নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানতে চাইলেন ‘বিএনপি সরে গেলে কি নির্বাচন হবে?’ আজ সকালে সদ্য দায়িত্ব নেওয়া মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে প্রথম বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের। যদিও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন ‘এটা সৌজন্য সাক্ষাত। নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে।’কিন্তু দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, নির্বাচনী প্রচারণায় সহিংসতা, বিরোধীদের প্রচারণায় বাধা এবং প্রশাসনের পক্ষপাত নিয়ে কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। সকালে সচিবালয়ে মন্ত্রীর দপ্তরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে একই বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গেও।
সংশ্লিষ্ট সুত্রগুলো বলছে, মূলত: বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে ওকালতি করতেই রবার্ট মিলারের এই দৌড় ঝাপ। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, এমন পরিস্থিতি তৈরী করা ঠিক হবে না যাতে বিরোধীরা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়। রবার্ট মিলার এটাও বলেন যে, বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট যদি নির্বাচন থেকে সরে যায় সেটা হবে দুর্ভাগ্যজনক। সেক্ষেত্রে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে সুদূর পরাহত। অবশ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বলেন, বিভিন্ন স্থানে যে সহিংসতা হচ্ছে তা বিএনপির সৃষ্টি অথবা মিথ্যা প্রচারণা। তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুলের গাড়ি বহরে আওয়ামী লীগ কেন হামলা করবে?’ এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনগণের সহানুভূতি আদায়ের জন্যেই বিএনপি এটি করছে।’ এসময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত কয়েকটি নির্বাচনী এলাকার ঘটনার নিউজ ক্লিপিং এর উল্লেখ করেন। ওবায়দুল কাদের তাকে বলেন, সংবাদগুলো একটি পত্রিকার এবং এসব পক্ষপাতপূর্ণ।’ তিনি মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে ‘শুধু সংবাদপত্রের খবরের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত না নেওয়ার অনুরোধ করেন। তবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত তাকে জানান যে, তাঁদের কাছে খবর আছে যে, বেশ কিছু নির্বাচনী এলাকায় প্রশাসন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। এর জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন সব ক্ষমতাই নির্বাচন কমিশনের হাতে। এরকম কিছু হলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সর্বময় ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের আছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত সংঘাত মুক্ত এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পক্ষে মার্কিন অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে যেন জনমত প্রতিফলিত হয়। জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পাল্টা অভিযোগ করেন যে, বিএনপিই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ এবং সহিংস করে তুলতে চাইছে। তিনি এ বিষয়টি নিয়ে বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। রবার্ট মিলার নির্বাচনের প্রচারণার সময়ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ধরপাকড়ের প্রসংগটিও উত্থাপন করেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এক পক্ষের কথা না শুনে বরং উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি এবং জামাতের সঙ্গে অনেক চিহ্নিত সন্ত্রাসী রয়েছে বলে আমি শুনেছি। এরা নির্বাচনের আগে বড় ধরণের নাশকতার পরিকল্পনা করছে বলেও আমাদের কাছে তথ্য আছে।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কাউকেই বিনা কারণে আটক করা হচ্ছে না।’ রবার্ট মিলার বলেন, বিএনপি যেন নির্বাচনে থাকে এটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায়। যেন একটি অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ নির্বাচন হয়।’
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।