ইনসাইড বাংলাদেশ

খালেদা জিয়ার নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২:২১ পিএম, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮


Thumbnail

খালেদা জিয়ার নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা নিয়ে হাইকোর্টের বিভক্ত রায়ের পরে সাংবাদিকদের তিনি এই মন্তব্য করেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত। তিনি এখনো দণ্ড ভোগ করছেন। দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্তদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে আপিল বিভাগের নির্দেশনা রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী সব কিছু হচ্ছে এবং হবে। সংবিধান হলো দেশের সর্বোচ্চ আইন। এখন তৃতীয় বেঞ্চ খালেদা প্রার্থিতার আদেন অবৈধ ঘোষণা করবে বলে আমি আশা প্রকাশ করছি। খালেদা দুর্নীতির মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় তার নির্বাচনে সুযোগ নেই। খালেদার আইনজীবীরা বলছেন, তার প্রার্থিতা ভিন্ন আইনে বাতিল করা হয়েছে। যে আইনেই বাতিল করা হোক না কেন তার জন্য ভিন্ন আইনও প্রযোজ্য হবে। বিষয়টি বিচারাধিন বলে বেশি মন্তব্য করব না। তবে তার প্রার্থিতা বৈধ হওয়ার আইন নেই।’

প্রার্থিতা বাতিলে নির্বাচন কমিশেনের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে খালেদা জিয়ার রিট আবেদন শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ বিভক্ত রায় দেন। খালেদার এই রিটের আবেদন এখন প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টির জন্য ৩য় বেঞ্চ গঠনের জন্য নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়।

মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তার দায়েরকৃত রিট আবেদনে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানি করেন। এর আগে ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও ৭ আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিল করে দেয় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশন।

বাংলাইনসাইডার/এমএস/জেডএ

 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দিল্লি-লন্ডনে দেখা করতে চেয়েছিলেন জিয়া-খালেদা: শেখ হাসিনা

প্রকাশ: ০৫:১৬ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি যখন দিল্লিতে ছিলাম সেখানে গিয়ে জিয়াউর রহমান আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিল, তার স্ত্রীও দেখা করতে চেয়েছিল, আমি দেখা করিনি। লন্ডনে যখন তখনো দেখা করতে চেয়েছিল, আমরা দেখা করিনি। আমি যখন এলাম ৩২ নম্বরে ঢুকতে দেবে না, উল্টো বাড়ি-গাড়ি সাধবে, সেটা তো আমার কাছে গ্রহণযোগ্য না।

শুক্রবার (১৭ মে) গণভবনে ৪৪ তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের নেতারা শুভেচ্ছা জানাতে গেলে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ সিনিয়র নেতারা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে আসার পর ৩২ নম্বরে আমরা মিলাদ পড়তে চাইলাম, আমাকে ঢুকতে দেয়নি জিয়াউর রহমান। উল্টো বলেছিল বাড়ি দেবে, গাড়ি দেবে, সব দেবে। আমি রাজি হইনি। আমি বলেছিলাম তার কাছ থেকে কিছু নেব না। খুনির কাছ থেকে আমি কিছু নিতে পারি না।

দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরার স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেদিন (১৯৮১ সালের ১৭ মে) ফিরে এসেছিলাম। এতবড় দল পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা ছিল না। ছাত্রলীগ করার সময় নেতা হওয়ার চেষ্টা করিনি। দলের প্রয়োজনে যে দায়িত্ব দিয়েছে সেটাই পালন করেছি। কিন্তু যখন এই দায়িত্ব পেলাম, এটা বড় দায়িত্ব।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, কী পেলাম না পেলাম সেই চিন্তা করিনি। ভবিষ্যৎ কী সেই চিন্তাও করি না। চিন্তা করি দেশের মানুষের ভবিষ্যতটা আরও সুন্দরভাবে গড়ে দিয়ে যাব, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আজ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে শক্তিশালী ও বড় সংগঠন। জনগণের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য দল। প্রতিবার চক্রান্ত হয়, সেটা মোকাবিলা করে বেরিয়ে আসেন জানিয়ে আগামীতেও ষড়যন্ত্র হবে বলে দলীয় নেতাদের সতর্ক করেন। সবাইকে সচেতন থাকার তাগিদ দেন তিনি।

নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মনে রাখবেন, একটা দল করি শুধু নেতা হওয়া না, মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম, কী দিতে পারলাম, কী দিয়ে গেলাম– এটাই রাজনীতিকের জীবনের বড় কথা। এই কথাটা মাথায় রাখতে পারলে দেশের মানুষের জন্য অনেক কিছুই করা যেতে পারে।

আর যেন যুদ্ধাপরাধী-খুনিরা বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ যারা করেছেন তারাই অপরাধী হয়ে গেল, যারা বিরোধিতা করেছিল, গণহত্যা করেছিল তারাই ক্ষমতায়– ওই অবস্থায় দেশে ফিরেছিলাম। আমার তো কিছুই ছিল না। একটা বিশ্বাস ছিল দেশের জনগণ ও আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীর ওপর। এরপর লড়াই-সংগ্রাম করে এইটুকু বলতে পারি পঞ্চমবারের মতো আওয়ামী লীগ ক্ষমতা এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, কারফিউ, প্রতি রাতে মার্শাল ল, দেশের মানুষের কোনো আশা নেই, শুধু হতাশা। এই হতাশ জাতিকে টেনে তোলা যায় না। তাদের মাঝে আশার আলো জাগাতে হয়, ভবিষ্যৎ দেখাতে হয়, উন্নত জীবনের চিত্র তুলে ধরতে হয়। তবেই মানুষকে নিয়ে কাজ করা যায়। আমরা সেটাই করার চেষ্টা করছি।

গণভবন   শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

শেখ হাসিনার সেরা ১০

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৮১ সালের এই দিনে তিনি প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে এসেছিলেন নানা প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে। ৪৩ বছরের এই রাজনৈতিক জীবনে তিনি সংগ্রাম করেছেন, আন্দোলন করেছেন, নির্যাতন ভোগ করেছেন এবং গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছেন। 

গত ৪৩ বছরে বাংলাদেশের রাজনীতির মূল ব্যক্তি হলেন তিনি। এই ৪৩ বছরে শেখ হাসিনার অর্জন অনেক। তবে মোটাদাগে তাঁর ১০ টি অর্জন তাকে ইতিহাসে অমর করে রাখবে বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। শেখ হাসিনার ৪৩ বছরের কর্মকাণ্ড থেকে বাংলা ইনসাইডার তাঁর সেরা ১০ টি সাফল্যকে তুলে ধরছে এই প্রতিবেদনে।

১. প্রচলিত আইনে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার: বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শেখ হাসিনার জন্য অনেক স্পর্শকাতর এবং আবেগপূর্ণ একটি বিষয় ছিল। এই বিচার বিশেষ ট্রাইব্যুনালে করার জন্য বিভিন্ন মহলের পরামর্শ ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা সেই পরামর্শ শোনেননি। বরং প্রচলিত আইনে দীর্ঘ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এ বিচার সম্পন্ন করার ধৈর্যের পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। এটি একজন রাজনৈতিক নেতার অনন্য অসাধারণ গুণ বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। কারণ এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ার কারণে ২০০১ সালে বিচার আবার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা ধৈর্য হারাননি। তিনি লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন। আর এই কারণেই
শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার তিনি সম্পন্ন করতে পেরেছেন। 

২. যুদ্ধাপরাধীদের বিচার: যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেখ হাসিনার আরেকটি সাহসী সিদ্ধান্ত। অনেকেই মনে করেন যে, শেখ হাসিনা যদি একটি সিদ্ধান্তের জন্য অমরত্ব পান সেটি হবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। এক প্রতিকূল পরিবেশে অবাস্তব অবস্থার মধ্যে তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করতে পেরেছিলেন। 

৩. ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন: ভারতের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন ছিল শেখ হাসিনার আরেকটি সাফল্য গাঁথা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান অনস্বীকার্য। আর এই অবদানের স্বীকৃতি দিতে বাংলাদেশে ভারতবিরোধী রাজনীতি অনেকেই অস্বীকার করেন। বিশেষ করে পঁচাত্তরের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতবিরোধিতা একটা স্পর্শকাতর বিষয় হিসেবে সামনে আসে। কিন্তু শেখ হাসিনা জনমত গঠন করে ভারতের সাথে সম্মানজনক একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করার ক্ষেত্রে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। 

৪. পার্বত্য শান্তি চুক্তি: পার্বত্য শান্তিচুক্তি শেখ হাসিনার আরেকটি সাফল্য। এর ফলে তিনি বাংলাদেশকে পার্বত্য অঞ্চলগুলোতে দীর্ঘদিনের যুদ্ধ পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করেন। 

৫. ব্যাপক উন্নয়ন, অবকাঠামো: শেখ হাসিনার ৪৩ বছর রাজনৈতিক জীবনে ২০ বছরের বেশি সময় দেশ পরিচালনা করেছেন এবং এই দেশ পরিচালনায় সবচেয়ে বড় অবদান ছিল দৃশ্যমান উন্নয়ন। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প, এলিভেটেড এক্সপ্রেস এর মতো শত শত প্রকল্প করে তিনি বাংলাদেশকে উন্নয়নের মডেল বানিয়েছেন। 

৬. হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বন্ধ: সাংবিধানিক ভাবে হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বন্ধ করা ছিল শেখ হাসিনার একটি ঐতিহাসিক এবং সাহসী সাফল্য সিদ্ধান্ত। তিনি সংবিধান সংশোধন করে ৭ এর (ক) যুক্ত করেন, যেখানে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকে চিরতরে নিষিদ্ধ করেন।

৭. কমিউনিটি ক্লিনিক: প্রান্তিক মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক এখন বিশ্ব মডেল। গত বছর জাতিসংঘ কমিউনিটি ক্লিনিককে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক প্রান্তিক মানুষের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার দোরগোড়া উন্মোচন করেছে।

৮. আশ্রয়ণ প্রকল্প: ‘থাকবে না কেউ গ্রহহীন’ এটি শেখ হাসিনার আরেকটি অসামান্য উদ্যোগ এবং আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তিনি গ্রহহীনদের যে ঘর দিচ্ছেন তা ব্যাপকভাবে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ভাবে প্রশংসিত।

৯. নারীর ক্ষমতায়ন: নারীর ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে একটি নীরব বিপ্লব করেছেন। কর্ম ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, নারীদেরকে সামনের দিকে নিয়ে আসা, নারী শিক্ষার বিকাশ এবং সামগ্রিক ভাবে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে তিনি এক অগ্র পথিকের ভূমিকা পালন করেছেন।

১০. তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি: তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি আদায়ের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা বেশকিছু সাহসী এবং দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এছাড়াও শেখ হাসিনার আরও অনেক অবদান রয়েছে। তবে ৪৩ বছরের এই রাজনৈতিক জীবনে শেখ হাসিনা যে বাংলাদেশকে বদলে দিয়েছেন তা নিয়ে তাঁর শক্রদেরও কোন সংশয় নেই।

শেখ হাসিনা   স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ভাঙ্গা নৌকা বাইতে আইলাম গাঙ্গে

প্রকাশ: ০৩:০০ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

১৯৬০ সাল! পালাকার খালেক দেওয়ান “মা লো মা” শিরোনামের একটি গান লিখলেন। সেই গানের কথায় ফুটে উঠেছিলো জীবনের চড়াই-উতরাইয়ের নানা বিষয়। কিভাবে জীবন সাগরে ভাসতে থাকা নৌকা শক্ত হাতে সঠিকভাবে বাইতে জানলে ভাঙ্গা নৌকা নিয়েও সুন্দর স্বপ্নের দ্বীপে সেই নৌকা ভেড়ানো যায় সেটি উঠে এসেছিলো এই গানের লিরিকে। তৎকালীন সময়ে “হিজ মাস্টার্স ভয়েস (এইচএমভি)” মিউজিক কোম্পানির (বর্তমান সারেগামা) তত্ত্বাবধানে গানটি রেকর্ডিংও করা হইয়েছিলো।


এই মাসের ৩ তারিখ আমাদের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী প্রয়াত খালিদ হাসান মিলুর সন্তান জনপ্রিয় মিউজিক কম্পোজার প্রীতম হাসানের সংগীত আয়োজনে গানটি আবার নতুনভাবে ফিরে আসে সংগীত প্রিয় মানুষের মাঝে। কোক স্টুডিও বাংলার সিজন ৩ এর এই গানটিতে নতুন মাত্রা যুক্ত হয় সময়ের আলোচিত র‍্যাপার আলী হাসানের নতুন লিরিকের অংশটুকুতে। যেখানে তিনি তার সহজাত স্টাইলে বলে গিয়েছেন “ঠিকমতো বাইতে পারলে ভাঙ্গা নৌকাও চলে, সাঁতার না জানা থাকলে ডুইবা মরবেন জলে”। গানটি ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সংগীত প্রিয় মানুষের মাঝে ভাইরাল তকমা পেয়েছে।

 

তবে, আজকের আলোচনার প্রসঙ্গ কিছুটা ভিন্ন। “মা লো মা” গানটির লিরিকের দিকে এবং আলী হাসানের অংশের ছন্দে তাকালেই দেখতে পাওয়া যায় বাঙালীর সংগ্রাম, সোনার বাংলার স্বপ্ন ও ঝঞ্ছাপূর্ণ অগ্রযাত্রায় কি সুন্দরভাবে এই গানটির লিরিকের প্রতিফলন ঘটেছে। চলুন ঘুরে আসা যাক সেই দিকটি থেকে।

 

মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়!


স্বাধীন দেশের যে স্বপ্ন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন, যে স্বপ্নে বিভোর হয়ে ৭ কোটি বাঙালী ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো দখলদার পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে, ছিনিয়ে এনেছিলো স্বাধীনতার সূর্য সেই সোনার বাংলা গড়ার বন্ধুর পথে বাধা এসেছে অনেক।

 

স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে জাতির পিতা স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানের যে কর্মজজ্ঞ শুরু করেছিলেন, ৭৫ এর ১৫ আগস্টের কালরাতে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুণ্ঠিত হবার সাথে সাথে মুখ থুবড়ে পড়েছিলো সোনার বাংলা গড়ার সে স্বপ্ন। বাঙালি জাতির অস্তিত্বকে বিপন্ন করতে দেশী বিদেশী মদদে শুরু হয় নানামুখী ষড়যন্ত্র। জাতির পিতার স্বপরিবারে হত্যাকান্ডের সময়ে তাঁর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে গেলেও বন্ধ হয়ে যায় তাদের স্বদেশে ফেরার পথ। ক্ষমতা দখল করেই মোশতাকের ইনডেমনিটি, জিয়াচক্রের সামরিক শাসন জারি করার মাধ্যদিয়ে পাকিস্তানি প্রেত ভর করার মাধ্যমে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে আবারো পাকিস্থান করার চক্রান্ত শুরু হয়। অন্ধকার সেই সময়ে মোশতাক-জিয়া-এরশাদচক্র দীর্ঘ ২১ বছর এবং তারপর আরও সাত বছর একই প্রচেষ্টা ও প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখে। ৭৫ পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ ও আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালি সংস্কৃতিকে ভূলুণ্ঠিত করার মধ্যদিয়ে স্বৈরাচার শাসকগোষ্ঠী প্রিয় স্বদেশকে যখন আবারো পেছনে ঠেলে দিচ্ছিলো তখনি দেশমাতৃকার টানে শত্রুর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশে ফেরেন জাতির পিতার সাহসী কন্যা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা।


জাতির ক্রান্তিকালে নির্বাসিত জীবন বরণ করে নেওয়ার সেই দুঃসহ সময়টিতে যার মনে ছিলো জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণের আকাঙ্ক্ষা এবং দেশসেবার প্রচন্ড ইচ্ছা ও প্রচেষ্টা। ধীরে ধীরে আসতে লাগলো সেই মাহেন্দ্রক্ষন।  ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতেই তাঁকে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। স্বৈরাচার ও খুনি চক্রের হাত থেকে দেশমাতৃকাকে মুক্ত করার দ্বিতীয় মুক্তির সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়ার পবিত্র দায়িত্ব অর্পণ করা হয় দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার হাতে। মাত্র ৩৩ বছর বয়সে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যার হাতে তুলে দেওয়া হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামী লিগের সভাপতির দায়িত্ব!

 

ওদিকে খুনি জিয়া জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনাকে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে না দেওয়ার জন্য সকল ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার পরিকল্পনা নিয়ে আগাতে থাকেন। জাতির পিতার হাতে গড়া আওয়ামী লিগের ভেতরে বাইরেও তখন চলছে নানা ষড়যন্ত্র। অনেক ভাগে বিভক্ত হয়ে দিকহারা আওয়ামী লিগ তখন খুঁজে ফিরছে সঠিক নেতৃত্ব। যে নেতৃত্ব প্রদান কেবলমাত্র সম্ভব ছিলো একজনের দ্বারাই। আওয়ামী লিগের সাহসী অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগও তখন অনেকটাই দিশেহারা অবস্থায়। কিন্তু শঙ্কার সমরে সকল বাধা ও ভয় পেছনে ফেলে ১৯৮১ সালের ১৭ মে ফিরলেন তিনি! ১৭ মে এক বৃষ্টিস্নাত বিকেলে ঢাকায় বিমান থেকে নামেন শেখ হাসিনা।


শেখ হাসিনা শুরু করেন তার জীবনের এক নতুন অধ্যায়। দলকে পুনর্গঠনের মধ্যদিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন শেখ হাসিনা। কারাগারে বন্দি হাজারো নেতাকর্মী পাশে থেকে সাহস দেওয়া, দলকে পুনর্জীবিত করা এবং সর্বোপরি জাতির পিতার স্বপ্নকে এগিয়ে নিতে শুরু করেন এক নতুন সংগ্রামী জীবন। ছুটে বেড়ান বাংলার এ প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে।  চিহ্নিত স্বাধীনতাবিরোধীদের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তিকরণ এবং স্বাধীনতাবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রাজনীতি করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করেন। রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট, ঘুষ-দুর্নীতি এবং অবৈধ ক্ষমতা দখল করে রাজনৈতিক দল গড়ে তোলার প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধেও তিনি দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে শুরু করেন সংগ্রাম।

 

এক প্রকার ভাঙ্গা নৌকা নিয়েই শেখ হাসিনা শুরু করেছিলেন অচেনা এক রাজনীতির সমুদ্র যাত্রা। সেই যাত্রায় আসলো অনেক ঝড়, কিন্তু শেখ মুজিবের কন্যা যে রাজনীতি শিখেছিলেন পিতার কাছ থেকে, যে রাজনীতি শুধুমাত্র মানুষের কল্যাণে, যে রাজনীতি মানুষকে দেয় সাহস আর ঘুরে দাঁড়ানোর প্রেরণা। মাত্র ৩৩ বছর বয়সে রাজনীতির সেই অকুল সাগরে ভাঙ্গা নৌকাও সুনিপুণ মাঝির মতো বাইতে শুরু করলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক। ঐক্যবদ্ধ হতে শুরু করলো জাতির পিতার হাতে গড়া দল আওয়ামী লিগ। যদিও সেই সময়টিতেও ছিলো শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা। কিন্তু তিনি সাহসী পিতার যোগ্য সন্তানের মতো রুখে দিয়েছিলেন সকল ষড়যন্ত্র। আগলে রেখেছিলেন আওয়ামী লিগকে।

 

স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে সামনের থেকে নেতৃত্ব দেন বাঙালীর দুঃসময়ের কাণ্ডারি রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা।  ১৯৯৬ সালে নানা ঘটনার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির অধীনের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে দীর্ঘ ২১ বছর পর দেশসেবার দায়িত্ব পান রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে রাষ্ট্র ও সমাজজীবনের সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাঁর সরকার কুখ্যাত ইনডেমনিটি বাতিল করে প্রচলিত আইনে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারকাজ শুরু করে। এ ছাড়া শিক্ষা, চিকিৎসা, শিল্প, বিদ্যুৎ উন্নয়ন, কৃষিসহ সব গুরুত্বপূর্ণ খাতে ব্যাপক উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হয় শেখ হাসিনা সরকার।

 

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এবং বিদেশি নানা মহলের আনুকূল্য পেয়ে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে জয়লাভ করে। পরে দেশব্যাপী সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির ওপর ব্যাপক নির্যাতন-নিপীড়ন চালায়। বিএনপি-জামায়াতের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সহযোগিতায় দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থান ঘটে। এ সব অপকর্মের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলেন। এ সময় শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয় বারবার। ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের পরিকল্পিত গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে বিরোধী দলকে নেতৃত্বশূন্য এবং নির্মূল করার এ ধরনের ঘৃণ্য প্রচেষ্টা প্রত্যক্ষ করে গোটা বিশ্ব। ১/১১ সরকারের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার ও কারারুদ্ধ করে রাজনীতি থেকে বিদায় করার চক্রান্ত শুরু হয়। কিন্তু পাহাড়সম সাহসীকতা ও বিচক্ষণতায় সকল রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে জনগনের রায়ে শেখ হাসিনা বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সরকার গঠন করেন।

 

এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি বাংলাদেশকে। যে মাঝি ভাঙ্গা নৌকা নিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যদিয়ে দেশ ও দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে দিতে, স্বৈরাচার ও অবৈধ মিলিটারি শাসনের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করে গণতন্ত্র চর্চার পরিবেশ ফেরাতে অকুল সাগরে যাত্রা শুরু করেছিলেন এক সমুদ্র সাহস বুকে নিয়ে সেই মাঝি আর পরিনত।

 

পালাকার খালেক দেওয়ানের সেই গানের লিরিকের মতো, আলী হাসানের নতুন ছন্দের মতো দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক জানতেন “ঠিকমতো বাইতে পারলে ভাঙ্গা নৌকাও চলে”! আবার আলী হাসানের ছন্দের মতো তিনি এটিও জানতেন যে “সাতার না জানলে কিন্তু ডুইবা মরবেন জলে”। দেশের মানুষের ভালোবাসা সাথে নিয়ে রাজনীতির বৈঠা হাতে ভাঙ্গা নৌকা নিয়ে সাগরে নামা শেখ হাসিনা নানান সময়ের হত্যাচেস্টা, গ্রেনেড, বুলেট প্রতিহত করে, কারাগারের অন্ধকার সেলে রাতের পর রাত পার করে, বিশ্বাস ঘাতকতা আর নানা ষড়যন্ত্র পেছনে ফেলে হয়েছেন রাজনীতির সমুদ্রের সুদক্ষ মাঝি। যিনি এখন বাংলাদেশকে ঠিকঠাক এগিয়ে নিচ্ছেন সমৃদ্ধির বন্দরে। ভাঙ্গা নৌকা মেরামত করে সুসংগঠিত ও সুন্দর নৌকা যে বন্দরে ভেড়াতে চলেছেন, সে বন্দরই রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশই জাতির পিতার স্বপ্নের সেই সোনার বাংলা।    

   


আওয়ামী লীগ   শেখ হাসিনা   প্রধানমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বিদায়বেলায় বন্ধুহীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বিদায় নিচ্ছেন। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসাবে ইতোমধ্যে হোয়াইট হাউস ডেভিড মিলের নাম ঘোষণা করেছে। তাঁর রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন সিনেটে অনুমোদন হলেই তিনি তাঁর বাংলাদেশ মিশন শুরু করবেন।

পিটার ডি হাস বাংলাদেশে এসেছিলেন এক অনিশ্চয়তার সময়। ২০২২ সালের ১৫ মার্চ তিনি ঢাকায় আসেন। রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম ভাগে তিনি ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্পষ্ট কথাবার্তা বলা, সুশীল সমাজের সঙ্গে দ্রুত সম্পর্ক গড়ে ওঠার কারণে তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যাপক আলোচিত ছিলেন। বিশেষ করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ইত্যাদি দাবির পাশাপাশি মানবাধিকার ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসার কারণে তিনি বাংলাদেশের একটি অংশের কাছে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হন। অতীতের রাষ্ট্রদূতদের চেয়ে তাকে প্রভাবশালী হিসেবে মনে করা হচ্ছিল। মনে করা হচ্ছিল পিটার ডি হাস বাংলাদেশে একটি মিশন নিয়ে এসেছেন। তিনি অন্যান্য রাষ্ট্রদূতদের চেয়ে অনেক বেশি সক্রিয়।

পিটার ডি হাস ঢাকায় আসার পর পরই তাঁর সক্রিয়তার প্রমাণ রেখেছিলেন। তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করতেন। সুশীল সমাজের সঙ্গেও নিয়মিত বৈঠক করতেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে সরাসরি এবং স্পষ্ট অবস্থানও ব্যক্ত করতেন। কিন্তু তিন বছরের কম সময়ের মধ্যে তিনি যখন বিদায় নিচ্ছেন তখন তাঁর বন্ধু নেই। নানা কারণেই তিনি সমালোচিত, বিতর্কিত। 

রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমেই তাকে মনে হয়েছিল আওয়ামী লীগের ওপর তিনি অসন্তুষ্ট বা আওয়ামী লীগকে চাপে ফেলার কৌশল গ্রহণ করতেই তিনি ঢাকার মিশনে এসেছেন এবং তাঁর কর্মকাণ্ডে তা স্পষ্ট প্রতিফলন লক্ষ্য করা যেত। এই জন্য শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ তাঁর ব্যাপারে নেতিবাচক ছিল। যদিও মার্কিন রাষ্ট্রদূত আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বহুবার বৈঠক করেছেন। আওয়ামী লীগের কার্যালয়েও তিনি গেছেন। ভিসা নীতির পর আওয়ামী লীগ, বিএনপির নেতৃবৃন্দকে তিনি বাসায় দাওয়াত দিয়ে খাইয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ কখনোই তাকে বন্ধু মনে করেনি। আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সবসময় পিটার হাসের ব্যাপারে একটা প্রচ্ছন্ন নেতিবাচক অবস্থান নিয়েছিলেন। 

আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করতেন যে, পিটার হাস আওয়ামী লীগ বিরোধী। বাস্তবে একজন রাষ্ট্রদূত কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে হয় না। কিন্তু পিটার হাসের কিছু কিছু কর্মকাণ্ডের কারণে আওয়ামী লীগের মধ্যে এ ধরনের ধারণার জন্ম হয়েছিল বলে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ মনে করেন। 

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, রাষ্ট্রদূত হওয়ার পর ঢাকায় এসে তিনি যেভাবে বিএনপির প্রতি পক্ষপাত করেছেন সেটি প্রত্যাশিত নয়। এর ফলে পিটার হাসের কর্মকাণ্ডের জন্য বাংলাদেশ-ওয়াশিংটন সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা যায় হয়। এক সময় তাঁর নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা হয়। তিনি বিতর্কিত সংগঠন মায়ের ডাকের একজন নেত্রীর বাসায় গেলে সেখানে বিরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন এবং নিরাপত্তার হুমকির কথা তিনি পররাষ্ট্র দপ্তরে গিয়ে জানিয়েছিলেন। শেষের দিকে এসে পিটার হাস যেন আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছিলেন। কাজেই আওয়ামী লীগ তাঁর বিদায়ে উল্লসিত এবং পিটার হাসের বদলির আদেশ যেদিন হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত হয়েছে তার পরেরদিন আওয়ামী লীগ এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দিতে কার্পণ্য করেনি। 

পিটার হাসের ঘনিষ্ঠতা ছিল বিএনপি এবং সুশীল সমাজের সাথে। বিশেষ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ, শামা ওবায়েদ এর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। মঈন খানকেও তিনি মাঝে মাঝে দাওয়াত দিতেন। কিন্তু বিদায়বেলায় বিএনপিও তাকে বন্ধু ভাবতে পারছে না। বরং বিএনপির সন্দেহ পিটার হাস আসলে কার পক্ষে কাজ করেছেন। পিটার হাস কী বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্যই কোন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন কিনা এই প্রশ্ন বিএনপির অনেকের মধ্যে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, ২৮ অক্টোবরের পর পিটার হাসের ভূমিকা রহস্যজনক। তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্য একজন সদস্য বলেছেন, পিটার হাস একজন রাষ্ট্রদূত মাত্র। তিনি ওয়াশিংটনের আদেশ পালন করেন। ওয়াশিংটন তাকে যেভাবে বলেছে সেভাবে তিনি কাজ করেছেন। এক্ষেত্রে তাঁর করার কোন কিছু ছিল না। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের আগ পর্যন্ত পিটার হাসের প্রতি বিএনপির যে আবেগ এবং ভালোবাসা ছিল তা বিদায় বেলায় একেবারে নিভে গেছে। 

একই অবস্থা সুশীলদের ক্ষেত্রে। যে সুশীলরা এক সময় পিটার হাসের জন্য অন্ধ ছিল। পিটার হাসকে তারা আদর্শ মনে করত, তারাও এখন পিটার হাসকে নিয়ে খুব একটা উচ্ছ্বসিত নয়। তাহলে কী বিদায়বেলায় বন্ধুহীন হয়ে যাচ্ছেন এই মার্কিন রাষ্ট্রদূত?


মার্কিন রাষ্ট্রদূত   পিটার ডি হাস   নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

গণতান্ত্রিক ধারা ছাড়া দেশ এগোতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০১:৫২ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা ক্ষমতা দখল করেছিল, তাদের সময় দেশে মাথাপিছু আয় বাড়েনি। কারণ গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক ধারা ছাড়া দেশ এগোতে পারে না। রাজনীতিবিদদের জনগণের কাছে ওয়াদা থাকে। আর ক্ষমতা যারা দখল করে তাদের জনগণের কাছে ওয়াদা থাকে না।

শুক্রবার (১৭ মে) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ২২তম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৪- দুর্ভিক্ষের চিত্র তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকে দেশে-বিদেশে হেয় করা হয়েছে। দেশে ফেরার পর দেখেছি দিনের পর দিন দুর্ভিক্ষ। মানসিক ভারসাম্যহীন যে বাসন্তির ছবি দেখিয়ে এতো বড় ক্ষতি করা হলো, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেই বাসন্তির কোনো খবর নেয়নি ক্ষমতা দখলকারীরা। বঙ্গবন্ধুর জীবন নিয়েও বাসন্তিদের কোনো পরিববর্তন আসেনি।

তিনি বলেন, স্বৈরশাসকেরা শুধু ক্ষমতা ভোগ করা বুঝতো। কে কোন ব্র্যান্ডের জিনিস পড়বে, সেসব নিয়েই ব্যস্ত থাকতো। আসলে স্বৈরশাসকেরা যখন ক্ষমতায় আসে তখন দুর্নীতিই নীতি হয়ে যায়। জিয়াউর রহমানের সময়ই খেলাপি ঋণের কালচার শুরু হয়। যা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ধীরে ধীরে কমাতে শুরু করে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাবা-মা-ভাই হারিয়ে বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে দেশে ফিরেছিলাম। দেশের মানুষের মধ্যেই নিজের হারানো পরিবারকে খুঁজে পেয়েছিলাম। অর্থনীতি বলতে আমি বুঝি শুধু মানুষের কল্যাণ করতে হবে। আমার প্রতিটি কাজের ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

ব্যবসায়ীদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমরা সব সময় দেশের মানুষের কল্যাণের কথা ভাবি। আজকের বাংলাদেশ একটি পরিবর্তিত বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশকে আরও টেনে নিয়ে যেতে হবে এবং দায়িত্ব আপনাদের (ব্যবসায়ীদের) নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে বেসরকারি খাত উন্মুক্ত করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। গ্রাম-গঞ্জ পর্যন্ত প্রযুক্তিগত যোগাযোগ তৈরি করা হয়েছে। সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগাতে হবে। বাজার তৈরি করতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে, কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। তরুণদের নিজে উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।


গণতান্ত্রিক   প্রধানমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন