নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫৯ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
বড় ওষুধ কোম্পানিগুলো বছরে প্রায় ৩৮০ কোটি ডলার কর ফাঁকি দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফামের ‘প্রেসক্রিপশন ফর পোভার্টি’ প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো বিশ্বের ১৬টি দেশে বিপুল পরিমাণ কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
অক্সফামের তথ্য অনুযায়ী, জায়ান্ট ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজার, জনসন অ্যান্ড জনসন, অ্যাবোট ও মার্ক অ্যান্ড কোম্পানি উন্নয়নশীল দেশগুলোয় প্রতি বছর ১১ কোটি ২০ লাখ ডলার কর ফাঁকি দিয়ে আসছে। এসব দেশের মধ্যে চীন ও ভারতও রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওষুধ কোম্পানিগুলো আটটি উন্নত অর্থনীতিতে গড়ে ৭ শতাংশ এবং সাতটি উন্নয়নশীল দেশে গড়ে ৫ শতাংশ মুনাফা করেছে। অথচ বিশ্বব্যাপী, এসব করপোরেশন বার্ষিক ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বৈশ্বিক মুনাফার কথা জানিয়েছে। তাহলে তাদের উচ্চ মুনাফা কোথায় হচ্ছে এ বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিম্ন বা কোনো করপোরেট কর নেই এমন চারটি দেশে এসব ওষুধ কোম্পানি ৩১ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করছে। কোম্পানিগুলোর মুনাফার তথ্য হয় বিস্ময়কর কাকতালীয় ঘটনা নয়তো হিসাববিজ্ঞানের চাল ব্যবহার করে ইচ্ছাকৃতভাবে করস্বর্গগুলোয় মুনাফা স্থানান্তর করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে অক্সফাম।
শুধু কর ফাঁকি নয়, জায়ান্ট ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে আরও। কোম্পানিগুলোর জীবন রক্ষাকারী ওষুধের উচ্চ মূল্য ধার্য করছে। কিন্তু গবেষণা ও উন্নয়নের (আরঅ্যান্ডডি) তুলনায় শেয়ারহোল্ডার ও নির্বাহীদের পেছনেই বেশি ব্যয় করছে।
অক্সফামের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৬-১৫ সাল পর্যন্ত কোম্পানিগুলো ১ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলার আয়ের মধ্যে ৩৪ হাজার ১৪০ কোটি ডলার কেবল শেয়ার পুনঃক্রয় ও লভ্যাংশ প্রদানের পেছনে ব্যয় করেছে। আর এ সময়ের মধ্যে আরঅ্যান্ডডিতে ব্যয় করেছে মাত্র ২৫ হাজার ৯৪০ কোটি ডলার। অথচ আরঅ্যান্ডডির ব্যয় করমুক্ত। এমনকি তাদের আরঅ্যান্ডডির ব্যয় বিপণন ব্যয়ের চেয়েও কম।
২০১৩ সালে জনসন অ্যান্ড জনসন গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে ৮২০ কোটি এবং বিক্রয় ও বিপণনে ১ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে। অর্থাৎ তাঁরা আরঅ্যান্ডডির দ্বিগুণের বেশি বিক্রয় ও বিপণনে ব্যয় করেছে। ওই একই সময়ে ফাইজার আরঅ্যান্ডডিতে ৬৬০ কোটি ও বিপণনে ১ হাজার ১৪০ কোটি ডলার এবং মার্ক যথাক্রমে ৭৫০ কোটি ও ৯৫০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে।
জায়ান্ট ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর কর ফাঁকি ও আরঅ্যান্ডডি খাতে কম ব্যয়ের তথ্য সামনে আসার পর ইতিমধ্যেই তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তবে কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কোনো অবৈধতার অভিযোগ আনা হবে না বলে জানিয়েছে অক্সফাম।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ
মন্তব্য করুন
রিজার্ভ চুরি বাংলাদেশ ব্যাংক নিউইয়র্ক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
অর্থনৈতিক সংকট ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। বাজারে তীব্র ডলার সংকট। সবকিছু মিলিয়ে ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথমবারের মত বড় ধরনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার। অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠাটাই এখন সরকারের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়নের কিছু কম। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন বা আকুর মার্চ-এপ্রিল মাসে দায় মেটানোর পর মোট রিজার্ভ কমে ২ হাজার ৩৭৭ কোটি ডলার বা ২৩ দশমিক ৭৭ বিলিয়নে নেমে এসেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর হিসাব পদ্ধতিতে বিপিএম-৬ অনুযায়ী বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন এক হাজার ৮৩২ কোটি ডলার বা ১৮.৩২ বিলিয়ন। প্রকৃত বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলারের কিছু কম। আকুর বিল পরিশোধ করা হয়েছে ১৬৩ কোটি ডলার। এর ফলে রিজার্ভ কমে যায়।
আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দেওয়া নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ১১ কোটি মার্কিন ডলার। এ লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আইএমএফ ১ হাজার ৪৭৫ কোটি ডলারে নামিয়েছে। যদিও এখন তা ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের কম। প্রতি মাসে দেশের আমদানি দায় মেটাতে এখন প্রায় ৫০০ কোটি ডলার প্রয়োজন হচ্ছে। আর এই অবস্থায় অর্থনৈতিক সংকট ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠেছে।
এপ্রিলে মুদ্রাস্ফীতি আরও বেড়েছে এবং তা ১০ শতাংশ ছুঁইছুঁই। এর মধ্যে খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশ অতিক্রম করছে। এই অবস্থা উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। এছাড়া বাজারে ডলারের দাম এ লাফে ৭ টাকা বাড়ানোর ফলে এখন ডলার সংকট দেখা দিয়েছে। ডলারের জন্য হাহাকার ব্যাংকগুলো এলসি খুলতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে আমদানির ক্ষেত্রে। এই রকম অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করতে গিয়ে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে সরকারকে এক ধরনের কৃচ্ছতা সাধন এবং সংকোচন নীতি অনুসরণ করতে হচ্ছে। তবে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য তারা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেছেন যে ডলারের মূল্য ৭ টাকা বৃদ্ধির ফলে এখন প্রবাসী আয় বাড়বে। এই মাসে প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে তারা আশা করছেন। তাছাড়া রপ্তানি আয় বৃদ্ধির ব্যাপারেও তারা আশাবাদী।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, প্রধানমন্ত্রী নিজে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়টি বিবেচনা করছেন এবং সেই কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক বৃদ্ধির একটি বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে। যে সমস্ত দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বেশি বাণিজ্য রয়েছে, যেমন- ভারত, চীন; সেগুলোতে ডলারের পরিবর্তে সে দেশীয় মুদ্রায় বাণিজ্য করার বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা চালানো হচ্ছে। আভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির জন্য সরকার নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, ২০২৬ সাল নাগাদ বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে অর্থনৈতিক সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। তবে সরকার মনে করছে অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রস্তুতি চলছে, ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং এ ধরনের ব্যবস্থাগুলোর সুফল আগামী অর্থবছরে পাওয়া যাবে।
ডলার বাংলাদেশ ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার বাংলাদেশ আইএমএফ রিজার্ভ
মন্তব্য করুন
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কোমল পানীয় বা কার্বোনেটেড বেভারেজের বিক্রি থেকে প্রাপ্ত আয়ের ওপর কর (টার্নওভার ট্যাক্স) ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এই হার চলতি অর্থবছরের বাজেটেও প্রস্তাব করেছিল সংস্থাটি। পরে কোম্পানিগুলোর দাবিতে এনবিআর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। এর আগে এই করহার ছিল শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বিষয়টির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কার্বোনেটেড বেভারেজের ওপর ৫ শতাংশ করহার করার পরিকল্পনা নিচ্ছে এনবিআর। যদিও চলতি অর্থবছরেও এই প্রস্তাব ছিল আয়কর বিভাগের। পরে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। তবে আগামী অর্থবছরে এই করহার ৫ শতাংশ করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রী সবুজ সংকেতও দিয়েছেন। অর্থাৎ রোববার এনবিআরের সঙ্গে বৈঠকে এই করহারের বিষয়ে সায় দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তবে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বাজেটের সব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর বাংলাদেশের পানীয় শিল্পের প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে। কোমল পানীয়ের খাত থেকে বর্তমানে জাতীয় কোষাগারে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা আসে। প্রস্তাবিত টার্নওভার কর বেড়ে যাওয়ার সরাসরি ফলাফল হিসেবে এটি ব্যাপকভাবে কমে যাবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
অর্থনৈতিক সংকট ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। বাজারে তীব্র ডলার সংকট। সবকিছু মিলিয়ে ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথমবারের মত বড় ধরনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার। অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠাটাই এখন সরকারের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কোমল পানীয় বা কার্বোনেটেড বেভারেজের বিক্রি থেকে প্রাপ্ত আয়ের ওপর কর (টার্নওভার ট্যাক্স) ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই হার চলতি অর্থবছরের বাজেটেও প্রস্তাব করেছিল সংস্থাটি। পরে কোম্পানিগুলোর দাবিতে এনবিআর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। এর আগে এই করহার ছিল শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ।