নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ২৬ মে, ২০১৯
১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে দেশ স্বাধীন হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের মত দেশের ক্রান্তিকালে কিছু রাজনীতিবিদ হেটেছেন বাঙালিদের বিপক্ষে। শুধু হাটেইনি, নি:শেষ করে দেওয়ার জন্য গঠন করেছে রাজাকার, আলবদর, আল শামসের মত বাহিনী। সেইসব রাজনীতিবিদদের বলা হয় বাংলাদেশের ইতিহাসের কলংকিত মানুষ। সেই ১৯৭১ সালের পর বাঙ্গালি জাতির জন্য আরেক কলংকিত অধ্যায় শুরু হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে খুন করা হয়। দেশ শাষন শুরু করে এক কুচক্রী মহল। বাংলাদেশের ইতিহাসের এই দুই অধ্যায়ে পাওয়া যায় এক শ্রেনীর রাজনীতিবিদকে। যারা নিজেদের স্বার্থের জন্য নৃশংস কাণ্ড ঘটিয়েছেন। কলংকিত করেছেন দেশকে। যাদের জাতি কখনো ক্ষমা করবে না। সেইসব নেতাদের আজ অনেকেই বেঁচে নেই। কিন্তু তার পরিবার আছে। বহাল তবিয়তে দেশে বিদেশে বেশ ভালো অবস্থানেও আছে। থাকবেই না কেন, যুগে যুগে তারা ঠিকই মদদ পেয়েছে এক শ্রেনীর স্বার্থান্বেষী মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে। তবে বেশিরভাগের পরিবারেরই তেমন খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাদের বংশধররা জাতির সামনে কখনো মাথা উচু করে দাড়াতে পারেননি। অর্থ প্রতিপত্তিতে হয়তো তারা বড় হয়েছেন। কিন্তু সেটা তাদেগর করতে হয়েছে মুখোশের আড়ালে। জেনে নেয়া যাক সেইসব কুখ্যাত রাজনীতিবিদদের বংশধররা কে কোথায় আছেন।
পঁচাত্তরের বিতর্কিত রাজনীতিবিদ:
খন্দকার মোশতাক আহমেদের বংশধর...
খন্দকার মোশতাক আহমদ বঙ্গবন্ধুর অতিভক্ত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর তোষামোদী করে বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় বিদ্যুৎ, সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রীর পদটিও বাগিয়ে নেন। তিনি ছিলেন, বাকশালের তৃতীয় শীর্ষ নেতা। সব সময় মাথায় থাকত জিন্নাহ-ক্যাপ, হাতে ধূমপানের পাইপ। অতিবিনয়ী ভদ্রতার মুখোশপরা মুখচোরা হাসিতে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলতেন। ১৫ আগস্টের পরিকল্পনাকারীদের অন্যতম ছিলেন তিনি।
মীর জাফরী কায়দায় রাষ্ট্রপতির পদে ক্ষমতায় মাত্র ৮৩ দিন অবস্থান করতে পারলেও পরে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের চালে ক্ষমতাচ্যুত হতে বাধ্য হন। আশ্রয় নেন পুরান ঢাকার আগামাসি লেনের বাড়িতে। চারতলার বাড়িটির তিনতলার সুরক্ষিত একটি কক্ষে বাস করতেন। তার শাসনামলেই চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মো. মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (ওই বছরের ৩ নভেম্বর) হত্যা করা হয়।
মোশতাক আহমেদ ১৯৭৫ সালের ৫ নভেম্বর সেনাবিদ্রোহের দ্বারা অপসারিত হন। ১৯৭৬ সালে মোশতাক আহমেদ ডেমোক্রেটিক লীগ নামক এক নতুন দল প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছর সামরিক শাসককে অপসারণের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেল থেকে মুক্তিলাভের পর তিনি আবার সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৯৬ সালের ৫ মার্চ মোশতাক মৃত্যুবরণ করেন। ফলে হত্যার দায় থেকে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। জনগণের ক্ষোভ আর ঘৃণার মুখে পুলিশ প্রহরায় দাউদকান্দির দশপাড়ায় তাকে দাফন করা হয়। বর্তমানে সেখানে সীমানা প্রাচীরে ঘেরা তার বাড়িতে দোতলা একটি ভবন রয়েছে। এছাড়াও একটি মসজিদ ও পারিবারিক কবরস্থানও রয়েছে। অন্য কবরে নামফলক থাকলেও মোশতাকের কবরে তা নেই। প্রথমে থাকলেও পরে তা সরিয়ে ফেলা হয়।
মোশতাকের একমাত্র ছেলে খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন, মেয়ে খন্দকার শিরিন সুলতানা ও ডা. খন্দকার নাজনীন সুলতানা লন্ডনে থাকেন।
মোশতাকের একমাত্র ছেলে খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ আগে মাঝে মধ্যে পরিবারের সদস্যদের কবর জিয়ারত করতে বাড়ি এলেও গত ৭-৮ বছর যাবৎ জনরোষের ভয়ে বাড়িতে আসেন না। পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে আলোচিত বাড়িটি।
শুধু মোশতাক নয়, তারাও...
মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের প্রথম ডেপুটি স্পিকার ও পরে স্পিকার নির্বাচিত হওয়া আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদউল্লাহকে ১৯৭৩ সালে প্রথম রাষ্ট্রপতিও করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। পরে ১৯৭৫-এর শুরুর দিকে মোহাম্মদউল্লাহকে মন্ত্রী হিসেবে নিজের মন্ত্রিসভায় স্থান দেন বঙ্গবন্ধু। সেই মোহাম্মদউল্লাহ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরপরই খন্দকার মোশতাকের সরকারে যোগ দেন। ছিলেন মন্ত্রী জিয়ার সরকারেও। এমনকি জিয়া হত্যাকাণ্ডের পর সাত্তার সরকারের একদিনের উপ-রাষ্ট্রপতির দায়িত্বও পালন করেন মোহাম্মদউল্লাহ। একাত্তরে মুজিবনগর সরকারের ঘোষণাপত্র পাঠ করা অধ্যাপক ইউসুফ আলী বঙ্গবন্ধু সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ১৫ আগস্টের পর তিনিই আবার খুশি মনে যোগ দিয়েছেন খুনি মোশতাকের সরকারে। ইউসুফ আলী পরে বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ছাত্রলীগ নেতা থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া কে এম ওবায়দুর রহমান দলীয় এমপি ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি মোশতাক সরকারের ক্ষমতাধর মন্ত্রী হিসেবে দেখা দেন। মুক্তিযুদ্ধের পরের প্রথম সংসদে আওয়ামী লীগের হুইপ শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী তাহের উদ্দিন ঠাকুর ও মাহবুব আলম চাষী একইভাবে বঙ্গবন্ধুর আশীর্বাদ পাওয়া সত্ত্বেও পল্টি দিয়েছেন রাতারাতি। পরবর্তীতে এদের পরিবারের তেমন কাউকে রাজনীতিতে দেখা যায়নি। বাবার পরিচয়ে তারা বাংলাদেশে বড় কোন স্থানে যেতে পারেননি বলে নাম ঠিকানাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী কেএম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ।
একাত্তরের বিতর্কিত রাজনীতিবিদ:
সালাউদ্দীন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বংশধর...
গভীর সংকট অতিক্রম করছে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি হওয়া চট্টগ্রামের সাবেক বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর পরিবার। সাকা না থাকায় এলাকার রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে পরিবারটি। বড় ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী এখন সিঙ্গাপুরে, সাকার আরেক ছেলে ফায়েজ কাদের চৌধুরী লন্ডনে, মেয়ে ফারজিন কাদের চৌধুরী কানাডায় এবং স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী ঘুরেফিরে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বিদেশে থাকছেন। সাকার ছেলে মেয়েরা দেশের বাইরে পড়াশুনা করলেও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেই জড়িত। বিদেশে এখন তাদের একমাত্র কাজ সরকারের ক্ষতি করা।
গোলাম আযমের বংশধর...
জামায়াতে ইসলামীর প্রাক্তন আমির গোলাম আযমের ছয় ছেলে। কোন কন্যা সন্তান নেই। নিজে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হলেও সন্তানদের তিনি ইংরেজি ও আধুনিক শিক্ষা দিয়েছেন। তার একটি ছেলেকেও মাদ্রাসায় পড়াননি।
গোলাম আযমের বড় ছেলের নাম মামুন আল আযমী। দীর্ঘদিন তিনি ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি সৌদি আরবের জেদ্দায় স্ত্রী-সন্তানসহ বসবাস করছেন।
দ্বিতীয় ছেলে আমিন আল আযমী লন্ডনে পড়ালেখা শেষ করে সেখানেই ব্যবসা ও বসবাস করছেন। তৃতীয় ছেলে আবদুল্লাহিল মোমেন আযমী। বর্তমানে ম্যানচেস্টার সিটিতে পরিবারসহ বাস করছেন। চতুর্থ ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আযমী। নটরডেম কলেজে পড়ালেখা শেষ করে এরশাদ সরকারের প্রথম দিকে সেনাবাহিনীতে কর্মজীবন শুরু করেন। সর্বশেষ সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি বরখাস্ত হন। পঞ্চম ছেলে নোমান আল আযমী। লন্ডনে পড়ালেখা শেষ করে সেখানেই ব্যবসা ও বসবাস করছেন।
ছোট ছেলে সালমান আল আযমী ভারতের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি লিভারপুল হোপ ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করছেন। গোলাম আযমের এই ছয় ছেলের ঘরে ২০ জন নাতি-নাতনি রয়েছে। তাদের প্রায় সবাই লন্ডনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করছেন।
মতিউর রহমান নিজামীর বংশধর...
যুদ্ধাপরাধের রায়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। মতিউর রহমান নিজামী চার ছেলে ও দুই মেয়েসহ মোট ছয় সন্তানের জনক। বড় মেয়ে মোহসিনা ফাতেমা বর্তমানে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তার স্বামী সাইফুল্লাহ মানসুর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে বিটিভির সংবাদ পাঠক ছিলেন। তবে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি আর সুবিধা করতে পারেননি। বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারী কলেজে শিক্ষকতা করছেন। বড় ছেলে ড. নাকিবুর রহমান মালেয়শিয়াতে পড়াশুনা করেছেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করছেন। দ্বিতীয় ছেলে ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। রাবেয়া ভূঁইয়া একাডেমিতে আইন বিষয়ে পড়ালেখা শেষ করে লন্ডন গিয়ে বার-এ্যাট- ল’ ডিগ্রী অর্জন করেছেন তিনি। ছেলেদের মধ্যে কেবল নাজিব মোমেনই দেশে অবস্থান করছেন। তিনি বর্তমানে হাইকোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত। নিজামীর তৃতীয় ছেলে ডাঃ নাইমুর রহমান খালেদ পাকিস্তানে পড়াশুনা করে অস্ট্রেলিয়ার এক মেডিকেলে চিকিৎসক হিসেব কর্মরত আছেন। নিজামীর ছোট ছেলে এখনো ছাত্র। মালেয়শিয়ায় পড়াশুনা করেন। আর বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে সরকার বিরোধী কথাবার্তা বলেন।
ছোট মেয়ে খাদিজা পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে লন্ডনের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। ছোট মেয়ের স্বামী ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম। তিনি এক সময় শিবির সেক্রেটারি ছিলেন। নজরুল ইসলাম বর্তমানে লন্ডনে আইন পেশায় নিয়োজিত।
নিজামীর স্ত্রী সামসুন্নাহার নিজামী গুলশানে একটি ইসলামিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে তিনি জামাতের নারী শাখার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।
আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের বংশধর...
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী মুজাহিদের তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সবাই আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত। বড় ছেলে আলী আহমেদ অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ইউনিভার্সিটি থেকে উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে সেখানেই আছেন। দ্বিতীয় ছেলে আহমেদ আহকিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে উচ্চশিক্ষা নেন। আরেক ছেলে আহমেদ মাবরুর দিগন্ত টিভিতে হেড অব নিউজ ছিলেন। একমাত্র মেয়ে তামরিনা আল মানারাত ইউনিভার্সিটির ইংলিশের প্রভাষক।
কাদের মোল্লার বংশধর...
শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর চার মেয়ে ও দুই ছেলে। তারাও সবাই দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন।
মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বংশধর...
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। তার ৫ ছেলে, এক মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে হাসান ইকবাল ওয়ামী বর্তমানে বেসরকারী একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। বাকি ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা এখনো শেষ হয়নি। দেশের শীর্ষ স্থানীয় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুলে পড়ছেন তারা।
মীর কাশেম আলীর বংশধর...
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে ফাঁসিতে ঝোলা জামায়াতের অর্থ যোগানদাতার শীর্ষনেতা ধনকুবের মীর কাশেম আলী। তার দুই ছেলে তিন মেয়ে। ছেলে মোহাম্মদ বিন কাশেম (সালমান) আল মানারাত ইংরেজী মিডিয়াম থেকে এ লেভেল এবং ও লেভেল করেছেন। এরপর পাকিস্তান ডেন্টাল কলেজে পড়েছেন। আরেক ছেলে মীর আহমেদ বিন কাশেম (আরমান) আল মানারাত থেকে এ লেভেল এবং ও লেভেল সম্পন্ন করেন। এরপর লন্ডনে বার এট ল’সম্পন্ন করেছেন। মেয়ে হাসিনা তাইয়্যেবা অনার্স এবং মাস্টার্স করেছেন হোম ইকোনমিক্স কলেজ থেকে। অপর মেয়ে সুমাইয়া রাবেয়া আল মানারাতে স্কুল ও কলেজ থেকে এ লেভেল এবং ও লেভেল সম্পন্ন করার পর আল মানারাত ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ পড়ছেন। আরেক মেয়ে তাহেরা হাসনিন আলও পড়াশুনা করেছেন মানারতে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে দেশটিতে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। চলতি মাসের শেষের দিকে ৫০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চীনে যাবে।
গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছরপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। এই সফর কর্মসূচির লক্ষ্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়ন এবং মতবিনিময়।
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত ১৪ এপ্রিল এক চিঠিতে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কাছে ৫০ সদস্যের একটি তালিকা পাঠিয়েছেন। এতে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ ও মহিলা শ্রমিক লীগ এবং আওয়ামী লীগের ডেটাবেজ টিমের সদস্যরা রয়েছেন।
দলীয় একাধিক সূত্র মতে, আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলটিকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি সংগঠন গড়ে তোলা, সুশাসন, ইতিহাসসহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবে।
৫০ সদস্যের প্রতিনিধি টিমে রয়েছেন:
আওয়ামী যুব লীগ:
সহ সভাপতি মৃনাল কান্তি জোয়ারদার ও তাজউদ্দীন আহমদ; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলম; সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, মো জহির উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক কাজী সারোয়ার হোসেন, উপ আন্তর্জাতিক সম্পাদক মো সাফেড আসফাক আকন্দ।
আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ:
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান, সহ সভাপতি আব্দুল রাজ্জাক, তানভীর শাকিল জয় এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরী, একেএম আজিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল ফজল মো নাফিউল করিম, আবদুল্লাহ আল সায়েম৷
বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ:
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিরিন রোকসানা, মিনা মালেক, সুলতানা রেজা, মিসেস রোজিনা নাসরিন, নীলিমা আক্তার লিলি, সাংগঠনিক সম্পাদক ঝর্না বাড়ুই, মরিয়ম বিনতে হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহেনিগার হোসেন।
বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ:
সভাপতি আলেয়া সারোয়ার, সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা, সহ সভাপতি বিনা চৌধুরী, রাফিয়া আক্তার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিউটি কানিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন।
মহিলা শ্রমিক লীগ:
সভাপতি সুরাইয়া আক্তার, সাধারণ সম্পাদক কাজী রহিমা আক্তার, কার্যকরী সভাপতি শামসুর নাহার, সহ সভাপতি মেহেরুন নেসা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিনাত রেহেনা নাসরিন।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ:
সহ সভাপতি মো. রাকিবুল হাসান, কুহিনূর আক্তার, খাদেমুল বাশার জয়, খন্দকার মো আহসান হাবিব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো হোসাইন আহমেদ, মো আবদুল্লাহ হিল বারী, এসডিজি বিষয়ক সম্পাদক রাইসা নাহার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক জান্নাতুল হাওয়া আখি।
ডেটাবেজ টিম মেম্বার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ:
মো নুরুল আলম প্রধান, সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, কাজী নাসিম আল মমিন, জাফরুল শাহরিয়ার জুয়েল, অদিত্য নন্দী, মো. সাদিকুর রহমান চৌধুরী, সাব্বির আহমেদ।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।