নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
বাংলাদেশে অনেক মামলার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি হয়। কিন্তু কিছু মামলা আছে যেগুলো রাজনৈতিক মামলা এবং রাজনৈতিক কাজেই এগুলো ব্যবহৃত হয় বলে অনেকে মনে করেন। সেগুলোর নিষ্পত্তি বছরের পর বছর আটকা পড়ে থাকে। রাজনৈতিক নানা হিসাব-নিকাশের বেড়াজালে এই মামলাগুলো এগোয় না এবং এগুলোর নিষ্পত্তিও হয় না। এরকম মামলাগুলোর মধ্যে কয়েকটি আলোচিত মামলা হলো:
(১) মঞ্জুর হত্যা মামলা: ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আবুল মঞ্জুরকে পুলিশ হেফাজতে হত্যা করা হয়। এর ১৪ বছর পর বিএনপি আমলে ১৯৯৫ সালে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে প্রধান আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার মূল বক্তব্য ছিল, জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর চট্টগ্রামের তৎকালীন জিওসি মেজর জেনারেল মঞ্জুর যে বিদ্রোহ করেছিলেন এবং সেসময় তিনি যখন ঢাকার দিকে এগুচ্ছিলেন তখন তাকে হত্য করা হয়। মেজর জেনারেল মঞ্জুরের কাছে সেসময় গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য ছিল বলে অনেকে মনে করেন। কিন্তু তারপর রাজনৈতিক বেড়াজালে মামলাটি আটকা পড়ে যায়। ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল, গত দুই যুগ ধরে মামলাটি ঝুলে আছে। এই মামলাটিকে বলা হয় এরশাদকে বশীকরণের মামলা। যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে তারাই এরশাদকে বশে রাখার জন্য এই মামলাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। কিছুদিন আগে এই মামলাটির রায় দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে রায় আবারও পিছিয়ে যায় এবং মামলার অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে শুনানীর জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়। মনে করা হয়, এই মামলার কারণেই এরশাদ নড়াচড়া করতে পারেন না এবং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম আচরণ করেন।
(২) রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম: ১৯৮৬ সালে সংবিধানে অষ্টম সংশোধনী আনেন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। তিনি সংবিধানে দুটি পরিবর্তন এনেছিলেন। প্রথমটি ছিলো হাইকোর্ট বিকেন্দ্রীকরণ, ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে তিনি হাইকোর্ট স্থাপন করেছিলেন। দ্বিতীয়টি ছিল, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। দুটি সংশোধনীকেই চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবীরা। এর মধ্যে হাইকোর্ট বিকেন্দ্রীকরণে অষ্টম সংশোধনী বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংশোধনী নিয়ে করা রিট ৮৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয়নি। মামলাটি নিয়ে কেউই অগ্রসর হয় না। মামলাটি হাইকোর্টে স্তূপের নিচে পড়ে আছে।
(৩) অবৈধ ক্ষমতা দখলের মামলা: সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে অবৈধ ক্ষমতা দখলের মামলাটি করেছিলেন জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালে তিনি রাষ্ট্রদোহিতার অভিযোগে মামলাটি করেন। মামলাটি দায়ের করাই সার। এরপর থেকে মামলাটির কোন অগ্রগতি হয়নি। মামলার বাদী ইনু এবং বিবাদী এরশাদ এখন মহাজোটের শরিক।
(৪) যুবকের মামলা: যুবক নামের সংগঠনটির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে নিজেরা সম্পদের পাহাড় গড়েছে। অধিক মুনাফাসহ নানা রকম প্রলোভন দেখিয়ে তারা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত যুবক নামক সংগঠনটি ফুলে ফেঁপে ওঠে। এরপর ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর আবারও বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে সংগঠনটি আবারও আত্মপ্রকাশ করে। ২০০৭ সালে ১/১১’র পর যু্বকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উদ্যোগ নেয়। রাষ্ট্রীয় নিয়ম নীতি লঙ্ঘন করে মানুষের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে মামলার কার্যক্রম অব্যাহত থাকলেও আজ পর্যন্ত মামলার কোন সুরাহা হয়নি। বিভিন্ন স্থানে যুবকের সম্পত্তিগুলো যে যার মতো দখলে নিয়েছে। কিন্তু যুবকের কাছে গচ্ছিত টাকাগুলো আজও ফেরত পায়নি সাধারণ মানুষ।
(৫) ডেসটিনির মামলা: যুবকের পরপরই ২০১০ সালে এমএলএম কোম্পানি ডেসটিনির বিরুদ্ধে মামলা করে আওয়ামী লীগ সরকার। ডেসটিনির কার্যক্রম ছিল অনেকটা যুবকের অনুরূপ। মানুষের সম্পদ আত্মসাৎ করে তারাও সম্পদের পাহাড় গড়েছিল। ডেসটিনির বিরুদ্ধে মামলা হলেও আজ পর্যন্ত তার বিচারিক কোন অগ্রগতি দৃশ্যমান নেই। ডেসটিনির কর্তাব্যক্তিরা আইনের ফাঁক-ফোকর গলে বহাল তবিয়তে আছেন এবং ডেসটিনির সম্পদ-সম্পত্তি ভোগ করে যাচ্ছেন।
(৬) হলমার্ক কেলেঙ্কারী: আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় মেয়াদে সবচেয়ে আলোচিত ব্যাংকিং কেলেঙ্কারী হলো হলমার্কের দুর্নীতি। রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক থেকে ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে হলমার্ক নামক একটি ভুইফোঁড় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। সরকার দ্রুততার সঙ্গে হলমার্কের মালিকদের গ্রেপ্তার করে। কেলেঙ্কারীর সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। কিন্তু মামলাগুলো আর আলোর মুখ দেখছে না। হল মার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ তার মুক্তির জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন এবং তিনি টাকা পরিশোধ করে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
বাংলাদেশে এখন আইনের শাসন অনেকটাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু আইনের শাসন পুরোপুরিভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে গেলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করলেই শুধু হবে না, দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বছরের পর বছর যদি মামলাগুলো বিচারের অপেক্ষায় থাকে তাহলে আইনের প্রতি মানুষের আস্থায় চিড় ধরতে পারে। একইসঙ্গে ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসন সুদূর পরাহত হয়ে পড়ে। তাই আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই মামলা গুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান
বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটার ও প্রার্থীদের ধারণা পাল্টিয়েছে, বিশ্বাস জন্মেছে।
তার কারণেই প্রার্থীরা আবারও ভোটাদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে। প্রার্থীরা ভোটাদের দ্বারে
যাওয়ার যে সংস্কৃতি সেটা আবারও ফিরে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) যশোর শিল্পকলা
একাডেমির মিলনায়তনে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে
অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে যশোর, নড়াইল ও মাগুরার জেলার প্রার্থী নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে
মতবিনিময় শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা বলেন।
একদিন বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন বিশ্বের
রোল মডেল হবে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৩৬ শতাংশ
এ সময়ে অনেক। দেশের কয়েকটা রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ না নেয়াতে ভোটার উপস্থিতি কম।
আগামীতে দেশের যত ভোট আসছে, ততই আমাদের ভোটের পরিবেশ, ভোট গ্রহণ পরিবর্তন ঘটছে। বিগত
সময়ে নির্বাচন নিয়ে কি ঘটেছে সেটা ফিরে তাকানোর আর কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশের নির্বাচন
কমিশন সকল বির্তক, সমালোচনা পিছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়িয়ে দিন দিন উন্নতির দিকে যাচ্ছে।
ইসি আহসান হাবিব বলেন, নির্বাচনে ভোটারের
উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা কাজ করবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম
ধাপে মোট ভোট গ্রহণের শতাংশ প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা এবার থেকে ভোট গ্রহণে উপজেলা ভিত্তিক
তালিকা প্রকাশ করা হবে। ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা আলাদাভাবে
প্রচারণা করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যারা ভোটাদের বাঁধা দিবে তাদের প্রতিহত করবে প্রশাসন।
আমরা প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছি আইনের হাত ও ক্ষমতা অনেক বেশি। নির্বাচন বানচাল করতে
সেই ক্ষমতা কঠোরভাবে প্রয়োগ করবে প্রশাসন।
ইসি আরও বলেন, বিগত সময়ের চেয়ে বর্তমান
কমিশন সততার সঙ্গে কাজ করছে। শুধু কমিশন নয়, নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা সততার
সঙ্গে কাজ করছে। নির্বাচনে সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য আইন পাস করেছে এ কমিশন। কেউ সাংবাদিকদের
কাজে বাধাগ্রস্ত করলে জেল জরিমানার বিধান করা হয়েছে। মিডিয়াকে এ অবস্থানে নেয়ার ক্ষেত্রে
এ কমিশন ও সরকার ভূমিকা রাখছে।
যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল
হাছান মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় যশোর, নড়াইল ও মাগুরা জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপাররা
বক্তব্য রাখে। সভায় যশোর, মাগুরা ও নড়াইল জেলার সকল প্রার্থী, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট উপজেলাসমূহের
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাবৃন্দ, আচরণবিধি ও আইনশৃঙ্খলা
রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাবৃন্দ
এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ অংশ
নেয়।
অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে শার্শা উপজেলা
পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রশিক্ষণে অংশ নেন ইসি আহসান
হাবিব খান।
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।