নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮
নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের পক্ষে আসার সম্ভাবনা নিশ্চিত না হলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে পারে বিএনপি। আনুষ্ঠানিকভাবে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আর কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু নির্বাচনের আগে বিভিন্ন অজুহাতে শেষ মুহূর্তে বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা আসতে পারে। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া ঢাকায় বিভিন্ন নেতাকে এরকম ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে জানা গেছে। যদিও বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, ‘নির্বাচন বর্জনের প্রশ্নই ওঠে না।’
বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘চরম প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে আমরা নির্বাচন করছি। আওয়ামী লীগ চাইছে আমরা যেন, নির্বাচন থেকে সরে যাই। তারা যেন একতরফা একটি প্রহসনের নির্বাচন করে। কিন্তু আমরা সরকারের এই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হতে দেব না। আমরা শেষে পর্যন্ত লড়বো।’
কিন্তু বিএনপির বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে, প্রচারণার নামে মাঠে আগে কর্মীদের নামাতে চায় বিএনপি। এরপর নির্বাচন বর্জনের ডাক দিলে ঐ কর্মীরা যেন সবকিছু অচল করে দিতে পারে। তার প্রস্তুতিও রাখা হয়েছে। বিএনপির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘চরম প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে আমরা যদি নির্বাচন বর্জন করি, তাহলে আমরা নির্বাচন করতে দেবো না।’ ঐ নেতা বলেছেন, নির্বাচনে হারার জন্যে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না।’ একাধিক সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, তৃণমূলের কাছে পাঠানো বার্তায় বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব দুই প্রস্তুতির কথাই বলেছে। প্রথমত, নির্বাচনের আগে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে হবে, যাতে বিএনপির পক্ষে জোয়ার তৈরি হয়। ভোটের দিন আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করা যায়।
দ্বিতীয়ত যদি প্রশাসন এবং আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর চাপে নির্বাচন নিয়ন্ত্রিত হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে ভোট বর্জন করার প্রস্তুতিও রাখতে বলা হচ্ছে। বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেছে যে, তাঁরা মনে করছেন, ২০১৪ সালের আন্দোলনে কিছু কৌশলগত ভুল ছিল। দীর্ঘদিন হওয়ায় কর্মীরা আন্দোলন ধরে রাখতে পারেনি। গ্রেপ্তার মামলায় সারাদেশের আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যায়। বিএনপি মনে করে একটা মেট্রো ‘টর্নেডো’ আন্দোলন সবকিছু ওলট পালট করে দিতে পারে। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন,‘নির্বাচনের প্রচারণার শেষ সাতটা দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ের মধ্যেই সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে। এ কারণেই বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বার বার ভোটে থাকার কথা বলছে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না, এমন কথা বলে বিএনপি যেমন আওয়ামী লীগকে বোকা বানিয়েছিল, তেমনি এখন কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন বর্জন করবে না বলে আওয়ামী লীগকে অন্ধকারে রাখতে চাইছে। বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখনো বিএনপিতে নির্বাচন বর্জনের শক্তিশালী ধারা রয়েছে। বিএনপির এক নেতা বেশ জোর দিয়েই বললেন ‘ অওয়ামী লীগকে আরেকবার বৈধতা দেয়ার দায়িত্ব বিএনপি নেবে না।’ এজন্যই বিএনপি নির্বাচন নিয়ে তাদের নানা অভিযোগ অব্যাহত রেখেছে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোট পড়েছিল ৩৬.১৮ শতাংশ।
আগামী তিন ধাপের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে প্রচার আরো জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে
নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
রবিবার (১২ মে) ইসি সূত্র জানায়, ইসি সচিব মো. জাহাংগীর
আলম ইসির মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার মাসিক সমন্বয় সভায় এই নির্দেশনা
দেন।
ওই সভায় ইসি সচিব বলেন, ইসির মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিজ নিজ
দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
প্রথম পর্যায়ের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো চিহ্নিত
করে পরবর্তী পর্যায়ের নির্বাচন আরো সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট
সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
এ ছাড়া মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে নির্বাচনী
কার্যক্রম আরো গতিশীল করার বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয় সভায়।
উল্লেখ্য, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলা নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৩৬.১৮
শতাংশ। এর মধ্যে ১১৭ উপজেলায় ব্যালটে ভোট হয়। ভোটের হার ৩৭.২২ শতাংশ। ২২ উপজেলায় ভোট
হয় ইভিএমে, ভোটের হার ৩১.৩১ শতাংশ।
এদিকে, দ্বিতীয় ধাপে ১৫৯ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী এক হাজার ৮২৮
জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬০৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬৯৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান
পদে ৫২৯ জন।
এই ধাপের ভোট হবে আগামী ২১ মে। তৃতীয় ধাপের ভোট ২৯ মে। এই ধাপের
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল গতকাল। আজ সোমবার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ
দেওয়া হবে।
আর চতুর্থ ধাপে ৫৬ উপজেলায় ৭৩৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২৭২, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬৬ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৯৯ জন রয়েছেন। এই ধাপের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৯ মে। প্রতীক বরাদ্দ ২০ মে। ভোট হবে ৫ জুন।
নির্বাচন কমিশন ইসি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অবশেষে শরিকদের অভিমান ভাঙাতে উদ্যোগী হয়েছে। শিগগিরই শরিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। গত ২ মে গণভবনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
নির্বাচন এলেই গুরুত্ব বাড়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের শরিকদের। নির্বাচন শেষে কমতে থাকে জোটের রাজনৈতিক তৎপরতা। বাড়তে থাকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে দূরত্ব। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরিক দলগুলোর ভরাডুবির পর প্রশ্ন উঠেছে ২০ বছর বয়সী এই জোটের প্রাসঙ্গিকতা নিয়েও। প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট মূল্যায়ন করা হয়নি এমন অভিযোগ শরিক দলের নেতাদের।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচনে জয়-পরাজয় আলাদা কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোট আছে। আমি খুব শিগগিরই তাদের সঙ্গে বৈঠক করব। মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক আদর্শকে ভিত্তি করে ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গড়ে ওঠে ১৪-দলীয় জোট। তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপির নেতৃত্বাধীন চার-দলীয় জোট সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তুলে এ জোট।
দেশের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ তৈরি করা এই জোটের শরিক দলগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), গণতন্ত্রী পার্টি, সাম্যবাদী দল, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, গণ-আজাদী লীগ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, জাতীয় পার্টি (জেপি) ও কমিউনিস্ট কেন্দ্র। এর মধ্যে তিনটি দলের নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন নেই। এরা হলো- গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, গণ-আজাদী লীগ ও কমিউনিস্ট কেন্দ্র।
শরিকদের মধ্য থেকে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন চারজন, দশম সংসদে সংরক্ষিত দুজনসহ ১৩ জন, একাদশ সংসদে আটজন। কিন্তু দ্বাদশ সংসদে এই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র দুজনে। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের রেজাউল করিম তানসেন না জিতলে এবার মুখ রক্ষা করাই কঠিন হতো ১৪-দলীয় জোটের শরিকদের।
আওয়ামী
লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, টানা ১৫ বছর
ক্ষমতায় থেকেও সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধি করতে পারেনি শরিক
দলগুলো। আওয়ামী লীগের ওপর অত্যধিক নির্ভরতায়
কমে গেছে দলগুলোর জনভিত্তি।
প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে ছোট দলের বড়
নেতাদের ভাবমূর্তি। সব মিলিয়ে জোটের
শরিক দলগুলো আওয়ামী লীগের জন্য পরিণত হয়েছে
বোঝায়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি তাদের পুরনো ২০-দলীয় জোট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বা নতুন জোট গঠন করে রাজপথে নামলে আওয়ামী লীগও আবার ১৪-দলীয় জোট বা মহাজোট সক্রিয় করবে। বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর যুগপৎ আন্দোলন দানা বেঁধে উঠতে দেখলে ১৪ দলের তৎপরতা দৃশ্যমান করবে আওয়ামী লীগ।
এ বিষয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু গণমাধ্যকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা জোটের রাজনীতিকে চাঙা করে তুলবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। নেত্রী বৈঠকের কথা বলেছেন খুব বেশি দিন হয়নি। আমরা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছি।
জোটের মুখপাত্র, সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু গণমাধ্যকে বলেন, জোটের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়নি। জোট আছে, থাকবে। নেত্রী সময় দিলেই আমরা শরিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসব।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আগামী ১৪ ও ১৫ মে দুদিনের ঢাকা সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। ভারত ও শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে তাঁর। গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফর নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা রকম গুঞ্জন বা এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করলেও এবার তেমনটি দেখা যাচ্ছে না। রাজনীতিতে তেমন কোন উত্তেজনা বা আতঙ্কও নেই যেমনটি ছিল নির্বাচনের আগে আগে। তবে ডোনাল্ড লুর সফর ঘিরে নতুন করে আশার বুক বাঁধছে বিএনপি। রাজনীতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে দলটির মধ্যে। এরই মধ্যে বিএনপি গত শুক্রবার ঢাকায় সমাবেশ করেছে। পাশাপাশি সরকারবিরোধী দেশের সব সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে আবার আলোচনা শুরু করেছে দলটি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধ নিরসন না হতেই উপজেলা নির্বাচন ঘিরে তৃণমূল আওয়ামী লীগে বিভক্তি বাড়ছে, বাড়ছে সহিংসতা। এবার উপজেলা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক নৌকায় নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নেয়। এমনকি দলটি কেন্দ্রীয়ভাবেও কাউকে সমর্থন দেয়নি। এর ফলে নির্বাচনে দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্য থেকে যে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন। যদিও দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্যরা নির্বাচন করতে পারবে না। কিন্তু সে নির্দেশনা মানছেন আওয়ামী লীগের কেউই। বরং মন্ত্রী-এমপিরা তাদের পরিবারের সদস্য বা মাই ম্যানদের পক্ষে সরাসরি ভূমিকা রাখছে। এর ফলে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে। আর যার ফলে বাড়ছে কোন্দল, বাড়ছে সহিংসতা। সংসদ নির্বাচনের পর পরই দলীয় প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে যেমন সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল উপজেলা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একই রকম আশঙ্কা করা হচ্ছে।