন সৌভাত হীরা বর্তমান প্রজন্মের কবি হিসেবে বেশ খ্যাতিমান। সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা শেখ আসমান চিত্রশিল্পী হিসেবে সুনাম কুঁড়িয়েছেন।

কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মেধার কথা কখনো সংবাদমাধ্যমে আসে না। এত হাজার হাজার মেধাবী নেতাকর্মীর সাফল্যের ভিড়ে কেবল দুয়েকজন নেতাকর্মী যারা সংগঠনের শৃঙ্খলা ও দেশের আইন ভঙ্গ করে তাঁদের কথাই পত্রিকায় ফলাও করে ছাপা হয়। ছাত্রলীগের প্রতি অধিকাংশ গণধ্যমের এই বিমাতাসুলভ আচরণ কিন্তু কাকতালীয় নয়, এটি দেশবিরোধী পরিকল্পিত ক্যাম্পেইনের অংশ।

একটা সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে এক কাতারে এনে দেখানোর চেষ্টা করা হত। অথচ স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগের কর্ণধার শেখ হাসিনার সঙ্গে জামাত-শিবির নির্ভর বিএনপি চেয়ারপারসনের তুলনাই হতে পারে না। কিন্তু তারপরও কিছু পত্রপত্রিকা তাঁদের দুজনকে বাংলাদেশের জন্য সমান ক্ষতিকর হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করত এবং এখনো করে চলেছে। গণমাধ্যমগুলোর এধরনের কর্মকাণ্ডের পেছনে মূল কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের বিরাজনীতিকরণের স্বপ্ন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ধ্বংস করে দিয়ে একটি তৃতীয় শক্তির উত্থান ঘটাতে চায় তাঁরা। আর বাংলাদেশের বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে প্রমাণ করতে চায় এই গোষ্ঠীটি। জনমনে ছাত্রলীগ নিয়ে অলীক ভীতি ও সীমাহীন ঘৃণা তৈরি হোক এটাই তাঁদের চাওয়া। এমনটা করা সম্ভব হলে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রক্ষাকবচস্বরূপ ছাত্রলীগকে অসম্মানিত করা ও তাঁদের মনোবল ভেঙ্গে দেওয়া সম্ভব হবে। বৃহৎ রাজনৈতিক পরিসরে যার সুফল ভোগ করবে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ দেশের স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিগুলো।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি

 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সরকারি খরচে হজে যাচ্ছেন বাম নেতা

প্রকাশ: ০৫:৪৫ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

এ বছর সরকারি খরচে হজে যাচ্ছেন ৭১ জন। তাদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত সচিব, বর্তমান বিচারপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সরকারি কর্মচারী রয়েছেন। তালিকায় প্রবীণ রাজনীতিক বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মো. মঞ্জুরুল আহসান খানের নাম রয়েছে।

সরকারের আর্থিক সহায়তায় হজ পালনে যাওয়া ব্যক্তিদের নামে ইতিমধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। তাতে বলা হয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট পাওয়া সাপেক্ষে তারা আগামী ৬ জুন সৌদি আরব যাবেন। হজ শেষে তাদের দেশে ফেরার কথা আগামী ১০ জুলাই।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এতে সরকারের খরচ হবে প্রায় তিন কোটি টাকা।

এবার সরকারি খরচে হজে যাওয়া ব্যক্তিরা বিমানের টিকিট বাবদ ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা জমা দেবেন। এ ছাড়া প্রত্যেককে ৩৫ হাজার টাকা করে হজ অফিসে জমা দিতে হবে খাওয়া বাবদ।

উল্লেখ্য, শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের দায়ে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি মনজুরুল আহসান খানকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টার পদ থেকে স্থায়ী অব্যাহতি দেওয়া হয়।

সরকারি খরচ   হজ   মঞ্জুরুল আহসান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

যুক্তরাষ্ট্র-বিএনপির সম্পর্কে দূরত্ব কেন?

