নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:২৮ পিএম, ১৮ নভেম্বর, ২০১৯
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কংগ্রেস আগামী ২৩ নভেম্বর। আওয়ামী লীগের অন্যান্য ভ্রাতৃপ্রতীম ও সংগঠনগুলোর কাউন্সিল সুষ্ঠুভাবে হলেও যুবলীগের কংগ্রেস নিয়ে নানা রকমের গুঞ্জন এবং প্রভাববিস্তারের চেষ্টা পাওয়া যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগের সবচেয়ে প্রভাবশালী এবং শক্তিশালী সংগঠন যুবলীগ। আর এজন্যই যুবলীগের কর্তৃত্ব নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন আওয়ামী লীগের অনেক কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে যুবলীগের সাধারণ নেতৃবৃন্দ মনে করেন যুবলীগের কর্তৃত্ব থাকা উচিত একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। কিন্তু ছাত্রলীগের মতো যুবলীগেও একটা সিন্ডিকেট কাজ করছে এবং এই সিন্ডিকেট যেকোন মূল্যে যুবলীগের কর্তৃত্ব নিজেদের কাছে রাখতে চান।
যুবলীগের কংগ্রেসের আগে সবচেয়ে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানককে। জাহাঙ্গীর কবির নানক আজ সম্মেলন স্থান পরিদর্শন করেছেন। গণমাধ্যমে যুবলীগ নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য রেখেছেন। যুবলীগ নিয়ে তার আগ্রহ বেশ। তার বাড়িতে প্রতিদিনই যুবলীগের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দর খবর পাওয়া যাচ্ছে। কমিটি যেন তার আশীর্বাদপুষ্ট হয় এবং কমিটিতে যেন তার কর্তৃত্ব থাকে সেজন্য তিনি প্রচন্ড সক্রিয় বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
অন্যদিকে ঐতিহ্যগতভাবেই যুবলীগের কর্তৃত্ব থাকে শেখ সেলিম পরিবারের উপর। শেখ সেলিম যেমন যুবলীগের চেয়ারম্যান ছিলেন তেমনি সংগঠনটির সর্বশেষ চেয়ারম্যান ছিলেন শেখ সেলিমের বোনের জামাতা ওমর ফারুক চৌধুরি। আর এখনো যুবলীগে আছেন শেখ সেলিমের ছোট ভাই শেখ মারুফ এবং শেখ সেলিমের পুত্র শেখ ফাহিম। যদিও মারুফ বর্তমানে যুবলীগের কার্যক্রমের মধ্যে নেই। যেহেতু গণভবনে তিনি নিষিদ্ধ হয়েছেন সেহেতু যুবলীগের বর্তমান সম্মেলন কর্মকাণ্ডে তিনি অনুপস্থিত। কিন্তু শেখ ফজলুল করিম সেলিমের একটি বিরাট সমর্থক গোষ্ঠী রয়েছে এবং শেখ সেলিমের পুত্র শেখ ফাহিম এবার সম্মেলনে অভ্যর্থনা কমিটির সদস্য। শেখ সেলিমর একটি নীরব প্রভাব সব সময়ই যুবলীগের মধ্যে আছে। এরাও চাইছেন যে যুবলীগের কর্তৃত্ব তাদের কাছে নিতে। যুবলীগ যেন শেখ সেলিমের বলয়ের মধ্যেই থাকে সেটা নিশ্চিত করার জন্য এই গোষ্ঠীও মরিয়া হয়ে উঠেছে।
এর বাইরেও একটি নীরব ধারা যুবলীগে রয়েছে। যারা মনে করে যুবলীগ সব সময়ই যেভাবে ছিল, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিলেন যুবলীগের আদর্শিক নেতা। তাঁর নেতৃত্ব এবং কর্তৃত্বেই যুবলীগ পরিচালিত হওয়া উচিত এবং এই গ্রুপের এখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুবলীগ সম্মেলনের প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম। তিনি মনে করছেন, যুবলীগ যদি সিন্ডিকেট মুক্ত করা যায় তাহলে যুবলীগ সক্রিয় এবং সবচেয়ে কার্যকর সংগঠন হিসেবে আত্বপ্রকাশ করবে।
এছাড়াও যুবলীগের সম্মেলনের আগে ঢাকা দক্ষিণে মিল্কি হত্যা মামলার দুজন অসামীর শো ডাউন নিয়ে যুবলীগের মধ্যে নানা রকম উত্তের্জনা ও অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। এই দুই জন আসামীর একজন দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকার পর সম্প্রতি দেশে ফিরে সক্রিয় হয়েছেন। তিনি ২০১৪ সালের নির্বাচনে বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় ঘোষণা দিয়েছিলেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া সদ্য বহিষ্কৃত ইসমাইল চৌধুরি সম্রাটের একজন ক্যাডার এবং যুবলীগ দক্ষিণের সাবেক সাধারণ সম্পাদক যিনি মিল্কি হত্যা মামলার অভিযুক্ত হওয়ার কারণে যুবলীগ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। তাকেও হঠাৎ করে যুবলীগ কার্যালয়ে শো ডাউন করতে দেখছেন দলের নেতা কর্মীরা। এসব নিয়ে যুবলীগের মধ্যে নানা রকম কথাবার্তা ছড়িয়ে পড়েছে। যুবলীগের সাধারণ নেতাকর্মীরা প্রশ্ন করছেন যে, যুবলীগ কি সম্মেলনের মধ্যে নেই। যুবলীগ কি আগের মতো গড্ডালিকা প্রবাহের দিকেই যাবে। নাকি দূষণমুক্ত একটি পরিচ্ছন্ন যুবলীগ আত্নপ্রকাশ করবে। সেটাই দেখার বিষয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেহেতু যুবলীগের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছিলেন। কাজেই যুবলীগে একটি পরিচ্ছন্ন নেতৃত্ব দিতে তিনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং এই কাউন্সিলে যুবলীগের নেতৃত্বের ব্যপারে তিনি একটা চমক দেখাবেন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ দলীয় কোন্দল
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
রাজনীতিতে প্রায় পরিত্যক্ত আবর্জনার ডাস্টবিনে পড়ে থাকা মাহমুদুর রহমান মান্না নিজের ওজন বাড়াতে এবং রাজনীতিতে নিজের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য নতুন স্টান্টবাজি গ্রহণ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, নির্বাচনের আগে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে মন্ত্রী হওয়ার অফার দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কী স্বেচ্ছা নির্বাসনে গেলেন? গতকাল তিনি ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরার পরেও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তাঁর কোন উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়নি। তিনি ছিলেন প্রচন্ড বিরক্ত এবং অনুৎসাহী। বারবার সাংবাদিকদের তিনি অনুরোধ করেছিলেন তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। এরপর তিনি বাড়িতে গিয়েছেন এবং সেখানে রীতিমতো নিজেকে গৃহবন্দি করে রেখেছেন। আজ সারাদিন দলের নেতাকর্মীরা তাঁর সঙ্গে কোন যোগাযোগ করতে পারেননি। এমনকি ফোন করা হলেও তিনি ঘুমিয়ে আছেন, বিশ্রামে আছেন কিংবা পরে ফোন করুন- এরকম বক্তব্য পাওয়া গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই নীরবতা বিএনপির মধ্যে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
একের পর এক ভুল কৌশল বিএনপির রাজনীতির অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছে। এবার উপজেলা নির্বাচনেও বিএনপি যে কৌশল গ্রহণ করেছিল, প্রথম দফা ভোটগ্রহণের পর সেই কৌশল ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপির ভোট বর্জন যেমন সাধারণ মানুষ সাড়া দেয়নি ঠিক তেমনি ভাবে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীরাও নির্বাচনে একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে যাননি। সাত জন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এর ফলে আগামী ধাপগুলোতে যারা বিএনপির পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং যারা দল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন তারা আবার নতুন করে উৎসাহ পাবেন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাবেন। এর ফলে বিএনপির বহিষ্কার কৌশল ব্যর্থ হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।