নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:১৪ এএম, ০৫ অগাস্ট, ২০১৮
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র তিনি। ছিলেন দুর্দান্ত এক ক্রীড়া সংগঠক এবং সংস্কৃতিমনা ব্যক্তি। আরও ছিলেন মিথ্যাচারের রাজনীতির নির্মম এক শিকার। তিনি আর কেউ নন, তিনি মুক্তিযুদ্ধের সুদক্ষ সংগঠক শেখ কামাল। তারুণ্যের আইকন শেখ কামালের আজ জন্মদিন।
শেখ কামাল ১৯৪৯ সালের ৫ই আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ভাইবোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয় শেখ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে নিহত হওয়ার আগে তিনি গর্ব করার মতো অনেক কাজ করে গেছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে তাঁর চরিত্র হনন করেছে নোংরা ভাবে।
বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই অপপ্রচার ও মিথ্যাচার রাজনীতিকে দূষিত করে আসছে। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালই এই মিথ্যাচারের রাজনীতির, অপপ্রচারের রাজনীতির সবচেয়ে বড় শিকার । হিটলারের সময় নাৎসিদের প্রপাগান্ডামন্ত্রী ও প্রচারণা বিশেষজ্ঞ গোয়েবলস একটি নীতি অনুসরণ করতেন। নীতিটি হলো, একটি মিথ্যাকে বার বার সত্য বলে প্রচার করলে ওই মিথ্যাটাই এক সময় সত্যে পরিণত হয়ে যায়। এই গোয়েবলসীয় নীতি শেখ কামালের বিরুদ্ধেও ব্যবহার করা হয়েছিল যে কারণে অকাট্য প্রমাণ থাকা স্বত্ত্বেও শেখ কামালের মৃত্যুর ৪৩ বছর পরও অনেকে তাঁকে অপরাধী বলে বিশ্বাস করে।
এই গোয়েবলসীয় প্রপাগান্ডার রাজনীতিতে একটি মানুষের যে কীভাবে দুর্নাম করা যায়, চরিত্রহনন করা হয় তার একটি বড় উদাহরণ শেখ কামাল। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে সপরিবারে যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর প্রচার করা হলো শেখ কামাল ব্যাংক ডাকাত ছিলেন, শেখ কামাল মেজর ডালিমের স্ত্রীকে অপহরন করেছিলেন। শেখ কামাল বদমাশ, শেখ কামাল লম্পট। অর্থ্যাৎ এমন কোনো অপবাদ নেই যা শেখ কামালকে দেওয়া হয়নি। বস্তুত, হৃদয় বিদারক ১৫ আগস্ট ছিল একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ফলাফল। এই পরিকল্পনা ছিল বাঙালির স্বাধীনতার দূত শেখ মুজিবের পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলা। এই বিশাল পরিকল্পনার একটি অংশই ছিল শেখ কামালের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করা, তাঁর ওপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করা।
কিন্তু সত্য কোনোদিন চাপা থাকে না। সত্যির আলোতে এক সময় মিথ্যার অন্ধকার দূর হয়ে যায়। সময়ের আবর্তনে তাই প্রমাণিত হয়েছে শেখ কামাল কোনো অপরাধী ছিলেন না। ব্যাংক ডাকাতি কিংবা পরস্ত্রী হরণের মতো কোনো অপকর্মই তিনি করেননি। বরং শেখ কামাল ছিলেন ক্রীড়াপ্রেমী, সংস্কৃতিমনা এক মেধাবী তরুণ। যিনি নিজের জীবন ব্যয় করেছেন সৃজণশীল, মননশীল কাজের পেছনে।
মৃত্যুর সময় শেখ কামালের বয়স ছিল মাত্র ২৬। এই স্বল্পস্থায়ী জীবনে শেখ কামাল কত কিছুই না করেছেন। দুর্দান্ত ক্রীড়া সংগঠক ছিলেন শেখ কামাল। বাংলাদেশের বিখ্যাত ক্রীড়া ক্লাব আবাহনী ক্রীড়া চক্র প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। দক্ষ সংগঠক হিসেবে আবাহনীর জন্য তিনি খেলোয়াড় সৃষ্টি, বাছাই ও প্রশিক্ষণের সব বিষয় দেখাশোনা করতেন।
এছাড়া সংস্কৃতি অঙ্গনেও দারুণ সক্রিয় ছিলেন শেখ কামাল। ছায়ানটের সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র শেখ কামাল মঞ্চ নাটকও করতেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিনেতা হিসেবে তাঁর সুখ্যাতি ছিল। ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’ নামে একটি সংগঠনও তৈরি করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র। এমনকি ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও এই শেখ কামাল।
শেখ কামালের যদি অসময়ে মৃত্যু না হতো তাহলে দেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি অঙ্গন তাঁর হাত ধরে অনেক দূর এগিয়ে যেত। বাংলাদেশে আবাহনীর মতো আরও ক্লাব হতো, স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠীর মতো আরও অনেক সাংস্কৃতিক সংগঠন হতো। কিন্তু তা আর সম্ভব হয়নি।
শেখ কামালের মৃত্যুতে বাংলাদেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। অমিত প্রতিভাবান শেখ কামাল ছিলেন সমসাময়িক তরুণদের আইকন। এখনো বাংলার তরুণরা যদি তাঁকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে তবে তরুণ সমাজের রূপই বদলে যাবে। কিন্তু যখন তিনি জীবিত ছিলেন তখন তাঁর প্রতিভাকে, তাঁর মেধাকে আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। এই আক্ষেপ আর পূরণ হবার নয়।
আজ শেখ কামালের জন্মদিনে আমাদের মনে রাখতে হবে, চরিত্র হননের রাজনীতি, কলঙ্ক লেপনের রাজনীতি বাংলাদেশে এখনো সচল আছে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে এমন অপরাজনীতির শিকার না হয়, সে ব্যাপারে আমাদের সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। নতুবা শেখ কামালের মতো ব্যক্তিরা কখনোই তাঁদের প্রাপ্য সম্মান পাবে না যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপি নতুন
করে আন্দোলন শুরু করতে চাইছে। কিন্তু আন্দোলন শুরু করার জন্য যে আর্থিক সামর্থ্য প্রয়োজন,
সেই আর্থিক সামর্থ্য এখন বিএনপির অনেক কমে গেছে। অর্থকষ্টে ভুগছে দলটি। সম্প্রতি দলের
স্থায়ী কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বিষয়টি লন্ডনে
পলাতক তারেক জিয়ার কাছে অবহিত করেন। তারেক জিয়া তাদের বলেছেন, ‘আমারই চলতে কষ্ট হচ্ছে,
আপনারা টাকা জোগাড় করুন’।
উল্লেখ্য যে, বিগত দুই বছর বিএনপির বেশ কিছু কর্মসূচি করেছিল এবং তাদের কাছে আর্থিক প্রবাহে একটা স্ফীতিভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল। বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা গোপনে গোপনে দুই নৌকায় পা দেওয়ার মতো আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে অর্থ সহায়তা দিয়েছে। তাছাড়াও বিভিন্ন বিএনপিপন্থি ব্যবসায়ীরা দলটিতে অর্থ সহায়তা বাড়িয়েছিল। তাদের আশা ছিল যে, শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচন প্রতিরোধ করতে পারবে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটবে। আর এই কারণেই ডু অর ডাই অবস্থা থেকে অনেক ব্যবসায়ী বিএনপিকে দুই হাতে অর্থ ঢেলেছিল। আর এ কারণেই বিএনপির মধ্যে গত দুই বছর চাঙ্গাভাব দেখা দিয়েছিল। কোটি কোটি টাকা খরচ করে তারা বিভিন্ন বিভাগীয় সমাবেশ করেছে। কর্মসূচি পালন করেছে। এই সমস্ত কর্মসূচির ফলে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের আশা এবং উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের ঘটনার পর আস্তে আস্তে বিএনপিতে অর্থ প্রবাহ কমতে থাকে।
আরও পড়ুন: তারেক কি যুক্তরাজ্যে অবাঞ্ছিত হচ্ছেন?
বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন যে, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত বিএনপিকে অনেকেই আর্থিক সহায়তা দিচ্ছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠিত হওয়া এবং বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রগুলো নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রেক্ষিতে এখন বিএনপিকে সবাই এড়িয়ে চলতে চাইছে। যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা আগে বিএনপিকে অর্থ দিতেন তারা এখন বিএনপি নেতাদের টেলিফোন ধরছেন না বলেও কোন কোন নেতা অভিযোগ করেছেন। আর বিএনপিপন্থি যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা সরকারের পতনের লক্ষ্যে আন্দোলনের গতি বাড়ানোর জন্য দুহাতে অর্থ দিয়েছেন তারা এখন হাত পা গুটিয়ে নিয়েছেন।
এখন ওই সমস্ত ব্যবসায়ীরা তাদের অস্তিত্ব রক্ষার চেষ্টা করছেন। নতুন করে সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে কারও কারও মধ্যে। কারণ তারা মনে করছে, আন্দোলনে বিএনপি পরাজিত হয়েছে, এখন বিএনপির পেছনে অর্থ ঢালা মানে নিজেকে ঝুঁকিতে ফেলা। এ কারণেই বিএনপি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে যে চাঁদা আদায় করত সেই চাঁদার পরিমাণ এখন শূন্যের কোঠায় নেমে গেছে।
আরও পড়ুন: হাইকমান্ডের হাতে বিএনপির ৩০০ নেতার ভাগ্য
বিএনপির অর্থ উপার্জনের একমাত্র উপায় হল, কমিটি গঠন করা এবং কমিটি গঠন করার মাধ্যমে বিভিন্ন নেতা কর্মীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা। কিন্তু নেতাকর্মীরা এখন আগের মতো সচল অবস্থায় নেই। বহু নেতাকর্মী জেলে। তাদের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। এমনকি অনেকে আদালতের খরচ মেটাতেও হিমশিম খাচ্ছেন। এ কারণে টাকা দিয়ে কমিটিতে জায়গা নেওয়াটা অনেকের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এখানেও আর্থিক অর্থ প্রাপ্তিতে একটি টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। এ কারণে বিএনপি এখন বহিষ্কার বাণিজ্যের দিকে ঝুঁকছে। বিভিন্ন নেতাকে ঢালাওভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। তখন তারা টাকা পয়সা দিয়ে দলে আবার জায়গা করে নিচ্ছেন। এভাবে কোনরকমে দলটি টিকছে।
তবে বিএনপি নেতারা মনে করছেন, যারা
অর্থসংগ্রহ করছে সে সমস্ত নেতারা ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন। বিশেষ করে কয়েকজন নেতা যারা
ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তারা একটি মোটা অংকের টাকা নিজেদের কাছে রেখে অল্প
কিছু দলের জন্য বরাদ্দ করেছেন। তবে ওই সমস্ত নেতাদের অনেকেরই দাবি তারা নিজের কাছে
কিছুই রাখেননি। বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তারা যে চাঁদা বা আথিক অনুদান পেয়েছেন
তার একটি বড় অংশই তাদেরকে লন্ডনে পাঠাতে হয়েছে তারেক জিয়ার বিলাসী জীবনযাপনের জন্য।
মন্তব্য করুন
দীর্ঘদিন ধরে চলছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সরকারবিরোধী আন্দোলন। এই আন্দোলনকে ঘিরে নানা কারণে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে এখন পর্যন্ত সাত শতাধিক নেতাকে বহিষ্কার করেছে দলটি। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতারাও রয়েছেন। বহিষ্কার হওয়া এসব নেতারা এবার ভুল স্বীকার করে দলে ফিরতে চান।
এরই মধ্যে ক্ষমা চেয়ে অন্তত তিনশজন আবেদন করেছে দলীয় হাই কমান্ডের কাছে। আবেদনের পর এখন পর্যন্ত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে মাত্র ২০ জনের। বাকিদের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তে অনড় হাইকমান্ড।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্ষমা না পেয়ে কেউ কেউ একাধিকবার আবেদনও করেছেন। ঘুরছেন বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কাছে।
তবে কোনো সংকেত না মিললেও বিএনপির কর্মসূচিতে বহিষ্কৃত ও অব্যাহতি পাওয়া নেতাদের অনেকেই অংশ নিচ্ছেন।
ক্ষমা না করার কারণ হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, বেশ কয়েকজন একাধিকবার আবেদন করলেও স্থানীয় গ্রুপিং-দ্বন্দ্বের কারণে দলে ফেরানোর সিদ্ধান্ত হচ্ছে না। আবার ঢালাওভাবে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করলে দলে চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়তে পারে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বহিষ্কৃত নেতাদের আবেদন বিবেচনাধীন রয়েছে।
এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের ১৪ জনকে বহিষ্কার করে বিএনপি। এর মধ্যে দুজন ছাড়া কেউ বিজয়ী হতে পারেননি। ফলে বাকিদের কেউ কেউ বিএনপিতে ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ ছাড়া ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত বহিষ্কার করা হয়েছে ২০৪ নেতাকে।
মন্তব্য করুন
প্রায় ১০ হাজারের বেশি অবৈধভাবে বসবাস করা বাঙালিকে যুক্তরাজ্য ফেরত পাঠিয়েছে। তাদের সেখানে থাকার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের দৈনিক টেলিগ্রাফ এবং স্ট্যান্ডার্ডের খবরে বলা হয়েছে, ১১ হাজার বাংলাদেশী শিক্ষার্থী, ভ্রমণ কিংবা অন্য কোন কাজের পেশায় যুক্তরাজ্যে যান। সেখানে তারা বসবাসের জন্য রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। তবে তাদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। বাকি ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। আবেদন খারিজ হওয়া এসব বাংলাদেশীকে এখন বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন’ চুক্তির আওতায় এসব বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানানো গেছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র ‘ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন’ চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এই চুক্তি অনুযায়ী যারা যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে বসবাস করবেন তাদেরকে দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, তারেককে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার কৌশল হিসেবেই যুক্তরাজ্যের সাথে ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। এই চুক্তির আওতায় শুধুমাত্র অবৈধ ব্যক্তিদেরকেই দ্রুত ফেরত পাঠানো হবে না, বাংলাদেশে দন্ডিত, অপরাধী এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদেশে বসে অপপ্রচারকারীদেরও ফিরিয়ে নানার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই চুক্তিতে বলা হয়েছে, যারা বাংলাদেশে অপরাধ করে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে যাবে তাদেরকে যুক্তরাজ্য ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করবে এবং তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিল করার জন্য প্রক্রিয়া করবে। সেই বিবেচনায় তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের একটি অন্যতম রাজনৈতিক কৌশল হল, তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে এনে দন্ড কার্যকর করা। ইতোমধ্যে তারেক জিয়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছেন। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেননি এবং আপিল করার সময়সীমাও পেরিয়ে গেছে। এছাড়াও অর্থপাচারের একটি মামলায় হাইকোর্ট তাকে ৭ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত করেছেন। তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ সরকার নানা রকম দেন দরবার করে আসছেন। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে তারেক জিয়াকে দেশে আনা সম্ভব হয়নি।
তারেক এখন যুক্তরাজ্যে আছে রাজনৈতিক আশ্রয়ে এবং রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করা ব্যক্তিকে যে সমস্ত শর্ত এবং নিয়ম মানতে হয় তা মানছেন না বলেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একাধিকবার অধিকার করা হয়েছে। যেমন- লন্ডনে বসে তারেক বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্র এবং সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকম বিষেদাগার করছেন, সরকার পতনের জন্য ষড়যন্ত্র করছেন।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর অন্তত ৩টি সফরে তারেক জিয়া লন্ডনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিলেন এবং তার নির্দেশে সেখানে সহিংস ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। বাংলাদেশ দূতাবাসেও তারেক জিয়ার নির্দেশে হামলা করা হয়েছিল এবং এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ বলে বাংলাদেশ সরকার মনে করে। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের দূতাবাস তারেক জিয়াকে ফিরিয়ে আনার জন্য কয়েক দফা আবেদন করেছে এবং কূটনৈতিকরা মনে করছেন, তারেক জিয়াকে ফিরিয়ে আনার স্বার্থেই ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে।
তবে কোন কোন মহল বলছে, তারেক জিয়ার বিষয়টি স্পর্শকাতর। তাকে যেহেতু যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া হয়েছে এবং তারেক জিয়া সেই রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের আবেদন সংক্রান্ত চিঠিতে উল্লেখ করেছেন যে, বাংলাদেশে এলে তার জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে সেকারণেই তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে পাঠানোর বিষয়টি এত দ্রুত নাও হতে পারে। তবে বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে এ ব্যাপারে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখবে বলেই জানা গেছে।
তারেক জিয়া বিএনপি যুক্তরাজ্য ফাস্ট ট্র্যাক চুক্তি
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন।
শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপিকে উপহাস করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে তারা লিটলেট বিতরণ কর্মসূচিতে নেমে এসেছে। এবার বুঝুন তাদের অবস্থা।
তিনি বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতার কারণেই আজ দেশের এত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি হয়েছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর কাছে আবেদন করে বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন, কিন্তু বিএনপি এবং মির্জা ফখরুল বাকশালকে গালিতে পরিণত করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমও লিখছে ভারত বিরোধিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখবে বিএনপি। ভারত প্রশ্নে এখন মধ্যপন্থা নিতে চায় বিএনপি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্রের কোনো ঘাটতি নেই, সংসদ এবং সংসদের বাইরেও সরকারের বিরোধিতা জারি আছে। সরকার কোনো দল বা গোষ্ঠীর ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে না। গণতন্ত্রের বিচারে বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপি নতুন করে আন্দোলন শুরু করতে চাইছে। কিন্তু আন্দোলন শুরু করার জন্য যে আর্থিক সামর্থ্য প্রয়োজন, সেই আর্থিক সামর্থ্য এখন বিএনপির অনেক কমে গেছে। অর্থকষ্টে ভুগছে দলটি। সম্প্রতি দলের স্থায়ী কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বিষয়টি লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার কাছে অবহিত করেন। তারেক জিয়া তাদের বলেছেন, ‘আমারই চলতে কষ্ট হচ্ছে, আপনারা টাকা জোগাড় করুন’।
দীর্ঘদিন ধরে চলছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সরকারবিরোধী আন্দোলন। এই আন্দোলনকে ঘিরে নানা কারণে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে এখন পর্যন্ত সাত শতাধিক নেতাকে বহিষ্কার করেছে দলটি। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতারাও রয়েছেন। বহিষ্কার হওয়া এসব নেতারা এবার ভুল স্বীকার করে দলে ফিরতে চান।
প্রায় ১০ হাজারের বেশি অবৈধভাবে বসবাস করা বাঙালিকে যুক্তরাজ্য ফেরত পাঠিয়েছে। তাদের সেখানে থাকার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের দৈনিক টেলিগ্রাফ এবং স্ট্যান্ডার্ডের খবরে বলা হয়েছে, ১১ হাজার বাংলাদেশী শিক্ষার্থী, ভ্রমণ কিংবা অন্য কোন কাজের পেশায় যুক্তরাজ্যে যান। সেখানে তারা বসবাসের জন্য রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। তবে তাদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। বাকি ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। আবেদন খারিজ হওয়া এসব বাংলাদেশীকে এখন বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন’ চুক্তির আওতায় এসব বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানানো গেছে।
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন। শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।