ইনসাইড পলিটিক্স

নিজের দলের গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করলেন ড. কামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮


Thumbnail

একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে গঠিত নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় নেতা হিসেবে জোটের অন্যতম রাজনৈতিক দল গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে সবাই মেনে নিয়েছেন। স্বতন্ত্র রাজনৈতিক দল হিসেবে গণফোরামের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রে কিছু লক্ষ্য, নীতি ও আদর্শ লিপিবদ্ধ হয়েছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, গণফোরাম যাদের সঙ্গে মিলে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া গঠন করেছে সেই দলগুলোর নীতি-আদর্শের সঙ্গে গণফোরামের নীতি-আদর্শ সাংঘর্ষিক।

গণফোরামের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র ভালোভাবে পর্যালোচনা করে দেখা যাক। গণফোরামের ঘোষণাপত্রের ভূমিকায় বলা হয়েছে, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধুমাত্র আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণা দানকারী নেতাই নন, তিনি এ জাতির জনক হিসবেও দেশে বিদেশে নন্দিত।’ কিন্তু জাতীয় ঐক্যের অন্যতম প্রধান দল বিএনপি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক কিংবা জাতির পিতা – কোনোটাই মানে না। এছাড়া নিবন্ধন বাতিল হওয়া দল জামায়াতে ইসলামীও বেনামে এই জোটে সক্রিয় আছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় অবিশ্বাসী এই দলটি জাতির পিতা ও স্বাধীনতার ঘোষক প্রশ্নে কী মনোভাব পোষণ করে তা সর্বজনবিদিত।

গণফোরামের ঘোষণাপত্রের ভূমিকায় আরও বলা হয়েছে, ‘এই আশা আকাঙ্ক্ষা পরিপূর্ণভাবে বিবৃত ১৯৭২ সালের সংবিধানে। সাম্প্রদায়িকতার চির অবসান হবে এবং সকল সাম্প্রদায়িক বৈষম্য দূরীভূত হবে।’

কিন্তু জোটের অন্যতম প্রধান দল বিএনপি ’৭২ এর সংবিধানের বিরোধী। নিজেকে ’৭২ এর সংবিধানের সমর্থক দাবি করা ড. কামাল হোসেন কীভাবে বিএনপির সঙ্গে জোট করতে পারেন তা রাজনৈতিক মহলের বড় একটি প্রশ্ন।

গণফোরামের ঘোষণাপত্রের ‘লক্ষ্য, আদর্শ ও উদ্দেশ্য’ শিরোনামের প্রথম অধ্যায়ের ‘ঘ ধারায়’ বলা হয়েছে, গণফোরামের লক্ষ্য ‘অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনাকে দৃঢ়মূল ও বিকশিত করা এবং দেশের পাহাড়ি, আদিবাসী ও অন্যান্য অবহেলিত সম্প্রদায়সমূহের সার্বিক বিকাশের অধিকার সুনিশ্চিত করা।’

কিন্তু গণফোরামের নতুন মিত্র জাতীয় ঐক্যের অন্যতম শরিক দল বিএনপি বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করে না, দলটি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী।

এছাড়া প্রথম অধ্যায়ের ‘ণ ধারায়’ গণফোরামের লক্ষ্য হিসেবে বিবৃত হয়েছে, ‘সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তুলে আন্দোলন সংগ্রামের নিরবচ্ছিন্ন ধারায় সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে ঐ সংগ্রামকে অপ্রতিরোধ্য করে তুলে সর্বত্র অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি সু-প্রতিষ্ঠিত করা। ধর্মের নামে রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করা।’

কিন্তু জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খেলাফত মজলিসসহ ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মতো উগ্রপন্থী ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেই ড. কামাল হোসেন জোট করেছেন যা তাদের ঘোষণাপত্রের বর্ণিত নীতি অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি সু-প্রতিষ্ঠিত করা এবং ধর্মের নামে রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করার একদমই বিপরীত।

‘বিচার বিভাগ ও আইন সংক্রান্ত’ শিরোনামে ঘোষণাপত্রের পঞ্চম অধ্যায়ের ‘জ ধারায়’ বলা হয়েছে, ‘সংবিধানের পঞ্চম ও অষ্টম সংশোধনী বাতিল ও ১৯৭২ সালের মূল সংবিধান পুনঃস্থাপন করা হবে।’

অথচ সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর ওপর ভিত্তি করেই বিএনপি প্রতিষ্ঠিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড জড়িত ব্যক্তিদের দায়মুক্তি দিতে এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে ১৯৭৯ সালের ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সামরিক সরকারের যাবতীয় কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দান করা হয়। পরবর্তীতে ২০১০ সালে সর্বোচ্চ আদালত যখন পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করেছে সেই রায়ের প্রতিবাদ করেছে বিএনপি। এই রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ও সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবীর লিভ টু আপিল করেছিলেন।

গণফোরামের ঘোষণাপত্রের ‘নির্বাচন’ শিরোনামের ষষ্ঠ অধ্যায়ের ‘খ ধারায়’ বলা হয়েছে, ‘যে সকল দল সশস্ত্র সন্ত্রাসী, নারী নির্যাতনকারী, কালো টাকার মালিক, ঋণখেলাপী ও দুর্নীতিবাজদের নির্বাচনে মনোনয়ন দেবে তাদের ঐ সকল অপরাধে লিপ্ত প্রার্থীদেরকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না। ধর্মকেও রাজনৈতিক প্রচারাভিযানে ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হবে।’

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করা অনেক নেতা জামায়াতে ইসলামী, এমনকি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত। এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার। এদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন নিজের সন্ত্রাসবিরোধী, নারী নির্যাতন বিরোধী নীতি কতটুকু রক্ষা করতে পারলেন তা একটি জরুরি প্রশ্ন। এছাড়া বিএনপিতে অনেক ঋণখেলাপী ও দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদও রয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তাঁর ছেলে তারেক জিয়া দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত। এমনকি এই দুই দুর্নীতিবাজ নেতাকে নির্বাচন করার সুযোগ দিতে বিএনপি তাদের গঠনতন্ত্রও সংশোধন করেছিল। এমন একটি দুর্নীতিবাজ দলের সঙ্গে আঁতাত করে ড. কামাল নিজ দলের ঘোষণাপত্রের নীতিবিরুদ্ধ কাজ করেছেন।

একই অধ্যায়ের ‘গ ধারায়’ বলা হয়েছে, ‘১৯৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদেরকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ আইনতঃ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে। বিশেষ ট্রাইব্যুনাল মারফত তাদের উপযুক্ত শাস্তিও বিধান করা হবে।’

বিএনপিতেও অনেক যুদ্ধাপরাধী রয়েছে। এছাড়া বেনামে নিবন্ধন বাতিল হওয়া দল জামায়াতে ইসলামীও ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। এদের সঙ্গেই জোটবদ্ধ হয়ে ড. কামাল আরেকবার তাঁর দলীয় নীতি ভঙ্গ করেছেন।

আবার ‘নির্বাচন’ অধ্যায়েরই ‘ড ধারায়’ বর্ণিত আছে, ‘দুইটির অধিক আসনে কোনো প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না মর্মে আইন করা হবে।’

কিন্তু ড. কামাল যাদের সঙ্গে জোট করলেন সেই বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সবসময় ৫টি আসনে নির্বাচন করে থাকেন। এক্ষেত্রে গণফোরামের মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে গেল তাদের রাজনৈতিক মিত্রের নীতি।

‘নারী সমাজের উন্নয়ন’ শিরোনামে সপ্তম অধ্যায়ের ‘খ ধারায়’ বলা হয়েছে, ‘সরকারি বেসরকারি সকল চাকুরীতে নারীর জন্য যোগ্যতার ভিত্তিতে শতকরা ৩০ ভাগ আসন সংরক্ষণ এবং তা অবিলম্বে পূরণের ব্যবস্থা করা হবে।’

অথচ বিসিএসসহ সকল সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি কোটা বাতিলের পক্ষে কথা বলেছেন।  শুধু সরকার বিরোধিতার খাতিরে ক্ষমতার লোভে স্বার্থান্ধ হয়ে কোটা প্রসঙ্গে ড. কামাল নিজের দলের ঘোষণাপত্রের বিরুদ্ধেই চলে গেছেন।

ঘোষণাপত্রের নবম অধ্যায়ের শিরোনাম হচ্ছে, ‘ধর্মকর্ম ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’। এই অধ্যায়ের ‘ক ধারায়’ বলা আছে, ‘ধর্ম নিয়ে কোনো বৈষম্যমূলক আচরণ থেকে রাষ্ট্র বিরত থাকবে।’ এছাড়া একই অধ্যায়ের ‘খ ধারায়’ বলা হয়েছে, ‘রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার বা ধর্মের নামে সন্ত্রাস বে-আইনি বলে বিবেচিত হবে।’

কিন্তু গণফোরাম জোট করেছে একাধিক ধর্মভিত্তিক উগ্রপন্থী দলের সঙ্গে। বিএনপিও রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহারের জন্য পরিচিত। তাই গণফোরাম ঘোষণাপত্রের ‘ক’ ও ‘খ’ ধারার যথাযথ প্রয়োগ যে এই দলগুলোর সঙ্গে থেকে করা সম্ভব না তা বলাই বাহুল্য।

এ তো গেলো কেবল ঘোষণাপত্রের কথা। গণফোরামের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড তাদের গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী। 

গণফোরামের গঠনতন্ত্রের ২ নং অনুচ্ছেদে দলটির লক্ষ্য, আদর্শ ও উদ্দেশ্য বর্ণিত হয়েছে। এই অনুচ্ছেদের ‘ত ধারায়’ বলা হয়েছে, গণফোরামের আদর্শ ও উদ্দেশ্য হবে ‘সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং আন্দোলন ও সংগ্রামের নিরবচ্ছিন্ন ধারায় সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে জনগণকে অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে পরিণত করা। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সর্ববিধ পন্থায় সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদকে নিরুৎসাহিত করা।’

এছাড়া একই অনুচ্ছেদের ‘প ধারায়’ বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা ও প্রসারে ভূমিকা রাখা। দেশপ্রেমিক, গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক এবং সামাজিক ন্যায়বিচার, প্রগতি ও উন্নয়নের ধারায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলির স্ব-স্ব অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে দেশ, জাতি ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে জাতীয় সমঝোতা ও ঐক্যের জন্য প্রয়াস অব্যাহত রাখা।’

কিন্তু গণফোরাম জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জোট করছে এমন কতগুলো উগ্রপন্থী ধর্মভিত্তিক দলের সঙ্গে যারা জঙ্গিবাদ ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সন্দেহভাজনদের তালিকায় রয়েছে। এছাড়া বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী রাজনীতির চর্চার কথা বলাই বাহুল্য। তাই বিএনপিসহ খেলাফত মজলিসের মতো আরও কয়েকটি বিতর্কিত দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নিজেদের গঠনতন্ত্রই লঙ্ঘন করলেন ড. কামাল হোসেন।

আবার গঠনতন্ত্রের ২ নং অনুচ্ছেদের ‘ফ ধারায়’ বলা হয়েছে, গণফোরামের উদ্দেশ্য ‘রাজনীতিকে অবৈধ অর্থ ও অস্ত্র মুক্ত করা, আদর্শ ও কর্মসূচিমুখী এবং গ্রামোন্নয়নমুখী ও গণমুখী করা।’

কিন্তু বিএনপির অনেক রাজনীতিবিদই অবৈধ অর্থ ও অস্ত্রের মালিক। এছাড়া বিএনপির প্রধান দুই নেতা দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ও দণ্ডিত। এমন দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে ড. কামাল এই ক্ষেত্রেও দলের গঠনতন্ত্র ভঙ্গ করলেন।

গণফোরামের ৮ নং অনুচ্ছেদের শিরোনাম হচ্ছে ‘দলের শৃঙ্খলা’। এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘দলের লক্ষ্য, আদর্শ, নীতি, গঠনতন্ত্র, কর্মসূচী বা দলের স্বার্থের পরিপন্থী এবং দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করলে তা শৃঙ্খলা ভঙ্গ হিসেবে গণ্য হবে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট শাখা শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সুপারিশ করতে পারবে। তবে সেই সুপারিশের পূর্বে সংশ্লিষ্ট সদস্যকে কারণ দর্শানো এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। কেন্দ্রীয় কমিটি শুনানি গ্রহণের পর প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।’

কিন্তু উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়ে গেছে, ড. কামাল জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া গঠনের মধ্য দিয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক উগ্রপন্থী দলের সঙ্গে জোট করে নিজ দলের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রের অনেকগুলো ধারা লঙ্ঘন করেছেন। আমরা সবাই জানি, একটি দলের ঘোষণাপত্র হলো সেই দলের নীতি আদর্শের দলিল। সেই দলিলই লঙ্ঘন করেছেন ড. কামাল যার ফলে দলীয় গঠনতন্ত্রের ৮ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। কিন্তু গণফোরাম প্রতিষ্ঠাতা ও দলটির দীর্ঘ ২৬ বছরের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে কে?


বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ  



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

২০৪ নেতাকে বহিষ্কার করল বিএনপি

প্রকাশ: ০২:৫৩ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।

এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।

বর্তমান সরকার নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।

দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত জন চেয়ারম্যান পদে, জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।

দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জুন।


বহিষ্কার   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা

প্রকাশ: ১০:৪১ এএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।

কারণ, যুগপতের সব দল জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।

বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।

নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।


লিয়াজোঁ   কমিটি   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: সেদিন কী বলেছিলেন বিএনপির নেতারা

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। 

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের চারদিন পর ২১ মে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদের অধিবেশন বসে। ওই অধিবেশন ছিল ৩৪ কার্যদিবসের। মোট ৪১ দিন অধিবেশন চলে। ২১ মে এর অধিবেশন শুরু হওয়ার পরই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিরোধী দলের নেতা আসাদুজ্জামান খান, আওয়ামী লীগ সভাপতির স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি উত্থাপন করেন এবং বঙ্গবন্ধুর বাসভবন শেখ হাসিনার কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য দাবি করেন। পয়েন্ট অফ অর্ডারে দাঁড়িয়ে আসাদুজ্জামান খানের এই বক্তব্যের পর শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে অনির্ধারিত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই অনির্ধারিত আলোচনায় বিএনপির অনেক নেতাই টিপ্পনি মূলক ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন। 

আওয়ামী লীগের নেতাদের পক্ষ থেকে সুধাংশু শেখর হালদার এসব বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করে দেওয়ার জন্য স্পিকারকে অনুরোধও জানিয়েছিলেন। এই সময় যে সমস্ত বিএনপির নেতারা পয়েন্ট অফ অর্ডারে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রেখেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শাহ আজিজুর রহমান। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা এখন রাজনীতিতে গুরুত্বহীন। তিনি এসে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোন কিছুই করতে পারবেন না।

শাহ আজিজ এটাও মন্তব্য করেছিলেন যে, বাংলাদেশের মানুষ আর কোনদিন বাকশালে ফিরে যাবে না। আওয়ামী লীগ আর বাংলাদেশে কোনোদিন জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে পারবে না। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে তিন বছরের শাসনামলেরও তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। 

এসময় বিএনপির আরেকজন সংসদ সদস্য তৎকালীন পাবনা-২ নির্বাচিত ডা. এম এ মতিন বলেছিলেন, শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বহীন। স্বাধীনতার পর শেখ মুজিব যা করেছেন তাঁর জন্য আওয়ামী লীগকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান জাতীয় সংসদে এই নেতা। 

যশোর-৯ থেকে নির্বাচিত তরিকুল ইসলামও ঐ অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নেন এবং বক্তব্য রাখেন। এই বক্তব্যে তিনি আওয়ামী লীগের সাড়ে তিন বছর শাসনের তীব্র সমালোচনা করেন এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য দাবি জানান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ঐতিহাসিকভাবে দিলীন হয়ে গেছে। কাজেই আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে আর রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া যায় না। তিনি শেখ হাসিনার বিচারও দাবি করেছিলেন। 

এই অনির্ধারিত আলোচনায় অংশগ্রহণ করে বিএনপির আরেক নেতা তৎকালীন ঢাকা-২৮ থেকে নির্বাচিত আব্দুল মতিন চৌধুরীও আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছিলেন। এই অনির্ধারিত আলোচনায় বিএনপির নেতা কে এম ওবায়দুর রহমান শেখ হাসিনাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছিলেন। তিনি যেন নতুন ষড়যন্ত্র না করেন সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে লক্ষ্য রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। পয়েন্ট অফ অর্ডারের এই আলোচনায় অবশ্য কোন রকমের সিদ্ধান্ত হয়নি। স্পিকার এর পর মূল আলোচনার জন্য দিনের কার্যসূচিতে ফিরে যান।

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০৯:১২ পিএম, ১৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ফারাক্কা দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, নতজানু সরকার বলেই দেশের জনগণের স্বার্থে প্রকৃতভাবে যে একটা স্ট্যান্ড ( অবস্থান) নেওয়া দরকার সেটি নিতে ব্যর্থ হয়েছে আওয়ামী সরকার।

তিনি বলেন, ফারাক্কা দিবস মনে করে দেয় জনগণের শক্তির কাছে বড় কোনো শক্তি নেই। গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য বহু রাজনৈতিক দল এক হয়ে লড়াই করছে, অনেকে প্রাণ দিয়েছে। বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজও নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে। নেতাকর্মীদের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।

২৮ অক্টোবরের পর তিন দিনের মধ্যে আমাদের ২৭ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এমন তথ্য জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এখনও সেই নিপীড়ন নির্যাতন চলছে। যারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করছেন তাদের সাজা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান সরকার দখলদার সরকার। তাদের একমাত্র কাজ হচ্ছে তাদের স্বার্থ আর প্রভুদের স্বার্থ রক্ষা করা। বিশেষ একটা দায়িত্ব নিয়ে এ সরকার ক্ষমতা দখল করে আছে। এটা নির্বাচিত নয় এরা নির্বাচন করে না। এরা জানে, নির্বাচন করলে তাদের একটা ভূমিধস পরাজয় হবে। বিভিন্ন কৌশলে নির্বাচন দেখিয়ে ক্ষমতায় টিকে আছে।

তিনি বলেন, যারা সরকারের গুণগান করে, তাদের উদ্দেশ্য হলো এ সরকার টিকে থাকলে তাদের লুণ্ঠন, পাচার অব্যাহত থাকবে। তারা বেনিফিশিয়ারি হবে। এমন একটি বেনিফিশিয়ারি গোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সরকারের একমাত্র কাজ হচ্ছে নিজেদের বিত্ত তৈরি করা ও অন্য দেশের স্বার্থ রক্ষা করা। তাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের দাবি নিজেদেরই আদায় করতে হবে। অন্য কেউ এসে করে দেবে না।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সহ-সভাপতি তানিয়া রব, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব আবু ইউসুফ সেলিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ প্রমুখ।

বিএনপি   মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   জাতীয় প্রেস ক্লাব  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে ভারত বিরোধিতার সাথে যুক্ত হচ্ছে মার্কিন বিরোধিতাও

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আবার ভারত বিরোধী অবস্থানে চলে গেছে। প্রথমে তারা ব্যক্তিগতভাবে, এখন প্রকাশ্যে দলগতভাবে ভারত বিরোধিতার নীতি গ্রহণ করেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিদিনই ভারতের সমালোচনা করেছেন। ভারতের বিভিন্ন নীতির বিপক্ষে বক্তব্য রাখছেন। 

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, দলগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলের মহাসচিব ভারত বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তবে ভারত বিরোধী অবস্থান করেই দলটি ক্ষান্ত হয়নি। দলের ভিতরে এখন মার্কিন বিরোধী প্রবণতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি এবং কৌশলের সমালোচনা করার কৌশলও বিএনপি গ্রহণ করেছে। 

বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা বলেছেন, তারা দলগত ভাবে এখন মার্কিন বিরোধিতা করবেন না। বিএনপির কিছু নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করবেন, মার্কিন নীতির বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখবেন এবং এই সমস্ত বক্তব্য দিয়ে জনমত যাচাইয়ের চেষ্টা করবেন। 

উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে বিএনপির যে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন তাতে তারা বলছে, ভারতের কারণেই প্রভাবিত হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের ব্যাপারে নীরব অবস্থান গ্রহণ করেছিল। তবে বিএনপির কোনো কোনো নেতার দাবি যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আসলে ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে বিরোধিতার নামে এক ধরনের অভিনয় করেছে। বিএনপিকে বোকা বানিয়েছে। 

বিএনপির একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ জানে যে বিএনপি যদি নির্বাচনে আসে তাহলে সেই নির্বাচনে তাদের পক্ষে জয়লাভ করা কঠিন হবে। আর এ কারণে বিএনপি যেন নির্বাচন থেকে দূরে থাকে থাকে এজন্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিনয় করছে। 

সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির নেতা এবং সাবেক আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি সরাসরি ভাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসকে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন যে, পিটার ডি হাস ভারতের এজেন্ট হয়ে বিএনপির সাথে অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনয় এত ভাল ছিল যে বিএনপির নেতারা নাকি সেটা বুঝতে পারেননি। তাঁর এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে বিএনপি থেকে কোন প্রতিবাদ করা হয়নি। 

বিএনপির আরেকজন নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ডোনাল্ড লু’র বাংলাদেশ সফর নিয়ে কোন কিছু যায় আসে না। বিএনপির একদা চীন পন্থী নেতা নজরুল ইসলাম খানও ডোনাল্ড লু’র বাংলাদেশ সফর নিয়ে বিএনপির কোনো আগ্রহ নেই বলে মন্তব্য করেছেন। 

বিএনপির নীতি নির্ধারক মহল মনে করছেন, নির্বাচনের আগে বিশেষ করে ২৮ অক্টোবরের পর ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এককাট্টা হয়ে যায়। ভারতের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ জড়িত রয়েছে। আর এই স্বার্থের কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কথা মতো সব কিছু করছে। এ বারের ডোনাল্ড লু’র সফর সেই ইঙ্গিত দেয় বলেও বিএনপির নেতারা স্বীকার করেছেন।

প্রশ্ন উঠেছে যে, এই বিশ্বায়নের যুগে বিএনপি যদি ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুটি প্রভাবশালী দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তাহলে এই দলটি কীভাবে অস্তিত্ব রক্ষা করবে। বিএনপির নেতারা বলছেন, তারা বাংলাদেশের শক্তিতে বিশ্বাসী। বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদীতে বিশ্বাসী। তবে বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন যে, বিএনপি নেতাদের এই ভারত বিরোধী এবং মার্কিন বিরোধী অবস্থানের সঙ্গে দলের অনেক নেতাই একমত নন। বিশেষ করে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান মনে করেন যে, ভারতের সঙ্গে প্রকাশ্য বিরোধিতায় জড়ানো দলের জন্যই ক্ষতিকর হবে। তবে ড. মঈন খান চেয়ে এখন দলে ভেতর যারা ভারত বিরোধী তারাই ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছেন।

বিএনপি   ভারত বিরোধী   মার্কিন বিরোধী   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন