নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১১ মে, ২০১৯
চোখের চিকিৎসা সেরে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী। আজ সরকারী ছুটির দিন থাকায় বিশ্রামেই কাটাবেন প্রধানমন্ত্রী। আগামীকাল রোববার থেকে শুরু হবে প্রধানমন্ত্রীর কর্মব্যস্ততা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কেবল দেশের প্রধান নির্বাহীই নন। তিনি দেশের সকল সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের মূল ব্যক্তি। তার ১০ দিনের অনুপস্থিতিতে অনেক গুলো সিদ্ধান্ত আটকে আছে। এই সিদ্ধান্তগুলো স্বল্পতম সময়ের মধ্যে দিতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায় যে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আটকে আছে সেগুলো হলো;
১. বেগম জিয়ার প্যারোল/জামিন অথবা উন্নত চিকিৎসা: কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়া কি জামিন পাবেন? রাষ্ট্রপক্ষ কি তার জামিনে আপত্তি করবে না? কিংবা আদালতের মাধ্যমে কি বেগম জিয়ার প্যারোল মঞ্জুর হবে? নাকি বেগম জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ইউনাইটেড বা অন্য কোন বেসরকারী হাসপাতালে নেয়া হবে? এই সিদ্ধান্ত আটকে আছে প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায়। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের রিপোর্ট এবং মতামত গুলো পর্যালোচনা করেই হয়তো তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।
২. প্রশাসনের রদবদল: প্রশাসনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রদবদলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব অবসরে যাচ্ছেন। এছাড়াও সচিব পর্যায়ে আরো কিছু রদবদল অপেক্ষমান। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।
৩. বাজেট (২০১৯-২০): আগামী ১৩ জুন নতুন অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মোস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করবেন। বাজেটের খুটি নাটি বিষয় গুলো চুড়ান্ত করার কাজ করছে অর্থমন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয়। কিন্তু এখানে অনেক নীতি নির্ধারনী বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মতামত ও সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। বিশেষ করে বাজেটে রাজনৈতিক অঙ্গীকার পূরণের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীই চুড়ান্ত করবেন।
৪. ঈদের ছুটি: সরকারের পক্ষ থেকে ঈদের ছুটি বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনাধীন আছে। বিশেষ করে, ঈদের সময় একসংগে ছুটির ফলে মানুষ গ্রাম মুখী হয় যখন মহাসড়ক, রেল এবং নৌপথে প্রচন্ড চাপ পরে। এবার ঈদে এমন এক পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে যে শুধু ৩ জুন যদি ছুটি দেয়া হয় তাহলে ঈদের ছুটি হবে ৯দিন। তাই, ৩ জুন ছুটি দিয়ে ৩১ মে থেকে ৮ জুন পর্যন্ত ছুটি ঘোষনা করা হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত এখন প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায়।
৫. আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের দিনক্ষণ: আওয়ামী লীগ নীতিগত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আগামী অক্টোবরে কাউন্সিল অধিবেশন করবে। কিন্তু এব্যাপারে দিনক্ষণ চুড়ান্ত হয়নি। দিন চুড়ান্ত করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী।
৬. ছাত্রলীগের পূনাঙ্গ কমিটি: প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে ছাত্রলীগের খসড়া পূর্নাঙ্গ কমিটি। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলেই এই কমিটি আলোর মুখ দেখবে।
৭. নুসরাত হত্যা সহ ধর্ষণের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান: নারী নির্যাতন বিশেষ করে ধর্ষনের উদ্বেগজনক বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকার। এব্যাপারে সরকার আরো কঠোর পদক্ষেপ এবং দ্রত বিচার নিশ্চিত করতে চায়। এ সংক্রান্ত একাধিক প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়।
৮. জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব: জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব এখন যেন এক মিউজিক্যাল চেয়ার। এরশাদ সর্বশেষ তার ভাই জি.এম. কাদেরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেছেন। এতে বিক্ষুদ্ধ রওশন পন্থীরা। তারা প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের অপেক্ষায়। অনেক দিন ধরেই জাপার বিরোধ মেটাচ্ছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী।
৯. দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি: রোজায় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি এক নিয়তি। এবারও রমজানে বেড়েছে জিনিসপত্রের দাম। বানিজ্য মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দেবেন।
১০. মাঠ প্রশাসন: বিগত উপজেলা নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এসেছে। বিশেষ ব্যক্তির পক্ষে মাঠ প্রশাসন নির্বাচনে কাজ করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নীতি নির্ধারনী সিদ্ধান্ত দেবেন জেলা প্রশাসক সম্মেলনে। আগামী জুলাই মাসে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ দলীয় কোন্দল
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
রাজনীতিতে প্রায় পরিত্যক্ত আবর্জনার ডাস্টবিনে পড়ে থাকা মাহমুদুর রহমান মান্না নিজের ওজন বাড়াতে এবং রাজনীতিতে নিজের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য নতুন স্টান্টবাজি গ্রহণ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, নির্বাচনের আগে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে মন্ত্রী হওয়ার অফার দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কী স্বেচ্ছা নির্বাসনে গেলেন? গতকাল তিনি ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরার পরেও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তাঁর কোন উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়নি। তিনি ছিলেন প্রচন্ড বিরক্ত এবং অনুৎসাহী। বারবার সাংবাদিকদের তিনি অনুরোধ করেছিলেন তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। এরপর তিনি বাড়িতে গিয়েছেন এবং সেখানে রীতিমতো নিজেকে গৃহবন্দি করে রেখেছেন। আজ সারাদিন দলের নেতাকর্মীরা তাঁর সঙ্গে কোন যোগাযোগ করতে পারেননি। এমনকি ফোন করা হলেও তিনি ঘুমিয়ে আছেন, বিশ্রামে আছেন কিংবা পরে ফোন করুন- এরকম বক্তব্য পাওয়া গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই নীরবতা বিএনপির মধ্যে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
একের পর এক ভুল কৌশল বিএনপির রাজনীতির অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছে। এবার উপজেলা নির্বাচনেও বিএনপি যে কৌশল গ্রহণ করেছিল, প্রথম দফা ভোটগ্রহণের পর সেই কৌশল ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপির ভোট বর্জন যেমন সাধারণ মানুষ সাড়া দেয়নি ঠিক তেমনি ভাবে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীরাও নির্বাচনে একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে যাননি। সাত জন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এর ফলে আগামী ধাপগুলোতে যারা বিএনপির পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং যারা দল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন তারা আবার নতুন করে উৎসাহ পাবেন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাবেন। এর ফলে বিএনপির বহিষ্কার কৌশল ব্যর্থ হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।