নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৮
আওয়ামী লীগকে বোকা বানানোর কৌশল নিয়েই এগুচ্ছে বিএনপি। আওয়ামী লীগকে বিভ্রান্ত করে নির্বাচনের মাঠে সুবিধা নেওয়ার পরিকল্পনা করেই এগুচ্ছে দলটি। এর মাধ্যমে নির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ প্রতিপক্ষকে দুর্বল ভাববে, পূর্ণশক্তি প্রয়োগ করবে না, বিভক্ত থাকবে বলেই মনে করছে বিএনপি। এজন্য বিএনপি মুখে এক আর কাজ অন্য করার নীতি নিয়েই চলছে। যেমন-
১. বিএনপি শুরু থেকে বলে আসছিলো যে, নির্বাচনকালীন সরকার বর্তমান সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং বেগম জিয়ার মুক্তি ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না। বিএনপির এই ‘বাহ্যিক অনড়’ অবস্থানের কারণে আওয়ামী লীগের একটি অংশ মনে করেছিল যে বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যাবে না। আওয়ামী লীগের অনেকেই ভাবতে শুরু করেছিল যে দলের মনোনয়ন পেলেই জয় অনিবার্য। এ কারণেই আওয়ামী লীগের উপ-দলীয় কোন্দল তীব্র হয়েছিল। অনেক প্রার্থী এলাকায় মনোযোগ দেননি। পরে, নাটকীয়ভাবে কোনো শর্ত ছাড়াই বিএনপি নির্বাচনে যায়।
২. জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে বিএনপি ধারণা দিয়েছিল যে তারা জামাত থেকে নিজেদের আলাদা করছে। এতে আওয়ামী লীগের অনেকেরই ধারণা হয়েছিল বিএনপি জামাত আলাদা হলে জামাত স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করবে। এতে লাভ হবে আওয়ামী লীগের। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল জামাতকে ২৫ আসন দিয়ে বিএনপি তাকে দুই জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম দলের স্বীকৃতি দিল।
৩. বিএনপি সবাইকে ধারণা দিয়েছিল, ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে তারা নির্বাচন করবে। তাকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক করা হয়েছিল। এমন ধারণা দেওয়া হয়েছিল যে, ঐক্যফ্রন্ট জিতলে ড. কামাল হোসেনই হবেন প্রধানমন্ত্রী। এতে আওয়ামী লীগের অনেকের ধারণা হয়েছিল, ড. কামাল হোসেন নেতৃত্বে থাকলে কট্টর আওয়ামী বিরোধীরা বিএনপি থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেবে। এতে বিএনপির দেওলিয়া দেখছিল আওয়ামী লীগের অনেক নেতারা। কিন্তু নির্বাচনের মাঠে দেখা যাচ্ছে, ড. কামাল কিছু নন সব ক্ষমতা বিএনপি মহাসচিবের। এখানেও আওয়ামী লীগকে বোকাই বানালো বিএনপি।
৪. ৬৯৬ জনের মনোনয়ন দিয়ে আওয়ামী লীগ নয় সব মানুষের কাছে বিস্ময় ছড়িয়েছিল বিএনপি। আওয়ামী লীগ বলছিল, বিএনপির করুণ অবস্থার কথা। কিন্তু মনোনয়ন বাছাইয়ের সময় দেখা গেল, এই সিদ্ধান্ত কীভাবে আওয়ামী লীগকে বোকা বানিয়েছে। ৭ আসনে প্রার্থী নেই বলা হচ্ছে, কিন্তু বিএনপি বলছে, সবখানেই বিকল্প ব্যবস্থা রেখেছে দলটি।
৫. এখন বিএনপি পরিকল্পিতভাবেই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে, পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না হওয়ায় নির্বাচন বর্জনেরও হুমকি দিচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন এটাও আওয়ামী লীগকে বোকা বানানোর এক কৌশল। এতে আওয়ামী লীগ মনে করবে বিএনপি হয়তো শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবে না। এজন্য এখন মাঠে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সিরিয়াসনেসের অভাব। প্রচারণার বদলে কি করে সে অপেক্ষায় আওয়ামী লীগের অনেকে। আওয়ামী লীগকে বোকা বানিয়ে নির্বাচনে তাদের বাড়তি সুবিধাটুকু নষ্ট করাই বিএনপির লক্ষ্য। এই কৌশল কি শেষ পর্যন্ত সফল হবে?
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।