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। আজ তিনি আওয়ামী লীগের বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে নৈশভোজে মিলিত হবেন। এছাড়াও তিনি সরকারের জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশ মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সৌজন্য সাক্ষাতেরও কথা রয়েছে। আর এই সফর সূচিতে বিএনপির সঙ্গে তাদের কোনো বৈঠক নেই। বিএনপি এখন ডোনাল্ড লু কে নিয়ে সুর পাল্টেছে, ভিন্ন সুরে কথা বলছেন।  


বিএনপি নেতারা বলছেন, ডোনাল্ড লু’র ব্যাপারে তাদের কোন আগ্রহ নেই। এই সফর নিয়েও তারা উৎসাহি নয়। কিন্তু এর আগে যখন ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন তখন বিএনপির উত্তেজনা এবং আগ্রহ কেউ চাপিয়ে রাখতে পারেনি। বরং বিএনপির নেতারা এ নিয়ে তাদের আনন্দ অনুভূতি প্রকাশ্যে উচ্চারণ করেছিলেন। সেই সময় বিএনপি নেতারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে হটিয়ে দিবে এমন প্রত্যাশায় বিভোর ছিল। কিন্তু বাস্তবে সেটি হয়নি। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের এক ধরনের ফাটল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গেও বিএনপি নেতাদেরকে মাত্র দু’টি সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে দেখা গেছে। 

আফরিন আখতার বাংলাদেশের সফরে এলে বিএনপি নেতারা ওয়েস্টিন হোটেলে একটি বৈঠক করেন৷ তবে সেই বৈঠক ইতিবাচক ছিল না। তাছাড়া এখন মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পক্ষ থেকেও বিএনপির সঙ্গে আগের মতো আর যোগাযোগ করা হয় না। তাহলে কি বিএনপি-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ফাটল ধরেছে? বিএনপির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দূরত্ব তৈরি করতে চাইছে?

এরকম প্রশ্নের উত্তরে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, নানা কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আর এটি বোঝার কারণেই বিএনপি এখন নিজেদেরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবমুক্ত হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। 

অন্যদিকে বিএনপির কোন কোন নেতা মনে করছেন যে, ৭ জানুয়ারি নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আসলে আওয়ামী লীগের পক্ষেই কাজ করেছে এবং বিএনপি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতির কারণে প্রতারিত হয়েছে। 

বিএনপির নেতা গোলাম মাওলা রনি বিভিন্ন টকশোতে বলছেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূত আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছেন বিএনপি তা বুঝতে পারেননি।’ আর এ ধরনের বক্তব্য এখন বিএনপির প্রায় সব নেতাই করছেন।

বিএনপির বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার জন্য ভারতের পক্ষে কাজ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যদিও কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা এই ধরনের বক্তব্যের কোনো যৌক্তিকতা পায়নি। তবে বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিএনপির যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে তা সহজেই অনুমান করা যায়। এই দূরত্বের কারণ একাধিক। 


১.  ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ না করা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছিল ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হোক এবং এই নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করে। বিএনপিকে যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য অনুরোধও জানিয়েছিলো। কিন্তু বিএনপি তাদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র ক্ষমতার পালাবদলের অন্য কোন উপায় নেই। বিএনপির এই নির্বাচনে না যাওয়াটাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একপ্রকার হতাশা হিসেবে দেখছে। 

২. বিএনপির নেতৃত্বশূন্যতা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির ওপর কিছুটা বিরক্ত বলেও কূটনৈতিক মহল আভাস দিয়েছেন। কারণ তাদের সিদ্ধান্ত দেওয়ার মতো কোন নেতা নেই। বিএনপির কাছে যখন কোন সিদ্ধান্ত জানতে চাওয়া হয় তখন বিএনপি নেতারা তাৎক্ষণিকভাবে কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন না। দলে যারা ক্রিয়াশীল এবং যারা কাজ করছেন তারা কেউই বিএনপির নেতৃত্বের মধ্যে নেই। আর একারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির উপর আস্থা রাখতে পারছে না।

আরও পড়ুন: স্ত্রীকে নিয়ে সিঙ্গাপুর গেলেন মির্জা আব্বাস 

৩. জামায়াতের সাথে সম্পর্ক: তারা আবার স্বাধীনতা বিরোধী, উগ্র মৌলবাদি দলের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করছে। এ বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের নজরে এসেছে আর তাই তারা এখন বিএনপির ব্যাপারে তেমন একটা আগ্রহী নয়।


বিএনপি   লু   যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি নেতানিয়াহুর দোসরে পরিণত হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ: ০২:১৮ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের পক্ষে না দাঁড়িয়ে বিএনপি ইসরায়েলের দোসরে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

মঙ্গলবার (১৪ মে) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ ও বিএনপির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এক মানববন্ধন ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ফিলিস্তিনের পক্ষে না দাঁড়িয়ে ইসরায়েলের দোসরে পরিণত হয়েছে, নেতানিয়াহুর দোসরে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলের এজেন্টদের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আমাদের কাছে তথ্য প্রমাণ আছে। এদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।

তিনি বলেন, পুরো পৃথিবী এই বর্বরতার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি বিএনপি ও জামায়াত, যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করে, এই মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিরুদ্ধে একটা শব্দও উচ্চারণ করেনি। কারণ কেউ অসন্তুষ্ট হতে পারে। গত নির্বাচনে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার পর ইসরায়েলি লবিস্টদের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে কিছু ইসলামী দল আছে, তারা কারণে-অকারণে বায়তুল মোকাররমের দাঁড়িয়ে যান। আপনারা কোথায় এখন? আপনাদের কেন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নির্বাচনের আগে সরকার নামানোর জন্য বায়তুল মোকাররমের সামনে এসে আন্দোলন করেন, কই ফিলিস্তিনি ভাইদের পক্ষে, ইসরায়েলের বিপক্ষে তো একটা বড় মিছিল করতে দেখলাম না।

সামাজিক মাধ্যমে সরকারের সমালোচনাকারীদের নিয়ে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেককেই দেখি সরকারের বিরুদ্ধে বড় বড় ভাষণ দেয়, সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তাদের কথা বলতে তো শুনলাম না। এরা কোথায়? এরা কোথায় লুকিয়ে আছে? এরা আসলে ইসলাম প্রেমী নয়, এরা হলো মুখোশধারী ধর্ম ব্যবসায়ী। এদের মুখোশও উন্মোচন করতে হবে।

এরপর ফিলিস্তিনি মানুষদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ইসরায়েলি বর্বরতার কারণে যারা নিহিত হয়েছেন তাদের মাগফেরাত কামনা করি। যারা আহত হয়েছেন তাদের প্রতি সহানুভূতি জানাই। বাংলাদেশের মানুষের অবস্থান সবসময় মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে ছিল। আমাদের নীতি ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে।


বিএনপি   নেতানিয়াহু   দোসর   হাছান মাহমুদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

স্ত্রীকে নিয়ে সিঙ্গাপুর গেলেন মির্জা আব্বাস

প্রকাশ: ০১:৪৫ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন। 

মঙ্গলবার (১৪ মে) সকালে হযতর শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর যান তারা। 

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে জানান, মঙ্গলবার সকালে মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী আফরোজা দুইজনই চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গিয়েছেন। চিকিৎসা শেষে তারা কবে দেশে ফিরবেন সেটা এখনি বলতে পারছেন না তিনি। 


সিঙ্গাপুর   মির্জা আব্বাস   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মার্কিন স্যাংশন, ভিসানীতির পরোয়া করে না আওয়ামী লীগ: কাদের

প্রকাশ: ০১:০০ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগ সরকার মার্কিন স্যাংশন, ভিসানীতি পাত্তা দেয় না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। 

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ কাউকে দাওয়াত করে আনে নি,তাদের এজেন্ডা আছে। তারা সেসব নিয়ে ঢাকায় এসেছে। ওপরে ওপরে বিএনপি তাদের পাত্তা দেয় না বললেও, তলে তলে  বিএনপির সঙ্গে তাদের কি আছে, তারাই ভালো জানে। 

মঙ্গলবার (১৪ মে) সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে আলোচনাকালে এসব কথা বলেন তিনি।  

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক বিএনপির আন্দোলনের ব্যর্থ চেষ্টা। আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে খড়কুটো ধরে বাজতে চায় তারা। আসলে তাদের কোনো ইস্যু নাই। তারা ভারতীয় পণ্য বর্জনকে ইস্যু বানাতে চায়। আমার প্রশ্ন হলো-ভারতীয় মসলা ছাড়া কি আমাদের চলে?  

তিনি বলেন, ভারতের মসলা ছাড়া আমাদের চলে না। শুধু মসলা কেন, ভারত থেকে শাড়ী-কাপড় আসবে, এছাড়া আরও কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যও আসবেই। 

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি ঢাকায় বিএনপির দুইটা সমাবেশই ফ্লপ হয়েছে। বিএনপি ও তাদের সমমনাদের আন্দোলনের ডাকে জনগণের সাড়া নেই। দলটির কর্মীরা হতাশ, তাদের আর নেতাদের ওপর আস্থা নেই। সে কারণেই বিএনপির কর্মীরা তাদের সমাবেশে যোগ দেয় না।


মার্কিন স্যাংশন   ভিসানীতি   আওয়ামী লীগ   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন