ইনসাইড পলিটিক্স

তারকা প্রার্থীর অবস্থান কী?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮


Thumbnail

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন কিনেছিলেন বেশ কয়েকজন তারকা। তবে এর মধ্যে মনোনয়ন পেয়েছেন হাতে গোনা কয়েকজন। তাদের খবর জানানো হয়েছে:

আকবর হোসেন পাঠান ফারুক

দল: আওয়ামী লীগ প্রতীক: নৌকা

আসন নং: ১৯০

আসন: ঢাকা-১৭ (ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড- ১৫,১৮,১৯ ও ২০ এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা)

মোট ভোটার: ৩,১৩,৯৯৮

মোট প্রার্থী: ১০

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি: আন্দালিভ রহমান(জাতীয় পার্টি-বিজেপি) প্রতীক: ধানের শীষ, এইচ এম এরশাদ (জাতীয় পার্টি) প্রতীক: লাঙল

কৈশোরে দেখেছেন, মিশেছেন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে। সেই কিশোরবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধু তার নায়ক, আদর্শ, লিডার! তার উৎসাহেই রাজনীতিতে আসা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু খুন হবার পর থেকে আর কোনোদিন ১৫ আগস্ট নিজের জন্মদিন পালন করেন না। নায়ক ফারুক স্কুলজীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহভাজন ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য অনুপ্রাণিত করেছিলেন।

গাজীপুর-৫ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন বলে মনোনয়ন কিনেছিলেন। তবে সেখানে নারী ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি থাকায় তাকে ঢাকায় মনোনয়ন দেওয়া হয়। ঢাকা-১৭ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হয়। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদেরকেও মনোনয়ন দেয়া হবে বলে কথা উঠে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফারুকই ওই এলাকার নৌকার মাঝি হন।

ফারুক বলেন,‘ ত্রিশ বছর ধরেই স্বপ্ন দেখেছি আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করব। কিন্তু নানা কারণে হয়ে উঠেনি। এবার মনোনয়ন পেয়েছি। আর এমন এক আসনে বঙ্গবন্ধু কন্যা নেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন যা আমার ত্রিশ বছরের আক্ষেপ মুছে দিলো এক নিমিষেই। ঢাকা-১৭ আসনটি আমার জন্য স্বপ্নের, বিশেষ উপহারের। আমি আবেগী মানুষ। নেত্রীর এই অসামান্য উপহারে কৃতজ্ঞতায় আমার চোখে বারবার পানি এসেছে। তিনি আমাকে দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আসনে প্রার্থী করেছেন। ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমি এই উপহার ও বিশেষ আস্থার প্রতিদান দিতে চাই।’

মানুষের মাঝে গিয়ে কী দেখছেন?‘সবাই শুধু বলেছেন, আমরা এবার নৌকা চাই। উৎসব করে নৌকার ইলেকশন করতে চাই। মানুষ আমাকে ভালবাসে জানতাম, কিন্তু সর্বস্তরের মানুষ এত কাছের ভাবে তা বুঝিনি। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলে আবেগী হয়ে যাই।’

চিত্রনায়ক, পরিচালক, প্রযোজক- একাধিক পরিচয়ে তিনি পরিচিত। সব ছাপিয়ে ভক্তদের কাছে তার বড় পরিচয় তিনি ‘মিয়া ভাই’।

তার হাত ধরে ১৮ বছর পর গুলশান-বনানীতে নৌকা মার্কা ফিরলো। এই আসন থেকে অতীতে নির্বাচন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ। ২০১৪ সালের বিএনপিবিহীন নির্বাচনে বিএনএফের আবুল কালাম আজাদ আসনটি থেকে নির্বাচিত হন, সেবার আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী ছিল না এই আসনে।

আসাদুজ্জামান নূর

দল: আওয়ামী লীগ প্রতীক: নৌকা

আসন নং: ১৩

মোট ভোটার: ৩,১১,৬৯৯

নীলফামারী-২: নীলফামারী সদর উপজেলা

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি : মনিরুজ্জামান মন্টু (বিএনপি প্রতীক) প্রতীক: ধানের শীষ

সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সফল ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর রাজনীতির মঞ্চেও সফল। নীলফামারী-২ (সদর উপজেলা) আসন থেকে তিনি পরপর তিনবার সংসদ সদস্য হয়েছেন আওয়ামী লীগের টিকিটে। ১৯৬২ সালে স্বৈরাচারী আইয়ূব খানের বিরুদ্ধে সকল আন্দোলনে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন আসাদুজ্জামন নূর। পরবর্তীতে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। আসাদুজ্জামান নূর মুক্তিযুদ্ধে ৬ নং সেক্টরে যুদ্ধ করেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ, স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সক্রিয় সংস্কৃতিকর্মী আসাদুজ্জামান নূর ১৯৯৭ সালের দিকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। সক্রিয় হন নীলফামারীর রাজনীতিতে। ২০০১ সালে প্রথম তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিরোধী দলের সংসদ সদস্য হয়েও ব্যাপক জনসম্পৃক্ততার কারণে তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পান সংস্কৃতিমন্ত্রীর।

তাঁর প্রচেষ্টায় ২০০০ সালে নীলফামারীতে প্রতিষ্ঠিত হয় উত্তরা ইপিজেড। সেই ইপিজেডে বর্তমানে কর্মসংস্থান হয়েছে ৩২ হাজার মানুষের। বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে গুরুত্বহীন হয়ে পড়া ইপিজেডটির উন্নয়ন ধরে রেখেছিলেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে। বর্তমান সরকারের ১০ বছরে এই শিল্প অঞ্চলটির ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে তাঁর হাত ধরে। আগামী দুই বছরের মধ্যে সেখানে ৫০ হাজার মানুষ কাজ করতে পারবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

আসনটি থেকে টানা তিন বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এসময় বলেন, ‘২০০১ এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমি বলেছিলাম এলাকার উন্নয়নের জন্য নৌকা মার্কাায় ভোট দিন। নীলফামারীর উন্নয়ন হয়েছে, প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে আশাতীত। এবার উন্নত নীলফামারী গড়ার জন্য দলমত নির্বিশেষে নৌকা মার্কায় ভোট দিন।’

দশ বছরে এলাকার অনেক উন্নয়নের কথায় তিনি বলেন, ‘২০০১ সালে শেখ হাসিনার প্রতিষ্ঠিত উত্তরা ইপিজেডে ৩২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। মেডিকেল কলেজ, কারিগড়ি ও যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, নাসিং ইনিস্টিটিউট, উন্নয়ন হয়েছে ডায়াবেটিকসহ বিভিন্ন হাসপাতালের, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ খেলাধুলার উন্নয়ন হয়েছে, নির্মিত হয়েছে আধুনিক স্টেডিয়াম। সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। শিল্প এবং কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়নে এলাকা থেকে দূর হয়েছে এক সময়ের মঙ্গা। এখন দরকার পরিকল্পিত এবং উন্নত নীলফামারী গড়া।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরোডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজমের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক শাহীন আখতার সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সহধর্মিণী। এলাকার মানুষের সেবায় তাঁর সঙ্গে এগিয়ে এসেছেন ডা. শাহীন। এই শিশু নিউরোলজিস্ট ও শিশু বিকাশ বিশেষজ্ঞ নীলফামারী সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে পর্যায়ক্রমে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পের আয়োজন করে আসছেন। বিনা মূল্যে চিকিৎসা পরামর্শ এবং রোগীদের ওষুধ দেওয়া হয় ওই ক্যাম্পে। সহধর্মিণী অধ্যাপক শাহীন আখতারের এই কার্যক্রম আরো জনপ্রিয় করে তুলেছে আসাদুজ্জামান নূরকে।

দলের নেতাকর্মীরা জানায়, আসাদুজ্জামান নূর থাকায় দলে চাঁদাবাজ নেই, সন্ত্রাস বলে নেই কিছু। তাঁর সরলতা এবং মানুষের সঙ্গে মেশার ক্ষমতা সম্মোহিত করছে সবাইকে।

প্রত্যক্ষ কোনো ব্যর্থতা নেই আসাদুজ্জামান নূরের রাজনীতিতে। সফলতার ভারে অনেক পরোক্ষ ব্যর্থতাও ম্লান হয়ে গেছে। নেতাকর্মীদের মতে, এমন ব্যর্থতার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গত জেলা পরিষদের নির্বাচন। জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের কোন্দলে হেরেছে দলীয় প্রার্থী। এর আগেও এমন কোন্দল দেখা গেছে পৌরসভার নির্বাচনে। সে নির্বাচনে দলের প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত হলেও পক্ষে বিপক্ষে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রকাশ্যে বিভক্তি ছিল। পরবর্তী সময়ে এই বিভেদের অবসানও ঘটেছে তাঁরই হস্তক্ষেপে। নেতাকর্মীরা মনে করে—এসব বিপর্যয় এড়ানো যেত আসাদুজ্জামান নূরের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে।

মাসুদ পারভেজ

দল: জাতীয় পার্টি প্রতীক: লাঙল

আসন: বরিশাল-২ (উজিরপুর এবং বানারীপাড়া উপজেলা)

আসন নং: ১২০

মোট ভোটার: ৩,০২,৫৭১

মোট প্রার্থী: ৭

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি: সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ (বিএনপি) প্রতীক: ধানের শীষ, শাহে আলম (আওয়ামী লীগ) প্রতীক: নৌকা

চলচ্চিত্রের ড্যাশিং হিরো খ্যাত মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা। ৭০ ও ৮০-এর দশকে ঢাকাই সিনেমার পর্দা কাঁপিয়েছেন দাপটের সঙ্গে। প্রযোজক হয়ে উপহার দিয়েছেন জনপ্রিয় ছবি। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ও মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্রের প্রযোজক। এবার রাজনীতির মাঠে জনপ্রিয় হিরো তার কারিশমা দেখাবেন। জাতীয় পার্টির টিকিটে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তাকে বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে নির্বাচন করার জন্য দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সোহেল রানা বলেন, নিজেকে দেশের সেবায় সর্বদা ব্রত রাখার চেষ্টা করেছি। ছাত্র অবস্থা থেকেই রাজনীতি করে আসছি। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। এবার সংসদ সদস্য হিসেবে দেশ ও জনগণের সেবা করার প্রত্যয় নিয়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছি। দেশের উন্নয়নে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করব, এটাই আমার অন্যতম অঙ্গীকার। আমি দেশবাসীর দোয়া ও সহযোগিতা চাই। যাতে প্রকৃত অর্থে দেশ ও জনগণের মঙ্গলে কাজ করতে পারি।’

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যের ৪১৪৭ টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল। মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেছিলেন সোহেল রানা। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) করা আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন এ নায়ক।

রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা

দল: বিএনপি প্রতীক: ধানের শীষ

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি: মোহাম্মদ নাসিম (আওয়ামী লীগ) প্রতীক: নৌকা

সিরাজগঞ্জ-১: কাজিপুর এবং সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার নিম্নলিখিত ইউনিয়ন সমূহঃ মেছড়া, রতনকান্দি, বাগবাটি, ছোনগাছা ও বহুলি

আসন নং: ৬২

মোট ভোটার: ৩,৪৫,৬৭৬

কনকচাঁপা সিরাজগঞ্জের কাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে (বিএনপি) যোগ দিয়েছেন সংগীতশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে দলে যোগ দেন তিনি। স্বামী সুরকার মইনুল ইসলামকে নিয়ে তিন নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন।

ভোট প্রার্থনার সময় কনকচাঁপা অভিযোগ করেছেন, ‘প্রচারণায় সরাসরি বাধা না দেওয়া হলেও মুঠোফোনে হুমকির সম্মুখীন হতে হয়েছে। তারপরও আমার মতো করেই প্রচারণা চালাতে হবে। আমার ভরসা সাধারণ মানুষ। আমি মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি। আমার বিশ্বাস, ভোটাররা যদি কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার সুযোগ পান, তাহলে আমি ভালো ফলাফল করব। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’

নির্বাচনে অংশ নিতে চান কেন? কনকচাঁপা বললেন, ‘ছোটবেলা থেকে মাকে সমাজসেবা করতে দেখেছি। মানুষের প্রতি ভালোবাসা, অসহায়ের পক্ষে কথা বলা-এগুলো ছিল মায়ের অভ্যাস। তাঁর আদর্শেই বড় হয়েছি। যখন পেশাদার শিল্পী হয়েছি, তখন থেকেই অসহায়ের পাশে আছি। সমাজের সব অসংগতির বিরুদ্ধে আমার কঠোর অবস্থান। একজন সফল শিল্পী হয়েও কখনো আমার বিত্তকে মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্তে পরিবর্তন করিনি। আমার মানসিক শক্তি, শারীরিক শক্তি সবই বর্তমান। আমি একজন সাহসী মানুষ বটে। আর মানুষের পাশে দাঁড়াতে বড় প্ল্যাটফর্ম দরকার। আমি মনে করি, নির্বাচন সেই প্ল্যাটফর্ম।’

নির্বাচনে অংশগ্রহন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি পঞ্চাশের ঘরের একজন মানুষ। এই বয়সেই গানের জগতের সব পুরস্কার, মানুষের ভালোবাসা ও আশীর্বাদ পেয়েছি। নাতি-নাতনি, মেয়েজামাই, ছেলেবউদের দিয়ে সাজানো বেহেশতের বাগানের মতো আমার সংসার। কিন্তু এই জীবন ছেড়ে নির্বাচনের যুদ্ধে নেমেছি মানুষকে ভালোবেসে। কারণ, তাঁদের অপার ভালোবাসার বিনিময়ে অনেক বেশি ভালোবাসা উপহার দিতে চাই।’

তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বর্তমান সরকারে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

মমতাজ বেগম

দল: আওয়ামী লীগ প্রতীক: নৌকা

মানিকগঞ্জ-২: সিঙ্গাইর, হরিরামপুর এবং মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাটিপাড়া, ভাড়ারিয়া ও পুটাইল ইউনিয়ন সমূহ

মোট ভোটার: ৪,০৬,১৯৫

মোট প্রার্থী: ৬

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি: মাঈনুল ইসলাম খান (বিএনপি) প্রতীক: ধানের শীষ

মানিকগঞ্জ-২ আসন (সিংগাইর-হরিরামপুর সদরের আংশিক) আসনের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই প্রচার প্রচারণায় সরব ও মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম এমপি। তিনি সরকারের উন্নয়নের বার্তা জনগণের মধ্যে পৌঁছে দেয়ার জন্য নির্বাচনী প্রতিটি এলাকার পাড়া-মহল্লায় উঠান বৈঠক, কেন্দ্র মিটিং, পথসভা, গণসংযোগ, সভাসমাবেশ করে তৃণমূল ভোটারদের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করছেন। এই আসনের বর্তমান সাংসদও মমতাজ বেগম। ২০০৮ সালে প্রথমে সংরক্ষিত আসনে, দ্বিতীয়বার ২০১৪ সালের নির্বাচনে এমপি হন তিনি।

হিরো আলম

বগুড়া-৪: কাহালু এবং নন্দীগ্রাম উপজেলা

আসন নং: ৩৯

মোট ভোটার: ৩,১২,০৮১

মোট প্রার্থী: ৭

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি: মোশারফ হোসেন (বিএনপি) প্রতীক: ধানের শীষ রেজাউল করিম তানসেন (জাসদ) প্রতীক: নৌকা

নির্বাচনের মৌসুমে জাতীয় পার্টির মনোনয়নপত্র তুলেও ব্যাপক সাড়া ফেলেন হিরো আলম। যদিও দলটি তাকে মনোনয়ন দেয়নি। পরবর্তী সময়ে তিনি বগুড়া-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র তুললে তা বাতিল করা হয়। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের প্রথম দিনেই হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। আপিল করলে নির্বাচন কমিশন শুনানির পর তা বাতিল করে। মনোনয়নপত্রে ভোটারের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ তুলে আপিলেও তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করলে সেখানেও তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করে। হিরো আলম আদালতে গেলে হাইকোর্টের নির্দেশে তাকে মনোনয়নপত্র ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এ নিয়ে তিনি সংবাদ মাধ্যমে আসেন। হাইকোর্টের নির্দেশ পাওয়ার পর প্রতীক সিংহ তার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা হিরো আলম শৈশবে চানাচুর বিক্রি করতেন। পরে তিনি সিডি বিক্রি এবং ডিশ সংযোগের ব্যবসা করেন। নিজেই মিউজিক ভিডিও তৈরি করে ডিশ লাইনে সম্প্রচার শুরু করেন। এভাবে হিরো আলমের তৈরি মিউজিক ভিডিও এবং ইউটিউব সিনেমা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনায় আসেন। পরে ‘মার ছক্কা’ নামে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। বলিউড পরিচালক প্রভাত কুমারের ‘বিজু দ্য হিরো’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পান। হিরো আলম দুইবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে খুব অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। পরবর্তীতে জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনে আসেন।


বাংলা ইনসাইডার/ এমআরএইচ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। 

বিএনপির একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেছেন, দল এখন আন্দোলনে ব্যস্ত, তবে আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গে সংগঠনের বিষয়টিও সম্পৃক্ত। আন্দোলন এবং সংগ্রাম একসাথেই চলবে। এই অংশ হিসেবেই আমরা দলের নেতৃত্বের পুনর্গঠনের বিষয়টি বিবেচনা করছি। 

বিএনপির এই নেতা বলেন, তারেক জিয়া যখন বলবেন তখনই কাউন্সিল করার জন্য তাদের প্রস্তুতি আছে। তবে বিএনপির একাধিক নেতা আভাস দিয়েছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ তারা একটি সংক্ষিপ্ত কাউন্সিল করতে পারেন এবং সংক্ষিপ্ত কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতৃত্ব পুনর্গঠন করা হতে পারে। 

বিএনপিতে এখন নীতি নির্ধারণী সংস্থা স্থায়ী কমিটিতে পাঁচ সদস্য পদ শূন্য রয়েছে। আবার যারা স্থায়ী কমিটিতে আছেন এ রকম বেশ কয়েক জন এখন গুরুতর অসুস্থ এবং জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। অনেকে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলামের মতো নেতারা এখন এতই অসুস্থ যে তারা কোন রাজনৈতিক দায়িত্ব পালনের মতো অবস্থায় নেই। 

বিএনপির একজন নেতা স্বীকার করেছেন, তারা দলকে সার্ভিস দিতে পারছেন না। কিন্তু বিষয়টি খুব স্পর্শকাতর বলে মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, অসুস্থ অবস্থায় তাদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে অমানবিক। তবে বিএনপির তরুণ নেতারা মনে করেন, এটি মোটেও অমানবিক নয়। একজন পদে থাকা ব্যক্তি যদি দায়িত্ব পালন না করতে পারেন তাহলে তাকে কোন আলঙ্কারিক পদ দিয়ে ওই শূন্যপদ পূরণ করা উচিত। বিএনপির মধ্যে একটি চাপ আছে যে, যারা মাঠের আন্দোলনে সক্রিয়, অপেক্ষাকৃত তরুণ তাদেরকে নেতৃত্বের সামনে আনা হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে তারেক জিয়া এবং বেগম খালেদা জিয়ার মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। 

তারেক জিয়া বিএনপিতে তরুণদেরকে সামনে আনতে চান। তবে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন এ ধরনের ব্যক্তিদেরকে খালেদা জিয়া এখনই দল থেকে বাদ দিতে রাজি নন বলেই বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। এ প্রসঙ্গে বলা যায় যে, রফিকুল ইসলাম মিয়া বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। বিভিন্ন সংকটে তিনি বেগম জিয়ার পাশে ছিলেন। এ কারণেই দীর্ঘদিন রোগশয্যা থাকার পরও তাকে স্থায়ী কমিটিতে রাখা হয়েছে। যদিও তারেক জিয়া তাকে স্থায়ী কমিটি থেকে সরিয়ে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদে দেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার আপত্তির কারণে তিনি সেটি করতে পারেননি। 

একইভাবে ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকারকেও স্থায়ী কমিটিতে না রাখার ব্যাপারে তারেক জিয়ার আগ্রহ আছে। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার অত্যন্ত আস্থাভাজন হওয়ার কারণ তারেক জিয়ার সেই চেষ্টা সফল হয়নি। আর এ কারণেই তারেক জিয়া কাউন্সিল করছেন না বলে অনেকে মনে করেন। কারণ এখন কাউন্সিল হলে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাকে সমঝোতা করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়ার পছন্দের অনেক ব্যক্তিকে দলের নেতৃত্ব রাখতে হবে। সেটি তারেক জিয়া চান। খালেদা জিয়ার হাত থেকে বিএনপির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিলেও এখন তারেক বিএনপিকে খালেদা জিয়ার প্রভাব মুক্ত করতে পারেনি। তাই কাউন্সিলের জন্য তার অপেক্ষা। তবে একাধিক সূত্র বলছে, দলের নেতাকর্মী মধ্যে কাউন্সিল করে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য একটি বড় ধরনের চাপ আছে।


কাউন্সিল   বিএনপি   তারেক জিয়া   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   বেগম খালেদা জিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

জামিনে কারামুক্ত হলেন বিএনপি নেতা

প্রকাশ: ০৯:৩৬ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

এ সময় কারাফটকে তাকে স্বাগত জানাতে শত শত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে হাবিবুর রশিদ হাবিব বলেন, পুরো দেশটাকে কারাগারে পরিণত করেছে এই জালিম সরকার।

তারা শুধু বিএনপি নেতাকর্মী নয়, দেশের জনগণের অধিকার, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সবকিছুকে ধ্বংস করেছে। এই মাফিয়া আর পুতুল সরকার থেকে মুক্তি পেতে আন্দোলনের বিকল্প নাই। সেই আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান হাবিব।

উল্লেখ্য, গত ১৮ এপ্রিল নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে হাবিবুর রশীদ হাবিবকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন আদালত। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তাকে তিন মামলায় ৬ বছর নয় মাসের সাজা দেন আদালত।

এছাড়া দুটি মামলা গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও ছিলো। সব মামলায় জামিন শেষে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

হাবিবুর রশিদ হাবিব   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনের আগে ও পরে একই কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র: মঈন খান

প্রকাশ: ০৭:১৫ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র যে কথা বলেছিল, নির্বাচনের পরেও একই কথাই বলেছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।

শুক্রবার (১৭ মে) কারামুক্ত বিএনপি নেতা নবী উল্লাহ নবীর বাসায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মঈন খান বলেন, সরকার যদি ভাবে মার্কিন প্রতিনিধি তাদের সঙ্গে এসে কথা বলেছে আর সব সমস্যার সমাধান হয়েছে, তাহলে সরকারের ধারণা ভুল। নির্বাচনে আগে যুক্তরাষ্ট্র যে কথা বলেছিল, নির্বাচনের পরেও সেই কথা বলেছে।

তিনি বলেন, বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও আটকের একমাত্র উদ্দেশ্য এ দেশের মানুষকে কথা বলতে দেবে না। মানুষকে ভিন্নমত পোষণ করতে দেওয়া হবে না। গণতন্ত্র দেওয়া হবে না। সরকার জানে সুষ্ঠু নির্বাচন দিলে দেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।

এই সরকার সব অধিকার হরণ করেছে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের (সরকার) কোনো ভিত্তি নেই। এদেশের ৯৭ শতাংশ জনগণ তাদের ভোট দেয়নি। এ জন্য সরকার ভীতু। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।

মঈন খান বলেন, সরকার এদেশের রাজনীতি অনেক আগেই ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশে আর সুস্থ ধরার রাজনীতি নেই। এখন আছে পরহিংসার রাজনীতি। সংঘাতের রাজনীতি।

তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ বলে দেবে এ সরকারের পরিণতি কি হবে। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, স্বৈরাচারী সরকারের কি পরিণতি হয়ে ছিল। এ দেশের সরকারের বেলায় যে ভিন্ন কিছু হবে এটা কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় না।

বিএনপি   ড. আব্দুল মঈন খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কেন জোট করতে চায় না বিএনপি

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না। 

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে একটি বিষয় সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যারা বিএনপির সঙ্গে এতদিন ছিল এবং আন্দোলন করেছে, তারা এখন নতুন করে আন্দোলনের আগে একটি লিয়াজোঁ কমিটি করতে চায়। আর আন্দোলনের লক্ষ্য এবং পথ পরিক্রমা চূড়ান্ত করতে চায়। লিয়াঁজো কমিটির নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হোক, সেটিও তারা চায়। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত ইতিবাচক সাড়া দেওয়া হয়নি। নানা বাস্তবতার কারণে বিএনপির জোটবদ্ধ আন্দোলন করতে চায় না। লিয়াঁজো কমিটিও করতে চায় না। 

বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতার সাথে আলাপ করে দেখা গেছে, তারা যে সমস্ত শরিক দলগুলো এখন বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে আগ্রহী, তাদের সঙ্গে কোন আনুষ্ঠানিক ঐক্যে যেতে চায় না। এমনকি লিয়াঁজো কমিটির করতে চায় না। এর কারণ হিসেবে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য বলছেন, যে সমস্ত শরিক রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করতে চায়, আন্দোলনের মাধ্যমে তারা অনেকেই সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায়। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সরকারের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করা বা রাজনৈতিক ডিগবাজি দেওয়ার মাধ্যমে তারা আন্দোলনকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। এটি শুধু এই স্থায়ী কমিটির সদস্য নয়, বিএনপি অনেকের ধারণা।

গত বছরের আন্দোলনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন করার কারণে যারা পরিচিতি পেয়েছিল তারাই সরকারের সঙ্গে প্রকাশ্যে এবং গোপনে যোগাযোগ করেছেন। এদের মধ্যে জেনারেল ইব্রাহিমের কথা বিএনপির অনেক নেতাই বলছেন। তারা বলছেন, তিনি রাজনৈতিকভাবে একেবারে এতিম ছিলেন। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করার কারণেই তাঁর রাজনৈতিক পরিচিতি হয়েছিল। আর সেই পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে তিনি সরকারের সাথে গোপনে আঁতাত করেছেন। 

এর আগেও অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে বিকল্পধারা প্রসঙ্গটিও বিএনপির অনেক নেতা বলে থাকেন। তাছাড়া ২৮ অক্টোবরের পর আকস্মিকভাবে মাহমুদুর রহমান মান্নার নীরবতাকেও বিএনপির নেতারা সন্দেহ করছেন। 

বিএনপির কাছে এরকম তথ্য আছে যে, আন্দোলন বানচালের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনেকগুলো দলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল এবং তাদেরকে নানা রকম টোপ দেওয়া হয়েছিল। ভবিষ্যতেও আন্দোলন যদি বেগবান হয় তাহলে আবার টোপ দেওয়া হবে। এই সমস্ত লোভ পরিত্যাগ করে শরিকরা কতটুকু আন্দোলনের ব্যাপারে অটল থাকতে পারবে এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। আর কারণেই বিএনপি এখন আনুষ্ঠানিক ভাবে জোটে যেতে চায় না।

বিএনপি মনে করে তারা আন্দোলন করবে। তাদের কর্মসূচির সঙ্গে যদি কেউ একমত পোষণ করে তাহলে তারা যুগপৎ আন্দোলন করবে। তবে আন্দোলন তাদের নিজেদেরই করতে হবে এমনটি মনে করছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। আর এ কারণে বিএনপি কোন রকম জোট বা লিয়াঁজো কমিটির পক্ষে নয়।

বিএনপি   যুগপৎ আন্দোলন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

২০৪ নেতাকে বহিষ্কার করল বিএনপি

প্রকাশ: ০২:৫৩ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।

এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।

বর্তমান সরকার নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।

দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত জন চেয়ারম্যান পদে, জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।

দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জুন।


বহিষ্কার   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন