নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১০ অগাস্ট, ২০১৮
আওয়ামী লীগ এবং জামাতকে বাদ দিয়ে একটি সর্বদলীয় সরকার গঠনের ইশতেহার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা চলছে। এই আলোচনার উদ্যোক্তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি পশ্চিমা দূতাবাস এবং সুশীল সমাজ। বিএনপিও সরকারের বিরুদ্ধে এরকম একটি নির্বাচনী চ্যালেঞ্জে যেতে চায়। তবে এক্ষেত্রে বিএনপির প্রধান শর্ত হলো খালেদা জিয়ার মুক্তি। বিএনপি বলছে, মালয়েশিয়ায় যেমন মাহাথিরের নেতৃত্বে জোট,নির্বাচনের আগেই একটি চুক্তি করেছিলেন। যে চুক্তিতে বলা হয়েছিল, এই জোট জয়ী হলে স্বল্পোতম সময়ের মধ্যে আনোয়ার ইব্রাহিমকে মুক্ত করবে। তেমনি, বিএনপিও নির্বাচনের আগে এরকম শর্ত চায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এরকম শর্তে রাজি হলে বিএনপি এরকম একটি জোটে অংশগ্রহণ করবে। কূটনীতিক পাড়ায় সর্বশেষ এই রাজনৈতিক উদ্যোগের নাম দেয়া হয়েছে ‘মালয়েশিয়া মডেল’। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মালয়েশিয়ার নাজিব রাজাকের দলের বিরুদ্ধে অবসরে যাওয়া মাহাথির মোহাম্মদ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে নাজিবের বিরুদ্ধে অবসর ভেঙ্গে নির্বাচনে দাঁড়ান। যে আনোয়ার ইব্রাহিমকে তিনিই উপ-প্রধানমন্ত্রীর থেকে বহিষ্কার করেছিলেন, তার সঙ্গেই জোট বাঁধেন। পরাজিত করেন তাঁর প্রাক্তন দল এবং তাঁর এক সময়ের শিষ্য নাজিব রাজাককে। মার্কিন দূতাবাস চাইছে, মালয়েশিয়ার মতো বাংলাদেশেও বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে একটি জোট হোক। যে জোটে আওয়ামী লীগ ছাড়া গণতান্ত্রিক সব দল থাকুক। এ লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি সংলাপ অনুষ্ঠানের জন্য কাজ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সুশীল সমাজের একাংশ। রাজনৈতিক সূত্রে প্রাপ্ত খবর হলো, বিএনপি ছাড়া বাকি রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য মোটামুটি চূড়ান্ত। যুক্তফ্রন্ট ইতিমধ্যেই গঠিত হয়েছে, যুক্তফ্রন্টের বাইরে থাকা দলগুলো যেমন, গণফোরাম, বামফ্রন্টও এরকম জোটে যেতে আগ্রহী। কিন্তু যারা এরকম জোট গঠনের মুল উদ্যোক্তা তাঁরা বলছেন, বিএনপি ছাড়া এরকম জোট অর্থহীন। তাঁদের মতে, বিএনপি বাদে বাকী দলগুলোর নেতাদের সমাজে গ্রহনযোগ্যতা ও সম্মান থাকলেও ভোটের মাঠে এদের কদর নেই। এরকম উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত একজন বুদ্ধিজীবী স্বীকার করলেন, ‘ এখনও বাংলাদেশে ভোটের মাঠ আওয়ামী লীগ আর বিএনপির দখলে।’ তাঁর মতে ‘নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে হটাতে হলে সর্বদলীয় জোটে বিএনপির বিকল্প নেই। একটি সূত্র বলছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম, ত্যাগ স্বীকার করে হলেও এরকম জোটে যেতে আগ্রহী। দলে তার ঘনিষ্ঠদের তিনি এর পক্ষে অনেক যুক্তি দিয়েছেন। যারমধ্যে অন্যতম হলো, বেগম জিয়ার মুক্তি। এছাড়াও ফখরুল মনে করেন, এরকম জোট করে নির্বাচন জয়ী হলে বিএনপিই হবে সিদ্ধান্ত গ্রহণে মূল নিয়ন্ত্রক শক্তি।
বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন, এখন বিএনপির মূল লক্ষ্য ক্ষমতায় যাওয়া নয় বরং ক্ষমতা থেকে আওয়ামী লীগকে হটিয়ে দেয়া। তবে, বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেন, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহনের একমাত্র ক্ষমতা বেগম জিয়া ও তারেক জিয়ার। এ ব্যাপারে তাদের সবুজ সংকেত এখনও পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, বিএনপির অনেকেই মনে করেন, ড. কামাল হোসেন আর যাই হোক ড. মাহাথির মোহাম্মদের মতো ক্যারিশম্যাটিক নন।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার মনে করেছে নির্বাচনের পর সংকট উতরে গেছে। তা হয়নি, বরং আরও বেড়েছে। সরকার দেশকে পরিকল্পিতভাবে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
রোববার
(১২ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ
সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
গত
বুধবার অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন
করে বিএনপি।
বিএনপি
মহাসচিব বলেন, নির্বাচনের পূর্বে বহু নেতাকর্মীকে একতরফাভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে। এর
তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। এখনো গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতা কারাগারে
রয়েছেন। বিরাজনীতিকরণ করতে ২ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর মূল
উদ্দেশ্য হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দল যেন না থাকে। মানুষের সর্বশেষ আশা ভরসারস্থল হচ্ছে
কোর্ট, কিন্তু সেখানেও কেউ কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না।
সাংবাদিকের
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ, এটি একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র। সরকার দেশকে পরিকল্পিতভাবে
একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এটি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। একটি রাষ্ট্র তখন
ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়, যখন অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙে যায়, রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট
হয়ে যায়। গোটা রাষ্ট্র একটি নৈরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় না। তাও আবার
ক্ষমতাসীন দলের ছাড়া সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
সরকারের এমপি-মন্ত্রীরা টাকা পাচার করে সেটি বিনিয়োগ করেছে বিদেশে, অথচ বাংলাদশের
মানুষের অবস্থা খারাপ।
ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে আসছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কে আসলো তাতে ইন্টারেস্ট নেই। জনগণই বিএনপির শক্তি। সরকার মনে করছে নির্বাচনের পর সংকট উতরে গেছে। কিন্তু সংকট আরও বেড়েছে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য খুবই খারাপ। তাকে হাসপাতালে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টাই তিনি চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে আছেন।
মন্তব্য করুন
কুমিল্লায় তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চারটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র চার সংসদ সদস্যের চার স্বজন প্রার্থী হয়েছেন। ওই চার সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হলেও তাঁরা আওয়ামী লীগের নেতা। এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও ভোটাররা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে কুমিল্লার চারটি আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় চার নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত হন।
কুমিল্লা-২ (হোমনা ও মেঘনা) আসনের সংসদ সদস্য হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবদুল মজিদের স্ত্রী রেহানা বেগম হোমনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন। রেহানা বেগম কুমিল্লা উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
জানতে চাইলে রেহানা বেগম বলেন, ‘২০১৯ সালেও আমি চেয়ারম্যান হয়েছি নৌকা প্রতীক নিয়ে। এবার দল সবার জন্য প্রার্থিতা উন্মুক্ত রেখেছে। নেতা-কর্মীদের চাপে প্রার্থী হয়েছি।’
কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে আহসানুল আলম সরকার উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছেন। ২০১৯ সালেও আহসানুল চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক নিয়ে জয়ী হন। আহসানুল আলম সরকার মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই মামুনুর রশিদ কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবলীগের সদস্য। তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।
কুমিল্লা-৫ ( বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এম এ জাহেরের বড় ভাইয়ের ছেলে আবু তৈয়ব ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তৃতীয় ধাপে প্রার্থী হয়েছেন। আবু তৈয়ব কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন।
স্বজনদের প্রার্থী হওয়া বিষয়ে সংসদ সদস্য মো. আবদুল মজিদ ও জাহাঙ্গীর আলম সরকারে ভাষ্য, প্রার্থীরা গতবার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। তাই এবারও তাঁরা প্রার্থী।
সংসদ
সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, দল প্রার্থিতা সবার জন্য উন্মুক্ত রেখেছে। সারা দেশে বড়
নেতাদের ভাই, ছেলে, স্ত্রী, সন্তানেরা প্রার্থী হয়ে ইতিমধ্যে অনেকে জয়ী হয়েছেন। দেবীদ্বারের
তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা মামুনুরকে চান। অনেকটা একই রকম বক্তব্য দিয়েছেন সংসদ সদস্য এম
এ জাহের।
মন্তব্য করুন
আগামী ১৪ ও ১৫ মে দুদিনের ঢাকা সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। ভারত ও শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে তাঁর। গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফর নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা রকম গুঞ্জন বা এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করলেও এবার তেমনটি দেখা যাচ্ছে না। রাজনীতিতে তেমন কোন উত্তেজনা বা আতঙ্কও নেই যেমনটি ছিল নির্বাচনের আগে আগে। তবে ডোনাল্ড লুর সফর ঘিরে নতুন করে আশার বুক বাঁধছে বিএনপি। রাজনীতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে দলটির মধ্যে। এরই মধ্যে বিএনপি গত শুক্রবার ঢাকায় সমাবেশ করেছে। পাশাপাশি সরকারবিরোধী দেশের সব সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে আবার আলোচনা শুরু করেছে দলটি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধ নিরসন না হতেই উপজেলা নির্বাচন ঘিরে তৃণমূল আওয়ামী লীগে বিভক্তি বাড়ছে, বাড়ছে সহিংসতা। এবার উপজেলা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক নৌকায় নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নেয়। এমনকি দলটি কেন্দ্রীয়ভাবেও কাউকে সমর্থন দেয়নি। এর ফলে নির্বাচনে দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্য থেকে যে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন। যদিও দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্যরা নির্বাচন করতে পারবে না। কিন্তু সে নির্দেশনা মানছেন আওয়ামী লীগের কেউই। বরং মন্ত্রী-এমপিরা তাদের পরিবারের সদস্য বা মাই ম্যানদের পক্ষে সরাসরি ভূমিকা রাখছে। এর ফলে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে। আর যার ফলে বাড়ছে কোন্দল, বাড়ছে সহিংসতা। সংসদ নির্বাচনের পর পরই দলীয় প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে যেমন সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল উপজেলা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একই রকম আশঙ্কা করা হচ্ছে।