নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৯ অগাস্ট, ২০১৮
অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং ড. কামালের ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে আওয়ামী লীগ সতর্ক, বিএনপি বিরক্ত। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন, ‘এখনই এই ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলার সময় হয়নি। দেখি তারা কি করে, কতদূর যায়।’ অন্যদিকে বিএনপির নেতারা বলছেন, ‘ঐক্য জোটের নামে তারা বিএনপির ঘাড়ে বন্দুক রেখে গুলি করতে চাইছে।’ আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এই মনোভাব জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ‘আগামী নির্বাচন যে অংশগ্রহণমূলক হবে এই জোট তাঁর ইঙ্গিত। নির্বাচনের আগে এরকম জোট হয়।’ তিনি বলেন, ’আশা করি, তাঁরা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করবে। জনগণই হলো সকল ক্ষমতার মালিক। তারা জনগণের কাছে যাবে।’
এই জোট যদি বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করে সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া কি হবে? জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আগাম কথা বলে লাভ কী? আগে জোট হোক, তারপর দেখা যাবে।’
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘কেবল তো তারা ঐক্যের ঘোষণা দিলো, দেখি তারা কোন দিকে যায়, তারপর মন্তব্য করবো।’ তবে তিনি বলেন, ‘এবার নির্বাচনে বহু দল আসবে। এই জোট বিএনপিকে আরও নির্বাচনমুখী করবে বলেই আমার ধারণা’
তবে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী মনে করেন, ‘শূন্য এবং শূন্যের যোগফল শূন্যই হয়। এই জোট নিয়ে কিছু সুশীল ব্যক্তির উচ্ছ্বাস আছে, সাধারণ মানুষের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।’ তিনি বলেন, ‘জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার জন্য যদি এই জোট হয়, তাহলে তা ভালো। কিন্তু ষড়যন্ত্র করার জন্য এরকম জোট হয় তবে অতীতের মতো এবারও তারা ব্যর্থ হবে।’
অন্যদিকে, বিএনপি নেতারা খোলামেলা ভাবেই এই জোটের ব্যাপারে বিরক্তি প্রকাশ করেছে। তারা এটাকে নতুন আপদ হিসেবেই দেখছেন। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘বাংলাদেশে বিএনপিকে বাদ দিয়ে কোনো জাতীয় ঐক্য হয় নাকি? সরকারের বিরুদ্ধে যদি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হয়, তা বিএনপির নেতৃত্বেই হতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘তাদের কথা শুনে মনে হয়, আমরা (বিএনপি) খুব বিপদে পড়েছি। কোথায় আমরা শর্ত দেবো, উল্টো তাঁরা শুনছি নানা শর্ত দিচ্ছে। সত্যি বিরক্তিকর।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাসও নতুন জোটকে নেতিবাচক ভাবে দেখছেন। তাঁর মতে, ‘যারা জোট করেছে, তাঁদের কোনো ভোট নেই। আওয়ামী লীগ বা বিএনপিকে বাদ দিয়ে এরা নির্বাচন করলে প্রত্যেকে জামানত হারাবে।’ তিনি বলেন, ‘সত্য মিথ্যা জানি না, তাঁরা না কি বলেছে বিএনপিকে ১৫০ আসন দেবে। আচ্ছা ওনাদের কি দেড়শ জন প্রার্থী আছে?’ মির্জা আব্বাস মনে করেন, ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিকে পাশ কাটানোর জন্য এটা সরকারের আরেক নাটক কিনা সেটা দেখতে হবে।’ বিএনপির এই প্রভাবশালী নেতার মতে, ‘এদেশে আন্দোলন হবে, সরকারের পতনও হবে, তবে তা হবে বেগম জিয়ার নেতৃত্বে।’ মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চাই, তবে তা হবে বিএনপির নেতৃত্বে।’
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ দলীয় কোন্দল
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
রাজনীতিতে প্রায় পরিত্যক্ত আবর্জনার ডাস্টবিনে পড়ে থাকা মাহমুদুর রহমান মান্না নিজের ওজন বাড়াতে এবং রাজনীতিতে নিজের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য নতুন স্টান্টবাজি গ্রহণ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, নির্বাচনের আগে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে মন্ত্রী হওয়ার অফার দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কী স্বেচ্ছা নির্বাসনে গেলেন? গতকাল তিনি ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরার পরেও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তাঁর কোন উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়নি। তিনি ছিলেন প্রচন্ড বিরক্ত এবং অনুৎসাহী। বারবার সাংবাদিকদের তিনি অনুরোধ করেছিলেন তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। এরপর তিনি বাড়িতে গিয়েছেন এবং সেখানে রীতিমতো নিজেকে গৃহবন্দি করে রেখেছেন। আজ সারাদিন দলের নেতাকর্মীরা তাঁর সঙ্গে কোন যোগাযোগ করতে পারেননি। এমনকি ফোন করা হলেও তিনি ঘুমিয়ে আছেন, বিশ্রামে আছেন কিংবা পরে ফোন করুন- এরকম বক্তব্য পাওয়া গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই নীরবতা বিএনপির মধ্যে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
একের পর এক ভুল কৌশল বিএনপির রাজনীতির অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছে। এবার উপজেলা নির্বাচনেও বিএনপি যে কৌশল গ্রহণ করেছিল, প্রথম দফা ভোটগ্রহণের পর সেই কৌশল ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপির ভোট বর্জন যেমন সাধারণ মানুষ সাড়া দেয়নি ঠিক তেমনি ভাবে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীরাও নির্বাচনে একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে যাননি। সাত জন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এর ফলে আগামী ধাপগুলোতে যারা বিএনপির পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং যারা দল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন তারা আবার নতুন করে উৎসাহ পাবেন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাবেন। এর ফলে বিএনপির বহিষ্কার কৌশল ব্যর্থ হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।