নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৮ এএম, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
সবুজ শ্যামল এই বাংলায় শীতকাল একটি বিশেষ সময় আমাদের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনে। শীতকালেই আমাদের দেশে জাতীয় নির্বাচন হয় আবার শীতকাল এলেই সবুজ শ্যামল বাংলার গাছেরা পাতা ঝরিয়ে হয় নিরাভরণ। বহিরাবরণ ঝেড়ে ফেলে স্বরূপে প্রকাশিত হয় অধিকাংশ সুন্দর বৃক্ষরাজি। একই কায়দায় শীতের সময় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আমাদের নষ্ট, ভ্রষ্ট, অর্থ ও ক্ষমতালোভী, ছদ্মবেশী, বেঈমান রাজনীতিকগণ আস্তে আস্তে একটার পর একটা মেকি পোশাক খুলে নিরাভরণ হন ক্যাবারের ড্যান্সাদের মত।
চেতনা ব্যবসায়ী, ভণ্ড, ভ্রষ্ট, পোশাকি, অর্থ ও ক্ষমতালোভী, বেঈমান রাজনীতিক সবার কথা বলতে গেলে লেখার কলেবর একটা বইতে রূপান্তরিত হতে পারে তাই একজন তথাকথিত শীর্ষ ব্যক্তিকে নিয়েই আমার দেওয়া উপমাগুলোর সত্যতা খুঁজার চেষ্টা করা যেতে পারে। ডক্টর কামাল হোসেন নামের রাজনীতিকের জীবনের কিছু অংশের ব্যবচ্ছেদ করে দেখা যাক কী পাওয়া যায় তাতে।
ড. কামাল এদেশের এমন একজন ভণ্ড নক্ষত্র, যার নিজের রাজনৈতিক আলো নেই, যিনি আলোকিত হয়েছেন অপরের আলোয়। নিজস্ব কোনো আলো তাঁর কাছ থেকে কখনোই বিচ্ছুরিত হয় নি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর উদারতায় তাঁরই ছেড়ে দেওয়া আসনে ১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালে। সেই তিনিই বলেন, এই সরকার অংশগ্রহণমূলক সরকার না, অনির্বাচিত সরকার। মন্ত্রীও হন বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার একাধিক মন্ত্রণালয়ের। আইন মন্ত্রী থাকার সময় পদাধিকার বলে উনি সংবিধান প্রণয়ন কমটির সভাপতি ছিলেন, তাই সংবিধান বিশেষজ্ঞ!
তিনি মুখে মুখে মুক্তিযুদ্ধ আর স্বাধীনতার কথা বললেও মনে প্রাণে প্রায় ষোলআনাই পাকিস্তানি। টাকার লোভে, খ্যাতির লোভে পাকিস্তানি এজেন্ট হয়ে কাজ করেছেন সারাজীবন। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পরেও তার আচরণ ছিল খুব সন্দেহজনক, যা বিখ্যাত সাংবাদিক আব্দুল গাফফার চৌধুরী তাঁর অনেক লেখায় উল্লেখ করেছেন। আমরা সে দিকে না গিয়ে সাম্প্রতিক ও অতীত কিছু ঘটনার দিকে দৃষ্টি দিতে পারি। হালের যুক্তফ্রন্ট করার আলোচনার শুরুতে তিনি বলেছেন, জামায়াতের সঙ্গে জোট থাকলে তিনি বিএনপি’র সঙ্গে জোট করবেন না। আসলে এটা কী টাকার জন্য বারগেনিং না অন্য কিছু! গত দুই দিন আগে জামাত ইস্যুতে তাঁর সুর উল্টে কিছুটা ফিকে হয়ে গেছে।
ড. কামাল হোসেনের মেয়ে ব্যারিস্টার সারা হোসেন মানবাধিকার সংগঠনের নামের আড়ালে নিজের ইহুদী স্বামীর সঙ্গে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে লবিস্টের কাজ করেছেন, তাও জামায়াতের পক্ষে, মানবতাবিরোধীদের শাস্তি মওকুফের জন্য। এটা কি ড. কামাল হোসেন জানেন না? কেউ কি তা বিশ্বাস করবেন? আসল কথা হচ্ছে টাকা, তাও মোটা অঙ্কের টাকা। জামায়াত যে নিজেকে ইহুদী-নাসারা বিরোধী বলে জাহির করে, তাও চরম মিথ্যাচার তার প্রমাণ ব্যারিস্টার সারা হোসেনের ইহুদী স্বামীকে তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য লবিস্ট হিসেবে নিয়োগ।
পাকিস্তানপন্থী ডক্টর কামাল হোসেনের পাকিস্তানের এজেন্ট হয়ে কাজ করার আরও অনেক তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায় তাঁর অতীত ঘাটলে।
১। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সা`দত হুসাইন বলেছেন, ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে, বিশেষ করে চরমপত্র অনুষ্ঠান থেকে ড. কামালকে তীব্র সমালোচনা বা প্রায় গালাগালি করে নানাবিধ প্রচার করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর পাশে ড. কামালকে কেমন যেন বেখাপ্পা মনে হচ্ছিল। তবুও বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্ত। এনিয়ে নিজের মনে চুপিসারে প্রশ্ন তোলার উপরও সে দিনের সে পরিবেশে কোথায় যেন একটা মানসিক নিষেধাজ্ঞা ছিল।’
২। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং বঙ্গবন্ধুর সরকারের তথ্য, কৃষি ও যোগাযোগ মন্ত্রী শেখ আবদুল আজিজ তার লেখা বইয়ে বলেছেন, ‘... আমরা মন্ত্রিবর্গ, ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম সাহেব ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন সাহেবের নেতৃত্বে ১০ জানুয়ারি সকালে ঢাকা বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে অভ্যর্থনা জানাই। রমনা ময়দানের জনসভাস্থলে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার জন্য সকাল থেকেই মানুষের ঢল নেমেছিল।
আমরা মন্ত্রীরা জনসভার মঞ্চে উঠলাম। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ড. কামাল হোসেনও মঞ্চে উঠলেন। কামাল হোসেন মঞ্চে দাঁড়ানোর কারণে জনতা প্রতিবাদ জানায়। সে সময় বঙ্গবন্ধু আমাকে বললেন, `কামাল সম্পর্কে জনতাকে কি বলবো`? আমি তাকে বললাম, `তুমি যেটা ভালো মনে করো সেটাই বলো`।
বঙ্গবন্ধু বললেন, `ড. কামাল হোসেন আমার সঙ্গে জেলে ছিল`। আমি উত্তরে বলেছিলাম, `তাই বলো।’ বঙ্গবন্ধু বিক্ষিপ্ত জনতাকে বললেন, `আপনারা গোলমাল করবেন না। কামাল হোসেন আমার সঙ্গে জেলে ছিল।’
৩। সাবেক রাষ্ট্রদূত কামরুদ্দীন আহমদ তাঁর বইতে লিখেছেন, ‘... ঢাকায় যেদিন মুজিব ফিরে এলেন তার প্রথম কর্তব্য কাজ মনে হলো ড. কামাল হোসেনকে বাংলাদেশের বিরোধিতার অভিযোগ ও মুক্তি বাহিনীর সন্দেহ থেকে মুক্ত করা। যা তিনি প্রথম দিনকার জনসভায় বিচক্ষণতার সঙ্গেই করতে সক্ষম হয়েছিলেন।’
৪। ‘... শোনা যায়, কিসিঞ্জার চীন সফরে যাওয়ার পথে পাকিস্তানে বন্দী তার অন্যতম উপদেষ্টা ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। আদৌ বলেছিলেন কি? বলে থাকলে তার বিষয়বস্তু কি ছিল তাও জানা দরকার। ড. কামাল হোসেন এখনো জীবিত আছেন। তিনি এ ব্যাপারে আলোকপাত করলে আমাদের সমকালীন ইতিহাসের ঘাটতি কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে।’ অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহর লেখা বই থেকে নেওয়া তথ্য।
৫। সাংবাদিক জাফর ওয়াজেদ তাঁর এক লেখায় বলেন, ‘Late Maj. Gen. A. O. Mitha (who was the ‘Father of SSG’- Special Services Group) of Pak Army. তার স্মৃতি কথা ❝Unlikely Beginnings❞ এ ডক্টর কামাল হোসেন সম্পর্কে লিখেছেন— ❝On 28 March, Aman told me that he had received a message from his brother-in-law Kamal Hussain, who had disappeared on 25 March with all of Mujib’s chief lieutenants. Kamal had not gone to India with the rest of the crowed; he wanted to be taken into custody, as he was worried that his life was in danger. I collected him from the home of one of his relations and put him in the divisional HQ Mess under guard. He was flown to West Pakistan next day. When I returned to West Pakistan, I used to visit him in Haripur Jail at least once a month because he was Aman’s brother-in-law and Aman was a good friend of mine. Kamal, I did not like, in fact I despised him after the meeting I have described at a dinner at Aman’s house. Despite all his and Rehman Sobhan’s rhetoric, neither of them sheds blood, and Kamal actually asked for sanctuary from those whom he considered his enemies. Later, when Mujib was assassinated, he and Sobhan repeated their performance; Kamal disappeared to the UK and Sobhan to the USA’.
৬। রইসউদ্দিন আরিফ তাঁর রাজনীতি, হত্যা ও বিভ্রান্ত জাতি বইতে বলেন, ‘... আপনাদের স্মরণ আছে কিনা জানিনা, `৭১-এ যুদ্ধকালীন সময়ে পুরো ৯ মাস টিক্কা-নিয়াজী-ইয়াহিয়া-ভুট্টো-মোনায়েম খাঁর সাথে সাথে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার দালাল হিসেবে কামাল হোসেনের নামটিও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র হতে ঘৃণাভরে উচ্চারিত হয়েছে। `স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র` থেকে এম আর আখতার মুকুল `চরম পত্রে`র ভাষায় `পাকিস্তানি জামাই কামাইল্লা` কে নিয়ে তিনটি চরমপত্র পাঠ করেছিলেন। এ ছাড়াও `৭০-এর নির্বাচনের পর শমসের নগর পরিত্যক্ত বিমান বন্দরে হেলিকপ্টারে বসে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার সাথে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগও রয়েছে কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে। ’
যাদের সঙ্গে মিলে মিশে ড. কামাল হোসেন ইদানীং ‘যুক্তফ্রন্ট’ করার চেষ্টা করছেন তাঁদের কয়েকজনের অতীত একটু জেনে নেওয়া যাক। সুজনের কর্তাদের বাসায় হয় ‘যুক্তফ্রন্ট’ গঠন পরিকল্পনা শুরুর দিকের অন্যতম বৈঠক। সুজন সভাপতি হাফিজ সাহেব হচ্ছেন আতাউর রহমান খান আর ‘লুকিং ফর শত্রুজ’ খ্যাত বাবর সাহেবের আত্মীয়। দৈনিক বাংলার খবরে বলা হয় যে, ১৯৭৬ এর ২৩ জানুয়ারি, বঙ্গভবনে জিয়ার উপস্থিতিতে স্বাধীনতা বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ভবিষ্যৎ রাজনীতি সুসংহত করার জন্য এক আলোচনা সভায় মিলিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত নেতৃবৃন্দের মাঝে উল্লেখযোগ্য যারা ছিলেন তাঁরা হলেন-আতাউর রহমান খান, আবদুস সবুর খান, ড. আলীম আল রাজী, অলি আহাদ, কাজী জাফর আহমদ, সৈয়দ আজীজুল হক (নান্না মিয়া), মাওলানা সিদ্দিক আহমদ, মাওলানা আবদুর রহীম, মিসেস আমেনা বেগম। এখানে একদার কমরেড, পরবর্তীতে হেফাজতী কাজী জাফর ছাড়া কেউ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। হালের বিএনপি’র মহাসচিব পিতা চখা মিয়া ছিল কুখ্যাত কোলাবরেটর, আর বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রিজভীর বাবা ছিল ১৯৭১ সালে রাইফেলধারী রাজাকার। এদের সাথেই ইদানীং তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সৈনিক ড. কামাল হোসেনের উঠাবসা।
ড. কামাল হোসেন আর তার সাঙ্গপাঙ্গরা কিছুদিন আগে বিচারপতি সিনহার মাধ্যমে ‘ফতোয়া’ দিয়েছিলেন যে, ১৯৭২ সালে তার নেতৃত্বে তৈরি করা সংবিধান ভুল! তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সিনহার ঘাড়ে ভর করে ‘জুডিশিয়াল ক্যু’ করতে ব্যর্থ হয়ে ইদানীং তিনি হুংকার ছাড়ছেন, আগামীতে বিচারপতি সিনহার উপর করা অবিচারের বা খারাপ ব্যবহারের বিচার করার। বিচারপতিগণ যখন কোনো মামলার রায়ের ব্যাপারে সন্দিহান থাকেন তখন তাঁরা এমিকাস কিউরি নিয়োগ দেন। আসলে এমিকাস কিউরি নিয়োগ করা মামলার রায়ে থাকে এমিকাস কিউরিদের মারাত্মক প্রভাব। আসিয়ান সিটির এমডি নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া উত্তরায় বাড়ি কিনে দিয়েছিলেন কোনো প্রধান বিচারপতিকে, মামলার রায় নিজের পক্ষে আনার জন্য? কত টাকা দিয়ে বাড়ি কিনে দিয়েছিলেন? সে খবর কি ড. কামাল হোসেন জানেন না? নাকি সব টাকার খেলা?
লেখক: উন্নয়ন কর্মী ও কলামিস্ট
Email: arefinbhai59@gmail.com
তথ্যঋণঃ বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল, সাংবাদিক জাফর ওয়াজেদ, রেজাউল করিম, নজরুল ইসলাম ভুঁইয়ার ড্রাইভার নিজাম।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।